রিভিউ কন্টেস্ট এন্ট্রি [২০১৫] #৪০: GOTH — Kazi Rafi

মাঙ্গা- GOTH
জন্রা- সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার, হরর।
মাঙ্গাকা- Otsuichi
Art- Kenji Ooiwa
চ্যাপ্টার- 5
স্ট্যাটাস- কমপ্লিট

আপাতদৃষ্টিতে ইতসুকি কামিয়ামা বেশ হাসিখুশি, বন্ধুত্বপূর্ণ স্বভাবের মনে হলেও  ছোটবেলা থেকেই সে আর দশটা সাধারণ ছেলের থেকে সম্পুর্ণ আলাদা। তাই, প্রথম যেদিন ক্লাসের সবচেয়ে চুপচাপ,‌ নিঃসঙ্গ মেয়েটি, ইয়োরো মরিনোর ডান হাতের কব্জির কাঁটা দাগটা চোখে পরে কামিয়ামার, সেদিন থেকেই ওর মনে জেঁকে বসে এক সুপ্ত বাসনা, যেভাবেই হোক তাঁর পেতে হবে মরিনোর ডান হাতটি! অন্যদিকে, সেই সময়ে পুরা শহরে বেশ চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে এক ভয়ঙ্কর সিরিয়াল কিলিং এর ঘটনা! জনসাধারণের মনে প্রচণ্ড ভীতির সৃষ্টি করে অজ্ঞাত অপরাধীর অপহৃত ব্যক্তিদের কব্জিহীন লাশের দেখা মিলতে লাগলো একের পর এক!! এদিকে হঠাৎ করেই একদিন, রীতিমত অপ্রত্যাশিতভাবেই কামিয়ামার সামনে হাজির হয়ে যায় এক সুবর্ণ সুযোগ! সেই সুযোগ এর সদ্ব্যবহার করতেই প্ল্যান মাফিক কাজে নেমে পরল কামিয়ামা। অবশেষে সে পেতে চলেছে তাঁর কাঙ্ক্ষিত, মরিনোর ডান হাতটি!

বলছি মাঙ্গা GOTH এর কথা! ৪টি সংযুক্ত কাহিনী (৫টি চ্যাপ্টার) নিয়ে রচিত এই ছোট্ট মাঙ্গাটি গড়ে উঠেছে হাই স্কুল পড়ুয়া দুই চরিত্র কামিয়ামা ইতসুকি এবং ইয়োরো মরিনোকে ঘিরে! হাসিখুশি, বন্ধুত্বসুলভ ও অমায়িকতার মুখোশে ঢাকা কামিয়ামা আদতে প্রখর বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন এবং নিষ্ঠুর প্রকৃতির, যার মনের গভীরে লুকিয়ে আছে এক সুপ্ত বাসনা, অন্যদিকে কমনীয় চেহারার ইতসুকি বেশ চুপচাপ ও নিঃসঙ্গ স্বভাবের, যার কারনে নেই কোন বন্ধুবান্ধবও। বেশীরভাগ সময় একাকি বই পড়ে সময় কাটায়। তাঁর এই আবেগহীন আচার আচরনের পেছনে রয়েছে এক অন্ধকার অতীত যা তাকে মাঝেমধ্যেই তাড়া করে ফেরে! কিন্তু এই দুজনের ভিতরেই রয়েছে একটি বিশেষ মিল! মাত্র একটি বিষয়, যা নিয়ে তাদের দুইজনের ভিতরেই কাজ করে একধরনের প্রচণ্ড মোহ, যা এই দুজনকে অমোঘ নিয়তির মতন কাছে টেনে এনে গেঁথেছে এক সুতোয়, আর তা হল- মৃত্যু! এর প্রচণ্ড আকর্ষণে তারা একত্রিত হয়ে  সমাধান করতে থাকে তাদের আশপাশে ঘটতে  থাকা বিভিন্ন হত্যাকাণ্ডের রহস্য!

মজার কথা হচ্ছে, প্রতিটি গল্পে কেইস সমাধান করে অপরাধীকে হাজতে প্রেরণের চেয়ে বরং এর প্রত্যেকটা হত্যাকাণ্ডের বিভিন্ন কারণসমূহ, ভিক্টিম ও হত্যাকারীর মধ্যকার যোগসূত্র, তাদের অতীত জীবনের কথা এবং মাঙ্গার মূল দুই চরিত্রের নিজেদের ব্যক্তিগত উদ্দেশ্য সাধনের চেষ্টা কাহিনীর অন্যসব রেখার সঙ্গে একসঙ্গে কীভাবে এসে মিলিত হয় তাইই এই মাঙ্গার মূল উপাদ্যে হিসেবে পরিবেশন করেছেন মাঙ্গাকা!

মাঙ্গার আর্ট ভিন্ন একজনের করা যা বেশ চমৎকার এবং স্পষ্ট, প্রত্যেকটি দৃশ্যপট আলাদা করে নির্ণয় করে যায়। কাহিনীর সঙ্গে মিল রেখে, শিল্পী প্রতিটি গল্পে একটি বেশ ভৌতিক এবং বিষণ্ণতার ছোঁয়া ফুটিয়ে তুলেছে সার্থকতার সঙ্গে!

সবশেষে এইটাই বলব যে, মানবসম্প্রদায়ের সবচেয়ে অন্ধকারাছন্ন বৈশিষ্ট্যের জাজ্বল্যমান উদাহরণই লেখক তাঁর এই সাইকলজিকাল-থ্রিলার ঘরানার মাঙ্গা GOTH এর মাধ্যমে পাঠকের কাছে উপস্থাপন করেছেন! এই জন্রার ভক্তরা চাইলেই দ্রুত পড়ে শেষ করতে পারবেন এই ছোট্ট সিরিজটি! আশাকরি এটি আপনাদের হতাশ করবে নাহ! ধন্যবাদ!

40 GOTH Manga

রিভিউ কন্টেস্ট এন্ট্রি [২০১৫] #৩৯: Monster — Adnan Shafiq Ricky

“এনিমখোর রিভিউ কন্টেস্ট [২০১৫] – বিশেষ পুরস্কার অধিকারী এন্ট্রি”

————————————————————————————————————-

এনিমে : মনস্টার ( Monster )
মাঙ্গাকা : নাওকি উরাসাওা
জনরা : মিস্ট্রি , ড্রামা , হরর , সাইকোলজিকাল , থ্রিলার , সেইনেন
পর্ব সংখ্যা : ৭৪
মাই এনিমে লিস্ট রেটিং : ৮.৭৫

প্রায়শই এনিমেতে খুঁজে পাওয়া সকল কল্পকাহিনীর অতিমানবীয় শক্তি ও অতিপ্রাকৃত ঘটনা থেকে অনেক দূরে ,”মনস্টার”  হচ্ছে বাস্তবতার নিরিখে গড়ে ওঠা এক শিহরণ জাগানো কাহিনী । জোরপূর্বক মানুষের মনস্তাত্ত্বিক গঠন নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা  , একজন সোসিওপ্যাথের মনজগতের চিন্তাভাবনা  , অশুভ সবকিছুর উৎস ও মানব জীবনের প্রকৃত মূল্য এর মত কিছু অস্বস্তিকর বিষয় এইখানে বেশ ভয়ংকরভাবে উপলব্ধি করার সুযোগ পাওয়া যায় । সকল অশুভ শক্তির এক মূর্তিমান প্রতীক, এক মানবরূপ দানবের বিরুদ্ধে নিজের মনুষ্যত্ব বজায় রেখে এই দুনিয়ার যা কিছু নষ্ট তা ঠিক করার জন্য সংগ্রামের এক ব্যাতিক্রমধর্মী , রহস্যময় , রোমাঞ্চকর এক গল্প “মনস্টার” ।

 

কাহিনী : ( ৯/১০)

সময়কাল আশির দশকের মাঝামাঝি, পশ্চিম জার্মানি । আইসলা মেমোরিয়াল হাসপাতালে কর্তব্যরত দক্ষ নিউরোসার্জন , ডাক্তার কেনজো টেনমা, আমাদের গল্পের মুল নায়ক । এক সম্ভাবনাময় উজ্জ্বল ভবিষ্যতের হাতছানি , হাসপাতাল পরিচালকের অনুগ্রহ   এবং বাগদত্তা হিসেবে তার সুন্দরী কন্যা ; সবই ভালো চলছিল তার । কিন্তু একটি সিদ্ধান্ত তার দুনিয়া সম্পূর্ণ ওলট-পালট করে দেয় । হাসপাতালের অভ্যন্তরের রাজনীতি , দুর্নীতি ও রোগীদের চিকিৎসা নিয়ে বিভিন্ন অনিয়মে অতিষ্ঠ ডাক্তার টেনমা যখন দোটানার সম্মুখীন হয়ে নিজের বিবেকের কথায় সাড়া দিয়ে পরিচালকের আদেশ অমান্য করে শহরের মেয়রকে বাদ দিয়ে এক গুলিবিদ্ধ বালকের চিকিৎসার সিদ্ধান্ত নেয় তখন থেকেই তার সুন্দর জগতের সব ধিরে ধিরে ভেঙ্গে পরতে শুরু করে । তাকে পদচ্যুত করা হয়, তার বাগদত্তা তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে , তার উন্নতির সব পথ রুদ্ধ করে দেওয়া হয় ।

 

