সুপার হিরোরা ভিলেইনদের সাথে মারামারি করবে, পিটিয়ে লাশ বানিয়ে প্যাকেট করে দেবে এটাই অলিখিত নিয়ম। একা একা না পারলে আরো দশটা হিরোর সাহায্য নিবে। এটলিস্ট জাস্টিস লিগ আর এভেঞ্জারস থেকে তাই শিখেছি আমরা। কিন্তু, এক হিরোকে আরেক হিরোর সাথে লড়তে সচরাচর দেখা যায় না। Assosiation of Super-heroes Fans নামক এক সংগঠন আবার এক কাঠি সরেস। তারা প্রায় সকল এনিমে, মাঙ্গা, কমিক থেকে সবচাইতে শক্তিশালী একজন হিরো/ক্যারেক্টার কে আমন্ত্রন জানিয়ে এক কম্পিটিশানের আমন্ত্রন জানিয়েছে।
সেই কম্পিটিশানের ফাইনাল আজ। ফাইনালে উঠেছে নারুটো থেকে উচিহা ইটাচি আর অভাররেটেড পাঞ্চ ম্যান থুক্কু, ওয়ান পাঞ্চ ম্যান থেকে সাইতামাতামা।
ওয়েল, নারুটো থেকে সবচাইতে শক্তিশালী হিসেবে জুবি মাদারা তার ব্যাগ আর রিনেঙ্গান প্যাক করে রেডি হচ্ছিল। নারুটো আর সাস্কে বাইরে দাড়িয়ে উশখুশ করলেও কিছু বলার সাহস পাচ্ছিল না। এমন সময়, ইতাচি এসে মাদারার মাথায় এক চাটি মেরে বসিয়ে দিয়ে তার হাত থেকে সেই ইনভাইটেশান কার্ড নিয়ে হাঁটা শুরু করলো। মাদারা ভয়ে ভয়ে বলতে শুরু করে,
“ইটাচি সেনপাই, আপনি কেন কষ্ট করে আসতে গেলেন? আমি নিজেই আপ্নার বাসায় গিয়ে দিয়ে আসতাম।”
ইটাচি মুখে কিছু না বলে অগ্নিদৃষ্টি হানলো জুবি রিকোডু সেন্নিন মাদারার ওপর, যা আক্ষরিক অর্থেই ছিল অগ্নিদৃষ্টি। কারন, ইটাচির আমাতেরাসুর আগুন ধরে গেল মাদারার গায়ে। টেন টেইল সমেত ইটাচির আমাতেরাসুতে ভস্মীভূত হল রিকোডু সেন্নিন মাদারা। মারা যাবার সময় শুধু বলল,”মাথ্যে ইথা যো হাশিরামা!”
ইটাচি ইনভাইটেশান কার্ড টা নিয়ে সাস্কের দিকে ঘুরেই বলল, “সাস্কে, তোমার জন্যে আমি এই চ্যাম্পিয়ন ট্রফিটা এনে দেব। এরপর আর কেউ এডওয়ার্ড এলরিককে আমার থেকে সেরা ভাই বলতে পারবে না।”
এতো গেল ইটাচির কম্পিটিশানে আসার ফিলার। সাইতামার আসার কারনটা বলা যাক এবার। ওর বিষয়টা আরও বেশি তাৎপর্যপূর্ণ। কারন, এই কম্পিটিশান জিতলেই, সে C র্যাঙ্ক থেকে এক লাফে S র্যাঙ্ক হিরো হয়ে যাবে। এতে ওর এলাউন্সও বাড়বে। আর তার ফলে ওকে ছাড়সমেত কেনাকাটার জন্যে শপিং মল চষে ফেলতে হবে না। সাইতামাকে চিয়ার আপ করার জন্যে গ্যালারিতে বসে আছে মুমেন রাইডার, অত্যন্ত সুপুরুষ পুরিপুরি প্রিজনার আর সাইতামার একমাত্র শিষ্য জেনোস।
পুরিপুরি প্রিজনার চুপচাপ বসে থাকলেও মুমেন রাইডার সাইতামার জন্যে “হিরো হিরো” বলে চিৎকার করে কি এক জ্ঞান গেয়ে যাচ্ছে। কিন্তু জেনোসের এসব দিকে মন দেবার সময় নেই মোটেই। সে ব্যস্ত তার সেন্সের অপোনেন্টকে স্ক্যান করতে। ইটাচির ফুলবডি স্ক্যান করে এসে চোখের কাছে আস্তেই চারদিকে এরোর ম্যাসেজ দেখতে পায় জেনোস। কিছু বুঝে উঠার আগেই ইটাচির গেনজ্যুতসুতে তলিয়ে যায় রোবোটিক দেহসম্পন্ন জেনোস। যদিও যারা চাকরা ইয়্যু করে না, তাদের ওপর গেনজ্যুতসু কাজ করে না। তবুও সামহাউ তা কাজ করল।
ওদিকে ইটাচিকে সমর্থন দিতে গ্যালারীতে দেখা যাচ্ছে সাস্কে আর শিসুই উচিহাকে। বুড়ো ধামরা এক ছোকরা যদি এক গাড়ির কোম্পানির নাম বলে চিৎকার করতে থাকে, তবে তাকে অস্বাভাবিক বলে ধরে নেয়ার নিয়ম। শিসুই আর থাকতে না পেরে, সাস্কেকে জিজ্ঞেস করল, “আচ্ছা সাস্কে। তোমার কি মনে হয়, কে জিতবে?”
