Laputa: Castle in the sky – মুভি রিভিউ – আসিফুল হক

কি দেখলাম – Laputa: Castle in the sky
প্রোডাকশন হাউসঃ জিবলী
ডিরেক্টরঃ হায়ায়ো মিয়াজাকি

একটা দৃশ্যর কথা চিন্তা করুন। সন্ধ্যা গড়িয়ে রাতের হাতছানি শুরু হল মাত্র। হাতের কাজ শেষ করে সব কিছু গুছিয়ে নিচ্ছেন, বাড়ি ফিরবেন বলে। হটাত করেই ঈশান কোণে অদ্ভুত এক আলো দেখতে পেলেন। খানিকটা কৌতুহল নিয়েই আলোর উৎসের কাছাকাছি হতেই দেখতে পেলেন আকাশ থেকে নেমে আসছে ছোট একটা মেয়ে। তার গলায় জ্বলজ্বল করছে উজ্জ্বল এক মণীহার, যেটা মেয়েটাকে ধীরে ধীরে ভাসিয়ে নামাচ্ছে। দস্যুদল আর সেনাবাহিনী – সবাইই তাড়া করে ফিরছে মেয়েটিকে। কারণ মেয়েটির কাছে আছে আকাশে ভেসে বেড়ানো স্বপ্নের এক জগতের চাবিকাঠি; যে জগত অসীম ধনসম্পদের হাতছানি দেয় নিরন্তর।

ঠিক এমনই এক দৃশ্যপটকে ঘিরে শুরু হয় “Laputa: Castle in the sky” এর কাহিনী। ছোট্ট মেয়েটি শীলা, এবং তাকে উদ্ধার করা ছেলেটি পাযু। সেনাবাহিনী এবং জলদস্যু – দু’দলের ধাওয়া পালটা ধাওয়া, লাপুতার খোঁজ এবং শীলা পাযুর অভিযানের গল্প মিয়াজাকির এ মুভিটি।

লাপুতার জগত স্পর্শ করেছে অনেক কিছুই – যাদু থেকে উন্নত বিজ্ঞান; খুন কিংবা দস্যুতা; ছিল জোনাথন সুইফট থেকে লুইস স্টিভেনসন কিংবা হিন্দু পুরান থেকে শুরু করে বাইবেলের শ্রুতির রেফারেন্সও। রামায়ণের ইন্দ্রর তীর কিংবা ব্রিটিশ মাইনিং এর শহর; অথবা ইউরোপীয় ঘরানার দুর্গের ডিজাইন – মিয়াজাকি মুভিতে একগাদা রেফারেন্স ব্যাবহার করেছেন নিপুণ দক্ষতায়।

ম্যাজিক মুভির একটা বিরাট ফ্যাক্টর হলেও শুরুর অর্ধেক অংশ তা থেকে কম বেশি মুক্ত ছিল। এবং এ অংশে মুভিটা বেশি আকর্ষণীয়ও ছিল; অসাধারণ কিছুর জন্য না; বরং ছিমছাম সাধারণত্বে; স্বভাবী কিছু চরিত্রের গুণে। ছোটবেলায় বাবা মা হারানো খনিতে কাজ করা পাযু এমন এক এলাকায় থাকে যেখানকার লোকজন নিজেদের স্বার্থেই কম্যুনিটিকে সবার আগে জায়গা দেয়; বিরাট কষ্ট আর পরিশ্রমের মাঝেও তারা সুখী। ঘটনাক্রমে পাযু জড়িয়ে পরে এমন এক ঘটনায়; যা তার বহুদিনের দেখা স্বপ্নের রাস্তাতেই তাকে দাঁড় করিয়ে দেয়।

বৃহত্তর গন্ডীতে লাপুতা আমাদের জীবনেরই গল্প; শীতা এবং পাযুকে আমরা পাই শত লোভ, স্বার্থপরতা আর ক্ষমতার দড়ি টানাটানির মাঝেও নিজেদের নিষ্পাপ সত্তা ধরে রাখতে; অন্যদিকে মুস্কা এবং সেনাবাহিনী যেন মনের অন্ধকার জগতের প্রতিচ্ছবি। এর মাঝে সবচেয়ে বাস্তব চরিত্র বোধহয় দস্যুদল; বিশেষ করে তাদের লিডার ডোরা। এরা সম্পদ লুটে নেবার জন্য ঘুরে বেড়ায় এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায়; কিন্তু আবার দুটো বাচ্চাকে দলে আশ্রয় দেয় পরম মমতায়।

পুরো মুভিতে গল্প যথেষ্ট সরল; এবং টার্গেট অডিয়েন্সের কথা মাথায় রাখলে খুব চমৎকারভাবেই সেই মুভির চিত্রায়ন হয়েছে। জিবলীর নিজস্ব আর্টস্টাইল এবং অন্যান্য বৈশিষ্ট্য এই মুভিতেও ছিল বরাবরের মতনই। সাদামাটা মাইনিং শহর থেকে সবুজে পূর্ণ স্বপ্নের নগরে স্থানান্তর মুভিটি সামলেছে দক্ষতার সাথেই। মুভিটা শেষ করে ম্যালে গিয়ে আমি রীতিমত চমকে উঠেছিলাম সালের ঘরে ১৯৮৬ লেখা দেখে। আমাকে বেশ কয়েকবার ঠিকভাবে দেখে নিশ্চিত করতে হয়েছে যে আমি ভুল দেখছি না; এতটাই চমৎকার ছিল এনিমেশন। মিউজিকও যথেষ্ট ভাল ছিল; ইমোশনাল জায়গাগুলোতে ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকগুলো যথার্থই ছিল। এছাড়া শেষ গানটা তো খুবই প্রিয় হয়ে গেছে এর মধ্যেই !

তবে দু’ঘন্টার এ মুভিটা যে গল্প বলা শুরু করেছিল; সেটাতেই সত্য থাকার চেষ্টা করেছে; যে কারণে অনেক বড় প্রশ্নেরই আসলে উত্তর মেলে নি মুভিটায়। লাপুতা কেন জনমানবশুন্য ছিল কিংবা শীলার অতীতে কি ঘটেছিল এবং মুস্কাই বা কি করে পৃথিবীতে ছিল, কতদিন ধরে ছিল; সে লাপুতা সমন্ধে এতো কিছু জানলো কি করে – এসবের কিছুই জানা যায় নি মুভিটায়। এছাড়া শীলা একগাদা স্পেল জানলেও সেগুলোর কোনটাই ব্যাবহারের চেষ্টা করে নি পুরো মুভি জুড়েই। লাপুতা কি করে পৃথিবী নিয়ন্ত্রণ করবে কিংবা অতীতেই বা কি করে করেছিল – এ ধরণের কোন সুত্রও মুভিটা আমাদের দেয় না।

শেষ কথা; হাতে ঘন্টা দুয়েক সময় আর সুন্দর ছিমছাম গল্প, মনোমুগ্ধকর আর্ট আর চমৎকার পেসিং এর একটা মুভি দেখার ইচ্ছে থাকলে জিবলীর যে কোন মুভিই সবসময়েই ভাল একটা চয়েস। লাপুতাও তার ব্যাতিক্রম কিছু না।

Movie Time With Yami – 59

Mononoke.Hime.full.1474844

Name: Princess Mononoke / Mononoke Hime
Duration: 2 hr. 10 min.
MAL Score: 8.81
Ranked: 24
Genres: Action, Adventure, Fantasy