হাসপাতাল থেকে সেই আহত বালক এবং তার জমজ বোনের উধাও হয়ে যাওয়া এবং পরিচালক ও আরও দুই চিকিৎসকের রহস্যজনক হত্যাকাণ্ডে ঘটনা সম্পূর্ণ ভিন্ন দিকে মোড় নেয় । কিন্তু এই রহস্যের সমাধান করা তখন সম্ভব হয়ে উঠে না । এই ঘটনার দশ বছর পরে, পুনরায় বিভিন্ন রহস্যজনক হত্যাকাণ্ড ঘটতে থাকে , টেনমার সামনে হত্যা হয় তার এক রোগী । পারিপার্শ্বিক প্রমাণের কারণে সন্দেহের তীর তার দিকে ধেয়ে আসে । বাধ্য হয়ে সে নেমে পরে সব অঘটনের পিছে দায়ী  এই “দানবের” খোঁজে , সব অশুভ অশুভ শক্তিকে মূলে ধ্বংস করতে । তার এই খোঁজে বেড়িয়ে আসে তৎকালীন সময়ে গোপনে চলতে থাকা এবং পূর্বে ঘটে যাওয়া নানা ঘটনার  ভয়ংকর চিত্র ।

 

সম্পূর্ণ গল্পটি বেশ গুছিয়ে লেখা হয়েছে । সকল ঘটনার জট ধীরে ধীরে  খুলতে শুরু  করে , গল্পের  এই গতি দর্শকদের  কাছে বিস্ময় ও সামনের ঘটনার জানার আকাঙ্ক্ষার অনুভুতি জাগাতে সহায়ক ছিল । বেশ সুচিন্তিত ডায়ালগগুলো চরিত্রগুলোর ব্যাক্তিত্ত সম্পর্কে আমাদের সুস্পষ্ট ধারনা দেয়  । বিশেষ করে প্রত্যেক চরিত্রের মাঝে যে সম্পর্ক ,অতি যত্নের  সাথে যেভাবে তাদের নিজ নিজ পরিবেশের সাপেক্ষে উপস্থাপন করা হয়েছে তা সত্যিই প্রশংসনীয় । মাঝে কাহিনীর গতি কিছুটা ধীর যাওয়া দর্শকের কাছে বিরক্তির কারণ হতে পারে কিন্তু আমার মতে তা সম্পূর্ণ গম্প উপস্থাপন করতে প্রয়োজন ছিল । যদিও মাঝে কাহিনীর সাথে তেমন সম্পর্কহীন কিছু পর্ব বাদ দিলে এনিমেটির আবেদন আরও বাড়তো ।

 

আর্ট ও অ্যানিমেশন :(৮.৫/১০)

বর্তমানের এনিমের মত ঝকঝকে না হলেও, গল্পের আবহের সাথে সম্পূর্ণ মানানসই । আলো এবং ছায়ার সাহায্যে বিভিন্ন ঘটনা , অনুভূতির প্রকাশ বেশ দক্ষভাবে দেখানো হয়েছে । চরিত্রগুলোর ডিজাইন বেশ বাস্তবধর্মী , তাদের দেহের ও মুখের গঠনে এর ছাপ স্পষ্ট । এছাড়া বিভিন্ন সময় পরিচয় করিয়ে দেওয়া নানা জাতির মানুষের ডিজাইনে সুস্পষ্ট পার্থক্য রয়েছে  । ব্যাকগ্রাউন্ডে জার্মানি , চেক প্রজাতন্ত্র ও ফ্রান্সের বিভিন্ন  স্থানের  চিত্র উপস্থাপনে যে বৈচিত্রের দেখা মিলে তা সত্যি মনোমুগ্ধকর ।

 

সাউন্ড : (৮.৭/১০)

বিভিন্ন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ব্যবহৃত আবহ সঙ্গীত সম্পূর্ণ গল্পকে আরও বাস্তবধর্মী করে তুলেছে । প্রতিটি বন্ধুকের গুলির শব্দও যেভাবে বন্ধুকের ধরনের সাথে মিলিয়ে তৈরি করা হয়েছে তাতে বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে । ওপেনিং হিসবে ব্যবহার করা সাউন্ডট্রাকটি ( https://www.youtube.com/watch?v=i8Rhb-Ln01Q ) আমাদের মনে যে ছমছমে ভাবের জন্ম দেয় , তা গল্পের ভাবকে আরও সুস্পষ্ট করে তুলেছে ।  এন্ডিং হিসেবে ব্যবহার করা ” ফর দ্যা লাভ অফ লাইফ ” (https://www.youtube.com/watch?v=qhPGbr51jfc )  আমার শোনা  অন্যতম অদ্ভুতুড়ে এন্ডিং ।  আবার রয়েছে “আইডলার হুইল” (https://www.youtube.com/watch?v=GBim5JAZQrY&index=17&list=PLA78A59F7388EC1A7) এর মত মন ভালো করে দেওয়া সাউন্ডট্রাক । এই এনিমে কেবল তার সাউন্ডট্রাক এর জন্য সুপারিশযোগ্য । এই এনিমের ডাব্বড ভার্শন দেখতে আমি সুপারিশ করবো কেননা আমার মতে সাব্বড এর তুলনায় ডাব্বড ভার্শন গল্পের সেটিং এর সাথে ভালোভাবে মিলে ।

 

চরিত্র : ( ৯.৫ / ১০)

এই  গল্পের মুল আকর্ষণ  এর চরিত্রগুলোর গভীরতা এবং  যেভাবে সুক্ষভাবে যত্নের সাথে এদের চরিত্রায়ন করা হয়েছে  ।  এইখানে আমাদের দেখা মিলে এই জনরের অন্যতম শক্তিশালী কিছু চরিত্রের । পার্শ্ব চরিত্রগুলো অন্যান্য সিরিজের মূল চরিত্রের তুলনায় অনেক ভালভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে । সমগ্র সিরিজ জুড়ে অনেক চরিত্রের অবতারনা করা হলেও তাদের প্রত্যেকের মধ্যে আলাদাভাবে পার্থক্য করা সম্ভব । পার্শ্ব চরিত্রগুলো অনেক ক্ষেত্রেই মূল চরিত্রগুলোকে ছাপিয়ে দর্শককে আকর্ষণ করার ক্ষমতা রাখে  ।  চরিত্রগুলো ধরন এবং তাদের মধ্যের সম্পর্ক আবিষ্কার করাই হবে দর্শকদের জন্য এক অনন্য অভিজ্ঞতা ।

 

সর্বোপরি, এর অসাধারণ সব চরিত্রের দক্ষ চরিত্রায়ন থেকে এর বাস্তব সেটিং, দুর্দান্ত সাউন্ডট্রাক ও সুষম গতিতে চলতে থাকা কাহিনী  ,  সবই আপনাকে আপনার সিটের কিনারে এনে ছাড়বে । এনিমে জগতে এরকম বাস্তবধর্মী গল্প খুজে পাওয়া আসলেই দুর্লভ এবং যদিও ৭৪ পর্বের এই কাহিনী কিছুটা দীর্ঘ হলেও পরিশেষে আপনি তৃপ্তই হবেন । সামনে কী ঘটতে যাচ্ছে, এই চিন্তায় আপনি সবসময় ব্যস্ত থাকবেন । তাহলে  আর অপেক্ষা কেন ? দেখে ফেলুন রোমাঞ্চে ভরপুর , বাস্তব অথচ  অপার্থিব এক থ্রিলার  “মনস্টার” ।

39 Monster

রিভিউ কন্টেস্ট এন্ট্রি [২০১৫] #৩৮: Shin Sekai Yori [From the New World] — Hasin RA Aunim

এনিমে রিভিউঃ শিন সেকায়ি ইয়োরি (ফ্রম দ্যা নিউ ওয়ার্ল্ড)
পর্বসংখ্যাঃ ২৫
ম্যাল রেটিংঃ ৮.৫৪
আমার রেটিংঃ ৮.৭

“Which came first, the chicken or the egg? Either way, we are like bubbles on the surface of a pond”

শিন সেকায়ি ইয়োরি ইয়ুস্কে কিশি রচিত একটি উপন্যাস, যা পরবর্তীতে মাঙ্গা ও এনিমে রূপ পায়!

 

কাহিনীঃ

শিন সেকায়ি ইয়োরি এনিমেটির সময়কাল ঠিক এক সহস্রাব্দ পর, ২১১১ সালের দিকে। সভ্যতায় বিপ্লব জাগিয়েছে মনের সাহায্যে সব কিছুকে প্রভাবিত বা নিয়ন্ত্রণ করার এক অভাবনীয় ক্ষমতা, যার নাম ক্যানটাস (জুওরিয়োকু)। সর্বপ্রথম মানুষের মাঝে এই ক্ষমতার প্রকাশ ঘটে ২০১১ সালে।

কেন্দ্রীয় চরিত্র সাকি ওয়াতানাবের মাঝে এই শক্তির আবির্ভাব ঘটে অন্যদের চেয়ে একটু দেরিতে। তবে অবশেষে সেও অন্যদের মত ক্যানটাস ব্যবহারে সক্ষম হয় এবং বন্ধুদের সাথে সেও একটি বিশেষ স্কুলে যাওয়া শুরু করে যেখানে এর ব্যবহারের যথাযথ কৌশলাদি শিখানো হয়।

সাকি আর তার বন্ধু সাতোরু আসাহিনা, শুন আওনুমা, মামোরু ইতোও আর মারিয়া আকিযুকির হাত ধরেই কাহিনীর অবতারণা। তাদের নানা অভিযান, অভিজ্ঞতা আর উপলব্ধির মিশেলে এনিমেটি হয়েছে শিল্পসুন্দর।

