অনন্য মাঙ্গা আসর – ৯ (Hoshi Mamoru Inu inc. Zoku Sequel)

একটি অনিয়মিত সেগমেন্ট তাদের জন্য যারা পড়ার মত মাঙ্গা খুজছেন কেবল তাদেরই জন্য …
একটি গল্পের শুরু বা শেষ থাকতেই হবে – এটা কোন ধর্মগ্রন্থ প্রদত্ত বিধান নয়। ঠিক তেমনি একটি মাঙ্গা হোশি মামোরু ইনু – যার ইংরেজি প্রতিশব্দ দাঁড়ায় Star Protector Dog…
বিভিন্ন ধর্মে একটি প্রাণী হিসেবে কুকুরকে একটু খাটো করে দেখার প্রবণতা দেখা যায় . কিন্ত আমার ধ্যানধারণা ঠিক উল্টো। যেখানে মানুষ বিড়ালকে পোষা প্রাণী হিসেবে বেশি Prefer করে থাকে সেখানে আমার কাছে কুকুরের চেয়ে বড় সহযোগী/বন্ধু আর কিছু নেই। এর পেছনে একটি ব্যাক্তিগত কারণও আছে বৈকি – ছোটবেলায় আমার এক খালুর মারা যাওয়ার পর তার পোষা কুকুরটি ৪ দিন টানা তার কবরের সামনে বসে অনাহারে প্রাণত্যাগ করে ওকে ঠিক খালুর পাশেই কবর দেয়া হয়।
সুতরাং বলে রাখা ভালো, কুকুরের প্রতি ভালোবাসা বা আসক্তি থাকলে এই মাঙ্গাটি আপনার কাছে আদতপক্ষেই মাস্টারপিস মনে হবে.যেমনটি আমার ক্ষেত্রে হয়েছে …
Hoshiro Mamoru Inu 1

তাকাশি মুরাকামি নামটি দেখে প্রিয় লেখক হারুকি মুরাকামির সাথে যোগসূত্র আছে কি না ঘাটাঘাটি করতে গিয়ে দেখা মিললো আর্ট এর ব্যাপারে এই শিল্পীর পারদর্শিতা দেখে – কিছু Abstract আর Metaphoric পেইন্টিং দেখে রীতিমত অবাক হয়েছিলাম। মাঙ্গাটি ভালো লাগার একটি অন্যতম কারণ হলা আর্ট – না এখানে আর্ট মানে মিউরা কেন্তারৌ র মত চোখ ধাঁধানো আর্ট নয় বরং খুবই সহজাত শীতল আর্ট। প্রথম নজরে দেখে মনে হবে এ আর এমন কি এতো আমিই আঁকতে পারি কিন্ত পরমুহূরতে উপলব্ধি হয় যে না প্রতিটি স্কেচের মাঝে Message লুকিয়ে আছে – আর যত আগাতে থাকবেন সামনে বুঝতে পারবেন মাঙ্গাটির আর্ট কতটা অসামান্য….
এই মাঙ্গাটিতে মানুষের সংলাপের অবদান ক্ষীণ বা গৌণ – সমস্ত সংলাপ গুলো অবলা জীব কুকুরের। একটি প্রানী মানুষের ভাষা বোঝে না কিন্ত তার ভাবাবেগ মানুষের চেয়ে কম সূক্ষ্ম নয় – যেটা তাকাশি মুরাকামি পুরো মাঙ্গাটা জুড়ে আমাদের বোঝাতে চেয়েছেন….
কতগুলো কুকুরের জীবনকাহিনীর সাথে তাদের পালক মানুষের কমপ্লেক্সিটি; পালক বদল, ঘটনাচক্র, সমাজের কিছু দৃশ্যকল্প আর তার মাঝে ড্রামা – ট্রাজেডি। একসাথে এত কিছু একটি উপন্যাসে ফুটিয়ে তোলা মাঙ্গার চেয়ে বেশ সহজ কিন্ত ছবি এঁকে এঁকে এক ছবি দিয়ে হাজার লাইনের অভিব্যাক্তির প্রকাশ ঘটানো দুঃসাধ্য। প্রথম অংশে পুরোপুরি সফল না হলেও Zoku তথা সিকুয়েল মাঙ্গাটির জন্য তাকাশি মুরাকামি পেরেছেন সেটা করতে; এজন্য MyAnimeList এ Zoku কে ১০/১০ দিতে বাধ্য হয়েছি।
Hoshiro Mamoru Inu 2গল্পের মাঝে একজন চরিত্র এসেছে; তার পরিবার আর পরিপার্শ্ব ও তার সাথে একটি কুকুরের সম্পর্ক বা বলা যেতে পারে কুকুরের চোখে সেই মানুষের জীবনযাত্রা বা পরিবার কিরকম তার বর্ণনা দিয়ে শুরু। কুকুরের ভাবনা হয়ত সহজ সরল এবং কিছুটা নির্বুদ্ধিতা কিন্ত তাতে কোন দোষ নেই; কারণ কুকুর বোঝেনা কেন বাচ্চারা টিনেজার হয়ে গেলে বাবা মাকে মধ্যাঙ্গুলি দেখায়; সে বোঝেনা কেন ভালোবাসা আর মায়ার পরও Unemployed বলে একটি দম্পতির ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়. আর তাই কুকুরের কাছে তার পালকের জীবনের ব্যাখাটা অনেকটা সহজ ভাষ্য – “হুম সে এটা করে তারপর এটা হয় আর তারপর থেকে এটা রোজই হয়”
আর এটাই এই মাঙ্গার সৌন্দর্য – কুকুরের বুদ্ধিবৃত্তি ইতর প্রাণীর পর্যায়ে থাকায় যে বাস্তবিক অনুভুতি একজন পাঠক হিসেবে পাওয়া সম্ভব তা পাওয়া গেছে।
এক মুহূর্তের জন্যও ফিকশন বা রূপকথার মত টিপিক্যাল হয়ে যায় নি ব্যাপারটা।
আবেগে আঘাত হানতেও ছাড়েননি তাকাশি মুরাকামি; প্রয়োজনে হিউম্যান Perspective থেকেও সংলাপ আর ভাবনাকে তুলে ধরেছেন।
আর বারেবারে মনে করিয়ে দিয়েছেন “Ignoring Dogs is a CRIME”.
Hoshiro Mamoru Inu 3
তারপর আসা যাক গল্পের ফিনিশিং নিয়ে – এখানে প্রথমে অনেকগুলো কুকুরের জীবনকাহিনী বিচ্ছিন্ন ভাবে উপস্থাপিত হলেও শেষে এসে লেখক ঘটনাকে এমনভাবে সাজিয়েছেন যে রীতিমত চোখ বড় বড় করে শেষ দুই চাপ্টার গল্ধঃকরন করেছি ই বলা শ্রেয়।
মাত্র ৯ চাপ্টারের এই মাঙ্গাটি যতটা আর্টিস্টিক আর ইমোশনাল ছিল হয়তো অনেক দীর্ঘকায় মাঙ্গাতেই তা নেই; মাঙ্গাটি সবার পড়া উচিত; বিশেষ করে আপনি যদি প্রাণীপ্রেমী হন – মাঙ্গাটি পড়ার পর হলেও মনে কুকুরদের প্রতি একটু সফট কর্নার তৈরি হবে বলে আমার বিশ্বাস। আর চিৎকার চেচামেচির আগেই বলে রাখা ভাল উপরের কোন ছবিই স্পয়লার নয় সুতরাং ঘাবড়ে যাবার কোন কারণ নেই।
পরিশেষে একটাই কথা বলবো, যদি ব্যস্ততার কারণে পোষা প্রাণীকে সময় দিতে না পারেন তবে অন্য কাউকে দিয়ে দিন বা ঘরে দেখাশোনা করার জন্য লোক রাখুন। ফেলে রাখবেন না বা অবহেলা করবেন না; কারণ সে আপনার অবহেলা বুঝবে না – আর তখন তার চেয়ে বড় পাপ আর কিছু থাকে না…..

অনন্য মাঙ্গা আসর – ৮ (Vento Aureo)

দক্ষিণ ইতালির Naples এয়ারপোর্টে কুজো জোটারোর নির্দেশে কোইচি হিরোসে এসেছে হারুনো শিওবানা নামের একজনকে খুঁজতে —

হুম প্রথম বাক্যে কুজো জোটারোর উপস্থিতি দেখেই অনুমান করতে পারা যায় এটা জোজো ফ্রাঞ্চাইজির সাথে সম্পর্কিত। মূলত Vento Aureo হল হিরোহিকো আরাকি’র JoJo’s Bizarre Adventure এর গল্পের পঞ্চম ভাগ যেখানে প্রোটাগোনিস্ট একজন গ্যাংস্টার – ঠিক গ্যাংস্টার এখনো নন তবে গল্পের সাথে সাথে পুরোদস্তর মাফিয়ার শিরায় শিরায় প্রবেশ করতে থাকবেন ……

গল্পের টাইমলাইন ২০০১ – দুর্নীতি আর মাফিয়ার আগ্রাসনে আক্রান্ত ইতালি – সমগ্র দেশে বিকেন্দ্রীকরণ পদ্ধতিতে ছড়িয়ে আছে সুসংগঠিত মাফিয়া চক্র । আর প্রোটাগোনিস্ট জিওরনো জিওভানা’র জীবনের লক্ষ্যই হল গ্যাংস্টার হওয়া ……

vento-aureo-1

একটু টিপিক্যাল Thug স্টাইলে মাফিয়ার এক চক্রের সাথে বিবাদে জড়িয়ে পড়ে জিওভানা – সেখান থেকে খুনোখুনি হয়ে গেলে এ খবর পৌঁছে যায় Higher Ups এর কাছে … গল্পের ধারাটা এখন পর্যন্ত বেশ টিপিক্যাল মাফিয়া স্টোরি আর বেশ প্রেডিক্টেবল মনে হচ্ছে তাই না?

কিন্ত আশ্বস্ত করতে পারি, আর যাই হোক টিপিক্যাল বা প্রেডিক্টেবল কথা দুটি ভেন্টো অরেওর ক্ষেত্রে ব্যবহার করাটা যথারীতি Insult মাংগাকার প্রতি। কারণ এই মাঙ্গা টিকে আঁকতে আঁকার স্কিলের চেয়ে বুদ্ধিমত্তা আর সৃজনশীলতার যে ভালো একটা ম্যাশ আপ আছে যা অধিকাংশ “Action” মাঙ্গা তেই থাকেনা ……

vento-aureo-2

স্ট্যান্ডের বিচিত্রতা রীতিমত Overwhelming ! স্ট্যান্ড কি বস্ত তা জানতে হলে চলে যেতে হবে জোজো ফ্রাঞ্চাইজির ৩য় পাখ্যান Stardust Crusaders এ …

এ ভাগের স্ট্যান্ড গুলো আগের সব জোজোর ভার্শন কে ছাড়িয়ে গেছে …

ওয়েস্টার্ন মিউজিকের আদলে বা স্বতন্ত্র ভাবে যে নামগুলো স্ট্যান্ডের পরিচয় তা শুনেই যেকোন একশন ফ্যান উচ্ছ্বসিত হবেন ……

পার্ট ৫ এ আমার সবচেয়ে পছন্দের ৭ টি স্ট্যান্ডের নাম উল্লেখ করা হল –

Gold Experience,Sticky Fingers,Man in the Mirror,The Walking Dead,Notorious B.I.G.,Metallica,King Crimson

vento-aureo-3

আর স্ট্যান্ডগুলোর এবিলিটি আর প্রয়োগ প্রচন্ড ভাবে সায়েন্টিফিক – একেকটি স্ট্যান্ড এর ক্ষমতা আর দুর্বলতা বের করে তাকে মোকাবেলা করা – এই এক জিনিস বারবার করালেও তার মাঝেই যে অনন্যসাধারণ Charisma কাজ করেছে যা বুঝতে হলে মাঙ্গা টি পড়তেই হবে ……