বিখ্যাত ডিরেক্টর হায়াও মিয়াজাকি সম্পর্কে একটা কথা প্রচলিত আছে, তিনি সভ্যতা পছন্দ করেন না। ইট, কাঠ, পাথরের অট্টালিকা এবং যান্ত্রিক পৃথিবীর বদলে তিনি সবুজ বনাঞ্চল এবং গ্রামীণ স্নিগ্ধ পরিবেশ বেশি পছন্দ করেন। আর তার এ পছন্দের ছাপ পাওয়া যায় তার পরিচালিত অনেক মুভিতেই। প্রকৃতি ও পশুপাখির কষ্ট, তাদের বেঁচে থাকার সংগ্রাম নিয়ে অত্যন্ত শৈল্পিক উপায়ে কাহিনী বর্ণনা করেছেন তিনি মুভিগুলোতে। দর্শককে বাধ্য করেছেন সভ্যতার দিকে নতুন দৃষ্টিতে তাকাতে। তেমনই এক গল্প রাজকুমারী মোনোনোকের, হায়াও মিয়াজাকি পরিচালিত স্টুডিও জিবলীর বিখ্যাত মুভিগুলোর একটি।

গহীন বনের ভেতরে বাস করে এক আদিবাসী গোষ্ঠী। এই গোষ্ঠীর ওপর একদিন অতর্কিতে হামলা চালায় এক রোগাক্রান্ত বন্য শূকর। গোত্রের রাজকুমার আশিতাকা মুখোমুখি হয় সেটির, শূকরটিকে হত্যা করে নিজের গোষ্ঠীকে বিপদ থেকে রক্ষা করে সে। কিন্তু দূর্ভাগ্যজনকভাবে আশিতাকার হাতে কামড় দিয়ে এক অভিশপ্ত ক্ষত সৃষ্টি করে দেয় শূকরটি মরার আগে।

গোত্রের নিয়ম অনুযায়ী আশিতাকাকে নির্বাসনে যেতে হয় নিজের শরীরে প্রবেশ করা অভিশাপের প্রতিকার খুঁজতে। নিজের এলাকা থেকে অনেক দূরের পাহাড়ে জঙ্গলে ঘুরতে থাকে সে, আর দেখতে থাকে বিভিন্ন এলাকার পশুপাখিদের দুরবস্থা। একসময় সে এসে হাজির হয় একটি শহরে, যেখানে গোলাবারূদ ও আগ্নেয়াস্ত্র তৈরি করা হয় আশেপাশের বনাঞ্চলের ক্ষতি করে। আশিতাকা কি পারবে এই শহর ও বনাঞ্চলের মাঝে সাম্য প্রতিষ্ঠা করতে? তার নিজের সময়ও যে খুব জলদি শেষ হয়ে আসছে!

মুভিটির আর্টওয়ার্ক স্টুডিও জিবলীর অন্যান্য মুভিগুলোর মতই ছিমছাম, পরিপাটি, বনাঞ্চলের দৃশ্যগুলো খুব চমৎকারভাবে দেখানো হয়েছে। আমার ভাবতেও অবাক লাগে, ১৯৯৭ সালের একটি মুভির আর্টওয়ার্ক কিভাবে এত সুন্দর হয়। সাউন্ডট্র্যাক মানানসই, সেইসাথে চরিত্রগুলো খুব সহজেই আপন করে নেয়ার মত।

মুভিটি জিবলী ফ্যানদের কাছে পুরো পৃথিবী জুড়ে অত্যন্ত সমাদৃত, এর রেটিংও তাই বলে, তবে শেষের দিকে আমার কাছে কাহিনীটা কিছুটা খাপছাড়া লেগেছে। সেটুকু বাদ দিলে বেশ ইন্টারেস্টিং একটি মুভি, হাতে সময় থাকলে দেখে ফেলতে পারেন, সময়টা ভালই কাটবে আশা করি।

Movie Download Link-
http://kissanime.com/Anime/Mononoke-Hime

Movie time with Yami প্রচারিত হচ্ছে প্রতি বৃহস্পতিবার। সেগমেন্ট সম্পর্কে আপনার যেকোন মতামত কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না। আশা করি মুভির সাথে আপনার উইকএন্ড ভালো কাটবে !!

The Wind Rises: মুভি রিভিউ – মোঃ আসিফুল হক

কি দেখলামঃ The Wind Rises
প্রোডাকশন হাউসঃ জিবলী।
ডিরেক্টরঃ হায়াতো মিয়াজাকি।

ইতালীয় বৈমানিক নকশাকার কাপ্রনি দ্বারা অনুপ্রাণিত জিরোর ছোটবেলার স্বপ্ন পাইলট হবার পথে বাদ সাধে তার চোখের সমস্যা। এতে দমে না গিয়ে জিরো বরং এয়ারপ্লেন ডিজাইনকে তার জীবনের লক্ষ্য হিসেবে ঠিক করে নেন। ১৯২৭ সালে তিনি যোগ দেন জাপানিজ এক ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানির এয়ারক্রাফট ডিভিশনে। এবং খুব দ্রুতই তার প্রতিভার সাক্ষর রেখে এই ধারার একজন পুরোধা ব্যাক্তি হয়ে উঠেন।

জিরোর জীবনের ঘটনাপ্রবাহের সাথে সাথে এই মুভি বেশ কিছু ঐতিহাসিক ঘটনা সমান্তরালে বর্ননা করে; যেমন – ১৯২৩ এর কান্তো ভুমিকম্প, যক্ষ্মার মহামারী, এবং জাপানের যুদ্ধে জড়িয়ে পরার গল্প। এর পাশাপাশি আমরা দেখতে পাই নাওকোকে; জিরো যার প্রেমে মুগ্ধ হন এবং পরবর্তীতে বিয়ে করেন। এছাড়া জিরোর বন্ধু এবং সহকর্মী হোঞ্জোর সাথে তার চমৎকার সম্পর্ক এবং তৎকালীন জাপানের অনেক চিত্রই উঠে এসেছে এই মুভিতে।

wind rises 1

ব্যাক্তিগতভাবে আমি জিবলীর মুভির খুব বড় ভক্ত না। কারণ দর্শক হিসেবে আমার সাধাসিধে ছিমছাম গল্পই পছন্দ। খুব বেশি ভাবতে হয় এমন মুভির বদলে সকালে ঘুম থেকে উঠে বৃষ্টির সাথে এক মগ কফি খেতে খেতে একটা স্নিগ্ধ ভালবাসার গল্প দেখে ফেলায় আমি বরং বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি। জিবলীর মুভিগুলো আমার কাছে বড্ড “কঠিন” মনে হয়। সে কারণে আসলে দেখা হয়েছে খুব কমই। Wind rises ও তার ব্যাতিক্রম না। এখানে জিরোর জীবনের সাথে উঠে এসেছে একগাদা ঘটনা, ইতিহাস এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে জীবন দর্শন আর ভালবাসা। জিবলীর মুভি তাই দেখতে হয় সন্তর্পণে; মুভির সাথে একাত্মা হয়ে। সেভাবেই দেখার চেষ্টা করলাম; এবং মুগ্ধ হলাম; আবারও।

যে কোন জিবলীর মুভির মতন এই মুভির আর্টস্টাইলও দুর্দান্ত; জলরঙ্গা ব্যাকগ্রাউন্ড এতো যত্নের সাথে আকা হয়েছে যে শুধু এনিমেশন দিয়েই এই মুভি যে কোন সমালোচনা উৎরে যাবে।

