Movie Time With Yami – Pseudo Episode (টিং টং মুভি টাইম)

টিং টং, সিউডো মুভি টাইম উইথ ইয়ামি

আজকে মুভি দিবস পালন করলাম, তাই মেলাদিন পরে মুভি নিয়ে আবার কিছু লিখতে ইচ্ছা হল। রিভিউ টিভিউ দেয়া ধাতে পোষাবে না, কোনটা কেমন লাগল খালি সেটা লিখতেসি।

Penguinhighway

১. পেঙ্গুইন হাইওয়ে –

খুবই ভাল লেগেছে। বাচ্চাকাচ্চা পোলাপানের ইঁচড়েপাকা গবেষণা, ট্যান্ট্রাম থেকে শুরু করে শহরের মাঝখানে পেঙ্গুইনের আবির্ভাব, সবমিলিয়ে মোটামুটি উদ্ভট একটা প্লটকে খুব এঞ্জয়েবল ভাবে প্রেজেন্ট করা হয়েছে। একটা মুহূর্তের জন্যও স্লো বা বোরিং লাগেনি। অ্যানিমেশন, ওএসটি খুবই সুন্দর। যেকোনো আনিমেতে আমি ব্যাকগ্রাউন্ড, বাড়িঘর, গাছপালা, আকাশ বাতাসের দিকে আলাদা করে নজর দেই, এইখানে সেগুলো খুবই যত্ন নিয়ে বানিয়েছে, so I’m happy!!

Kimitonamininoretara

২. কিমি তো নামি নি নোরেতারা –

আমি খুবই খুশি যে সিনোপসিস না পড়ে বা কোনোরকম গবেষণা ছাড়া শুধুমাত্র পোস্টার দেখে এই মুভি দেখতে বসেছিলাম। এইজন্য শুরুর ২৪ মিনিটের মিষ্টি অংশটুকু খুব ভাল লেগেছে দেখে। এরপরে মোটামুটি ইমোশনের আপ ডাউনের উপর দিয়ে পার করেছি। প্লট মোটেও নতুন না, এর আগে এরকম প্লট নিয়ে আরও মুভি হয়েছে এবং ভবিষ্যতেও হবে, এক্সিকিউশনের কারণে কাহিনিটা আপন আপন লেগেছে। এন্ডিং পছন্দ হয়েছে। অ্যানিমেশন, ওএসটি ভাল, আমার মাথায় এখন মুভিতে অতি ব্যবহৃত গানটা কন্টিনিউয়াস ঘুরপাক খাচ্ছে।

Ninokuni

৩. নি নো কুনি –

উপরেই রাইড ইওর ওয়েভ নিয়ে যেটা বললাম, সেটার উল্টা ভার্সন এখানে বলব। ইসেকাইতে যাতায়াত, এই টাইপ প্লট মনে হয় তেমন আনকমন না, ওয়েল রিসিভড বলেই হয়ত, কিন্তু আমার মুভিটা তেমন ভাল লাগে নি। 30 minutes into the movie I got bored. পেসিং বাজে লাগল, একেবারেই টানছিল না আমাকে। অন্তত ২০/৩০ বার বোরড হয়ে উঠে গিয়ে অন্য কাজ করে এসে আবার বসেছি। কাহিনী বেশিই প্রেডিক্টেবল, ওয়েল প্রেডিক্টেবল হলে আমার কোনো সমস্যা হয় না ইউজুয়ালি, এটার এক্সিকিউশন ভাল লাগে নি। মেদেতাশি মেদেতাশি মার্কা এন্ডিংটা আমি দুই মাইল দূর থেকে চারচোখো হওয়া সত্ত্বেও দেখতে পাচ্ছিলাম, খুব পেইনফুল ভাবে সেটাই ঘটল। অ্যানিমেশন আহামরি লাগেনি, ওএসটি আদৌ শুনসি কিনা মনে পড়ে না

(নোট – এককালে কোনো কিছু বেশি ভাল লাগলে বলতাম “অতিরিক্ত ভাল লেগেছে”। Today this award goes to Penguin Highway )

কোবাতো বন্দনা – লিখেছেন ইশমাম আনিকা

download

“কোবাতো” আনিমেটা দেখে শেষ করলাম মাত্র। এবং বলতেই হবে, অসাধারণ আনিমে ছিল। এত বেশি ভাল লেগেছে যে দৌড় দিয়ে মিথিলার পোস্টে কমেন্ট লিখা শুরু করে দিয়েছিলাম, কারণ মিথিলার সুন্দর রিভিউটা পড়েই এই আনিমে দেখতে বসেছিলাম। পরে আবিষ্কার করলাম বেশি উত্তেজনায় রচনা লিখে ফেলেছি, তাই সেই রচনা একটু বাড়িয়ে চাড়িয়ে এখানে আবার পোস্ট করছি।

কোবাতো আনিমেটা শুরুর দিকে মনে হচ্ছিল, চিনির শিরার মধ্যে সারারাত ডুবিয়ে রেখে সকালে প্রেজেন্ট করেছে। কোবাতো অতিরিক্ত বেশি সুইট, এত বেশি যে সেটা দমবন্ধ করে দেয়ার মত অবস্থা করে। শুরুতে কোবাতোকে একটা এয়ারহেড, কিছুটা এনোয়িং কেয়ারলেস একটা মেয়ে ছাড়া কিছুই মনে হয়না, এবং হানাযাওয়া কানা ইউজলেস ক্যারেক্টার যে খুব ভালভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারেন, তা এই আনিমে দেখে সবচেয়ে বেশি বোঝা যায়। প্রথম দু-তিনটা পর্ব দেখে যদি কেউ বিরক্ত হয়ে আনিমেটা ড্রপ দেয়ার কথা ভাবে, সত্যি বলছি অবাক হব না।

