এনিমে সায়েন্স ৩ – স্পাইরাল ভার্সেস এন্টি স্পাইরাল

এসে গেছি আবারও এনিমে সায়েন্স সেগমেন্ট এর তৃতীয় পর্ব নিয়ে।

আগের পর্ব দুটিতে স্পাইস এন্ড উলফ ওরফে মসল্লা এবং নেকড়ের প্রথম ৬ টি পর্বের প্রেক্ষাপটে মধ্যযুগের অর্থনৈতিক অবস্থার ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছিল।

AS3

এবারের পর্বে থাকবে Tengen Toppa Gurren Lagann এর স্পাইরাল এবং এন্টি স্পাইরালের সায়েন্টিফিক বর্ণনা (এনিম লজিকে) এবং সেই সাথে দুই ক্ষমতার মধ্যে বিরোধের কারনও বর্ণনা করা হবে।

মাস দুয়েক আগে এনিমখোর গ্রুপের একজন সদস্য Gurren Lagann দেখে চমৎকৃত হয়ে নিজের রিএক্সন পোস্টে স্পাইরাল ক্ষমতা আসলে কি জিনিস সে ব্যাপারে প্রশ্ন করেছিল। কমেন্টে আমি মোটামোটিভাবে একটা ব্যাখ্যা দিয়ে দিয়েছিলাম।এই লেখাটা মূলত সেই কমেন্টের ব্যাখ্যার সামান্য কিছুটা বিস্তৃতি।

যাই হোক, তাহলে শুরু করি আমাদের আজকের সেগমেন্ট।

তবে তার আগে…..

যারা যারা এনিমটি দেখেননি তাদের জন্য স্পয়লার এলারট>>>>>

.

.

.

.

.
স্পাইরাল ক্ষমতা

স্পাইরাল পাওয়ার হল পাওয়ার অফ ইভল্যুশন বা বিবর্তন এর ক্ষমতা যার উপর নির্ভর করে সমগ্র ইউনিভার্স উন্নতি করছে। মহাবিশ্বের সমস্ত কিছুই স্পাইরালের মত ঘুরছে, যেমনঃ বিগ ব্যাং এর পর থেকে সমগ্র ইউনিভার্স, গ্যালাক্সিগুলো, গ্যালাক্সির ভিতরের সোলার সিস্টেমগুলো, সোলার সিস্টেমগুলোর ভিতরের সূর্যগুলো, এর চারপাশের গ্রহগুলো, উপগ্রহগুলো এবং এমনকি আমাদের শরীরের ইলেকট্রনগুলোও ঘূর্ণায়মান। বলাই বাহুল্য যে আমাদের শরীরের ডিএনএ এর কাঠামোও স্পাইরাল বা প্যাঁচানো সিঁড়ির মত। অর্থাৎ সবকিছুই স্পাইরাল অবস্থায় আছে। স্পাইরাল শক্তি দিয়ে ইভল্যুশন বা উন্নতি সম্ভব যার কারনে তারা মেটালের রোবট বা গানম্যানগুলোর মধ্যেও এত দ্রুত বার বার কাঠামোগত পরিবর্তন আনতে সক্ষম হয় এবং তাও আবার এটমিক বা আনিবিক লেভেলে। আর একটি ড্রিল যা কিনা স্পাইরাল হিসেবে ঘুরে তা দিয়ে যে কতকিছু করে ফেলা যায় সেটা তো আমরা দৈনন্দিন জীবনেই দেখছি!

এই কারনেই মনে হয় এনিমের নাম হয়েছে গুরেন লাগান। খুব সম্ভবত এর আসল অর্থ হল ঘুরান লাগান! আপনারা দেখবেন যে এনিমে বার বার ড্রিল মেশিনকে বা ড্রিলিং করাকে বেশ হাইলাইট করা হয়েছে। ড্রিল মেশিন যেহেতু ঘুরিয়ে ঘুরিয়েই লাগায় সেক্ষেত্রে বলতেই হবে যে এনিমটির নামকরন বেশ সার্থক হয়েছে। :v

এছাড়াও স্পাইরাল ক্ষমতার একটি বড় উদাহরণ হল আমাদের এসাইনমেন্টগুলোকে স্পাইরাল বাইন্ডিং করা। দেখবেন যে সাধারণ স্টাবলারের পিন মেরে দেওয়ার থেকে স্পাইরাল বাইন্ডিং করে দিলে টিচারেরা তুলনামূলক খুশি হয়। এ থেকেই বাস্তব জীবনে স্পাইরাল ক্ষমতার কিছু আভাস আমরা পেতে পারি!  😛

 

 

 

এন্টি স্পাইরাল ক্ষমতা

এন্টি স্পাইরাল হল স্পাইরালের ঠিক উল্টো। স্পাইরাল যেখানে সব সময় উন্নতির দিকে যেতে চায় এন্টি স্পাইরাল সেখানে হতে চায় স্থবির। অর্থাৎ উন্নতির ঠিক উল্টো দিক বা অবনতিই হল এন্টিস্পাইরাল।

এখন প্রশ্ন হল যে স্পাইরাল এবং এন্টি স্পাইরালের এই দ্বন্দ্ব কিভাবে শুরু হল?