অধিকাংশ স্ট্যান্ড দেখেই মনে হবে এই স্ট্যান্ড তো Invincible ; একে হারানো সম্ভব না – ঠিক তখনই আরাকি সেন্সেই এমন এক স্ট্রাটেজি হাজির করবেন যে চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়াতে আপনি বাধ্য……

গল্পের বাঁকে বাঁকে উত্তেজনা আর টুইস্টের পাশাপাশি প্রধান ভিলেইন এর মত কিছু চরিত্রের মাঝে সাইকোলজিক্যাল ব্রেকডাউন এর নমুনা দেখা যায় – সেটা হতে পারে নিজের পরিচয় গোপন রেখে পুরো পৃথিবী দখলে রাখার ইচ্ছা আর সেকারণে নিজের পরিবারকেও নিশ্চিহ্ন করে দেয়াতে রাজি থাকা ইত্যাদি ইত্যাদি ………

vento-aureo-4

জোজো ফ্রাঞ্চাইজির কিছু ট্রেডমার্ক বস্ত বরাবরই আছে – পোজ এর পরিমাণ একটউ কম লেগেছে আমার কাছে । তবে আরাকির হাতে রাগান্বিত অবস্থায় চরিত্রের মুখ বা ফেইস এক্সপ্রেশন সেই Macho বা ওভার দ্যা টপ স্টাইলেরই – সেটাতে কোন পরিবর্তন নেই। আছে কিছু সংযোজন – “ নারান্সিয়া আর মিসটার Boom Chaka Boom Chaka Chaka Boom” নাচ

যেকোন একশন প্রেমী দের জন্য এটা আদর্শ মাঙ্গা – একটানা বসে ২০৪৮ পেজ শেষ করতে না পারলেও টানা ৫/৬ দিন পড়তে পারলে সহজেই শেষ করতে পারবেন ……

vento-aureo-5

পার্ট ৪ না পড়লে কি সমস্যা হবে? একটু আধটু হবে বৈকি। শুরুতেই কোইচি হিরোসে কে চিনবেন না আর “অ্যারো” বস্তটি কোথা থেকে এল তা নিয়ে বিব্রত লাগতে পারে। তবে তা এঞ্জয়মেন্টের ক্ষেত্রে কোন প্রভাবি ফেলবে না ……

ফিমেইল ক্যারেক্টারের ড্রেস আপে একটু ভিন্নতা আছে এবার! এর আগে তেমন একটা গল্পের মেইন প্লটে ফিমেইল চরিত্র না এলেও এবারের গল্পের প্রায় অর্ধেক অংশই এক ফিমেইল চরিত্রের রেসকিউ নিয়ে – আর এবার পোশাক আশাক টা বেশ Modernized করা হয়েছে – অর্থাৎ জোজোর গল্পের টাইমলাইনের সাথে গল্পের এনভায়রনমেন্টের একটা সামঞ্জস্য রাখা হচ্ছে ……

আর মাঝে মাঝেই ভলিউমের কভারের পাশে হিরোহিকো আরাকি’র মাঙ্গা আকাকালীন কিছু অভিজ্ঞতা তিনি শেয়ার করেছেন – ওগুলো পড়ে দেখা যেতে পারে।

তবে এবারের গল্প পুরোটাই দক্ষিণ ইউরোপকেন্দ্রিক হওয়ায় পার্ট ৩ এর মত সার্বজনীন ফ্লেভার টা হয়ত পাওয়া যাবে না – তবে ফাইট গুলোর intensity আর উত্তেজনা সে অভাব অনেকাংশে পূরণ করে দিয়েছে ………

সর্বোপরি ভেন্টো অরেও কে ১০ এ ৯ এর উপর না দেয়াটাই অন্যায় হবে …

একটু অন্য ফ্লেভারের একশন উপভোগ করতে চাইলে পড়ে দেখতেই পারেন তবে তার আগে দেখে বা পড়ে নিতে হবে ফ্রাঞ্চাইজির বাকি ৪ অংশ –

::: JoJo’s Bizarre Adventure (2012) [Anime- 26 Episodes] অথবা

JoJo’s Bizarre Adventure : Battle Tendency আর Phantom Blood এ মাঙ্গা দুটি

::: JoJo’s Bizarre Adventure : Stardust Crusaders (2014-15) [Anime – 48 Episodes]

অথবা একই নামধারী মাঙ্গা

::: JoJo’s Bizarre Adventure : Diamond is Unbreakable [এটার এনিমে অনগোয়িং;চাইলে মাঙ্গা পড়তে পারেন তবে এটা না পড়েও সোজা পার্ট ৫ Vento Aureo পড়তে কোন বাঁধা নেই]

অনন্য মাঙ্গা আসর-৭ (Ayeshah’s Secret)

সৎমায়ের ক্রোধ কিংবা ফ্যামিলি কমপ্লেক্সিটি – পুরনো কনসেপ্ট,গৎবাঁধা ক্লিশে আর বিরক্তি উদ্রেককারী……

কিন্ত সাধারণ কোন কনসেপ্টকে চাইনিজ আর্টিস্ট Jing Zhang অসাধারণ কিছুতে পরিণত করার ক্ষমতা রাখেন…… ডক্টর ডুমিং তার পারফেক্ট উদাহরণ…..

ayeshahs-secret-1

এবারো এক চরিত্রকেন্দ্রিক গল্প – চরিত্রটি সম্পর্কে শেষ মুহূর্ত অবধি রহস্য আর সাইকোলজিক্যাল কলিশন ও জটিলতায় অঙ্গুলিসংকেত – অর্থাৎ প্যাটার্ন টা ডক্টর ডুমিং এর মত কিন্ত শিল্পগুণ বা সৃষ্টিকর্ম হিসেবে “Ayesha’s Secret” ডক্টর ডু মিং অপেক্ষা যোজন যোজন এগিয়ে………
পড়ার সময় যেন চরিত্র কথা বলে – আর্ট এতটাই জীবন্ত যে খুব সহজেই গল্পের মাঝে মিশে যেতে পারবেন……

ayeshahs-secret-2

আর Intense মুহূর্তে একটু হলেও Psychological Thrust অনুভূত হবে ……
আয়েশার মাঝে জীবনের নানা দিক,জীবনকে দেখার নানা দিক ই শুধু ফুটিয়ে তোলা হয়নি ,ভালোবাসার সংজ্ঞা,প্রতিহিংসা বা অদ্ভুত ভাবনা,Heartless নাকি realistic – বেশ কিছু প্রশ্নের উদ্রেক করেছে মানহুয়াটি ……

১১ চাপ্টারে দ্বিতীয় বিবাহ কে ফোকাসে রেখে আয়েশার মধ্য দিয়ে পাঠককে বেশ সংবেদনশীল এক উপবৃত্তে ঘুরিয়ে এনেছেন Jing Zhang ….
গল্প শুরু পরিবারের মাঝে সুখ খুঁজে পাওয়া দিয়ে – তারপর অসহায়ত্ব,নির্মম ষড়যন্ত্র,কে ভালো কে খারাপ বিচার করতে গিয়ে পাঠকের দ্বিধা,খুবি বড় একটি টুইস্ট যা হৃদযন্ত্রে বেশ আলোড়ন সৃষ্টিতে সক্ষম।বারবার অস্তিত্বের সংকটে ভোগা কিংবা মনের অজান্তে জন্ম নেয়া পরশ্রীকাতরতা কে সামনে রেখে ব্যাকগ্রাউন্ডে চলেছে ড্রামাটিক ও হালকা ট্র্যাজিক ঘটনাচক্র ……

গুয়েন সাহেব আর মিস নরমার কোল আলো করে আসে আয়েশা – জন্ম দিয়েই ইহলীলা সাঙ্গ করেন নরমা।তারপর দ্বিতীয় বিবাহ করেন গুয়েন,ঘরে আসে লেডি সিলভিয়া,তিনি আবার তিন পুত্রের মাতা,স্বভাবতই আয়েশার প্রতি অবহেলার সূত্রপাত – ঘোলাটে হয়ে যায় পরিবারের জীবনযাত্রা

ayeshahs-secret-3

তারপর ই গল্পের চাকা ঘুরতে শুরু করে – ইংরেজি নভেলগুলোর এনভায়রনমেন্ট থাকাটা বেশ উপভোগ্য ছিল।এতকিছুর মাঝে আয়েশা রহস্যময় – কি সেই রহস্য? সেই রহস্য দিয়েই গল্প শেষ হয়।কিভাবে কি ঘটছিল তার উত্তর দুয়ে দুয়ে চার করে মিলিয়ে দেয়া হয় যেটা ডক্টর ডু মিং এও করা হয়েছিল ডু মিং এর কনফেশনের মাধ্যমে ……

ayeshahs-secret-4

মাঙ্গার সেরা চরিত্র Sean – সংলাপ,বাহ্যিক রূপ,চিন্তাভাবনা সবকিছুতেই সে অন্য উচ্চতায় – যদিও মূল স্টোরিলাইনে সে অনেকটা দর্শকের ভূমিকাই পালন করেছে……
ডক্টর ডু মিং এর চেয়েও বেশ কিছু কঠিন প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছে “Ayesha’s Secret”
আয়েশা চরিত্রটির কার্যক্রম থেকে কি তাকে স্বার্থপর বলা যায়?
সিলভিয়াকে কি সত্যিই গল্পের ভিলেইন বলা যায়?
ঠিক কি কারণে কাউকে ভালোবাসা উচিত?
আমরা মুখে যতই বলি মহৎ কথা অহিংস কথা,উপযুক্ত পরিস্থিতিতে কি পারতাম প্রতিশোধ না নিয়ে ক্ষমা করে দিতে?

ঠিক আমাদের চিন্তাভাবনার যে সংবেদনশীল জায়গাতে আঘাত করলে আমরা সিদ্ধান্ত নিতে বিচলিত হই সে জায়গা নিয়েই যেন ইচ্ছে করেই গল্প সাজিয়েছেন Jing Zhang – আর একারণেই হয়ত আয়েশার রহস্য পছন্দের ক্যালিবারে অনায়াসেই ঠাই পেয়ে গেছে ………

আর্ট খুবি উঁচু দরের,একটা কোট আকার সময় কোটের ভাঁজ এও কোন ভুল ছিল না,চোখের পাপড়িতেও কোন গলদ নেই – হাতে আঁকা না জানিয়ে কাউকে মুভির স্ক্রিনশট বললে অনায়াসেই বোকা বানানো যাবে ………