এরপর আনিমেটা দেখা চালিয়ে যেতে থাকলাম, কোবাতোর স্বভাব চরিত্রে কোন পরিবর্তন এল না। কিন্তু আমি একটা ব্যাপার উপলব্ধি করলাম। তা হল, আমাদের সবার জীবনেই আসলে একজন কোবাতো প্রয়োজন, যে তার সারল্য, উচ্ছলতা, প্রাণবন্ততা দিয়ে আমাদের ম্যাড়মেড়ে মানসিকতাটা পালটে দেবে। কোবাতো সরল হতে পারে, কিন্তু বোকা নয়। সে একটা কাজ অসম্ভব জেনেও হাত গুটিয়ে বসে থাকে না, শুধুমাত্র তার সদিচ্ছার জোরে অসম্ভবকে সম্ভব করে তোলে সে। কাজের ক্ষেত্রে হাজারটা গোলমাল করে, কিন্তু তাও সে হাত গুটিয়ে বসে থাকে না, কাজটা করেই ছাড়ে। কোবাতোর ওপর বিরক্ত হওয়া যায়, কিন্তু সেটা প্রকাশ করা যায় না। তার নিষ্পাপ মুখের দিকে তাকালে সব বিরক্তি চলে যেতে বাধ্য।

13b605e23ec7ae50a8b6f6b56bde4dbd

কোবাতো বন্দনা বেশি করে ফেলছি, কারণ আমার এই ইউজলেস মেয়েটাকে দেখে খুব বেশি ভাল লেগেছে। এখন একটু অন্যদের কথাও বলা যাক!

আমি ফুজিমোতো আর কোবাতোকে শুরুতে দেখে, এমনকি প্রায় ১৯-২০ এপিসোড পর্যন্ত দেখেও কিছুতেই বুঝতে পারছিলাম না যে এই দুটোকে কিভাবে কাপল হিসেবে কল্পনা করব। কিন্তু শেষের দুই এপিসোড যা দেখাল :’) আমার পছন্দের কাপলগুলোর একটা (অ্যাজ ইফ আমার আর কোন পছন্দের কাপল আছে :v) হয়ে গেল কোবাতো – কিওকাযু। মাঝে অল্প সময় সেকেন্ড লিড সিন্ড্রোম ধরি ধরি করছিল, এখন সেটা পালিয়ে গেছে।

আর সবচেয়ে বড় কথা, একটা স্টোরি খালি বানালেই হয়না, সেটার এক্সিকিউশন সেইরকম না হলে আলটিমেটলি অত উপভোগ্য হয়না। কোবাতোকে প্রথমে দেখে তার অতি এন্থুসিয়াস্টিক আচরণ দেখে মেয়েটাকে এনোয়িং লাগছিল, কিন্তু আনিমে আগাতে আগাতে পুরাই “I want to protect that smile” ফিল এনে দিল, যেমনটা কিওকাযুর সাথে ঘটল, সেটা যেন আমার সাথেও ঘটল। বিরক্ত লাগে, কিন্তু সামহাউ রাগ ওঠে না। আনিমের প্রতিটা চরিত্রকেই কাহিনীর প্রয়োজনে খুব দ্রুত, কিন্তু সুচারুভাবে পরিবর্তন করা হয়েছে, এতে পরিবর্তনটা চোখে লাগে না, কিন্তু মনে প্রভাব ফেলে। ফুজিমোতো কিওকাযুর ডেভেলপমেন্টটা বিশেষ করে আমার খুব ভাল লেগেছে। ওর শূণ্যতাগুলো যেন নিজে অনুভব করতে পারছিলাম।

আর ক্ল্যাম্পের মেয়েগুলাকে পেলে যে কি করব 😐 😐 প্রত্যেকটা ছেলেকে এত বেশি ইকেমেন বানাতে কে কইসে এদের :’| কিওকাযু চেতলেও চেহারা কি সুন্দর দেখা যায় <3

আর হ্যাঁ, ক্ল্যাম্প ভার্সের ইস্টার এগ!! ওয়াতানুকিকে দেখাল, তাও আবার তার কুল ফর্মে <3 আবার সুবাসার ক্যারেক্টারদের নিয়ে আস্ত একটা পর্বই দিয়ে দিল!! খুব ভাল লেগেছে :’) ফাইকে আবার দেখলাম <3 এছাড়া চবিটস এর মেইন ক্যারেক্টাররা এখানে পার্মানেন্ট চরিত্র হিসেবে আছে, সেটিং এও মিল আছে দুই আনিমের।

সবমিলিয়ে কোবাতো আনিমেটি আমার খুবই ভাল লেগেছে। সুইট একটা স্টোরি, মন ভাল করে দেবার মত মিষ্টি একটা আনিমে।

07a75ed2b83a14c71e191566552f29d1

বোকুরা ওয়া মিন্না কাওয়াইসৌ; সাজেশন দিয়েছেন ইশমাম আনিকা

77590

আমার সবসময় যেটা মনে হয়, জাপানী আনিমে আসলে একটা “Double Edged Sword”. আপনার কখন কোনটা ভাল লাগবে, কিছুই বলা যায় না। দেখা যাবে যে একটা আনিমে আপনার আজ ভাল লাগল না, কিন্তু কয়েক বছর পর সেটা আবার ট্রাই করার সাথে সাথে প্রচণ্ড ভালোলাগা শুরু হয়ে গেল। আমার ক্ষেত্রে জিনিসটা হয় যখন আমি কমেডি বা ডেইলি লাইফ টাইপ কোন আনিমে দেখি।

আজ দেখে শেষ করলাম “বোকুরা ওয়া মিন্না কাওয়াইসৌ”। স্লাইস অফ লাইফ – আমার প্রিয় জনরা। অথচ বছর তিনেক আগে এই আনিমের প্রথম এপিসোড দেখে খুবই বিরক্ত হয়েছিলাম। গত পরশু স্লাইস অফ লাইফ খুঁজতে খুঁজতে নামটা আবার চোখে পড়ল, ভাবলাম এটাই শেষ করে ফেলি। এবং শেষ করার জন্য দেখতে গিয়ে আবিষ্কার করলাম, আনিমেটা আমার খুবই ভাল লাগছে; almost as if I was searching for this exact anime!!

