অনন্য মাঙ্গা আসর – ৮ (Vento Aureo)
দক্ষিণ ইতালির Naples এয়ারপোর্টে কুজো জোটারোর নির্দেশে কোইচি হিরোসে এসেছে হারুনো শিওবানা নামের একজনকে খুঁজতে —
হুম প্রথম বাক্যে কুজো জোটারোর উপস্থিতি দেখেই অনুমান করতে পারা যায় এটা জোজো ফ্রাঞ্চাইজির সাথে সম্পর্কিত। মূলত Vento Aureo হল হিরোহিকো আরাকি’র JoJo’s Bizarre Adventure এর গল্পের পঞ্চম ভাগ যেখানে প্রোটাগোনিস্ট একজন গ্যাংস্টার – ঠিক গ্যাংস্টার এখনো নন তবে গল্পের সাথে সাথে পুরোদস্তর মাফিয়ার শিরায় শিরায় প্রবেশ করতে থাকবেন ……
গল্পের টাইমলাইন ২০০১ – দুর্নীতি আর মাফিয়ার আগ্রাসনে আক্রান্ত ইতালি – সমগ্র দেশে বিকেন্দ্রীকরণ পদ্ধতিতে ছড়িয়ে আছে সুসংগঠিত মাফিয়া চক্র । আর প্রোটাগোনিস্ট জিওরনো জিওভানা’র জীবনের লক্ষ্যই হল গ্যাংস্টার হওয়া ……
একটু টিপিক্যাল Thug স্টাইলে মাফিয়ার এক চক্রের সাথে বিবাদে জড়িয়ে পড়ে জিওভানা – সেখান থেকে খুনোখুনি হয়ে গেলে এ খবর পৌঁছে যায় Higher Ups এর কাছে … গল্পের ধারাটা এখন পর্যন্ত বেশ টিপিক্যাল মাফিয়া স্টোরি আর বেশ প্রেডিক্টেবল মনে হচ্ছে তাই না?
কিন্ত আশ্বস্ত করতে পারি, আর যাই হোক টিপিক্যাল বা প্রেডিক্টেবল কথা দুটি ভেন্টো অরেওর ক্ষেত্রে ব্যবহার করাটা যথারীতি Insult মাংগাকার প্রতি। কারণ এই মাঙ্গা টিকে আঁকতে আঁকার স্কিলের চেয়ে বুদ্ধিমত্তা আর সৃজনশীলতার যে ভালো একটা ম্যাশ আপ আছে যা অধিকাংশ “Action” মাঙ্গা তেই থাকেনা ……
স্ট্যান্ডের বিচিত্রতা রীতিমত Overwhelming ! স্ট্যান্ড কি বস্ত তা জানতে হলে চলে যেতে হবে জোজো ফ্রাঞ্চাইজির ৩য় পাখ্যান Stardust Crusaders এ …
এ ভাগের স্ট্যান্ড গুলো আগের সব জোজোর ভার্শন কে ছাড়িয়ে গেছে …
ওয়েস্টার্ন মিউজিকের আদলে বা স্বতন্ত্র ভাবে যে নামগুলো স্ট্যান্ডের পরিচয় তা শুনেই যেকোন একশন ফ্যান উচ্ছ্বসিত হবেন ……
পার্ট ৫ এ আমার সবচেয়ে পছন্দের ৭ টি স্ট্যান্ডের নাম উল্লেখ করা হল –
Gold Experience,Sticky Fingers,Man in the Mirror,The Walking Dead,Notorious B.I.G.,Metallica,King Crimson
আর স্ট্যান্ডগুলোর এবিলিটি আর প্রয়োগ প্রচন্ড ভাবে সায়েন্টিফিক – একেকটি স্ট্যান্ড এর ক্ষমতা আর দুর্বলতা বের করে তাকে মোকাবেলা করা – এই এক জিনিস বারবার করালেও তার মাঝেই যে অনন্যসাধারণ Charisma কাজ করেছে যা বুঝতে হলে মাঙ্গা টি পড়তেই হবে ……
অধিকাংশ স্ট্যান্ড দেখেই মনে হবে এই স্ট্যান্ড তো Invincible ; একে হারানো সম্ভব না – ঠিক তখনই আরাকি সেন্সেই এমন এক স্ট্রাটেজি হাজির করবেন যে চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়াতে আপনি বাধ্য……
