Baccano! [রিভিউ] — নাফিস মুহাইমিন

ফ্লাইং পুসিফুটের শেষ যাত্রাটা এমন হবে ভাবতে পারেনি কেউই। ১৯৩২ এর শুরুতে ট্রেনটার করুণ প্রত্যাবর্তন। বাকরুদ্ধ না হয়ে উপায় থাকে না।

উপায় তেমনি থাকে না মাঝসমুদ্রে। এক জাহাজে। সময়টা অষ্টাদশ শতাব্দী। একের পর এক অ্যালকেমিস্ট উধাও হয়ে যাচ্ছে। অমরত্বের দাম তবে কি এতটাই চড়া?

মাফিয়া এবং সাইকো। স্ট্রিট থাগ এবং কাপল। অ্যালকোহল কিংবা নিছক পাগলামো।

টারময়েল বটে গল্পটা…….. ইটালিয়ান ডিকশনারিতো তাই বলে।

Baccano

গল্পের মূল পটভূমি গ্রেট ডিপ্রেশন চলাকালীন ইউনাইটেড স্টেটস। সোর্স রিয়ো’গো নারিটার লেখা নভেল। টুকরো টুকরো ঘটনা-অনুঘটনা জোড়া দিয়ে কাহিনীর প্রগ্রেশন। ‘পাল্প ফিকশন’-এর কথা মনে পড়ে যায়। অফ-ট্র্যাক ন্যারেটিভ স্টাইলের মুভি দিয়ে অমর হয়ে গেছেন কোয়েন্টিন টারান্টিনো। একুশ ভল্যুমের নারিটার নভেলগুলোও একই ধাঁচে লেখা। পুরো গল্প না পড়া পর্যন্ত সঙ্গতি মিলবে না। ২০০২ এ প্রথম ভল্যুম ‘দ্যা রোলিং বুটলেগস্’ পুরস্কারপ্রাপ্ত হয়। বেশ পরে বের হয় দু’ ভল্যুমের ম্যাঙ্গা। নারিটার আরেকটা নভেল ‘দুরারারা!’ও অ্যানিমে অ্যাডাপ্টেশন পায়। ভালো বই পাঠককে তৈরি করে। শ্রোতা তৈরি করে ভালো মিউজিক। আর ‘বাকানো!’ দেখতে হলে দর্শককে তৈরি হয়ে আসতে হয়।

অধিক সন্ন্যাসীতে গাঁজন সবসময় নষ্ট হয় না। এত বিরাট কাস্টিং নিয়ে রেকর্ড করে ফেলেছে অ্যানিমেটা। ক্যারেক্টারগুলোর ডিপিকশন বেশ ভাবায়। মর মানুষ নিজেদের যেভাবে দেখতে চায় তাই চিত্রিত করেছেন কাহিনীকার। ফ্রয়েডীয় কোনো ব্যাখ্যা থাকতে পারে। আত্মবিশ্বাস আর স্বকীয়তা চরিত্রগুলোর উপজীব্য। তবু তাদের সম্পাত বিন্দু একটাই ― ব্যাডাসারি।

ডার্ক স্টোরির জন্য অ্যানিমেশন যেমনটা হওয়া দরকার, আলো ছায়ার খেলা। গোর সিনগুলোতে ইম্প্রেসিভ কিছু ছিল। ইম্প্রেসিভ ছিল আরো অনেক কিছুই। পাপেট মাস্টাররা চেয়েছিলেন দর্শকরা যেন স্টোরিটাকেই মূল্যায়ন করে, সেভাবেই সবকিছু হ্যান্ডল করা। ব্রেইন’স বেস কমপ্লেইন করার কোনো সুযোগ রাখেনি। সুযোগ রাখেনি সেইয়ুরাও। নতুন পুরোনো শিল্পীদের আন্তরিকতা টের পাওয়া যায়। কখনো প্রিফার করি না যদিও, বাকানো! -এর ইংলিশ ডাবিং যথেষ্ট স্ট্রং। ক্যারেক্টারগুলোর পরিপূর্ণতা আর কোনো কিছুতে হতে পারত না।