তো এই নিজের সাথে কন্ট্রাডিকশন দেখে আমার মাথায় ব্যাপারটা ঘুরপাক খেতে থাকল তিনদিন ধরে। ভাবতে ভাবতে মনে হল ঠিকই আছে। কারণ আনিমের প্রভাবটা বাদ দিয়ে দিলে “ফান” সম্পর্কে আমার নিজের যে আইডিয়া, বা আমি যেগুলোতে মজা পাই বা পেতাম, জাপানী আনিমের সাথে তা অনেকাংশেই মেলে না। জাপানী আনিমেতে এটা একটা কমন সিনারিও যে একটা ছেলে থাকবে, তাকে দুনিয়াশুদ্ধ মেয়ে যেভাবে ইচ্ছা অ্যাসাল্ট করবে, আর সে মেয়েগুলোকে কিছুই বলবে না, উলটো তাদের এসব অত্যাচার সিম্পলি শ্রাগ অফ করে তাদের সব ডিমান্ড পূরণ করবে, সেটাও তাদের প্যানপ্যান শুনতে শুনতে। এই সিনারিও যে আসলে ফানি, এটা মেনে নেওয়ার জন্য আসলেই কিছুটা অভিজ্ঞতার প্রয়োজন হয়, আর সেটার ভুক্তভোগী হয় এই টাইপের প্রথম যে আনিমেটা দেখা হয়, সেটা; আমার ক্ষেত্রে সেটা প্রোবাবলি ছিল বোকুরা ওয়া মিন্না কাওয়াইসৌ (যদিও কোনোসুবাতে এই টাইপ কমেডি দেখে হাসতে পারিনি)।

77596

যাহোক, আজাইরা বক্তৃতা শেষ, আসল কথা খুব কম। ভাল করেছিলাম যে তখন এক এপিসোড দেখে এই আনিমে হোল্ডে রেখেছিলাম, কারণ বাকি এপিসোড দেখলে আমি নিশ্চিত তখন এতটা মজা পেতাম না। ছোট করে বললে আনিমের কাহিনী “কাওয়াই কমপ্লেক্স” নামের বোর্ডিং হাউস এর বাসিন্দাদের দৈনন্দিন জীবন নিয়ে, এবং এই বোর্ডিং এর সব বাসিন্দার মাথায় প্রব্লেম আছে। তাও দিনশেষে তারা একজন আরেকজনের বিপদে ঠিকই একজোট হয়ে এগিয়ে আসে সাহায্য করতে, কাজেই মেদেতাশি মেদেতাশি।

আনিমের আর্ট বেশ সুন্দর, ব্রেইন্স বেইজকে আমি চিনি তাদের কম কালার দেয়া শান্তিময় সতেজ আর্টের জন্য, কিন্তু এই আনিমেতে তারা রঙ ঢালতে কোন কার্পণ্য করেনি। ওএসটি খারাপ না, আবার উল্লেখযোগ্য কিছুও না। স্লাইস অফ লাইফ ভাল লাগলে এই আনিমে ভাল লাগার কথা।

কেউ দেখতে চাইলে দেখতে পারেন, তবে নতুন নতুন আনিমে দেখছে, এমন কাউকে এটা সাজেস্ট না করাই ভাল, অন্তত আমার মনে হয়।

77597

“শৌওয়া ও গেনরোকু আমলের ভালবাসার যুগ্ম মৃত্যু- রাকুগোর মাধ্যমে”; রিভিউ লিখেছেন ইশমাম আনিকা

rakugo

আমার এক বান্ধবী মাঝেমাঝে একটা কথা বলত, “পরীক্ষার সময় দেয়ালের দিকে তাকিয়ে বসে থাকাও অনেক ইন্টারেস্টিং একটা কাজ বলে মনে হয়।” কথাটা শতভাগ সত্যি। এবং এই কথামতই, সারাটা বছর পার করে অবশেষে এই ডিসেম্বর মাসে এসে দেখলাম “শৌওয়া ও গেনরোকু আমলের ভালবাসার যুগ্ম মৃত্যু- রাকুগোর মাধ্যমে”।

আমি সাধারণত কমফোর্টেবল ফিল করি দুই ধরণের আনিমে নিয়ে কথা বলতে গেলে, একটা হল যেখানে কিছুই ঘটেনা, আরেকটা যেখানে আসলেই কিছু ঘটে না :3 সত্যি কথা, হাইস্কুলের পোলাপান দৌড়াদৌড়ি করে বেড়াচ্ছে, মজা করে বেন্তো খাচ্ছে; বা র্যান্ডম কিশোর বালক অ্যাডভেঞ্চার করতে বেরিয়ে দুনিয়া জয় করে ফেলছে, কিংবা খুব থ্রিলিং কম্পিটিশন বা মারামারি চলছে, এমন আনিমে নিয়ে কথা বলাটা আমার কাছে বেশি সহজ মনে হয়। কিন্তু যেখানে আসলেই কিছু ঘটছে, এবং জিনিসটা বাস্তবের খুব কাছাকাছি, সেটা নিয়ে কথা বলাটা বেশ কঠিন হয়ে যায়। তারওপর যখন আনিমেটার মূল থিমই হয় গল্প বলা নিয়ে, সেখানে অনেক খুঁটিনাটি ব্যাপার নিয়ে আলোচনা করাটা গিভেন হয়ে যায়, আর সেটা করতে গেলে গবেষণা করা লাগবে একগাদা, যেটা খুবই বিরক্তিকর একটা বিষয় (আমার জন্য)।

তাহলে কথা যেটা ওঠে এখানে, আমি তাও শৌওয়া নিয়ে লিখছি কেন, আর লিখছিই যখন, কোনরকম গবেষণা না করেই বা লিখছি কেন।

কারণ একটাই, আনিমেটা বেশ ভাল লেগেছে। শুধু ভাল লাগলে হয়ত লিখতে ইচ্ছে হত না, ইচ্ছেটা জেগেছে কারণ আনিমেটার প্লট খুব ইউনিক লেগেছে। বর্তমানের “ইসেকাই”, “তাইমু তোরাবেরু”, “আইদোরু”, বা অযথা এচ্চি দিয়ে ভরে রাখা আনিমের যুগে হাতেগোণা যে কয়টা আনিমে দেখলে মনে হয়, “নাহ! এ জিনিস তো আগে কোনদিন দেখিনি!”- তার মাঝে শৌওয়া অন্যতম।