চরিত্র রুপায়নে এই মুভি সম্পূর্ণ মুন্সিয়ানাই দেখিয়েছে। প্রত্যেকটা সম্পর্কই স্বাভাবিক, সাধারণ, দৈনন্দিন জীবনের সাথে সামঞ্জস্যপুর্ন। সবগুলো চরিত্রই বেড়ে ওঠার সুযোগ পেয়েছে সুন্দরভাবেই।

wind rises 2wind rises 3

মুভিটির সবচেয়ে বড় সমালোচনার দিক্টা বোধহয় আসবে ঐতিহাসিক দৃষ্টিকোণ থেকেই। পুরো মুভি জুড়েই জাপানীদেরকে যুদ্ধের ভিক্টিম হিসেবেই দেখানোর একটা সূক্ষ্ম চেষ্টা ছিল যেখানে জাপানিজ মিলিটারির সে সময়কারই যুদ্ধাপরাধের প্রচুর ইতিহাস একটু ঘাঁটলেই খুজে পাওয়া যায়। পুরো মুভি জুড়ে যুদ্ধবিমান বানানোর জন্য নানান রকম চেষ্টার বর্ণনা চলে এসেছে; কিন্তু সেই বিমানগুলোর ব্যাবহার মুভিতে খুব সুন্দরভাবে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। জিরোকে আমরা দেখতে পাই তার চশমা এবং পরিপাটি কাপড়ে; খুব নম্র বিনয়ী তরুণ এক ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে; যুদ্ধবিমান তৈরির আফটারম্যাথ যাকে মোটেও বিচলিত করে না; বরং মুভির মাঝখানে পিরামিডের সাথে তুলনা দিয়ে পুরো ব্যাপারটাকেই গ্লোরিফাই করার নিদারুণ একটা চেষ্টা ছিল। যেটা অনেকটাই আয়রনিক; কেননা জিরোর প্রথম যুদ্ধবিমান “জিরো” তৈরিতে মিতসুবিসি ব্যাবহার করেছিল কোরিয়ান এবং চীনা দাসদের। এছাড়া পুরো মুভি জুড়ে জার্মান এবং অন্যদের জাপানে বোম্বিং করা দেখানোর মাধ্যমে জাপানীজদের মধ্যে তারা “যুদ্ধের মদদদাতা নয়, বরং শিকার ছিল” ধাঁচের যে মেন্টালিটি বিদ্যমান (জাপান জার্মান এলায়েন্স বা “এক্সিস” যুদ্ধের একটা বড় ফ্যাক্টর ছিল); সেটাকেই শৈল্পিক রুপ দেয় মাত্র।

পুরো মুভিতে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত খুব বেশি সাসপেন্স, খুব বেশি টেনশন ছিল না। এমনকি জিরোর ব্যাক্তিগত অন্তর্দন্দ নিয়েও আমরা খুব একটা ইঙ্গিত পাই না। আর শেষে গল্পটা যেন একেবারে হটাত করেই থেমে যায়। কোন মেসেজ না; কোন বড় সমস্যার সমাধান না; কোন ক্লাইম্যাক্স এন্টি-ক্লাইম্যাক্স কিচ্ছু না; একেবারেই যেন হটাত করেই “আচ্ছা তবে বিদায়” বলে মুভি শেষ করে দেওয়া।

ওভারঅল; সাউন্ডট্র্যাক এবং এনিমেশন বিচারে দুর্দান্ত একটা মুভি; যার ক্যারেক্টার ডেভেলপমেন্টও যথেষ্ট সন্তোষজনক; এবং দুই ঘন্টার একটা হ্যাপি জার্নি শেষে বেশ খানিকটা এব্রাপ্ট এন্ডিং এর অভিজ্ঞতা দিয়েছে এই মুভিটা।

রবার্ট ওপেনহাইমার তার ডিজাইন করা বোমার ডেমনস্ট্রেশন দেখে গভীর দুঃখ ভরে বলেছিলেন “Now I am become Death, destroyer of worlds.” একগাদা কিলিং মেশিনে ভরা আকাশের নিচে খোলা মাঠে হেটে যাওয়া জিরোর মানবহত্যার জন্য এক ফোঁটা দুঃখও জন্মায় নি; তার শেষতক দুঃখ ছিল তার কোন যুদ্ধবিমান অক্ষত ফেরত আসে নি; এই নিয়ে।
I can’t care for someone like that.

Movie Time With Yami – 56

maxresdefault (2)

 

Name: When Marnie Was There / Omoide no Marnie
Duration: 1 hr. 43 min.
MAL Score: 8.43
Ranked: 138
Genres: Mystery, Psychological

জাপানের কোন এক প্রান্তে একটি শহর স্যাপ্পোরো। এই শহরে বাস করে আন্না নামের একটি মেয়ে। কিছুটা চুপচাপ, অমিশুক স্বভাবের এই মেয়েটির কোন কাছের বন্ধু নেই; ছবি আঁকার খাতা-কলমই তার একমাত্র সঙ্গী। আন্নার জন্য তার মায়ের দুশ্চিন্তার অন্ত নেই; তার শ্বাসকষ্টের সমস্যা দূর করার জন্য ডাক্তারের পরামর্শে অনিচ্ছাস্বত্ত্বেও তাকে গ্রামে আত্মীয়দের বাড়িতে কিছুদিনের জন্যে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন আন্নার মা, কিন্তু আন্না বরাবরের মতই তাকে ভুল বোঝে এবং কিছুটা রাগ করেই ট্রেনে চড়ে বসে গ্রামে যাওয়ার জন্য।

গ্রামের নিশ্চুপ ছিমছাম পরিবেশ, আত্মীয়দের হাসিখুশি আপন আপন ব্যবহার, সবই আন্নার পছন্দ হয়, কিন্তু একটা ব্যাপারে রয়ে যায় সেই আগের মতই, অচেনা মানুষদের সাথে কখনই সহজ হতে পারেনা সে। আন্নার দিন তাই কাটে আশেপাশের জঙ্গল এবং পুরনো বাড়িঘর দেখে আর সাগরপাড়ে বসে ছবি এঁকে।

এভাবেই সে একদিন আবিষ্কার করে একটি রহস্যময় বাগানবাড়ি। বাড়িটির প্রতি সে কেমন যেন একটা টান অনুভব করে। তাই সাগরের মাঝে একটি দ্বীপের মত জেগে থাকা বাড়িটির কাছে সে ছুটে যায় বারবার। এভাবেই সে আবিষ্কার করে এক গভীর রহস্য, যা আন্নার পুরো জীবনটাকেই বদলে দেয়।

মুভিটি স্টুডিও জীবলীর শেষ মুভি (তাদের ভাষ্যমতে), আর এই শেষ মুভিটিই তাদের এত বেশি সুন্দর হয়েছে, যে মুভিটি দেখার পর থেকেই আমার খুব আফসোস হচ্ছে যে এত সুন্দর একটা জার্নি কেন হঠাৎ করে এভাবে থেমে যাবে! মুভির কাহিনী খুব বেশি চমৎকার, জিবলী স্টুডিওর করা সেরা কাহিনীর মুভি এটি। খুব সাধারণ একটা শুরুর পরে আস্তে আস্তে অসাধারণ একটা সাইকোলজিক্যাল মুভিতে টার্ন নেয় এটি; আর সবচেয়ে স্পেশাল ব্যাপারটা হল, পুরোটা সময় দর্শককে একইভাবে মন্ত্রলুগ্ধ করে রাখার ক্ষমতা আছে মুভিটির। কাহিনীর পেসিং খুব বেশি চমৎকার, অল্প সময়ের মাঝেই ভেতরে টেনে নেয় দর্শককে। এটির আর্টওয়ার্ক জিবলীর সেরা আর্টওয়ার্কগুলোর একটি; কাহিনীর রহস্যময়তার সাথে সামঞ্জস্য রেখে পুরো মুভিতে যে আবহ ফুটিয়ে তোলা হয়েছে- এককথায় অসাধারণ! সেইসাথে কৃতিত্ব দিতে হবে এর সাউন্ডট্র্যাককেও, কাহিনীর গতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং মনকাড়া ওএসটি নিমেষেই যে কারও মন ভাল করে দেবে!