আসলে যারা এখানে এন্টি স্পাইরাল তারা নিজেরাও এক সময় স্পাইরাল প্রাণী ছিল। তারা প্রযুক্তিতে উন্নতির চরম শিখরে গিয়ে জানতে পারে যে এই উন্নতিই মহাবিশ্বের ধংসের কারন হয়ে দাঁড়াবে। স্পাইরাল প্রাণীরা স্পাইরাল শক্তি দ্বারা বিবর্তিত হতে হতে এত উন্নত হয়ে যাবে যে একটা সময় ইন্ডিভিজুয়াল একেকটা সত্ত্বা একেকটা গ্যালাক্সির মত কাজ করবে। অর্থাৎ একটি মানুষ তখন একটি গ্যালাক্সির মত শক্তিশালী হয়ে যাবে! সেই গ্যালাক্সিগুলো একটি আরেকটির আকর্ষণ শক্তির টানে মিশে গিয়ে সুপার ব্ল্যাক হোল তৈরি করবে যা মহাবিশ্বের বাকি পদার্থগুলোকেও শুষে নিতে থাকবে। এভাবে সমগ্র ইউনিভার্স ধ্বংস হয়ে বিগ ব্যাং এর পূর্ববর্তি অবস্থা অর্থাৎ প্রাইমরডিয়াল বা প্রিমরডিয়াল ফায়ার বলে পরিনত হয়ে যাবে।

এই কারনে তারা নিজেদের ধ্বংস ঠেকানোর জন্য তাদের গ্রহের সকল উন্নত প্রাণীদেরকে চিরদিনের জন্য নিদ্রায় পাঠিয়ে দেয় যাতে করে আর কোন ইভল্যুশন বা উন্নতি না হয় তাদের। এভাবে তারা এন্টি স্পাইরাল বা স্থবির ক্ষমতা সম্পন্ন একটিমাত্র প্রাণীতে পরিনত হয় তাদের সকলের মানসিক ক্ষমতা এবং সকল প্রজুক্তিগত ক্ষমতা একত্রিত করে।

এরপরে এই এন্টিস্পাইরালেরা মহাবিশ্ব রক্ষা করার এই গুরু দায়িত্ব নিয়ে গরুর মত স্পাইরাল প্রাণীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা দেয়। তারপর বিশাল যুদ্ধের পর মহাবিশ্বের উন্নত প্রাণীদেরকে বিলুপ্তপ্রায় করে দিয়ে, সকল স্পাইরাল জাতিকে ওয়েডিং রিং এরপরিবর্তে সাফারিং দিয়ে বোরিং অনুন্নত একটা মহাবিশ্বকে পুরো উদ্ধার করে ফেলে!!

যদিও এরকম একটা মহাবিশ্বের কি প্রয়োজন আছে সে ব্যাপারে তারা কথা বলতে বেশ অনীহা প্রকাশ করেছিল!!!

আজকের মত আমি পাভেল আহমেদ তাহলে এখানেই শেষ করছি।

ভালো থাকুন

সুস্থ থাকুন

সুখে থাকুন

শান্তিতে থাকুন এবং…..

এনিম দেখুন

ইচ্ছা করলে মাঙ্গা আর লাইট নভেলও পড়তে পারেন

চাইলে ভিজুয়াল নভেল নিয়েওনড়েচড়ে বসতে পারেন!

এনিমে সায়েন্স ২ – স্পাইস এন্ড উলফ ট্রেনি কাহিনী ২

গত পর্বে আমরা অর্থের অর্থ, অর্থ হিসেবে কি এবং কেন ব্যাবহার করি, কিভাবে এর মূল্য নির্ধারণ এবং কেনইবা করি এসম্পর্কে জানতে পেরেছিলাম। এছাড়াও জানতে পেরেছিলাম যে কেন এই সেগমেন্টের উৎপত্তি হয়েছে এবং এর নাম কেন এনিমে সায়েন্স রাখা হয়েছে।

as2

আর যা আমরা জানতে পারিনি অর্থাৎ যেখানে এসে বিনা মেঘে বজ্রপাতের মত হুট করে সেগমেন্টটি শেষ হয়ে গিয়েছিল তা হল,

এই গুজব ছড়িয়ে লাভটা কি?

এর উত্তরে আপনাদেরকে একদিনে বেশি ডোজ না নিয়ে যা পেয়েছেন তাই নিয়ে সন্তুষ্টচিত্তে জীবনধারণ করার জন্য বিনীত অনুরোধ জানানো হয়েছিল।

কিন্তু অবশেষে অপেক্ষার পালা শেষ হয়েছে!

সময় হয়েছে আরও একটি নতুন ডোজ নেওয়ার!!

নতুন করে ডোজ দেওয়ার উদ্দেশ্যেই আমি পাভেল আহমেদ সকল সম্মানিত এনিমখোরের সামনে পুনরায় হাজির হয়েছি সেগমেন্টের ২য় পর্ব নিয়ে।

তাহলে শুরু করছি গত পর্বের সেই রহস্যঘেরা প্রশ্নটি দিয়ে যার উত্তর এখনও পর্যন্ত পাওয়া যায়নি (অন্তত এই সেগমেন্টে!)।

তবে তার আগে

যারা যারা স্পাইস এন্ড উলফ এখনও দেখেনি তাদের জন্য স্পয়লারএলারট >>>>>

.

.

.

.

.

এখন প্রশ্ন হল যে ট্রেনি সিলভার কয়েনের পিউরিটি বৃদ্ধি পাচ্ছে এই গুজব ছড়িয়ে তাদের লাভটা কি?

যখন মানুষ জানতে পারবে যে ট্রেনি সিলভার কয়েন নতুন করে ছাড়া হচ্ছে সিলভারের পরিমান বৃদ্ধি করে তখন তারা বুঝতে পারবে যে তাদের কাছে থাকা ট্রেনি সিলভার কয়েনের মূল্য খুব শীঘ্রই নিচে নেমে যাবে। এ অবস্থা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য তারা চেষ্টা করবে যত দ্রুত সম্ভব তাদের কাছে থাকা ট্রেনি কয়েন বিক্রি করে দেওয়ার যাতে করে তারা আসন্ন ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পেয়ে যায়। এমনকি ক্ষতি যাতে তুলনামূলক কম হয় সেজন্য তারা বর্তমান বাজারদর থেকে সামান্য কমেও বিক্রি করতে রাজি হতে পারে।