গল্পের বাঁকে বাঁকে উত্তেজনা আর টুইস্টের পাশাপাশি প্রধান ভিলেইন এর মত কিছু চরিত্রের মাঝে সাইকোলজিক্যাল ব্রেকডাউন এর নমুনা দেখা যায় – সেটা হতে পারে নিজের পরিচয় গোপন রেখে পুরো পৃথিবী দখলে রাখার ইচ্ছা আর সেকারণে নিজের পরিবারকেও নিশ্চিহ্ন করে দেয়াতে রাজি থাকা ইত্যাদি ইত্যাদি ………
জোজো ফ্রাঞ্চাইজির কিছু ট্রেডমার্ক বস্ত বরাবরই আছে – পোজ এর পরিমাণ একটউ কম লেগেছে আমার কাছে । তবে আরাকির হাতে রাগান্বিত অবস্থায় চরিত্রের মুখ বা ফেইস এক্সপ্রেশন সেই Macho বা ওভার দ্যা টপ স্টাইলেরই – সেটাতে কোন পরিবর্তন নেই। আছে কিছু সংযোজন – “ নারান্সিয়া আর মিসটার Boom Chaka Boom Chaka Chaka Boom” নাচ
যেকোন একশন প্রেমী দের জন্য এটা আদর্শ মাঙ্গা – একটানা বসে ২০৪৮ পেজ শেষ করতে না পারলেও টানা ৫/৬ দিন পড়তে পারলে সহজেই শেষ করতে পারবেন ……
পার্ট ৪ না পড়লে কি সমস্যা হবে? একটু আধটু হবে বৈকি। শুরুতেই কোইচি হিরোসে কে চিনবেন না আর “অ্যারো” বস্তটি কোথা থেকে এল তা নিয়ে বিব্রত লাগতে পারে। তবে তা এঞ্জয়মেন্টের ক্ষেত্রে কোন প্রভাবি ফেলবে না ……
ফিমেইল ক্যারেক্টারের ড্রেস আপে একটু ভিন্নতা আছে এবার! এর আগে তেমন একটা গল্পের মেইন প্লটে ফিমেইল চরিত্র না এলেও এবারের গল্পের প্রায় অর্ধেক অংশই এক ফিমেইল চরিত্রের রেসকিউ নিয়ে – আর এবার পোশাক আশাক টা বেশ Modernized করা হয়েছে – অর্থাৎ জোজোর গল্পের টাইমলাইনের সাথে গল্পের এনভায়রনমেন্টের একটা সামঞ্জস্য রাখা হচ্ছে ……
আর মাঝে মাঝেই ভলিউমের কভারের পাশে হিরোহিকো আরাকি’র মাঙ্গা আকাকালীন কিছু অভিজ্ঞতা তিনি শেয়ার করেছেন – ওগুলো পড়ে দেখা যেতে পারে।
তবে এবারের গল্প পুরোটাই দক্ষিণ ইউরোপকেন্দ্রিক হওয়ায় পার্ট ৩ এর মত সার্বজনীন ফ্লেভার টা হয়ত পাওয়া যাবে না – তবে ফাইট গুলোর intensity আর উত্তেজনা সে অভাব অনেকাংশে পূরণ করে দিয়েছে ………
সর্বোপরি ভেন্টো অরেও কে ১০ এ ৯ এর উপর না দেয়াটাই অন্যায় হবে …
একটু অন্য ফ্লেভারের একশন উপভোগ করতে চাইলে পড়ে দেখতেই পারেন তবে তার আগে দেখে বা পড়ে নিতে হবে ফ্রাঞ্চাইজির বাকি ৪ অংশ –
::: JoJo’s Bizarre Adventure (2012) [Anime- 26 Episodes] অথবা
JoJo’s Bizarre Adventure : Battle Tendency আর Phantom Blood এ মাঙ্গা দুটি
::: JoJo’s Bizarre Adventure : Stardust Crusaders (2014-15) [Anime – 48 Episodes]
অথবা একই নামধারী মাঙ্গা
::: JoJo’s Bizarre Adventure : Diamond is Unbreakable [এটার এনিমে অনগোয়িং;চাইলে মাঙ্গা পড়তে পারেন তবে এটা না পড়েও সোজা পার্ট ৫ Vento Aureo পড়তে কোন বাঁধা নেই]
অনন্য মাঙ্গা আসর-৭ (Ayeshah’s Secret)
সৎমায়ের ক্রোধ কিংবা ফ্যামিলি কমপ্লেক্সিটি – পুরনো কনসেপ্ট,গৎবাঁধা ক্লিশে আর বিরক্তি উদ্রেককারী……
কিন্ত সাধারণ কোন কনসেপ্টকে চাইনিজ আর্টিস্ট Jing Zhang অসাধারণ কিছুতে পরিণত করার ক্ষমতা রাখেন…… ডক্টর ডুমিং তার পারফেক্ট উদাহরণ…..
