[NOTE: রিভিউতে বেশ বড় কিছু স্পয়লার আছে, তাই আনিমেটি দেখে না থাকলে রিভিউ পড়বার সময়ে সতর্ক থাকুন। – Animekhor Admin Panel]
———————————————————————————————–
এনিমে : প্যারাসাইট দ্যা ম্যাক্সিম (কিসেইজু-সেই নো কাকুরিতসু)
এপিসোড : ২৪ টি
MyAnimelist Score : 8.67
জেনার: অ্যাকশন, সাইকোলজিক্যাল, সাই-ফাই,ড্রামা
প্রযোজনা: ম্যাডহাউজ ও ভিওপি
শর্ট সিরিজ এনিমের মাঝে যারা অতিরিক্ত মাত্রায় উত্তেজক আর ড্রামাটিক গল্প খুজে বেড়াচ্ছেন,তাদের জন্যই যেন রয়েছে প্যারাসাইট দ্যা ম্যাক্সিম। হিতোশি ইওয়াকির সাইন্স ফিকশনাল মানগা ‘কিসেইজু-সেই নো কাকুরিতসু’ এর আলোকে এই এনিমেটি বানানো হয়েছে।।
১৭ বছর বয়সী এক তরুণ শিনিচি ইজুমি প্রতিদিনকার মত ডিনার সেরে আইপড আর কানে ইয়ারফোন লাগিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। হঠাৎ নাকে অস্বস্তি অনুভব করলে হাচি দিয়ে তার ঘুম ভাঙ্গে।সে দেখতে পায় একটি ক্ষুদ্র জীব তার হাত ভেদ করে উপরের দিকে উঠছে। এমতাবস্থায় সে ইয়ারফোন এর তার দিয়ে তার হাতের উপরের অংশ বেধে ফেলে,যাতে সেটি আর উপরে উঠতে না পারে। এই জীবগুলোই এনিমের প্রধান প্রকরণ পরজীবী প্যারাসাইট। এরা ভ্রুনাবস্থায় মুক্ত হয়ে নিকটবর্তী মানুষের মস্তিষ্ক হরণের চেষ্টা করে। কিন্তু শিনিচির ক্ষেত্রে তার প্যারাসাইট শুধু হাতের অংশে বৃদ্ধি লাভ করে।আর এভাবেই সাধারণ হাইস্কুল ছাত্র শিনিচি ইজুমি জড়িয়ে পড়ে এক রক্ত-রহস্যের খেলায়।
টোকিও তে নানা জায়গায় মানুষের ক্ষত-বিক্ষত লাশ পাওয়া শুরু হয়।বলা বাহুল্য প্যারাসাইট এর শিকার ইজুমি একা নয়,অনেকেই হয়েছিল। যারা পুরোপুরি প্যারাসাইট দ্বারা নিয়ন্ত্রিত তারাই জড়িত ছিল এই হত্যাকান্ডগুলোতে।
গল্পের আরেক প্রধান চরিত্র মুরানো সাতোমি(ইজুমির সহপাঠী ও বন্ধু), ইজুমির মাঝে কিছু পরিবর্তন লক্ষ্য করে। ফলে ইজুমিকে বাইরের কাছ থেকে প্যারাসাইট এর গোপনীয়তা রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়ে।
অত:পর আবির্ভাব হয় তামিয়া রেইকো নামের এক প্যারাসাইটিকের,যে প্যারাসাইট আর মানুষের মধ্যে জীববৈজ্ঞানিক গবেষণার মাধ্যমে গোতোউ এর মত শক্তিশালী প্যারাসাইট তৈরিতে সক্ষম হয়। সে শিনিচির স্কুলে গণিতের প্রভাষক হিসেবে যোগদান করে। একই সময়ে শিনিচির বাবা-মা ভ্রমণ করতে গেলে সেখানেই এক প্যারাসাইটিকের হাতে শিনিচির মায়ের মৃত্যু হয়। তারপর ঘটনাচক্রে শিনিচির মআমায়ের প্যারাসাইটের হাতেই শিনিচি জখম হয়, কিন্ত শিনিচির প্যারাসাইট মিগির সহায়তায় প্রাণে বেচে যায় সে। কিন্ত মিগির হৃৎপিন্ড প্রতিস্থাপন এর ফলে শিনিচির মাঝে কিছু সুপারন্যাচারাল শক্তি দেখা যায়। এদিকে হিরামা নামের এককজনকে টোকিও মেয়র নির্বাচন এপ্রার্থী বানিয়ে প্যারাসাইটিকের কতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করার নীলনকশা করে। বিচিত্র ঘটনার মধ্য দিয়ে পরিস্থিতি আরো ঘোলাটে হতে থাকে।
কিন্ত এনিমেটিতে আবেগময় ও কান্নার দৃশ্যও রয়েছে, যা এনিমেটিতে যোগ করেছে ভিন্ন মাত্রা। কানা কিমিশিমার দুর্ভাগ্যজনক ট্রাজিক মৃত্যু যেকোনো দর্শক এর হৃদয়স্পর্শ করবে। কানা তার অন্তিমকালে শিনিচির কাছে তার ভালোবাসার কথা প্রকাশ যেন এতো রক্তাক্ত বাস্তবতার মাঝেও আবেগী রোমান্টিসিজমের অবতারণা করেছে।
কিন্ত পরিস্থিতি বেশি খারাপের দিকে যেতে শুরু করলে সরকার অঅনুমোদিত বিশেষ গোয়েন্দা বাহিনী মুখোমুখি আক্রমণ পরিহার করে এসল্ট হিডেন পরিকল্পনায় অগ্রসর। গল্পের বাকিটা এনিমখোরদের জন্যই থাক।
অনেকেই বলে শর্ট সিরিজের এনিমে লং সিরিজের এনিমের মত মনে রেখাপাত করতে পারে না।তাদের জন্য বলবো,প্যারাসাইট এনিমেটি দেখুন। এটি আমার দেখা সেরা ১০ এনিমের মধ্যে একটা।তাই এই এনিমের প্রতিটি এপিসোড শেষে আপনি পরের এপিসোডে কি হবে তা ভেবে হাত বা আংগুল কামড়ানো, চুল ছেড়া ইত্যাদি করতে পারেন।
আর এনিমের শুরুতে ‘Fear & Loathing inn Las Vegas ‘ এর ‘Let me Hear’ গানটি এনে দেবে অন্যরকম উন্মাদনা।
সুতরাং, আর দেরি কেন,আজই শুরু করে দিন প্যারাসাইট দ্যা ম্যাক্সিম, ভালো না লাগা রীতিমতো অসম্ভব।
প্যারাসাইট সংক্রান্ত কিছু লিনক:
http://www.imdb.com/title/tt3358020/
http://www.crunchyroll.com/parasyte-the-maxim
https://www.youtube.com/watch?v=9ho1ZRZv6aQ
https://www.youtube.com/watch?v=yGvyH4hh4SY
http://myanimelist.net/anime/22535/Kiseijuu:_Sei_no_Kakuritsu