ওভারঅল প্ল্যানটা হল এরকম যে, মেডিও কোম্পানি যতরকমভাবে সম্ভব ট্রেনি কয়েনের পিউরিটি বৃদ্ধির গুজব বিভিন্ন ব্যাবসায়িদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে চাইছিলো। ব্যাবসায়িরা একারনে পুরানো ট্রেনি কয়েন জমানো শুরু করে দিবে। কিন্তু যখন তারা টের পাবে যে কয়েনের পিউরিটি বরং কমিয়ে দেওয়া হচ্ছে তখন তারা ওই কয়েন বিক্রির জন্য তোড়জোড় শুরু করে দিবে। এবস্থায় মেডিও কোম্পানি এক ধাক্কায় সব কয়েন কিনে নিবে। ধরা খাওয়া ব্যাবসায়িরাও কখনই তাদের এই ধরা খাওয়ার কথাটা কারও সামনে উচ্চারন করবে না তাদের প্রেস্টিজ পাংচার হওয়ার ভয়ে। এরপরে মেডিও কোম্পানি একটি বিশেষ মেথডে এই কয়েন থেকে প্রফিট করবে যে সম্পর্কে পরে আলোচনা করা হবে।

কয়েনের গুজব ছড়ানোর পিছনে খুব সম্ভব মেডিও কোম্পানির আরও একটি উদ্দেশ্য জড়িত ছিল। আর সেটি হল, রাজ্যের অভ্যন্তরে কয়েনের দাম উপর্যুপরি কমিয়ে নিয়ে আসা। যখন কোন বস্তুর সাপ্লাই অতিরিক্ত পরিমানে হয় তখন সেই বস্তুর দাম অনেক কমে যায়। কয়েনের ক্ষেত্রেও ব্যাপারটি কিছুটা সেভাবেই হয়। সাধারণত যখন একটি দেশের সম্পদের তুলনায় টাকা বা অর্থ বেশি বেড়ে যায় তখন সেই অর্থের মূল্য নিচে নেমে যায়। অর্থের মূল্য কমে যাওয়ার এই ব্যাপারটিকে মুদ্রাস্ফীতি বলে। তবে অর্থ বা মুদ্রার আধিক্যই কিন্তু মুদ্রাস্ফীতির একমাত্র কারন নয়। তবে আমরা এখানে আমরা মুদ্রাস্ফীতি নিয়ে কথা বলছি না। এখানে আমরা বলছি সাপ্লাই এর সাথে ডিমান্ডের সম্পর্ক নিয়ে। যখন সাপ্লাই বৃদ্ধি পায় তখন ডিমান্ড আস্তে আস্তে কমে যেতে থাকে। আর ডিমান্ড কমে যেতে থাকলে আস্তে আস্তে সাপ্লাই করা বস্তুর মূল্যও কমে যেতে থাকে। কারন মানুষের চাহিদার তুলায় দ্রব্য বেশি হয়ে গিয়েছে। ঠিক এই ট্রিকটিই ক্রাফট লরেনস ২য় সিজনের শুরুর দিকে খাটিয়েছিল। সে প্ল্যান করেছিল যে মার্কেটে পাথরের সাপ্লাইয়ের ওভার ফ্লো দিয়ে পাথরের মার্কেটকে ধসিয়ে দিবে যাতে ওই পুচকা মাছ ব্যাবসায়ি ধরা খায়! সাথে অবশ্য আরও একটি ট্রিকও ছিল!!

বিঃদ্রঃ একই টেকনিক ব্যাবহার করে সেয়ার বাজারেও ধ্বস ঘটানো সম্ভব তবে পকেটে বেশ ভালো পরিমানে পাত্তি থাকতে হবে!

যাই হোক, মেডিও কোম্পানির গুজবের কারনে অনেকেরই ট্রেনি সিলভার কয়েন বিক্রি করে দেওয়ার কথা। কয়েনের প্রতি ব্যাবসায়িদের হারানো ট্রাস্ট ইস্যু এবং অধিক পরিমানে সাপ্লাই এই দুইয়ের কারনে কয়েনের প্রাইজ নতুন কয়েন সার্কুলেশন আসার আগেই নিচের দিকে নেমে যাওয়ার কথা (অন্তুত যারা যারা এসম্পর্কে যানে তাদের কাছে)। সেক্ষেত্রে বুঝতে হবে যে মেডিও কোম্পানি আরও বড় একটা দাঁও মারার চিন্তাভাবনা করছিল। কারন মানুষ যদি বর্তমান বাজারদরের থেকেও কমে তাদের কাছে কয়েন বিক্রি করে তাহলে কোম্পানির প্রফিটের পরিমান আরও বেশি থাকবে। অবশ্য এই ব্যাপারটি হয়তো নাও হতে পারে। এটি হয়তো শুধু একটি স্পেকুলেসনমাত্র।

আরেকটি প্রশ্ন এখন আমাদের সামনে এসে পড়েছে।
আর সেটি হল, কেন ট্রেনি সিলভার কয়েনের পিউরিটি কমিয়ে দেওয়া হচ্ছে?

এর কারন হিসেবে স্পাইস এন্ড উলফ এ বলা হয়েছে যে রাজ পরিবার অর্থ সংকটে ভুগছে। তাই তারা কয়েন প্রস্তুত করার প্রোডাকশন কস্ট কমানোর জন্য কয়েনে সিলভার ব্যাবহারের হার কমিয়ে দেয়। উদাহরণঃ আগে নির্দিষ্ট পরিমান সিলভার দিয়ে যদি ১০টি কয়েন তৈরি করা সম্ভব হয় পিউরিটি কমানোর পরে তাহলে সেখানে ১০ এর অধিক কয়েন প্রস্তুত করা সম্ভব হবে। ১০ টি কয়েনের সিলভার দিয়ে যদি ১৩টি কয়েন তৈরি করা হয় তাহলে অতিরিক্ত তিনটি কয়েন পাওয়া যাচ্ছে একই পরিমান সিলভার দিয়ে।

আচ্ছা এখন কয়েন প্রোডাকশন কস্ট নাহয় কমিয়ে দিলাম কিন্তু মোট কয়েনের পরিমান বাড়লেও মোট সিলভারের পরিমান তো আর বৃদ্ধি পায়নি।

তাহলে লাভটা কি হল?

