Movie Time With Yami – Pseudo Episode (টিং টং মুভি টাইম)

টিং টং, সিউডো মুভি টাইম উইথ ইয়ামি

আজকে মুভি দিবস পালন করলাম, তাই মেলাদিন পরে মুভি নিয়ে আবার কিছু লিখতে ইচ্ছা হল। রিভিউ টিভিউ দেয়া ধাতে পোষাবে না, কোনটা কেমন লাগল খালি সেটা লিখতেসি।

Penguinhighway

১. পেঙ্গুইন হাইওয়ে –

খুবই ভাল লেগেছে। বাচ্চাকাচ্চা পোলাপানের ইঁচড়েপাকা গবেষণা, ট্যান্ট্রাম থেকে শুরু করে শহরের মাঝখানে পেঙ্গুইনের আবির্ভাব, সবমিলিয়ে মোটামুটি উদ্ভট একটা প্লটকে খুব এঞ্জয়েবল ভাবে প্রেজেন্ট করা হয়েছে। একটা মুহূর্তের জন্যও স্লো বা বোরিং লাগেনি। অ্যানিমেশন, ওএসটি খুবই সুন্দর। যেকোনো আনিমেতে আমি ব্যাকগ্রাউন্ড, বাড়িঘর, গাছপালা, আকাশ বাতাসের দিকে আলাদা করে নজর দেই, এইখানে সেগুলো খুবই যত্ন নিয়ে বানিয়েছে, so I’m happy!!

Kimitonamininoretara

২. কিমি তো নামি নি নোরেতারা –

আমি খুবই খুশি যে সিনোপসিস না পড়ে বা কোনোরকম গবেষণা ছাড়া শুধুমাত্র পোস্টার দেখে এই মুভি দেখতে বসেছিলাম। এইজন্য শুরুর ২৪ মিনিটের মিষ্টি অংশটুকু খুব ভাল লেগেছে দেখে। এরপরে মোটামুটি ইমোশনের আপ ডাউনের উপর দিয়ে পার করেছি। প্লট মোটেও নতুন না, এর আগে এরকম প্লট নিয়ে আরও মুভি হয়েছে এবং ভবিষ্যতেও হবে, এক্সিকিউশনের কারণে কাহিনিটা আপন আপন লেগেছে। এন্ডিং পছন্দ হয়েছে। অ্যানিমেশন, ওএসটি ভাল, আমার মাথায় এখন মুভিতে অতি ব্যবহৃত গানটা কন্টিনিউয়াস ঘুরপাক খাচ্ছে।

Ninokuni

৩. নি নো কুনি –

উপরেই রাইড ইওর ওয়েভ নিয়ে যেটা বললাম, সেটার উল্টা ভার্সন এখানে বলব। ইসেকাইতে যাতায়াত, এই টাইপ প্লট মনে হয় তেমন আনকমন না, ওয়েল রিসিভড বলেই হয়ত, কিন্তু আমার মুভিটা তেমন ভাল লাগে নি। 30 minutes into the movie I got bored. পেসিং বাজে লাগল, একেবারেই টানছিল না আমাকে। অন্তত ২০/৩০ বার বোরড হয়ে উঠে গিয়ে অন্য কাজ করে এসে আবার বসেছি। কাহিনী বেশিই প্রেডিক্টেবল, ওয়েল প্রেডিক্টেবল হলে আমার কোনো সমস্যা হয় না ইউজুয়ালি, এটার এক্সিকিউশন ভাল লাগে নি। মেদেতাশি মেদেতাশি মার্কা এন্ডিংটা আমি দুই মাইল দূর থেকে চারচোখো হওয়া সত্ত্বেও দেখতে পাচ্ছিলাম, খুব পেইনফুল ভাবে সেটাই ঘটল। অ্যানিমেশন আহামরি লাগেনি, ওএসটি আদৌ শুনসি কিনা মনে পড়ে না

(নোট – এককালে কোনো কিছু বেশি ভাল লাগলে বলতাম “অতিরিক্ত ভাল লেগেছে”। Today this award goes to Penguin Highway )

কোবাতো বন্দনা – লিখেছেন ইশমাম আনিকা

download

“কোবাতো” আনিমেটা দেখে শেষ করলাম মাত্র। এবং বলতেই হবে, অসাধারণ আনিমে ছিল। এত বেশি ভাল লেগেছে যে দৌড় দিয়ে মিথিলার পোস্টে কমেন্ট লিখা শুরু করে দিয়েছিলাম, কারণ মিথিলার সুন্দর রিভিউটা পড়েই এই আনিমে দেখতে বসেছিলাম। পরে আবিষ্কার করলাম বেশি উত্তেজনায় রচনা লিখে ফেলেছি, তাই সেই রচনা একটু বাড়িয়ে চাড়িয়ে এখানে আবার পোস্ট করছি।

কোবাতো আনিমেটা শুরুর দিকে মনে হচ্ছিল, চিনির শিরার মধ্যে সারারাত ডুবিয়ে রেখে সকালে প্রেজেন্ট করেছে। কোবাতো অতিরিক্ত বেশি সুইট, এত বেশি যে সেটা দমবন্ধ করে দেয়ার মত অবস্থা করে। শুরুতে কোবাতোকে একটা এয়ারহেড, কিছুটা এনোয়িং কেয়ারলেস একটা মেয়ে ছাড়া কিছুই মনে হয়না, এবং হানাযাওয়া কানা ইউজলেস ক্যারেক্টার যে খুব ভালভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারেন, তা এই আনিমে দেখে সবচেয়ে বেশি বোঝা যায়। প্রথম দু-তিনটা পর্ব দেখে যদি কেউ বিরক্ত হয়ে আনিমেটা ড্রপ দেয়ার কথা ভাবে, সত্যি বলছি অবাক হব না।

এরপর আনিমেটা দেখা চালিয়ে যেতে থাকলাম, কোবাতোর স্বভাব চরিত্রে কোন পরিবর্তন এল না। কিন্তু আমি একটা ব্যাপার উপলব্ধি করলাম। তা হল, আমাদের সবার জীবনেই আসলে একজন কোবাতো প্রয়োজন, যে তার সারল্য, উচ্ছলতা, প্রাণবন্ততা দিয়ে আমাদের ম্যাড়মেড়ে মানসিকতাটা পালটে দেবে। কোবাতো সরল হতে পারে, কিন্তু বোকা নয়। সে একটা কাজ অসম্ভব জেনেও হাত গুটিয়ে বসে থাকে না, শুধুমাত্র তার সদিচ্ছার জোরে অসম্ভবকে সম্ভব করে তোলে সে। কাজের ক্ষেত্রে হাজারটা গোলমাল করে, কিন্তু তাও সে হাত গুটিয়ে বসে থাকে না, কাজটা করেই ছাড়ে। কোবাতোর ওপর বিরক্ত হওয়া যায়, কিন্তু সেটা প্রকাশ করা যায় না। তার নিষ্পাপ মুখের দিকে তাকালে সব বিরক্তি চলে যেতে বাধ্য।

13b605e23ec7ae50a8b6f6b56bde4dbd

কোবাতো বন্দনা বেশি করে ফেলছি, কারণ আমার এই ইউজলেস মেয়েটাকে দেখে খুব বেশি ভাল লেগেছে। এখন একটু অন্যদের কথাও বলা যাক!