বেশ কঠিন কিছু কথা মনে হলেও মানহুয়াটি পড়ার সময় অনুভূতিটা এরকম জটিলই হবে – চাইলেও তাকে সহজ ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব না ………
প্যানেল টু প্যানেল আঁকার তারতম্য ও হয়নি এতটুকুও,আর আয়েশার ব্যাপারে একটা কথা – [চরিত্রটির প্রেমে পড়তে বাধ্য আপনি] – কারণ তাকে সেভাবেই আঁকা হয়েছে …………
মানহুয়াটি বেশ ডার্ক আর গভীর,লাইট কিছুই নেই।একটি সাধারণ সংলাপের মাঝেও লুকিয়ে আছে অনেককিছু ……
মানহুয়াটিতে রহস্য রহস্য গন্ধ থাকলেও শেষ অবধি রহস্যের চেয়ে সাইকোলজি আর ড্রামাটিক ভাইব পাওয়া গেছে ………

ayeshahs-secret-5

ERASED – প্রজাপতিকথন, স্মৃতিকথন, কমপ্লেক্স হিউম্যান সাইকোলজি — অনন্য রায়হান

Erased

[জানালা খোলা,হঠাৎ নীল প্রজাপতি] ……
আর্ট প্রতিযোগিতার ডেট কি আর বাড়ানো হবে না ভাইয়া? আমার বোনের ছবিটা এখনো স্ক্যান করা হয়নি
……
এই মুরগিটায় আরেকটু তেল লাগবে মাহি ভাই,ব্রাশটা এদিকে……
……
ওয়ান পাঞ্চ ম্যান সেরা এনিমেশন – এজন্যই গণতন্ত্র ভাল্লাগে না ……
………
[জানালা খোলা,হঠাৎ নীল প্রজাপতি] ……
………
ব্যাপারটা কি বারবার অতীতে ফিরে যাচ্ছি কেন?
সপ্তাহ করে করে তো প্রায় গত বছর চলে গেলাম ……
টাইমলাইন আর মানুষের স্মৃতি নিয়ে আগ্রহ-গবেষনার অন্ত নেই – আপেক্ষিকতার তত্ত্ব পড়ে অনেকে আলোর বেগে গতিশীল হলে সময় তার জন্য ধীরে ধীরে আগাবে এমন Hypothesis এ অনেকে আস্থা রাখেন ……
তবে এর পেছনে সায়েন্টিফিক কারণ ছাড়াও সাইকোলজিক্যাল একটা প্রণোদনা আছে।অতীতে ফিরে গিয়ে আবার নতুন করে আগের কাজটা করা – ভবিষ্যতে গিয়ে পরিণাম সম্পর্কে জানা – এ দুটি কাজ করার স্বপ্ন আমরা জানতে অজান্তে দেখি – Sub Consciously হলেও দেখি । এর মধ্যে ভবিষ্যতে যাওয়ার চেয়ে অতীতে যাওয়ার কামনা টাই বোধহয় প্রকট।আর সেই দুর্বলতার সুযোগ নিতে ছাড়েনি লেখক,গল্পকার,কমিক আর্টিস্ট কেউই ………
বলছি ERASED এর কথা –
প্রথমত দীর্ঘ জাপানি নাম হল Boku Dake ga Inai Machi যা মাঙ্গা টির অরিজিনাল পাবলিশিং নেইম – যেখানে সাতোরু নামের এক চরিত্র [বছরের সেরা চরিত্রগুলোর মধ্যে অন্যতম] কিভাবে সময়ের সাথে লড়াই করে পুরো টাইমলাইনের চাল উলটে দেয় সেটাই দেখানো হয়েছে……
প্রথমত রিভাইভাল বা টাইম রিওয়াইন্ডিং এর কথায় আসি – সিরিজটিতে প্রোটাগোনিস্ট সাতোরুর একটি Sub Conscious এবিলিটি – [এবিলিটি কি? সে এটাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না] – এর মাধ্যমে সে জাম্প করে চলে যেতে পারে অতীতের কোন টাইমে – ব্যাপারটা ঠিক জাম্পকৃত টাইম কেটে ফেলা না – যে টাইম টা জাম্প করা হয়েছে সে টাইম টাও তাকে অতিবাহিত করতে হবে যদি নেক্সট কোন রিভাইভাল না হয় এর মাঝে –
অর্থাৎ এটা King Crimson এর স্ট্যান্ডের মত নয় [রেফারেন্স : Vento Aureo]
এই এবিলিটি তার হাতে কেন আর এটা কি হুটহাট ই এক্টিভেট হয় স্বয়ংক্রিয়ভাবে?
না সেটা হলে কোন Stable গল্প বানানো সম্ভব না – কারণ কারণে অকারণে রিভাইভাল হলে সেটা Meaningless আর সাতোরুর বয়স এ জীবনে বাড়বে না ……
টপ টু বটম সিরিজটি নিয়ে বিতর্কের শেষ নেই –
প্রথমত সিরিজটিতে সাতোরু ও হিনাজুকি – দুটি চরিত্রকে নিয়ে বিতর্ক
এ বিতর্ক হাস্যকর তো বটে Childish – গল্প যেখানে হালকা সাসপেন্স ভাইব [সাসপেন্স হিসেবে ব্যর্থ],টাইম ট্রাভেলিং আর সাইকোলজিক্যাল সেখানে রোমান্স নিয়ে ভাবলে মুশকিল! – বাঙ্গালিরা ছোটবেলার খেলার বান্ধবী বা বন্ধু মানেই ভবিষ্যতের স্ত্রী বা প্রেমিকা এটা মনে করার একটা ট্রেন্ড বাংলা সিনেমার মাধ্যমে আমাদের শিরায় Push করে দিয়েছে – তাই Realistic শব্দটা কথায় কথায় উচ্চারণ করলেও আমাদের চিন্তাভাবনা অনেক্ষেত্রেই Realistic না ……

গেলো প্রথম বিতর্ক – দ্বিতীয় টি হল এটা নট স্যাটিসফেক্টরি
হুম গল্প যে পরিমাণ রহস্য ডিমান্ড করেছে প্লট সাপেক্ষে সে পরিমাণ ঘটনার ধূম্রজাল ছিল না , Predictibility অনেক বেশি ……
তবে সাইকোলজিক্যাল সিরিজ হিসেবে আমার কাছে অন্তত এটা মাস্টারপিস না হলেও কাছাকাছি ……
আমরা অতীতে ফিরে যেতে চাই , সাতোরুও চেয়েছে – অতীতে গিয়ে সহপাঠীর প্রান বাঁচাতে চেয়েছে – সেখান থেকে কিছু “ইন্টারেস্টিং” চরিত্র এসেছে যাদের মানসিক অবস্থা ছিল জটিল কমপ্লেক্সিটিতে ভরা ……
উদাহরণ স্বরূপ হিনাজুকির মায়ের কথাই ধরুন [আর কিছু বলা যাচ্ছে না স্পয়লারের কারণে]
[জানালা খোলা,হঠাৎ নীল প্রজাপতি] ……
আমি রক্তের স্বাদ ভালোবাসি – তোমার চিৎকার আমার প্রাণ জুড়িয়ে দেয় – এরকম Psycho টাইপ চরিত্র ভালো না লেগে পারে [যদি আপনি অতিমাত্রায় Conservative না হন]
কিন্ত বেশ অন্যরকম একটা ভিলেইন আছে এ গল্পে –
একটা চড়ুই কে বেঁধে রাখুন –
চড়ুইটির সাথে কি করা যেতে পারে –
চড়ুইটিকে মেরে ফেলুন [Void]
চড়ুইটিকে মেরে মরা চড়ুইএর ব্যবচ্ছেদ করুন [Violent]
চড়ুইটির পা দুটো কিছু একটার সাথে বেঁধে চোখের সামনে এমন দূরত্বে খাবার রাখুন যাতে হাজার চেষ্টা করলেও সে খাবারের নাগাল না পায় [Villain of ERASED]
একটা গল্পের শুরুটা যতটা ভালো হলে তা দর্শকদের এক পায়ে দাঁড় করিয়ে দিতে পারে তার পুরোটাই ছিল সিরিজটির শুরুতে যদিও গল্পের আগানোর সাথে সাথে ঠিক আশানুরুপ অগ্রসরতা দেখা যায়নি ……
তবে Realistic বিশেষণ টা থেকে ERASED কে বঞ্চিত করা যাবে না –
১৫ বছর কোমায় থাকলে কি কি হতে পারে ভাবাই দুষ্কর
রেস্কিউ রিভাইভালে কোন সমস্যা না হওয়া [প্রাপ্তবয়স্ক কোন লোকের পক্ষে যেটা স্বাভাবিক]
পরিচ্ছন্ন ও পারফেক্ট এন্ডিং …
এ এনিমে এক রোলার কোস্টার –
প্রথম দিকে দেবে রহস্য আর সাই ফাই এর সুবাস কিন্ত ফুল ঘেটে এনিমখোরগণ সাইকোলজি আর হালকা ড্রামা ছাড়া রহস্য তেমন একটা পাবেন না আবার শেষে এসে আরেকটু রহস্যের গন্ধ আর তারপর ……
[জানালা খোলা,হঠাৎ নীল প্রজাপতি] ……
বছরের অন্যতম সেরা দুটি গান আর সাইকোলজিক্যাল এনিমের প্রধান অস্ত্র ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক নিয়ে তর্ক করার কিছুই নেই ………
বছরের সেরা এন্ডিং বিচার করলে ERASED এর এন্ডিং টা মোটেও পিছিয়ে থাকবে না ……
গানের কথা গুলো সিম্পল অথচ অর্থবহ – মিউজিক টপ নচ
https://www.youtube.com/watch?v=4WwsLGf-vGI
Sore wa Chiisana Hikari no Youna – গেয়েছে সায়ুরি
আর এশিয়ান কুংফু জেনারেশন তাদের নামের মর্যাদা রেখেছে Re:Re দিয়ে
https://www.youtube.com/watch?v=vyM4h4iVeFo
ভয়েস এক্টিং ও খুব ভালো হয়েছে – যদিও বিজনেস সেন্স কম মনে হয়েছে – পপুলারিটি বাড়ানোর জন্য আইরিকে কোন MOE কন্ঠে পারদর্শী সেইয়ু দিলে ওটার জন্যই পসরা বেড়ে যেত :-p
সাতোরু কন্ঠ অভিনেতা শিনোসুকে আর সুচিয়া কে না চিনলেও – সাতোরুর কন্ঠ বিশেষ করে ছোটবেলার কন্ঠ দারুন লেগেছে!
আর আওয়ি ইউকি বরাবরের মত পারফেক্ট! তার কন্ঠ নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই! “বাকা নানো?” কথাটা এনিমের মাঝখানে যে কতবার রিপিট করে শুনেছি ইয়ত্তা নেই …
একটা পর্যায়ক্রমিক ডিফারেনশিয়েশন কল্পনা করুন –
যেখানে ফাংশনের অন্তরীকরণে এক জায়গায় একটা প্লাস মাইনাস চিহ্নের ভুল পুর অঙ্কটাকেই গুবলেট করে দিতে পারে ……
টাইম লাইন তার চেয়েও সেন্সিটিভ –
আমি যদি এটা করি = তাহলে ওটা হবে
সুতরাং , আমি যদি এটা না করি = তাহলে ওটা হবে না