এখানে আমি পুনরায় কয়েনের ফেস বা ব্র্যান্ড ভ্যালুর কথাটি নিয়ে আসতে চাই। মানুষ ট্রেনি সিলভার কয়েনকে নির্দিষ্ট একটি মূল্যের সমপরিমান হিসেবে ট্রাস্ট করে। বাজারে যদি কম পিউর কয়েনও ছাড়া হয় মানুষের কিন্তু বোঝার উপায় নেই যে এটি কম পিউর। তারা যখন কয়েনে ট্রেনি কিংডমের রাজার মুখের ছাপ মারা দেখবে তখনই আনন্দে বিগলিত হয়ে সেটাকে নির্দিষ্ট মূল্যের জন্য ব্যাবহার শুরু করবে। এভাবেই ট্রেনি রাজ্যের ইমিডিয়েট ক্যাপিটাল বা সম্পদের পরিমান বহুলগ্নে বৃদ্ধি পাবে। কিন্তু লং টার্মের জন্য এই কাজ মোটেও ভালো হবে না। কারন আন্তর্জাতিক মার্কেটে একসময় না একসময় ধরা পড়বেই যে এই কয়েনের পিউরিটি কম। যেহেতু মানুষজন আসলে বেকুব না এবং কয়েনের পিউরিটি মাপার জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম তাদের কাছে আছে সেহেতু ব্যাপারটি ধরা পড়তে বাধ্য এবং সেটা খুব দ্রুতই।

আন্তর্জাতিক মার্কেটে এই ব্যাপারটি ধরা পড়ার সাথে সাথে মার্কেটে বেশি পিউর, কম পিউর নির্বিশেষে সকল ট্রেনি কয়েনের মূল্য নিচের দিকে নেমে যাবে। মানুষ তখন আর মেপে দেখতে যাবে না যে কোন ট্রেনি কয়েনে সিলভার বেশি আর কোন কয়েনে কম। ট্রেনি রাজার খোমার ছাপ্পাটা কয়েনে দেখা মাত্রই তারা বুঝে নিবে যা বোঝার। নির্বিচারে সকল ট্রেনি কয়েনকে তারা নিচু জাত হিসেবে বিবেচনা করবে। পাতিলের একটা ভাত টিপলেই বাকিগুলোর অবস্থা টের পাওয়া যায় এই নীতিতে তাদেরকে কঠোরভাবে অবস্থান করতে দেখা যাবে! অর্থাৎ এখানে কয়েনের কোয়ালিটি মেইনটেইন করতে না পারার কারনে ট্রেনি কয়েনের ব্র্যান্ড জনগনের সেই আস্থাটা আর পাবে না। একবার এভাবে ব্র্যান্ড থেকে মানুষের আস্থা উঠে যাওয়া শুরু করলে সেই আস্থা ফিরিয়ে আনা কঠিন। তার মানে ভবিষ্যতে যদি ট্রেনি কয়েনের পিউরিটি বৃদ্ধিও করা হয় তাহলেও মানুষকে এসসম্পর্কে কনভিনস করানোটা অত্যন্ত কঠিন এবং সময়সাপেক্ষ একটি ব্যাপার হবে। এভাবেই ট্রেনি রাজ্যের জন্য এই সিদ্ধান্ত লং টার্মে অনেক ক্ষতিকর হয়ে দেখা দিবে। তবে এত কিছু বিবেচনা করেও যেহেতু তারা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে তার মানে তাদের আসলে  অবস্থা কেরোসিন।

একারনেই বলা হয় ভাবিয়া করিও কাজ করিয়া ভাবিও না!
আবার এটাও বলা হয় যে অর্থই অনর্থের মূল!!
এদিকে আবার এটাও বলা হয় যে অর্থই সকল সুখের মূল!!!
অর্থ নিয়ে এতসব কথার অর্থটা কি কে যানে?

এবার তাহলে অর্থ নিয়ে এতসব অনর্থ করার পিছনে মেডিও কোম্পানির অনৈতিক অর্থনৈতিক কাজগুলোর মূল অর্থটা এক্সপ্লেইন করি।

ট্রেনির রাজা আসলে আদেশ দিয়েছিল যে পুরানো সকল ট্রেনি কয়েনকে গলিয়ে নতুন করে কম পিউর কয়েন তৈরি করতে। কিন্তু সেজন্য প্রচুর পরিমানে পুরানো ট্রেনি কয়েন তাদের প্রয়োজন। যে বা যারা রাজাকে বিশাল পরিমানে কয়েন সাপ্লাই দিতে পারবে সে বা তারা ওই কয়েনের বিনিময়ে রাজার সাথে নেগোসিয়েসন বা দরাদরি করে বিভিন্ন ধরনের স্পেশাল রাইট বা অধিকার আদায় করতে পারবে যেগুলো একটি কোম্পানির জন্য অত্যন্ত পরিমানে লাভজনক হয়ে দেখা দিবে। এদিকে আবার পুরানো কয়েনের সাথে তারা নতুন কয়েন এক্সচেঞ্জ করে আরও বেশি সংখ্যায় কয়েন পাবে। এদিক থেকেও তারা লাভবান। কারন পুরানো ১০টি কয়েনের পরিবর্তে তারা যদি ১৩টি কয়েন পায় তাহলে তৎক্ষণাৎ মার্কেটে ব্যাবহার করলে পুরানো ১৩টি কয়েনের সমানই মূল্য পাবে।

এই পর্যন্ত বিশ্লেষণ দিয়ে লেখাটি এখানেই শেষ করছি।

আশা করা যায় যে আর কোন সমস্যা থাকবে না।

তবে!
কেউ যদি আর কোন প্রশ্নের উত্তর চান মশলা এবং নেকড়ে সম্পর্কিত তাহলে কমেন্টে প্রশ্ন করে রাখতে পারেন। যথাসাধ্য যত দ্রুত সম্ভব উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবো। কমেন্টে উত্তর দেওয়া সম্ভব না হলে ঠিক এরকমই আরেকটি সেগমেন্ট আপনাকে Dead E Cat করে লেখা হবে!