আমি ফুজিমোতো আর কোবাতোকে শুরুতে দেখে, এমনকি প্রায় ১৯-২০ এপিসোড পর্যন্ত দেখেও কিছুতেই বুঝতে পারছিলাম না যে এই দুটোকে কিভাবে কাপল হিসেবে কল্পনা করব। কিন্তু শেষের দুই এপিসোড যা দেখাল :’) আমার পছন্দের কাপলগুলোর একটা (অ্যাজ ইফ আমার আর কোন পছন্দের কাপল আছে :v) হয়ে গেল কোবাতো – কিওকাযু। মাঝে অল্প সময় সেকেন্ড লিড সিন্ড্রোম ধরি ধরি করছিল, এখন সেটা পালিয়ে গেছে।

আর সবচেয়ে বড় কথা, একটা স্টোরি খালি বানালেই হয়না, সেটার এক্সিকিউশন সেইরকম না হলে আলটিমেটলি অত উপভোগ্য হয়না। কোবাতোকে প্রথমে দেখে তার অতি এন্থুসিয়াস্টিক আচরণ দেখে মেয়েটাকে এনোয়িং লাগছিল, কিন্তু আনিমে আগাতে আগাতে পুরাই “I want to protect that smile” ফিল এনে দিল, যেমনটা কিওকাযুর সাথে ঘটল, সেটা যেন আমার সাথেও ঘটল। বিরক্ত লাগে, কিন্তু সামহাউ রাগ ওঠে না। আনিমের প্রতিটা চরিত্রকেই কাহিনীর প্রয়োজনে খুব দ্রুত, কিন্তু সুচারুভাবে পরিবর্তন করা হয়েছে, এতে পরিবর্তনটা চোখে লাগে না, কিন্তু মনে প্রভাব ফেলে। ফুজিমোতো কিওকাযুর ডেভেলপমেন্টটা বিশেষ করে আমার খুব ভাল লেগেছে। ওর শূণ্যতাগুলো যেন নিজে অনুভব করতে পারছিলাম।

আর ক্ল্যাম্পের মেয়েগুলাকে পেলে যে কি করব 😐 😐 প্রত্যেকটা ছেলেকে এত বেশি ইকেমেন বানাতে কে কইসে এদের :’| কিওকাযু চেতলেও চেহারা কি সুন্দর দেখা যায় <3

আর হ্যাঁ, ক্ল্যাম্প ভার্সের ইস্টার এগ!! ওয়াতানুকিকে দেখাল, তাও আবার তার কুল ফর্মে <3 আবার সুবাসার ক্যারেক্টারদের নিয়ে আস্ত একটা পর্বই দিয়ে দিল!! খুব ভাল লেগেছে :’) ফাইকে আবার দেখলাম <3 এছাড়া চবিটস এর মেইন ক্যারেক্টাররা এখানে পার্মানেন্ট চরিত্র হিসেবে আছে, সেটিং এও মিল আছে দুই আনিমের।

সবমিলিয়ে কোবাতো আনিমেটি আমার খুবই ভাল লেগেছে। সুইট একটা স্টোরি, মন ভাল করে দেবার মত মিষ্টি একটা আনিমে।

07a75ed2b83a14c71e191566552f29d1

গেট ইওর ডেইলি ডোজ অফ শিরোকুমা পান; লিখেছেন ইশমাম আনিকা

খুব সাধারণ একটা নাম আনিমেটার, শিরোকুমা ক্যাফে, যার বাংলা করলে দাঁড়ায় শ্বেতভল্লুকের কাফে। আনিমেটা খুঁজে পেয়েছিলাম আমার বিভিন্ন পছন্দের সেইয়্যুদের কাজ চেক করতে করতে। তেমন কিছু আশা করিনি, ভেবেছিলাম শ্বেতভল্লুক ক্যাফে চালাবে, সেখানে অন্য প্রাণীদের ইন্টের‍্যাকশন দেখাবে হয়ত। ৫০ এপিসোড দেখে একটু চিন্তায় ছিলাম যে এতগুলো এপিসোডে এত কি দেখানো যায় একটা ক্যাফে নিয়ে।

আমার আন্দাজ একই সাথে ঠিক ছিল, আবার ভুল। লিটারেলি বললে আমার বর্ণনাই ঠিক, কিন্তু এইটুকু বর্ণনা দিয়ে শিরোকুমা ক্যাফে আনিমে সম্পর্কে কিছুই বলা হয় না।

এই আনিমে দেখতে দেখতে ভাবছিলাম, আমার অনেক পছন্দের আনিমে আছে, যা অন্যদের এতটা ভাল লাগেনা, এবং আমি বুঝতেও পারি যে তাদের কেন ভাল লাগছে না। কিন্তু এই আনিমেটা কেউ পছন্দ করবে না, এটা ভাবলেও কেমন যেন অদ্ভুত লাগছে। কেন করবে না?! শিরোকুমার পানগুলো শুনলে একজন মানুষের কেন হাসি আসবে না! পেঙ্গুইনের হারেম (যা কিনা সেইম সেইয়্যুর অন্য যেকোন বিখ্যাত হারেমকে পেছনে ফেলে দেয়) দেখলে কেন কেউ মজা পাবে না! পাণ্ডার অলসতা এবং সেগুলোর পেছনের কঠিন যুক্তি কেন কাউকে ভাবিয়ে তুলবে না! বা নামাকেমোনো বা জৌগামে সানের দৃঢ় মনোবল দেখে কার মন ভরে উঠবে না!

আনিমের বেশিরভাগ চরিত্র প্রাণী, এমন আনিমে এই প্রথম দেখছি না, কিন্তু এমন অসাধারণ চরিত্রায়ন আমার মনে হয়না খুব বেশি দেখেছি। সবচেয়ে যে জিনিসটা ভাল লেগেছে, আনিমের বাঘা বাঘা সেইয়্যুদের সেরা পারফরমেন্স দেখতে পেয়েছি। প্রতিটা চরিত্রের সাথে তারা এমনভাবে মিশে গেছেন, কখনো মনে এই প্রশ্নটা আসতেই দেননি যে এতগুলো প্রাণী মানুষের মত কেন চলাফেরা করছে!

