এনিমেঃ Katekeyo Hitman Reborn!
জনরাঃ অ্যাকশান, কমেডি, শউনেন, সুপার পাওয়ার
পর্ব সংখ্যাঃ ২০৩
মাই এনিমে লিস্ট রেটিংঃ ৮.৪৩
ব্যাক্তিগত রেটিংঃ ৯.০০
আমরা সকলেই হয়তো অনেক অ্যাকশান-শউনেন এনিমে দেখি থাকি। যেমন নারুতো, ব্লিচ, ওন পিছের নাম তো সবার মুখে মুখেই শোনা যায়। কিন্তুু আপনি কখনো রিবর্নের নাম শুনেছেন? যদি না শুনে থাকেন তাহলে দেরি না করি মাফিয়া নিয়ে এই বেতিক্রম ধর্মী শউনেন এনিমেটা দেখার ট্রাই করুন। আপনি অ্যাকশান-শউনেন এনিমের ভক্ত হলে অবশ্যই আপনার রিবর্ন ভালো লাগবে। যদিও রিবর্নের জনপ্রিয়তা নারুতো, ব্লিচ, ওন পিছের মতো না। কিন্তুু তারপরেও রিবর্ন বেশ ভালো লাগার মতো একটি এনিমে। একটি অ্যাকশান-শউনেন এনিমেতে অ্যাকশান, ক্যারেক্টার ডেভেলপমেন্ট থেকে শুরু করে যা যা থাকা প্রয়োজন তার সবই রিবর্নে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
কাহিনী (৮/১০):
কাহিনী ঠিক এমন এক সময় যখন মাফিয়া ওয়ার্ল্ড নিয়ন্ত্রণ করে ইটালির সবচেয়ে শক্তিশালী মাফিয়া পরিবার “ভঙ্গলা”। বর্তমান ভঙ্গলা পরিবারের হেড ৯ম, এর জীবনকাল প্রায় শেষ হয়ে এসেছে। এখন সে অবসর গ্রহন করবে। কিন্তুু অবসর গ্রহনের পূর্বে সে চায় নতুন হেড নির্বাচন করতে। আর সে জন্য তিনি একজন প্রফেশনাল হিটম্যানের সহযোগিতা চায়; যার নাম রিবর্ন।
এনিমের প্রধান চরিত্র সাওয়াদা সুনায়োশি; সংক্ষেপে সুনা। অত্যন্ত সাধারন টাইপের একজন কিশোর। বেক্তিগত জীবনে সে খুবই অবহেলিত। স্কুলের জনপ্রিয়তা তো দূরের কথা তার কোন বন্ধুও নেই। স্কুলের পরীক্ষার ফলাফলও খারাপ। এমন এক কিশোরের জীবনে হতাশা ছাড়া আর কিছুই আশা করা যায় না। কিন্তুু হটাত একদিন সকালে তার বাড়িতে এসে হাজির হয় রিবর্ন। সুনার আপত্তি থাকা সত্তেও সে তার গৃহশিক্ষক হয়ার দাবি জানায়। এভাবেই দেখা হয় সুনা আর রিবর্নের। শুরু হয় সুনার জীবনের নতুন অধ্যায়, পরিবর্তন ঘটে তার ভাগ্যের। আর এখান থেকেই শুরু হয় নতুন ভঙ্গলা বস হওয়ার গল্প।
আর্টওয়ার্ক (৮/১০):
আর্টওয়ার্ক যে কোন এনিমেরই বড় একটা ফ্যাক্ট। আর্টওয়ার্ক ভালো না হলে দর্শক এনিমে দেখার জন্য আগ্রহি হয় না। রিবর্ন এর এনিমে এডাপশন করেছে আর্টল্যান্ড স্টুডিও। আর্টল্যান্ডের ততো বেশি কাজ আমি দেখি নি। তবে তাদের কাজগুলোর মধ্যে মুশিশি উল্লেখযজ্ঞ। ২০০৬ সালের এনিমের আর্টওয়ার্ক হিসেবে রিবর্নের আর্ট যথেষ্ট ভালো। তবে শেষের দিকের এপিসোডগুলার আর্টওয়ার্ক, প্রথম দিকের আর্টওয়ার্কের তুলুনায় আরও ভালো। আর আমার কাছে সবচেয়ে ভালো লেগেছে অ্যাকশান সিনগুলোর আর্টইফেক্টগুলো।