তাহলে আজকের মত এখানেই B দায় জানাচ্ছি।

ভালো থাকুন

সুস্থ থাকুন

সুখে থাকুন

শান্তিতে থাকুন এবং …..

এনিম দেখুন!

তথ্যসূত্র জানতে হলে যেতে পারেন –

এখানেঃ
http://spiceandwolf.wikia.com/wiki/Currency

ওখানেঃ
https://bignanime.wordpress.com/2008/02/09/wolf-spice-and-currency-the-economics-of-wolf-and-spice/

এবং

সেখানেঃ
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AE%E0%A7%81%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%AB%E0%A7%80%E0%A6%A4%E0%A6%BF

THE END (আপাতত)

এনিমে সায়েন্স ১ – স্পাইস এন্ড উলফ ট্রেনি কাহিনী ১

আজ ২৮/১০/২০১৫ইং তারিখ বুধবার থেকে আমি পাভেল আহমেদ সকল সম্মানিত এনিমখোরের জন্য এনিমে সায়েন্স নামে একটি অভূতপূর্ব নতুন সেগমেন্ট চালু করতে যাচ্ছি।

AS 1

সাধারনত আমি ANIME কে আনিমু, এনিমু, আনিমে বা এনিমের পরিবর্তে এনিম উচ্চারন করি।
কিন্তু এই সেগমেন্টের নাম তো এনিমে সাইন্স!
তবে তার মানে এই নয় যে আমি আমার উচ্চারনভঙ্গি পরিবর্তন করে ফেলছি।
বরং এর মানে এই যে আমি এনিমে সায়েন্স দিয়ে বোঝাচ্ছি এনিমের মধ্যে সায়েন্স! (সেগমেন্টের নামের মধ্যেও এমনকি ভাষাগত সায়েন্স দেখা যাচ্ছে!!)
এই সেগমেন্টে এনিমের ভিতরের পদার্থ, রসায়ন, জীববিজ্ঞান, সমাজবিজ্ঞান, বাংলা, অংক, ইংলিশ সব ধরনের সায়েন্স নিয়ে আলোচনা করে ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ দেওয়া হবে!
এমনকি রীতিমতো এনিম লজিক অনুসারেও সাইন্টিফিক ব্যাখ্যা বিশ্লেষণসমূহ এই পোস্টে দেওয়া হবে!!

কয়েকদিন আগে NO VO চান একটি পোস্টে জিজ্ঞাসা করেছিলেন যে, কেউ কি তাকে Spice and Wolf এর মধ্যযুগীয় অর্থনৈতিক ব্যাপারগুলো বুঝিয়ে দিতে পারবে কি না?
সে জন্যই মূলত এই লেখাটির জন্ম হয়েছে। কিন্তু এত বিশাল এক্সপ্লেনেসন কমেন্ট হিসেবে দেওয়া সম্ভব ছিল না বলেই সরাসরি পোস্ট করছি।
বিঃদ্রঃ মিরাজ সব তোর দোষ! -_-

স্পাইস এন্ড উলফ এর মধ্যযুগীয় অর্থনীতি বুঝতে হলে চাহিদা, জোগান, বিনিময় এবং অবশ্যই অর্থনীতির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় অর্থাৎ অর্থ বা টাকা বা মানি সম্পর্কে বেসিক ধারনা থাকতে অবে। আর বলাই বাহুল্য যে মানির মান আল্লায় রাখে!
এখানে বলে রাখা ভালো যে আমি কিন্তু অর্থনীতির ছাত্র না। স্কুলে থাকতে সমাজ বইতে যা পড়েছিলাম আর ভার্সিটিতে এক সেমিস্টারে যা পড়ানো হয়েছিল সেটাই আমার ভরসা!!
তো আমি যতটা সম্ভব সহজভাবে একদম বেসিক থেকে শুরু করছি তাই একটু ধৈর্য ধরুন এবং পড়তে থাকুন। বোরিং লাগলে আমি, আপনি, কোন অর্থনীতিবিদ, এনিমখোরের এডমিন প্যানেল, দুনিয়া অথবা পুরো ইউনিভার্সের কেউই কোনক্রমে দায়ী নয়!!!
তবে তার আগে…..
যারা যারা স্পাইস এন্ড উলফ দেখেনি তাদের জন্য স্পয়লার এলারট!
তবে স্পয়লার এখনই শুরু হবে না।
আসল স্পয়লার শুরুর আগে আরেকদফা এলারট দেওয়া হবে।

আমরা যখন পণ্যদ্রব্য কেনাকাটা করি তখন সেগুলো নির্দিষ্ট দামের বিনিময়ে কিনি। প্রাচীনকালে যখন টাকা ছিল না তখন বিনিময় প্রথা চালু ছিল। অর্থাৎ এক পণ্যের বিনিময়ে অন্য একটি পণ্য কিনতো তখন মানুষ। যেমনঃ একজন কৃষক হয়তো ১ জন জেলেকে ১০ কেজি চাল দিয়ে ১০ টি ইলিশ মাছ কিনতে পারতো।

কিন্তু এই সিস্টেমের প্রধান ২ টি সমস্যা ছিলঃ
১। আমি চালের বিনিময়ে মাছ কিনতে চাইলেও যার কাছে মাছ আছে তার চাল প্রয়োজন নাও হতে পারে। সুতরাং সে আমাকে চালের বিনিময়ে মাছ বিক্রি করতে চাইবে না। তার হয়তো গম প্রয়োজন কিন্তু আমার কাছে গম নেই। তার মানে আমরা উভয়েই এক্ষেত্রে অসফল।
২। দ্রব্য মূল্যের কোন স্ট্যান্ডার্ড বা আদর্শ মাপ কাঠি ছিল না। ফলে কোন জিনিসের মূল্য কেমন হতে পারে সে সম্পর্কে কারও কোন ধারনাই ছিল না। যার কারনে বিনিময় করার সময়ে একেক জন একেক হিসাবে পণ্য বিনিময়ের মাধ্যমে বেচাকেনা করতো।

