One Outs [রিভিউ] — Naziur Rahman Nayem

One Outs

WRITTEN BY: SHINOBU KAITANI
DIRECTED BY: YŪZŌ SATŌ, TADAO IWAKI
ORIGINAL RUN: 2008-2009
GENRE: PSYCHOLOGY, STRATEGY, WIT, SPORTS
PERSONAL RATING: 9.5/10

এনিমেটি মূলত বেসবলকেন্দ্রিক ও এরসাথে যুক্ত হয়েছে গেম্বলিং ও সাইকোলজিক্যাল বিষয়াদি। এনিমেটির প্রতিটি পর্বে তাই রয়েছে সাইকোলজিক্যাল ও স্ট্র্যাটেজিক্যাল ব্যাখ্যা ও টুইস্ট। এখন তাহলে এর একটু ভেতরে প্রবেশ করা যাক।
 
জাপানের ওকিনওয়া নামক স্থানে যেখানে খেলোয়াড়রা প্রফেশনাল বেসবল থেকে একটু অন্য আঙ্গিকে বেসবল খেলে থাকে। এবং এ খেলাতে চলে মিলিয়ন মিলিয়ন ইয়েনের গেম্বলিং অর্থাৎ জুয়া। এ খেলার নাম তাই বেসবল নয়, এর নাম ওয়ান আউট।
 
খেলার নিয়মও বেসবল থেকে বেশ ভিন্ন। নিয়মটি পিচার অর্থাৎ যে বল ছোড়ে সে যদি নির্দিষ্ট জায়গায় বল ছুড়ে পরপর তিনবার ব্যাটসম্যানকে স্ট্রাইক করাতে পারে তথা মিস করাতে পারে তাহলে তার বিপক্ষে যারা বাজি ধরেছে তার সব ইয়েন তার। অন্যদিকে ব্যাটসম্যান যদি একটি বলও হিট করতে পারে এবং তার বল যদি বেসবলের ইনফিল্ডের সীমানা অতিক্রম করে তাহলে সে জয়ী এবং তার বিপক্ষের ইয়েনগুলো সব তার হয়ে যাবে।
 
তো দুজন বেসবল খেলোয়াড় যারা লায়াকুন টিমের হয়ে প্রফেশনাল বেসবল খেলে থাকে যাদের টিমে একজন পিচারের স্বল্পতা দেখা দিলে ওকিনওয়া গ্রাউন্ডের একজন গেম্বলার তাদের পিচারের সন্ধান দেবার নাম করে তাদের ফিল্ডে নিয়ে গেলে তারা এই জুয়া খেলার খপ্পরে পড়ে যায়। তার আগে একটু বলে নেওয়া ভালো লায়াকুন টিমের সেলিব্রিটি টাইপের একজন খেলোয়াড় আছে যার নাম হল কোজিমা। এই খেলোয়াড়টি হল এমন একজন দূর্ভাগা ব্যাটসম্যান যে সব ধরনের খেলায় জয়ী হলেও নিজের টিমের হয়ে চ্যাম্পিয়নশীপ ট্রফি জেতাতে পারেনি। তার সারাজীবনের আফসোস এটি।
 
তো লায়াকুন টিমেরই দুজন খেলোয়াড় ওকিওয়া ফিল্ডে গেলে তারা বাজি লাগায় এমন একজন পিচারের বিরুদ্ধে যে কীনা এ পর্যন্ত একটি বাজিও হারেনি। এই পিচারটির নাম হল তকুচি তোয়া। মূলত এই হল এনিমেটির মূল চরিত্র। এ চরিত্রটি সম্পর্কে কিছু বলা যাক।
 