দুঃখিত কিন্ত সময় ও পরিণতির হিসাব টা যে ঢের জটিল- এত সহজে কাজ করে না । আপনাকে ছুরি দিয়ে ফল কাটা অবস্থায় কেউ ডাক দিলে রুমে আপনি ছুরি হাতে গেলে তার কেটে যাবে কিন্ত তার মানে এই না যে না নিয়ে গেলে সব ঠিক থাকবে । দেখা যাবে আপনার যাওয়ার আগেই সে ডাক দিতে দিতে এসে আপনার ছুড়ির ওপর অসাবধানতাবশত হাত রেখে ………
আর ঠিক এখানেই ERASED এর সার্থকতা – অতীতে ফিরে যাওয়া তো কেবল শিরোনাম – এর মাঝে গল্পে সময়ের সামনে আগানো – ঘটনার প্রবাহ ও সাতোরু-ভিলেইনের নিজ নিজ লক্ষ্য অর্জনের চেষ্টার পদ্ধতি পরিবর্তন – খুব বেশি সোজা ক্যালকুলেশন ফলাফল শূন্য করে দিতে পারে [সাতোরুর ১ম রিভাইভালে ব্যর্থতা]
[জানালা খোলা,হঠাৎ নীল প্রজাপতি] ……
মা হিসেবে একজন মা কি করতে পারেন – তার রেফারেন্স ও দেখা যাবে এখানে
এব্যাপারে ফুজিনুমা সাচিকো বেশ Inspirational চরিত্র! (y)
যখন কেউ জীবন এর স্বাভাবিক যাত্রাটাকে একটা চিরাচরিত যাত্রা মনে করতে শুরু করে – লাইফ টা এতটাই বোরিং – তখন কিন্ত ঘটতে পারে সাইকোলজিক্যাল ডিসঅর্ডার – কোন কারণ ছাড়াই কাউকে খুন করে আনন্দ পেতে পারেন – একটা পিঁপড়ার কামড় খেয়েও হিংস্র জানোয়ারের মত রেগে যেতে পারেন – পুরো জীবনটাকে একটা গেমের মত করে ভাবতে পারেন
কিন্ত যদি এই গেম খেলার প্রতিযোগীই না থাকে তখন?
তখন কি করবেন আপনি?
সাইক্রিয়াটিস্টের ওষুধ খেয়ে সুস্থ্য হয়ে যাবেন?
নাকি? …………
[জানালা খোলা,হঠাৎ নীল প্রজাপতি] ……
এ এনিমে এক রোলার কোস্টার –
প্রথম দিকে দেবে রহস্য আর সাই ফাই এর সুবাস কিন্ত ফুল ঘেটে এনিমখোরগণ সাইকোলজি আর হালকা ড্রামা ছাড়া রহস্য তেমন একটা পাবেন না আবার শেষে এসে আরেকটু রহস্যের গন্ধ আর তারপর ……
আচ্ছা এই লেখাগুলো লিখছি কিন্ত খুব চেনা চেনা লাগছে, কেন বলুন তো?
যা হোক যা বলছিলাম –
বছরের অন্যতম সেরা দুটি গান আর সাইকোলজিক্যাল এনিমের প্রধান অস্ত্র ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক নিয়ে তর্ক করার কিছুই নেই ………
এক মিনিট! কি হচ্ছে – I’m repeating the Same thing!

Anime : Boku Dake ga Inai Machi [ERASED]
Genre : Mystery,Seinen,Psychological,Mystery
Studio : A-1 Pictures
Best Character : Fujinuma Satoru
MAL Score : 8.71
My Score : 7.8
যদি কোন প্রশ্নের উত্তর না পেয়ে থাকেন তবে তা এনিমেতেই আছে,দেখে ফেলবেন

সপ্তপাপ – রাজতন্ত্র ও মাইথোলজির গল্প কিংবা বিদ্ধংসী যুদ্ধকামনার পরিণাম — অনন্য রায়হান

Seven Deadly Sins

দেশে দেশে যুদ্ধ বিগ্রহ আর রাজনৈতিক মারপ্যাঁচ কৃষকের চৌচালা ঘর থেকে বুর্জোয়াদের অট্টালিকা অবধি প্রভাব ফেলে – আর সে প্রভাব কেবল আর্থসামাজিক না হয়ে ইতিহাস বিকৃতি বা প্রকৃত সত্য লুকানোর মত সাংঘাতিক কাজও করতে পারে।

প্রকৃতপক্ষে যুদ্ধ বা সংঘাতে জয়ী পক্ষই সাধারণত নিজেদের পক্ষেই যা প্রচার করে তাই হয় ইতিহাস…… এ ব্যাপারে যারা পরাজিত হয় তাদের আস্ফালন বা উচ্চস্বর মুল্যহীন মনে হয় পৃথিবীর কাছে…

সময়ের সাথে সাথে রাজতন্ত্র হারিয়ে গেছে বলে যে ইতিহাস বিকৃতি হয়না – তেমনটা নয়। কিন্ত মিডিয়া ও প্রযুক্তির কল্যাণে তা কমে এসেছে……
ইতিহাস বিকৃতি যদি এমন হয় যে তা রাজ্যের সবচেয়ে শক্তিশালী ও অনুগত যোদ্ধাদের ই বিশ্বাসঘাতক বলে চিহ্নিত করে তবে কেমন হবে? কেনই বা এমনটা করা হবে — উত্তর হিসেবে একটা ক্ষেত্র বা দৃশ্যকল্প দেখান হয়েছে ২৪ এপিসোডের Nanatsu No Taizai তে ……..

সাথে জাপানের মিথোলজিক্যাল কিছু ম্যটেরিয়াল আর “Magi” পাওয়ার তথা যাদুবিদ্যার সাহায্যে যুদ্ধ বেশ ভালো ভাইব এনেছে…

গল্পটা শুরু লিওনেস রাজ্যে ……
১০ বছর আগে রয়্যাল ফ্যামিলি ও রাজ্যের প্রধান বাহিনী “Holy Knights” দের বিরুদ্ধে অস্ত্র তুলে নিয়েছিল সাত জন Holy Knight যারা অন্যান্য নাইট দের চেয়ে ডজন ডজন ধাপ এগিয়ে । রাজ্য দখল করার দুরভিসন্ধি নিয়ে তাদের এই আক্রমণ ব্যর্থ হয়েছিল আর তাদের উপর Bounty বসিয়ে দেয়া হয়েছিল ……
যা বললাম তা লিওনেস রাজ্যের ছোট ছোট বাচ্চাদের জন্ম থেকেই শেখানো হত আর কি – সত্য না মিথ্যা জানতে হলে দেখতে হবে সিরিজটি……
রাজপরিবারের ওপর অতিরিক্ত নিরাপত্তা – এতই নিরাপত্তা যে প্রজাগণ বছর ব্যাপী রাজার চেহারাই দেখেননি……
এদিকে Holy Kight রা হয়ে উঠছে স্বেচ্ছাচারী,রাজ্যে বিরাজ করছে অস্থিরতা…
আর সেই সাত বিশ্বাসঘাতক কে বলা হল সাতটি পাপের প্রতীক ……
“The Seven Deadly Sins”
Merlin – Ban – King – Gowther – Meliodas – Escanor – Diane

সিরিজটির নামই বলে দেয় গল্পে এই সাত বিশ্বাসঘাতক দশ বছর পর ফিরে আসবে আর গল্প শুরু হবে – কিন্ত গল্পের সামনে আগানো বেশ আকর্ষণীয় …

Unexpected টুইস্ট – যা সিরিজটির বাকে বাকে রয়েছে …
তবে শেষের দিকে কিছু টুইস্ট অনেকটা জোর করে গল্পের ইতি টানার জন্য আনা হয়েছে বলে মনে হয়েছে [উদাহরণ- গিলথান্ডারের অভিশাপ থেকে অবমুক্তি]

ব্যাটল গুলো বেশ ভালো; শৌনেন নামের মান রেখেছে।
ফিজিক্যাল ফাইট বা তরবারি – বর্শা নিয়ে যুদ্ধ – বেশ ভালো কিছু অস্ত্র ও স্পেলের নাম – [হিস্টোরিকাল রেফারেন্স] রয়েছে যা একশন এনিমের জন্য পারফেক্ট আবহ তৈরি করেছে ………
উদাহরণ স্বরূপ – Forest of White Dreams নামক জঙ্গল , The Eternal Seal Spell নামক মন্ত্র , কিং এর বর্শা Sacred Tree হতে প্রস্ততকৃত Holy Crafted Weapon “Chastiefol” , City of the Dead নামক শহর Baste Dungeon, Fountain of Youth যার জলস্রোত সমগ্র Forest of Fairies কে সবুজ সতেজ রেখেছে , আর Coffin of Eternal Darkness ………
সাউন্ড ও OST এর কাজ চমৎকার ; বেশ ভালো একটা ওপেনিং ছিল প্রথমটা……
OST এর সাথে ফেইরি টেইলের মিউজিক প্যাটার্ন এর যথেষ্ট মিল পাওয়া যায় ……
ফেইরি টেইলের সাথে একটি অফিশিয়াল ক্রসওভার মাঙ্গা চাপ্টারও আছে নানাতসু নো তাইজাই এর …………