কাহিনী মূলত জাপানের পটভূমিতে রাকুগো শিল্পের উত্থান পতন নিয়ে, কিন্তু এর পাশাপাশি খুব সুন্দরভাবে এগিয়ে চলেছে এই শিল্পের সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত একদল মানুষের জীবনের কাহিনী; তাদের ব্যক্তিগত জীবন ও রাকুগো মিলেমিশে যেন একাকার হয়ে গেছে।

আনিমেটা আমি এতদিন শুরু করতে পারছিলামনা কারণ টাইটেলটা পড়ে এবং মানু্ষের রিভিউ পড়ে একটু ভয় কাজ করছিল যে সেই শৌওয়া আমলের প্লট, তাও আবার জাপানের বিবর্তন টাইপ জিনিস নিয়ে কারবার, যদি বোর হয়ে যাই! অনেকেই হয়ত এটা ভেবে “ভারী” এই আনিমেটা দেখেননি, বা আমি একাই হয়ত “ইয়োতারো”, কিন্তু আনিমেটার ৪৭ মিনিটের প্রথম এপিসোড দেখেই আমার সেই ধারণা ভেঙে গিয়েছিল। আর যাই হোক, শুরুটা খুবই ইন্টারেস্টিং। কেবল জেল থেকে ছাড়া পেয়ে এনার্জেটিক এক ছেলে গিয়ে সরাসরি পায়ে পড়ল রাকুগো শিল্পীর- দ্যাটস সামথিং ইউ ডোন্ট গেট টু ওয়াচ এভ্রিডে!!

আনিমের কাহিনী বেশ ভাল লেগেছে, অনেক কিছুই দেখার সময় আগে থেকেই আন্দাজ করে ফেলা যায়, তা মিলেও যায়, কিন্তু মজাটা এখানেই। আপনি জানবেন এরপর এটা আসছে, কিন্তু সেটা কিভাবে সম্ভব তা আপনি ঠাহর করতে পারবেননা। তারপর যখন জিনিসটা ঘটবে, তখন অবাক হয়ে ভাববেন যে এটাই ঘটার কথা ছিল আসলে। এই ব্যাপারটা আমার কাছে আনিমের একটা প্লাস পয়েন্ট বলে মনে হয়েছে। আর সাথে তো রাকুগোর স্কিলফুল পারফরমেন্স গুলো আছেই, যা নিয়ে আমার আগেও অনেকে অনেক কিছু বলেছেন, ভয়েস একটরদের মুন্সিয়ানা গবেষণা করে বা অ্যানিমেশন আর মিউজিকের কম্বিনেশন কিভাবে নিখুঁতভাবে ম্যাচ করানো হয়েছে তা নিয়ে তথ্যবহুল পোস্ট দিয়েছেন, তাই আমি আর কষ্ট করলাম না। খালি দুটো কথা বলব, অ্যানিমেশন এখানে গৌণ ব্যাপার, কাহিনীতে একবার ঢুকে গেলে কিসের অ্যানিমেশন, কিসের কি! ওপেনিং গানটা বেশ ভাল লেগেছে, জাদুভরা কণ্ঠ।

“শৌওয়া গেনরোকু রাকুগো শিনজু” হয়ত আমার টপ ফেভারিট বা এমন কিছু হয়ে ওঠেনি, কিন্তু তাতে কি, ভাল তো লেগেছে, সেটাই যথেষ্ট। আর আমার মনে হয় একবার দেখা শুর করলে আনিমেটা যে কারও ভাল লাগবে।

Movie Time With Yami – প্ল্যানেটারিয়ানঃ নক্ষত্রের স্বপ্ন (টিং টং মুভি টাইম)

Screenshot_2016-09-01-20-35-04

জীবনে দুবার প্ল্যানেটোরিয়ামে যাওয়ার সুযোগ হয়েছে; একবার দেশে ভাসানী নভোথিয়েটারে (সম্ভবত নামটা পালটে অন্য কিছু রাখা হয়েছে এখন, আমার মনে নেই), আরেকবার কলকাতার বিড়লা প্ল্যানেটোরিয়ামে। এর মাঝে ভাসানী নভোথিয়েটার এর কথা আমার সারাজীবন মনে থাকবে। ঋতুর পালাবদল, রাতের আকাশে কন্সটেলেশন, গ্রহ নক্ষত্রের আবর্তন, বা ডায়নোসর যুগ- সবটাই এত সুন্দর ও বাস্তবসম্মতভাবে উপস্থাপন করা হয়েছিল সেই অর্ধগোলাকার থিয়েটারে, মনে হচ্ছিল যেন আমি আসলেই সেই জায়গাগুলোতে পৌছে গেছি। খুবই চমৎকার অভিজ্ঞতা ছিল।

তো সেই নভোথিয়েটার এর কাহিনী অ্যানিমে গ্রুপে কেন বলছি? বলার কারণ হল, কাল রাতে দেখে শেষ করেছি ৫ এপিসোডের ওএনএ, “প্ল্যানেটারিয়ানঃ চিসানা হোশি নো ইউমে”।

মেলোড্রামা সাধারণত আমাকে অতটা টানে না, কেঁদেকেটে ভাসিয়ে ফেলার মত তো অবশ্যই না। কেই এর ভিজ্যুয়াল নভেল অ্যাডাপ্টেশন কয়েকটা দেখেছি, ভালই লেগেছে, তাই প্ল্যানেটেরিয়ান দেখা শুরু করেছিলাম। এবং এই অ্যানিমের যে পার্টটা আমাকে মুগ্ধ করেছে, সেটা হল ওই নভোথিয়েটারে ইউমেমির পারফরমেন্স। হঠাৎ দেখে মনে হচ্ছিল, যেন আমি নিজেই বসে আছি ওই থিয়েটারে দর্শকের আসনে। পুরনো মুগ্ধতাটা নতুন করে ফিরিয়ে এনে দিয়েছে এই অ্যানিমেটা।

অ্যানিমের কাহিনী পোস্ট অ্যাপোক্যালিপ্টিক পৃথিবী, যেখানে বোমা হামলার কারণে বেশিরভাগ শহরই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। এমনই এক শহরের একটি প্ল্যানেটোরিয়ামে ইউমেমিকে একা ফেলে তার মালিকেরা সবাই চলে গিয়েছে নিরাপদ আশ্রয়ে। ইউমেমি খুবই লয়াল, তাই সে সেই পরিত্যক্ত নভোথিয়েটারেও রুটিন মেনে তার দায়িত্ব পালন করে যায়; কাস্টোমার আসুক, বা না আসুক।

এমন অবস্থায় হঠাৎ একদিন প্ল্যানেটোরিয়ামে একজন কাস্টোমার এসে হাজির হয়। প্রাণ বাঁচানোর লড়াইয়ে ব্যস্ত সেই কাস্টোমারকে কী ইউমেমি দেখাতে পারবে তারাভরা আকাশ?