তকুচি তোয়া প্রফেশনালি একজন গেম্বলার ও মানুষের সাইকোলজি সম্পর্কে তার বেশ ধারণা রয়েছে। আর এই ধারণা দিয়ে সে বেসবলের ওয়ান আউট গেমের বাজিতে সকলকে কুপোকাত করে দেয়। তার প্রতিটি বাজির স্ট্র্যাটেজি সাইকোলজিক্যাল ট্রিকে ভরপুর। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সবকিছু সেট করে নিয়ে সে প্রতিটি পদক্ষেপ নেয়।
 
তো এরপর যথারীতি বাজি শুরু হয়ে যায়। ঐ দুজন খেলোয়াড়ের মধ্যে একজন তকুচি’র বিপক্ষে ব্যাটসম্যানের পক্ষ হয়ে ৪০০০ ইয়েনের বাজি লাগিয়ে গো হারা হেরে যায়। এরপর এই সব অর্থ হারানোর ব্যাপারটা জানতে পারে দূর্দান্ত বেসবল ব্যাটসম্যান কোজিমা। সে পরবর্তীতে আসে এর শোধ নিতে ও বেসবল নিয়ে জুয়া খেলে প্রফেশনাল বেসবলের অসম্মান করার সমুচিত শিক্ষা দেবার জন্য।
 
কিন্তু এখানেও সেই তকুচি তোয়ার ট্রিকের কাছে তাকে নাস্তানাবুদ হতে হয় ও ৪ লক্ষ ইয়েন বাজি সে হেরে যায়। এরপর কোজিমা দূরে কোন জঙ্গলে চলে যায় ও সেখান থেকে আরও অনুশীলনের পর ফেরত আসে আবার তকুচি তোয়ার সাথে ওয়ান আউট গেম খেলার জন্য। বলে নেওয়া ভাল যে এ গেমটি আবার তকুচি তোয়ার নিয়মে সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি ধাঁচে সংঘটিত হয়।
 
তকুচি তোয়া বাজি আগে বলে যে যদি সে তার বল কেবলমাত্র টাচ করতে পারে তাহলে সে জিতে যাবে। এ নিয়ম মেনে নিয়ে কোজিমা তার প্রথম গেম হারার পর আরও অনুশীলন করে আসে দ্বিতীয় গেমের জন্য। গতবারের গেমে চরম অপমানের পর এবারের গেমে সে তার ক্যারিয়ারকে বাজি ধরে। যদি সে হারে তাহলে তাহলে সে বেসবল খেলা থেকে রিটায়ার্ড করবে। আর তকুচি জিতে গেলে কোজিমা তার জুয়া খেলার হাত ভেঙ্গে দিবে।
 
এমন একটা থমথমে অবস্থায় বাজির দুটি বল হয়ে যায় এবং দুটিই স্ট্রাইক হয়। পরবর্তী শেষ বলটির জন্য ওকিনওয়া মাঠের চারদিকে তখন টানটান উত্তেজনা, কী জানি কী হয় কেউ জানে না। যথারীতি তৃতীয় বলটি গেল কোজিমা এবারও বলটি ব্যাট দিয়ে হিট করতে পারলো না। সবাই তকুচির জয়ে যখন লাফাচ্ছে তখন তকুচি বলল কোজিমা জিতে গেছে। কেননা সে ব্যাট দিয়ে বল আঘাত না করলেও হাত দিয়ে বল ঠেকিয়েছে আর নিয়মানুযায়ী বল টাচ করতে পারলেই হল সেটা ব্যাট কিংবা যা দিয়েই হোক না কেন।
 
এ হিসেবে তোয়া স্বীকার করে নেয় যে তার এ খেলার জীবনে এটাই তার প্রথম হার। সে চাইলে তার হাত ভেঙ্গে দিতে পারে। এই বলে সে তার হাত কোজিমার দিকে হাত বাড়িয়ে দেয়। কোজিমাও তার হাত ধরে,,,,
 
