এনিমে মাঙ্গা ইন্ডাস্ট্রির ডার্ক সাইড পার্ট ১ — আতা এ রাব্বি আব্দুল্লাহ

আজকের পর্ব মানহোয়া ওরফে কোরিয়ান মাঙ্গা ওরফে ওয়েবটুন। আপনার পছন্দের একশান, জোসেই বা রোমান্স মানহোয়ার আপডেট আসছে। গেছেন পড়তে, দেখেন নোটিশ “আর্টিস্ট এর স্বাস্থ্যের অবনতির কারনে দুইসপ্তাহের ব্রেক। আপনার মন খারাপ, আর্টিস্ট এর জন্য দোয়া কইরা ওয়েট করলেন। ওদিকে আর্টিস্ট এডিটর এর চাপে মরমর। রিসেন্টলি কোরিয়ার occupational safety and health Agency প্রায় ৩০০ আর্টিস্টদের ওপর জরিপ করে। জরিপে বের হয়।
1. 28.7% of Webtoon writers that responded to the survey have depression, compared to the national average of 7.7%
2. 17.3% had suicidal thoughts, 8.5% planned it, 4% tried it. Nationals averages being (10.7%, 2.5%, 1.7%)
জিনিসটা কত ভায়বহ খেয়াল করসেন? সোলো লেভেলিং এর আর্টিস্ট ব্রেইন হেমোরেজের কারনে মারা গেছেন কিন্তু তার স্বাস্থ্য আগে থেকেই খারাপ ছিল আর তা ছিল প্রত্যেক উইকে ওই লেভেলের আর্ট দিয়ে চ্যাপ্টার বের করা আর বাজে ওয়ার্কিং কন্ডিশন। রোক্সানা ওয়েবটুন নামে আরেক ফিমেইল আর্টিস্টকে এত প্রেশার আর এবিউজ করা হইসিল যে তার মিসক্যারেজ হয়ে যায় অসুস্থ হয়ে। জাপানি মাঙ্গা আর্টিস্টরা প্রেশারে থাকে জাস্ট সাদাকালো ড্রয়িং এর কারনে আর সেখানে কোরিয়ান মানহোয়া আর্টিস্টদের আকা প্লাস কালার করা লাগে, অনেক সময় এসিসটেন্ট থাকে, অনেকসময় থাকে না। সবাই ইউসুকে মুরাতা বা নর্দান ব্লেইডের মত ইনহিউম্যান ট্যালেন্ট নাই যে এত ডিটেল আর্ট এত অল্প সময়ে করবে। কিন্ত তা করার সুযোগ নাই, এরা বিভিন্ন স্টুডিওর আন্ডারে থাকে ডেডলাইনে। একজন মোটামুটি মানের আর্টিস্ট বছরে দেড় থেকে তিনলাখ টাকা কামায় যা কোরিয়ার মত ব্যায়বহুল দেশে কিছুই না।
এর কারন কি? কারন প্যাশনের এবিউজ আর স্টুডিওর টাকা খাবার ধান্দা। স্টুডিও সাইটে হোস্ট না করলে ভিউ নাই টাকা নাই। আপনি যতই লিগ্যালি পড়েন তাতে লাভ নাই টাকা যাবে স্টুডিওর হর্তা কর্তাদের পকেটে। আর ওয়েবটুনের ফিজিক্যাল কপিও থাকে না যেখান থেকে টাকা ইনকাম করতে পারবে। এখানে আসলে রিডারদের কিছু করার নাই। জাপানের এনিমে ইন্ডাস্ট্রির এই এবিউজটা ঠিকই কোরিয়ার ওয়েবটুন ইন্ডাস্ট্রি শিখে গেছে। সাথে হইসে ক্রিয়েটিভ বা নতুন ভালো ওয়েবটুনের অকাল মৃত্যু। যেই কোরিয়া থেকে আন্নারাসুমারানার, চিলার্স, রেড বুক এর মত অসাধারণ জিঞ্জস পাইসি আজকে সব কপি পেস্ট হান্টার, রিভেঞ্জ, লেভেল মানহোয়ায় ভর্তি। আর্টিস্টদের করার কিছু নাই। প্যাশন দিয়ে পেট চলে না, আর পাবলিকে খাওয়ার মত জিনিস বের না করলে পেটে দানা পড়বে না। কোরিয়ান মানহোয়া ইন্ডাস্ট্রিও ট্যালেন্টের অকাল মৃত্যু ঘটাচ্ছে৷ করার কিছু নাই।

MADE IN ABYSS [রিভিউ] — Zunaid Mashrafee

MADE IN ABYSS
লেখক: আকিহিতো সুকুশি
 
•> মাঙ্গা
প্রকাশকাল: ২০১২-চলমান।
ভলিউম:- ১১টি
প্রকাশিত: তাকেশোবো ম্যাগাজিন
 
•> এনিমে
প্রথম সিজন:
প্রচারকাল: ৭ জুলাই-১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭
এপিসোড: ১৩ টি
স্টুডিও: কিনেমা সাইট্রাস
ডাইরেক্টর: মাসায়ুকি কজিমা
 