-“কেন? নি-সান। ওই টেকো লোকটাকে হারাতে এক মিনিট টাইম লাগবে না নি-সানের।”
“কেন তোমার এমন মনে হল সাস্কে?” কিছুটা বিরক্তি মিশিয়ে জানতে চাইল শিসুই।
-“কেন আবার? কিশিমোটো সেন্সেই হিমসেলফ সেইড দ্যাট,……”
মাঝপথেই হাত তুলে ওকে থামিয়ে দেয় শিসুই। তারপর বলে,”আচ্ছা সাস্কে। তোমার নি-সান যেন আমার সাথে ব্যাটেলে কয়বার জিতেছে?”
সাস্কে হাতের কড় গুনতে থাকে,”১,২,৩,৪,…” হটাতই মুখ টা কালো হয়ে যায় ওর। কিন্তু, দৃঢ় গলায় বলল, “তাই বলে ওই টাকলুটা নি-সানের জন্যে কোন ম্যাচই না”
-“বাকা,… আই মিন, বোকা! ওই চকচকে টাকটাই ইটাচির গেনজ্যুতসুর বিরুদ্ধে ওর প্রধান অস্ত্র। ইটাচি এর জন্যেই গেনজ্যুতসু কাস্ট করতে পারবে না। কারন, তা সাইতামার ওই চকচকে টাকে লেগে রিফ্লেক্ট করবে। উলটো ইটাচি নিজেই নিজের জ্যুতসুর স্বীকার হবে।”
সাস্কে অবিশ্বাসের দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে সাইতামার দিকে।
ওদিকে ব্যাটল শুরু ইঙ্গিত দিল রেফারি ইযায়া ওরিহারা। ম্যাচ হচ্ছে একটা বিশাল উপত্যকার মতন জায়গায়, যার চারিপাশে স্টেডিয়ামের মতন করে বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। জায়ান্ট স্ক্রিনও আছে দর্শকের সুবিধার জন্য। কমেন্ট্রির দায়িত্ব রয়েছে হিসোকা আর গিনতোকির ওপর। আজকের ফাইনাল ম্যাচের আগে এবারের এইচ.এস.সি পরীক্ষার মতোই ২৮ দিনের মতো গ্যাপ পায় ওরা প্রিপারেশানের জন্যে। সে জাজ্ঞে।
লড়াই শুরু হয়ে গেল। কিন্তু, একি!! সাইতামা তখন তার বেল্ট ঠিক করছে। ইটাচি থমকে দাড়িয়ে ওকে জাজ করতে থাকে ওর শারিঙ্গান দিয়ে। এর পরে অ্যাটাকে যাবে কেয়ারফুল্লি।
সাইতামা বেল্ট পরিষ্কার করতে থাকে।
সাইতামা বেল্ট পরিষ্কার করে ওর দিকে তাকিয়ে ছোট্ট করে একটু মাথা ঝাকায় । যার অর্থ, সে রেডি। এরপর, হটাতই ইটাচির একেবারে সামনে এসে পরে। সাইতামা নিরাসক্ত শুরে শুধু বলল, “কঞ্জিকিউটিভ নরমাল পাঞ্চো”
ইটাচি দেখলো সাতামা লুফির থার্ড গিয়ার ইয়্যুজ করলো যেন। দ্রুত প্রতিক্রিয়া দেখালেও সাইতামার শক্তি আর এজিলিটি দেখে প্রশংসার সুরে বলল, “উইদ আউট অ্যা ডাউট ইয়্যু আর স্ট্রং, বাট নট ম্যাচিউরড”। বলেই কাক হয়ে উড়ে যেতে থাকে ও। ওদিকে সাইতামা কঞ্জিকিউটিভ নরমাল পাঞ্চ দিতে গিয়েই বোকা বনে যায়। কাকে পাঞ্চ করবে এই মহাশক্তিধর এক ঘুষি-মানব? ইটাচি তার আগেই স্রেফ উড়ে গেছে ওখান থেকে। শুধু অবাক হওয়ার এক্সপ্রেশান দেখা যায় সাইতামার চোখেমুখে। মুখে শুধু বলল, “ও……..”