ডেভিড প্রোডাকশন নামটা শুনলে আমার মাথায় সবসময় যে অ্যানিমেটার নামটা আসে, তা হল জোজোর অদ্ভুতুড়ে কীর্তিকলাপ। জানা নেই, তাদের অন্য কোন মোয়ে অ্যানিমে আছে কিনা, কিন্তু প্ল্যানেটেরিয়ানের আর্ট দেখে কেন যেন বিশ্বাস হচ্ছিল না, এই স্টুডিওই জোজো বানায়! জোজোর আর্ট ভালই লাগে আমার, আর্টটা ওভার দ্য টপ বলেই একই স্টুডিওর করা মোয়ে ডিজাইন দেখে অবাক হয়েছি। ইউমেমিকে অতিরিক্ত কিউট লেগেছে, যদিও শুরুতে তার একঘেয়ে গলায় টানা কথা বলে যাওয়া শুনতে অতিরিক্ত বিরক্ত লাগছিল, কিন্তু পারফরমেন্স এর সময় তার গলাটা অতিরিক্ত সুন্দর আর সাবলীল লাগছিল। আর সেটাকে যোগ্য সাপোর্ট দিয়েছে অ্যানিমের মনোমুগ্ধকর আর্ট। অ্যানিমেটার সেরা মুহূর্ত নিঃসন্দেহে ইউমেমির পারফরমেন্স। আর শেষটা আমি যেমন আশা করেছিলাম হুবহু তেমন হয়েছে, তবে ভাল লেগেছে।

মাত্র ৫ পর্বের অ্যানিমে, গড়ে ১৮ মিনিট করে পড়ে একেক পর্বে, দেড় ঘন্টা হাতে থাকলে দেখে ফেলতে পারেন এই সুন্দর ওএনএ টা।

planetarianfeat

Movie Time With Yami – Nerawareta Gakuen (টিং টং মুভি টাইম)

tumblr_np3536OnP71tdyyjco1_500

আজ সকালে দুই ঘন্টা ক্লাস সাসপেন্ড ছিল (যা ইতিহাসের পাতায় ঠাঁই পাওয়ার মত বিরল ঘটনা আমাদের জন্য), ভাবলাম দুই ঘন্টা লেন্থের কোন মুভি দেখে ফেলি। ফোনের গ্যালারি ঘেটে পেলাম নেরাওয়ারেতা গাকুয়েন, ১ ঘন্টা ৪৬ মিনিটের অ্যানিমে মুভি। তো শুরু করলাম দেখা।

শুরুতেই মার্কিং দিয়ে দেই, বাকি পোস্টে কী আছে হিন্ট পেয়ে যাবেন।
ভিজ্যুয়াল- ৯/১০
ওএসটি- ৮/১০
ক্যারেক্টার ডিজাইন- ৯/১০
ভয়েস অ্যাক্টিং- ১০/১০
স্টোরি- ৩/১০
ক্যারেক্টার- ০/১০

গ্রাফিক্স /ভিজ্যুয়াল/আর্টওয়ার্ক, জিনিসটাকে যাই বলা হোক না কেন, মোদ্দা কথা হল অসম্ভব সুন্দর। মাকোতো শিনকাই ফিল্ম ভেবেছিলাম শুরুতে, পরে দেখি সেটা নয়। সাকুরার গাছ ন্যাড়া করে ঢেলে ঢেলে পাঁপড়ি ছেড়ে দিয়েছে কিছুক্ষণ পরপর, স্কুল, বাড়ি, সমুদ্র বা তাদের আজগুবি জায়গা গুলা, সব দেখে চোখে ধাঁধাঁ লেগে গেছে। ক্যারেক্টার ডিজাইন খুবই সুন্দর, ছেলেগুলো হ্যান্ডসাম, মেয়েগুলো কিউট। ব্যাকগ্রাউন্ডে যাই বাজছিল, কর্ণকুহরে ভালই লেগেছে।

গেল প্রশংসা। এখানেই শেষ। আর কিছুই নাই প্রশংসা করার মত। এবার বিরক্তির পালা শুরু।

আমি অ্যানিমে মুভির ব্যাপারে মোটামুটি সর্বগ্রাসী। ছাইপাঁশ যাই হোক গিলে ফেলি। তাই এই মোটামুটি ছাইপাঁশ লেভেলের মুভিটাও গিললাম। আই মিন সিরিয়াসলি?!! কাহিনীটা আসলে কী ছিল? আদৌ কি কোন কাহিনী ছিল? সারাক্ষণ তো দেখলাম “কেতাই কেতাই” করেই সময় পার করে দিল। তাও যদি কারণটা বলত। আগের বছর কোন এক ঘটনা ঘটেছিল স্কুলে, সেজন্য স্কুলে ফোন আনা নিষিদ্ধ। ঠিক আছে, কোন সমস্যা নেই, আমাদের যুগে বাই ডিফল্ট এটাই নিয়ম ছিল। কথা হচ্ছে যে কাহিনীটা কী হয়েছিল যে এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হল? পুরো মুভিতে আমি এটা জানার জন্যই বসে ছিলাম; আফসোস, কারণ বলার ধার দিয়েও গেল না। কোন কারণে সো কল্ড ফিউচার আর্থলিং এলিয়েনদের টেলিপ্যাথিতে কিছু একটা সমস্যা হয়, সেজন্য তারা এসে একটা স্কুলে সেলফোন ব্যান করতে লেগে গেল, হাউ প্যাথেটিক ক্যান ইউ গেট?