তাই, সময় পেলে দেখে ফেলুন আমার খুব পছন্দের এই সুন্দর মুভিটি।

Movie Download Link-
http://kissanime.com/Anime/When-Marnie-Was-There

Movie time with Yami প্রচারিত হচ্ছে প্রতি বৃহস্পতিবার। সেগমেন্ট সম্পর্কে আপনার যেকোন মতামত কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না। আশা করি মুভির সাথে আপনার উইকএন্ড ভালো কাটবে !!

Spritied Away রিভিউ — Tufika Anwar

আচ্ছা আপনার ছেলেবেলায় কি কখনো এমন হয়েছে, আপনি বাবা মার হাত ধরে মাথা নাড়তে নাড়তে বাজারে গেছেন। রং বেরঙের দোকান, হরেক রকম মানুষ, আর নানা ধরনের জিনিসপত্র দেখতে গিয়ে কখন যে মায়ের হাতটা ছেড়ে দিয়েছেন তা আর মনে নেই। আর মনে পড়তেই মা বাবার ছায়াটিরও আর খোঁজ পাচ্ছেন না। অনেক খোঁজার পরে সেই ছোট্ট আপনার একটু আগের ভীষণ রঙিন পৃথিবীটা মুহূর্তে যেন সাদাকালো হয়ে গেল।
ছোট্ট চিহিরুর সাথেও প্রায় এ রকমই ঘটে জিবলী স্টুডিও এর অ্যানিমেটেড মুভি Spirited Away তে। বাবা মার সাথে পুরনো বাড়ি ছেড়ে ভীষণ মন খারাপ করে নূতন জায়গায় নূতন বাড়ির উদ্দেশে আসছিল চিহিরু। কিন্তু পথিমধ্যে তারা এক আশ্চর্য রহস্যজনক স্থানে এসে পৌঁছে, সেখানকার সুন্দর সাজানো দোকান, মজাদার খাবার, আর জাদুকরী এক আকর্ষণে চিহিরু আর তার বাবা এতটাই মুগ্ধ হয়ে যায় যে তারা বুজতেই পারে না যে এটা একটা মায়াজাল। কিন্তু গল্পের নায়ক হাকুর সহায়তায় চিহিরুর সম্ভিত ফিরলেও এই প্রবল মায়াজালে আটকা পরে তার বাবা মা।
এখন চিহিরুর অবস্থা দাড়ায় সেই বিশাল বাজারে হারিয়ে যাওয়া বাচ্চাটির মত। পার্থক্য শুধু একটাই যে চিহিরু হারিয়ে যায় মায়াজালে আচ্ছন্ন ভুত আর অদ্ভুত সব প্রাণীতে ঘেরা ভিন্ন এক জায়গায় কাজ নেয় একটা বাথ হউসে।
তারপর গল্পে আসে আরও সব মজাদার ব্যাপার- এই মায়াচ্ছন্ন জায়গায় চিহিরু পরিচিতি পায় সিন নামে, এই ছোট্ট সিন বিভিন্ন ঘটনার মধ্যে দিয়ে বড় সব পরিবর্তন আনে এই মায়াপুরিতে। হাকুর সাথে মিলে সিন আবার তার আসল পরিচয় আর বাবা মা কে ফিরে পায়। এমনিই একটা মজাদার গল্প নিয়ে এই মুভি।
এই ছোট্ট মুভিতে হায়াতো মিয়াজাকি এত চমৎকার কিছু অ্যানিম্যাটেড ক্যারেক্টার সৃষ্টি করেছে যা মুভিকে করেছে আরও বেশি আকর্ষণীয়। রূপকথার পঙ্খীরাজ ঘোড়ায় চড়া রাজকুমারতো সবার পরিচিত কিন্তু এখানে আচ্ছে আকাশে উড়ে বেড়ানো সুদর্শন ড্রাগন রাজকুমার হাকু। আর অসাধারণ গুনে গুণান্বিত অনেক সাধারণ চিহিরু।
জানি অনেকেরই দেখা আছে এই অসাধারণ মুভিটি কিন্তু যাদের এখনও দেখা হয়নি তারা আর দেরি না করে দেখতে পারেন সম্পূর্ণ ভিন্নধর্মী কাহিনীর মুভি Spirited Away.

Spirited Away

Gedo Senki (Tales from Earthsea) রিভিউ – মোঃ আসিফুল হক

 

Gedo 1

কি দেখলাম – Gedo Senki (Tales from Earthsea)

স্টুডিও – জিবলী।
সময় – ১ ঘন্টা ৫৫ মিনিট।

হায়াতো মিয়াজাকির ছেলে গোরো মিয়াজাকির ডেব্যু মুভি। Ursula K. Le Guin এর তিনটে বই এর মুভি এডাপশন; যার কাহিনী আবর্তিত হয় এমন এক পৃথিবীতে; যেখানে খুব অদ্ভুত কিছু ঘটনা ঘটা শুরু হয়। দুর্ভিক্ষ, জনগনের অদ্ভুত আচরন – এসব কিছুর সাথে যুক্ত হয় ড্রাগনের আবির্ভাব; যারা কিনা কখনই মানুষের সীমানায় প্রবেশ করে না। এরই মাঝে যাদুকর Sparrowhawk এর দেখা হয় ১৭ বছরের এক ছেলের সাথে; যার নিষ্পাপ চেহারার পিছনে লুকিয়ে আছে এক অন্ধকারাচ্ছন্ন অতীত।

জিবলীর মুভিগুলোর মধ্যে গেডো সেনকি খুব উপরের দিকে থাকবে না সম্ভবত। তার পিছনের কারণগুলোও যথেষ্ট যুক্তিযুক্ত। গেডোকে Ursula বলেছিলেন – ‘It is not my book. It is your movie. It is a good movie’; কিন্তু শেষমেশ তিনি তার অসন্তুষ্টিই প্রকাশ করেছিলেন মুভি নিয়ে। তিনটে বই এর এডাপশন হলেও শেষ বইটাই বেশি গুরুত্ব পেয়েছে; আগের বইগুলো থেকে আসা এলিমেন্টগুলো বেশিরভাগই ব্যাখ্যা করা হয়নি যথাযথভাবে।

মুভিটা রীতিমত একগাদা প্রশ্নের উত্তর অসম্পূর্ণ রেখে দিয়েছে। খুনের রহস্য কি, শহরে দাস কেন, কে দাস হতে পারবে আর কে পারবে না; Sparrowhawk এর সাথে টেনারের সম্পর্ক কি এবং তার ভিত্তি আসলে কি (আমাকে রক্ষা করেছে – আসলে খুব সন্তোষজনক ব্যাখ্যা না); থেরুর অতীত কি জন্য এতো অন্ধকারাচ্ছন্ন ছিল; যাদুকর কারা হতে পারে; তাদের সংখ্যা কত আর এই ক্ষমতার উৎসই বা কি – এরকম অনেক প্রশ্ন এবং অনেক এঙ্গেলই মুভিটা গুরুত্ব দেবার প্রয়োজন বোধ করেনি।