আনিমের আরেকটা ভাল দিক আমার মনে হয়েছে এর ওপেনিং আর এন্ডিং গানগুলো। তিনটি ওপেনিং, তার মাঝে প্রথম ওপেনিং “বোকু নি ইনিভিটেশন” এত বেশি ভাল, যে বাকি দুটো গান ভাল হওয়া সত্ত্বেও প্রথমটার আড়ালে ঢাকা পড়ে গেছে। আর এন্ডিং অনেকগুলো ছিল, এবং প্রায় প্রতিটাই আনিমের কোন না কোন চরিত্রকে ফোকাস করে। আমার লামা সানের এন্ডিং টা সবচেয়ে পছন্দ হয়েছে। আর একেবারে শেষ এন্ডিং টায় শিরোকুমা সবাইকে ধন্যবাদ জানাতে থাকে, শুনে খুব মন খারাপ হচ্ছিল যে এত সুন্দর আনিমেটা শেষ হয়ে যাচ্ছে।

শিরোকুমা ক্যাফে নিয়ে আসলে কথা শেষ হওয়ার নয়। প্রতিটা মুহূর্ত উপভোগ করেছি আনিমেটার, একেকটা হাসির মুহূর্ত তিন চারবার করে পেছনে টেনে দেখেছি। শিরোকুমার পানের স্ক্রিনশট দিয়ে আমার গ্যালারী ভরে গেছে। বোকু নি ইনভিটেশনের সাথে সুর মেলাতে মেলাতে মুখস্থ হয়ে গেছে। এমনকি পরের পর্বের প্রিক্যাপের কার্ডগুলোও খুব আগ্রহ নিয়ে দেখতাম। শেষ পর্বের শেষ কার্ডে যখন “সি ইউ এগেইন” লেখা উঠল, খুব মন খারাপ হয়ে গেছিল, কারণ সেটা প্রচারের পর পাঁচ বছর হয়ে গেছে, কোন ছোটখাটো ওভিএ স্পেশাল কিছুই নেই এরপর। এক চেরি ব্লসম ভিউইং থেকে আরেকটা, খুব সুন্দর একটা জার্নি ছিল ক্যাফের সাথে।

My invitation came without any prior notice. I accepted it, went to this wonderful cafe knowing nothing, enjoyed myself to the fullest. Now that the party is over, I can’t even think of moving on..

Screenshot_2017-07-12-22-05-43-741_com.mxtech.videoplayer.ad

বোকুরা ওয়া মিন্না কাওয়াইসৌ; সাজেশন দিয়েছেন ইশমাম আনিকা

77590

আমার সবসময় যেটা মনে হয়, জাপানী আনিমে আসলে একটা “Double Edged Sword”. আপনার কখন কোনটা ভাল লাগবে, কিছুই বলা যায় না। দেখা যাবে যে একটা আনিমে আপনার আজ ভাল লাগল না, কিন্তু কয়েক বছর পর সেটা আবার ট্রাই করার সাথে সাথে প্রচণ্ড ভালোলাগা শুরু হয়ে গেল। আমার ক্ষেত্রে জিনিসটা হয় যখন আমি কমেডি বা ডেইলি লাইফ টাইপ কোন আনিমে দেখি।

আজ দেখে শেষ করলাম “বোকুরা ওয়া মিন্না কাওয়াইসৌ”। স্লাইস অফ লাইফ – আমার প্রিয় জনরা। অথচ বছর তিনেক আগে এই আনিমের প্রথম এপিসোড দেখে খুবই বিরক্ত হয়েছিলাম। গত পরশু স্লাইস অফ লাইফ খুঁজতে খুঁজতে নামটা আবার চোখে পড়ল, ভাবলাম এটাই শেষ করে ফেলি। এবং শেষ করার জন্য দেখতে গিয়ে আবিষ্কার করলাম, আনিমেটা আমার খুবই ভাল লাগছে; almost as if I was searching for this exact anime!!

তো এই নিজের সাথে কন্ট্রাডিকশন দেখে আমার মাথায় ব্যাপারটা ঘুরপাক খেতে থাকল তিনদিন ধরে। ভাবতে ভাবতে মনে হল ঠিকই আছে। কারণ আনিমের প্রভাবটা বাদ দিয়ে দিলে “ফান” সম্পর্কে আমার নিজের যে আইডিয়া, বা আমি যেগুলোতে মজা পাই বা পেতাম, জাপানী আনিমের সাথে তা অনেকাংশেই মেলে না। জাপানী আনিমেতে এটা একটা কমন সিনারিও যে একটা ছেলে থাকবে, তাকে দুনিয়াশুদ্ধ মেয়ে যেভাবে ইচ্ছা অ্যাসাল্ট করবে, আর সে মেয়েগুলোকে কিছুই বলবে না, উলটো তাদের এসব অত্যাচার সিম্পলি শ্রাগ অফ করে তাদের সব ডিমান্ড পূরণ করবে, সেটাও তাদের প্যানপ্যান শুনতে শুনতে। এই সিনারিও যে আসলে ফানি, এটা মেনে নেওয়ার জন্য আসলেই কিছুটা অভিজ্ঞতার প্রয়োজন হয়, আর সেটার ভুক্তভোগী হয় এই টাইপের প্রথম যে আনিমেটা দেখা হয়, সেটা; আমার ক্ষেত্রে সেটা প্রোবাবলি ছিল বোকুরা ওয়া মিন্না কাওয়াইসৌ (যদিও কোনোসুবাতে এই টাইপ কমেডি দেখে হাসতে পারিনি)।

77596

যাহোক, আজাইরা বক্তৃতা শেষ, আসল কথা খুব কম। ভাল করেছিলাম যে তখন এক এপিসোড দেখে এই আনিমে হোল্ডে রেখেছিলাম, কারণ বাকি এপিসোড দেখলে আমি নিশ্চিত তখন এতটা মজা পেতাম না। ছোট করে বললে আনিমের কাহিনী “কাওয়াই কমপ্লেক্স” নামের বোর্ডিং হাউস এর বাসিন্দাদের দৈনন্দিন জীবন নিয়ে, এবং এই বোর্ডিং এর সব বাসিন্দার মাথায় প্রব্লেম আছে। তাও দিনশেষে তারা একজন আরেকজনের বিপদে ঠিকই একজোট হয়ে এগিয়ে আসে সাহায্য করতে, কাজেই মেদেতাশি মেদেতাশি।

আনিমের আর্ট বেশ সুন্দর, ব্রেইন্স বেইজকে আমি চিনি তাদের কম কালার দেয়া শান্তিময় সতেজ আর্টের জন্য, কিন্তু এই আনিমেতে তারা রঙ ঢালতে কোন কার্পণ্য করেনি। ওএসটি খারাপ না, আবার উল্লেখযোগ্য কিছুও না। স্লাইস অফ লাইফ ভাল লাগলে এই আনিমে ভাল লাগার কথা।