প্রত্যেকটি চরিত্র অংকনে বিশেষ মুন্সিয়িনার পরিচয় পাই আমরা এনিমেটিতে। এতে আমরা কুইর‍্যাট (বাকেনেযুমি) নামের এক ধরণের প্রাণীর দেখা পাই যারা অবলীলায় কাহিনীর অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে পড়ে।

সাকি আর তার বন্ধুদের নানা ঘাত প্রতিঘাত, একটি অতি রক্ষণশীল ও পাষাণহৃদয় সমাজব্যবস্থার বিরুদ্ধে তাদের নিরন্তর সংগ্রাম কাহিনীকে যেমন করেছে অনবদ্য সেই সাথে চরিত্র চিত্রায়ন হয়েছে অনিন্দ্যসুন্দর।

ছোটখাটো ডিটেইলের প্রতি সজাগ দৃষ্টি রাখা হয়েছে, ফলে কাহিনীটি সমৃদ্ধ হয়েছে। সেই সাথে পরতে পরতে বিস্ময়, কাহিনী কোন দিকে মোড় নিবে তা অনুমান করতে গেলে বেশ বেগ পেতে হবে।

 

আর্টওয়ার্ক ও এনিমেশনঃ

শিন সেকায়ি ইয়োরির আর্টওয়ার্ক সত্যিই মনোমুগ্ধকর ও চোখের জন্য আরামদায়ক। চরিত্রগুলো আঁকা হয়েছে সুচারুরূপে, ফলে তারা হয়েছে চিত্তাকর্ষক। প্রথম এন্ডিং এর এনিমেশন টি একেবারেই আলাদা যা ভাল লাগার মত। নিসর্গশোভা অংকনে এনিমেটর ছিলেন তুখোড়।

 

শব্দ সংযোজনঃ

পরিবেশ ও ঘটনাপ্রবাহের সাথে যুতসই ছায়াসংগীতের ব্যবহার দেখা যায় এনিমেটিতে। অনবদ্য সব সুরের ব্যবহার এনিমেটিকে অন্য উচ্চতা দিয়েছে। এনিমেটিতে কোন ওপেনিং এর ব্যবহার করা হয়নি যা কিছুটা অদ্ভুত লাগলেও দুটি মনে রাখার মত এন্ডিং সেই অভাব অনেকাংশে মিটিয়ে দেয়।

 

কন্ঠাভিনয়ঃ

এনিমেটিতে কানা হানাযাওয়া, ইয়ুকি কাজি, আয়া এন্দো প্রমুখের মত প্রথিতযশা কন্ঠাভিনেতাদের সমাবেশ ঘটেছে। সাকির কন্ঠে রিসা তানাদে সুদক্ষ ছিলেন। অন্যদের কাজ ও প্রশংসনীয়।

এনিমেটির ৮ম পর্বে কিছু অপ্রীতিকর দৃশ্যের দেখা মিলবে যার কারণে অনেকে এনিমেটি ড্রপ করতে পারেন। তবে ঐ বিষয়গুলো এসেছে কাহিনীর প্রয়োজনেই, আর কিছুদূর আগালেই যা বুঝা যাবে।

শিন সেকায়ি ইয়োরি আপনাকে ভাবাবে। প্রশ্ন করাবে। উত্তর খুঁজাবে। ঠিক ভুলের দ্বন্দ্ব, আলো আঁধারির মাঝের আবছায়া, সাদা কালোর ছেদের ধূসর জায়গাটার দিশা দিবে কতগুলো উচ্ছ্বল কিশোরকিশোরীর সাথে নেমে পড়ুন সমাজের স্বরূপ উদঘাটনে, তাদের সাথেই পেয়ে যান চূড়ান্ত অভিজ্ঞান – “নতুন পৃথিবী থেকে।”

38 Shisekai Yori

রিভিউ কন্টেস্ট এন্ট্রি [২০১৫] #৩৭: Fullmetal Alchemist Brotherhood — Abed Rahman

নাম: ফুলমেটাল আলকেমিস্ট ব্রাদারহুদ
পর্ব সংখ্যা:৬৪
ধরণ: একশন, এডভেঞ্চার, শৌনেন, ড্রামা, ফ্যান্টাসি।
রেটিং:৯.৫/১০।

“This is what happens when you tread into god’s territory or whatever you wanna call it”-Edward Elric

গ্রীক পুরাণের ইকারাস এর কথা মনে আছে? এই অভাগা চরিত্রটি মোমের তৈরি পাখায় করে সূর্যের খুব কাছে চলে গিয়েছিল, ফলে তার পাখা গলে সে পরে যায়। প্রকৃতি রীতিবিরুদ্ধ্ব কোন কিছুকেই মেনে নেয় না। একথা সকলেরই জানা। কিন্তু ভালবাসার জন্য কি আপনি বিধাতার নিয়ম ভাঙবেন? আর বিধাতা কিংবা প্রকৃতিই বা কি তা মেনে নিবেন? সহজ উত্তর হল না। তবুও কি আপনি সেই প্রিয় মানুষটির জন্য বিধাতার নিয়মের বিরুদ্ধে যাবেন? আর বিধাতা কিংবা প্রকৃতির দেওয়া শাস্তির প্রায়শ্চিত্তইবা কিভাবে করবেন? মূলত এইসব তাত্ত্বিক প্রশ্নের উত্তর সুন্দর সাবলীল কাহিনী এবং না ভোলার মত কিছু চরিত্রের দ্বারা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে এই এনিমেতে।

পটভূমিঃ ফুলমেটাল আলকেমিস্ট ব্রাদারহুদ এর জগতটাও আমাদের জগত থেকে অনেকটাই ভিন্ন। আলকেমিস্টরা হলেন এ জগতের বিজ্ঞানি। যারা কিনা জাদুর মত যেকোনো জিনিস কে তিনটি ধাপের মধ্য দিয়ে তৈরি করেন সম্পূর্ণ ভিন্ন কিছু। এর নাম হল ট্রান্সমিউটেশন বা রূপান্তর। কিন্তু যথারীতি তারাও নিয়মের ঊর্ধ্বে না। যেকোনো কিছু পেতে হলে তাদের সমান কিছু বিনিময়ে দিতে হবে। এটাই হল Law of Equivalent Exchange অথবা সমান বিনিময়ের বিধান।এসবের পরেও আপাতদৃষ্টিতে এই আলকেমিস্টদের সর্বশক্তিমান মনে হলেও তাদেরও একটি এই বিদ্যা ব্যবহারে বাঁধা আছে। আর সেটি হল হিউম্যান ট্রান্সমিউটেশন কিংবা মানব রূপান্তর করা। এটাকে ধরা হয় আলকেমির সবচাইতে নিষিদ্ধ কাজ or greatest taboo । এমনি এক জগতের দুভাই হল এডওয়ার্ড এবং আলফন্স। তাদের আলকেমিস্ট বাবা ছোট বেলায় কোন এক কারণে তাদের মার কাছে রেখে চলে যান। সে থেকেই তাদের জগত তাদের মাকে ঘিরেই। বাবার লাইব্রেরির বই পরে আলকেমি ব্যবহার শিখে যায় এই দুই ভাই। উদ্দেশ্য মার জন্য নতুন নতুন উপহার বানানো।কিন্তু সেই মাও একদিন তাদের ছেড়ে চলে যান না ফেরার দেশে।সোজা ইংরেজিতে  prodigy এদুভাই ভালবাসার জন্য করে বসে সবচাইতে বড় ভুল। নিজেদের মাকে ফিরিয়ে আনতে গিয়ে করে হিউম্যান ট্রান্সমিউটেশন । ফলে এই জগতের ঈশ্বর যাকে ‘Truth’ বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে শাস্তি স্বরূপ তাদের দেহগুলকে বিনিময় হিসেবে নিয়ে নেন। বড় ভাই এডওয়ার্ড হারায় তার বাম পা আর আলফন্স হারায় তার সমগ্র শরীর। পরবর্তীতে এডওয়ার্ড নিজের ডান হাতের বিনিময়ে নিজের ভাইয়ের আত্মাকে এক দেহবর্ম তে আটকে ফিরিয়ে আনে।নিজেদের সকল পিছুটান ছেড়ে তারা নিজেদের যাত্রা শুরু করে কল্পকথার পরশমণি কিংবা Philospoher’s Stone এর খোঁজে যা কিনা Law of Equivalent Exchange অথবা সমান বিনিময়ের বিধানের বাহিরে; যা তাদের হারানো শরীর ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করবে । এই দুই ভাইয়ের এই খোজকে কেন্দ্র করেই উন্মোচিত হয়েছে এই এনিমের নানান ঘটনা।

দৃশ্যকল্প ও চরিত্র উন্নয়নঃ এক কথায় অসাধারণ। সত্যিকারের থিম একটু ডার্ক হলেও হাসিঠাট্টা, আবেগঘন থেকে শুরু করে সোজা বাংলায় মারমার কাটকাট দৃশ্যের অভাব ছিল না মোটেই। আর দৃশ্যগুলোর প্রত্তকেটাই কাহিনির প্রবাহর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণও বটে। অপরদিকে, অনেক চিরাচরিত শোনেন এনিমেতে পার্শ্ব চরিত্রগুলো মূল চরিত্রদের আড়ালে পরে যায়, এখানে এমনটি হয়নি।

সাউন্ডট্র্যাকঃ আবারো তারিফ করতে হচ্ছে। Yui এর জাদুকরী গলার থিম হোক কিংবা Let it all out হোক, সবগুলই একটা নির্দিষ্ট গুনগত মান বজায় রেখেছে। আর কিছু ট্র্যাক আপনাকে আজীবন মোহিত করতে সক্ষম, এটুকু জোরের সাথে বলাই যায়।

