অনিক মিয়ার ক্ষুদে মাঙ্গার বাক্স, পর্ব #০৪

মাঙ্গার নাম : ?????
চাপ্টার : ১৫ টি
মাঙ্গাকা : Oimo
ধরন : রহস্য, শিশু (পোকা) নির্যাতন
 
কীট-পতঙ্গ নিয়ে সাতোশি কিজির এক অদ্ভুত আকর্ষণ কাজ করে। একদিন হঠাৎ অজানা এক পোকার দেখা পায় সে। কিন্তু পোকার মুখটা দেখতে মেয়ে মানুষের মতো। পোকাটিকে সে বাড়িতে নিয়ে আসে। পোকা নিয়ে আকর্ষণ থাকলেও পোকার প্রতি খুব যে যত্ন নেয় তা নয়। উলটো পোকার সাথে যাচ্ছেতাই আচরণ করাটাই তার স্বভাবের সাথে যায়। কিন্তু এই খারাপ আচরণকে অদ্ভুত মেয়ে পোকাটা অস্বাভাবিক হিসাবে নেয় না। কারণ জন্মের পর সাতোশিকেই শুধু দেখেছে পোকাটি। ভালো-মন্দের তফাৎ করার মতো জ্ঞান এখনো হয়নি। লোকচক্ষুর আড়ালে অজানা পোকা পালন, অন্যদিকে ভিনগ্রহী সদৃশ কিছু উটকো পতঙ্গ মেয়ে পোকাটিকে খুঁজে চলেছে দিক-বিদিক। কে এই মেয়ে পোকা? কেনই বা একে হন্যে হয়ে খুঁজছে অন্য কিছু পোকা? সাতোশির সাথে পোকার সম্পর্ক আগাবে কীভাবে এসব নিয়ে গল্পের ফোকাস।
মাঙ্গাটা পড়ে অধিকাংশের ভালো লাগবে, এমনটা আমি আত্মবিশ্বাসের সাথে দাবি করতে পারছি না। কিন্তু এ ধরনের অতিপ্রাকৃত, অদ্ভুতুরে অভিজ্ঞতা এখন পর্যন্ত তেমন পাইনি আমি। পোকা নিয়ে একটা গা ঘিনঘিন ব্যাপার তো এখানে রয়েছেই, আবার সামনে কী হবে এমনটা ভেবে থ্রিল নেওয়ার অবকাশও রয়েছে মাঙ্গাটিতে। তাই কিছুটা বিরল গল্প অবলোকনের অভিজ্ঞতা সঞ্চারে এই মাঙ্গাটি পড়ার সুপারিশ করব সবাইকে।
 
✪জানলে ভালো, না জানলে ক্ষতি নাই✪
পৃথিবীতে প্রায় সাড়ে ১৮ হাজার প্রজাতির এবং তার চেয়ে অধিক রঙের মিশেলের প্রজাপতি রয়েছে। প্রজাপতির রঙবেরঙের ডানা কিন্তু প্রকৃতপক্ষে স্বচ্ছ। কাইটিনের তৈরি এই ডানাগুলো আসলে হাজার হাজার ক্ষুদ্র আঁশ দিয়ে গঠিত। বিভিন্ন অ্যাঙ্গেলে সূর্যের আলো এই আঁশগুলোতে প্রতিফলিত হয়েই অজস্র প্যাটার্নের রঙিন অবস্থার সৃষ্টি করে।
 
 

অনিক মিয়ার ক্ষুদে মাঙ্গার বাক্স, পর্ব #৩

মাঙ্গার নাম: Oyaji
চাপ্টার: ২৪টি
মাঙ্গাকা: Tsuru Moriyama
ধরন: হাস্যরসাত্মক, নাটকীয়, জীবনবোধক
 
কুমাদা এক বিশালদেহী, ভয়ংকর দেখতে মানুষ। কোনো এক কারণে বহু বছর জেলে কারাভোগ করতে হয়েছে। কিন্তু লোকটা খুব ভালো। এতগুলো বছর পরিবারের খবর রাখতে পারেনি। তাই বাবার অনুপস্থিতিতে সন্তানেরা উচ্ছন্নে গিয়েছে। একজন হয়েছে এলাকার পাতি মাস্তান, যদিও বড় মাস্তান দেখলেই ভয়ে পালায়। আরেকজন প্রেম জীবন নিয়ে ঝামেলায় জানটাই হারাতে বসেছে। অন্যদিকে সংসারের ভাড়ে স্ত্রী হারিয়েছে তার রূপ-লাবণ্য, যৌবন, মানসিক শান্তি।
অনেক বছর পর ঘরে ফিরেছে কুমাদা। এত বছর পরিবারে না থাকার ফলে দায়িত্ব-কর্তব্য কিছুই পালন করতে পারেনি। তাই যতটুকু সামর্থ্য আছে, তা এবার ঢেলে দিতে চায় পরিবারের জন্য। কিন্তু কুমাদার চেহারা-সুরত দেখে নিজের সন্তানেরাই তাকে নিয়ে অস্বস্তিতে আছে। বাপজান আবার কথাও বলে অতি অল্প। সারাদিন ঢোক ঢোক করে মদ গিলে। কিছুতেই বল-ব্যাটে মিলছে না দুই পক্ষের। তাদের বনিবনা হওয়া এবং স্বল্পভাষী পিতার অস্বাভাবিক সব উপায়ে পরিবারকে রক্ষা করা নিয়েই মাঙ্গাটি।
 