Gedo 2

তাছাড়া চরিত্রগুলো এবং ব্যাকগ্রাউন্ড স্টোরি খুবই অসম্পূর্ণ। Sparrowhawk প্রধান যাদুকর এটুকুই শুধু জানা যায়; তার পিছনের আর কোন কাহিনীই আমাদের জানা নাই; অথচ তার চেহারার দাগ ইঙ্গিত দেয় যে এখানে অনেক কিছুই ব্যাখ্যা করার অবকাশ ছিল। তাছাড়া মুভির মেইন ক্যারেক্টার আরেনের চরিত্র অসম্ভব রকমের সোজাসাপ্টা। পুরো মুভিতে আমি এমন কিছু পাই নি তার চরিত্রে যেটা তাকে পছন্দ করতে সাহায্য করবে। পুরো মুভিতেই সে ভয়াবহ বিভ্রান্ত এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে বিরক্তিকর চরিত্র হিসেবেই সামনে এসেছে।
মুভিটা তার যে মেসেজ সেটাতে ট্রু ছিল শেষপর্যন্তই; কিন্তু জিবলীর অন্য মুভিগুলোর মতন গল্পের আড়ালে মেসেজ না দিয়ে রীতিমত গিলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা ছিল কিছু জায়গায়; যেটা মোটেও সুখকর ছিল না।

মুভির সাফল্যও ছিল কিছু। মধ্যযুগীয় কল্পনারাজ্যর যে সেটিং মুভি দিতে চেয়েছিল তাতে এটা পুরোপুরি সফল। ব্যাকগ্রাউন্ড, শহরের দৃশ্য – দুর্দান্ত; যদিও চরিত্র রুপায়ন আরেকটু ভাল হতে পারত। কিংবা এটাই হয়ত পরিচালক চেয়েছিলেন। সবচেয়ে শক্তিশালী দিক বোধহয় ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক। মাঝখানে একটা সময়ে কোন রকম ইন্সট্রুমেন্ট ছাড়া একটা গান আছে – যেটা আপাতত আমার নিউজিক প্লেয়ারে রিপিট অন করে বাজতেসে।
(লিঙ্কঃ https://www.youtube.com/watch?v=1hN3iGc1uW8)

ইন্টারনেট অবশ্য অমীমাংসিত প্রশ্নগুলোর একটা ব্যাখ্যা দেয় এই বলে যে, বইগুলো পড়ে নিতে হবে আগে; তাতে অনেক প্রশ্নের উত্তর নিয়ে বসা যাবে; মুভিটা পুরোপুরি উপভোগও করা যাবে। কিন্তু যে মুভি দেখে বোঝার জন্য আমাকে তিনটে বই পড়ে নিতে হয়; সেটা যে তার উদ্দেশ্য পুরণে এবং নির্বর্তনে কিছুটা হলেও ব্যর্থ – একথা তো বলার অপেক্ষা রাখে না।

Gedo 3

 

Movie Time With Yami – My Favorite 15 (টিং টং মুভি টাইম)

11655141_683686608404441_742062122_n

 

একটু স্মৃতিচারণ করি!

আজ থেকে ঠিক একবছর আগে এই তারিখে আমি লিখেছিলাম মুভি টাইম উইথ ইয়ামির প্রথম পর্ব। একটু হযবরল করে শুরু করেছিলাম, অনভিজ্ঞতা ও নার্ভাসনেসের কারণে শুরুতে হোঁচট খেতাম প্রতি সপ্তাহে নিয়মিত লিখতে গিয়ে। একসময় কখন সেটা অভ্যাসে পরিণত হয়ে গেল, নিজেও বুঝতে পারিনি। গত একবছরে এই সেগমেন্ট লেখার জন্য ভাল খারাপ বহু মুভিই দেখেছি, সেখান থেকে আমার যেগুলো ভাল লেগেছে, আমি সবসময় সেগুলোকেই সাজেস্ট করতে চেষ্টা করেছি; জানিনা সবার সেগুলো পছন্দ হয়েছে কিনা। সাজেস্ট করা সব মুভিই আমার বেশ পছন্দের, তবে তার মাঝেও তো কমবেশি থাকেই! অ্যানিমে গ্রুপগুলোতে একটা রীতি প্রচলিত রয়েছে, পছন্দের ১০-২০ টা অ্যানিমের তালিকা তৈরি করা। আমিও এই রীতি অনুসরণ করে আমার পছন্দের অ্যানিমে সিরিজের তালিকা তৈরি করেছি আগে, তবে কখনো অ্যানিমে মুভির তালিকা করা হয়নি। তো মুভি টাইমের জন্মদিন উপলক্ষে (:3) আমি আমার সবচেয়ে পছন্দের ১৫ টি মুভির তালিকা প্রকাশ করছি। অনেকেরই হয়ত বেশি মুভি দেখার সময়/সুযোগ নাও হয়ে উঠতে পারে, আমি আশা করব অন্তত এই ১৫ টি মুভি আপনারা সবাই দেখবেন।

1. Flanders no Inu / The Dog of Flanders

১৮ বছর আগে মুক্তি পায় এ মুভিটি। তারও আগে ৫২ এপিসোডের একটি সিরিজ ছিল একই নামে; তা প্রায় ৪০ বছর আগের কথা। সিরিজটির কথা জানিনা, তবে মুভিটিতে ছোট্ট ছেলে নেলো এবং তার কুকুর পাতরাশ এর হাসি-কান্না, সংগ্রাম, বেদনার গল্প যেভাবে দেখানো হয়েছে, আমি সত্যিকার অর্থেই বাকরূদ্ধ হয়ে গেছি দেখে। প্রতিটা মূহুর্তে নেলো এবং পাতরাশের অনুভূতিগুলোকে মন থেকে অনুভব করেছি, ওদের ব্যর্থতায় কান্না পেয়েছে বারবার, আর এন্ডিংটা একই সাথে আমার পছন্দের খুব, আবার আফসোসও লাগে। আর কোন মুভিই আমাকে এতটা স্পর্শ করতে পারেনি।

রিভিউ লিঙ্ক- http://www.animeloversbd.com/movie-time-with-yami-34/

2. Eve no Jikan / Time of Eve

সাই-ফাই এবং স্লাইস অফ লাইফ। আমার অত্যন্ত পছন্দের দুটি জনরা। অনেক আগ্রহ নিয়ে দেখেছিলাম মুভিটি, এবং আমাকে এটি হতাশ তো করেইনি, বরং মুগ্ধ করেছে। উজ্জ্বল আর্ট, ব্যাকগ্রাউন্ডে নামীদামী শিল্পীদের করা সাউন্ডট্র্যাক মুভিটির খুব সাধারণ কাহিনীটিকে অসাধারণভাবে ফুটিয়ে তুলেছে। রোবটের ব্যাপারে আমার নিজের মতামত রোবটেরই মত (!), মুভিটি দেখার পরে তাই বেশ ভাবনায় পড়ে গেছিলাম। স্নিগ্ধ, পরিপাটি, ছিমছাম ক্যাফেতে বেড়াতে আসা মানুষ এবং রোবটগুলোর পারস্পারিক সম্পর্কগুলো মনটাকে নিমেষেই ভাল করে দিয়েছে।