ব্যক্তিগত মতামতঃ আবারো এক কথায় আসি। আমি এই এনিমে নিয়ে রিভিউ লেখার কারন হল আমার মতে এটা এলিমে ওয়ার্ল্ড এর Jack of All Trades কিংবা সব কাজের কাজি। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত প্রতিটা ক্ষেত্রেই এনিমে নির্মাতারা মুনশিয়ানার পরিচয় দিয়েছেন। আর এন্দিং হ্যাপি এন্দিং হলেও তা পুরোপুরি রুপকথার গল্পের শেষের মতও নয়। আর উপসংহার সঠিক সময়ে টানা হলেও কবিগুরুর “শেষ হয়েও হইলনা শেষ” ধরনের একটা আমেজও থেকে যায়।একমাত্র সমালোচনা হোল প্রধান খলনায়ক “Father” এর চরিত্রটি। তার “Dwarf in the flask” হিসেবে হটাত আগমন চিরাচরিত Deus Ex Machina এর উৎকৃষ্ট উদাহরণ বলেই মনে হয়েছে। কিছু Homunculus এর চরিত্রও এই দোষে দুষ্ট। তবে এটুকু মাফ করাই যায় বলে আমার ধারনা।  

37 Fmab-poster

রিভিউ কন্টেস্ট এন্ট্রি [২০১৫] #৩৬: Hotaru No Haka — Amor Asad

“এনিমখোর রিভিউ কন্টেস্ট [২০১৫] – দ্বিতীয় স্থান অধিকারী এন্ট্রি”

————————————————————————————————————-

Hotaru No Haka (1988)
Genre: War Drama
Imdb: 8.5
MAL: 8.6
Rotten Tomatoes: 97%

যুদ্ধবিরোধী ধ্যানধারণায় নির্মিত সর্বকালের সেরা সিনেমাসমূহের মধ্যে Hotaru No Haka (Aka Grave of the Fireflies) (1988) এর নাম উচ্চারিত হয়েছে বারংবারই। ফিল্ম ক্রিটিকরা হয়েছেন প্রশংসায় পঞ্চমুখ, দর্শকরাও মজেছে সমানতালে।

Hotaru No Haka’র গল্প একমুখী এবং সরল। কাহিনীর সময়কাল ১৯৪৫ সালের জাপান, ওসাকা বে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ যখন সমাপ্তির দোরগোড়ায় পৌছে গেছে প্রায়। শুরুটা হয় ন্যারেটিভ ভঙ্গিমায়, সিনেমার প্রধান দুই চরিত্রের একজন Seita’র কাছে জানা যায় তার নিজের মৃত্যুর কথা। Seita এখানে  আত্মিক স্বত্বা, বাকি সিনেমা জুড়ে Seita’র বর্ণনায় দর্শক দেখতে পায় মৃত্যুর আগ অবধি Seita’র জীবনের ঘটনাবলী।

তৎকালীন জাপানে এমন একটা সময় চলছিল যখন মিত্র বাহিনীর অ্যামেরিকান আর্মি নিয়মিত আকাশ পথে আগুনে-বোমা মারত জাপানের শহর গুলিতে। মানবেতর জীবন যাপন করতে থাকা জাপানী অধিবাসীরা সাইরেন বাজতেই জীবন বাঁচাতে পড়িমরি করে ছুটতো বম্ব-শেল্টারে। তবে সবাই যে যথাসময়ে শেল্টারে পৌছনোর মতো ভাগ্যবান ছিল না, সেটা চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়ার দরকার পড়েনা। এমনই একটা শহরের লন্ডভন্ড হয়ে যাওয়া হাজারো পরিবারের একটা Seita’দের পরিবার। বাবা যুদ্ধে, মা বোমা হামলায় আহত হয়ে হাসপাতালে। যুদ্ধবিদ্ধস্ত শহরে ছোট বোন Setsuko কে নিয়ে Seita’র জীবন যুদ্ধে বেঁচে থাকার লড়াই।

যুদ্ধকালীন সময়ের কঠিন জীবনের কোন তুলনা হয়না, কল্পনাকেও হার মানায়। সাহায্য পাবার আশা প্রায় নিরাশার সমতুল্য।  Seita’র জীবন সংগ্রামের অভিজ্ঞতাও তাই তার জন্য খুব একটা সুখকর হয়নি। তবু হাল ছাড়ার পাত্র নয় সে, নিজে যেমন তেমন, প্রাণপ্রিয় ছোট বোনের দরকারগুলো নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর, একরোঁখা। Seita’র চরিত্রের আত্মসম্মানবোধ, স্নেহপ্রবণতা, দায়িত্ববোধ যেকোন দর্শক হৃদয়কে আন্দোলিত করবে।

Hotaru No Haka’র বড় বৈশিষ্ট্য এতে রাজনৈতিক কোন প্রোপ্যাগান্ডা নেই, যুদ্ধে কে সঠিক, কে বেঠিক, কে জয়ী কে বিজেতা – এসবের কোন ধার ধারেনি। মূলত এটা একটা সেমি-অটোবায়োগ্রাফি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপান অধিবাসী এক কিশোরের নিজের জীবনে ঘটে যাওয়া ঘটনাবলী সম্বলিত লেখার উপর নির্ভর করে নির্মিত হয়েছে সিনেমাটা। সম্পূর্ণ গল্পটাই যুদ্ধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এবং মানবসমাজে তার প্রভাব নিয়ে। মুভিটা কারো দিকে আঙ্গুল তোলে না, স্রেফ অনুধাবন করতে বলে। যুদ্ধবিরোধী দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশে তাই পুরোপুরি সফল বলতে হবে।

পুরো মুভি জুড়েই ছোট ছোট কিছু দৃশ্য বিশেষভাবে নজর কাড়ে। পাঁচ বছরের পিচ্চি মেয়ে Setsuko’কে করাল বাস্তবতার কুৎসিত রূপ থেকে নিষ্কলুষ রাখতে বড় ভাই Seita’র প্রচেষ্টাগুলো স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে নিত্য নৈমত্তিক ব্যপার হলেও সিনেমার প্রেক্ষাপটে অতিমানবীয় রূপ নিয়ে দর্শকের সামনে আবির্ভূত হয়। আবার অন্য এক দৃশ্যে, জোনাকি পোকা নিয়ে Setsuko’র হাস্যোজ্জ্বল উৎসাহ এবং পরদিন পোকাগুলোকে কবর দেয়ার ছেলেমানুষী কাজটা মোটেই ছেলেমানুষী লাগে না। এ পর্যায়ে এসে সিনেমার নামকরণের কারণ এবং সার্থকতা দর্শক অনুধাবন করতে পারে যেন সহসাই।

শেষ করি নিজের একটা ঘটনা দিয়ে। অ্যানিমে পছন্দ করতাম না তেমন, আর্টগুলো ভালো লাগতো না। রটেনটম্যাটোসে অ্যানিমেশন লিস্টে পেয়ে অনিচ্ছা সত্ত্বেও দেখা শুরু করেছিলাম Hotaru No Haka. লাইফ লং দৃষ্টিভঙ্গি এই এক অ্যানিমেই পালটে দিয়েছিল। যে প্রচণ্ড ভাবাবেগের সম্মুখীন করেছিলো এটা আমাকে, সেই অনুভূতির পুনরাবৃত্তি ঘটেনি আগে-পরে কখনও। মোশন পিকচারে কোন জ্যন্ত মানুষ ছাড়াই এত শক্তিশালী ভাব প্রকাশ করা সম্ভব ভাবিনি আগে। নিজেকে তিরস্কার করেছিলাম সমৃদ্ধ এক শিল্প থেকে নিজেকে বঞ্চিত রাখার জন্যে। বিখ্যাত ফিল্ম ক্রিটিক Rodger Ebert যেন যথার্থই বলেছিলেন, “Grave of the Fireflies” is an emotional experience so powerful that it forces a rethinking of animation.

আমার ব্যক্তিগত রেটিং ৯.৫/১০

36 Grave-of-the-fireflies

রিভিউ কন্টেস্ট এন্ট্রি [২০১৫] #৩৫: Fairy Tail — Imamul Kabir Rivu

অ্যানিমে: ফেইরি টেইল
পর্বসংখ্যা: ২৪২(চলমান)
জনরা: অ্যাকশন, অ্যাডভেঞ্চার, ম্যাজিক, কমেডি, শৌনেন, এচি।