২০১৯ সালে মোট ২টি মুভি বের হয়। “Journey’s dawn” আর “Wandering twilight”. মুলত এই দুইটা মুভিতে প্রথম সিজনে যা দেখানো হয়েছে তা একসাথে কভার করা
হয়েছে। ২০২০ সালে আরেকটি মুভি বের হয়, “Dawn of the deep soul”.
•>সিজন ২: The golden city of the scorching sun
পর্বসংখ্যা:- ১২
সম্প্রচার: জুলাই ৬-সেপ্টেম্বর ২৮,২০২২।
****
এক বিশাল খাদের আবিষ্কার হয় হঠাৎ, যে খাদের শেষ গিয়ে ঠেকেছে পৃথিবীর তলায়। মানুষ স্বাভাবিকভাবেই একে চেনে, Abyss নামে। খাদটি কেবল বিশাল খালি গহ্বর না। এর ভেতরে রয়েছে আমাদের চেনা জগতের থেকে আলাদা আরেকটা জগৎ। রয়েছে জীববৈচিত্র্য, বিভিন্নরকম ভৌগোলিক পরিবেশ, আর বিচিত্র রকমের artifacts. এমন সব পদার্থ যার সন্ধান abyss এর বাইরের পৃথিবীতে কখনো পাওয়া যায় না ‌। কিন্তু সেখানে যাওয়াটা মোটেও সহজ না। পুরো abyss একটি অজানা শক্তির চাদরে আবৃত, যেটি curse of abyss নামেই পরিচিত। যে কেউই খাদে নামুক, উপরের দিকে আসতে গেলেই শারিরীক ভাবে অসুস্থ বোধ করতে শুরু করে, হতে পারে মৃত্যুও। যতো গভীরতা, ততোই অভিশপ্ত শক্তির প্রভাব বিদ্যমান সেই “abyss” এ।
 
পৃথিবীর বুকে রহস্যময় জায়গার শেষ নেই। এই জায়গাগুলো চিরকাল মানবজাতির জন্য কৌতুহলের খোরাক জুগিয়েছে‌। মানবসভ্যতার সামনে নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ নিয়ে এসেছে দুর্গম অঞ্চলগুলো‌। মৃত্যুর হাতছানি যতোই থাকুক, বিচিত্র জগৎকে ছুঁতে পারার তাড়না কখনোই থামে নি। Abyss ও ব্যাতিক্রম না, abyss কে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠেছে “ওর্থ” শহর। গড়ে উঠেছে একদল অভিযাত্রী, যাদের কাজ abyss এর তলা থেকে বিভিন্ন ধরণের artifact সংগ্রহ।অভিশপ্ত শক্তির সাথে খাপ খাইয়ে গভীরে যেতে পারার সক্ষমতার উপর ভিত্তি করে এই অভিযাত্রীদের দলকে কয়েক ভাগে ভাগ করা হয়েছে‌। একেক দলের কাছে একেক রঙের বাশি দেয়া হয়, পদবীর প্রতীক হিসেবে। একেবারে নবীন যারা খাদের মুখে কাজ করে, তারা লাল বাশি, আর যারা একেবারে ভিতরে, ভয়াবহ প্রতিকুল পরিবেশে সংগ্রামে সক্ষম তারা পায় সাদা বাঁশি।
মাটির হাজারখানেক ফিট নিচে কাজ করা সহজ না অবশ্য‌ই, তাই abyss আবিষ্কারের পর খুউব কম white whistles এসেছে। এর‌ই মধ্যে একজন কিংবদন্তী white whistles লাইজা। যার মেয়ে রিকো ওর্থ শহরের‌ই বেলচেরো এতিমখানায় বড় হয়, এবং তাকেও abyss এর artifact সংগ্রহের কাজে নিয়োজিত করা হয়। “Red whistle” প্রাপ্ত রিকো যে কিনা একজন ব‌ইপড়ুয়া ও “Nerd”, হঠাৎ করেই একদিন বিদ্যুৎচালিত cyborg সদৃশ একটি artifact খুঁজে পায়। রিকো এর নাম দেয়, রেগ‌‌। এবং সেদিন থেকে তার বহুদিনের স্বপ্ন বাস্তব হবার সম্ভাবনা দেখতে পায়। খাদের শেষ প্রান্তে যেখানে white whistles দের বসবাস, সেখানে সে যাবে, দেখা করবে, তার মা লাইজার সঙ্গে।qqখনির নিচের প্রতিকুল আবহাওয়া, ভয়ংকর প্রাণী জগৎ আর অভিশপ্ত শক্তির প্রভাব- সব উপেক্ষা করেই ছোট্ট রিকো সিদ্ধান্ত নেয়, তার অভিযান চলবেই! অদ্ভুতরকম সক্ষম রেই, তাকে প্রেরণা যোগায় এই অসম্ভব প্রতিকুল পরিবেশ জয় করার।
Made in abyss এনিমের সবচেয়ে বড় শক্তি এর অসম্ভব সুন্দর এবং detailed World building. আমার কাছে abyss এর সাথে রাশিয়ার kola super deep borehole এর সাযুজ্যটা চোখে পড়েছে ভীষণ। খাদের প্রতিটা স্তরে লেখক বিভিন্নরকম পরিবেশ আর জীবজগতের বিস্তারিত ক্ষেত্র তৈরি করেছেন।
পুরো এনিমেটাই খাদের প্রতিটা স্তরে রিকোর অভিযান, তার সম্মুখে থাকা পরিবেশগত challenge এবং সেগুলোকে উতরে আসার ছোটবড় গল্পে সাজানো। তবে এর‌ই সাথে বেলচেরোর এতিমখানায় রিকোর আপাত করুণ জীবন, abyss কে ঘিরে artifact ব্যবসা, অভিজাত white whistles দের জটিল মনোজগৎটা মাঙ্গাকা সুন্দরভাবে চিত্রায়ণ করেছেন। রিকোর প্রখর মেধা ও ইচ্ছাশক্তি আপনাকে যেমন নাড়া দিয়ে যাবে। রেগ একটি cyborg ধরণের কিছু। কিন্তু এর আচার আচরণ আর প্রকৃতি বেশ আশ্চর্যজনক। একটি ভালো গল্পে নায়কের পাশাপাশি খলচরিত্রের প্রয়োজন আছে। গল্পের antagonist বন্ড্রিউডকে সময়ের অন্যতম সেরা antagonist বললে ভুল হবে না হয়তো।
সব মিলিয়ে, আমি বলবো, এই এনিমে মিস করার মতো না। এই শীতকালে কম্বলের তলায় শুয়ে দেখে ফেলুন, “Made in abyss”.