এবারো এক চরিত্রকেন্দ্রিক গল্প – চরিত্রটি সম্পর্কে শেষ মুহূর্ত অবধি রহস্য আর সাইকোলজিক্যাল কলিশন ও জটিলতায় অঙ্গুলিসংকেত – অর্থাৎ প্যাটার্ন টা ডক্টর ডুমিং এর মত কিন্ত শিল্পগুণ বা সৃষ্টিকর্ম হিসেবে “Ayesha’s Secret” ডক্টর ডু মিং অপেক্ষা যোজন যোজন এগিয়ে………
পড়ার সময় যেন চরিত্র কথা বলে – আর্ট এতটাই জীবন্ত যে খুব সহজেই গল্পের মাঝে মিশে যেতে পারবেন……
আর Intense মুহূর্তে একটু হলেও Psychological Thrust অনুভূত হবে ……
আয়েশার মাঝে জীবনের নানা দিক,জীবনকে দেখার নানা দিক ই শুধু ফুটিয়ে তোলা হয়নি ,ভালোবাসার সংজ্ঞা,প্রতিহিংসা বা অদ্ভুত ভাবনা,Heartless নাকি realistic – বেশ কিছু প্রশ্নের উদ্রেক করেছে মানহুয়াটি ……
১১ চাপ্টারে দ্বিতীয় বিবাহ কে ফোকাসে রেখে আয়েশার মধ্য দিয়ে পাঠককে বেশ সংবেদনশীল এক উপবৃত্তে ঘুরিয়ে এনেছেন Jing Zhang ….
গল্প শুরু পরিবারের মাঝে সুখ খুঁজে পাওয়া দিয়ে – তারপর অসহায়ত্ব,নির্মম ষড়যন্ত্র,কে ভালো কে খারাপ বিচার করতে গিয়ে পাঠকের দ্বিধা,খুবি বড় একটি টুইস্ট যা হৃদযন্ত্রে বেশ আলোড়ন সৃষ্টিতে সক্ষম।বারবার অস্তিত্বের সংকটে ভোগা কিংবা মনের অজান্তে জন্ম নেয়া পরশ্রীকাতরতা কে সামনে রেখে ব্যাকগ্রাউন্ডে চলেছে ড্রামাটিক ও হালকা ট্র্যাজিক ঘটনাচক্র ……
গুয়েন সাহেব আর মিস নরমার কোল আলো করে আসে আয়েশা – জন্ম দিয়েই ইহলীলা সাঙ্গ করেন নরমা।তারপর দ্বিতীয় বিবাহ করেন গুয়েন,ঘরে আসে লেডি সিলভিয়া,তিনি আবার তিন পুত্রের মাতা,স্বভাবতই আয়েশার প্রতি অবহেলার সূত্রপাত – ঘোলাটে হয়ে যায় পরিবারের জীবনযাত্রা
তারপর ই গল্পের চাকা ঘুরতে শুরু করে – ইংরেজি নভেলগুলোর এনভায়রনমেন্ট থাকাটা বেশ উপভোগ্য ছিল।এতকিছুর মাঝে আয়েশা রহস্যময় – কি সেই রহস্য? সেই রহস্য দিয়েই গল্প শেষ হয়।কিভাবে কি ঘটছিল তার উত্তর দুয়ে দুয়ে চার করে মিলিয়ে দেয়া হয় যেটা ডক্টর ডু মিং এও করা হয়েছিল ডু মিং এর কনফেশনের মাধ্যমে ……
মাঙ্গার সেরা চরিত্র Sean – সংলাপ,বাহ্যিক রূপ,চিন্তাভাবনা সবকিছুতেই সে অন্য উচ্চতায় – যদিও মূল স্টোরিলাইনে সে অনেকটা দর্শকের ভূমিকাই পালন করেছে……
ডক্টর ডু মিং এর চেয়েও বেশ কিছু কঠিন প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছে “Ayesha’s Secret”
আয়েশা চরিত্রটির কার্যক্রম থেকে কি তাকে স্বার্থপর বলা যায়?
সিলভিয়াকে কি সত্যিই গল্পের ভিলেইন বলা যায়?
ঠিক কি কারণে কাউকে ভালোবাসা উচিত?
আমরা মুখে যতই বলি মহৎ কথা অহিংস কথা,উপযুক্ত পরিস্থিতিতে কি পারতাম প্রতিশোধ না নিয়ে ক্ষমা করে দিতে?