মানব ইতিহাসের অন্যতম ওভার-রেটেড অ্যানিমে এটি। একটি শৌনেন অ্যানিমে যার কোন সুনির্দিষ্ট কাহিনী নেই। এটির কাহিনী মূলত আর্ক-নির্ভর, মানে প্রতিটি আর্কে নতুন একটি কাহিনী শুরু হয়। অ্যানিমেটায় অ্যাকশনের পরিমান বেশ ভালো; যেখানে শত্রু যতই শক্তিশালী হোক না কেন, শেষ পর্যন্ত নায়ক অবশ্যই জিতবে। এমনকি, প্রথমে সবাই মিলে শত্রুকে না হারাতে পারলেও শেষে দেখা যাবে নায়ক একাই তাকে উড়িয়ে দেবে। এছাড়া এই অ্যানিমেতে রয়েছে ফ্যানসার্ভিস। অ্যানিমেটা দেখার সময় আমার বারবার মনে হয়েছে, নায়িকাদের কাপড় স্পর্শ করলেই যদি তা এভাবে ছিড়ে যায়, তাহলে এই কাপড় পরার মানেটা কি?! এই অ্যানিমেতে সবচেয়ে বেশি যেটা দেখানো হয়েছে, সেটা হল তাদের “নাকামা পাওয়ার” (বন্ধুত্বের শক্তি)। এ অ্যানিমেটাতে নাকামা পাওয়ার দিয়ে শত্রুকে হারানো থেকে শুরু করে মুদ্রাস্ফীতি, দুর্নীতি এবং আরও নানা রকম সমস্যা সমাধান করে ফেলে আমাদের নায়ক ও তার বন্ধুরা। অ্যানিমেটিতে কোন ফিলার নেই, কিন্তু পুরো কাহিনীটাকেই আপনার কাছে একটি ফিলার বলে মনে হবে। ওহ, আর এখানে আবার প্রেমকাহিনীও আছে, যা আসলে খুব দুর্বলভাবে লেখা এক প্রেমকাহিনী (আমি নিশ্চিত এখন নালুর পাগল ভক্তরা আমাকে বকাঝকা করছে)।

এবার আসি আর্টের কথায়। তেমন কোন আহামরি আর্ট নেই এই অ্যানিমেটির। আমরা সাধারণ কোন অ্যানিমেতে যেমন রঙিন ব্যাকগ্রাউন্ড দেখতে পাই, এখানে তাও নেই। সত্যি কথা বলতে কি, চারপাশের ডিটেইলিং দেখে মনে হবে যেন কোন এক বাচ্চার হাতে রং করা এক ছবি। ক্যারেক্টার ডিজাইন তেমন ভালো ছিল না। সবমিলিয়ে বলব, অ্যানিমেটির আর্টওয়ার্ক সাধারণের তুলনায় একটু খারাপ।

এই অ্যানিমেটার অনেক নেতিবাচক দিকের মধ্যেও কিছু ইতিবাচক দিক রয়েছে, তার মধ্যে একটি হল এর মিউজিক। অ্যানিমেটা যেমনই লাগুক না কেন, এতে ব্যবহৃত মিউজিকগুলো যে অসাধারণ তা বলতে যে কেউ বাধ্য হবে। অ্যানিমের ওএসটিতে ব্যবহৃত সেলটিক ফোক মিউজিকগুলো বেশ দারুণ ছিল। কাকিহারা তেতসুয়া, আয়া হিরানো, নাকামুরা ইউইচি, ওহারা সায়াকা, কিতামুরা এরি, নামিকায়া দাইসকে, কুগিমিয়া রিয়ে, সাতোমি সাতো,সাওয়াশিরো মিয়ুকি,হোরিয়ে ইউই- এদের মত অভিজ্ঞ সেইউরা কণ্ঠ দিয়েছেন অ্যানিমেটিতে, তাই ভয়েস-অ্যাক্টিং খারাপ ছিল না। তবে আমার মতে, কাকিহারা তেতসুয়া নাতসুর চেয়ে ইওয়ামুশি পেডালে তোউদো জিনপাচির রোল বেশি সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেছেন এবং আয়া হিরানোরও হারুহি সুজুমিয়ার রোলটি লুসির রোলের চেয়ে অনেক বেশি ভালো ছিল। কিন্তু নাকামুরা ইউইচি এবং ওহারা সায়াকা সুন্দর করে গ্রে এবং এর্যার চরিত্রটি উপস্থাপন করতে পেরেছেন।

অ্যানিমেটাতে কিছু কিছু চরিত্রকে বেশ ভালো লেগেছে আমার। তবে প্রধান চরিত্র হিসেবে নাতসুর ব্যক্তিত্ব অনেক দুর্বল ছিল। অনেকে হয়ত বলবে নাতসু বেশ মজাদার একটি চরিত্র, তবে তার কাজকর্ম মজাদারের চেয়ে বরং কিছু কিছু ক্ষেত্রে রীতিমত বিরক্তিকর লেগেছে আমার কাছে। আরেক ওভার-রেটেড চরিত্র হল এর্যা। অনেক ওভার-পাওয়ার্ড একজন ওয়েপন মাস্টার সে। এই চরিত্রটিকে কম-বেশি আপনারা সবাই হয়ত চেনেন, কারণ অ্যানিমে কমিউনিটিতে একে নিয়ে বেশ হাইপ রয়েছে; সর্বজনীন “ওয়াইফু তালিকা”য় এর্যার স্থান বেশ ওপরে। এছাড়া লুসি এবং গ্রে- এই দুজনও অনেক গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র অ্যানিমেটির। আরও চরিত্র পাবেন অ্যানিমেটিতে যেমন মিরাজেইন, কানা, ম্যাকারভ, ল্যাক্সাস, এল্ফমান, জেলাল, উলটিয়ার, যেরেফ ইত্যাদি।

অ্যানিমেটা শুরু হয় একেবারে বাচ্চাদের অ্যানিমের মত, যদি ম্যাজিক নিয়ে অন্য কোন অ্যানিমে আপনি না দেখে থাকেন, অন্তত হ্যারি পটার মুভিগুলা তো দেখেছেন, তাহলেই বুঝতে পারবেন এই অ্যানিমেটা ম্যাজিকের নামে আসলে কি করেছে। তবে এই বাচ্চাদের অ্যানিমেতে ঢেলে দেওয়া হয়েছে এক গাদা ফ্যানসার্ভিস। তাহলে কথা হল, এখানে নির্ধারিত দর্শকরা আসলে কারা? এর উত্তর যাই হোক না কেন, এ ক্ষেত্রে আমি বলব হিরো মাশিমা যাদের টার্গেট করি কাহিনীটি বানিয়েছেন, তাদের বেশির ভাগেরই মনমত একটি কাহিনী বানাতে তিনি ব্যর্থ। প্রতিটি আর্ক শুরু হয় অনেক ধীরগতিতে, যেটা একটি শৌনেন অ্যানিমের ক্ষেত্রে অনুপযোগী। অ্যানিমেটাকে অনেকেই মাস্টারপিস বলে ঘোষণা দেয়, তাদের মধ্যে বেশিরভাগকেই দেখবেন মাত্র ১০-১২ টা অ্যানিমে দেখে এটিকে নিয়ে পাগলামো শুরু করে দেয়। আমার মতে, এমন পাগল ভক্তদের পরামর্শ শুনলে পরে নিজেকেই পস্তাতে হবে।

যাই হোক, সব মিলিয়ে বলব, অ্যানিমেটি দেখা মানে সময় নষ্ট। সময় অনেক মূল্যবান একটি জিনিস, সেটি এই অ্যানিমের এতগুলো পর্বের পেছনে খরচ না করে আপনি বরং অন্য অনেক ভালো কাজের পেছনে ব্যয় করতে পারবেন। হয়ত আমি একটু বেশি বলে ফেলেছি, এখন হয়ত অনেক ফেইরি টেইল ভক্তরা আমাকে মনে মনে অভিশাপ দিচ্ছেন। আবার এই অ্যানিমের অনেক হেটারও আছেন, তারা আমাকে “বাহ বাহ” বলছেন। আমি অ্যানিমেটি নির্ভানার কাহিনী পর্যন্ত দেখে বাদ দিয়েছি এবং আমার মতামতের ওপর আমি এই লেখাগুলো লিখেছি। আমার মতামত শোনার পর অ্যানিমেটি আসলেই এতটা খারাপ কিনা, এটা পরীক্ষা করার জন্য যদি ফেইরি টেইল দেখতে চান, নিজ দায়িত্বে দেখতে পারেন।