পাঞ্চ থামিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে সাইতামা। ইটাচি বুঝলো এটাই তার মোক্ষম সময় আঘাত হানার একই সাথে অপনেন্টকে রিড করার। হ্যান্ড সাইন ওয়েভ করে বল্লল, “ফায়ার স্টাইল, ফিনিক্স ফ্লাওার জ্যুতসু”
অবাক হয়ে পুরো গ্যালারী দেখল, ফিনিক্স পাখির মতোই ইটাচির মুখ দিয়ে বিশাল আগুনের গোলা ছুটে গেল সাইতামার দিকে। ওদিকে কিছু বুঝে উঠবার আগেই সাইতামা দেখলো তার দিকে ভয়ঙ্কর রকমের আগুন তেড়েফুড়ে আসছে। ইটাচি দেখল, মুহূর্তের নোটিসে হাওয়া হয়ে গেছে সাইতামা। ও জানে এই সুযোগ হাতছাড়া করবে না ওই টেকো লোকটা। আক্রমনে যাবেই। তাই সাথে সাথেই সুসানো এরাইজ করলো ও। ওর লাল রঙ্গা সুসানোর এক হাতে ইয়াটা মিরর অন্য হাতে টোতস্কা ব্লেইড।
চোখের কোনে হালকা নড়াচড়া ধরা পরতেই, ইয়াটা মিরর টা সেদিকে পেতে দিল ও। ইয়াটা মিররের বিশেষত্ব হল, তা যে কোন নিনজ্যুতসুকেই কাউন্টার করতে পারে তার আরেকটা চাকরা নেচার দিয়ে। কিন্তু, পিউর এনার্জির কথা আলাদা। তবে এক ঘুষি মানবের ভয়ানক “নরমাল পাঞ্চ” তা ঠেকিয়ে দিতে পারল কোনোমতে। তবে এর পেছনে ইটাচি ফ্যানদের কারসাজি ছিল নাকি সাইতামার ঘুষি আসলেই অতটা পাওয়ারফুল না, সে বিতর্কে না যাই।
ঘুষিটা ঠেকিয়ে দিতে দাতে দাত বাড়ি খায় ইটাচির। কিন্তু, একি!! পুরো গ্যালারি লক্ষ্য করলো একটা ঝোড়ো বাতাসের গতিতে কিছু একটা প্রচন্ড গতিতে ছুটে বেড়িয়ে যায় গ্যালারী থেকে। সবাই তাকিয়ে দেখল, সাইতামার টিকিটিও নেই ব্যাটেল গ্রাউন্ডে।
নিয়মানুযায়ী মঠে প্রতিযোগী ১০ সেকেন্ডের বেশি সময় অনুপস্থিত থাকলে সে ডিস্কোয়ালিফাইড হয়ে যাবে। রেফারি, ইযায়া অরিহারা গুনতে শুরু করে, “১,…..২” দুই গুনে শেষও করতে পারে না, তার আগেই ঠিক ইটাচির পেছনে ধুমকেতুর বেগে হাজির হল সাইতামা। দ্রুত নড়াচড়া ধরা পড়ল ক্যামেরায়। ইটাচির ব্রেইন নড়াচড়া করার জন্যে শরীরে সিগ্ন্যাল পাঠানোর সময়টুকু পায় না। এইটুকুন সময়ের ভিতরেই পুরো পৃথিবী একবার প্রদক্ষিণ করে এসেছে এই C র্যাঙ্ক হিরো সাইতামা। তার ডান হাতটা ওর পিঠের ৪ ফিট দূরে এনেই থামিয়ে দিল সাইতামা।
প্রচন্ড ধাক্কায় ইটাচি যেন স্রেফ উড়ে গেল, গ্যালারীর কাছাকাছি জায়গায় মাটিতে আছাড় খেয়ে পড়ল। সুসানো আগেই ভেঙে গেছে ওর। ঊঠে দাঁড়াতে গিয়ে টলতে থাকে। অনেকটাই বিধ্বস্ত লাগছে ওকে। আর রেফারি ইযায়া তখন মিটিমিটি হাসছে। হাঁসতে হাঁসতেই মনে মনে বলল, “অয়েল নাউ। ডাজেন্ট হী রিমাইন্ড মি এবাউট শিজ্যু-চান?”