কী ভাবছেন কাহিনী এটাই,,, না কাহিনী এটা নয়, এটা কেবল কাহিনীর শুরু।
 
কোজিমা, তকুচির হাত ধরে বলে তোমার এ হাত ভাঙ্গার জন্য নয়, এ হাত হলো প্রফেশনাল বেসবল খেলার জন্য। তুমিই আমাদের টিমে খেলবে ও তোমার মনস্তাত্ত্বিক ভেলকীবাজি দেখিয়ে চ্যাম্পিয়নশীপ টুর্নামেন্টে টিম লায়াকুনের হয়ে খেলবে। এভাবে তকুচি তোয়া সুযোগ পেয়ে যায় ওয়ান আউট গেম থেকে প্রফেশনাল গেম খেলার। তারপর কোজিমা টিমের মূল যে ম্যানেজার তার সাথে তাকে বলে তকুচিকপ টিমে নেবার জন্য।
 
কিন্তু ম্যানেজার প্রথমে তকুচিকে নিতে চায় না তার উদভ্রান্ত ও কেয়ারলেসনেস আচরণের জন্য। এরপর তকুচি তোয়া অদ্ভুত এক প্রস্তাব দিয়ে বসে। প্রস্তাবটি হল যতজনকে সে আউট করবে তার প্রতিটি আউটের জন্য তাকে ৫ মিলিয়ন ইয়েন দিতে হবে। অন্যদিকে সে যত রান খাবে তার বিনিময়ে ম্যানেজারকে সে ৫০ মিলিয়ন ইয়েন দিবে। এভাবে একটা ওয়ান আউট কনট্রাক্ট সাইন হয় ম্যানেজার ও তকুচির মধ্যে।
 
ম্যানেজার প্রচন্ড ধূর্ত ও লোভী প্রকৃতির লোক। নিজের টিম বারবার লাস্টে আসার পরও কেবলমাত্র বাজিতে জেতার জন্য সে তকুচিকে যত প্রকার ফাঁদে ফালানো যায় তার ব্যাবস্থা করে। আর তকুচি! সেও কম নয় প্রতিটা ফাঁদের জবাব সে পাক্কা সাইকোলজিক্যাল মাস্টারমাইন্ডদের মত করে একের পর এক ম্যানেজারকে রিটার্ন করতে থাকে।
 
সেইসাথে কন্ট্রাক্ট অনুযায়ী তরতর করে তার ইয়েন বেড়ে গিয়ে ৪.৬ বিলিয়নে গিয়ে দাঁড়ায়।
 
এখন হয়তো ভাবছেন আমি স্পয়লার দিয়ে ফেলছি। কিন্তু নাহ! এ এনিমের স্পয়লার দেওয়া মোটেই সম্ভব নয়। কারণ কীভাবে তকুচি তোয়া ট্রিক প্রয়োগ করে ভেলকী দেখাচ্ছে তার বিশ্লেষণ এই এনিমে না দেখলে আপনারা বুঝতেই পারবেন না। কিছুটা শার্লক হোমসের মত অপরাধী কে তা আন্দাজ করা গেলেও কীভাবে যে অপরাধী নির্দিষ্ট ব্যক্তিটিই হবে তার ব্যাখ্যার জন্য আপনাকে শেষ পর্যন্ত যেমন গল্পগুলো পড়তে হয়, তেমনভাবে এই এনিমে আপনাকে শেষ পর্যন্ত দেখতে হবে।
 
মোট ২৫টি এপিসোড রয়েছে এ এনিমেটিতে। তবে শেষে এটা যেন অসম্পূর্ণই থেকে যায়। এরজন্য আপনার মাঙ্গা কমিক পড়তে হবে। তাহলে আপনি শেষ অব্দি কী হল এই কৌতূহল মেটাতে পারবেন।
 