35 Fairy Tail

রিভিউ কন্টেস্ট এন্ট্রি [২০১৫] #৩৪: Death Parade — Rafid Azad

ডেথ প্যারেড

এপিসোডঃ ১২
বেক্তিগত রেটিংঃ ৮/১০
জনরাঃ সুপার নেচরাল

মৃত্যু!! মানুষের জীবনের সবচেয়ে বড় ভই যে মৃত্যু সে ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই। অধিকাংশ ধর্ম মতেই মৃত্যুর পর মানুষের গন্তব্বস্থল হল স্বর্গ নাহলে নরক । কিন্তু কিছু ভিন্নতা দেখানোর জন্নই, ডেথ প্যারেড আ্যনিমেটিতে দেখানো হই যে স্বর্গ অথবা নরক বলে আসলে কিছু নেই,আছে কেবল পুনরজন্ম অথবা ধ্বংস । আর মানুষের উপর পরীক্ষা চালিয়ে তাদের পরিনতি সম্পর্কিত সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্নই সৃষ্টি করা হয়েছে ‘ডামির’ অথবা পুতুলের, যাদের আকৃতি মানুষের মতো হলেও তাদের মদ্ধে কোন মানুষিক অনুভূতি নেই । তারা তাদের পরীক্ষাটি নেই দুইজন মানুষকে একি সাথে কোনো একটি খেলা খেলিয়ে। এখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, মানুশগুলিকে তাদের মৃত্যু সম্পর্কিত সকল সৃতি ভুলিয়ে দেয়া হই ।আর বিশয়টির  ফাইদা নিয়েই তাদের উপর সত্তিকার পরীক্ষাটি নেয়া হই। তাদেরকে ইঙ্গিত দেয়া হই যে তারা যদি খেলাটিতে অপর মানুষটির সাথে হেরে যাই তাহলে তারা মারা যাবে। আর স্বাভাবিক ভাবেই কেও মারা যেতে চাই না। তাই তারা খেলাটি গুরুত্ত সহকারে খেলে। বিষয়টিকে আর জটিল বানার জন্য খেলার মাঝখানে হঠাৎ হঠাৎ করে তাদের জীবনের কিছু সৃতি তাদেরকে জোড় করে মনে করিয়ে দেয়া হই, যার ফলে তাদের ভেতরে যে অন্ধকারটি আছে তা বের হয়ে আসতে থাকে। আর মানুষের ভেতরে অবস্থিত এই অন্ধকার এর উপর ভিত্তি করেই আরবিটার (ডামি)রা তাদের সিদ্ধান্তটি নেই। কিন্তু আ্যনিমেটির মুল চরিত্র ডেকিম অন্যান্য আরবিটার দের চেয়ে কিছুটা আলাদা। তার মদ্ধে মানুষিক অনুভূতি আছে এবং সেজন্যই তার চিন্তা ভাবনাই এবং পরিক্ষার সিদ্ধান্তে অন্নান্য আরবিটারদের চেয়ে কিছু ভিন্নতা দেখা যাই। সবকিছু এই ধারা বাধা নিয়মেই চলছিল যতক্ষন না পর্যন্ত কিছু ত্রুটির জন্য এমন একজন মেয়ে(চিয়ুকি) ডেকিম এর কাছে আসে, যার তার যে মৃত্যু হয়েছে সে সম্পর্কে মনে আছে কিন্তু তার মুল জীবনের কোন তথ্য বা সৃতি মনে নেই । তাকে নিয়ে বড় সমস্যাই পরে যাই ডেকিম। কিছুদিন তার সাথে রাখার পরামর্শ দেয় আরবিটারদের দায়িত্তে থাকা ‘নোনা’(যে নিজেও একজন আরবিটার) । কিন্তু একজন মানুষের সাথে থাকতে থাকতে নতুন অনেক বিষয় উপল্বধি করতে পারে ডেকিম। মুলত এই প্লট নিয়েই গড়ে উঠে আ্যনিমেটির কাহিনী।

আ্যানিমেশনঃ ৯/১০ । কোন অভিযোগ নেই। স্টুডিও ম্যাডহাউস থেকে যেরকম প্রত্যাশা ছিল ঠিক সেরকমই চমৎকার আর্ট স্টাইল এবং দৃশে্যর এর দেখা মিলেছে ।

সাউন্ড ট্র্যাকঃ ৮/১০ । শুরুর গানটি ছাড়া উল্লেখ করার মতো আর বেশি কোন গান আ্যনিমেটিতে নেই। কিন্তু শুরুর গানটি যে একাই একশ। কখনও গানটিকে স্কিপ করে এগিয়ে যাওয়ার কথা মাথাই আসে না ।

কাহিনীঃ ৭/১০ । বলে রাখা ভালো, মুল কাহিনীর প্লট ভালো হলেও প্লট এর গতি আমার মতে একটু ধীর। আরেকটি বিষয়, প্রথম কিছু এপিসোডে অপ্রয়োজনীয় কিছু জিনিস দেখানো হই যা শেষে গিয়ে কোন অবদান রাখে না।

সমাপ্তিঃ একটি প্রবাদ আছে ‘শেষ ভালো যার সব ভালো তার’ । এই আনিমে এর খেতরেও এই কথাটি খাটে। আনিমেতির এন্ডিং এক কথাই চমৎকার ছিল।

ডেথ প্যারেড এই বছর এ বের হওয়া সেরা আ্যনিমেগুলির একটি। মাত্র ১২ এপসোড এর এই আ্যনিমেটির আমার সবচেয়ে ভালো লাগা বিষয়গুলি হল এর আর্ট স্টাইল এবং এনিমেশন এর কাজ। এই আ্যনিমেটি সম্পর্কে আমার একমাত্র অভিযোগ হল এটিকে একটি এপিসোডিক আ্যনিমে বানানর সিদ্ধান্ত । শুরু থেকেই প্লট বিষয়ক বিষয়বস্তু নিয়ে বেশি মনোযোগ দিলে আ্যনিমেটি আরও বেশি ভালো হতে পারত ।কিন্তু তারপরও আ্যনিমেটি দেখে যে সবার ভালো লাগবে এই বিষয়ে আমি আশাবাদী।

34 Death Parade

রিভিউ কন্টেস্ট এন্ট্রি [২০১৫] #৩৩: Berserk — Nafis-san

হবায় তো মাত্র কাহীনি শুরু

-হুদ্দাই লেখা একটা রিভ্যু

————————————————————————————————

এনিমের নামঃ বার্সাকসোনালী যুগের পর্ব

শুরু করার আগে ১টা সংবিধীবদ্ধ সতর্কীকরনঃ

আপনার বয়স ১৮ এর কম হইলে বার্সাক দেখার চিন্তা বাদ দেন ।

————————————————————————————————

কিল্লাইগ্গা বার্সাক? 

ঈদের বন্ধের মইধ্যে আবারও বার্সাকের সিনেমা গুলা দেখলামতো (এইবার ডাব ভারসন দেখছি) , তাই মাথায় খালি বার্সাকই ঘুরতাছে । যদিও কি-বোর্ড দিয়া লেখতে আমার একটুও ভালো লাগেনা তাও ভাবলাম লেইক্ষা ফালাই, যা আছে কপালে ।

নায়কের পরিচয় 

রাজা-বাদশাগো আমলের কথা । দুই দলের মইধ্যে যুদ্ধ চলতাছে, একটা দল নীল-ছাইয়া আর একটা দল লাল-ছাইয়া । নীল-ছাইয়া দলের এক ভোটকা পালোয়ান লাল-ছাইয়া দলের সৈন্যগোরে হেভভী ঘারাইতাছে কেউ পারতাছে না ব্যেডার লগে । তখন লাল-ছাইয়া দলের সেনাপতি চেইত্তা ফায়ার হইয়া এলান দিল “কেউ কি আছে ঐ গাধাডারে ঘারানের মত?” এমন সময় লাল-ছাইয়া সৈন্যগো ভিতরেরতে একটা পোলা বাইর হইল, হাতে একটা বিশাল তলোয়ার , শরীরে কালা বর্ম । ইনিই হইল গল্পের নায়ক “গাটস ভাই” । তো গাটস ভাই সেনাপতির দিকে চাইয়া কইল “১০ ট্যেকা লাগবো” সেনাপতি কইল “৭ ট্যেকা পাবি” , গাটস ভাই “শালা কিপ্টা” কইয়া পালোয়ানের দিগে আগায়া গেল । পালোয়ানরে ঘারাইয়া ট্যেকা লইয়া বাসার দিকে রওনা দিলো ।

গ্রীফিথ্ কেডা? 

এক কথায় রুপকথার রাজকুমার । মেঘের মত সাদা তার চুল , চোখ যেন তার নীল সাগর , হাজার মেয়ের ঘুম হারাম করে দেয়া তার চেহারা । শুধু চেহারা-সুরতেই নয়, যুদ্ধ বিদ্যাতেও সমান পারদর্শী সে । তার নিজস্ব একটা ভারাটে গুন্ডা বাহীনিও আছে,নাম “বাজপাখীর দল” । গাটস ভাইও এই দলের একজন সদস্য । গাটস ভাইয়ের চীরপ্রতিদন্ধী সে ।

নয়িকা কি নাই?

আছে, নাম “কাসকা” । গ্রীফিথের লগে কাইল্লা কইরা একটা মাইয়া ঘুরে, ওইডাই কাসকা । রুপ তার এত আহামরি কিছু না হইলেও তলোয়ারবাজী তে কারত্তে কম যায়না সে । গাটস ভাইরে তেমন একটা বেলও দেয়না সে ।

হবায় তো মাত্র কাহীনি শুরুমানে কি??

মানে সোজা কথায় “বার্সাক-সোনালী যুগ”এর ৩টা সিনেমা ছিল এই কাহীনির সূচনা পর্ব । এখানে দেখানো হয়েছে গ্রীফিথের উত্থান,পতন ও পূনরুত্থান । গাটস ভাইয়ের প্রেম ও তার পরীনতি এবং তার সুখের জীবনের পরিসমাপ্তী । তাই তো এই পর্বের নাম “সোনালী যুগ” ।

এনিমেশন আর সাউন্ড 

এনিমেশন যঠেষ্ট ভাল । চকচকে-যকযকে একটা ভাব আছে । গতানুগতিক জাপানীজ এনিমেশন থেকে বার্সাকের এনিমেশন বেশ আলাদা । ক্যেরেক্টার ডিজাইনে বেশ একটা থ্রীডি-থ্রীডি ভাব আনা হয়েছে ।

জায়গামত কিছু দুর্দান্ত সাউন্ড সিনেমাগুলোকে করে তুলেছে আরও প্রানবন্ত । ভয়েজ এক্টিং ইংরেজী ডাবের চেয়ে জাপানীজটাই বেশী জোশ্ লাগছে আমার কাছে ।

বিনোদনের মাত্রা 

বিনোদন প্রদানের ক্ষেত্রে বার্সাক নিঃসন্দেহে একটি প্রথম সারীর এনিমে । যুদ্ধ, প্রেম, বন্ধু্ত্ব, বিশ্বাসঘাতকতা, ক্রোধ, রক্ত বন্যা, জাদু  কি নেই এতে ? আর এসব কিছু মিলে বার্সাক হয়ে উঠেছে অদ্বীতিয় একটি এমিনে সিরিজ ।

তো, যাদের এখনো দেখার সৌভগ্য হয়নি, তারা আর দেরী না করে আজই দেখে ফেলুন অসাধারন এই সিনেমা সিরিজটি ।