ঠিক আমাদের চিন্তাভাবনার যে সংবেদনশীল জায়গাতে আঘাত করলে আমরা সিদ্ধান্ত নিতে বিচলিত হই সে জায়গা নিয়েই যেন ইচ্ছে করেই গল্প সাজিয়েছেন Jing Zhang – আর একারণেই হয়ত আয়েশার রহস্য পছন্দের ক্যালিবারে অনায়াসেই ঠাই পেয়ে গেছে ………
আর্ট খুবি উঁচু দরের,একটা কোট আকার সময় কোটের ভাঁজ এও কোন ভুল ছিল না,চোখের পাপড়িতেও কোন গলদ নেই – হাতে আঁকা না জানিয়ে কাউকে মুভির স্ক্রিনশট বললে অনায়াসেই বোকা বানানো যাবে ………
বেশ কঠিন কিছু কথা মনে হলেও মানহুয়াটি পড়ার সময় অনুভূতিটা এরকম জটিলই হবে – চাইলেও তাকে সহজ ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব না ………
প্যানেল টু প্যানেল আঁকার তারতম্য ও হয়নি এতটুকুও,আর আয়েশার ব্যাপারে একটা কথা – [চরিত্রটির প্রেমে পড়তে বাধ্য আপনি] – কারণ তাকে সেভাবেই আঁকা হয়েছে …………
মানহুয়াটি বেশ ডার্ক আর গভীর,লাইট কিছুই নেই।একটি সাধারণ সংলাপের মাঝেও লুকিয়ে আছে অনেককিছু ……
মানহুয়াটিতে রহস্য রহস্য গন্ধ থাকলেও শেষ অবধি রহস্যের চেয়ে সাইকোলজি আর ড্রামাটিক ভাইব পাওয়া গেছে ………
অনন্য মাঙ্গা আসর-৬ (Doctor Du Ming)
অনন্য মাঙ্গা আসর – ৫ (Boku no Hero Academia)
অনন্য মাঙ্গা আসর – ৪ (Hideout)
নভেম্বর ৩০,২০১০……
কোন এক পাহাড়ের রাস্তায় এক দম্পতির গাড়ির ব্যাটারি নষ্ট হয়ে যায়।এই দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় মেকানিক্যাল পাওয়া রীতিমত অসম্ভব।উপায় না দেখে গাড়ি থেকে নেমে পাহাড়ে রাত কাটানোর জায়গা অনুসন্ধান করছে তারা।তারপর হাটতে হাটতে কথার ফাকে তাদের স্মরণে আসে পাহাড়ের এই অংশ নিয়ে জনশ্রুতি আছে – “পর্যটকরা এ জায়গায় প্রায়শই হারিয়ে যায় এবং আর ফিরে আসে না।“ তো ২০১০ সালে এসব আজগুবি গল্প ছাড়া আর কিছুই নয়।হাটতে হাটতে একটি পুরোনো গাড়ি চোখে পরে তাদের।এ আমলের নয় তা দেখেই বোঝা যাচ্ছে।২৫-৩০ বৎসর আগের মদেল।গাড়ির পাশেই একটা ছেড়াবেড়া পুরনো নোটবুক।নোটবুকে লেখা ছিল—
“I wonder How much time has passed since the story started… 2 years? maybe 3? But Even with that,I still have trouble remembering…..
My name is Kirishima Seiichi.I am a writer in Profession,and for me,This Book will no doubt be my Last. My Only wish is to tell everything in this manuscript…. Before it is too late. I pray that someday,it will find itself in the hands of someone.
…………..
…………..
…………..
Hey You,The reader of this Book… If you happen to find the entrance to the cave,Don’t hesitate to come in.”