এই এনিমেটি দেখতে দেখতে অনেক নতুন নতুন সাইকোলজিক্যাল পার্সপেক্টিভ আমি খুঁজে পেয়েছি। এনিমেটির মাঝে কোন রংচংয়ে ব্যাপার নাই, কোন ইমোশনের আদিখ্যেতা নাই। পুরোদমে প্রাকটিকাল ও স্ট্র্যাজেজিক্যাল। আর ব্যাখ্যার কথা কী আর বলব! এককথায় অসাধারণ। এনিমেটি দেখতে দেখতে বারবার মনে পড়ে যাচ্ছিল চীনা দার্শনিক লাওৎসু ও “Art of War”- এর লেখক সানজু’র কথা।
 
আর মনে পড়বে নাইবা কেন এইসব ট্যাকটিকগুলোর জন্য তো এনারা ওস্তাদ। কিছু কিছু মার্ক করে রাখবার মত। নিচে একটু উল্লেখ করছি সেগুলো-
 
তকুচি তোয়াকে যখন তার টিমমেটরা এসে তাদের বিপক্ষদলের অতীতের বীরত্বপূর্ণ রেকর্ড দেখাচ্ছিল ও এরকম বলাবলি করছিলো যে, ওরা এত ভালো খেলে, আমরা কী পারব ওদের সাথে? এমন সময় তকুচি বলে যে, ” দেখো তোমরা আজকে যাদের সাথে খেলতে নামবে ওরা হল আজকের দল।
 

যেগুলো তোমরা আমায় দেখাচ্ছো ওগুলো অতীতের কাহিনী। তাই আমাদের প্রতিযোগিতা অতীতের টিমের সাথে নয়, আজকের টিমের সাথে। তাই অতীতের রেকর্ড ঘেঁটে ভীত না হয়ে বরং আজকের ওদেরকে দেখো ও ওদের দূর্বলতাগুলো খুঁজে বের করো। অতীত দেখে বৃথা আতঙ্কিত হয়ে ওদের আজকের দূর্বলতাকে দৃষ্টিগোচর হতে দিও না।

 

আরেক জায়গার একটি ঘটনাতে যখন লায়কুন টিম এখনও জিতে নি তবে জিতে যাবে এমন একটি মুহূর্তে টিমের সবাই উল্লাস করতে আরম্ভ করে দিলো তখন তকুচি তাদেরকে বলে, “আমরা এখনও জিতে যাইনি বিজয়ের আগে বোকারাই তা সেলিব্রেট করে।” এখানে এই কথাটা সানজু’র আর্ট অব ওয়ারের সাথে মিলে যায়।

 
সবশেষে একটা চরম ট্রিকি টিমের সাথে লায়াকুন টিমের খেলা হয়। এটা ছিল তাদের হোম গ্রাউন্ড। ফলে তারা পুরো স্টেডিয়ামে তাদের ষড়যন্ত্রের জাল বিছিয়ে রেখেছিল। এটা টিমের প্রায় সবাই জেনে বিপক্ষ টিমকে দোষারোপ করলেও তকুচি বলে যে তাদের ওপর দোষারোপ না করে ওদের চালাকি ও ষড়যন্ত্রকে কীভাবে ওদের থেকে ভালো কোন ট্রিক দিয়ে কিংবা বলা যায় চোরের উপর বাটপারি অথবা টিট ফর ট্যাট আকারে কীভাবে ফেরত দেয়া যায় তা করাটাই সমীচিন।
 
এভাবে দূর্বল হয়ে দোষারোপ করলে ওদের এতে কিছু যাবেও না আসবেও না; উল্টো আমরা চ্যাম্পিয়নশীপ থেকে বেরিয়ে যাবো। তাই খেলায় জিততে হলে ওইভাবে তোমাকে জাল বিছাতে হবে।
 
এতক্ষন যা বললাম তা কিছুই নয়। এ এনিমের মূল আকর্ষণ হলো এর সাইকোলজিক্যাল ব্যাখ্যাগুলো। আর প্রতিপক্ষকে কীভাবে হতভম্ব করে দেয় তকুচি তা দেখবার মত।
 
সবশেষে এই এনিমেটি বেসবল খেলাভিত্তিক হলেও এর প্রতিটি মুহূর্তে আপনি থ্রিল, রোমাঞ্চ, রহস্যের স্বাদ পাবেন। একটা স্পোর্টস জনরার এনিমেকে যেভাবে সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার আকারে রূপ দেওয়া হয়ে হয়েছে তা সত্যিই অনবদ্য।

One Outs [আনিমে/মাঙ্গা রিভিউ] — Pritom Saha

One Outs

ONE OUTS
No one wins, but I!