33 Berserk

রিভিউ কন্টেস্ট এন্ট্রি [২০১৫] #৩২: Cross Game — Nehal Hasnaeen

“এনিমখোর রিভিউ কন্টেস্ট [২০১৫] – বিশেষ পুরস্কার অধিকারী এন্ট্রি”

————————————————————————————————————-

রিভিউ – ক্রস গেইম (আনিমে)

আনিমের ক্ষেত্রে যে কয়টা জনরার জনপ্রিয়তা সবচেয়ে বেশি তাদের মধ্যে স্কুল আর স্পোর্টস একদম প্রথম সারির দিকে থাকবে। সমস্ত স্পোর্টস আনিমের কাহিনী-ই কম বেশি গৎবাঁধা, স্কুলে নতুন এইসের আগমন, তার হাত ধরে ক্লাবের পুনর্জীবন, প্রথম টুনার্মেন্টে হেরে পরেরটায় বিক্রমের সাথে জয়লাভ – এসব প্রায় সব এনিমখোরেরই দেখা হয়ে গেছে। তারপরেও স্পোর্টস আনিমের উত্তেজনায় আমরা বুঁদ হয়ে থাকি, এর সাসপেন্স একেবারেই দুর্বল হৃদয়ের দর্শকদের জন্যে নয়। প্রতিটা পর্বের জন্য এক সপ্তাহ বসে থাকাটাও অনেক কষ্টের। কিন্তু আমার এই রিভিউ টা এমন একটা আনিমে নিয়ে, যেটা কিনা একই সাথে উত্তেজনাপূর্ণ এবং শান্ত। সাধারণ স্পোর্টস-স্কুল আনিমের আভাস থাকলেও এটা যেন তার চেয়েও বেশি কিছু। বলছিলাম “ক্রস গেইম” এর কথা।

৫০ পর্বের এই আনিমের প্রধান চরিত্র কোউ কিতামুরা, যার পরিবারের খেলাধুলার সামগ্রির ব্যাবসা আছে। একই এলাকায় সুকিশিমা পরিবারের বাস, যাদের একটা ব্যাটিং সেন্টার ও কফি শপ আছে। তাদের ব্যবসায়িক সম্পর্কের কারণে দুই পরিবারের মাঝে একটি গভীর বন্ধন সৃষ্টি হয়, দুই পরিবারের সন্তানরা আপনজনের মতই ছোটবেলা থেকে মেলামেশা করে। সুকিশিমা ওয়াকাবা আর কোউ সমবয়সী হওয়ায় তারা সবসময় একসাথে থাকত, যা সুকিশিমা আওবার একদম পছন্দ ছিলনা। সে তার বোনের সাথে সময় কাটাতে পারত না বলে কোউ কে হিংসা করত। আওবা মেয়ে হওয়া সত্ত্বেও ভাল পিচিং পারত, তার পিচিং ফর্মও ছোটবেলা থেকেই নিখুঁত ছিল। এদিকে কোউ ছিল সুকিশিমা ব্যাটিং সেন্টারের হোমরান রেকর্ডধারী। আওবার কাছে একবার হারার পর ওয়াকাবা কোউ কে আওবার চেয়ে ভালোভাবে পিচ করার জন্য উৎসাহ যোগায়, তাকে আওবার মতই নিয়মিত ট্রেনিং এর পরামর্শ দেয়। তারপর থেকে কোউ ৩ বছর ধরে প্রত্যেক দিন সেই একই ট্রেনিং করে। ক্রস গেইম তারই একজন বেসবল খেলোয়াড় হয়ে উঠার কাহিনী।

স্টোরি – ৯/১০

ক্রস গেইম তার জনরার অন্য আনিমে থেকে এইদিক থেকে আলাদা, যে এইখানে প্রধান চরিত্রকে কেবল একজন এইস খেলোয়াড় হিসেবে দেখানো হয়না, মাঠের বাইরের রক্ত মাংসের মানুষটাকেও তুলে ধরা হয়েছে। শুধু তাকেই না, অন্যান্য চরিত্রদেরও যথেষ্ঠ প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে এখানে। তারা কি করে, কি চায়, কেন, তাদের আত্মোপলব্ধি, সবকিছুই বিশ্বাসযোগ্যভাবে উঠে এসেছে। আনিমেটা বেসবল কেন্দ্রিক হলেও এতে স্লাইস অফ লাইফ-ট্র্যাজেডি ইত্যাদি উপাদানের ভাল সংমিশ্রন ঘটেছে। বলা যায়, কাহিনী কখনো সুথিং, আবার কখনো উত্তেজনাময়। মাঝে বেশ কিছু সময় খেলার উপর প্রাধান্য না দিয়ে চরিত্রদের প্রাত্যহিক জীবন তুলে ধরেছে আনিমেটি। মাঝের কিছু জায়গার ফ্ল্যাশব্যাকগুলো বারবার আমাদের মনে করিয়ে দেয়, সবাই কিসের জন্য এত হন্যে হয়ে সামনের দিকে ছুটছে, জীবনে সামনের দিকে তাকানোর রসদ তারা কিভাবে পায়। আনিমের কাহিনীর বিকাশে ট্র্যাজেডি গুরুত্বপুর্ণ ভূমিকা পালন করে, যেটা স্পোর্টস আনিমেতে তেমন একটা দেখা যায়না। এত কিছু আনিমেটি প্রকাশ করতে সক্ষম হয়েছে খুবই সহজ ও সাবলীলভাবে, কখনোই এতে জোর করে কোন কিছু চাপিয়ে দেওয়া হয় নাই, দর্শককে বিনোদন দিতে আনিমেটির কোন সময়ই অতিমাত্রায় চেষ্টা করতে হয়নি। বেসবল অংশগুলা ভাল হলেও তা ক্যারেকটারদের কছে প্রাধান্য কিছুটা হলেও হারায়, তবে যতটা দরকার ঠিক ততটুকুই আছে। কমেডিও নজরকাড়া, জোক্সগুলোর টাইমিং একদম ঠিকঠাক। কাহিনী কোন জায়গাতেই মুখ থুবড়ে পড়েনি, এর পেসিংও ৫০ পর্বের একটি আনিমের জন্য উপযুক্ত ছিল। এন্ডিং ও আমার মতে বেশ হয়েছে।

আর্ট – ৮/১০

আনিমেটি প্রোডিউস করেছে সিনার্জি এসপি, যারা আরেক বিখ্যাত বেসবল আনিমে মেজর সিরিজেরও প্রোডিউসার। ক্যারেকটার ডিজাইন কিছুটা ক্লাসিক ধাঁচের, আমার দেখে ‘৯০ দশকের আনিমেগুলার কথা মনে পড়েছে। বেশ সুথিং হলেও একটা সমস্যা, আওবা আর কোউ এর মাঝে পার্থক্য করতে প্রায়ই কষ্ট হয়েছে। ২০০৯ এর এই আনিমের এনিমেশানও যথেষ্ঠ ভাল, তবে তা গতানুগতিকের খুব একটা ব্যতিক্রম না। তবে তা তেমন কোন সমস্যা সৃষ্টি করেনা, বরং ক্যারেকটার ডিজাইন এর কাহিনী ও সেটাপের জন্য যথোপযুক্ত ও মানানসই।

চরিত্র –১০/১০

স্পোর্টস জনরার মধ্যে অন্যতম সেরা ক্যারেক্টার ডেভেলপমেন্ট দেখিয়েছে এটি। যেখানে একই ধরণের অন্যান্য আনিমেগুলা খেলার দিকে অনেক বেশি প্রাধান্য দেয়, খেলার টগবগে উত্তেজনাপূর্ণ সিনগুলোকে দেখাতে গিয়ে স্বয়ং খেলোয়াড়দের কথা বেমালুম ভুলে যায়। কিন্তু এই আনিমের শক্তি হল এর চরিত্রগুলো, টানটান উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচগুলো নয়। এখানে প্রত্যেক চরিত্রকে যথেষ্ঠ সময় দেওয়া হয়েছে, যাতে করে এরা প্রথাগত ক্লিশের বেড়াজালে আবদ্ধ না থেকে নিজের স্বকীয়তা প্রকাশ করতে পারে। সিরিয়াস ক্যাপ্টেন আকাইশি, গুরুগম্ভীর জিনিয়াস আজুমা ইয়ুহেই, বেস্ট ফ্রেন্ড নাকানিশি, চঞ্চল সেনডা, সুকিশিমা পরিবারের বড় মেয়ে ইচিয়ো, ছোট্ট মোমিজি, বেসবল প্রেমী কোচ মায়েনো, এরা সবাই যেনো নিজ নিজ চরিত্রের খোলস থেকে বেরিয়ে আরো ভালোভাবে নিজেদের বিকশিত করেছে। শুরুর প্রোলোগ এবং মাঝে বেশ কিছু ফ্ল্যাশব্যাক দর্শকদের চরিত্রগুলো সম্পর্কে আরো ভাল ধারণা দিতে সাহায্য করে। আরেকটা মজার বিষয় হল অন্যান্য আনিমের মত এখানে চরিত্রগুলো ম্যাচের সবচেয়ে উত্তেজনাপূর্ণ মুহুর্তগুলোয় কি ভাবছে, তা বলে দিতে হয়না, এত শক্তিশালী ক্যারেক্টার ডেভেলপমেন্টের পর দর্শকদের আসলে তা বলার কোন প্রয়োজনই হয়না! চরিত্রদের প্রতি অদ্ভুত এক ভাললাগায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে দর্শক।