আর তারপরই তারা সামনে একটা অন্ধকার গুহা দেখতে পেল……
স্বাগতম “অনন্য মাঙ্গা আসর” এ।আজকে যে মাঙ্গা নিয়ে কথা বলব তার জনরা কি? উপরের লেখাটুকু পড়েও বুঝতে পারছেন না? হরর,হুম ঠিক শুনলেন হরর।উপরের লেখাটুকু Masaumi Kakizake’রHideout মাঙ্গা থেকে। একটা প্রশ্ন – উপরের অংশটা মাঙ্গার প্রথম না শেষ অংশ?? রিভিউর শেষভাগে উত্তর জানিয়ে দেওয়া হবে…
কিরিশিমা সেইচি – একজন লেখক।স্ত্রী মিকি আর ছেলে জুন কে নিয়ে তার পরিবার।কিন্তু আচমকা বিপদাপন্ন হয়ে পরে সে,তার লেখা আর পছন্দই হচ্ছে না প্রোডাকশন হাউজগুলোর।এদিকে পরিবারের কাছ থেকে সে এ কথা গোপন করে যায়।কিন্ত একদিন সব ওলটপালট হয়ে যায়,বড় একটা ধাক্কা খায় সেইচির পরিবার যার দোষটুকু সেইচির ঘারে চাপিয়ে দেওয়া হয় যদিও তা ছিল একটি দুর্ঘটনা।
সেই ধাক্কা কাটিয়ে উঠার জন্য এক দ্বীপ ভ্রমণে যায় সেইচি আর মিকি।পাহাড়ে গাড়ি চালাতে চালাতে এক জায়গায় এসে গাড়িটির ফুয়েল শেষ হয়ে যায়।আর তারপরই গল্প মোড় নেয় এক অন্য দিকে……… যা পাঠককে শোয়া থেকে বসানোর জন্য বা চেয়ার থেকে মনিটরের দূরত্ব কমানোর জন্য যথেষ্ট।
আঁকার কথা বলাটা আমার সাজে না – কারন আমার আঁকা খুব বেশি সুন্দর আর কি। :3
তাও বলি,আমার দেখা সেরা আর্ট এর মধ্যে একটা।বলে রাখা ভালো,সেইচি আর জুনের পাহাড়ে ভ্রমণের সময় বৃষ্টিপাত হচ্ছিল।আর সেই বৃষ্টিপাতের দৃশ্য এত ভালোভাবে আঁকা হয়েছে যে মনে হচ্ছিল যেন আমার কম্পিউটারে বৃষ্টি হচ্ছে।তবে চরিত্রগুলোর আঁকাও ভালো লেগেছে।আর রক্ত ও অন্যান্য Horror Material গুলো এত সুন্দরভাবে অঙ্কিত হয়েছে যে জীবন্ত আঁকা উপাধি দেওয়া যায়…
হরর মাঙ্গা হলেও বেশি ভয় পাওয়ার মত কিছু নেই… অর্থাৎ পড়ার পর আপনি ভয়ে রাতে ঘুমোতে পারবেন না তেমনটি হওয়ার কোন কারণ নেই।
আর মাত্র ৯ চাপ্টারে এত সুন্দরভাবে গল্পটা গুছিয়ে আনা হয়েছে যে পড়ার পর মনে হবে –“না,টাইম ওয়েস্ট হয়নি,ভালো কিছুই পড়লাম।“
এন্ডিং সংক্রান্ত—-
আমার মনে হয়েছে এই মাঙ্গার কোন এন্ডিং নেই।কারণটা মাঙ্গাটা পড়লেই বোঝার কথা।আর এরকম অসম্পূর্ণ প্রছন্ন এন্ডিং এর জন্যই এর জনরা ট্যাগে “হরর” শব্দটি সার্থকতা পেয়েছে।
উপরের অংশটা মাঙ্গার শেষভাগ ও প্রথমভাগের সংমিশ্রণ।সেগমেন্ট সম্পর্কে মতামত একান্তভাবে কাম্য…
মাঙ্গাঃ Hideout
মাঙ্গাকাঃ Masaumi Kakizake
চাপ্টারঃ ৯
জনরাঃ হরর,সেইনেন,সাইকোলজিক্যাল,একশন
রেটিং(ব্যক্তিগত): ৭.৭
মাঙ্গা পড়ুন,অন্যকেও পড়তে বলুন…
অনন্য মাঙ্গা আসর — ৩ (Our Happy Hours)
জীবনে মানুষ যখন চলে যায় মধ্যবয়সে তখন চাওয়া পাওয়ার হিসেব করতে শুরু করে সবাই। কিন্তু যাদের জীবনটা এতটা স্বাভাবিক নয়,তাদের গল্পটা কেমন? তা আড়ালে থেকে যায় । অনিয়মিত “অনন্য মাঙ্গা আসরে” আরেকবার স্বাগতম । জানি অনেকেই ভুলেও গেছেন সেগমেন্টটার কথা । আজকেও আয়তনে অতি ছোট এক মাঙ্গা নিয়ে কথা বল্ব।বিখ্যাত কোরিয়ান লেখিকা Gong Ji-Young এর লেখা উপন্যাস “Our Happy Hours” এর জাপানি অনুবাদ করেন হাইসুকে কারোউ । আর সেই অনূদিত উপন্যাসের সারমর্ম রূপে মাঙ্গা অঙ্কনের কাজ করেন সাহারা মিজু । MAL এ গিয়ে মাঙ্গা টপ সাজেশনের মধ্যে “Watashitachi no Shiawase na Jikan” নামে একটা মাঙ্গা খুঁজে পাবেন । বলছি সেই মাঙ্গার কথাই।
দৃশ্যপট
একবার নয়,দুবার নয়,তিন তিন বার সুইসাইড করার চেষ্টা করেও মরতে পারেননি জুরি মুতোউ । জীবনের প্রতি ঘেন্না চলে এসেছিল । কিন্ত কেন?……………………………
একজন বা দুজন নয়,তিন তিন জন জলজ্যান্ত মানুষকে খুন করেছে ইউ। আর এজন্য সে আফসোসও করে না বিন্দুমাত্র । কিন্ত কেন?…………………………………
কি হয়েছিল তাদের জীবনে ,তা নিয়েই শুরু হয় গল্পের । সিস্টার মনিকার সাহচর্যে কারগারে ইউউ এর কাউন্সেলিং এর দায়িত্ব পায় জুরি । কিন্ত যে নিজেই জীবনকে গলা টিপে নিঃশেষ করে দিতে চেয়েছিল সে একজন খুনিকে কিভাবে জীবন চেনাবে ??