কেউ দেখতে চাইলে দেখতে পারেন, তবে নতুন নতুন আনিমে দেখছে, এমন কাউকে এটা সাজেস্ট না করাই ভাল, অন্তত আমার মনে হয়।

77597

সৌল ইটারঃ রিভিউ লিখেছেন ইশমাম আনিকা

SOUL.EATER.full.350803

কেনযেন নারু তামাশি ওয়া,
কেনযেন নারু সেইশিন তো,
কেনযেন নারু নিকুতাই নি ইয়াদোরু।

আনিমেটার প্রতি এপিসোডের শুরুতে মাকা আলবার্ন এর কণ্ঠে এই তিনটে কথা শোনা যায়। যদিও শেষ পর্যন্ত আনিমেটায় এই কথাগুলোর কোন রকম গুরুত্ব খুঁজে পাওয়া যায় না, একটা পরীক্ষার শূণ্যস্থান পূরণের মার্ক তোলা বাদে।

পুরো আনিমেটাই আসলে এরকম। সিরিয়াস বিপদের মধ্যেও যখন ব্ল্যাক স্টার “I’m going to transcend Gods” বলে চিল্লাচিল্লি করবে, বা কিড পলায়নপর শত্রুর পিছু নেওয়া বাদ দিয়ে সিমেট্রির পেছনে দৌড়িয়ে বেড়াবে, এদের ইউজলেস কাজকারবার দেখে একদিকে প্রচণ্ড মেজাজ খারাপ হবে, আবার হাসিও এসে যাবে।

আমি সাধারণত কোন আনিমের রানটাইম দুই সিজনের বেশি হলে সেটাকে ওয়াচলিস্ট থেকে বের করে দেই। তাও চার সিজন ধরে চলা ৫১ এপিসোডের এই আনিমেটা দেখা শুরু করি মূলত দুটো কারণে; প্রথমত বোনস এর আনিমে, ভাল না হোক, অন্তত খারাপ হবে না- এই আশা ছিল, দ্বিতীয়ত সেইয়্যু কাস্টে মামোরু মিয়ানো ছিল। মামোরু মিয়ানোর ক্যারেক্টারগুলো সাধারণত পাগলাটে হয়, দেখতে মজাই লাগে, আশা ছিল ডেথ দ্য কিড যদি সেই ক্যারেক্টারগুলোর ৫০% পাগলামিও করে, ভালই লাগবে। দুই দিক থেকেই আশা পূরণ হয়েছে ষোল আনা!! কথা বলছি সৌল ইটার নিয়ে।

2656-soul-eater-maka-and-soul

আনিমের কাহিনী বলা খুব সহজ, কারণ শুরুটা দেখে যে কারও মনে হবে যে ব্লিচ দেখছে, আরও ভাল আর্টওয়ার্ক এ। সেই পৃথিবীতে দিশেহারা হয়ে ঘুরে বেড়ানো পথভ্রষ্ট আত্মা, তাকে পাকড়াও করবে শিনিগামীর দূত। তবে মিল এখানেই শেষ, কাজেই নিশ্চিন্তে সামনে আগানো যাবে, রিপ অফ দেখব কিনা এই দুশ্চিন্তা না করে।

আমার সাধারণত আনিমে মনে থাকে কাহিনী দিয়ে, ক্যারেক্টারের নাম বা অন্যান্য খুঁটিনাটি কিছুদিন পর ভুলে যাই। সৌল ইটার এক্ষেত্রে পুরোপুরি ব্যতিক্রম, কারণ এর কাহিনীর তুলনায় এর আর্ট, ওএসটি এবং অদ্ভুত ক্যারেক্টারগুলো আমাকে বেশি টেনেছে। শুরু থেকে আর্ট দেখে বারবার ফুলমেটাল অ্যালকেমিস্ট এর কথা মনে পড়ছিল, আর মাকা আলবার্ন এর সাথে উইনরির স্বভাবে মিল পাচ্ছিলাম। ডেথ দ্য কিডকে নিয়ে আমি আসলে বেশি উৎসুক ছিলাম, কারণ মামোরু মিয়ানোর ক্যারেক্টার, এবং সে আমার উৎসাহের আগুনে বালতি বালতি ঘি ঢেলেছে; তাকে যতটা তারছিড়া আশা করেছিলাম সে তারচেয়েও বড় তারছিড়া! নরমালি সিমেট্রি নিয়ে পাগলামি করে বেড়ানো, অথচ কাজের সময় সেইরকম কুল, কিডকে দেখে বারবার বুঙ্গো স্ট্রে ডগস এর দাযাই ওসামুকে মনে পড়ছিল।

death_the_kid_b_and_w_vector_by_x__zero__x

ছেলের কথা যখন এল, বাপের কথাও বলা উচিৎ! শিনিগামী সামার নাকিসুরের কথা আমার মাথায় ঢুকে গেছে, অস্বীকার করব না, গত কয়েকদিন ধরে তার মত নাকিসুরে কথা বলতে চেষ্টা করেছি মাঝেমধ্যেই, যদিও তা আলটিমেটলি ব্যর্থ প্রচেষ্টা ছাড়া আর কিছুই হয়নি। ;-;

পছন্দের ক্যারেক্টারের লিস্ট আসলে শেষ করা সম্ভব না। সৌল ইভান্স (যে নাকি কুল না হলে কোন কাজ করেনা), ব্ল্যাক স্টার (যে বিধাতাকে অতিক্রম করে যাবে), ৎসুবাকি (সব তারছিড়ার মাঝে একমাত্র নরমাল ক্যারেক্টার), লিয-প্যাটি (এদের যেকোনো একজন কখনোই যথেষ্ট না, সবসময় জোড়ায় আসতে হবে, কারণ “symmetry is beautiful!”), স্পিরিট, স্টাইন হাকাসে, সিড সেন্সেই, মারি সেন্সেই, জাস্টিন (এর থিমটা জোস, সাথে কথা বলার স্টাইলও); এছাড়া আরও অনেক ক্যারেক্টার মনে রাখার মত লেগেছে। ওএসটি খুবই ভাল ছিল, নরমালি ফাইট সিন আমাকে তেমন টানে না, কিন্তু সৌল ইটারের ফাইটগুলোর জন্য আমি অপেক্ষা করে বসে থাকতাম, যাতে ফাইট মিউজিকগুলো শুনতে পাই। স্পেশালি কিড আর জাস্টিনের থিম সং আমার খুবই পছন্দ হয়েছে। ওভার অল কাহিনীর পেসিং কিছুটা বুঙ্গোর মত লেগেছে (এমনকি লাস্টের ফাইটটাও বুঙ্গোর লাস্ট ফাইটের মত ফুড়ুৎ করে শেষ হয়ে গেল :p), আর একটা দুটা ফাইট সিন দেখে মবের কথা মনে হয়েছিল, যদিও এখন জিজ্ঞেস করে লাভ নেই, মনে করতে পারব না।

সবমিলিয়ে সৌল ইটার বেশ ভাল একটা আনিমে, দেখে বেশ এঞ্জয় করেছি।

strana manga tapety soul+eater walpapers pozadia anime

গ্রেট টিচার ওনিযুকা – আনিমে সাজেশন দিয়েছেন ইশমাম আনিকা

Onizuka.Eikichi.full.291265

কিভাবে একটি টিপিকাল শৌনেন আনিমে বানাবেন যাতে সেটা টিপিকাল না লাগে?