✪জানলে ভালো, না জানলে ক্ষতি নাই✪
“ও-য়াজি” শব্দটি মূলত “ও-য়াচিচি” শব্দের অপভ্রংশ। যা আবার “চিচিহুয়ে” হতে এসে থাকতে পারে(?)। সবগুলোর আক্ষরিক অর্থ “পিতা/বাবা”। ওয়াজি শব্দটা তার মধ্যে সবচেয়ে casual । “বুড়া বাপ” এর জাপানি সংস্করণ বলা যায়। বাপ ছাড়াও অপরিচিত চাচা, মামা বয়সী লোকজনকেও ও-য়াজি বলে অনেকে। প্রায় সবাই হয়ত জানেন ব্যাপারটা তাও জানালাম।
 

অনিক মিয়ার ক্ষুদে মাঙ্গার বাক্স, পর্ব #২

মাঙ্গার নাম: Koukoku no Shugosha
চাপ্টার : ৩৪টি
মাঙ্গাকা: Satou Daisuke
ধরন: ঐতিহাসিক, সামরিক, ফ্যান্টাসি
 
দুই প্রতিবেশী দেশ কৌকোকু এবং তেইকাকু। ক্ষমতা ও প্রভাবের লড়াইয়ে লড়ে চলেছে তারা। তবে এতদিন কূটনৈতিক পর্যায়ে থাকলেও তা শীঘ্রই মাঠের লড়াইয়ে রূপ নেয়। উত্তরের হীম শীতল অঞ্চলের দখলটা নিয়ে শুরু হয় প্রথম ঝামেলা। শুধু মানুষ নয়, সঙ্গে লড়ছে ঘোড়া, লড়ছে বাঘ সদৃশ বিড়ালেরা।
হঠাৎ একদিন তেইকোকুর পূর্ব ডিভিশনের সেনারা আচমকা হামলা করে কৌকোকুর উত্তরাঞ্চল প্রতিরক্ষায় নিয়োজিত বাহিনীর উপর। ভারী, উন্নত অস্ত্র ও সমর কৌশলের সামনে তাসের মতো ভেঙ্গে পড়ে কৌকোকুর প্রাথমিক প্রতিরক্ষা। শত্রুর প্রথম ধাক্কায় উদভ্রান্তের মতো রণে ভঙ্গ দিয়ে পালাতে থাকে কৌকোকুর সেনারা। কিন্তু সুশৃঙ্খলভাবে পিছু হটে ক্ষয়ক্ষতি কমাতে দরকার এমন এক ইউনিটের, যারা মূল বাহিনী নিরাপদে সরার আগ পর্যন্ত শত্রুর অগ্রাভিযান রোধ করে রাখবে। সামরিক ভাষায় যাকে বলে Rear guard action । এই কাজে ডাক পড়লো ফার্স্ট লেফটেন্যান্ট শিঞ্জো নাউয়ের ব্যাটালিয়নের। প্রথম আক্রমণে তার ব্যাটালিয়নের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা হয় মৃত, আহত, নয়তো বন্দী। সেনা সংখ্যাও হ্রাস পেয়েছে ব্যাপক। তবু সাকুল্যে ৬০০ সৈন্যের এই ব্যাটালিয়নকে রুখে দিতে হবে শত্রুকে। ৪০ হাজার সেনার বিশাল শত্রুকে বেধে রাখা লাগবে যতক্ষণ না তাদের বাহিনী নিরাপদ পশ্চাদপসরণ সম্পন্ন করে। প্রয়োজনে শেষ সিপাহির প্রাণের বিনিময়ে হলেও লড়ে যেতে হবে এই ইউনিটকে।
এই অসম যুদ্ধে আদৌ কতক্ষণ টিকবে শিঞ্জোর ব্যাটালিয়ন, কৌকোকুর মূল বাহিনী নিরাপদে পিছু হটতে পারবে কি না – এই কাহিনি নিয়েই মাঙ্গাটি।
মাঙ্গাটায় যদিও কিছু কিছু সময় ভাগ্যের খেল দেখে বাড়াবাড়ি লাগতে পারে, তবে যুদ্ধে ভাগ্য বিধাতার সহায়তার অনেক ইতিহাস, পৌরাণিক গল্পই তো আমরা জানি। কাহিনি এমনিতে যথেষ্ট বাস্তবিক ও চিত্তাকর্ষক। বিশুদ্ধ যুদ্ধ নিয়ে মাঙ্গা বিরল। যদিও এনিমের তুলনায় পরিমাণটা একটু বড়। সেরকম একটার নমুনা এই মাঙ্গাটি।
 