মনে জমে থাকা কষ্ট আছে দুজনেরই , যেন একে অন্যের প্রতিবিম্ব …………
এই সুবাদে ইউউ আর জুরি এর প্রতি বৃহস্পতিবার দেখা হত। ছিন্ন ভিন্ন কিছু কথা আর অনুভূতি ভাগাভাগি আর কি………………
জনরা
রোমান্স, মিউজিক, সাইকোলজিক্যাল, ড্রামা, সেইনেন ।
কেন পড়বেন
খুদে হলেও মাঙ্গাটি ব্যাপক প্রশংসার দাবিদার । জীবন নিয়ে ধারণাই পাল্টে দেওয়ার মত মোটিভেটিভ এটি । তবে আবেগের জায়গা আছে ব্যাপক । আপনি যদি এটাকে শোউজো স্টাইলের রোমান্স মনে করে থাকেন তবে বড় ভুল করবেন। রোমান্টিক হলেও মনে রেখাপাত করার মত ।কারণ অনেকেই একটানা মাঙ্গা পড়তে পছন্দ করেন না । কিন্তু আয়তন ছোট হওয়ায় পড়তে কোন বাঁধা নেই। তবে এন্ডিং কেমন সেটা না হয় পাঠকদের জন্যই থাকুক………
আর্টওয়ার্ক
আঁকা ব্যতিক্রমী না হলেও খারাপ নয়। মানে আঁকা খুব বেশি দৃষ্টিনন্দন না হলেও একেবারে খ্রাপ নয়।
অনুভূতি
Exaggerating নয় সত্যিই অনেক ভালো লাগার মত একটা মাঙ্গা । শর্ট মাঙ্গার থেকে এর বেশি আশা করাটাই যেন অন্যায়। আর মাঙ্গাটিতে এমন কিছু Quote আছে যা দেখেই বোঝা যায় এ কোন জ্ঞানী লেখকের কাজ। আর সবাইকেই বলব পড়ে ফেলতে কারণ মাত্র ৮ চাপ্টারের মাঙ্গাটি পড়তে কতক্ষণই বা লাগবে…… অল্প সময় খরচ করে পড়ে ফেলুন ,সময়ের দাম উসুল হয়ে যাবে। মাঙ্গা পড়বেন,অন্যকেও পরতে বলবেন এই প্রত্যাশা রইল ।
মাঙ্গাটি পড়েছিলাম অনেক আগে , তবে উপন্যাসটা পরখ করে না দেখে লিখতে চাইছিলাম না তাই যা দেরি । আর সাহারা মিজু-সানের উপন্যাসটি পড়ার পর অনুভূতি দিয়েই আজকের লেখা শেষ করছি ………
“I remember the time when I first read the original novel. It was the beginning of summer in 2007. I feel as though it taught me that,because of mankind we are burdened by terrible hurt,but the way we’re able to find relief from this hurt is also through mankind……….”