Anime Episodes: 25
Manga Chapters: 175
Genres: Sports, Psychological, Seinen

গল্পের মূল আকর্ষণ তোকচি তোউয়া নামক এক জুয়াড়ি যুবক, যে দীর্ঘ সময় ধরেই জুয়ার দুনিয়ার সাথে সম্পৃক্ত। তার মানুষের চরিত্র এবং আচরণ বোঝার ক্ষমতা এতই ভালো ছিল যে অনেক সময় মনে হবে সে তার প্রতিপক্ষের মন পড়তে পারে। যা তার প্রতিপক্ষের উপর প্রচন্ড মানসিক চাপ সৃষ্টি করত। তোকচি তখন সুযোগ কাজে লাগিয়ে প্রতিপক্ষকে ভুল সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করত। এভাবেই সে একজন সফল জুয়াড়ি হয়ে ওঠে। তার আরও এক প্রতিভা ছিলঃ অসাধারণ বল কন্ট্রোল, যা তাকে অপরাজেয় পিচার (বোলার) হিসাবে পরিচিত করে। তার ফাস্টবলের গড় গতি ছিল মাত্র ১২৫ কি.মি./ঘন্টা কিন্তু বলের উপর অসাধারণ কন্ট্রোল থাকায় সে বলের স্পিন নিয়ন্ত্রণ করতে পারত, যাতে বলের এলিভেশন পরিবর্তন হত। এতে ব্যাটে বল লাগানোই কঠিন হয়ে যেত। এছাড়াও সে ব্যাটারদের বিভিন্নভাবে প্ররোচিত করত। ওকিনাওয়ার আমেরিকান আর্মি ক্যাম্প এর কাছে একধরণের খেলা হত, ওয়ান আউটস। এটা বেসবলেরই সংক্ষিপ্ত রূপ যেখানে শুধুমাত্র একজন পিচার এবং ব্যাটার মুখোমুখি হয়, ব্যাটার বল ইনফিল্ডের বাইরে পাঠাতে পারলে জিতবে, আর ব্যাটার আউট হয়ে গেলে, বা ৬ বলের মধ্যে জিততে না পারলে পিচার জয়ী। এই খেলাও ছিল স্থানীয়দের কাছে জুয়া খেলা, যেখানে তোকচি ছিল টানা ৪৯৯ ম্যাচ অপরাজিত। এছাড়াও এই ম্যাচগুলোয় একজনও তোকচির পিচ ব্যাটেও লাগাতে পারেনি!