আর্লি থার্টিজ’ ভাইবটা ভালোই ফুটে উঠে বাকানো! -এর সাউন্ডট্র্যাকে। অডিওফাইল হওয়া সত্ত্বেও জ্যাজ নিয়ে কখনো আলাদা করে সময় দিইনি। অন্তত সিরিজটা দেখার আগেতো নয়ই। ভালো লেগেছে পিয়ানো সোলোগুলো। ‘কিয়োকু নো তেগামি’ ট্র্যাকটা একধরণের শূন্যতা তৈরি করে। লিখে বোঝানো সম্ভব হবে না কখনোই। আবার ‘ইন দ্যা স্পিক ইজি’ খুব সুন্দর হ্যাপি সোলো। আরো ভালো লেগেছে ‘অ্যালভিয়্যার নো ব্রুস’, ‘উতাকাতা নো ইনোরি’, ‘রিঙগো নো এ নো উয়ে নো রাকুগাকি’। স্যাটায়ার ধাঁচের বেশ কিছু ইনস্ট্রুমেন্টাল আছে। ব্যাকগ্রাউন্ডে চমৎকার শোনায়।

ওপেনিং নিয়ে আলাদা কিছু না বললে রিভিউটাই মিথ্যা হয়ে যাবে। ‘গানস্ অ্যান্ড রোজেস’ অবকাশটা তৈরি করে নেয় এভাবেই। প্যারাডাইজ লাঞ্চের করা ট্র্যাকটা সেরা কিছু ওপেনিং থিমের একটা অ্যানিমের ইতিহাসে। কম্পোজিশনে এতটা পারফেকশন আনা যায় না আর কোনোভাবে। ইউটিউব লিঙ্ক : https://youtu.be/OOZ1hsb8smQ
এন্ডিং থিম কিছুটা স্লো পেসড, মাইল্ড। ওদা কাওরির ‘কলিং’ তেমন আপিল তৈরি করতে না পারলেও একেবারে খারাপ না। অ্যানিমের সাথে এটা খাপ খাইয়ে নিয়েছে সফলভাবে।

বাকানো! -কে আর দশটা অ্যানিমে দিয়ে মাপতে গেলে হয় না। গল্পটা একজন শিল্পীর পরিণত মানসিকতার ফসল। অল্প কিছু শব্দে যার পর্যায় বলে ফেলা যায় না। বলে ফেলা যায় না ক্যারেক্টারগুলোর অসাধারণত্ব। বলে ফেলা যায় না অ্যানিমেটার স্ট্রেন্থ। বলে ফেলা যায় না এটার জন্য ভালো-লাগাগুলো।

খুব অপেক্ষা করে আছি সেভেন্টিন্থ এপিসোডের জন্য। অপেক্ষা ফুরোচ্ছে না।

Baccano! [রিভিউ] — Mehedi Zaman

Baccano

Baccano!
পর্বঃ ১৩
জনরাঃ অ্যাকশান, কমেডি, সুপারন্যাচারাল, হিস্ট্রিকাল (Historical), মিস্ট্রি (Mystery), সেইনেন

আচ্ছা আপনারা কি “Pulp Fiction” মুভিটা দেখেছেন? যদি দেখে থাকেন তাহলে বলি, এনিমে জগতের “Pulp Fiction” হল Baccano! এবার যারা মুভিটা দেখেননি তাদের জন্য বলি, আমরা যখন Puzzle সাজাই তখন একটা ছবি পুরো এলোমেলো থাকে; কিন্তু সাজানো শেষ হলে পুরো ছবিটি পরিষ্কার হয়ে যায়। Baccano!-ও ঠিক এরকম। পুরো সিরিজটি একদম শেষ পর্যন্ত এলোমেলো থাকে, তবে শেষের দিকে মোটামুটি ধারনা পাওয়া যায় কোন পর্বের কোন অংশটি কোন অংশের পরে। কি? বেশ মজাদার মনে হচ্ছে? তাহলে দেরি না করে দেখে ফেলুন অসাধারন এই এনিমে যার নাম Baccano!