বিখ্যাত কোন একটি টিপিকাল শৌনেন আনিমে (ধরে নিলাম ওয়ান পিস) নিন। সেখান থেকে “গ্রেটেস্ট জলদস্যু হতে চাই” রিপ্লেস করে বসিয়ে দিন “গ্রেটেস্ট টিচার হতে চাই”। নাকামা রিপ্লেস করুন স্টুডেন্ট দিয়ে, শত্রু রিপ্লেস করুন স্কুলের ফ্যাকাল্টি দিয়ে। অবশ্যই শত্রুদের মাঝেও কেউ কেউ হিরোর পক্ষে থাকবে, এবং নাকামারা শুরুতে হিরোকে এক্সেপ্ট করতে পারবে না। এটাও রুলের মধ্যেই পড়ে। হিরো হবে কেয়ারফ্রি এবং যা হতে চায় সেটা হওয়ার পূর্বশর্তেই গোড়ায় গলদ থাকবে (পাইরেটের সাঁতার না জানা, অথবা টিচারের এডুকেশন ব্যাকগ্রাউন্ড জঘন্য হওয়া)। তার কাজকর্ম দেখে নাকামাদের মাথায় হাত পড়া বাধ্যতামূলক, কিন্তু যখন সিচুয়েশন একেবারেই হাতের বাইরে চলে যাবে, তারা বলবে “ইন লিডার/টিচার উই ট্রাস্ট”। এবং দুনিয়ার সব ব্লাণ্ডার ঘটিয়েও আলটিমেটলি যখন প্রোটাগনিস্ট মন থেকে একাগ্রচিত্তে কোন কাজ করতে বসবে নাওয়া খাওয়া ভুলে, ঠিকই অসম্ভবকে সম্ভব করবে। রেসিপি শেষ, আর রেসিপি ফলো করে আমরা পেয়ে গেলাম, এক টুকরো শিক্ষক, থুক্কু, “গ্রেট টিচার ওনিযুকা”।

এখন ওনিযুকা ফ্যানরা আমাকে শাপশাপান্ত শুরু করার আগেই বলি, টিপিকাল শৌনেন তো কোন খারাপ কিছু না! আমি উপরোক্ত রেসিপি দিয়ে ওনিযুকাকে খারাপ বলছি না, আনিমেটা আমার বেশ ভাল লেগেছে। বরং কথাগুলোকে পজেটিভলি এভাবেও নেয়া যায়, সাধারণ শৌনেন প্যাটার্ন ফলো করেও আনিমেটা আমাদের সমাজে প্রচলিত অনেক সমস্যা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিতে পেরেছে, তাদের বাহবা প্রাপ্য।

ইন্ট্রোতেই বলে দিয়েছি ওনিযুকার কাহিনী কেমন হতে পারে, আর বলার দরকার আছে মনে করছি না। শুধু কিছু পয়েন্ট উল্লেখ করব,

স্টুডিও পিয়েরট এর তৈরি আনিমেটা সেই ১৯৯৯ সালের, আর্ট সেরকম, এটা মাথায় রেখে দেখতে বসলে ভালই লাগে।

এত পার্ভি জিনিসপাতি মাঝেমাঝে ভালই বিরক্তিকর লেগেছে, তবে মনে হয়না সেটা তেমন বেশি মানুষকে ভুগিয়েছে।

জাপানের হাইস্কুলের মেয়েরা মনে হয় সবাই এরকম হাড়বজ্জাত, নইলে মাঙ্গাকা মেয়েদের দেখতে পারে না। একেবারে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত জ্বালায়ে শেষ করসে -_-

লাস্ট এপিসোডটা এরকম ফালতু না হলেও পারত। পুরো ৪২ টা এপিসোড ভালই দেখলাম, লাস্টে এসে এমন একটা এন্ডিং দিল :/

যাহোক, ওভার অল আমার মনে হয় সবারই ভাল লাগার মত আনিমে এটি, রিকমেন্ডেড।

“শৌওয়া ও গেনরোকু আমলের ভালবাসার যুগ্ম মৃত্যু- রাকুগোর মাধ্যমে”; রিভিউ লিখেছেন ইশমাম আনিকা

rakugo

আমার এক বান্ধবী মাঝেমাঝে একটা কথা বলত, “পরীক্ষার সময় দেয়ালের দিকে তাকিয়ে বসে থাকাও অনেক ইন্টারেস্টিং একটা কাজ বলে মনে হয়।” কথাটা শতভাগ সত্যি। এবং এই কথামতই, সারাটা বছর পার করে অবশেষে এই ডিসেম্বর মাসে এসে দেখলাম “শৌওয়া ও গেনরোকু আমলের ভালবাসার যুগ্ম মৃত্যু- রাকুগোর মাধ্যমে”।

আমি সাধারণত কমফোর্টেবল ফিল করি দুই ধরণের আনিমে নিয়ে কথা বলতে গেলে, একটা হল যেখানে কিছুই ঘটেনা, আরেকটা যেখানে আসলেই কিছু ঘটে না :3 সত্যি কথা, হাইস্কুলের পোলাপান দৌড়াদৌড়ি করে বেড়াচ্ছে, মজা করে বেন্তো খাচ্ছে; বা র্যান্ডম কিশোর বালক অ্যাডভেঞ্চার করতে বেরিয়ে দুনিয়া জয় করে ফেলছে, কিংবা খুব থ্রিলিং কম্পিটিশন বা মারামারি চলছে, এমন আনিমে নিয়ে কথা বলাটা আমার কাছে বেশি সহজ মনে হয়। কিন্তু যেখানে আসলেই কিছু ঘটছে, এবং জিনিসটা বাস্তবের খুব কাছাকাছি, সেটা নিয়ে কথা বলাটা বেশ কঠিন হয়ে যায়। তারওপর যখন আনিমেটার মূল থিমই হয় গল্প বলা নিয়ে, সেখানে অনেক খুঁটিনাটি ব্যাপার নিয়ে আলোচনা করাটা গিভেন হয়ে যায়, আর সেটা করতে গেলে গবেষণা করা লাগবে একগাদা, যেটা খুবই বিরক্তিকর একটা বিষয় (আমার জন্য)।