ঘটনাক্রমে তোকচি জাপানের প্রথম বিভাগের বেসবল লীগে লিকেয়ন্স টিমে পিচার হিসাবে যোগদান করে যেই দল কিনা হাজার বছরের পরাজিত দল হিসেবে পরিচিত। দলের মালিক তোকচির প্রতিভা সম্পর্কে অবহিত না থাকায় তোকচিকে বিনা বেতনে খেলার পরামর্শ দেয়। তোকচি তখন ওয়ান আউটস কন্ট্রাক্ট নামক পাল্টা কন্ট্রাক্ট এর প্রস্তাব দেয়। কন্ট্রাক্ট অনুযায়ী প্রতি আউটের জন্য তোকচি পাবে ৫ মিলিয়ন ইয়েন, কিন্তু প্রত্যেক হারানো পয়েন্টের জন্য তোকচি দলের মালিককে ৫০ মিলিয়ন ইয়েন করে দিবে। স্ট্যাটিকস্টিকস বিবেচনা করে দলের মালিক কন্ট্রাক্টে রাজি হয়, কারণ কোন কিংবদন্তি পিচার না হলে তোকচি সহজেই দেনায় পড়ে যাবে। তোকচি কীভাবে নিজের বুদ্ধি কাজে লাগিয়ে প্রফেশনাল বেসবল দুনিয়ায় টিকে থাকে, এটিই মূল গল্প।
ওয়ান আউটসের মূল কথা এর নামেই রয়েছে।
No one wins, but I!
তোকচি সবসময় জিতবে, এটাই হবে। কিন্তু যদিও ফলাফল নিশ্চিত তবুও কীভাবে জিতবে এটাই মূল আকর্ষণ। তোকচির জয় নিশ্চিত, কিন্তু শুরুর পরিস্থিতি এমন হবে যে এই বাধা কাটিয়ে কীভাবে জেতা সম্ভব তা মাথায় আসবে না। কিন্তু তাই বলে ব্যাখ্যা ছাড়া অবাস্তব পথে কোন সমাধান আসবে না, সমাধান হবে সুপরিকল্পিত। ওয়ান আউটস প্রফেশনাল বেসবল ভিত্তি হিসেবে ব্যবহার করে যেখানে বেশিরভাগ এনিমেই হাইস্কুল লেভেলের স্পোর্ট কেন্দ্রিক। এদিক থেকে ওয়ান আউটস ব্যাতিক্রম। এজন্য এখানে ফেয়ার প্লে দেখবেন না সবসময়, দেখবেন বেসবলের উপর নির্ভর করে জীবনযাপন করা মানুষের জেতার জন্য যেকোন কিছু করার মানসিকতা। দেখবেন খেলার ব্যবসায়িক এবং রাজনৈতিক দিক, খেলার পেছনের অন্ধকার দুনিয়া। এছাড়াও অন্যান্য এনিমের মতো জিনিয়াস কিছু চরিত্র তো থাকছেই।
এনিমের সাউন্ডট্র্যাক যথেষ্ট ভালো এবং সিরিয়াস মোমেন্টে ভালো আবহ তৈরি করতে পারে।
ক্যারেক্টার এর কথা বলতে হলে তোকচি সবচেয়ে উজ্জ্বল নক্ষত্র, তোকচির নিজের দলের বাকি খেলোয়াড়রা যেন তোকচির পুতুল। প্রতিপক্ষে বেশ কিছু ভালো ডেভেলপড ক্যারেক্টার আছে, যারা না থাকলে লড়াই জমত না।
ওয়ান আউটস এনিমে দেখার পর মাংগা পড়া রেকমেন্ডেড। এনিমে মাংগার অর্ধেক পর্যন্ত কভার করে। ওয়ান আউটস এর এনিমে এডাপ্ট করেছে আমার সবচেয়ে প্রিয় স্টুডিও ম্যাডহাউস। এনিমে মাংগা পুরোপুরিভাবে ফলো করে, তাই মাংগা চ্যাপ্টার ৮২ থেকে শুরু করলেই হবে। আবার মাংগা না পড়লে চলবে না, এমন নয়। শেষ এপিসোডের শেষ দশ মিনিট কিছুটা পরিবর্তন করে ফিনিশিং দেওয়া হয়েছে। তবে এনিমে যে পর্যন্ত কভার করে এই অংশটুকু মাঠের লড়াই আর এনিমে পরবর্তী অংশে মাঠের বাইরের লড়াই দেখানো হয়। তবে সেখানেও মাঠের খেলা বাদ দেওয়া হয়নি, দুইদিকই সমানভাবে দেখানো হয়। কিন্তু জাপানিজ জানা না থাকলে এনিমে বাদ দিয়ে মাঙ্গা পড়তে পারবেন না। কারণ শুরুর দিকে ভলিউম ৫,৬,৮ এবং ৯ এর স্ক্যানলেশন হয়নি এখনও। তবে এনিমে পরবর্তী বাকি সব চ্যাপ্টার কমপ্লিট।
কোনো এনিমেই পার্ফেক্ট না। ওয়ান আউটস এর মূল আকর্ষণ যেমন তোকচি তেমনি এর ফ্ল্যও তোকচি। তোকচি কখনও হারে না। সে এতই বুদ্ধিমান এবং সবকিছুই তার আগে থেকে পরিকল্পনা করা যে তার চরিত্র বাস্তব বিমুখী মনে হয়। তাই কেউ যদি শতভাগ বাস্তবতা আশা করে তাহলে হতাশ হতে হবে। তবে তোকচির ক্ষমতা এবনর্মালিটি হিসেবে ধরে নিলে বাকি এনিমে যথেষ্টই বাস্তবিক।