কাহিনীঃ ৯/১০
যেহেতু কাহিনীর শুরু এবং শেষ আপনার নিজেকে বের করতে হবে তাই আমি এর কাহিনীর সারসংক্ষেপ এখানে বলবো না। বরং আমার কাছে কাহিনীটি কেমন লেগেছে সেই সম্পর্কে বলি। যখন Baccano! দেখা শুরু করি তখন প্রথমেই মনে হচ্ছিলো এপিসোড নাম্বার ঠিক আছে তো? তারপর দুই-তিনটা এপিসোড দেখার পর বুঝলাম এইটার স্টোরিলাইন এলোমেলো। পুরো সিরিজটা যখন শেষ হল তখন বুঝলাম যে কাহিনীটা ততটা প্যাঁচালো না যতটা আমি ভেবেছিলাম। যাইহোক, এখানে Don-দের নিয়েও কিছু ব্যাপার-স্যাপার আছে যা একে দিয়েছে আরেকটি নতুন মাত্রা। এপিসোডের পেসিং নিয়ে কোনো সমস্যা ছিল না এবং পুরো কাহিনীটাই বেশ চমকপ্রদ ছিল। তাই রেটিংও ৯ পাওয়ার যোগ্য।

চরিত্রঃ ৮.৮/১০
প্রথম কথা, Baccano! এনিমেটিতে অনেক চরিত্র রয়েছে; এমনকি প্রধান চরিত্রেরও কমতি নেই। সবার কথা বলা সম্ভব না হলেও দুটো চরিত্রের কথা না বললেই নয়; Isaac এবং Miria। পুরো এনিমেটাতে হাস্যকর সব কাজ করে নিজেদেরকে বিখ্যাত চোর বলে দাবি করে এই দুজন। আবার, বিভিন্ন জায়গায় এরাই কাহিনীর মূল হোতা হয়ে দাঁড়ায়। মূলত, পুরো সিরিজটাকে মজাদার করার কাজ ছিল মনেহয় এই দুজনার। এছাড়াও মূল চরিত্রের প্রত্যেকেই অনন্য বৈশিষ্ট্যের অধিকারী ছিল এবং চরিত্রের ক্ষেত্রে তেমন কোনো খুঁত না থাকলেও কিছু চরিত্রকে কিছুটা খাপছাড়া মনে হয়েছিল। তবে সবমিলিয়ে এই দিকটার বিচারেও এনিমেটি প্রশংসার দাবি রাখে।

এনিমেশনঃ ৯.৩/১০
এনিমেশনের কথা বলতে গেলে এককথায় অসাধারণ। অ্যাকশান সিনগুলো বেশ নিখুঁত ছিল এবং যেহেতু কাহিনীটি Chicago এবং New York – দুই জায়গা মিলিয়ে সেট করা হয়েছিল তাই উভয় শহরের প্রত্যেকটি বৈশিষ্ট্যই পূর্ণাঙ্গভাবে ফুটে উঠেছিল। কিছু শ্বাসরুদ্ধকর মুহূর্তের এনিমেশন আরো বেশি চমকপ্রদ করতে সক্ষম হয়েছিল এনিমেটি। তাই এখানে একটু বেশি রেটিং পাওয়াটাই স্বাভাবিক।

সাউন্ডট্র্যাকঃ ৮.৮/১০
Baccano!-এর সাউন্ডট্র্যাকের মধ্যে যেমন Jazz আছে তেমনি বেশ কিছু সাধারণ মিউজিকেরও ছোঁয়া আছে। এর ওপেনিংটি আমার বেশ প্রিয় কেননা সেখানে পুরো এনিমেটির ভাবমূর্তি ফুটে উঠে। এন্ডিংটাও মোটামুটি ভালই ছিল। Cowboy Bebop এর মতো এখানেও Jazz মিউজিক এর উদাহরণ থাকায় এনিমেটি একটু বেশিই অনন্য হয়ে উঠেছে।