সাউন্ড – ৯/১০

আনিমেটির ওপেনিং আর এন্ডিং থিমগুলো বেশ সুথিং, ঠিক যেন এর কাহিনীর মত। একমাত্র ওপেনিং “সামার রেইন” ৫০ পর্ব জুড়েই আনিমের মুড এবং সেটাপ অনুযায়ী যথেষ্ঠ উপযোগী ছিল। আমার সবচেয়ে প্রিয় প্রথম এন্ডিং কোই কাগারেতে মিতা ইয়ুমে। আর সাউন্ডট্র্যাকও বেশ শান্ত ছিল, আবার কমেডি সিন গুলোর জন্য একটু চঞ্চল, ম্যাচের সময় একটু ড্রামাটিক, অর্থাৎ সব পরিস্থিতির জন্য মানানসই। সেইয়ুদের কাজ বেশ ভাল ছিল, কেউ সেইভাবে নজর না কাড়লেও প্রধান দুই চরিত্রে থাকা ইরিনো মিয়ু(কোউ) এবং তোমাতসু হারুকার(আওবা) জুটি চমৎকার ছিল। ওএসটি এর সবটুকু ভালভাবে ব্যাবহার করা হয়নি কারণ বেশ কিছু চমৎকার ট্র্যাক শেষের দিকের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিনগুলোর জন্যই বরাদ্দ ছিল।

এঞ্জয়মেন্ট – ১০/১০

অতিরিক্ত ভাল ক্যরেকটার ডেভেলপমেণ্ট, উত্তেজনাপূর্ণ ও পরিপূর্ণ কাহিনী, সুথিং আর্ট ও সাউন্ডট্র্যাক – উপভোগের সব রসদই মজুদ আছে এই আনিমেটায়। আমার মতে এটা মাস্ট ওয়াচ।

সুতরাং আমার মোট রেটিং ৯.২/১০, এবং এটি অবশ্যই একটি দেখার মত আনিমে। এখানকার উপজীব্য কোন জাঁকজমকপুর্ণ, বাস্তবতা বিবর্জিত, টানটান উত্তেজনাপূর্ণ খেলার স্কিল নয়, এমনকি আজকালকার স্লাইস অফ লাইফ আনিমেগুলাতে যা অনেক বেশি চোখে পড়ে, সেইসব অকারণ হাস্যকর ভুল বুঝাবুঝি কিংবা কোন রোমান্টিক টেনসন ও নয়, বরং জীবনের সকল বাঁধা-বিপত্তি, হাসি-কান্নার মাঝে লক্ষ্য অটুট রেখে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়াটাই এর মূল আকর্ষণ। আসলে আনিমেটির স্বরূপ বোঝানোর জন্য এত কথা না বললেও চলে, কোচ মায়েনোর একটা উক্তিই যথেষ্ঠ – “সিম্পল ইজ বেস্ট।”

32 Cross Game

রিভিউ কন্টেস্ট এন্ট্রি [২০১৫] #৩১: Shigatsu wa Kimi no Uso — Fatiha Subah

“এনিমখোর রিভিউ কন্টেস্ট [২০১৫] – প্রথম স্থান অধিকারী এন্ট্রি”

————————————————————————————————————-

শিগাতসু ওয়া কিমি নো উসো

জানরাঃ মিউজিক, শোউনেন, স্লাইস অফ লাইফ, রোমান্স
ব্যক্তিগত রেটিংঃ ৯/১০       

“আই মেট দা গার্ল আন্ডার ফুল-ব্লুমড চেরি ব্লসমস অ্যান্ড মাই ফেট হ্যাস বিগান টু চেঞ্জ”-সিরিজটার নামের নিচের এই শিরোনামটি পড়লে মনে হয় এটি সেই চিরাচরিত “বয় মিটস গার্ল অ্যান্ড ফল ইন লাভ” ধরনের কাহিনী। কথাটা মানুষকে দেখার জন্যে আকর্ষণও করতে পারে আবার মুখ ফিরিয়ে নেওয়ার কারণও হতে পারে। একই সাথে ব্যাপক প্রশংসিত এবং ওভার রেটেড খেতাব পাওয়া আনিমেটা তাই বেশ বিভ্রান্তিকরই বটে। কিন্তু এত দ্বিমত কেন? চলুন জেনে আসি

গল্পঃ ১৪ বছর বয়সী মিডল স্কুল পড়ুয়া আরিমা কোউসেই এক অসাধারণ পিয়ানো বাদক। কিন্তু যার হাত ধরে পিয়ানোর হাতেখড়ি হয়, ২ বছর আগে সেই মায়ের মৃত্যুতে শোকে বিপর্যস্ত হয়ে সে পিয়ানো বাজানো ছেড়ে দেয়। আরিমার ভাষ্যমতে সে অন্যদের পিয়ানোর সুর শুনতে পেলেও নিজেরটা শুনতে অক্ষম। বাল্যকালের বন্ধু ওয়াতারি আর বান্ধবী সুবাকি’র সাথে কোনমতে দিন পার করে। মনমরা আর বিমর্ষ আরিমাকে দেখে বিরক্ত সুবাকি ওয়াতারির সাথে আরিমাকে জোর করে নিয়ে যায় এক মেয়ের সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে। কাওরি মিয়াজোনো, একজন ভায়োলিনিস্ট যে আরিমার জীবনে অনেকটা ঝড়ের মতই হাজির হয়ে সব ওলটপালট করে দেয়, যেই মেয়ে তার জীবনে বসন্ত আনে কিন্তু দুঃখজনকভাবে ওয়াতারিকে পছন্দ করে, তার হাত ধরে গল্পের শুরু।

আর্ট এবং অ্যানিমেশনঃ এই সিরিজটির সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক হল এর অসম্ভব সুন্দর অ্যানিমেশন। সব আনিমেই তো রঙিন হয়। কিন্তু এই শব্দটি যেন নতুন করে শিখবেন এখানে। বিশেষ করে শুরুর আর শেষের দিকের কিছু পর্বে এতই রঙের খেলা আছে যা বলাই বাহুল্য। এটা নাকি এপর্যন্ত সবচেয়ে বেশি বাজেটওয়ালা স্লাইস অফ লাইফ আনিমে। মজার বিষয় হল এখানে অন্য আনিমের মত চরিত্রগুলোর মুখ শুধু একটা দাগ দিয়ে দেখানো হয়নি বরং আসলেই ঠোঁট আছে! তবে ২ বছরের ব্যবধানে এত বেশি ছোট আর বড় দেখানো হয়েছে চরিত্রগুলোকে যেটা অসামাঞ্জস্য। আরিমার চশমার ডাটি সাইড থেকে দেখায় না। এ জিনিসগুলোর জন্যে মাঝে মাঝে বেশ আজগুবিও লাগে।

মিউজিক এবং সাউন্ডঃ ক্লাসিক্যাল মিউজিক নির্ভর আনিমে তাই মিউজিক নিয়ে বিশেষ কিছু বলার নেই। বেয়টোভেন, শোপান প্রমুখ মিউজিসিয়ানদের মিউজিক পিসের উপস্থিতি আছে ভালভাবেই। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক, ওপেনিং-এন্ডিং সবই শ্রুতিমধুর।

চরিত্রঃ আমার মতে মানুষ যদি ইয়ুনোর জন্যে মিরাই নিক্কি দেখতে পারে তাহলে শুধু কাওরির জন্যে হলেও শিগাতসু দেখা উচিৎ। আমরা যেটাকে শেষ বলে মনে করি সেটাই কি শেষ? নাকি সেটা নতুন কিছুর শুরু? জীবনের ঠিক কোনখানে গিয়ে হাল ছাড়ার অধিকার আছে? নাকি সেই মুহূর্তে গিয়ে আবার পূর্ণউদ্দ্যমে লেগে পরা উচিৎ? মিথ্যা বলা কি আসলেই খারাপ? ভালোবাসার মানে কি কাউকে নিজের কাছে চাওয়া নাকি তাকে সুখী জীবনে ছেড়ে দেওয়া? কাওরির কাছে জীবনকে নিয়ে শেখার অনেক কিছুই আছে। আপনি যদি হতাশায় ডুবে থাকেন তাহলে কাওরি হতে পারে আপনার বড় অনুপ্রেরণা। এছাড়া ওয়াতারি বাদে বাকি প্রায় ছোট-বড় সব চরিত্রের বেশ ভালো ক্যারেক্টার ডেভেলপমেন্ট হয়েছে।

খারাপ দিকগুলোর মাঝে রয়েছে সবসময় দুঃখ-দুঃখ ভাব থাকা সত্ত্বেও অসময়ে কমেডি আনার ব্যর্থ প্রচেষ্টা। শুরুতে আর শেষে বেশ দ্রুত আগালেও মাঝে কাহিনী স্থবির হয়ে যায়। শুনতে খুব রূঢ় শোনালেও সত্যি বলতে একে ওভার রেটেড বলার কারন এখানে একটা সিরিজকে জনপ্রিয় বানানোর সবচেয়ে সহজ পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়েছে। গল্পটা অনেকটা তেমনই। তবু সেই গল্পটা শেষ পর্যন্ত উপস্থাপন করা হয়েছে খুব সুন্দরভাবে। নইলে কেন শেষ পর্ব দিয়ে ম্যাল রাঙ্কিংয়ের টপ ৫০ থেকে ১৩ নাম্বারে আসবে!

যাদের ভালোবাসার অনুভুতি আছে এমন কাহিনীযুক্ত বাস্তবতা নির্ভর মিউজিক্যাল আনিমে পছন্দ তাদের জন্যে এটা আদর্শ আনিমে।

31 Shigatsu