পরবর্তী ৫মিনিট ইটাচি ক্রমাগত তাইজ্যুতসু স্কিল এর প্রদর্শনী দেখিয়ে গেল। সাইতামা ওর একের পর আঘাতগুলো ঠেকিয়ে দিতে থাকে। কিন্তু, পালটা কোন আঘাত ইচ্ছে করেই হানছে না, নাকি তার ফুসরত পাচ্ছে না, তা নিয়ে খুনোখুনি বেধে গেছে গ্যালারিতে।
তবে, ওদিকে ইটাচি সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে। যেভাবেই হোক এডওয়ার্ড এলরিক কে পেছনে ফেলে সেরা ভাইয়ের তকমা তার চাই-ই চাই। তার জন্যে ট্রফিটা সাস্কে কে উপহার দেবে। এতে যদি তার ইজানামি ইয়্যুজ করতে হয়, তবে তাই করবে ও। হুম, ইযানামিই ইয়্যুজ করবে ও। ইজানামি তে একটা চোখ হারাবে সে। কিন্তু তাতে কি? নাগাটোর কাছে থেকে তার রিনেঙ্গান টা ছিনিয়ে নেয়া ওর জন্যে 1-2 এর ব্যপার।
ইটাচি দাড়িয়ে দাড়িয়ে চিন্তা করছিল। ওকে দাঁড়াতে দেখেই, সাইতামাও দাঁড়িয়ে পড়লো। এক আঙ্গুল দিয়ে কান চুলকাতে থাকে ও। তারপর সে আঙ্গুল দিয়ে আবার নাক চুলকাতে শুরু করল, সবশেষে পশ্চাতদেশ। ঠিক সে মুহূর্তেই ইজানামি কাস্ট করল ইটাচি।
এতে যা হবার তাই হল। সাইতামা, কান, নাক আর পশ্চাতদেশ চুলকানোর ভেতর একটা লুপে আটকে গেল। বাড়বার ঘুরে ফিরে একই কাজ করতে থাকল সে। মনে মনে হাসলো ইটাচি। ওর কাছে হার স্বীকার না করা পর্যন্ত এই লুপ থামবে না। বাস্তব জগতে স্থির হয়ে দাড়িয়ে থাকাতেই, হটাত সাইতামা লক্ষ্য করলো ওর গালে একটা মশা বসে রক্ত খেতে শুরু করে দিয়েছে। আর যাই হোক, সাইতামা মশা সহ্য করতে পারে না। সঙ্গে সঙ্গেই টাশশশশ! করে চড় বসাল নিজের গালেই। মশাটা মারা পড়ল তৎক্ষণাৎ।
আর ওদিকে ইটাচি অবাক হয়ে দেখল, স্রেফ মশা মারতে গিয়ে ওর ইজানামি ব্রেক করে ফেলেছে ওই C র্যাংক হিরো সাইতামা। আর ইজানামি ইয়ুজ করার সাথে সাথেই ওর এক চোখ সাদা হয়ে গেছে। তার সাথে সাইতামার সেই চার ফিট দূরে থামিয়ে দেয়া ঘুষির এফেক্ট দুইয়ে মিলে কাবু করে ফেলেছে ইটাচিকে। মুখ থেকে গলগল করে রক্ত বেরুতে থাকে ওর। হাটু গেরে বসে পড়ল।
দেখতে পেয়েই ছুটে এল সাইতামা। “তুমি অসুস্থ! ওয়ে, জেনোসে! ওকে হাস্পাতাল নিতে হবে!” বলে চিৎকার করে ও। ফিরল, ইটাচির দিকে।
ইটাচি যেন মৃদুস্বরে বলতে থাকে,”বাস্টার্ড! ইয়্যু অয়্যারন্ট ইভেন ফাইটিং!”
ম্যচ রেফরি ম্যাচ সমাপ্ত গোষনা করতেই গ্যালারী চঞ্চনল হয়ে উঠলো আবার।
আর ওদিকে কমেন্টেটোর গিন্তোকি বলতে থাকে, “ইভেন ইফ আর দ্যা মেইন ক্যারেক্টার অফ ইয়োর শো, ইয়্যু স্টিল মেয় ডাই। আই বেটার বি কেয়ারফুলাত্তাবায়ো”
——————–সমাপ্ত————–———–
বিঃদ্রঃ সকল ইটাচিটারডদের জন্যে ফিকশানটা উৎসর্গ করা হল!
(আই বেটার বি কেয়ারফুল, দাত্তেবায়ো wink emoticon )