দ্রব্য মূল্যের স্ট্যান্ডার্ড বলতে আমরা মূল্য পরিমাপ করার একককেই বোঝাচ্ছি। যেমনঃ দৈর্ঘ্য, প্রস্থ মাপার জন্য ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড (SI) এককে মিটারকে আদর্শ মানা হয়। সময় মাপার জন্য সেকেন্ড, মিনিট, ঘণ্টা ইত্যাদি ব্যাবহার করা হয়।

তো এসকল সমস্যা সমাধান করার জন্য Intermediary বা মধ্যবর্তী কিছু একটার প্রয়োজন ছিল। এবং মধ্যযুগে সেই মধ্যবর্তী জিনিস হিসেবে ব্যাবহার করা হয় স্বর্ণ আর রূপা। আরও স্পেসিফিকালি বলতে গেলে স্বর্ণ আর রূপার মুদ্রা। ফলে দাম নির্ধারণে এবং কেনাকাটায় সকল সমস্যার সমাধান হয়ে গেলো।

স্বর্ণ আর রূপা কেন ব্যাবহার করা হতো?

কারন ধাতুগুলো প্রাকৃতিকভাবেই চকচকে, স্বাভাবিকের থেকে ভিন্ন রং বিশিষ্ট এবং প্রকৃতিতে এর সুলভতা কম অর্থাৎ এগুলো খুঁজে পাওয়া তুলনামূলক কঠিন ব্যাপার।
এছাড়াও স্বর্ণ আর রূপার আরেকটি সুবিধা হল পরিবনযোগ্যতা। ছোট ছোট স্বর্ণ এবং রূপার টুকরা বা কয়েন খুব সহজেই কোন ধরনের থলেতে করে পরিবহন করা যায়। ধাতু হবার কারনে স্বর্ণ ও রূপার নমনীয়তা বৈশিষ্ট্যের কল্যাণে একে গলিয়ে ইচ্ছামত আকৃতি দেওয়া যায়।
পরিবহনযোগ্যতা বৃদ্ধি করার জন্য টাকার আকৃতি ছোট রাখতে হয় এবং একই সাথে সহজে যেন ক্ষয় না হয় সেদিকেও খেয়াল রাখতে হয়। স্বর্ণ আর রূপার মুদ্রা একই সাথে ছোট আকৃতির হবার কারনে সহজে পরিবহনযোগ্য এবং সহজে ক্ষয় হয় না বলে মধ্যযুগে এর জনপ্রিয়তা ব্যাপক ছিল। ঠিক একই কারনে বর্তমানে কাগজের টাকা বা ধাতব কয়েনের পরিবর্তে ক্রেডিট কার্ড সিস্টেম এবং মোবাইল ব্যাংকিং এত জনপ্রিয় হয়েছে।

এখন স্বর্ণ দিয়ে যখন কয়েন বানানো হয় তখন ওই কয়েনের মূল্য নির্ভর করে কয়েনে থাকা খাঁটি স্বর্ণের পরিমানের উপর। সোজা ভাষায় যে কয়েনে স্বর্ণের পরিমান বেশি সে কয়েনের মূল্যও বেশি। একই কথা রূপার কয়েনের ক্ষেত্রেও খাটে। অবশ্যই স্বর্ণমুদ্রার দাম রৌপ্যমুদ্রার থেকে বেশি। এখানে আরেকটা কথা আছে। কয়েনের ফেস ভ্যালু বা ব্র্যান্ড ভ্যালুও কিন্তু একটা ফ্যাক্ট। একেক কয়েন একেক রাজ্যের লর্ড ইস্যু করেন। সত্যি কথা হল যে কয়েনের ব্র্যান্ড বা ফেস ভ্যালু এতে থাকা স্বর্ণ বা রূপার থেকেও বেশি। আমেরিকান ডলার আর বাংলাদেশি টাকার মূল্যের পার্থক্য দিয়ে ব্যাপারটা বুঝা যেতে পারে।

এখন এই ব্র্যান্ড ভ্যালু কিভাবে কয়েনের মূল্যকে প্রভাবিত করে?

একটা ব্যাপার বুঝতে হবে যে টাকার আসলে কিন্ত কোন মূল্য নেই। টাকার মূল্য দিয়ছি আমরা। টাকা মানুষের তৈরি একটা জিনিস যাকে মানুষ কোন কিছুর মূল্য নির্ধারণে ট্রাস্ট করছে। যদি কোন কয়েন বা কারেন্সির উপর থেকে মানুষের ট্রাস্ট হারিয়ে যায় তখন সেই কারেন্সি ভ্যালুলেস হয়ে যায়। তার মানে যে কারেন্সি বা কয়েনের অর্থাৎ কয়েনের যে ব্র্যান্ডের উপর মানুষ বেশি ট্রাস্ট করবে সে কয়েন বা কারেন্সির অর্থাৎ সেই ব্র্যান্ডের মূল্যও বেশি হবে। আর ট্রাস্ট কম করলে তার মূল্যও কম হবে। এটা যেমন কোন প্রোডাক্ট এর ব্র্যান্ডের ক্ষেত্রে সত্য ঠিক তেমনি টাকার ফেস বা ব্র্যান্ডের ক্ষেত্রেও সত্য।

উদাহরনঃ ইজি (EASY) বা প্লাস পয়েন্ট ব্র্যান্ডের একটি টি সার্ট এর মূল্য একটি নন ব্র্যান্ডের টি শার্ট এর থেকে বেশি হয় যেহেতু মানুষ এই দুটি ব্র্যান্ডকে ট্রাস্ট করে। আবার পোলো শার্টের মূল্য এই দুই ব্র্যান্ডের শার্ট এর থেকেও বেশি। একই কথা আমেরিকান ডলার এবং বাংলাদেশি টাকার ক্ষেত্রেও খাটে। এই ব্যাপারটা আরও ভালোভাবে বোঝার জন্য C MONEY OF SOUL AND POSSIBILITY CONTROL নামের মাত্র ১১ পর্বের এনিমটি দেখতে পারেন।