রিভিউ লিঙ্ক- http://www.animeloversbd.com/movie-time-with-yami-29/

3. The Secret World of Arrietty / Karigurashi no Arrietty

স্টুডিও জিবলীর মুভিগুলোর মাঝে এটি আমার সবচেয়ে প্রিয়। জিনিসপত্রের মিনিয়েচার ভার্সনের প্রতি আমার আগ্রহ আছে, তাই এই মুভিটিতে আরিয়েট্টির চোখে মানুষের পৃথিবী দেখে অনেক ভাল লেগেছে।

রিভিউ লিঙ্ক- http://www.animeloversbd.com/movie-time-with-yami-32/

4. Ojii-san no Lamp / Grandfathers Lamp

ইয়ং অ্যানিমেটর ট্রেনিং প্রজেক্টের সাথে পরিচয় আছে? এটি জাপানের অনভিজ্ঞ কিন্তু মেধাবী অ্যানিমেটরদের প্রতিবছর সুযোগ দেয়, কোন একটি নামকরা স্টুডিওর অধীনে নিজেদের মেধাকে দুনিয়ার সামনে তুলে ধরার। খুব চমকপ্রদ মুভি তৈরি করে বসে মাঝে মাঝে এই অনভিজ্ঞ অ্যানিমেটররা, এটিও সেগুলোর একটি। সেই লণ্ঠন-কুপির আমলের মানুষের জীবন, তাদের আশা-আকাংখা, পৃথিবীর পরিবর্তনের ফলে তাদের স্বপ্নভঙ্গের গল্প- পুরোটাই খুব পরিপাটিভাবে দেখানো হয়েছে, মাত্র ২৪ মিনিটে!

রিভিউ লিঙ্ক- http://www.animeloversbd.com/movie-time-with-yami-30/

5. Hotarubi No Mori E / Into the Forest of Fireflies’ Light

ভালবাসা আসলে কি? ভালবাসার রূপ কতরকম? শুধু কি একসাথে জীবন পার করে দেয়ার নামই ভালবাসা? ভালবেসে সেই মানুষটিকে কাছে না পাওয়ার ব্যাথা, তাকে সারাজীবনের জন্য হারিয়ে ফেলার কষ্ট- এর মধ্যেও কি ভালবাসা লুকিয়ে নেই? মুভির কাহিনীটি হয়ত অবাস্তব, কিন্তু দেখার পরে যে হাহাকারটা অনুভূত হয়, সেটি একেবারে নিখাদ বাস্তব।

রিভিউ লিঙ্ক- http://www.animeloversbd.com/movie-time-with-yami-06/

6. My Neighbor Totoro / Tonari no Totoro

এটির সহজ-সরল এবং হাসিখুশি প্লট আমাকে সবচেয়ে বেশি টানে। ছোট্ট দুটি বাচ্চা মেয়ের হাসিখুশি উচ্ছ্বল কথাবার্তা, কাজকর্ম দেখলে মন এমনিতেই ভাল হয়ে যায়, সেইসাথে আছে তোতোরো এবং তার মজার কাজকর্ম। মুভিটিতে অ্যাডভেঞ্চারের অংশটা খুব সুন্দর, হালকা এক্সাইটমেন্ট এবং বেশি মজার ছোঁয়াটা খুব বেশি মুভিতে পাওয়া যায়না।

রিভিউ লিঙ্ক- http://www.animeloversbd.com/movie-time-with-yami-53/

7. Neko no Ongaeshi / The Cat Returns

বিড়ালপ্রেমী হিসেবে আমার সুনাম (কিংবা দুর্নাম) আছে, বিড়াল দেখলেই আমি যেকোন কিছুতে আকৃষ্ট হয়ে যাই। এই মুভিটিও বিড়ালের আধিক্যের কারণেই আমার অনেক পছন্দ, তবে কাহিনীটাও যে মজার ছিল, এটা স্বীকার করতেই হবে।

রিভিউ লিঙ্ক- http://www.animeloversbd.com/movie-time-with-yami-37/

8. Ookami Kodomo no Ame to Yuki / Wolf Children Ame and Yuki

ভালবাসার অনেক রকম রূপ আছে। কিন্তু তার মাঝে সবচেয়ে সুন্দর রূপটি হল মা এবং সন্তানের সম্পর্ক। নিঃস্বার্থভাবে নিজের কথা সামান্যতম চিন্তা না করে একজন মা তার সন্তানকে ভালবেসে যান। কিন্তু আমরা কি সবসময় মায়ের কষ্টটাকে উপলব্ধি করতে পারি? মাকে তার প্রাপ্য ভালবাসা, সম্মানটুকু দিতে পারি? মুভিটিতে একজন মায়ের তার বাচ্চাদেরকে ভালভাবে বড় করে তোলার যে সংগ্রাম দেখানো হয়েছে- এককথায় অসাধারণ!

রিভিউ লিঙ্ক- http://www.animeloversbd.com/movie-time-with-yami-31/

9. Colourful

প্লটটি অ্যানিমে মুভির ক্ষেত্রে বেশ ব্যতিক্রমধর্মী, মৃত মানুষের পৃথিবীতে ফিরে আসার ব্যাপারটিও হয়ত নতুন নয়, কিন্তু এই মুভিটি তারপরেও অনেক স্পেশাল! পরবর্তী কোন সেগমেন্টে এটির রিভিউতে বিস্তারিত আলোচনা করব।

রিভিউ লিঙ্ক- http://www.animeloversbd.com/movie-time-with-yami-55/

10. Millennium Actress / Sennen Joyuu Chiyoko

এই গল্পটির বর্ণনাশৈলী একেবারেই অন্যরকম, সচরাচর এ ধরণের বর্ণনাশৈলী পাওয়াই যায়না। গল্পটির প্রায় পুরোটাই চলে ফ্লাশব্যাকে, এবং তা দেখানো হয় চিয়োকোর বিভিন্ন বিখ্যাত মুভির শুটিং এর দৃশ্য দেখানোর মাধ্যমে। গল্পটি আমাদের কখনো নিয়ে যায় ফিউডাল জাপানে, কখনো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে, তো কখনো কল্পনার ভবিষ্যতে, যেখানে স্পেসশিপে করে মানুষ পাড়ি জমাচ্ছে মহাকাশে। ফিল্মমেকার এবং ক্যামেরাম্যান যে কখন এই ফ্ল্যাশব্যাকের অংশ হয়ে যান, টেরও পাওয়া যায়না। কোনটা মুভির অংশ এবং কোনটা বাস্তবতা, তা নিজের অজান্তেই অদৃশ্য হয়ে যায় একসময়।

রিভিউ লিঙ্ক- http://www.animeloversbd.com/movie-time-with-yami-35/

11. When Marnie Was There / Omoide no Marnie

স্টুডিও জিবলীর শেষ মুভি এটি, আর শেষ মুভিতেই এত চমৎকার একটা কাহিনী উপহার দিয়ে গেল, যে এটা দেখার পরে অনেকদিন আফসোস করেছি, কেন আর কাজ করবে না জিবলী!! ওদের গতানুগতিক অন্য কোন কাহিনীর সাথেই মিল নেই মুভিটির, আর তাই এটি আমার এত বেশি প্রিয়। কোন এক পর্বে এটি নিয়ে ভালভাবে আলোচনা করব।

রিভিউ লিঙ্ক- http://www.animeloversbd.com/movie-time-with-yami-56/

12. Hal / Haru

গ্রাফিক্সের জন্য অ্যানিমে দেখেন? টলটলে পরিষ্কার আর্টওয়ার্ক না হলে মন ভরেনা? তাহলে নিশ্চিন্তে দেখতে বসে যান; হারু। হতাশ হওয়ার কোন সুযোগই নেই! সেইসাথে কাহিনীটা বেশ হৃদয়স্পর্শী; উইথ এ টুইস্ট!