Inu-Oh [রিভিউ] — Shan To

Inu-Oh
Genre: Fantasy.
Themes: Historical, Music, Performing Arts.
সময়সীমা: ১ ঘন্টা ৩৮ মিনিট.
 
গল্পটি ইনু-ওহ এবং টোমোনার জীবন সংগ্রমের গল্প।টোমোনা একটি দুর্ঘটনায় তার বাবা এবং তার দুই চোখ হারায়।অপরদিকে,ইনু-ওহের বাবা তার নিজ স্বার্থের জন্য রাক্ষস মুখোশের সাথে একটি চুক্তি করেছিলেন।যার কারনে ইনু-ওহ বিকৃত শরীর নিয়ে জন্মায়।তবে তাদের মাধ্যে ছিলো বিশেষ প্রতিভা।যেমন টোমোনা বিওয়া বাজাতে এবং ইনু-ওহ নোহ নাচ করতে পারতো।তাদের এ প্রতিভার সংমিশ্রণে এমন এক জিনিস তৈরি করে যা তাদের সংস্কৃতি থেকে পুরোপুরি ভিন্ন।যার কারনে তাদের খ্যাতি সারা শহরে ছড়িয়ে পরে এবং তাদের ভাগ্য পরিবর্তন হয়।
একদিকে,ড্যান নো উরার যুদ্ধে গেঞ্জি বংশ হেইক গোষ্ঠীকে পরাজিত করে।তখন শিশু সম্রাট ও তার দাদু এক বিশেষ তরোয়াল বহন করার সময় ডুবে যায়।যুদ্ধের কয়েকশত বছর পর আশিকাগা ইয়োশিমিতসুর লোকেরা টোমোনা এবং তার বাবাকে ভাড়া করে ডুবে যাওয়া তরোয়ার খুজে বের করার জন্য।তারা হেইক গোষ্ঠীর জাহাজের ধ্বংসাবশেষ থেকে একটি তরোয়াল খুজে পেলে,এই তরোয়াল একটি শক্তির ফলক ছেড়ে দেয় যা টোমোনার বাবাকে অর্ধেক কেটে ফেলে এবং টোমোনাকে অন্ধ করে ফেলে।পরবর্তীতে টোমোনা অন্ধ বিওয়া খেলোয়াড়দের একটি সদস্য হয়ে যায়।যারা মারা যাওয়া যুদ্ধার আত্মাদের সুরেলা কন্ঠে গল্পের মাধ্যমে শান্ত করে।আরেকদিকে,ইনু-ওহ জন্মায় বিকৃত দেহ নিয়ে।তবুও সে নোহ নাচে পারদর্শী হয়ে ওঠে এবং তার ইচ্ছে ছিলো সারা দেশে সে বিখ্যাত হয়ে উঠবে নাচের মাধ্যমে।পরবর্তীতে টোমোনার সাথে তার বন্ধুত্ব হয়।একপর্যায়ে টোমোনা তার বাবার আত্মার কথা ইনু-ওহকে বললে সে খেয়াল করে হেইক যোদ্ধাদের অনেক আত্মা ইনু-ওহকে ঘিরে রেখেছে এবং তাকে তাদের গল্প বলছে।এ থেকে তারা উৎসাহিত হয়ে পারফরম্যান্স শুরু করে যেখানে টোমোনা তার নাম পরিবর্তন করে টোমোরি রাখে এবং সে নিজেকে তার
সংস্কৃতি থেকে ভিন্ন ভাবে উপস্থাপন করে যেমনঃ- মেয়েলি পোশাক পরতে শুরু করে,মেকআপ করা শুরু করে, এবং চুল বড় রাখে।তারা দুজন আধুনিক যুগের ব্র্যান্ড এর মতো গানের পাশাপাশি নাচ করা শুরু করে,,, আরো কতকি।তারা খুব তারাতাড়ি শহরে বিখ্যাত হয়ে ওঠে।তারা খ্যাতি অর্জন এর পাশাপাশি ইনু-ওহের বিবৃত শরীর ধিরি ধিরে সাভাবি হতে শুরু করে।
এনিমেশন,ভয়সে এক্টিং,সাউন্ডট্র্যাক খুবই ভালো।আনেক কালারফুল একটা এনিমে।ভয়সে এক্টাররা প্রতিটি কথাকে যেভাবে গানের মাধ্যমে বলেছে তা অসাধারণ।সব মিলিয়ে খুবই মজার একটা এনিমে এটা।

Sakib’s Hidden Gems – Episode #54

আনিমে: Memories
জানরা: সাইফাই, হরর, কমেডি, ড্রামা
এপিসোড সংখ্যা: ৩
MAL লিঙ্ক: https://myanimelist.net/anime/1462/Memories
 
নব্বইয়ের দশকে নির্মিত এই anthology সিরিজটা তিনটি ভিন্ন স্বাদের ছোটগল্প মিলিয়ে মুভি আকারে পরিবেশিত হয়েছে। এটির সাথে যুক্ত ছিলেন সাতোশি কন ও কাতসুহিরো ওতোমো প্রমুখ সৃষ্টিশীল ব্যক্তি। প্রায় পৌনে দুঘণ্টার এই ফিল্মটি থিমের দিক দিয়ে যেমন মুখরোচক, তেমনি এর আরটিস্টিক ভ্যালুও বলার মতো। তিনটি গল্প নিয়ে আলাদা করে আলোচনা না করলেই নয়।
 