ঘটনা বেশি কমপ্লিকেটেড না করে বেশ ভালো গতিতেই কাহিনী এগিয়েছে বলে শুরু করে এটা সাধারণত বিরক্ত হয়ে কেউ ড্রপ দেয় না……
লিওনেস রাজ্যের প্রান্তে প্রান্তে অভিযান শুরু হয় মেলিওদাস ও রাজপরিবারের ৩য় হিমে সামা এলিজাবেথের……
রাজপরিবারের কেউ এই কুখ্যাত বিশ্বাসঘাতক দের সাথে যুক্ত কেন?
প্রশ্ন আসাটাই স্বাভাবিক।এটাই গল্পের শুরুর দিকের মজা – গল্পের প্রথম বর্ণনা কে অস্বীকার করতে শুরু করে চলমান ঘটনাবলী – যদিও মোটামুটি চিন্তাভাবনা করলে ১০/১১ পর্বের দিকেই গল্প কিভাবে আগাবে তা বুঝে ফেলার কথা…
এই অভিযানে Seven Deadly Sins এর বাকি সদস্যদের খুঁজে বের করার অভিযান থেকে শেষ ইতি টানা হয় Holy War দিয়ে……
এনিমের এপিসোড শুরুর প্রথমেই ন্যারেটরের ভাষ্যমতে এই Holy War যা বলা হয়েছিল,গল্পের স্বার্থে তা পুরোপুরি বদলে গিয়েছে পরবর্তীতে — অর্থাৎ সোজা ভাষায় Holy War এর ডেফিনেশন টাই বদলে গেছে …..
অনগোয়িং “KouroMukoro” এর ডাইরেক্টিং করছেন তেনসাই ওকামুরা – যিনি এই এনিমেটিরো ডাইরেক্টিং এ নিয়োজিত ছিলেন …
স্টুডিও A-1 Pictures বিখ্যাত স্টুডিও; উতাহ নো প্রিন্স, ফেইরি টেইল, ওরেশুরা,গিন নো সাজি,ওয়ার্কিং, Asterisk War, ERASED স্টুডিও টার কাজগুলোর মধ্যে আলোচিত কিছু নাম ……
এনিমেটার মাঝে এক চরিত্র পাওয়া যায় যার নাম হেনড্রিকসন ………
সাদা চোখে দেখলে চরিত্রটি বদমাশ; বাজে ও ঘৃণিত একটা চরিত্র হিসেবে দেখা দিবে। সাইকোলজিক্যাল দিকের প্রতি আলোকপাত করলে কিছু কথা উঠে আসতে পারে………
আমরা বলে থাকি তরবারি,বন্দুক শান্তি রক্ষার জন্য … আমি ব্যক্তিগতভাবে একমত কখনোই নই এই কথার সাথে। অস্ত্র আছে কারণ যুদ্ধ সংঘাত ও আছে ……
এগুলো দমনের জন্য – কাকে দমনের জন্য?
অপশক্তিকে – কে অপশক্তি এটা বাছাই করছে কে?
অপরপক্ষও আপনাকে অপশক্তি বলে আখ্যায়িত করছে ……
তো ফলাফল শূন্য……
এখন যদি শৈশব থেকেই এক বিশেষ যুদ্ধের জন্য প্রশিক্ষণ নেয়া কোন শিশু যৌবনে পদার্পণ করে জানতে পারে যে তথাকথিত সেই শত্রুকে নির্বাসিত করে দেয়া হয়েছে – অর্থাৎ তার এ যুদ্ধবিদ্যা শিক্ষণ বৃথা তখন , ঠিক তখনই …
মানুষের চিন্তাশক্তির মাঝে হিউম্যানিটি র ঠিক কাছ ঘেঁষে যাওয়া প্রাণিত্ব তার শক্তি দেখাতে শুরু করে তার চিন্তায়,কথা বার্তায় ও কাজে-কর্মে ……
সেই ভাবেই উপরোক্ত ক্ষেত্রে যদি সেই শিশু [এখন আর শিশু নেই] যদি সেই নির্বাসিত শত্রুকে Resurrect করে যুদ্ধের লীলাখেলা উপভোগ করতে চায় তবে এই ছোট্ট মনস্তাত্ত্বিক Mishap থেকেই ভয়ঙ্কর কিছু হতে পারে —- উদাহরণস্বরূপ একটি বিধ্বংসী যুদ্ধ যেখানে মানুষের উপর inhuman এক্সপেরিমেন্টের মাধ্যমে সৃষ্ট Killing Machine এর ব্যবহার…
ব্যাপারটা অনেকটা ছোটবেলায় বাবা মা হারানো কোন ছেলের বাব মাকে ফিরে পাবে সেই আশায় বড় হওয়ার পর বাবা মা মৃত জানতে পেরে কারো পারিবারিক সুখ দেখতে না পারা এবং তাদের ক্ষতিসাধন এর সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ ……
অর্থাৎ আগেকার দিনের একমুখী শিক্ষা আর সহজেই তোমার জীবনের লক্ষ্য এইটা সেইটা নির্ধারণ করে দেওয়াই সকল সমস্যার গোঁড়া ……
এনিমেটিতে ইউকি কাজি’র মেলিওদাস নাকি জুন ফুকুয়ামা’র কিং – কার কন্ঠ বেশি ভাল এটা নিয়ে সিভিল ওয়ার লেগে গিয়েছিল মাথার ভেতর ……
অবশেষে জিতে গেল ইউকি কাজি – মেলিওদাসের কন্ঠ অসাধারণ ছিল – বিশেষ করে – সেই “সাত্তে সাত্তে সাত্তে” বলাটা
জুন ফুকুয়ামা’ও দারুন কাজ করেছেন,তবে কিং এর ভয়েসে যখন জোর প্রয়োজন ছিল [হেলব্রাম ট্রাজেডি] তখন কন্ঠটায় যথেষ্ট ইমোশন ছিল না – এমনটা মনে হয়েছে ……… [যাহোক লেজেন্ডদেরও ১/২ টি কাজে খুঁত থাকতেই পারে]
ফিমেইল চরিত্রগুলোর মধ্যে এলিজাবেথের কন্ঠ শুনে সোরা আমামিয়ার কন্ঠ চেনার কোন উপায় নাই – এই কন্ঠ আর আকামে গা কিলের আকামে ‘র কন্ঠ এক ………
সেরা মহিলা কন্ঠ আওয়ি ইয়োকি –
সিন অফ এনভি ডিয়ানের কন্ঠ দিয়েছেন এই মিষ্টি গলার সেইয়ু …
অনগোয়িং Boku no hero Academia’র ব্যাঙবালিকা Tsuyu র কণ্ঠও নাকি দিয়েছেন ২৪ বছর বয়সী এই কন্ঠাভিনেত্রী …
সিরিজটিতে Seven Deadly Sins এর এসকানোর কে দেখানো হয়নি ……
রয়ে গেছে হাজারো প্রশ্ন –
মাঙ্গা পড়ে ফেললে হয়ত উত্তর গুলো জেনে যাবেন কিন্ত এনিমে অনলি Perspective থেকে কিছু রহস্য রয়ে গেছে –
মারলিনের এবিলিটি
মেলিওদাসের সিন
ডেমন ক্লানের ইতিবৃত্ত ও গুপ্ত সত্য
হেনড্রিকসন এর কাজ কি স্বপ্রণোদিত আর এই তুচ্ছ লক্ষ্য ? নাকি আরো বড় কিছু রয়েছে এর পিছনে?
রয়্যাল ফ্যামিলির সাথে Goddess ক্লানের সম্ভাব্য যোগসূত্র ………
সামার সিজনে নানাতসু নো তাইজাই নাম দেখে ২য় সিজন ভেবে খুশি হয়ে যাওয়ার কোন কারণ নেই [আমিও অতিখুশি হয়ে গিয়েছিলাম]
কারণ ওটা ২য় সিজন নয়, Holy War নিয়ে ৪ পর্বের একটা শর্ট সিরিজ ……
ওপেনিং দুটো বেশ ভাল হলেও এন্ডিং একটাও ভালো লাগেনি ……
ওপেনিং দুটো শুনে ফেলতে পারেন ……
http://www.youtube.com/watch?v=r0TJioqQu60
http://www.youtube.com/watch?v=8hmP3rYrFFk

ওভার অল বেশ ভালো একটা এনিমে ………
বেশিই ভালো – মোটামুটি বললে কম বলা হবে কিন্ত মাস্টারপিস নয় ……
রেটিং – [৮.১] – [দশমিক রেটিং নিয়ে কারো সমস্যা হলে দুঃখিত]

MM! [রিভিউ] — অনন্য রায়হান

mm 1

এক ফুতারো(Pig Boy) আর সেনপাই এর গল্প

Masochism শব্দটির সাথে অনেকেই পরিচিত, আবার অনেকে নন।
আমেরিকার সাইক্রিয়াটিক এসোসিয়েশনের Diagonstic & Statistical Manual অনুযায়ী Masochism একটি মানসিক রোগ– “which refers to the recurrent & intense sexual arousal from the act of being humiliated, beaten, bound, or otherwise made to suffer, as manifested by fantasies, urges or behaviors”

উদাহরণ দিয়ে ব্যাপারটা বোঝানো যাক–
এক ছেলেকে অনবরত মারধর, অত্যাচার, গালিগালাজ করা হচ্ছে অথচ তার মুখে হাঁসি এবং সে এটা উপভোগ করছে। এমনকি তার এ আনন্দ থেকে সে আরো বেশি করে প্রহার কামনা করছে।

ব্যাপারটাকে অদ্ভুত মনে হলেও কিছু মানুষের মধ্যে এ অদ্ভুত মানসিক ব্যাধি দেখা যায়। আমেরিকা ও মেক্সিকোতে এ রোগের রোগীর সংখ্যা একটু বেশিই।

এনিমে: MM!
এপিসোড: 12
মাইএনিমেলিস্ট রেটিং: ৭.৪

সাডো তারোউ–
এক ছেলে যাকে কোন সুন্দরী মেয়ে—
আগুনে ফুটন্ত পানিতে চোবালে
৩ পাউন্ডের বেসবল ব্যাট দিয়ে আঘাত করলে
শরীরের জায়গায় জায়গায় গরম মোম ঢাললে
অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করলে
সে অদ্ভুত আচরণ শুরু করে; সে উপভোগ করতে শুরু করে এই অত্যাচার। শুধু তাই নয় তখন সে নিজ জ্ঞানেও থাকে না। অর্থাৎ কোন মেয়ে তাকে আঘাত না করলে তার মাঝে এ সিম্পটম্পস দেখা যায় না……

এখন তো হেভি সমস্যা–
তো সমাধানের জন্য সেকেন্ড ভলান্টিয়ারিং ক্লাবের শরণাপন্ন হতে হয় তারৌকে। আর সে ক্লাবের প্রেসিডেন্ট হলেন স্বঘোষিত কামি-সামা ইসুরুগি মিও।

ইসুরুগি মিও একটি নচ্ছার, খুবই খারাপ একটা মেয়ে– এটা চরিত্রটির প্রথম বা ফার্স্ট ইম্প্রেশন …… [১০-১১ এপিসোডের দিকে খুব বেশি ভালো লেগে যাবে]
এই সেকেন্ড ভলান্টিয়ার ক্লাবের আরেক সদস্য ইউনো আরাশিকো……
এক কথায় ইনি আংশিক ইনামি মাহিরু [Working এর]
আরো বেশি বলতে গেলে Androphobic; ছেলে দেখলেই স্টার প্লাটিনাম বের হতে থাকে…… [স্টার প্লাটিনাম: রেফারেন্স জোজোর বিজার ভ্রমণ]
তারৌ এর ফ্রেন্ড তাতসুকিচি হায়ামা–
ইনি আবার ক্রসড্রেসিং পছন্দ করেন, গলাও মেয়েদের মত। আফটার অল সেইয়ুও সাতৌ রিনা……
কিন্ত এই চরিত্রটি আরো মজার হয়ে ওঠে Personality Interchange এর মাধ্যমে – সেটা আবার কি? সব বলে দিলে এনিমেটা দেখে কী লাভ?
আর তারৌ এর মা ও বোন পুরো আজব ও গুবলেটে – অপ্রধান চরিত্র আর অনেকেরই বিরক্তিকর লাগতে পারে… রিভিউদাতার কেমন লেগেছে তা রিভিউদাতা জানাতে চান না ………
আর চরিত্র যদি বলতেই হয় তবে আছেন মিচিরু অনিগাওয়ারা……
ফিমেইল Badass

তারৌ এর Masochism সারিয়ে তুলতে শুরু হয় অভিযান! MM! এর গল্প এই অভিযান নিয়েই!

:- এচ্চি ট্যাগ আছে যে?? -:
মাইএনিমেলিস্ট সর্বজ্ঞানী, পরাক্রমশালী এমন যেহেতু নয় সুতরাং তাদের ট্যাগানো বেদবাক্য বলে মেনে নেয়া যায় না। থাক ট্যাগের উল্টাপাল্টা কার্যক্রমের উদাহরণ না টেনে সোজা বাংলায় কিছু কথা বলি……

এচ্চি বলতে যা বোঝায় তার কিছুই নেই এর মধ্যে………
আই রিপিট কিছুই নেই, এখন কিছু নব্য ইংরেজি গালি যদি এচ্চি ট্যাগ পায় আর একটু ডারটি জোক [খুবই সীমিত] যদি এচ্চি বলার জন্য এনাফ হয় তবে এটা এচ্চিই………..
এচ্চি ট্যাগ দেয়া অথচ সমতুল্য রিকমেন্ডেশন লিস্টে MAL এই উল্লেখ আছে Working! আর Toradora-এর নাম। এখন আমি যতদূর জানি এ দুটো এচ্চি নয়। আর টাইগার মুখের ভাষা আর MM! এর মিও র মুখের ভাষায় উনিশ বিশ পার্থক্য। [নোট ইট]
আরো পরিষ্কার করা যাক……
Working! যারা দেখেছেন তাদের জন্য এই তুলনা মূলক চার্ট –
MM! চরিত্র == Working! চরিত্র
সাডো তারৌ == তাকানাশি সোউতা
ইউনো আরাশিকো == ইনামি মাহিরু
মিচিরু অনিগাওয়ারা == শিরাফুজি কিয়োকো
সো ওয়ার্কিং আর তোরাডোরার টাইগার কমবো MM! এনিমেকে বললে খুব একটা ভুল বলা হবে না………

একটু ফ্রিলিই বলি –
Nudity মোটেও নেই, কোন ডাইরেক্ট নেক্সট টু H মোমেন্ট নেই……
তারৌ এর মা আর বোনের কান্ড দেখে একে Incest ট্যাগিয়ে ফেলতে পারেন [আমিও এই ভুল করেছিলাম] কিন্ত দিনশেষে #‎ITS_NOWHERE_NEAR_INCEST

এনিমেটা শুরু এমনভাবে হয় যে মনে হবে বেশ মজাদার একটা সিরিজ হবে। প্লট দেখেই মনে হবে এতে নিশ্চয়ই সামনে এচ্চি থাকবে; কিন্ত সুখবর [আমার জন্য SADLY] সেরকম কিছু তো দূরে থাক, তার ধারকাছেও কোন ম্যাটেরিয়াল নেই……..