এঞ্জয়মেন্টঃ ৯/১০
Baccano! আমি একদিনে দেখে শেষ করি এবং সত্যি কথা বলতে এর আনন্দদানে কোনো ঘাটতি ছিল না। প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত আমি উৎসুক চোখে এনিমেটি দেখেছি। বিশেষ করে কমেডি সিনগুলো অনেক মজার ছিল আর অ্যাকশান এর কথা তো বললামই না। সবমিলিয়ে Baccano! আমার অনেক প্রিয় একটি এনিমে।

সবকথার শেষ কথা হল আমি যেরকম Baccano! দেখে পুরো অন্যরকম আনন্দ পেয়েছি সেটি পেতে হলে এনিমেটি না দেখে উপায় নেই। যদি জিজ্ঞেস করেন সবমিলিয়ে আমি কত রেটিং দিব, তাহলে আমার উত্তর হবে ৮.৬/১০ যা আমার মতে Baccano! পাওয়ার যোগ্য।

এক ব্যক্তির অসাধারণ উক্তির দ্বারা আমি আমার রিভিউ শেষ করব। “Cast aside the illusion that there is a beginning and end to the story. The story has no beginning. And it has no end. All there is, is a performance of people connecting, living, influencing each other, and departing.”- Gustav St. Germain; যা Baccano! এনিমেটির ক্ষেত্রে পুরোপুরি খাটে।

রিভিউ কন্টেস্ট এন্ট্রি [২০১৫] #৫: BACCANO! — Rafiul Alam

BACCANO! রিভিউ:

“I don’t understand any of it,but it’s absolutely incredible!”

-Miria Harvent

এই রকম সাধারণ একটা কোট দিয়ে শুরু করলাম কেন?ওয়েল….প্রথম দুইটা এপিসোড দেখার পর এই ছিল আমার অনুভূতি।নন লিনিয়ার ন্যারাটিভে স্টোরি সবসময়ই বুঝতে খুব কষ্টসাধ্য কিন্তু উপভোগ্য হয়।আনিমে জগতে এমন বর্ণনাশৈলীর সবচে দর্শকপ্রিয় শো হল বাকানো।বিখ্যাত হলিউড মুভি পাল্প ফিকশন যদি আপনার ভাল লেগে থাকে,তাহলে এই আনিমে আপনার ভাল লাগবেই।মাফিয়া বিষয়ক অন্যতম আনিমে,আনিপ্লেক্স স্টুডিও প্রযোজিত,তাকাহিরো ওমরির পরিচালনায় ২০০৭ সালে প্রচার করা হয় ১৩ এপিসোডের এই সিরিজটি।পরের বছর রিলিজ হয় ৩ এপিসোডের বাকানো স্পেশাল।ও হ্যা…আনিমেটার ডাবড ভার্শন দেখার জন্য অনুরোধ করব।