বর্তমান সময়ে চালু থাকা কাগজের/প্লাস্টিকের টাকা বা ধাতব কয়েনের মূল্যও কিন্তু আসলে একটি দেশের স্বর্ণের রিজার্ভ এর উপর ভিত্তি করে নির্ধারিত হয়। অর্থাৎ আসলে আমরা এখনও সেই প্রাচীন আমলের মত স্বর্ণ দিয়েই কেনাকাটা করছি। পার্থক্য হল যে সরাসরি স্বর্ণ বা রূপা আদান প্রদান করার পরিবর্তে আমরা অন্য এমন কিছু ব্যাবহার করছি যা স্বর্ণের রিপ্রেজেন্টেটিভ হিসেবে কাজ করে। অর্থাৎ টাকা, ডলার, পাউন্ড, রুপী, দিনার, রিয়াল, ইয়েন, পেসো এগুলো সবই আসলে কোন না কোন নির্দিষ্ট পরিমানের স্বর্ণকেই রিপ্রেজেন্ট করে।

এখান থেকেই স্পাইস এন্ড উলফের প্রথমদিকের কাহিনীর ঘোরপ্যাঁচ এর সাথে সম্পর্ক শুরু হয়েছে যেখানে আমিও বেশ কনফিউজড হয়ে গিয়েছিলাম শুরুর দিকে।

স্পয়লার এলারট>>>>>
.
.
.
.
.
ক্রাফট লরেনসকে এক ছিঁচকা ব্যাবসায়ি তথ্য দেয় যে কোন একটি নির্দিষ্ট সিলভার কয়েনের পিউরিটি বৃদ্ধি করা হচ্ছে। মানে ওই কয়েনে সিলভারের পরিমান আরও বেশি হবে। লরেন্স ব্যাপারটা নিয়ে কিছুটা সন্দিহান থাকলেও একে একটা সম্ভাবনা হিসেবে ধরে নিয়েছিল এজন্য যে, সাধারনত কয়েনের পিউরিটি বৃদ্ধি করার ব্যাপারটি কমন একটা প্র্যাকটিস।
এখন প্রশ্ন হল যে পিউরিটি বৃদ্ধি করা হলে কার কি?
কয়েন তো একই থাকছে।
এর উত্তর একটাই।
আর সেটা হল একই কয়েনে সিলভারের পরিমান বাড়ছে। ফলে নতুন কয়েনগুলোর মূল্য পুরানো কয়েনগুলো থেকে বেশি হবে। তার মানে কয়েনও টেকনিক্যালি একই থাকছে না।
এখন এই ক্ষেত্রে সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ হল নতুন কয়েন সার্কুলেশনের সময় পুরানোগুলো অন্য কোন দেশের কয়েনের সাথে এক্সচেঞ্জ করে ফেলা অর্থাৎ বিক্রি করে ফেলা।

ক্রাফট Holo কে জিজ্ঞাসা করে জানতে পারে যে ওই ছিঁচকা মিথ্যা বলছিল। ক্রাফট এর কথা অনুসারে কয়েনের ভ্যালু নিয়ে জালিয়াতি নতুন কিছু নয়, কিন্তু সে এই মিথ্যার পিছনের কারণটি ধরতে পারছিলো না। কারন তথ্যটি যদি মিথ্যা হয় এবং ক্রাফটের যদি লস হয় অথবা লাভ-লস কিছুই না হয় তাহলে ওই ছিঁচকারও কোন লাভ হওয়ার কথা না।
ক্রাফট এক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নেয় যে সে এই তথ্যটি বিশ্বাস করার ভান করবে কিন্তু পিছনে সে তথ্যের যথার্থতা জাচাই করার জন্য তদন্ত চালিয়ে যাবে। যদি তথ্যটি সত্যি হয় তখন সে প্রফিট করতে পারবে। আর তথ্যটি মিথ্যা হবার মানে হল যে, কেউ একজন ষড়যন্ত্র করছে। তখন ক্রাফট এই তথ্যটি ব্যাবহার করে প্রফিট করতে পারবে। মানে যেদিকে তাকাই শুধু প্রফিট আর প্রফিট!

যাই হোক ক্রাফট আর ছিঁচকার মধ্যে ডিল হয় যে ছিঁচকা ক্রাফটের কাছ থেকে ১০ ট্রেনি/থরেনি সিলভার কয়েনের বিনিময়ে ইনফরমেশন দিবে যে কোন কয়েনের সিলভার বৃদ্ধি করা হচ্ছে। এছাড়াও ক্রাফট প্রফিট করার পর প্রফিটের ১০% ও তাকে দিতে হবে। পুরান এবং নতুন কয়েনের ভ্যালুর পার্থক্য থেকেই প্রফিট আসবে। অবশ্যই তাদের মাঝে অফিসিয়াল কাগজেই চুক্তিপত্র সই করে ডিল হয়। কারন মুখের কথায় তো আর চিড়া ভিজে না!

তো শেষ পর্যন্ত জানা গেলো যে ট্রেনি/থরেনি সিলভার কয়েনের সিলভার পিউরিটি বৃদ্ধি পেতে পারে।

এখানে ক্রাফট হোলো এর কাছে কয়েনের মূল্য এক্সপ্লেইন করে ট্রেনি আর ফিলিং সিলভার কয়েনের তুলনা দিয়ে। ফিলিং সিলভার কয়েন বেশ জনপ্রিয় এবং এর সিলভার এর পরিমাণও বেশ রিচ। একারনে এটা ট্রেনি সিলভার কয়েনের প্রতিদ্বন্দ্বী রাইভাল। যখন মার্কেটে বিদেশী নতুন কোন কয়েন নিয়ে আসা হয় তখন দেশি কয়েনের রাইভাল বৃদ্ধি পায়। ওই বিদেশী কয়েন প্রস্তুতকারক দেশ তখন মার্কেটে প্রভাব বিস্তার শুরু করে। এটা ঠেকানোর জন্য দেশি কয়েনগুলোর পিউরিটি বৃদ্ধি করার প্রয়োজন পড়ে যাতে দেশি কয়েনের ভ্যালু আরও বেশি হয়।