অ্যানোয়িং ক্যারেক্টার লাইফে কম দেখিনি, কিন্তু একটা মাত্র ১ ঘন্টা ৪৬ মিনিটের মুভির প্রতিটা ক্যারেক্টারকে এত বেশি বিরক্তিকর লাগবে, কোনদিন ভাবিনি। নাতসুকি মেয়েটার প্রব্লেমটা কী?!!
স্টেটমেন্ট ১- জাপানী ছেলেরা হয় বেশি ভাল।
স্টেটমেন্ট ২- না হলে জাপানী মেয়েরা বেশি শয়তান।
স্টেটমেন্ট ৩- ওভাররেটেড সুন্দেরে একটা দেয়া লাগবে তাই দিয়ে রেখেছে স্টোরিতে।

আই মিন, এই মেয়ে তার ছোটবেলার “বন্ধু” সেকিকে যেভাবে জ্বালিয়ে গেছে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত, এরকম প্রতিবেশী থাকলে আমি কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে বাড়ি ঘিরে রাখতাম। ছেলেটা আবার সেগুলা সহ্য করে মেয়েটাকেই স্যরি বলে, ঢঙের শেষ নাই।

আর শেষ পর্যন্ত কাহিনী কী দাঁড়াল? বাবা তোমরা তোমাদের মাদার মুন ছেড়ে মাদার আর্থের কেতাই ব্যান কইরা কী হাসিল করলা? এ বিগ ফ্যাট জিরো -_-

যাই হোক, আমার মেজাজ খারাপ হয়েছে, তাই একটু র‍্যান্টিং করলাম, এমনও হতে পারে যে আমি আসলে কাহিনী বুঝিনি তাই না বুঝে কথা বলছি, তবে আমার মনে হয়না এই কাহিনীর আগামাথা খুঁজে পাওয়া সম্ভব। কেউ পেয়ে থাকলে কমেন্ট সেকশনে আমার কনফিউশন গুলো ক্লিয়ার করে দেবেন অনুগ্রহ করে।

প্রতিটি অ্যানিমে ভক্তের জন্য যে দুটো অ্যানিমে দেখা বাধ্যতামূলক; অ্যানিমে সাজেশন দিয়েছেন ইশমাম আনিকা

PicsArt_08-14-04.21.40

অ্যানিমে গ্রুপে যারা নিয়মিত ঘোরাঘুরি করেন, এই দৃশ্যগুলোর সাথে তারা সবাই মোটামুটি পরিচিত –

“নারুতো না দেখলে জীবন বৃথা”
“ওয়ান পিস দেখনি মানে তুমি কিছুই দেখনি”
“ড্রাগন বল ভাল লাগেনা? তুমি অ্যানিমে বুঝই না”

এছাড়াও জনরাভিত্তিক, পার্সোনাল চয়েস ভিত্তিক, এমন আরও অনেকভাবে সর্ট আউট করে অনেক মানুষ বিভিন্ন অ্যানিমেকে অবশ্য দেখনীয় (জানিনা শব্দটা ঠিক হল কিনা) বলে দাবি করে থাকেন।

আমি মোটামুটি নির্ঝঞ্ঝাট মানুষ (হেহে, বিশ্বাস করার দরকার নেই, তবে কথাটা সত্যি), কোনদিন নিজের পছন্দের অ্যানিমেকে বিশ্বসেরা বলে দাবি করার দুঃসাহস দেখাইনি। তবে আমার নজরেও এমন দুটো অ্যানিমে এসেছে, যে দুটো হয়ত আমি টপ ১০, ২০ লিস্ট বানালে সেখানে স্থান পাবে না, তারপরেও বলব, কেউ যদি অ্যানিমে ভক্ত হয়ে থাকে, অর্থাৎ বিনোদনের এই মাধ্যমের সাথে তার মোটামুটি পরিচয় থেকে থাকে, তাহলে অবশ্যই তার এই অ্যানিমে দুটো দেখা উচিৎ। অ্যানিমে দুটো হল বাকুমান এবং শিরোবাকো।

কেন এ দুটো অ্যানিমেকে এত গুরুত্ব দিচ্ছি? কারণ আছে। আপনাদের সকলেরই তো জানা আছে, অ্যানিমের সিংহভাগ তৈরি হয় কোন একটা মাঙ্গার গল্পকে কেন্দ্র করে। আগে মাঙ্গা বা জাপানী কমিক বের হয়, সেটা মোটামুটি জনপ্রিয়তা পেলে সেখান থেকে অ্যানিমে বানানো হয়। আবার অনেক ক্ষেত্রে মাঙ্গার জনপ্রিয়তা বাড়ানোর লক্ষ্যেও অ্যানিমে বানানো হয়। তো এই যে মাঙ্গাকে ঘিরে এত কাহিনী, সেই কাহিনীটার বাস্তব চিত্রটা আসলে কেমন, আপনাদের নিশ্চয়ই জানতে ইচ্ছে করে! যে ব্যক্তি মাঙ্গা লিখছে, তার জীবনটা আসলে কেমন, বা মাঙ্গা যে প্রকাশনী থেকে বের করা হয়, তারা কিভাবে কাজ করে, কিভাবে একটা মাঙ্গা জনপ্রিয় হয়ে ওঠে, বা কিভাবে একটা মাঙ্গার অজনপ্রিয়তা দুর্ভাগ্য ডেকে আনে, এসব কিছুর চিত্র অসম্ভব নৈপুণ্য এবং যত্নের সাথে তুলে ধরা হয়েছে যে অ্যানিমেতে, তার নাম বাকুমান। “বাকুমান” শব্দটি দুটো শব্দের সমষ্টি; বাকুচি+মাঙ্গা। বাকুচি অর্থ গ্যাম্বল বা জুয়াখেলা; মাঙ্গা লিখে জীবিকা অর্জন করা জুয়াখেলার মত বিপদজনক একটা পেশা, এখানে সেটিই তুলে ধরা হয়েছে।