তাহলে কথা যেটা ওঠে এখানে, আমি তাও শৌওয়া নিয়ে লিখছি কেন, আর লিখছিই যখন, কোনরকম গবেষণা না করেই বা লিখছি কেন।

কারণ একটাই, আনিমেটা বেশ ভাল লেগেছে। শুধু ভাল লাগলে হয়ত লিখতে ইচ্ছে হত না, ইচ্ছেটা জেগেছে কারণ আনিমেটার প্লট খুব ইউনিক লেগেছে। বর্তমানের “ইসেকাই”, “তাইমু তোরাবেরু”, “আইদোরু”, বা অযথা এচ্চি দিয়ে ভরে রাখা আনিমের যুগে হাতেগোণা যে কয়টা আনিমে দেখলে মনে হয়, “নাহ! এ জিনিস তো আগে কোনদিন দেখিনি!”- তার মাঝে শৌওয়া অন্যতম।

কাহিনী মূলত জাপানের পটভূমিতে রাকুগো শিল্পের উত্থান পতন নিয়ে, কিন্তু এর পাশাপাশি খুব সুন্দরভাবে এগিয়ে চলেছে এই শিল্পের সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত একদল মানুষের জীবনের কাহিনী; তাদের ব্যক্তিগত জীবন ও রাকুগো মিলেমিশে যেন একাকার হয়ে গেছে।

আনিমেটা আমি এতদিন শুরু করতে পারছিলামনা কারণ টাইটেলটা পড়ে এবং মানু্ষের রিভিউ পড়ে একটু ভয় কাজ করছিল যে সেই শৌওয়া আমলের প্লট, তাও আবার জাপানের বিবর্তন টাইপ জিনিস নিয়ে কারবার, যদি বোর হয়ে যাই! অনেকেই হয়ত এটা ভেবে “ভারী” এই আনিমেটা দেখেননি, বা আমি একাই হয়ত “ইয়োতারো”, কিন্তু আনিমেটার ৪৭ মিনিটের প্রথম এপিসোড দেখেই আমার সেই ধারণা ভেঙে গিয়েছিল। আর যাই হোক, শুরুটা খুবই ইন্টারেস্টিং। কেবল জেল থেকে ছাড়া পেয়ে এনার্জেটিক এক ছেলে গিয়ে সরাসরি পায়ে পড়ল রাকুগো শিল্পীর- দ্যাটস সামথিং ইউ ডোন্ট গেট টু ওয়াচ এভ্রিডে!!

আনিমের কাহিনী বেশ ভাল লেগেছে, অনেক কিছুই দেখার সময় আগে থেকেই আন্দাজ করে ফেলা যায়, তা মিলেও যায়, কিন্তু মজাটা এখানেই। আপনি জানবেন এরপর এটা আসছে, কিন্তু সেটা কিভাবে সম্ভব তা আপনি ঠাহর করতে পারবেননা। তারপর যখন জিনিসটা ঘটবে, তখন অবাক হয়ে ভাববেন যে এটাই ঘটার কথা ছিল আসলে। এই ব্যাপারটা আমার কাছে আনিমের একটা প্লাস পয়েন্ট বলে মনে হয়েছে। আর সাথে তো রাকুগোর স্কিলফুল পারফরমেন্স গুলো আছেই, যা নিয়ে আমার আগেও অনেকে অনেক কিছু বলেছেন, ভয়েস একটরদের মুন্সিয়ানা গবেষণা করে বা অ্যানিমেশন আর মিউজিকের কম্বিনেশন কিভাবে নিখুঁতভাবে ম্যাচ করানো হয়েছে তা নিয়ে তথ্যবহুল পোস্ট দিয়েছেন, তাই আমি আর কষ্ট করলাম না। খালি দুটো কথা বলব, অ্যানিমেশন এখানে গৌণ ব্যাপার, কাহিনীতে একবার ঢুকে গেলে কিসের অ্যানিমেশন, কিসের কি! ওপেনিং গানটা বেশ ভাল লেগেছে, জাদুভরা কণ্ঠ।

“শৌওয়া গেনরোকু রাকুগো শিনজু” হয়ত আমার টপ ফেভারিট বা এমন কিছু হয়ে ওঠেনি, কিন্তু তাতে কি, ভাল তো লেগেছে, সেটাই যথেষ্ট। আর আমার মনে হয় একবার দেখা শুর করলে আনিমেটা যে কারও ভাল লাগবে।

Short Review- 91 Days; লিখেছেন ইশমাম আনিকা

009cd1af841aa7a8a5c5938af483bf6d

ব্যস্ততার কারণে পোস্ট লেখা হয়ে ওঠে না আজকাল, তবে সিজন শেষে এই একটা অ্যানিমে নিয়ে পোস্ট দেয়া আসে।

৯১ দিন। নামটা দেখে কিছুই গেস করা যায় না। পিভি দেখেও কিছুই বুঝিনি (যদিও পিভি এবং ওপেনিং গানটাতে পুরো অ্যানিমের কাহিনীই বলে দিয়েছে ধরতে গেলে)। দেখা শুরু করার পর বুঝলাম যে এটা একটা প্রতিশোধ নেয়ার কাহিনী। পুরনো কনসেপ্ট, ছোটবেলায় এক পরিবারের একটা বাচ্চাকে বাদে বাকি সবাইকে খুন করে রেখে যায় দুর্বৃত্তরা, এরপর সেই বাচ্চা বড় হয়ে প্রতিশোধ নেয়ার আশায় ঘুরতে থাকে। আসলেও তাই। কোন নতুনত্ব নেই প্লটে।

কিন্তু আপনি যদি ভেবে থাকেন টিপিকাল কোন, “ভানেত্তি!! তুই আমার পরিবারকে শেষ করে দিয়েছিস, আমি তোকে শেষ করব!!” টাইপ কোন কাহিনী দেখবেন, এখানেই করছেন সবচেয়ে বড় ভুলটা। আমি একটা টিভি সিরিজ খুব পছন্দ করি, সিরিজের নামই “রিভেঞ্জ”। সেখানেও মেয়েটা তার বাবার সাথে হওয়া অন্যায়ের প্রতিশোধ নিতে শত্রুদের সাথে মিশে এক হয়ে যায়। এত মানু্ষের সাথে তার চলাফেরা, কিন্তু দিনশেষে তার যে একাকীত্বটা, যে হাহাকারটা প্রতিনিয়ত তার মনে বেজে চলে, সেটা অনুভব করে প্রচণ্ড কষ্ট লেগেছিল। অনেকদিন পর সেই অনুভূতিটা আবার ফিরে পেলাম এই অ্যানিমে দেখে। হাসিমুখে নিজের পরিবারের খুনীদের সাথে কথা বলা, বন্ধুর মত আচরণ করা, এর চেয়ে বড় শাস্তি একটা মানু্ষের জীবনে আর কি হতে পারে! অ্যাঞ্জেলো লাগুসাকে প্রতিবার দেখে তাই খারাপ লেগেছে। আর, মানুষের মন তো! অভিনয় কি আসলেই অভিনয়ে আটকে থাকে? অভিনয় করতে করতে সেটা কি কিছুটা হলেও সত্যি হয়ে যায় না?