১। Magnetic Rose
দূর ভবিষ্যতে একদল ভ্রাম্যমাণ নভোচারী মহাকাশে ভাসতে থাকা বর্জ্য অপসারণ করতে গিয়ে এক উদ্ভট জায়গার সন্ধান পায়, যেখানে বাস্তব ও পরাবাস্তব মিলেমিশে একাকার হয়ে গিয়েছে। সাতোশি কনের তুখোড় প্রতিভার স্বাক্ষর এটি। মিউজিক ও আর্ট ডিরেকশনের জোরে অসাধারণ ভৌতিক ও রোমাঞ্চকর আবহাওয়া সৃষ্ট হয়েছে এতে, যা দর্শককে শেষ পর্যন্ত বসে থাকতে বাধ্য করে।
 
২। Stink Bomb
জাপানের এক জৈব রাসায়নিক গবেষণাগার থেকে অত্যন্ত গোপনীয় জৈব হাতিয়ার লোকসম্মুখে চলে আসার ঝুঁকি তৈরি হয়। এ ঝুঁকি সামলাতে ও সম্ভাব্য জৈব দুর্যোগ এড়াতে জাপান সরকার কী করে তা-ই লেখকের বস্তুনিষ্ঠ ভাবনায় তীক্ষ্ণ শ্লেষের সাথে পরিবেশিত হয়েছে। গল্পের থিম ও এর মনকাড়া মিউজিক আপনাকে বিশুদ্ধ বিনোদন দিবে।
 
৩। Cannon Fodder
এই গল্পে সম্পূর্ণ সামরিক শাসন নিয়ন্ত্রিত এক সমাজ কল্পনা করা হয়েছে, যেখানে প্রতিটি মানুষ কেবল অস্ত্র বানানো বা অস্ত্র ছোঁড়ার সাথে জড়িত। ভিন্ন স্বাদের আর্টস্টাইল দ্বারা সাহসীভাবে মানব সমাজের মূর্খতাকে বিদ্রূপাত্মক ভঙ্গিমায় দেখানো হয়েছে এখানে।
 
ভিন্ন স্বাদের সৃষ্টিশীল কাজের সন্ধানে থাকলে এই ফিল্মটি নির্দ্বিধায় দেখে ফেলুন।
 

অনিক মিয়ার ক্ষুদে মাঙ্গার বাক্স, পর্ব #০৪

মাঙ্গার নাম : ?????
চাপ্টার : ১৫ টি
মাঙ্গাকা : Oimo
ধরন : রহস্য, শিশু (পোকা) নির্যাতন
 
কীট-পতঙ্গ নিয়ে সাতোশি কিজির এক অদ্ভুত আকর্ষণ কাজ করে। একদিন হঠাৎ অজানা এক পোকার দেখা পায় সে। কিন্তু পোকার মুখটা দেখতে মেয়ে মানুষের মতো। পোকাটিকে সে বাড়িতে নিয়ে আসে। পোকা নিয়ে আকর্ষণ থাকলেও পোকার প্রতি খুব যে যত্ন নেয় তা নয়। উলটো পোকার সাথে যাচ্ছেতাই আচরণ করাটাই তার স্বভাবের সাথে যায়। কিন্তু এই খারাপ আচরণকে অদ্ভুত মেয়ে পোকাটা অস্বাভাবিক হিসাবে নেয় না। কারণ জন্মের পর সাতোশিকেই শুধু দেখেছে পোকাটি। ভালো-মন্দের তফাৎ করার মতো জ্ঞান এখনো হয়নি। লোকচক্ষুর আড়ালে অজানা পোকা পালন, অন্যদিকে ভিনগ্রহী সদৃশ কিছু উটকো পতঙ্গ মেয়ে পোকাটিকে খুঁজে চলেছে দিক-বিদিক। কে এই মেয়ে পোকা? কেনই বা একে হন্যে হয়ে খুঁজছে অন্য কিছু পোকা? সাতোশির সাথে পোকার সম্পর্ক আগাবে কীভাবে এসব নিয়ে গল্পের ফোকাস।
মাঙ্গাটা পড়ে অধিকাংশের ভালো লাগবে, এমনটা আমি আত্মবিশ্বাসের সাথে দাবি করতে পারছি না। কিন্তু এ ধরনের অতিপ্রাকৃত, অদ্ভুতুরে অভিজ্ঞতা এখন পর্যন্ত তেমন পাইনি আমি। পোকা নিয়ে একটা গা ঘিনঘিন ব্যাপার তো এখানে রয়েছেই, আবার সামনে কী হবে এমনটা ভেবে থ্রিল নেওয়ার অবকাশও রয়েছে মাঙ্গাটিতে। তাই কিছুটা বিরল গল্প অবলোকনের অভিজ্ঞতা সঞ্চারে এই মাঙ্গাটি পড়ার সুপারিশ করব সবাইকে।
 
✪জানলে ভালো, না জানলে ক্ষতি নাই✪
পৃথিবীতে প্রায় সাড়ে ১৮ হাজার প্রজাতির এবং তার চেয়ে অধিক রঙের মিশেলের প্রজাপতি রয়েছে। প্রজাপতির রঙবেরঙের ডানা কিন্তু প্রকৃতপক্ষে স্বচ্ছ। কাইটিনের তৈরি এই ডানাগুলো আসলে হাজার হাজার ক্ষুদ্র আঁশ দিয়ে গঠিত। বিভিন্ন অ্যাঙ্গেলে সূর্যের আলো এই আঁশগুলোতে প্রতিফলিত হয়েই অজস্র প্যাটার্নের রঙিন অবস্থার সৃষ্টি করে।
 