—-Sahara Mizu November,2008
অনন্য মাঙ্গা আসর – ২ (Harem Lodge)
সাসাহারা মিদোরি নামের এক মেয়ের প্রবাসী বাবা মেয়ের জন্য জীবনসঙ্গী ঠিক করে রেখেছেন এবং ,মেয়েকে ভবিষ্যৎ স্বামীর কাছে প্রেরণও করেছেন। সেই ছেলেটি হল তেতসুয়া কাতাগিরি। এক্সপ্রেশনলেস সহজ সরল এক ছেলে। আর যে বাড়িতে গিয়ে তারা ঊঠল তা রেন্টাল এপার্টমেন্ট “Harem Lodge” …………………
আর এভাবেই শুরু হয়ে যায় মিদোরি-তেতসুয়ার গল্প নিয়ে শর্ট লেন্থের মাঙ্গা “Harem Lodge” . ৯ চাপ্টারের শৌজো রোমান্টিক মাংগাটি সর্বোপরি ভালো। ক্যারেক্টার সাজানো,চোখে লাগার মত ব্যাকস্টোরি থাকায় গল্পরস পূর্ণ।
রোমান্টিক ভাইব ও এনভারোমেন্ট মাঙ্গার প্রথম চাপ্টার থেকেই পাওয়া যাবে। আর হারেম লজের বসবাসকারীরা নিতান্তই স্বাভাবিক নন,অদ্ভুত সব চরিত্রের অবতারণা করা হয়েছে এখানে।
আয়ুমু ওয়াকাতসুকি যাকে অনেক সময় মানুষ মেয়ে ভেবে ফেলেন,আসলে উনি ছেলে …
শুইচি ওডা,এনার ব্যাপারে বললে স্পয়লার হয়ে যাবে তবে ছবি দুটো দেখলেই বুঝতে পারবেন ক্যারেক্টার টা কেমন …
তবে মাঙ্গার প্রথমদিকে কোরিয়ান মানহয়ার মত সরলরৈখিক রোমান্স মনে হলেও পরবর্তীতে হালকা প্লট টুইস্ট আছে,ব্যাকস্টোরী আর ফ্লাশব্যাক দিয়ে পুরো মাঙ্গার ধরনকেই যেন পালটে দেওয়া হয়েছে। আর হারেম লজের অধিবাসীদের প্রতিদিনকার জীবন এর জায়াগাগুলোয় হালকা হাসির খোরাক পেতেই পারেন।
আর মাঙ্গার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশে এই মাঙ্গাটির ঘাটতি ব্যাপক। “””আর্টওয়ার্ক”””
মাংগাটির আঁকা মিশ্র,কভার ও গুরুত্বপূর্ণ দৃশ্যগুলোতে আঁকা নিয়ে কোন সমস্যা না থাকলেও,ফ্ল্যাশব্যাক ও ব্যাকস্টোরির সময় তেতসুয়া আর মিদোরির চেহারা দেখলে রীতিমত মেজাজ খারাপ হয়ে যেতে পারে। এত্ত সিরিয়াস অংশে এসে মাঙ্গাটির আঁকার এ বেহাল দশা কেন?? তাই আঁকা নিয়ে অতি উৎসাহী ও “দেখতেই ভালো লাগে না চেহারা তাই এটা ভালো না” এধরনের দর্শকদের ভালো লাগা সুনিশ্চিত না।
আর খুব তাড়াহুড়া করে মাঙ্গাটি শেষ করা হয়েছে বলে স্টোরিলাইনকে কেবল “ভালো” , আঁট ভাষায় “মোটামুটি” বললে তর্কের জায়গা নেই।
মাঙ্গাটি একদিন ফ্রি টাইম পেলে পড়ে ফেলতে পারেন,আশা করি ভালো লাগবে।
মাঙ্গাটির রচয়িতা শিজুকি ফুজিসাওয়া, মাইএনিমেলিস্টে রেটিং দেওয়া হয়েছে ৭.৬৯ ……
সামনে আরো একটা মাঙ্গা নিয়ে হাজির হব , সে পর্যন্ত সাইয়োনারা ^_^
মাঙ্গা পড়ুন,অন্যকেও পড়তে বলুন………
অনন্য মাঙ্গা আসর – ১ (Major)
এনিমে বের হয়েছে,নিউ সিজন,এই এনিমের গ্রাফিক্সের কাজ,কোনটা ভাল কোনটা মন্দ তা নিয়ে মাতামাতি,আলোচনার অন্ত নেই।অথচ যেই মেধাবী শিল্পীদের হাতে তৈরি মানগা হতে এনিমের এডপ্টেশন হয়,তারা গুরুত্ব পান বটে,তবে মানগা পড়ার প্রতি আকর্ষণ কম।অথচ মাঙ্গাতে কাহিনীর সুসজ্জিত বিবরণ আর সুন্দর উপস্থাপনা পাওয়া যায় যার অনেকাংশ এনিমেতে কেটে ফেলে দেওয়া হয়।