রিভিউ লিঙ্ক- http://www.animeloversbd.com/movie-time-with-yami-27/

13. Summer Wars

এই মুভিটির নামটা মনে পড়লেই প্রথম যে কথাটা মাথায় আসে, তা হল, পরিবার। আমরা সবাই আমাদের পরিবারের সাথে থাকি। কিন্তু আমরা যেভাবে জীবনযাপন করছি, সেটাকে কি আসলেই পরিবারের সাথে থাকা বলা যায়? এই মুভিটি দেখে আজকালকার সময়ের বহুল প্রচলিত প্রশ্নটি নতুন করে মাথায় উঁকি দিয়েছে। পরিবার পরিজন, আত্মীয় স্বজন যে একজন মানুষের কত বড় সম্পদ, তা এই মুভিতে খুব সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।

রিভিউ লিঙ্ক- http://www.animeloversbd.com/movie-time-with-yami-13/

14. Harmonie

প্রতিটি মানুষের নিজস্ব জগৎ আলাদা। একজনের জগতের সাথে আরেকজনের জগত কখনোই তেমন একটা মেলে না। কারো কল্পনার জগতের সাথে যদি আরেকজনের জগৎ মিলে যায়, তাহলে তারা অনেক ভাগ্যবান মানুষ। ইয়ং অ্যানিমেটর ট্রেনিং প্রজেক্টের আরেকটি চমৎকার কাজ এটি।

রিভিউ লিঙ্ক- http://www.animeloversbd.com/movie-time-with-yami-10/

15.  Domain of Murder / Hello Harinezumi: Satsui No Ryoubun

আর্টওয়ার্ক খুবই পীড়াদায়ক, কিন্তু কাহিনীর জবাব নেই। মিস্ট্রি জনরার অমূল্য সম্পদ এটি!

রিভিউ লিঙ্ক- http://www.animeloversbd.com/movie-time-with-yami-13/

Movie Time With Yami – 53

 

maxresdefault

 

Name: My Neighbor Totoro / Tonari no Totoro
Duration: 1 hr. 26 min.
MAL Score: 8.51
Ranked: 98
Genres: Adventure, Comedy, Supernatural

বাসাবাড়ি বদল করতে কার ভাল লাগে? নিজের পরিচিত পরিবেশ, বন্ধুবান্ধব, একটা চলমান জীবন ছেড়ে নতুন একটা অচেনা জায়গায় যেতে যে কারওই অস্বস্তি বোধ হওয়াটা স্বাভাবিক। কিন্তু ব্যাপারটাকে তো ইচ্ছে করলে উল্টোভাবেও দেখা যায়। সম্পূর্ণ নতুন একটি জায়গা দেখার মধ্যে যে আনন্দটা আছে, নতুন পরিবেশটিকে আপন করে নেয়ার মধ্যে যে তৃপ্তি আছে, তা তো একঘেয়ে দৈনন্দিন জীবন কোনদিন কাউকে দিতে পারবে না!

ছোট্ট সাতসুকি আর মেই দুই বোন। তারা তাদের পুরনো আবাস ছেড়ে গ্রামের ধারে ছিমছাম এক বাড়িতে বাস করতে আসে তাদের বাবার সাথে। বাড়ির চারপাশে জঙ্গল, সবচেয়ে কাছের বাড়িটিও বেশ দূরে অবস্থিত। এরকম খোলামেলা এবং নিরিবিলি পরিবেশ পেয়ে দুই বোনের আনন্দের সীমা থাকেনা। দৌড়াদৌড়ি করে পুরো এলাকা চষে বেড়াতে থাকে তারা।

এভাবে বাড়ির আশেপাশে ঘোরাঘুরি করতে করতে ছোট্ট মেই হঠাৎ দেখা পায় এক আজব জন্তুর। বনের মধ্যে বিশাল এক গাছের নিচে ঘুমন্ত এ অদ্ভুত জন্তুটিকে দেখে বেশ মজা পেল সে। তাই জন্তুটির সাথে সখ্যতা গড়ে তুলতেও বেশি দেরি হলনা তার। আর শুরু হল তোতোরোর সাথে সাতসুকি আর মেই এর মজার অভিযান।

এই মুভিটি আমার প্রিয় মুভির তালিকায় বেশ ওপরের দিকে রয়েছে, এর মূল কারণ হল, এটির সহজ-সরল এবং হাসিখুশি প্লট। ছোট্ট দুটি বাচ্চা মেয়ের হাসিখুশি উচ্ছ্বল কথাবার্তা, কাজকর্ম দেখলে মন এমনিতেই ভাল হয়ে যায়, সেইসাথে আছে তোতোরো এবং তার মজার কাজকর্ম। মুভিটিতে অ্যাডভেঞ্চারের অংশটা খুব সুন্দর, হালকা এক্সাইটমেন্ট এবং বেশি মজার ছোঁয়াটা খুব বেশি মুভিতে পাওয়া যায়না। স্টুডিও জিবলীর ছিমছাম পরিষ্কার আর্ট এবং মুভির চমৎকার ধারাবাহিক কাহিনীবিন্যাস এটিকে আরও অনন্য করে তুলেছে।

এই মুভিটির কাহিনী নিয়ে বেশ কিছু থিওরী প্রচলিত আছে ইন্টারনেটে, সেগুলোর সত্যমিথ্যার দায়ভার আমি নিতে পারব না, তবে মুভিটি দেখার পর যদি থিওরীগুলো ঘাটাঘাটি করে দেখেন, আমি নিশ্চিত যে মুভিটির হাসিখুশি প্লটটিকে নতুন চোখে দেখতে বাধ্য হবেন আপনি!

Movie Download Link-
http://kissanime.com/Anime/My-Neighbor-Totoro

Movie time with Yami প্রচারিত হচ্ছে প্রতি বৃহস্পতিবার। সেগমেন্ট সম্পর্কে আপনার যেকোন মতামত কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না। আশা করি মুভির সাথে আপনার উইকএন্ড ভালো কাটবে !!

Movie Time With Yami – 52

ponyo2007g

Name: Ponyo on the Cliff by the Sea / Gake no Ue no Ponyo
Duration: 1 hr. 41 min.
MAL Score: 7.95
Ranked: 580
Genres: Adventure, Fantasy

একদা এক বিশাল সমুদ্রের গভীর অতলে বাস করত এক জাদুকর। তার ক্ষমতা দিয়ে সে সমুদ্রের নিচে বসে বিভিন্ন রকম গবেষণা চালাত। এবং তার কাছে ছিল বিভিন্ন ধরণের ঔষধ, যা খেয়ে প্রাণিদেহে অদ্ভুত ধরণের পরিবর্তন আনা সম্ভব।

এই জাদুকরের মেয়ে পনিও। তাকে একপ্রকার মাছই বলা চলে।পনিওর বাবা সবসময় তাকে তাদের সমুদ্রের নিচের বাড়িতে আটকে রাখতে চাইত, যেখানে সে নিরাপদে থাকবে।কিন্তু দুষ্টু পনিও যে এভাবে ঘরে পড়ে থাকতে নারাজ! সে বাইরের পৃথিবী ঘুরে দেখতে চায়। তাই একদিন বাবার কড়া নজরকে ফাঁকি দিয়ে সে বেরিয়ে পড়ে সমুদ্র ভ্রমনে, আর শুরু হয় পনিওর মজার অ্যাডভেঞ্চার।