 

Yawara! A Fashionable Judo Girl [রিভিউ] — Nazmus Sakib

আনিমে – Yawara! A Fashionable Judo Girl
এপিসোড সংখ্যা – ১২৪ + ১টি মুভি
লেখক – নাওকি উরাসাওয়া
স্টুডিও – ম্যাডহাউজ
ম্যাল রেটিং – ৭.৫০
ব্যক্তিগত রেটিং –
 
ধীরলয়ের, রিল্যাক্সিং, ও ব্যতিক্রমী স্পোর্টস কমেডি ড্রামা। “মন্সটার”- খ্যাত উরাসাওয়ার অপেক্ষাকৃত হাল্কা স্বাদের ও হ্যাপি মুডের কাজ এটি। পুরোনো দিনের স্লো পেসড ড্রামা দেখতে চাইলে এটি হতে পারে আইডিয়াল।
 
সংক্ষিপ্ত পরিচিতিঃ
সময়কাল আশির দশকের শেষদিক। ভীষণ প্রতিভাধর এক জুডো খেলুড়ে পরিবারের তৃতীয় প্রজন্মের কিশোরী মেয়ে ইয়াওয়ারা। জুডোতে তার জুড়ি মেলা ভার। কিন্তু জুডোতে মোটেও আগ্রহ নেই ওর। সে বরং চায় সাধারণ মেয়ের মতই জীবনটাকে উপভোগ করতে, যৌবনের স্বাদ নিতে, ট্রেন্ডি স্টাইলের কাপড়চোপড় পরতে। কিন্তু বাদ সাধেন ওর দাদু। এক সময়কার ডাকসাইটে জুডোকা ঐ দাদুর শাসনে ইয়াওয়ারাকে প্রতিনিয়ত জুডোর প্র্যাকটিস করতে হয়। তার দাদুর একটাই ইচ্ছা – ইয়াওয়ারা যেন বার্সেলোনা অলিম্পিকে স্বর্ণ জয় করে। শুরু হয় ইয়াওয়ারার স্বাভাবিক জীবন আর জুডোকা হিসেবে ক্যারিয়ারের মাঝে ব্যালেন্স করে পথচলা। পথে ওর অনেক বন্ধু জুটে, ভালোবাসার পাত্রও জুটে যায়। এভাবেই আমাদের চোখের সামনে সে বেড়ে উঠতে থাকে আর জীবনের নানা মোড় পেরোতে থাকে।
 
গল্পঃ ৭
ট্রাডিশনাল স্পোর্টস সিরিজগুলো থেকে এটি একটু আলাদা। এখানে মেইন ক্যারেক্টার ইতিমধ্যেই বিশ্বের সেরা খেলোয়াড় হবার দাবি রাখে। কিন্তু সে কিছু মানসিক বাধার কারণে নিজের ফুল পটেনশিয়ালটা ব্যবহার করতে দ্বিধাবোধ করে। উল্টাদিকে ওর সাফল্যে উদ্বুদ্ধ হয়ে বেশ কিছু রাইভ্যালের আবির্ভাব ঘটে, যারা দিনরাত খেটে ওর লেভেলে যাবার চেষ্টা করতে থাকে। এর পাশাপাশি গল্পে ঐ সময়কার জীবনের নানা দিক ও আবেগ ফুটে উঠেছে নৈপুণ্যের সাথে।
 
চরিত্রায়ণঃ ৯
সিরিজের স্ট্রং পয়েন্ট আসলে এই জায়গাতেই। ইয়াওয়ারাকে ভালো না লেগে থাকাই যায় না, এমন করেই বাস্তবতার ছোঁয়া দিয়ে তাকে গড়ে তুলেছেন লেখক। প্রায় প্রতিটা পার্শ্বচরিত্রের আছে আলাদা বৈশিষ্ট্য, যা মনে গেঁথে যায়। বেশ দীর্ঘ এই সিরিজে মূল চরিত্র ছাড়াও এদের সবাইকে সময় নিয়ে ফুটিয়ে তুলতে পেরেছেন লেখক। প্রায় কেউকেই ওয়ান ডিমেনশনাল বলা যাবে না।
 
আর্ট ও এনিমেশনঃ ৮
আনিমের সময়কার আর্ট ও এনিমেশন স্টাইল ফলো করা হয়েছে। উরাসাওয়ার চিরাচরিত বাস্তবধর্মী ডিজাইনের প্রয়োগ ঘটেছে এখানে, যা গল্পের সাথেও যুতসই হয়েছে। “A Fashionable Judo Girl ” তকমা পাওয়া ইয়াওয়ারাকে একেক এপিসোডে একেক সাজে দেখতে পাওয়া যায়। জুডো ম্যাচের ডাইন্যামিক মুভমেন্টগুলো যত্নের সাথে দেখানো হয়েছে।
 
সাউন্ডঃ ৭
তিনটার মতো আলাদা ওপেনিং ও এন্ডিং গান ব্যবহার হয়েছে। কয়েকটা বেশ মনে ধরার মতো। তাছাড়া পুরনো দিনের কিছু সুদিং মিউজিক শোনা যাবে এই আনিমেটিতে।
 