মাজখানের কিছুটা হারেম আর রোমান্স ভাইব আসে; কিন্ত তা মিলিয়ে যায় গল্পের সামনে আগানোয়…
আর এন্ডিং টা একে পিওর “স্লাইস অফ লাইফ” বলার জন্য এনাফ! অদৃষ্টের পরিহাস, সম্মানীয় MyAnimeList একে সল ট্যাগ দেননি……

:- ভয়েস এক্টিং ও OST -:
এনিমেটির সাউন্ড ডিপার্টমেন্ট এ কিছুতা আধিপত্য ই ছিল আয়ানা তাকেতাতসু’র। এনিমের অন্যতম প্রধান চরিত্র মিও’র ভয়েস এক্টিং ই কেবল নয়, ওপেনিং [দুটো ভারশন] আর শেষ এপিসোডের মন ঠাণ্ডা করে দেয়া এন্ডিং টিও তিনি গেয়েছেন…………
সেই সুন্দর এন্ডিং টি শুনে ফেলুন –
http://www.youtube.com/watch?v=rfX_Eot4Ya8

আর হেল্প! পু! পু! হচ্ছে এনিমেটির ওপেনিং –
দেয়া হল Hell’s Side আর Heaven’s Side দুই ভার্সনই

২য় হিভেন ভার্সন টিতে আয়ানা সানের সাথে কন্ঠ দিয়েছেন সাওরি হায়ামি, যিনি একইসাথে এনিমেটির ইউনো আরাশিকোর ও ভয়েস এক্ট্রেস।

আর নাতসুকো আসোউ এর “More! More! Lovers!” গানটা বেশ মজার! বেশ ভালো লেগেছে! কণ্ঠ অনেক অনেক ভাল!
লিংক :
https://www.youtube.com/watch?v=MMgFIAGTMso

:- পরিশেষে, হাসতে চাইলে কোন এক্সপেকটেশন ছাড়া বসে যান MM! দেখতে, উপভোগ করবেন আশা করি। আর এচ্চি বিতর্ক না হয় নিজে পরখ করেই দেখবেন; আর যদি আপনার কাছে এচ্চি মনে হয় তবে জানাবেন………

এটা নিয়ে রেটিং দিলাম না কারণ রেটিং অত্যন্ত সিরিয়াস ইস্যু আর এরকম গল্পের রেটিং দেয়া বোকামি; রেটিং এর মত ভারী জিনিসের জন্য বেশি লাইট আর কি……

mm 2

অনন্য মাঙ্গা আসর-৬ (Doctor Du Ming)

Du Ming 1
-Du Ming,How do you think I’ll Die?
-Hanging! To a tree like a dead leaf among others….
Your hair would cover your face and your hands
& Your hands would hang limply from your
Body.You would look like a puppet.It’d be
Wonderful………
-Du Ming,Look The flowers grow so well here…..
-It’s because Their Roots are bathing in the blood and excretions of the patients
একটি প্রশ্ন – “ What makes a person Pure?”
মানুষের Purity যাচাই করা যায় কিভাবে? যায় কি? আদৌ কি তা আমাদের পক্ষে সম্ভব? নাকি সে আমার কাছে কেমন তা দিয়ে আমরা তার ভালোমন্দ বিচার করি?
কিছু ঠুনকো “Not Making Sense” কথা মনে হলেও এ কথাগুলোর গুরুত্ব রয়েছে বটে।এমনই ঠুনকো প্রশ্ন ছুড়ে দেয়া হয় ১৯৯৬ ব্যাচের Anesthesia ‘র মেডিকেল পড়ুয়া ছাত্র Du Ming এর কাছে।যে ছুড়ে দিয়েছিল সে Zhang Qian…
সমগ্র কলেজব্যাপী এই Zhang Qian কে নিয়ে রয়েছে নানা কথা।মাত্র ১০ কুয়েই ( ১.৩১ ডলার) খরচ করলেই নাকি তাকে রাত্রীসঙ্গী বানানো যায়। তবুও এত বড় মেডিকেল কলেজে সে খুব একা……
ক্লিনিক্যাল মেডিসিন ‘১৯৯৪ ব্যাচের এই Zhang Qian প্রথম দর্শনেই মনে দাগ কাটে ডু মিং এর।হয়ত মনে ভাবনাও আসে — “যার নামে এধরনের জনশ্রুতি আছে তাকে দেখে কেন নিষ্পাপ মনে হল?” , এটা ডু মিং এর ফেস এক্সপ্রেশন দেখে আমার নিজস্ব ধারণা যদিও,মানহুয়া তে বলা নেই ……
প্রতিদিনের ক্লাস আর ল্যাব ফাঁকি (প্রকৃতপক্ষে ফাঁকি না) দিয়ে ছাঁদে শুয়ে থাকা ডু মিং এর , তারপর প্রায় প্রতিদিনই জাং কিয়ানের সাথে দেখা হওয়া এমন ই এক রোমান্টিক গল্প ……………
………………
………………
………………
………………
এটি নয়।
মানহুয়া : Doctor Du Ming
চাপ্টার : 15
ডাক্তারি পড়তে আসা ছাত্র ডু মিং,কলেজের “Slut” বলে পরিচিত জাং কিয়াং আর গল্পের শেষাংশের নায়িকা [হয়ত নায়িকা নন] ওয়াং ইয়াও – চরিত্র বলতে গেলে এই তিনটাই……
মানহুয়া টি সম্পর্কে বলতে গেলে প্রথমেই আর্টের কথা উঠে আসে। যারা মানহুয়া বা চাইনিজ কমিকের আর্ট স্টাইলের সাথে পরিচিত নন,তাদের কেবল আর্টের জন্য হলেও মানহুয়া টা পড়ে দেখা উচিত। আর্ট বেশ ভালো,বিশেষ মুহূর্তগুলোতে আর্ট মন কাড়ার মত হয়েছে……
শুরু স্লাইস অফ লাইফ-রোমান্স ভাইব নিয়ে,তবে হাইস্কুল না হয়ে মেডিকেল কলেজ বলে বেশ ম্যাচিউরড সংলাপ ও আবহ পাওয়া যাবে……
কিছুদূর যেতে না যেতেই হালকা কলেজ ড্রামা তারপর অত্যন্ত সাইকোলজিক্যাল এনভায়রনমেন্ট,আত্নহত্যা,খুন,এডাল্ট ও ট্রাজিক টুইস্ট গল্পের বেশ ভালো পটেনশিয়াল দাঁড় করিয়ে দেয় ……
এডাল্ট ম্যাটেরিয়াল রয়েছে কিন্ত এচ্চি নয়।এচ্চি মূলত কেবল ফ্যানসার্ভিস ও নিছক হিউমর এবং কৌতুক উদ্রেক করার জন্য কাপড়ের বিচিত্র সজ্জা ও Nudity দেখায় – যা অনেক সময় অযৌক্তিক ও বিরক্তিকর হয়।কিন্ত এখানে যে এডাল্ট ম্যাটেরিয়াল গুলো এসেছে সেগুলো গল্পটি ডিমান্ড করে।কারণ আফটার অল নারী পুরুষের দৈহিক সম্পর্কও জীবনের একটা অংশ আর গল্প জীবনের সাদা-কালো সবকিছুর প্রতিচ্ছবি,হোক সে সম্পর্ক অনৈতিক বা নৈতিক……
মানহুয়া টি তাড়াহুড়ো করে পড়লে কিছু সমস্যা হতে পারে —
১- এন্ডিং না বুঝতে পারেন……
২-গল্পটাকে খাপছাড়া লাগতে পারে…… [Actually It’s Not]
৩-ডু মিং কে চরিত্রহীন ভাবতে পারেন
৪-টাইম রিএরেঞ্জমেন্ট যার কারণে ১ ও ২ ঘটতে পারে [নিচে ব্যাখ্যা করা হল]
কিছু চরিত্র আছে যারা খুব স্পর্শকাতর কথা খুব ঠান্ডা ভাবে বলতে পারে,ডু মিং তাদের মধ্যে একজন। একদম শুরুতে উল্লেখ করা দুটি সংলাপ পড়লেই আঁচ করতে পারা যাবে ডু মিং এর ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে।এ কারণেই হয়ত খুব ভালো লেগেছে ডু মিং কে…………
একজন নারীর Virginity ই কি তার Purity মাপার প্যারামিটার?
আমরা মুখে যাই বলি,অনেকেরই কার্যকরী উত্তর হ্যাঁ।কিন্ত কখনো ভেবে দেখি কি কত ভিত্তিহীন আমাদের এই ধারণা।শরীরের কোন অঙ্গ উন্মোচিত হলেই যদি কোন নারী Impure হয়ে যায় তবে কি মানুষের আত্নার মূল্য নেই? — উত্তর খুঁজতে থাকুন,ভাবতে থাকুন……
মানহুয়াটিতে ডু মিং চরিত্রটির ইমেজ আপনার কাছে শুরুতে যা ছিল তা শেষে গিয়ে থাকবে না কোনভাবেই।চরিত্রটি বেশ লাইট Aura থেকে ক্রমাগত ডার্ক সাইডেড হয়ে গেছে,যে পরিবর্তনটা আনপ্রেডিক্টেবল। ডার্ক সাইডেড দ্বারা কি বুঝাচ্ছি তা কল্পনা না করে নিয়ে ১৫ চাপ্টার পড়ে ফেলাই শ্রেয়…
এছাড়া গল্পটাকে নিতান্ত ছোট পরিসরে জোর করে রাখার একটা প্রবণতা দেখা গেছে,মানে গল্পকে আরেকটু বিস্তৃত করা যেত কোনরকম অযথা লম্বা করা ছাড়াই।কেবল ৩ টি চরিত্রের মাঝে গল্প কে সীমাবদ্ধ না রেখে গল্পটার পরিসীমা বাড়ানো যেতে পারত…
এন্ডিং টা মনঃপূত হবে কি না হবে না সে প্রশ্নের চেয়ে বড় প্রশ্ন হল এন্ডিং টা আপনার কমন প্রেডিকটিভ সত্ত্বা অনুমান করতে পারবে কি না সেটা? শেষ হয়েও হল না শেষ – আবার এ পরিণতি কেন , না এন্ডিং এর ধরনটা এই দুই প্রকারের মাঝামাঝি,দুই ধরনের কোনটিই নয়……
পুরো গল্পটার বিশেষ বৈশিষ্ট্য হল —
টাইম রিএরেঞ্জমেন্ট অর্থাৎ এই বলা হচ্ছে এখনকার কথা,আবার কোনরকম বলা কওয়া ছাড়াই ফ্ল্যাশব্যাক এ চলে যাওয়া।আবার হুট করে কয়েকদিন আগে,আবার বর্তমান এ।এ স্টাইলে কাহিনী বোঝার মাঝে একটা বেশ মজা আছে,কষ্ট করে বুঝে নিতে হয় দৃশ্যের টাইমলাইন।তবে বুঝতে না পারলে কাহিনীর আপাদমস্তক নিয়ে একটু কনফিউশনে ভুগতে হতে পারে……
মানহুয়া টি পড়া শেষ করে ফেললেও এর রেশ থেকে যাবে বেশ কদিন……
কিছু প্রশ্ন ঘুরপাক খাবে মনের মধ্যে ,সেরকম কিছু প্রশ্ন উল্লেখ করে আমার লেখা শেষ করছি …… আশা করবো মানহুয়া টি পড়ার পর প্রশ্নের উত্তর সমেত কিছু রিএকশন পোস্ট দেখা যাবে ——–
১ম প্রশ্ন : মানহুয়া টি লেইম/খাপছাড়া লাগল? [উত্তর হ্যাঁ হলে বাকি প্রশ্ন স্কিপ করতে পারেন]
২য় প্রশ্ন : ডু মিং কেন এটা করল? কেন?
৩য় প্রশ্ন : জাং কিয়ান কি Pure নাকি Slut?
চতুর্থ ও শেষ প্রশ্ন : মানহুয়াটির শুরুতে “Our Obscruity in this Murky World” লেখার কারণ কী?
এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজে যদি পান,তবে মানহুয়াটাকে উপভোগ করতে পারবেন।উত্তর যে অধিকাংশের সাথে মিলতে হবে এমন কথা নেই,যদি আপনার মন সায় দেয় যে আপনার উত্তর যথার্থ তবেই সে উত্তর সঠিক।
Du Ming 2