Synopsis:আগে কিছু বিষয় বলে নেই….১ম এপিসোডে কিছু বিচ্ছিন্ন সময়কালের ঘটনা দেখাবে,ফলে কি ঘটবে,তা আপনি জানেন।কিন্তু কিভাবে ঘটবে,সেটা জানতে আপনাকে শেষ এপিসোড পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।এইরকম প্রথম কয়েকটি এপিসোডে আপনি কয়েকটি ভিন্ন স্থান এবং সময়ের  ঘটনা দেখতে পারবেন।পরবর্তী এপিসোডগুলোতে নিজেই ডট মিলাতে পারবেন,বুঝতে পারবেন যে চরিত্রগুলো একে অপরের সাথে কোন না কোনভাবে সংযুক্ত।এবং সব মিলিয়ে মুলত একটি ঘটনাই বিভিন্ন চরিত্রের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখানো হচ্ছে।তো যাই হোক,একেবারে শুরুতে ক্যারল নামের এক ছোট্ট মেয়েকে কিছু বই ঘাঁটতে দেখা যায়।এরপর স্ক্রিনে আগমন ঘটে এক রাশভারী বয়স্ক লোকের।বুঝা যায় যে ক্যারল তার অ্যাসিস্ট্যান্ট,এবং তিনি কোন পত্রিকার বড় কর্তা।গল্পের ন্যারাটর তিনিই।ঘটনা হল ১৯৩১ সালের,ডালাস জেনোয়ার্ডের খোঁজে মাফিয়া বাহিনী ও তার বোন ইভ জেনোয়ার্ড। এদিকে লাইব্রেরীতে লাক গ্যান্ডর ও ফিরোর উপর বন্দুকের হামলা চালানো হয়।কিন্তু বুলেট তাদের শরীরের কোন ক্ষতি করতে পারে না।অন্যদিকে আন্তঃপ্রদেশ ট্রেন দ্যা ফ্লায়িং পুসিফুট শিকাগো হতে নিউইয়র্কের দিকে যাত্রা শুরু করে,সেই ট্রেনের যাত্রী হিসেবে আসার কথা আইজ্যাক ও মিরিয়ার।কিন্তু ট্রেনের কিছু যাত্রীর একেক রকমের উদ্দেশ্য,সবই পুরো ট্রেনের বাকি যাত্রীদের ঘিরে।এখন তারা কেউই অন্যদের উদ্দেশ্য জানে না।ফলাফল,সব মিলিয়ে এক ভয়ানক রক্তাক্ত পরিস্থিতি।রেল ট্র্যাকের পাশে এক হাত ছেড়া অবস্থায় পাওয়া যায় ল্যাড রুশোকে।কিভাবে তার এ অবস্থা হল?এই রকম অনেকগুলি ঝামেলাপূর্ণ ঘটনা নিয়ে আনিমেটির গল্প।এক্ষেত্রে আনিমেটির নাম স্বার্থক।ইতালিয়ান ভাষায় BACCANO শব্দের অর্থ হল ছোট খাট ঝামেলা।

Characters Setup:অনেকগুলো চরিত্র।অটিস্টিক  চরিত্রেরও অভাব নেই।এবং মজার ব্যাপার হল এতে কোন নায়ক বা ভিলেন নেই।প্রত্যেকটি চরিত্রের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে গল্পটি দেখানো হয়েছে।চরিত্রগুলোর মাঝে রয়েছে আইজ্যাক ও মিরিয়া,আনিমে জগতের অন্যতম ফানি কাপল।যারা কিনা মাফিয়ার কাছ থেকে অনায়াসে টাকা ছিনতাই করতে পারে,যাদের নামে পুলিশের ওয়ারেন্ট।কিন্তু তাদের সরল সহজ মন মানসিকতা মুগ্ধ করবে।ফিরো প্রোচাইনেযো,সুদর্শন,দয়ালু এই ১৮ বছর বয়সীকে ক্যারল বলেছে,”He is kind of main character-ish”.ফিরোর মেন্টর,মাইযা আভারো।চশমা পড়া এই লোক দেখতে সাধারণ হলেও আসলে তা নয়।গ্যান্ডর ফ্যামিলির হেড লাক গ্যান্ডর।জেনোয়ার্ড পরিবারের দুই ভাই বোন ডালাস ও ইভ।ডালাস হল ঝামেলা পাকানো বখে যাওয়া ছেলে।অদ্ভুত ক্ষমতার অধিকারী সিযলার্ড কোয়াটস,এবং তার সহকারী এনিস।হিংস্র,সাইকো খুনি ল্যাড রুশো,ও তার প্রেমিকা লুয়া ক্লেইন।অপার্থিব আক্রোব্যাটিক ক্ষমতাসম্পন্ন আরেক হিংস্র,বিকারগ্রস্ত লোক ক্লেয়ার ভিনো স্ট্যানফিল্ড।কথা বলতে অক্ষম এক মেয়ে চানে ল্যাফোর্ড,যার অতীত মোটেই সাধারণ নয়।ছোটবেলার দুই বন্ধু,মুখে তরোয়ালের ট্যাটু করা জ্যাকুযি স্পলট ও এক চোখ হারানো নিস হলিস্টোন।ছোট ছেলের মত দেখতে হলেও আসলে ছোট নয়,চ্যাযলো মেয়ার,তারও অতীত ঘটনা রয়েছে।আরও অনেক চরিত্র রয়েছে,আনিমে অ্যাডাপশনে কয়েকজনকে বাদ দেয়া হয়েছে।এতগুলো চরিত্রের কাহিনী যখন দেখতে থাকবেন,কনফিউজড হলেও প্রতি এপিসোডে নতুন কিছু বুঝতে পারবেন।