এঞ্জয়মেন্টঃ ৯
উরাসাওয়ার ও পুরনো দিনের আনিমে ভক্ত হিসেবে এটি সত্যিকার অর্থেই এঞ্জয় করেছি। মধ্যভাগে এসে খুব বেশি স্লো হয়ে যাওয়ায় ধৈর্যচ্যুতি যে একেবারেই হয়নি তা বলতে পারি না, তবে মোটের উপর এটি দেখে সময়টা দারুণ কেটেছে। দেখার পর আনিমেটাকে মিস করছি। আনিমেটি দেখতে গিয়ে নানা সময়ে বিভিন্ন রকম আবেগ অনুভব করেছি। চরিত্রগুলিকে খুব কাছের মনে হয়েছে।
 

অনিক মিয়ার ক্ষুদে মাঙ্গার বাক্স, পর্ব #৩

মাঙ্গার নাম: Oyaji
চাপ্টার: ২৪টি
মাঙ্গাকা: Tsuru Moriyama
ধরন: হাস্যরসাত্মক, নাটকীয়, জীবনবোধক
 
কুমাদা এক বিশালদেহী, ভয়ংকর দেখতে মানুষ। কোনো এক কারণে বহু বছর জেলে কারাভোগ করতে হয়েছে। কিন্তু লোকটা খুব ভালো। এতগুলো বছর পরিবারের খবর রাখতে পারেনি। তাই বাবার অনুপস্থিতিতে সন্তানেরা উচ্ছন্নে গিয়েছে। একজন হয়েছে এলাকার পাতি মাস্তান, যদিও বড় মাস্তান দেখলেই ভয়ে পালায়। আরেকজন প্রেম জীবন নিয়ে ঝামেলায় জানটাই হারাতে বসেছে। অন্যদিকে সংসারের ভাড়ে স্ত্রী হারিয়েছে তার রূপ-লাবণ্য, যৌবন, মানসিক শান্তি।
অনেক বছর পর ঘরে ফিরেছে কুমাদা। এত বছর পরিবারে না থাকার ফলে দায়িত্ব-কর্তব্য কিছুই পালন করতে পারেনি। তাই যতটুকু সামর্থ্য আছে, তা এবার ঢেলে দিতে চায় পরিবারের জন্য। কিন্তু কুমাদার চেহারা-সুরত দেখে নিজের সন্তানেরাই তাকে নিয়ে অস্বস্তিতে আছে। বাপজান আবার কথাও বলে অতি অল্প। সারাদিন ঢোক ঢোক করে মদ গিলে। কিছুতেই বল-ব্যাটে মিলছে না দুই পক্ষের। তাদের বনিবনা হওয়া এবং স্বল্পভাষী পিতার অস্বাভাবিক সব উপায়ে পরিবারকে রক্ষা করা নিয়েই মাঙ্গাটি।
 
✪জানলে ভালো, না জানলে ক্ষতি নাই✪
“ও-য়াজি” শব্দটি মূলত “ও-য়াচিচি” শব্দের অপভ্রংশ। যা আবার “চিচিহুয়ে” হতে এসে থাকতে পারে(?)। সবগুলোর আক্ষরিক অর্থ “পিতা/বাবা”। ওয়াজি শব্দটা তার মধ্যে সবচেয়ে casual । “বুড়া বাপ” এর জাপানি সংস্করণ বলা যায়। বাপ ছাড়াও অপরিচিত চাচা, মামা বয়সী লোকজনকেও ও-য়াজি বলে অনেকে। প্রায় সবাই হয়ত জানেন ব্যাপারটা তাও জানালাম।
 

অনিক মিয়ার ক্ষুদে মাঙ্গার বাক্স, পর্ব #২

মাঙ্গার নাম: Koukoku no Shugosha
চাপ্টার : ৩৪টি
মাঙ্গাকা: Satou Daisuke
ধরন: ঐতিহাসিক, সামরিক, ফ্যান্টাসি
 
দুই প্রতিবেশী দেশ কৌকোকু এবং তেইকাকু। ক্ষমতা ও প্রভাবের লড়াইয়ে লড়ে চলেছে তারা। তবে এতদিন কূটনৈতিক পর্যায়ে থাকলেও তা শীঘ্রই মাঠের লড়াইয়ে রূপ নেয়। উত্তরের হীম শীতল অঞ্চলের দখলটা নিয়ে শুরু হয় প্রথম ঝামেলা। শুধু মানুষ নয়, সঙ্গে লড়ছে ঘোড়া, লড়ছে বাঘ সদৃশ বিড়ালেরা।
হঠাৎ একদিন তেইকোকুর পূর্ব ডিভিশনের সেনারা আচমকা হামলা করে কৌকোকুর উত্তরাঞ্চল প্রতিরক্ষায় নিয়োজিত বাহিনীর উপর। ভারী, উন্নত অস্ত্র ও সমর কৌশলের সামনে তাসের মতো ভেঙ্গে পড়ে কৌকোকুর প্রাথমিক প্রতিরক্ষা। শত্রুর প্রথম ধাক্কায় উদভ্রান্তের মতো রণে ভঙ্গ দিয়ে পালাতে থাকে কৌকোকুর সেনারা। কিন্তু সুশৃঙ্খলভাবে পিছু হটে ক্ষয়ক্ষতি কমাতে দরকার এমন এক ইউনিটের, যারা মূল বাহিনী নিরাপদে সরার আগ পর্যন্ত শত্রুর অগ্রাভিযান রোধ করে রাখবে। সামরিক ভাষায় যাকে বলে Rear guard action । এই কাজে ডাক পড়লো ফার্স্ট লেফটেন্যান্ট শিঞ্জো নাউয়ের ব্যাটালিয়নের। প্রথম আক্রমণে তার ব্যাটালিয়নের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা হয় মৃত, আহত, নয়তো বন্দী। সেনা সংখ্যাও হ্রাস পেয়েছে ব্যাপক। তবু সাকুল্যে ৬০০ সৈন্যের এই ব্যাটালিয়নকে রুখে দিতে হবে শত্রুকে। ৪০ হাজার সেনার বিশাল শত্রুকে বেধে রাখা লাগবে যতক্ষণ না তাদের বাহিনী নিরাপদ পশ্চাদপসরণ সম্পন্ন করে। প্রয়োজনে শেষ সিপাহির প্রাণের বিনিময়ে হলেও লড়ে যেতে হবে এই ইউনিটকে।
এই অসম যুদ্ধে আদৌ কতক্ষণ টিকবে শিঞ্জোর ব্যাটালিয়ন, কৌকোকুর মূল বাহিনী নিরাপদে পিছু হটতে পারবে কি না – এই কাহিনি নিয়েই মাঙ্গাটি।
মাঙ্গাটায় যদিও কিছু কিছু সময় ভাগ্যের খেল দেখে বাড়াবাড়ি লাগতে পারে, তবে যুদ্ধে ভাগ্য বিধাতার সহায়তার অনেক ইতিহাস, পৌরাণিক গল্পই তো আমরা জানি। কাহিনি এমনিতে যথেষ্ট বাস্তবিক ও চিত্তাকর্ষক। বিশুদ্ধ যুদ্ধ নিয়ে মাঙ্গা বিরল। যদিও এনিমের তুলনায় পরিমাণটা একটু বড়। সেরকম একটার নমুনা এই মাঙ্গাটি।
 