হায়াও মিয়াজাকি পরিচালিত স্টুডিও জিবলীর এ মুভিটি এ স্টুডিওরর বাকি মুভিগুলোর তুলনায় কিছুটা অন্যরকম, বলা যায় যে এটি তুলনামূলক ভাবে কিছুটা শিশুতোষ। প্লটটা অনেকটা ডিজনী মুভিগুলোর মত, তবে এখানেও পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাওয়ার ভয়টা রয়েছে। আর্টওয়ার্ক অত্যন্ত উজ্জ্বল ও পরিচ্ছন্ন, দেখে মনে হয় যেন রংপেন্সিল দিয়ে স্কেচ করে আঁকা। মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকতে ইচ্ছা করে পুরোটা সময়। সাউন্ডট্রাক মানানসই, তেমন উল্লেখযোগ্য না হলেও ভাল। কাহিনীর গতি খারাপ না, একটু ধীরগতিতে শুরু হয়, যেটা ভাল লাগছিল, কিন্তু পরে গিয়ে আবার হঠাৎ করে বেশ তাড়াহুড়ো করে একসাথে অনেক কিছু দেখিয়ে ফেলতে চেষ্টা করা হয়েছে, তাতে কাহিনীটা একটু খাপছাড়া হয়ে গিয়েছে। তবে ওভারঅল বেশ উপভোগ্য একটা মুভি এটি।

তাই, সময় পেলে দেখে ফেলুন ছোট্ট পনিওর বড় অভিযানের এ কাহিনীটি।

Movie Download Link-
http://kissanime.com/Anime/Ponyo-on-a-Cliff

Movie time with Yami প্রচারিত হচ্ছে প্রতি বৃহস্পতিবার। সেগমেন্ট সম্পর্কে আপনার যেকোন মতামত কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না। আশা করি মুভির সাথে আপনার উইকএন্ড ভালো কাটবে !!

Movie Time With Yami – 51

spirited_away_by_nuriko_kun-d3cyj4y

 

Name: Spirited Away / Sen to Chihiro no Kamikakushi
Duration: 2 hours 5 min.
MAL Score: 8.93
Ranked: 12
Genres: Adventure, Drama, Supernatural

মাই আনিমে লিস্টের স্ট্যান্ড অ্যালোন মুভির টপ লিস্ট যদি কেউ চেক করেন, দেখতে পাবেন, সবার ওপরে যে নামটি আছে, সেটি হল স্পিরিটেড অ্যাওয়ে। স্টুডিও জিবলীর অন্যতম ব্যবসাসফল এবং প্রশংশিত এ মুভিটি রিলিজ হওয়ার বছরে (২০০১ সাল) একাই দখল করেছিল সকল বড় বড় অ্যাওয়ার্ডগুলো; যার মধ্যে অস্কারও রয়েছে।

নিজের পরিচিত গন্ডি ছেড়ে, স্কুল-বন্ধুবান্ধব-খেলার সাথীদের ছেড়ে যদি হঠাৎ দূরে একেবারে অচেনা কোন জায়গায় চলে যেতে হয় আপনাকে হঠাৎ করে, কেমন লাগবে আপনার? নিশ্চয় মন খারাপ/বিরক্ত লাগবে কিছুটা হলেও! সেরকমটাই ঘটেছে চিহিরোর সাথে। পরিবারের সিদ্ধান্তের কারণে অনিচ্ছাসত্ত্বেও তাকে নিজের পরিচিত গন্ডি ছেড়ে যেতে হচ্ছিল অজানা এক জায়গাতে। সেজন্য চিহিরোর মন বেশ খারাপ। পুরো রাস্তায় এজন্য বাবা-মার সাথে অসহিষ্ণু আচরণ করে সে।

পথে গাড়ি চালানোর সময় হঠাৎ এক জায়গায় একটা ভুল রাস্তায় ঢুকে পড়ে চিহিরোদের গাড়ি। অচেনা পথে দিকভ্রষ্ট হয়ে গাড়ি চালাতে চালাতে একসময় গাড়িটা এসে পৌছায় একটা জনমানবশূণ্য থিম পার্কের সামনে। চিহিরো যদিও জায়গাটা নিয়ে শঙ্কিত থাকে, তারপরেও বাবা-মায়ের পেছনে পেছনে জায়গাটা পরিদর্শন করতে বেরিয়ে পড়ে।

পার্কটির একপ্রান্তে হঠাৎই একটি খাবারের স্টল খুঁজে পায় চিহিরোর বাবা-মা। কোনকিছু চিন্তা না করে খেতে বসে যায় তারা। চিহিরো তাদের সাথে বসে না ভয়ের কারণে। এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই সে আবিষ্কার করে, বাবা-মায়ের অদূরদর্শী কাজের কারণে এক ভয়াবহ বিপদের মধ্যে এসে হাজির হয়েছে তারা।

মুভিটির কাহিনী বেশ দ্রুতগতিতে আগায় বলা চলে, কোন জায়গায় দম ফেলার সুযোগ তেমন একটা পাওয়া যায় না। স্পিরিট ওয়ার্ল্ড ও তার আজগুবি ক্রিয়েচারগুলো দেখে আমার একটু অস্বস্তি লেগেছিল, আর কাহিনীটা মাঝে যেন একটু খাপছাড়া লেগেছিল। তবে এঞ্জয়মেন্ট ভ্যালু হিসেবে বলা যায়, বেশ উপভোগ্য ছিল মুভিটি। মিয়াজাকি হায়াও এর সব মুভিতে তার কাজের ছোঁয়া স্পষ্ট থাকে, এ মুভিটিও তার ব্যাতিক্রম নয়, ক্যারেক্টার ডিজাইন, আর্টওয়ার্ক, ডেভেলপমেন্ট- পুরোটাই একটা জিবলী জিবলী ভাব তৈরি করে। আর্টওয়ার্ক জিবলীর বাকি কাজগুলোর মতই অসাধারণ, আজগুবি ক্রিয়েচারগুলোকেও খুব যত্ন নিয়ে তৈরি করা হয়েছে। সাউন্ডট্র্যাকও বেশ চমৎকার, আর চিহিরোর ক্যারেক্টার ডেভেলপমেন্ট বেশ ভাল ছিল।

আর, বলা হয়ে থাকে যে, মুভিটিতে রূপক অর্থে দর্শককে মেসেজ দিতে চেষ্টা করা হয়েছে, এই মেসেজ নিয়ে অনেক থিওরী, ভিডিও ছড়িয়ে আছে ইন্টারনেটে। মুভি দেখার পরে যদি আগ্রহী হন তো এগুলো কিছুটা ঘাটাঘাটি করে দেখতে পারেন, দেখে মজাই লাগবে, আর মুভিটির ব্যাপারে মনে নতুন ধারণার জন্ম হওয়াটাও অস্বাভাবিক নয়! কিংবা কে জানে, হয়ত আপনিও একটি নতুন থিওরী দাড়া করিয়ে ফেললেন!

Movie Download Link-
http://kissanime.com/Anime/Spirited-Away

Movie time with Yami প্রচারিত হচ্ছে প্রতি বৃহস্পতিবার। সেগমেন্ট সম্পর্কে আপনার যেকোন মতামত কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না। আশা করি মুভির সাথে আপনার উইকএন্ড ভালো কাটবে !!