স্টুডিও শুকার অরিজিনাল অ্যানিমে এটি, স্টুডিওর অন্য সব কাজ দেখলাম ব্রেইনস বেইজের ক্যানসেল করে দেয়া ভাল ভাল টাইটেলের রিজ্যুম, যেমন নাতসুমে বা দুরারারা। তাদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ, আমার অতিরিক্ত পছন্দের দুটি অ্যানিমের সিক্যুয়াল বের করার জন্য, এবং এই অসাধারণ অরিজিনাল অ্যানিমেটি উপহার দেয়ার জন্য। সবদিক থেকে অ্যানিমেটা পারফেক্ট। কাহিনী, এক্সিকিউশন, যেখানে যে জিনিসটা যেভাবে দেয়া দরকার, ঠিক সেভাবে দিয়েছে। ডার্ক সেটিং, চমৎকার ওএসটি, পুরানো আমলের সাথে মানানসই আর্টওয়ার্ক- সবমিলিয়ে অসাধারণ। আর শেষের চার-পাঁচটা এপিসোড আমার দেখা সেরা এপিসোড গুলোর মাঝে উপরের দিকে থাকবে, এভাবে অ্যানিমে ক্যারেক্টারের প্রতি অ্যাটাচমেন্ট আমার ক্ষেত্রে অন্তত অনেক কম হয়।

যারা মাফিয়া বা ডার্ক থিমের অ্যানিমে পছন্দ করেন, তাদের তো ভাল লাগবেই, তবে আমার মনে হয় এটা সব মানুষের ভাল লাগার মত একটা অ্যানিমে। ১২ পর্বে এরচেয়ে ভালভাবে আর কিছু মনে হয় না দেখানো সম্ভব।

Movie Time With Yami – প্ল্যানেটারিয়ানঃ নক্ষত্রের স্বপ্ন (টিং টং মুভি টাইম)

Screenshot_2016-09-01-20-35-04

জীবনে দুবার প্ল্যানেটোরিয়ামে যাওয়ার সুযোগ হয়েছে; একবার দেশে ভাসানী নভোথিয়েটারে (সম্ভবত নামটা পালটে অন্য কিছু রাখা হয়েছে এখন, আমার মনে নেই), আরেকবার কলকাতার বিড়লা প্ল্যানেটোরিয়ামে। এর মাঝে ভাসানী নভোথিয়েটার এর কথা আমার সারাজীবন মনে থাকবে। ঋতুর পালাবদল, রাতের আকাশে কন্সটেলেশন, গ্রহ নক্ষত্রের আবর্তন, বা ডায়নোসর যুগ- সবটাই এত সুন্দর ও বাস্তবসম্মতভাবে উপস্থাপন করা হয়েছিল সেই অর্ধগোলাকার থিয়েটারে, মনে হচ্ছিল যেন আমি আসলেই সেই জায়গাগুলোতে পৌছে গেছি। খুবই চমৎকার অভিজ্ঞতা ছিল।

তো সেই নভোথিয়েটার এর কাহিনী অ্যানিমে গ্রুপে কেন বলছি? বলার কারণ হল, কাল রাতে দেখে শেষ করেছি ৫ এপিসোডের ওএনএ, “প্ল্যানেটারিয়ানঃ চিসানা হোশি নো ইউমে”।

মেলোড্রামা সাধারণত আমাকে অতটা টানে না, কেঁদেকেটে ভাসিয়ে ফেলার মত তো অবশ্যই না। কেই এর ভিজ্যুয়াল নভেল অ্যাডাপ্টেশন কয়েকটা দেখেছি, ভালই লেগেছে, তাই প্ল্যানেটেরিয়ান দেখা শুরু করেছিলাম। এবং এই অ্যানিমের যে পার্টটা আমাকে মুগ্ধ করেছে, সেটা হল ওই নভোথিয়েটারে ইউমেমির পারফরমেন্স। হঠাৎ দেখে মনে হচ্ছিল, যেন আমি নিজেই বসে আছি ওই থিয়েটারে দর্শকের আসনে। পুরনো মুগ্ধতাটা নতুন করে ফিরিয়ে এনে দিয়েছে এই অ্যানিমেটা।

অ্যানিমের কাহিনী পোস্ট অ্যাপোক্যালিপ্টিক পৃথিবী, যেখানে বোমা হামলার কারণে বেশিরভাগ শহরই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। এমনই এক শহরের একটি প্ল্যানেটোরিয়ামে ইউমেমিকে একা ফেলে তার মালিকেরা সবাই চলে গিয়েছে নিরাপদ আশ্রয়ে। ইউমেমি খুবই লয়াল, তাই সে সেই পরিত্যক্ত নভোথিয়েটারেও রুটিন মেনে তার দায়িত্ব পালন করে যায়; কাস্টোমার আসুক, বা না আসুক।

এমন অবস্থায় হঠাৎ একদিন প্ল্যানেটোরিয়ামে একজন কাস্টোমার এসে হাজির হয়। প্রাণ বাঁচানোর লড়াইয়ে ব্যস্ত সেই কাস্টোমারকে কী ইউমেমি দেখাতে পারবে তারাভরা আকাশ?