✪জানলে ভালো, না জানলে ক্ষতি নাই✪
মাঙ্গাটির প্রেক্ষাপট ঊনিশ শতকের শেষ দিকে রুশ-জাপানি সাম্রাজ্যবাদী স্বার্থ সংশ্লিষ্ট দ্বন্দ্বের একটা অল্টারনেট সেটিং এর উপর ভিত্তি করে গড়া। এশিয়াতে রাশিয়ার পূর্বমুখী বিস্তার এবং জাপানের মেইজি যুগ পরবর্তী সময়টার একটা বিকল্প রূপ দেখানো হয়েছে গল্পে। ইতিহাস প্রেমীদের জন্য একটা আকর্ষণীয় দিক হতে পারে মাঙ্গাটা। উপরে মাঙ্গাকার নাম হিসাবে সাতো দাইসুকের নাম লিখেছি। ইনি কিন্তু সেই একই ভদ্রলোক যিনি Highschool of the Dead এর মূল গল্প লেখক। অনেকেই জানেন তিনি হৃদরোগে ভুগে মারা গিয়েছেন ২০১৭ সালে। ভদ্রলোক অল্টারনেটিভ ইতিহাস নিয়ে বিভিন্ন গল্প লিখতে খুব পছন্দ করতেন। এটা ছাড়াও এরকম কিছু মাঙ্গায় কাজ করেছেন তিনি, যদিও সেগুলোর অনুবাদ না থাকায় নেটে নেই বললেই চলে। অন্যদিকে পোস্টের মাঙ্গাটির আঁকিয়ে হিসাবে কাজ করেছেন Itoh Yu । ২০০৪ সালের মাঙ্গা হিসাবে স্ট্যান্ডার্ড আর্ট বলা যায়।
 

Kenichi the Mightiest Disciple [রিভিউ] — Zunaid Mashrafee

কেনিচি দ্য মাইটিয়েস্ট ডিসাইপল
Kenichi the Mightiest Disciple
 
জাপানি উচ্চারণ: শিজো সাইকিয়ো নো দেশি কেনিজি
মাঙ্গা:
(original)
লেখক:-সিয়ুন মাৎসুয়েনা
প্রকাশকাল:-১৯৯৯-২০০২
ভলিউম:-৫
(Remake)
এপ্রিল ২০০২-সেপ্টেম্বর ২০১৭
ভলিউম:-৬১টি
এনিমে:
প্রকাশকাল:-অক্টোবর ২০০৬- সেপ্টেম্বর ২০০৭
এপিসোড সংখ্যা: ৫০টি
স্টুডিও:- TMS entertainment
নির্দেশনা:-হাজিমে কাগেয়ামা
ওভিএ:
প্রকাশকাল: মার্চ ২০১২-২০১৪
স্টুডিও: Brains Base
পর্বসংখ্যা: ১১
 