অনন্য মাঙ্গা আসর – ৫ (Boku no Hero Academia)

BnHA
কিং কিং সিটি,চীন
জন্ম হল এক শিশুর,যার সমগ্র শরীর থেকে বিচ্ছুরিত হতে লাগল আলো। এ কেমন নবজাতক?
স্বাভাবিক – অস্বাভাবিক নিতান্তই আপেক্ষিক। যে বৈশিষ্ট্য অধিকাংশের মাঝে খুঁজে পাওয়া যায় তাকেই স্বাভাবিক বলা হয়ে থাকে। এ মানুষের এক হাস্যকর যুক্তি। ঠিক এ উপায়েই তারা অসম্ভব-সম্ভব, ট্রাজিক-লিনিয়ার এর মধ্যে পার্থক্য করে থাকে।
ধীরে ধীরে সমগ্র পৃথিবীতে অস্বাভাবিক শিশুর জন্ম হয়ে উঠল সাধারণ ব্যাপার।আর এভাবেই আজকের পৃথিবী এমন অবস্থায় উপনিত হল যে —
৮০% মানুষের মাঝেই জন্মগতভাবে দেখা যায় সুপারপাওয়ার যা ৩-৪ বছর বয়সের দিকে প্রকাশ পায়।যা “Quirk” নামে পরিচিতি লাভ করে।
কিন্ত বাকি ২০% ……
তাদের গল্পটা কেমন…
সুপারন্যাচারাল এবিলিটি সূত্রপাত এর সুযোগে অপরাধ ও ক্রাইম ইফেক্ট তার ডালাপালা ছড়াতে আরম্ভ করলে জন্ম হয় হিরো কর্পোরেশন এর।হিরোদের জন্য স্কুল,ভার্সিটি থেকে শুরু করে প্রতিরক্ষা সেক্টরে সংগঠিত ব্যবস্থা গড়ে ওঠে………
আর এই পৃথিবীতে সবার কাছে “Symbol of Jsutice” হয়ে ওঠে হিরোদের টপেস্ট র‍্যাংকে থাকা “ALL MIGHT” ………
এরকমই এক পৃথিবী যেখানে কোয়ার্ক ছাড়া জীবন অচলপ্রায়,সেখানে ইজুকু মিদোরিয়া জন্মেছে কোন কোয়ার্ক ছাড়া। এই রূড় সত্য জানতে পারে সে তিন বছর বয়সে……
ছোটবেলার বন্ধু,পরিবার সবার কাছে নিজেকে অসহায় মনে হয় ইজুকুর……
কিন্ত যে দুটো কথা পারত তাকে জীবনে ঘুরে দাঁড়াতে শেখাতে,সে দুটো শব্দ তাকে শোনালো তার পরিবার,বন্ধুদের কেউ না ……………
যে হিরো ইজুকুর ছোটবেলা থেকে আদর্শ,সমগ্র পৃথিবীর সিম্বল অফ জাস্টিস “ALL MIGHT” ই তাকে বিশ্বাস করতে শেখালো “You can become a Hero”
এরপর ইজুকুর প্রবেশ ঘটে তার স্বপ্নের হিরো একাডেমিক স্কুলে – “ Yuuei High” তে
আর এই স্কুলের পথ ধরে ইজুকুর হিরো হয়ে ওঠার গল্পই মাই হিরো আকাডেমিয়া……
বিখ্যাত গ্রাম সর্দার হওয়ার গল্পের ইতি টানার পর উইকলি শোউনেন জাম্পে প্রকাশিত হয় হোরিকোশি কৌহেই এর “Boku no Hero Academia” । মানুষজন ঠিক যেভাবে এইচিরো ওডার মুখে আকিরা সেন্সেই”এর প্রশংসা শুনে ওয়ান পিস কে ড্রাগন বলের সাথে তুলনা করতে শুরু করে ঠিক সেভাবেই হোরিকোশির মুখে মাশাসি’র প্রশংসা শুনে ও প্রথম কয়েক চাপ্টার পড়ে একে গ্রাম সর্দার ভেবে ভুল করে বসে হঠকারী ফ্যানসমাজ……
জনরা ট্যাগে শোউনেন বেশ বড়সড় করেই লেখা আছে ……
মাঙ্গার রিএকশন এর দিকে একটু দৃষ্টিপাত করা যাক—
প্রথম – (১০-১৪ চাপ্টার)
বাহ! দাত্তেবায়ো! তুমি গ্রামের সর্দার না,টপ হিরো হবে – তফাৎ টা কোথায়? । আরেকটা টিপিক্যাল ঝনঝনানি আসছে [দীর্ঘদিন ড্রপড]
(২০-৩০ চাপ্টার)
চুনিন এক্সাম!! হুবহু লুকানো পাতা নকল মারা হচ্ছে নাকি?
যাই হোক ফাঈটগুলো বেশ ইন্টেন্স!!
(৫০ চাপ্টারের পর)
………………
………………
………………
প্লাস আলট্রা!!!!
প্লাস আলট্রা!!!!
চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে
পড়ার মাঙ্গা এটি নয়………
গল্পের বাকে বাকে অত্যন্ত উত্তেজনাকর ইন্টেন্স মুহূর্ত চলে আসছে……
(৭৮-৮০ চাপ্টারের দিকে)
আবার গ্রাম সর্দারের মত সাসকে ভাইকে গায়েব করে দিবা নাকি?
(৮৫-চলমান)
সেপুক্কু করা ছাড়া উপায় নেই(সন্দেহ করার অপরাধে) ,এক নিমেষে সব সন্দেহ দূর ……
খুঁজে পাওয়া গেল আরেকটি মাস্টারপিস মাঙ্গা…………
এই ছিল মাঙ্গাটা পড়ার সময়ে আমার রিএকশন,যখনই মনে হয়েছে গল্পটা সেই পুরোনো শিবের গীতের দিকে মোড় নিচ্ছে তখনই মাঙ্গাকা এমন প্লট টুইস্টের অবতারণা করেছেন যাতে পরবর্তী চাপ্টারের জন্য আগ্রহ জন্মানোটা স্বাভাবিক।
৮৯ চাপ্টার পর্যন্ত বের হওয়া মাংগাটি এখনো অনগোয়িং………
এপ্রিল ৩ থেকে শুরু হওয়া ১৩ এপিসোডের এনিমেটি মূল গল্পের PROLOGUE ও না, INTRODUCTION মাত্র……
সময় বের করে কষ্ট করে ৪০/৪৫ চাপ্টার পর্যন্ত যেতে পারলে বাকিটা আর কাউকে বলতে হবে না………
একশন সিকুয়েন্স গুলোর মাঝে অন্যরকম একটা ফ্লেভার পাওয়া যাবে।প্রতিটা ব্যাটল ই স্ট্রাটেজিভিত্তিক।বেশ ভালো কিছু সায়েন্টিফিক রেফারেন্স ও এসেছে কিছু কোয়ার্ক এর ক্ষেত্রে……
অনেকেরই ছিঁচকাঁদুনে মিদোরিয়াকে নিয়ে অনেক সমস্যা —
প্রথম প্রথম তাকে গ্রাম সর্দারের চেয়েও বেশি বিরক্তিকর লাগে,কিন্ত মিদোরিয়া চরিত্রের বেশ ভালো কিছু দিক আছে।প্রথমত,তার মাঝে বিখ্যাত হওয়ার আকাঙ্ক্ষা নেই।দ্বিতীয়ত,সে উপস্থিত বুদ্ধি খাটাতে সক্ষম।
সবচেয়ে ভালো দিকটি হল,মিদোরিয়ার ক্ষমতা যে কত কম তা শুরু থেকেই অঙ্গুলিসংকেত করা হয়েছে।আকস্মিক পাওয়ার আপ দিয়ে ব্যাপারটাকে তেজপাতা করা হয়নি……
মাঙ্গার আর্ট যতই চাপ্টার এগিয়েছে,ততই ভালো হয়েছে।বিশেষ করে কমব্যাট এনভায়রনমেন্ট এর আর্টস্টাইল Nurarihyon no Mago র মত পরিষ্কার হয়েছে।তবে এখানে বিস্ফোরণ সহ অন্যান্য ম্যাটেরিয়ালস চলে এসেছে যার কারণে হোরিকোশি কৌহেই কে স্যালুট দিতেই হবে……
যারা Katekeyo Hitman Reborn এর ভক্ত,তারা ব্যাপারটি ভালো বুঝতে পারবেন। প্রথম প্রথম বেশ বোরিং লাগলেও পরবর্তীতে শোউনেন জনরার “হিডেন জেম” খুঁজে পেয়েছি – এমন অনুভব হলে অবাক হওয়ার কিছুই থাকবে না।
৮৯ চাপ্টার অবধি ব্যাক্তিগত রেটিং – ৯.০
বেশ ভালো কিছু চরিত্র এসেছে যা ভিন্নমাত্রা এনেছে স্টোরিলাইনে।তবে গল্পের মেইন ভিলেইন কে এটা নিয়ে বেশ ঘোলা রহস্য ছিল।কখনো শিগারাকি,কখনো স্টেইন …… কিন্ত আসল উত্তর …….. মাঙ্গা পড়লে এই শূন্যস্থান নিজেই পূরণ করা যাবে।
স্পেশাল নোট :
মাঙ্গাতে মাঝে মাঝে দেয়া U.A. File গুলো না পড়লে কোয়ার্ক গুলোর ফুল এবিলিটি সম্পর্কে ধারনা পাওয়া যাবে না।তাই ওগুলা স্কিপ করা উচিত হবে না ………

Ars Nova – ফগ পেট্রল বনাম সাবমেরিন I401 — অনন্য রায়হান

Where do we come from?
What are we?
Where are we going?