ডেভিড প্রোডাকশন নামটা শুনলে আমার মাথায় সবসময় যে অ্যানিমেটার নামটা আসে, তা হল জোজোর অদ্ভুতুড়ে কীর্তিকলাপ। জানা নেই, তাদের অন্য কোন মোয়ে অ্যানিমে আছে কিনা, কিন্তু প্ল্যানেটেরিয়ানের আর্ট দেখে কেন যেন বিশ্বাস হচ্ছিল না, এই স্টুডিওই জোজো বানায়! জোজোর আর্ট ভালই লাগে আমার, আর্টটা ওভার দ্য টপ বলেই একই স্টুডিওর করা মোয়ে ডিজাইন দেখে অবাক হয়েছি। ইউমেমিকে অতিরিক্ত কিউট লেগেছে, যদিও শুরুতে তার একঘেয়ে গলায় টানা কথা বলে যাওয়া শুনতে অতিরিক্ত বিরক্ত লাগছিল, কিন্তু পারফরমেন্স এর সময় তার গলাটা অতিরিক্ত সুন্দর আর সাবলীল লাগছিল। আর সেটাকে যোগ্য সাপোর্ট দিয়েছে অ্যানিমের মনোমুগ্ধকর আর্ট। অ্যানিমেটার সেরা মুহূর্ত নিঃসন্দেহে ইউমেমির পারফরমেন্স। আর শেষটা আমি যেমন আশা করেছিলাম হুবহু তেমন হয়েছে, তবে ভাল লেগেছে।

মাত্র ৫ পর্বের অ্যানিমে, গড়ে ১৮ মিনিট করে পড়ে একেক পর্বে, দেড় ঘন্টা হাতে থাকলে দেখে ফেলতে পারেন এই সুন্দর ওএনএ টা।

planetarianfeat

Movie Time With Yami – Nerawareta Gakuen (টিং টং মুভি টাইম)

tumblr_np3536OnP71tdyyjco1_500

আজ সকালে দুই ঘন্টা ক্লাস সাসপেন্ড ছিল (যা ইতিহাসের পাতায় ঠাঁই পাওয়ার মত বিরল ঘটনা আমাদের জন্য), ভাবলাম দুই ঘন্টা লেন্থের কোন মুভি দেখে ফেলি। ফোনের গ্যালারি ঘেটে পেলাম নেরাওয়ারেতা গাকুয়েন, ১ ঘন্টা ৪৬ মিনিটের অ্যানিমে মুভি। তো শুরু করলাম দেখা।

শুরুতেই মার্কিং দিয়ে দেই, বাকি পোস্টে কী আছে হিন্ট পেয়ে যাবেন।
ভিজ্যুয়াল- ৯/১০
ওএসটি- ৮/১০
ক্যারেক্টার ডিজাইন- ৯/১০
ভয়েস অ্যাক্টিং- ১০/১০
স্টোরি- ৩/১০
ক্যারেক্টার- ০/১০

গ্রাফিক্স /ভিজ্যুয়াল/আর্টওয়ার্ক, জিনিসটাকে যাই বলা হোক না কেন, মোদ্দা কথা হল অসম্ভব সুন্দর। মাকোতো শিনকাই ফিল্ম ভেবেছিলাম শুরুতে, পরে দেখি সেটা নয়। সাকুরার গাছ ন্যাড়া করে ঢেলে ঢেলে পাঁপড়ি ছেড়ে দিয়েছে কিছুক্ষণ পরপর, স্কুল, বাড়ি, সমুদ্র বা তাদের আজগুবি জায়গা গুলা, সব দেখে চোখে ধাঁধাঁ লেগে গেছে। ক্যারেক্টার ডিজাইন খুবই সুন্দর, ছেলেগুলো হ্যান্ডসাম, মেয়েগুলো কিউট। ব্যাকগ্রাউন্ডে যাই বাজছিল, কর্ণকুহরে ভালই লেগেছে।

গেল প্রশংসা। এখানেই শেষ। আর কিছুই নাই প্রশংসা করার মত। এবার বিরক্তির পালা শুরু।

আমি অ্যানিমে মুভির ব্যাপারে মোটামুটি সর্বগ্রাসী। ছাইপাঁশ যাই হোক গিলে ফেলি। তাই এই মোটামুটি ছাইপাঁশ লেভেলের মুভিটাও গিললাম। আই মিন সিরিয়াসলি?!! কাহিনীটা আসলে কী ছিল? আদৌ কি কোন কাহিনী ছিল? সারাক্ষণ তো দেখলাম “কেতাই কেতাই” করেই সময় পার করে দিল। তাও যদি কারণটা বলত। আগের বছর কোন এক ঘটনা ঘটেছিল স্কুলে, সেজন্য স্কুলে ফোন আনা নিষিদ্ধ। ঠিক আছে, কোন সমস্যা নেই, আমাদের যুগে বাই ডিফল্ট এটাই নিয়ম ছিল। কথা হচ্ছে যে কাহিনীটা কী হয়েছিল যে এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হল? পুরো মুভিতে আমি এটা জানার জন্যই বসে ছিলাম; আফসোস, কারণ বলার ধার দিয়েও গেল না। কোন কারণে সো কল্ড ফিউচার আর্থলিং এলিয়েনদের টেলিপ্যাথিতে কিছু একটা সমস্যা হয়, সেজন্য তারা এসে একটা স্কুলে সেলফোন ব্যান করতে লেগে গেল, হাউ প্যাথেটিক ক্যান ইউ গেট?

অ্যানোয়িং ক্যারেক্টার লাইফে কম দেখিনি, কিন্তু একটা মাত্র ১ ঘন্টা ৪৬ মিনিটের মুভির প্রতিটা ক্যারেক্টারকে এত বেশি বিরক্তিকর লাগবে, কোনদিন ভাবিনি। নাতসুকি মেয়েটার প্রব্লেমটা কী?!!
স্টেটমেন্ট ১- জাপানী ছেলেরা হয় বেশি ভাল।
স্টেটমেন্ট ২- না হলে জাপানী মেয়েরা বেশি শয়তান।
স্টেটমেন্ট ৩- ওভাররেটেড সুন্দেরে একটা দেয়া লাগবে তাই দিয়ে রেখেছে স্টোরিতে।

আই মিন, এই মেয়ে তার ছোটবেলার “বন্ধু” সেকিকে যেভাবে জ্বালিয়ে গেছে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত, এরকম প্রতিবেশী থাকলে আমি কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে বাড়ি ঘিরে রাখতাম। ছেলেটা আবার সেগুলা সহ্য করে মেয়েটাকেই স্যরি বলে, ঢঙের শেষ নাই।

আর শেষ পর্যন্ত কাহিনী কী দাঁড়াল? বাবা তোমরা তোমাদের মাদার মুন ছেড়ে মাদার আর্থের কেতাই ব্যান কইরা কী হাসিল করলা? এ বিগ ফ্যাট জিরো -_-

যাই হোক, আমার মেজাজ খারাপ হয়েছে, তাই একটু র‍্যান্টিং করলাম, এমনও হতে পারে যে আমি আসলে কাহিনী বুঝিনি তাই না বুঝে কথা বলছি, তবে আমার মনে হয়না এই কাহিনীর আগামাথা খুঁজে পাওয়া সম্ভব। কেউ পেয়ে থাকলে কমেন্ট সেকশনে আমার কনফিউশন গুলো ক্লিয়ার করে দেবেন অনুগ্রহ করে।