✪জানলে ভালো, না জানলে ক্ষতি নাই✪
মাঙ্গাটির প্রেক্ষাপট ঊনিশ শতকের শেষ দিকে রুশ-জাপানি সাম্রাজ্যবাদী স্বার্থ সংশ্লিষ্ট দ্বন্দ্বের একটা অল্টারনেট সেটিং এর উপর ভিত্তি করে গড়া। এশিয়াতে রাশিয়ার পূর্বমুখী বিস্তার এবং জাপানের মেইজি যুগ পরবর্তী সময়টার একটা বিকল্প রূপ দেখানো হয়েছে গল্পে। ইতিহাস প্রেমীদের জন্য একটা আকর্ষণীয় দিক হতে পারে মাঙ্গাটা। উপরে মাঙ্গাকার নাম হিসাবে সাতো দাইসুকের নাম লিখেছি। ইনি কিন্তু সেই একই ভদ্রলোক যিনি Highschool of the Dead এর মূল গল্প লেখক। অনেকেই জানেন তিনি হৃদরোগে ভুগে মারা গিয়েছেন ২০১৭ সালে। ভদ্রলোক অল্টারনেটিভ ইতিহাস নিয়ে বিভিন্ন গল্প লিখতে খুব পছন্দ করতেন। এটা ছাড়াও এরকম কিছু মাঙ্গায় কাজ করেছেন তিনি, যদিও সেগুলোর অনুবাদ না থাকায় নেটে নেই বললেই চলে। অন্যদিকে পোস্টের মাঙ্গাটির আঁকিয়ে হিসাবে কাজ করেছেন Itoh Yu । ২০০৪ সালের মাঙ্গা হিসাবে স্ট্যান্ডার্ড আর্ট বলা যায়।
 

অনিক মিয়ার ক্ষুদে মাঙ্গার বাক্স, পর্ব #১

মাঙ্গার নাম: Saltiness
চাপ্টার: ৪৪ টি
মাঙ্গাকা: Furuya Minoru
ধরন: হাস্যরসাত্মক, সেইনেন, স্লাইস অফ লাইফ
 
হিমুকে তো চিনেন? হুমায়ুন আহমেদের হলুদ হিমু। সেই ভবঘুরে, উদ্ভট চালচলন, মাথা চক্কর দেওয়া থতমত খাওয়া দার্শনিক কথাবার্তার হিমু।
Saltiness মাঙ্গার কেন্দ্রীয় চরিত্র তাকেহিকো নাকামুরা কিছুটা হিমুর মতোই, কিন্তু হিমু না। কর্মহীন , ঘুরঘুর, খাইখাই করা সমাজের অকর্মা লোকটি “জীবন” কে বশীভূত করে ফেলেছে বলেই বিশ্বাস করে। দুনিয়ার সকল প্রকার দুঃখ, কষ্ট, ভেজালের ধরাছোঁয়ার বাইরে সে। তয় একদিন বোধদয় হয় প্রিয় বোনের মাথা থেকে বোঝা কমাতে নিজে থেকে কিছু করতে হবে। যতদিন সে তার বোনের ঘাড়ে চেপে থাকবে, বোনের আর বিয়ে করা হবে না, সংসার পাতা হবে না। সে যেই “জীবনকে” বশীভূত করে ফেলেছিল বলে ভেবেছিল, সেই জীবনের বাস্তবতা এক ধাক্কায় তাকে চুরমার করে দিল। “জীবন” নামের এক হিংস্র অস্তিত্বের সম্মুখীন হলো সে । এই হিংস্র জিনিসটাকে বধ করার সুবুদ্ধি হবার সাথে সাথেই তার মাথায় ঢুকে আরেক কুবুদ্ধি। হঠাৎ করেই ঘর থেকে পালায়। গ্রাম ছেড়ে টোকিওর উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। দাড়াতে হবে নিজের পায়ে। টোকিও পৌছে সাক্ষাৎ হয় নানা কিসিমের weirdo দের সাথে। আর এইসব অস্বাভাবিক প্রাণীরা একত্রিত হয়ে যখন নানা তরিকায় জীবিকা নির্বাহের সন্ধান চালানো শুরু করলো, হাস্যকর সব ঘটনাও অবতীর্ণ হতে থাকল।
মাঙ্গার আর্ট সুন্দর, পরিচ্ছন্ন। বিশেষ করে এই মাঙ্গাকার খোঁচা খোঁচা দাড়িওয়ালা চেহারা আঁকার দৃশ্যের ভক্ত হয়ে গেছি। ৪৪ চাপ্টারের কাহিনি আগেই শেষ। সম্প্রতি ইংলিশ অনুবাদ সমাপ্ত হয়েছে। তাই আপনার হাতে সময় কম থাকলে, নিখাদ বিনোদন পেতে চাইলে আজই শুরু করে দেন Saltiness!