উদাহরণঃ কাপড়ের ব্যাবসায়িদের মধ্যে কাপড়ের কোয়ালিটি নিয়ে প্রতিযোগিতা হয়। যে যত কম মূল্যে যত ভালো কাপড় দিতে পারবে মানুষ তার কাপড়ের দিকেই বেশি আগ্রহী হবে। কয়েনের কম্পিটিশনের ব্যাপারটিও অনেকটা এরকমই।
এই লজিক থেকে ক্রাফট ধারনা করে যে হয়তো ওই ছিঁচকা সত্যি কথাই বলছিল।

তদন্ত করার জন্য ক্রাফট হোলোকে নিয়ে তার এক পরিচিত মানি এক্সচেঞ্জ ব্যাবসায়ির কাছে যায়। এই মানি এক্সচেঞ্জ এর সিস্টেম আজ অবধি একইভাবে চালু আছে। তারা এক ধরনের কারেন্সির বিনিময়ে আরেক ধরনের কারেন্সি এক্সচেঞ্জ করে দেয় এবং কারেন্সি হ্যান্ডেলিং এর জন্য একটা নির্দিষ্ট পরিমান ফি রাখে।
সাধারনত মধ্যযুগে কয়েনের পিউরিটি বাড়ানো-কমানো কমন একটা ব্যাপার ছিল। আর মানি এক্সচেঞ্জারেরা এই ব্যাপারে বেশ সেন্সিটিভ ছিল। যখন কয়েনের পিউরিটি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় তার আগে বেটা টেস্টিং এর উদ্দেশ্যে পিউরিটি সামান্য বৃদ্ধি করে মার্কেটে ছাড়া হয় মানুষের রিএকশন দেখার জন্য। এই রিএকশনের উপর নির্ভর করে যে পিউরিটি বাড়ানো হবে কিনা।

যা বলছিলাম, মানি এক্সচেঞ্জারের কাছে যখন তারা যায় তখন সেও বলতে পারে না যে আসলেই পিউরিটিতে কোন পরিবর্তন আছে কিনা। তাই হোলো দুটি ট্রেনি কয়েন হাতে নিয়ে কানের কাছে ঝাঁকিয়ে শব্দ থেকে রূপার ঘনত্ব বোঝার চেষ্টা করছিল। একটি ট্রেনি কয়েনকে পার্মানেন্টলি হাতে রেখে অন্য কতোগুলো ট্রেনি কয়েনকে একটা একটা করে বার বার এক্সচেঞ্জ করে সে এই কাজ করছিল। অনেক অভিজ্ঞতাসম্পন্ন মানি এক্সচেঞ্জারেরা নাকি এভাবে কয়েনের পিউরিটি পরীক্ষা করতে পারেন যদিও ব্যাপারটা লেজেন্ডে পরিনত হয়েছে!

তো এভাবেই হোলো এবং ক্রাফট বুঝতে পারে যে কয়েনের পিউরিটি নেমে গিয়েছে। অর্থাৎ ওই পুচকা ছিঁচকা আসলে একটা মিচকা!

কয়েনের ভ্যালু কমে যাওয়ার পরেও যদি ক্রাফট প্রফিট করতে পারে তাহলে প্রফিটের ১০% ওই ছিঁচকা পাবে। আর যদি ক্রাফট লস করে তাহলে ছিঁচকা শুধুমাত্র ক্রাফটের কাছ থেকে নেওয়া ১০ ট্রেনি সিলভার কয়েন ফেরত দিবে। অর্থাৎ কোনভাবেই ছিঁচকার লস হচ্ছে না। উল্টো এই ১০ ট্রেনি সিলভার কয়েনকে পুঁজি হিসেবে খাটিয়ে ইতিমধ্যে সে হয়তো প্রফিট করে নিতে পারবে কোথাও থেকে (হয়তো!)।

হোলো এরপর নতুন এক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে ক্রাফটের কাছে সম্ভাব্য পরিস্থিতি ধরিয়ে দেয়। হয়তো ছিঁচকা সরাসরি ক্রাফটের কাছ থেকে প্রফিট করবে না। হয়তো কোন থার্ড পার্টির কাছ থেকে সে প্রফিট নিবে। ক্রাফটের মস্তিষ্কের বেয়ারিংগুলো বন বন করে ঘুরতে থাকে এবং অবশেষে সে এই মিথ্যার পিছনের জালিয়াতি ধরতে পারে! সে বলে যে কয়েনের মূল্য কমে গেলে তার থেকে প্রফিট করার একটা ট্রিক তার জানা আছে।
সে গিয়ে তৎক্ষণাৎ মিলন (!) কোম্পানিকে পরিস্থিতি সম্পর্কে ইনফর্ম করে তাদের সাথে এই বিষয়ে ডিল করার উদ্দেশ্যে। মিলন কোম্পানি সামান্য তদন্ত করে জানতে পারে যে ছিঁচকার পিছনের মিচকা হল মেডিও কোম্পানি। কিন্তু মেডিও কোম্পানিরও এমনকি এত বড় আকারের ষড়যন্ত্র করার মত ক্ষমতা নেই। তার মানে এদেরও পিছনের আসল মিচকা হল কোন এক অভিজাত ছিঁচকা।

এখন প্রশ্ন হল যে ট্রেনি সিলভার কয়েনের পিউরিটি বৃদ্ধি পাচ্ছে এই গুজব ছড়িয়ে তাদের লাভটা কি?

গুজব ছড়িয়ে লাভটা কি সে প্রশ্নের উত্তর পরের পর্বে পাবেন। আপাতত যা পেয়েছেন তাই নিয়েই সন্তুষ্ট থাকুন। একদিনে বেশি ডোজ নেওয়া ঠিক নয়!
আজকের মত এখানেই শেষ করছি।
ভালো থাকুন
সুস্থ থাকুন
সুখে থাকুন
শান্তিতে থাকুন এবং
এনিম দেখুন!

2 B Continued