সাউন্ড এফেক্ট (৯/১০):
রিবর্ন এনিমে দেখেছে কিন্তুু এর সাউন্ড এফেক্ট ভালো লাগেনি এমন মানুষ মনে হয় খুব কমই আছে। সত্যি বলতে কি এই এনিমের সাউন্ড এফেক্টগুলা আমার কাছে অসাধরন লেগেছে। প্রায় প্রতিটি ওপেনিং এবং এন্ডিং গানই বেশ ভালো। আর অবশ্যই ওএসটিগুলা আমার কাছে আরও ভালো লেগেছে। অ্যাকশান সিনগুলার সময় একেবারে পারফেক্টওএসটি ব্যাবহার করেছে। (আমার পছন্দের একটি ওএসটি – https://www.youtube.com/watch?v=iS-npAstKBo) ওপেনিং গানগুলার মধ্যে আমার মাসামি মিতসুকার গাওয়া “লাস্ট ক্রস” গানটা বেশ ভালো লেগেছে। (ফুল ভার্সন সুন্তে চাইলে এই লিঙ্কে ঘুরে আসুন – https://www.youtube.com/watch?v=sEcdvzbDLeQ) । এছাড়া এনিমেতে সেইয়ু হিসেবে কায করেছে সাতমি আকেসাকা ও তাকাসি কন্দউর মতো আরও নামকরা সেইয়ু।
ক্যারেক্টার (১০/১০):
রিবর্নের অন্যতম কি-পয়েন্ট হল এর ক্যারেক্টারগুলো। যদিও দুই-একটি বিরক্তিকর ক্যারেক্টার রয়েছে (যেমন- ল্যাম্বো) তারপরেও সবগুলো ক্যারেক্টারই উনিক টাইপের এবং প্রায় প্রতিটি ক্যারেক্টারই আমার ভালো লেগেছে। এনিমের মেইন ক্যারেক্টারগুলোর পাশাপাশি অন্যান্য ক্যারেক্টারগুলোও খুব যত্ন সহকারে বানানো হয়েছে। আমার কাছে সুনার “ডাইং ফ্লেম মোড” খুব ভালো লেগেছে। এছাড়াো আমার পছন্দের ক্যারেক্টারগুলোর মধ্যে অন্যতম হল রিবর্ন, হিবারি আর ইয়ামামোটো।
বিনোদন (১০/১০):
রিবর্ন এমন এক এনিমে যা আপনি একবার দেখা শুরু করলে শেষ না হওয়া পর্যন্ত স্ক্রীনের সামনে থেকে উঠতে পারবেন না। এনিমের অন্যতম ভালো দিক হল এতে গাদা গাদা ফিলার এপিসোড নেই। শুধু কিছু আর্ক শেষে অল্প কিছু ফিলার এপিসোড দেখানো হয়েছে। তাই এনিমেটি খুব ভালোভাবে উপভোগ করা যায়। আমার কাছে প্রতিটি ফাইট অসাধরন লেগেছে। আপনি এনিমেটির যত গভীরে ঢুকতে থাকবেন, দেখবেন কাহিনী তত জমজমাট হতে শুরু করেছে। পরিশেষে বলতে পারি আমি এনিমেটি খুব উপভোগ করেছি।
দোষ-ত্রুটি:
রিবর্নের দোষ-ত্রুটির কথা বলতে গেলে আমি তেমন কোনো দোষ-ত্রুটি খুঁজে পাইনি। যদিও এনিমের শুরুটা অন্যান্য অ্যাকশান-শউনেন এনিমের তুলোনায় খুব উইক; বলতে গেলে অনেকটা গ্যাগ এনিমের মতো শুরু হয়েছিল। কিন্তু যদি আপনি ধৈর্য্য ধরে ২০টা এপিসোড দেখতে পারেন তাহলে আশা করি এরপর থেকে আপনার নিজেরই রিবর্ন দেখার নেশা লেগে যাবে।
আশা করি, রিভিউটি পড়ে ভালো লেগেছে এবং একটু হলেও আপনাদের মনে এনিমেটা দেখার আগ্রহ জন্মেছে। সুতরাং, আপনারা সময় পেলে এনিমেটা দেখা শুরু করে দিন।