২০৩৯ সাল…

প্রকৃতির বিরুপ পরিবরতন,বিশ্ব উষ্ণায়ন এর কারণে সমুদ্রের কর্তৃত্ব হারিয়েছে মানব্জাতি।দেশে দেশে সামুদ্রিক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন,আন্তঃদেশীয় বাণিজ্য বন্ধ,পুরো পৃথিবী যেন কারাগারে বন্দী।আর তার কারণ নতুন এক পরাশক্তির উত্থান — “Fleet of Fog”

কারা এই “Fleet of Fog” ,কোথা থেকে এদের উতপত্তি,কেউ জানে না।কিন্ত এটুকু সবাই জানে মুক্তভ্রমণ হোক আর বাণিজ্য হোক,কোন নৌযান সমুদ্রে নামলে তাকে নিশ্চিহ্ন করে দেবে এই ফ্লিটের জাহাজগুলো। “Admiralty Code” কোন এক সংবিধান অনুসরণ করে চলা এই বাহিনী পুরো পৃথিবীতে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে রেখেছে।কোনকিছুই “Across The Sea” হতে দেওয়া যাবে না ,হোক সেটা বাণিজ্য,যোগাযোগ বা অন্যকিছু……

Ars Nova 1

এখন লিখছি এনিমে নিয়ে তাহলে এর নিশ্চয়ই কোন প্রোটাগনিস্ট থাকবে যে মানবজাতিকে ফ্লিট অফ ফগের হাত থেকে রক্ষা করার ব্রত নিয়েছে। আবেগের বাত্তি বা মশাল নিয়ে ফ্লিট অফ ফগদের বিনাশের জন্য লম্ফঝম্ফ করছে। না চরমপন্থা বা প্রতিশোধ ছাড়াও পরিবর্তনের তৃতীয় রাস্তা থাকে যা হল সহাবস্থান।ব্যাপারটা পরিষ্কার করার জন্য কোড গিয়াসের রেফারেন্স আনা যেতে পারে।কোড গিয়াসে লেলুশ ছিল চিরায়ত চরমপন্থার প্রতীক,যদিও পরবর্তীতে তার পরিবর্তন হয়েছে।আর সুজাকু কুরুরুগি ছিল উল্লিখিত তৃতীয় রাস্তার অনুসারী। এখন অনেকেই বলবেন সুজাকুর মত মেইন ক্যারেক্টার হলে তো এই এনিমে দেখবোই না।ব্যাপারটা খোলাসা করি,সুজাকু মোটেই একটা পছন্দসই ক্যারেক্টার নয়,আর আমাদের গল্পের নায়ক “চিহায়া গুনজৌ” মোটেই সেরকম নয়।সে তৃতীয় রাস্তায় বিশ্বাসী হলেও দেখে দেখে মার খাওয়া বা সমঝোতার অবকাশ না থাকলেও ব্যর্থ চেষ্টা করে না…

Ars Nova 2

চিহায়া গুনজৌ,একদিন তার ক্লাসরুমে এসে একটি মেয়ে তার খোঁজ করতে থাকে।নাম তার ইওনা,চোখদুটো বড় বড়,তাতে যেন কি একটা নেই,দেখতে মানুষ অপেক্ষা রোবটের মতই লাগে বেশি।আর চিহায়ার মুখোমুখি হওয়ার পর তার কথাগুলো ছিল এরকম – “চিহায়া গুনজৌর খোঁজে এসেছি।তার আদেশ মেনে চলাই আমার লক্ষ্য”

মুশকিল তো,কোত্থেকে এক মেয়ে এসে আপনার স্ত্রীর মত কথা বলে যাচ্ছে— স্বাভাবিকভাবেই বিব্রতকর অবস্থায় পরে যায় চিহায়া। পরে ঐদিন রাতেই চিহায়ার সাথে ইওনার দেখা হয় ডকইয়ার্ডে। সেখানেই নাটকীয়ভাবে জানতে পারে সে ইওনার পরিচয়,ইওনা মানবী নয়,সাবমেরিন I401 এর মেন্টাল মডেল…

তারপরেরটুকু এনিমেটা দেখে ফেললেই বোঝা যাবে। পুরো এনিমেতে ইওনা ছাড়াও আরও দুটো সাবমেরিন এবং বেশ কয়েকটি ব্যাটলশিপ আর হেভি ক্রুইজার দেখা যাবে।এনিমেটির অধিকাংশ সময়টুকুই সমুদ্রে যুদ্ধগুলো নিয়ে।ইওনা ও চিহায়া ছাড়াও ফগের নিজস্ব শিপগুলোর মাঝেও বিধ্বংসী যুদ্ধ দেখা গেছে। আশ্চর্য!! ফগরা নিজেদের মধ্যে যুদ্ধে জড়াবে কেন? এই কেন’র উত্তর এনিমেটা দেখলেই পেয়ে যাবেন……

Ars Nova 3 Ars Nova 4 Ars Nova 5 Ars Nova 6 Ars Nova 7 Ars Nova 8 Ars Nova 9

তবে কঙ্গো ছাড়া বাকি শিপগুলোর স্ট্রাকচার,আক্রমণের প্যাটার্ন একইরকম লেগেছে,বোমা বের হওয়া,সুপারগ্রাভিটি ক্যানন ফায়ার করার সময়ের সাউন্ড—কোনটায় পার্থক্য নেই।আর I401 ছাড়া অন্যান্য শিপগুলোর ইন্টেরিয়র এবং ফাংশনাল সিস্টেমের খুটিনাটি কিছুই দেখায়নি……

Mako Sakurai

ভয়েস এক্টিং মনে ধরেছে মাকো সাকুরাই এর…
হেভি ক্রুইজার মায়ার “কার্নিভ্যাল দায়ো” তো অন্য লেভেলের কিউটনেস।পুরো এনিমেটায় মায়ার সংলাপ এলেই বেশ কয়েকবার রিপিট করে শুনতাম।আর মাকো সাকুরাই নাতসু ড্রাগনিলের শৈশবকালের কন্ঠ দিয়েছেন।BON BON BLANCO ব্যান্ডের একজন সদস্য তিনি,এই ব্যান্ডই ওয়ান পিসের ওপেনিং “BON VOYAGE” এর আর্টিস্ট।

যারা মিলিটারি সাইন্স,যুদ্ধাস্ত্র ইত্যাদি সম্পর্কে আইডিয়া রাখেন,তাদের কাছে Ars Nova বেশ কম রেটিং পাবে,কারণ কিছু কিছু ঘটনা বেশ Illogical আরস নোভার, উদাহরণস্বরূপ – কঙ্গোর পানির তলদেশে গিয়ে সুপারগ্র্যাভিটি ক্যানন ফায়ার করা…

আর এনিমের অন্যতম বিশেষত্ব হল ইওনা (I401) র শক্তি ও সমরাস্ত্রে পিছিয়ে থেকেও কেবল স্ট্রাটেজি ও রণকৌশলের বদৌলতে ফগের শিপদের বিরুদ্ধে কঠিন যুদ্ধ করা…

OST খুব বেশি অরডিনারি,তবে খারাপ বা বেমানান নয়। আর ওপেনিং টা বেশ ভালো,SAVIOR OF SONG নামের এই গানটি শুনে ফেলুন ……

Ars Nova 10

Aoki Hagane no Arpeggio Ars- Nova
১২ এপিসোড
জনরা – একশন,মিলিটারি,সেইনেন
MAL রেটিং – ৭.৫৮
ব্যক্তিগত রেটিং – ৭.৪৫

অনন্য মাঙ্গা আসর – ৪ (Hideout)

নভেম্বর ৩০,২০১০……

কোন এক পাহাড়ের রাস্তায় এক দম্পতির গাড়ির ব্যাটারি নষ্ট হয়ে যায়।এই দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় মেকানিক্যাল পাওয়া রীতিমত অসম্ভব।উপায় না দেখে গাড়ি থেকে নেমে পাহাড়ে রাত কাটানোর জায়গা অনুসন্ধান করছে তারা।তারপর হাটতে হাটতে কথার ফাকে তাদের স্মরণে আসে পাহাড়ের এই অংশ নিয়ে জনশ্রুতি আছে – “পর্যটকরা এ জায়গায় প্রায়শই হারিয়ে যায় এবং আর ফিরে আসে না।“ তো ২০১০ সালে এসব আজগুবি গল্প ছাড়া আর কিছুই নয়।হাটতে হাটতে একটি পুরোনো গাড়ি চোখে পরে তাদের।এ আমলের নয় তা দেখেই বোঝা যাচ্ছে।২৫-৩০ বৎসর আগের মদেল।গাড়ির পাশেই একটা ছেড়াবেড়া পুরনো নোটবুক।নোটবুকে লেখা ছিল—
“I wonder How much time has passed since the story started… 2 years? maybe 3? But Even with that,I still have trouble remembering…..
My name is Kirishima Seiichi.I am a writer in Profession,and for me,This Book will no doubt be my Last. My Only wish is to tell everything in this manuscript…. Before it is too late. I pray that someday,it will find itself in the hands of someone.
…………..
…………..
…………..
Hey You,The reader of this Book… If you happen to find the entrance to the cave,Don’t hesitate to come in.”
আর তারপরই তারা সামনে একটা অন্ধকার গুহা দেখতে পেল……

Hideout 1

 

স্বাগতম “অনন্য মাঙ্গা আসর” এ।আজকে যে মাঙ্গা নিয়ে কথা বলব তার জনরা কি? উপরের লেখাটুকু পড়েও বুঝতে পারছেন না? হরর,হুম ঠিক শুনলেন হরর।উপরের লেখাটুকু Masaumi Kakizake’রHideout মাঙ্গা থেকে। একটা প্রশ্ন – উপরের অংশটা মাঙ্গার প্রথম না শেষ অংশ?? রিভিউর শেষভাগে উত্তর জানিয়ে দেওয়া হবে…
কিরিশিমা সেইচি – একজন লেখক।স্ত্রী মিকি আর ছেলে জুন কে নিয়ে তার পরিবার।কিন্তু আচমকা বিপদাপন্ন হয়ে পরে সে,তার লেখা আর পছন্দই হচ্ছে না প্রোডাকশন হাউজগুলোর।এদিকে পরিবারের কাছ থেকে সে এ কথা গোপন করে যায়।কিন্ত একদিন সব ওলটপালট হয়ে যায়,বড় একটা ধাক্কা খায় সেইচির পরিবার যার দোষটুকু সেইচির ঘারে চাপিয়ে দেওয়া হয় যদিও তা ছিল একটি দুর্ঘটনা।

সেই ধাক্কা কাটিয়ে উঠার জন্য এক দ্বীপ ভ্রমণে যায় সেইচি আর মিকি।পাহাড়ে গাড়ি চালাতে চালাতে এক জায়গায় এসে গাড়িটির ফুয়েল শেষ হয়ে যায়।আর তারপরই গল্প মোড় নেয় এক অন্য দিকে……… যা পাঠককে শোয়া থেকে বসানোর জন্য বা চেয়ার থেকে মনিটরের দূরত্ব কমানোর জন্য যথেষ্ট।

আঁকার কথা বলাটা আমার সাজে না – কারন আমার আঁকা খুব বেশি সুন্দর আর কি। :3
তাও বলি,আমার দেখা সেরা আর্ট এর মধ্যে একটা।বলে রাখা ভালো,সেইচি আর জুনের পাহাড়ে ভ্রমণের সময় বৃষ্টিপাত হচ্ছিল।আর সেই বৃষ্টিপাতের দৃশ্য এত ভালোভাবে আঁকা হয়েছে যে মনে হচ্ছিল যেন আমার কম্পিউটারে বৃষ্টি হচ্ছে।তবে চরিত্রগুলোর আঁকাও ভালো লেগেছে।আর রক্ত ও অন্যান্য Horror Material গুলো এত সুন্দরভাবে অঙ্কিত হয়েছে যে জীবন্ত আঁকা উপাধি দেওয়া যায়…

হরর মাঙ্গা হলেও বেশি ভয় পাওয়ার মত কিছু নেই… অর্থাৎ পড়ার পর আপনি ভয়ে রাতে ঘুমোতে পারবেন না তেমনটি হওয়ার কোন কারণ নেই।
আর মাত্র ৯ চাপ্টারে এত সুন্দরভাবে গল্পটা গুছিয়ে আনা হয়েছে যে পড়ার পর মনে হবে –“না,টাইম ওয়েস্ট হয়নি,ভালো কিছুই পড়লাম।“

এন্ডিং সংক্রান্ত—-
আমার মনে হয়েছে এই মাঙ্গার কোন এন্ডিং নেই।কারণটা মাঙ্গাটা পড়লেই বোঝার কথা।আর এরকম অসম্পূর্ণ প্রছন্ন এন্ডিং এর জন্যই এর জনরা ট্যাগে “হরর” শব্দটি সার্থকতা পেয়েছে।
উপরের অংশটা মাঙ্গার শেষভাগ ও প্রথমভাগের সংমিশ্রণ।সেগমেন্ট সম্পর্কে মতামত একান্তভাবে কাম্য…

মাঙ্গাঃ Hideout
মাঙ্গাকাঃ Masaumi Kakizake
চাপ্টারঃ ৯
জনরাঃ হরর,সেইনেন,সাইকোলজিক্যাল,একশন
রেটিং(ব্যক্তিগত): ৭.৭

মাঙ্গা পড়ুন,অন্যকেও পড়তে বলুন…