তাই,গ্রুপে মানগা নিয়ে আলোচনা করা হয় মাঝে মধ্যে,একটু আধটু।তাই মানগা পড়ার প্রতি আগ্রহ বাড়িয়ে মানগার প্রতি ফ্যানডম এর প্রসারে হাজির হলাম “অনন্য মানগা আসর” নিয়ে। অনেক শ্রদ্ধেয় সেনপাইরা অনেক মানগা পড়েছেন,জানেন অনেক কিছু। তাই যেকোন ভুল ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। আর ১৮ বছরের ছোট্ট জীবনে নিয়মিত কিছু করতে পেরেছি বলে মনে পড়ে না,তাই এই সেগমেন্টের কোন নিয়মিত ডেটলাইন দিতে পারছি না।
আজকের মানগা মেজর। স্পোর্টস সিরিজ নিয়ে আলোচনায় স্লামডাঙ্ক,কুরোকো,হাজিমে নো ইপ্পো,ক্রস গেম,এইস অফ ডায়মন্ড ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা হলেও এই মাস্টারপিস নিয়ে তেমন আলোচনা পাই নি। তাই আজকে কথা হোক Major নিয়ে।
গোরোউ হোন্ডা নামের এক কিন্ডারগার্টেন পড়ুয়া ছেলের বেসবল খেলার আদ্যোপান্ত গল্পের মূল অংশ। এদিক দিয়ে উপরোক্ত যেকোন স্পোর্টস সিরিজের মধ্যে ক্যারেক্টার ডেভলপমেন্টের ব্যাপারে এটা চ্যাম্পিয়ন। কিন্ডারগার্টেন এর প্লেগ্রাউন্ড থেকে ডিস্ট্রিক্ট ,ডিস্ট্রিক্ট থেকে ন্যাশনাল এভাবে মারাত্নক উদ্দীপনা নিয়ে তৈরি করা হয়েছে এই মাঙ্গাটি। আর্টের ধরন ভালো কি না বলব না,বরংচ বলি এথলেটিক। খেলার মাঝে কি হচ্ছে তা বোঝার জন্য আর্ট সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে।
অনেকেই বলেন মেইন ক্যারেকটার এর খেলা শেষ হয়ে গেলে গল্পও শেষ,এটা তাদের পছন্দ না।তাদের জন্য একট ছোট্ট ——- স্পয়লার (((((হোন্ডার পর হোন্ডার ছেলেকেও দেখতে খেলায় দেখতে পাবেন এখানে))))))
মানগা প্রথম সিজনে ৭৮ টি ভলিউম আছে। কিন্তু সিজন ২ এখনো অনগোয়িং…
রচয়িতা- তাকুয়া মিতসুদাজেনরা – কমেডি,শোউনেন,স্পোর্টস MAL রেটিং- ৮.৩৯খেলাগুলোর মধ্যে সেইশুর সাথে ম্যাচ আর বেসবল বিশ্বকাপ এর ম্যাচগুলো উল্লেখ করার মত। মাঙ্গাতে খেলাগুলোর উপস্থাপন ভালো হলেও এনিমেতে স্পোর্টস থিমের চেয়ে শোউনেন বা ইন্টিমিডেটিং কিছু দৃশ্য দেওয়া হয়েছে যা মাঙ্গাতে নাই।মেজর মাঙ্গাতে ধাপে ধাপে বেসবল বিশ্বকাপ,মেজর লিগ,হাইস্কুল টুর্নামেন্ট এর মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে স্পোর্টস এর আসল থিম বা চেতনাকে।
সবচেয়ে মজার বিষয় ক্লাবের নয় দেশে দেশের মধ্যকার খেলাও রয়েছে এই মাঙ্গাতে। আরো আছে সলিড ডিটেইলিং যা খেলার উত্তেজনা বারিয়ে দিয়েছে।শিগেহারু,হোশিনো সেনসেই,সাতো এবং শিমিজুর মত কিছু চরিত্র থাকায় মানগাটির চরিত্রে বৈচিত্র্য ও চোখে পড়ার মত।আলোচিত এক চরিত্র হল জো গিবসন। মাঙ্গাটি পড়লেই বুঝতে পারবেন Major না পড়লে ওনেক কিছু মিস ;-)আজকের মত মাঙ্গা আসর এ পর্যন্তই থাকুক…সামনে ভালো কোন মাঙ্গাতে নিয়ে আসবো আপনাদের সামনে।লেখা লম্বা করলাম না,কারন তাতে স্পয়লার মাত্রাতিরিক্ত হয়ে যেতে পারে।মানগা পড়ুন,অন্যকেও পড়তে বলুন 🙂