Theme setup,music and animation:১৯৩০ দশকের আমেরিকা,আনিমের প্রেক্ষাপট হিসেবে একেবারেই বিরল।যার কারণেই এই আমার কাছে এই আনিমের এত কদর।সেই সময়কার মাফিয়া বিজনেস,এক পরিবারের সাথে আরেক পরিবারের দ্বন্দ,বিশাল অঙ্কের ডলারের বাউন্টি এবং স্বার্থ হাসিলের জন্য কূটচাল খুবই উপভোগ্য ভাবে তুলে ধরা হয়েছে।এছাড়াও ওই সময়ের ক্ষমতা ও আতঙ্ক তৈরির যন্ত্র, টমিগানের ব্যবহার,নতুন আবিষ্কৃত v16 ইঞ্জিনের গাড়ী,জ্যাজ মিউজিক,শিল্পায়নের প্রভাব এবং মিলিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন,সব দিক থেকেই ৩০ দশকের আমেরিকান জীবনযাত্রার হুবহু প্রতিফলন তুলে ধরতে অসাধারণভাবে সক্ষম হয়েছে আনিমেটি ডিরেক্টর ওমরি তাকাহিরোর নেতৃত্বে।এবার আসি মিউজিকে,জ্যাজ মিউজিকের ব্যাবহার আর কোন আনিমেতে এত সুন্দর লাগেনি।একেবারে মানানসই ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক।ওপেনিংটা আমার শোনা সবচে প্রিয় ওপেনিং গুলোর মাঝে একটা।এন্ডিংটাও বেশ ভালো ছিল।আর্টওয়ার্ক আর আনিমেশন হল আ্যনিপ্লেক্স আ্যট ইটস বেস্ট।চরিত্রগুলো খুবই সুন্দর লেগেছে এই আর্টওয়ার্কে।এবং তাদের জীবন্ত এক্সপ্রেশনগুলো।

পরিশেষে বলতে চাই,আমি কোন আনিমে দেখার সময় তার ডেপথ কিরকম সেই ব্যাপারটা সবার আগে বিবেচনা করি।তো সেইদিক বিচারে এই আনিমে আমাকে এমনভাবে সন্তুষ্ট করেছে যে আমার দেখা টপ ১০ টি আনিমের মধ্যে থাকবে।তাই যারা এখনও দেখেননি,তারা চটজলদি দেখে ফেলুন!

Overall Rating:

Mal Rating: 8.6
My Rating: 9.5

5 Baccano

Baccano! – জাপানিজ এনিমে এর পাল্প ফিকশন —- লেখক ব্লগার স্বাধীনতার বার্তা

মূল লেখা http://www.somewhereinblog.net/blog/Hyperactive/29653634

Baccano
এনিমে সিরিজ নিয়ে কিছু পোস্ট দেয়ার ইচ্ছা ছিল বেশ কয়েক মাস ধরে। কয়েক মাস আগে একটা দিয়েছিলাম। আজকে আরেকটা নিয়ে হাজির হলাম। দেখা যাক কেমন হয়।
যে এনিমেটা নিয়ে লেখা ইচ্ছা তার নাম Baccano! এটি মূলত সেম নামের একটা লাইট নভেল সিরিজ এর এডাপ্টেশন। এখানে লাইট নভেল নিয়ে কিছু বলা প্রয়োজন। এটার বাংলাদেশ কাউন্টারপার্ট এর সাথে তুলনা করলে বলা যায় সেবা প্রকাশনীর বইগুলোর মত যা তরুন বা কিশোর/কিশরীদের দিকে লক্ষ্য রেখে বাজারে ছাড়া হয়। কিন্তু সেবার বই গুলো ভাবানুবাদ হলেও জাপানিজ লাইট নভেল তাদের অনন্যতার জন্য বিখ্যাত আর সাইজ ২০০ পৃষ্ঠা এর আশেপাশে বা বেশি হয়। এমনকি অনেক নতুন নতুন আইডিয়া লাইট নভেল রাইটার দের কাছ থেকে বের হয় বলে শোনা যায়।
Baccano! এর রাইটার এর নাম Ryohgo Narita। সারাজীবনে ৫টা সিরিজ লিখছেন। সেগুলো হল Baccano!, Vamp!, Durarara!!, Ersusa Ohashi, Hariyama-san. এর মধ্যে Baccano! আর Durarara!! জাপানে বেস্টসেলার। ইউএস এও মার্কেটেড হয়েছে।

নামকরন

Baccano একটি ইটালিয়ান শব্দ। যার ইংরেজি প্রতিশব্দ Silly Commotion বা Stupid Commotion। বাংলায় আক্ষরিক অনুবাদ করলে হবে হালকা ঝামেলা। তবে সম্ভবত উটকো ঝামেলা বললে ভাল শোনায়।

এনিমে এডাপ্টেশন

একচুয়াল লাইট নভেল চলেছে ২০০৩ সাল থেকে। সিরিজটি এখনো চলছে জাপানে। এর মধ্যে কয়েকটা বই এর এডাপ্টেশন হল এনিমে সিরিজটি। যে বইগুলো থেকে এটার কাহিনী নেয়া হয়েছে সেগুলো নিচে দিয়ে দিলামঃ

#১। 1930 The Rolling Bootlegs
#২। 1931 Local Chapter The Grand Punk Railroad
#৩। 1931 Express Chapter The Grand Punk Railroad
#৪। 1932 Drug & The Dominos

এখান থেকে মোট ১৬পর্বের একটা ছোট সিরিজ তৈরি করা হয়েছে।
বাকি ১৩টা বই এখনো আন এডাপ্টেড অবস্থায় পড়ে আছে। যারা অলরেডি দেখে ফেলেছেন তাদের জিভে নিশ্চয় জল আসছে। যদি বাকিগুলো এডাপ্টেড হত!

কাহিনী সংক্ষেপ

সাল অনুসারেই কাহিনিগুলো বর্ননা করি।

১৭১১

এখানে দেখা যায় Advenna Avis নামক এক জাহাজে একদল এলকেমিস্ট শয়তান কে পৃথিবীতে নামিয়ে নিয়ে আসে। তাদের সবারই অমরত্ম লাভ করার ইচ্ছা। শয়তান তাদেরকে দেয় গ্র্যান্ড প্যানাসিয়া বা এলিক্সার অব ইমর্টালিটি। ফলে সবাই ইমর্টাল হয়ে যায়। আর যে এলকেমিস্ট এর মাধ্যমে শয়তান নেমে আসে সেই Maiza কে বানানোর প্রক্রিয়া জানিয়ে দেয় এবং আকজন ইমর্টালকে শুধু আরেকজন ইমর্টালই মারতে পারবে। Maiza ঠিক করে, কাউকেই বলবে না কীভাবে এটা বানানো সম্ভব। অন্যদিকে আরেক ইমর্টাল এলকেমিস্ট Szilard Quates এই এলিক্সার বানানোর প্রক্রিয়া জানতে মরিয়া হয়ে উঠে।

১৯৩০

নিউ ইয়র্কে এক বাবার বখাটে সন্তান Dallas Genoard এলাকায় বিভিন্ন মাফিয়া পরিবারের নাম ভাঙ্গিয়ে খেতে থাকে। এদিকে এই ছেলের সাথে অন্যান্য মাফিয়ে গোষ্ঠির একটা ক্যাচাল লেগে যায়। এই ক্যাচালেয় একসময় ইমর্টালরা জড়িয়ে পড়ে। নাকি ইমর্টালদের ক্যাচালে মাফিয়া জড়িয়ে পড়ে????? শুরু হয় স্টুপিড কমোশান!