আবার একইভাবে এটাও চিন্তা করুন, এই যে এত স্টুডিও পিয়েরট বা তোয়েই অ্যানিমেশন এর ওপর আপনারা মহা বিরক্ত, কিংবা শ্যাফট, পিএ ওয়ার্কস, কিয়োটো অ্যানিমেশন বা সিলভার লিঙ্কের আর্টের মহাভক্ত আমি; বা ব্যতিক্রমধর্মী অ্যানিমে বানানোর জন্য পরিচিত স্টুডিও ম্যানগ্লোবের যে করুণ দশা- এদের পেছনের কাহিনীটা কী? কারা এই স্টুডিওগুলোতে রাতদিন হাড়ভাঙা খাটুনি খেটে যাচ্ছে প্রোপার ফিডব্যাক ছাড়া, কেন এখনকার অ্যানিমেগুলোতে অযথা ফ্যানসার্ভিস দিয়ে ভরিয়ে তোলা হচ্ছে, বা কি উপায়ে এক টুকরো কাগজে আঁকা একটা সাদাকালো চরিত্র আমাদের চোখের সামনে হেটে বেড়াচ্ছে; কিভাবে প্রাণ পাচ্ছে সেই জড়পদার্থগুলো, যারা এই আপাতদৃষ্টিতে অসম্ভব কাজটাকে সম্ভব করে তুলছেন, তাদের জীবনটা কেমন – সেটা নিশ্চয়ই কখনো না কখনো জানতে ইচ্ছে করে! এই প্রতিটি কৌতুহল নিবারণ করবে যে অ্যানিমে, তার নাম শিরোবাকো।

অসম্ভব সুন্দর আর্ট আর ওএসটি রয়েছে দুটি অ্যানিমেতেই, আর মূল যে ব্যাপারটা রয়েছে, অ্যানিমেদুটি দেখার পর নিশ্চিতভাবে আপনি একটা অ্যানিমে/মাঙ্গাকে ট্র্যাশ বলার আগে দুবার ভেবে নেবেন। আপনি যদি এই ইন্ডাস্ট্রিকে সত্যিকার অর্থে অনুধাবন করতে চান, এ দুটি অ্যানিমে দেখা আপনার জন্য বাধ্যতামূলক!

অ্যানিমে সাজেশনঃ ReLIFE; লিখেছেন ইশমাম আনিকা

FB_IMG_1469771996921

ReLIFE অ্যানিমেটা দেখে শেষ করলাম। আমি এমনিতেই হাইস্কুল স্লাইস অফ লাইফের ভক্ত, কিছু ছেলেমেয়ের দৈনন্দিন জীবনের খুনসুটি দেখতে আমার সবসময়ই ভাল লাগে; কিন্তু এরপরেও বলব, রিলাইফ এক্সেপশনালি ভাল ছিল। কাহিনীটার বিল্ড আপ অনেক ভাল ছিল, অবাস্তব একটা প্লট থেকে বেশ বাস্তব কিছু দৃশ্যপট খুব সুন্দর করে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। আর কাহিনী যত সামনে এগিয়েছে, নতুন নতুন রহস্যের মোড়ক উন্মোচন হয়েছে, এটা বেশ ভাল ছিল, কাহিনী একটা নির্দিষ্ট গন্ডিতে থেমে না থেকে সামনে এগিয়েছে। হাসিমুখে জীবনকে ফেস করতে থাকা মানুষগুলোর ব্যাকস্টোরি, আপাতদৃষ্টিতে অগুরুত্বপূর্ণ চরিত্রদের হঠাৎ দেয়া সারপ্রাইজ বেশ লেগেছে। চমৎকার আর্ট, এক্সিকিউশন অসাধারণ, ক্যারেক্টার ডিজাইন খুবই ভাল লাগল, স্পেশালি চিবি ফর্মগুলো অনেক উপভোগ করেছি। ওএসটি খুবই সুন্দর, পরে সবগুলো ডাউনলোড করে বারবার শুনব।

সবমিলিয়ে বেশ রিফ্রেশিং ও অনুপ্রেরণাদায়ক অ্যানিমে ছিল। অবশ্যই সেকেন্ড সিজন চাই।

FB_IMG_1469771988673

গ্লাসলিপ রিএকশন; লিখেছেন ইশমাম আনিকা

12961176_197382797313440_1846287170956684497_o

কাল রাতে (তর্কসাপেক্ষে) এই দশকের সবচেয়ে বিতর্কিত অ্যানিমে গ্লাসলিপ দেখে শেষ করলাম। অ্যানিমেটার ব্যাপারে আজ পর্যন্ত কোনদিন কোন পজেটিভ কথা শুনিনি, অনেকটা ঝোঁকের মাথায় দেখা শুরু করেছিলাম এই ভেবে যে, ভাল না লাগলে দেখা বাদ দিয়ে দেব।

কিন্তু দেখা শুরু করার পর আবিষ্কার করলাম, আমি মোটেই বোর হচ্ছিনা। শুরুর এপিসোডে কাকেরু এসে তৌকোকে যখন বলল, “তুমি যা দেখ, আমিও তাই দেখি”, তখন একটু লেইম লেগেছিল ব্যাপারটা, পরে বুঝলাম সেটার কারণ ছিল। রোমান্স পার্টটা অতটা খারাপ ছিল না, তবে সুপারন্যাচারাল ব্যাপারটা ঢুকানোর প্রয়োজন ছিল না। ওটা ছাড়া কাহিনীটা জমত ভাল।

Screenshot_2016-04-11-22-12-11

অ্যানিমেটা খারাপ লাগার কারণ খুঁজে বের করতে আমার সত্যিই কষ্ট হয়েছে, নিজে বের করতে পারিও নি খুব বেশি, অন্যদের রিভিউ ঘাটাঘাটি করে বের করতে হয়েছে। আমি তারচেয়ে পয়েন্ট আকারে কিছু কথা বলি, বুঝতে সুবিধা হবে।

– প্রথমেই উল্লেখ করতে হবে আর্টওয়ার্ক। পিএ ওয়ার্কস এর অ্যানিমেশন, কিও অ্যানির পরে এই স্টুডিওর আর্ট আমার সবচেয়ে পছন্দ। প্রতিটা ছোট ছোট ডিটেইলের দিকে নজর রাখে তারা, উজ্জ্বল চোখজুড়ানো ল্যান্ডস্কেপ থাকে, শহরের দৃশ্য হোক বা গ্রাম, সমুদ্র হোক বা পাহাড়, সব কিছু অসম্ভব যত্ন নিয়ে আঁকে। ক্যারেক্টার ডিজাইনও সুন্দর হয়, পিএ ওয়ার্কস এর কাজ যে, সেই ছাপ থাকে। এই স্টুডিওর যত অ্যানিমে আমি দেখেছি, তার মাঝে গ্লাসলিপের আর্ট সেরা।