 
একটি চরম underrated এনিমে।
শোনেন জনরায় কিছু বিষয় এতোই কমন যা প্রতিটি এনিমেতেই এসে হাজির হয়। তাদের মধ্যে একটি বিষয় হলো, দুর্বল চিকনচাকন প্রধান চরিত্রের হাট্টাকাট্টা বিশ্ববিজয়ী হয়ে ওঠার গল্প। এইটা প্রায় ঘুরিয়ে ফিরিয়ে সব শোনেনে পাওয়া যায়, যার ফলে এটাই সবচেয়ে কমন “ট্রোপ”।
বিরিয়ানি তো দিনশেষে গিয়ে ভাত আর মাংস‌ই। কিন্তু রন্ধনের পদ্ধতি আর গুণে কিছু হয় কাচ্চি, কিছু হয় তেহারি কিছু হয় স্রেফ খাওয়ার অযোগ্য। শোনেন‌ও তেমনি এক‌ই কনসেপ্টের উপর বেজ করে হলেও কাহিনী বর্ণনার গুণে কোনগুলো লিজেন্ড, কোনগুলো উল্লেখ করার মতো না।
আর তারপর আসে কেনিচি দ্য মাইটিয়েস্ট ডিসাইপলের মতো আন্ডাররেটেড, কেউ চিনে না টাইপ রত্ন।
জাপানি স্কুল পড়ুয়া চিকন চাকন বুলির হাতে পেদানি খাওয়া ছেলে কেনিচি। নিজেকে ডিফেন্ড করা শিখতে তাই বিভিন্ন ব‌ইপত্র পড়ে কেনিচি। কিন্তু গ্রন্হগত বিদ্যা দিয়ে কি আর বাস্তবজীবনে টিকে থাকা যায়?
বিশ্বাসে মিলায় বস্তু, তর্কে বহুদূর। বিশ্বাস হোক, আর যা হোক কোনো না কোনোভাবে রিওজানপাকু বলে একটা মার্শাল আর্ট দোজোর সন্ধান পায়। পায় বলতে, দোজোটা তাকেই একধরণের খুঁজে নেয়।
এই এনিমেটাতে যেই জিনিসটা ভালো লেগেছে, সেটা হলো মার্শাল আর্টের বাস্তবসম্মত উপস্হাপন। টেকনিক ও প্রাক্টিসের সমন্বয়ে যে সাধারণ মানুষ‌ও অসাধারণ কিছু করে দেখাতে পারে, এই মেসেজটা এখানে স্পেশাল। পপুলার মার্শাল আর্ট এনিমেগুলো বলতে সাধারণত আমরা যেগুলো চিনি, যেমন বাকি দ্য গ্রাপলার, কেনগান আশুরা এগুলোর থেকে কেনিচি দ্য মাইটিয়েস্ট ডিসাইপলের একটা দিক একটু অনন্য বলতে হবে। এখানে নেই কোন ভয়ংকর রকমের রক্তারক্তি বা masculine fantasy. এটা আমার আপনার মতো স্রেফ একটা সাধারণ ছেলের বুলির বিপক্ষে রুখে দাঁড়ানোর একটা অসাধারন কাহিনী।
কাহিনীর পেসিং শুরুর দিকে ভালো থাকলেও মাঝখানে একটু বোরিং লাগতে পারে, তবে ধৈর্য ধরে দেখতে থাকলে রতন পেতে পারেন। এনিমেশনটা পুরনো যুগের এনিমের মতোই, ঐখান থেকে ঝা চকমকে ইউফোটেবল বা মাপ্পা ক্লাসের কিছুই পাবেন না। কমেডি আছে প্রচুর, কারো কাছে একটু sketchy লাগতে পারে। কেনিচির সময় সময় হাল্কা করে মরে যাওয়ার expression টা দারুণ লেগেছে।
তো, সময় করে দেখে নিতে পারেন এই আন্ডাররেটেড এনিমেটা। কম ভালো লাগলেও হতাশ হবেন না। আর Ost টা মিস করবেন না।

অনিক মিয়ার ক্ষুদে মাঙ্গার বাক্স, পর্ব #১

মাঙ্গার নাম: Saltiness
চাপ্টার: ৪৪ টি
মাঙ্গাকা: Furuya Minoru
ধরন: হাস্যরসাত্মক, সেইনেন, স্লাইস অফ লাইফ
 
হিমুকে তো চিনেন? হুমায়ুন আহমেদের হলুদ হিমু। সেই ভবঘুরে, উদ্ভট চালচলন, মাথা চক্কর দেওয়া থতমত খাওয়া দার্শনিক কথাবার্তার হিমু।
Saltiness মাঙ্গার কেন্দ্রীয় চরিত্র তাকেহিকো নাকামুরা কিছুটা হিমুর মতোই, কিন্তু হিমু না। কর্মহীন , ঘুরঘুর, খাইখাই করা সমাজের অকর্মা লোকটি “জীবন” কে বশীভূত করে ফেলেছে বলেই বিশ্বাস করে। দুনিয়ার সকল প্রকার দুঃখ, কষ্ট, ভেজালের ধরাছোঁয়ার বাইরে সে। তয় একদিন বোধদয় হয় প্রিয় বোনের মাথা থেকে বোঝা কমাতে নিজে থেকে কিছু করতে হবে। যতদিন সে তার বোনের ঘাড়ে চেপে থাকবে, বোনের আর বিয়ে করা হবে না, সংসার পাতা হবে না। সে যেই “জীবনকে” বশীভূত করে ফেলেছিল বলে ভেবেছিল, সেই জীবনের বাস্তবতা এক ধাক্কায় তাকে চুরমার করে দিল। “জীবন” নামের এক হিংস্র অস্তিত্বের সম্মুখীন হলো সে । এই হিংস্র জিনিসটাকে বধ করার সুবুদ্ধি হবার সাথে সাথেই তার মাথায় ঢুকে আরেক কুবুদ্ধি। হঠাৎ করেই ঘর থেকে পালায়। গ্রাম ছেড়ে টোকিওর উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। দাড়াতে হবে নিজের পায়ে। টোকিও পৌছে সাক্ষাৎ হয় নানা কিসিমের weirdo দের সাথে। আর এইসব অস্বাভাবিক প্রাণীরা একত্রিত হয়ে যখন নানা তরিকায় জীবিকা নির্বাহের সন্ধান চালানো শুরু করলো, হাস্যকর সব ঘটনাও অবতীর্ণ হতে থাকল।
মাঙ্গার আর্ট সুন্দর, পরিচ্ছন্ন। বিশেষ করে এই মাঙ্গাকার খোঁচা খোঁচা দাড়িওয়ালা চেহারা আঁকার দৃশ্যের ভক্ত হয়ে গেছি। ৪৪ চাপ্টারের কাহিনি আগেই শেষ। সম্প্রতি ইংলিশ অনুবাদ সমাপ্ত হয়েছে। তাই আপনার হাতে সময় কম থাকলে, নিখাদ বিনোদন পেতে চাইলে আজই শুরু করে দেন Saltiness!