১৯৩১

এ সময় দেখা যায় ট্রান্সকন্টিনেন্টাল ট্রেন The Flying Pussyfoot নিউ ইয়র্ক সিটির উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে। কিন্তু একই সময়ে ট্রেন এ উঠে পড়ে একদল রেবেল যারা এ ট্রেনকে জিম্মি করে তাদের নেতাকে ছাড়িয়ে আনার স্বপ্ন দেখে। আরেকদল সন্ত্রাসী – যারা শুধু একটা ত্রাস সৃষ্টি করার জন্য ট্রেনে আসে। এদের নেতা Ladd Russo। একজন প্রফেশনাল হিটম্যান যে খুন করতে করতে সাইকোতে পরিণত হয়েছে। আরেকদল ডাকাত যাদের উদ্দেশ্য ট্রেনে ডাকাতি করা। আরো আসে একজন এসাসিন, আরেকজন ইনফর্মেশন ব্রোকার এবং একজন ইমর্টাল। সবাই মিলে আরেকটা স্টুপিড কমোশান সৃষ্টি করে!

১৯৩২

Eve Genoard তার নিঁখোজ বড় ভাই Dallas Genoard কে খুজে বের করার জন্য ইনফর্মেশন ব্রোকারদের সাহায্য নেয়। অন্তদিক এক মাফিয়া বস হঠাৎ করেই আরেক মাফিয়ে ফ্যামিলি এর বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে। কিন্তু এই অভিযানের সাথে কোন একভাবে ডালাস জড়িত। কীভাবে? আরেকটা ছোট স্টুপি কমোশান শুরু হয়।

ক্যারেক্টার এর বর্ননা দিলাম না। দিতে গেলে পুরা কাহিনী বলে দিতে হবে। এর চেয়ে ক্যার‍্যাক্টারদের একটা স্নিক পিক নেন নিচের ছবি থেকেঃ

Baccano 2

এভালুয়েশন

বইগুলো একের পর এক প্রকাশিত হয়েছে। অর্থাৎ একটা বই এর কাহিনীর সাথে অন্য বই এর কাহিনী এর সামান্য যোগসূত্র ছাড়া আর কিছু নেই। কিন্তু এনিমে এডাপ্টেশন পুরাই অন্য লেভেলের হয়েছে। ১৯৩০-৩২ এর তিনটে কাহিনীই একসাথে শুরু হবে। একটু পর পর স্টোরির একেকটা লেয়ার আনলক হতে থাকবে। আর শেষে গিয়ে সবগুলো স্টোরি ভিউয়ার দের কাছে ক্লিয়ার হয়ে যাবে।
অন্য কোন এনিমে এর সাথে এটার তুলনা চলে না। সম্ভবত এটার তুলনা হয়েছে সিনেমা জগতের দিকপাল পাল্প ফিকশন এর সাথে। বলা হয়েছে কিছুটা এভাবে, “পাল্প ফিকশন যেভাবে সিনেমার স্বাদকে পরিবর্তিত করেছে ঠিক সেভাবে বাক্কানো হবে এমন একটা এনিমে যা এনিমে দেখার স্বাদ পরিবর্তিত করবে…… শুরু থেকে শেষ হয়ে শেষ না হওয়া এনিমেটা একটা ক্রেজি রাইড এ দর্শকদের নিয়ে যাবে…… বাক্কানো এনিমেতে সত্যিই ইউনিক কিছু প্রদান করে।”
এবং আমি বলছি এটার ইউনিকনেস মোটেও মিথ্যে না।
১৬ পর্বের ছোট এই সিরিজটা আমি একটানা বসে দেখে ফেলেছি। বলা যায় মন্ত্রমুগ্ধের মত।

যারা দেখতে চান তাদের জন্য ডাউনলোড লিঙ্কঃ
ডিভিডি রিপঃ http://thepiratebay.se/torrent/4940044/
৭২০পিঃ http://thepiratebay.se/torrent/6746582/