Screenshot_2016-04-11-20-59-27

– স্টোরি খারাপ ছিল না। আমি জানি অনেকে আমার সাথে দ্বিমত পোষণ করবেন, তাও বলছি, স্টোরি ভালই ছিল। সুপারন্যাচারাল পার্টটা যদি বাদ দেই, বাকিটা কিন্তু বাস্তব জীবনের সাথে বেশ মিল রেখে তৈরি করা হয়েছে। ক্যারেক্টারগুলো বিরক্তিকর – এই কথাটার প্রেক্ষিতে আমি বলব, এই ধরণের বিরক্তিকর ক্যারেক্টার আমাদের আশেপাশে খুঁজলেই পাওয়া যায়। এই কারণেই বরং গ্লাসলিপ স্লাইফ অফ লাইফ হিসেবে সফল। সুনদেরে ইয়ানদেরে না দেখিয়ে তারা অন্তত কিছু রিলেটেবল ক্যারেক্টার দেখাতে পেরেছে, যারা ভুল করে, জেলাসও হয়, কিন্তু সেটাকে ওভারকামও করতে পারে।

– সুপারন্যাচারাল পার্টটার কথা এবার বলি, কোন দরকার ছিল না এটার। শুরুর দিকে ভালই লাগছিল, কিন্তু এপিসোড ১২-১৩ তে শুধুশুধু টুইস্টের মত কিছু একটা দেখাতে গিয়ে এন্ডিংয়ে খামাখা কাকেরুকে ভ্যানিশ করে দিল। পিএর কাজ অবশ্য এমনই, পারফেক্ট হ্যাপি এন্ডিং বোধহয় ওদের সহ্য হয়না। তবে ওইটুকু অতৃপ্তির জন্য পুরো অ্যানিমেটাকে খারাপ বলাটা খুবই অন্যায় হবে, কারণ আমি এর চেয়ে অনেক খারাপ অ্যানিমে দেখেছি। গ্লাসলিপের দোষ হল এটা স্লাইস অফ লাইফ রোমান্স, কাজেই খুব এক্সাইটিং কিছু ঘটেনা।

সবমিলিয়ে আমার মনে হয়েছে এটা দেখার যোগ্য অ্যানিমে, বাকিটা আপনারা নিজেরা সিদ্ধান্ত নিন। কাউকে দেখতে সাজেস্ট করব না, যেহেতু এটা এত এত মানুষের ভাল লাগেনি, যার দেখার ইচ্ছা নিজ দায়িত্বে দেখবেন, তবে খুব এক্সাইটমেন্ট পাবেন না এমনটা জেনে দেখতে বসলে ভাল লাগবে, এটা বলতে পারি।

I didn’t survive Glasslip, I enjoyed it.

12973375_197382847313435_8237480134203561675_o

অ্যানিমে সাজেশন- কামিসামা হাজিমেমাশিতা; লিখেছেন ইশমাম আনিকা

দেখে শেষ করলাম কামিসামা হাজিমেমাশিতা সিজন ১। বাবার খামখেয়ালিপনার কারণে গৃহহারা হওয়া নানামি হঠাৎ করে পেয়ে বসে আস্ত একটা শ্রাইন আর সেইসাথে আর্থ গড হবার সম্মান। সেই শ্রাইনের হেরাল্ড তোমোয়ের সাথে নানামির সম্পর্কের ধীরে ধীরে উন্নতি, তাদের দৈনন্দিন জীবন ও অন্যান্য হেরাল্ড এবং ইয়োকাইদের সাথে তাদের ইন্টের‍্যাকশন নিয়ে এগিয়ে চলে অ্যানিমের কাহিনী, এবং অবশ্যই সাথে রোমান্সের খুনসুটি।

Screenshot_2016-04-07-17-55-50

প্রথমেই যে কথাটা মাথায় এল শেষ করার পর, শৌজো অ্যানিমের ক্লিশে- কোন একটা ছুতা বাইর করাই লাগবে সবকয়টা বিশৌনেনের সাথে রোমান্টিক মোমেন্ট দেখানোর। -_- এই কন্ট্র‍্যাক্ট সিল করার ছুতায় যে কত কাহিনী করল :v :v যাহোক, সেটা বড় কোন সমস্যা না, কারণ ওভার অল অ্যানিমেটা অনেক ভাল লেগেছে আমার। আর্ট ডিসেন্ট, কমেডি অনেক ভাল, হেসেছি অনেক; সবচেয়ে বড় কথা একেবারেই ফোর্সড কমেডি লাগেনি।

Screenshot_2016-04-07-13-34-31

এবার বলি যে জিনিসটা আমার সবচেয়ে ভাল লেগেছে – ওএসটি। আমি সাধারণত ওপেনিং এন্ডিং স্কিপ করে যাই, এই অ্যানিমেটার ক্ষেত্রে একটাও স্কিপ করতে পারিনি। গান দুটো যতবার শুনেছি, আমার নাচতে ইচ্ছা করেছে!! আর অ্যানিমের ভেতরের ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকও সুন্দর; বিশেষ করে একেবারে শেষ এপিসোডের কাগুরা ডান্সটা অসম্ভব ভাল লেগেছে, রিপিট করে করে দেখেছি। কাহিনীটা কোথাও থমকে যায়নি, একটা নির্দিষ্ট পেসিং ধরে রেখেছে। আর তোমোয়ে যেভাবে নিজের জেদ বিসর্জন দিয়ে নানামিকে মন থেকে আসা কথাটা বলে দিল, এটা আমার সবচেয়ে ভাল লেগেছে।

Screenshot_2016-04-07-19-39-01

সবমিলিয়ে বেশ ভাল একটা শৌজো অ্যানিমে ছিল এটি, চাইলে ট্রাই করে দেখতে পারেন।

Screenshot_2016-04-07-19-42-27