পরিশেষে বলতে চাই প্রিয় খেলার তালিকা করলে বেসবল আমার তালিকায় নিচের দিকে থাকবে। এরপরও আমার সবচেয়ে প্রিয় স্পোর্ট এনিমেটাই হল কিনা বেসবল নিয়ে! এর মাধ্যমে বোঝাতে চাচ্ছি যে আপনার যদি বেসবল ভালো নাও লাগে তাও এই এনিমে দেখতে পারেন, আশা করছি হতাশ হবেন না। আরও একটা ফ্যাক্ট হল এইটা সাইকোলজিকাল + স্পোর্টস জ্যানরার যেই দুইটিমাত্র এনিমে আছে তার একটি। তাই সাইকোলজিকাল ফ্যান হলে দেখে ফেলুন।

আমার রেটিংঃ
এনিমে – ৯/১০
মাঙ্গা – ১০/১০

One Outs [রিভিউ] — MD Fahim Iftekhar

 

One Outs 3

আনিমেঃ এক আউট
জনরাঃ সাইকোলজিকাল, সেইনেন, স্পোর্টস
পর্বঃ ২৫

প্লটঃ ONE OUTS তথা এক আউট এর কাহিনি তোউয়া তোকুচি নামক একজন চরমপন্থী জুয়াড়িকে নিয়ে যার যুদ্ধ জাপানি প্যাসিফিক বেসবল লীগে তার প্রতিদ্বন্দ্বীদের সম্পূর্ণরূপে বিধ্বস্ত করা এবং সম্ভবত কম গুরুত্বপূর্ণভাবে একটি নিরেট বেতন উপার্জন করা।

গল্পের শুরু ওকিনাওয়া দ্বীপে, লাইকাওনস এর তারকা খেলোয়াড় কোজিমা হিরোমিচি এর অনুশীলন দিয়ে, যার ইচ্ছা আসন্ন মৌসুমে অন্ধকারময় দলকে নেতৃত্ব দিয়ে চ্যাম্পিয়নশিপ জিতানোর। এখানে প্রকাশিত হয় যে খেলাটি মূলত ব্যাটার ও পিচার এর মধ্যে বাজির খেলা যেখানে দুই পক্ষই একে অপরকে দমনের প্রচেষ্টা চালায়। তোকুচি এই খেলার অবিসংবাদিত রাজা যে কিনা লাইকাওনস এর তারকা খেলোয়াড় কোজিমা হিরোমিচির অনুরোধে লাইকাওনস এ যোগদান করে।

লাইকাওনস এর মালিক, সাইকাওয়া প্রাথমিক প্রতিদ্বন্দ্বী প্রকাশিত হন যে কিনা কেবল মাত্র অর্থের ব্যাপারে তৎপর, দলের ব্যাপারে না। তোকুচি ও সাইকাওয়া এর মধ্যে এক আউট চুক্তি গঠিত হয় এবং একটি যুদ্ধের মঞ্চ তৈরি হয় যেখানে তোকুচিকে লীগের অন্য দলের সাথে মুনাফা অর্জনের পাশাপাশি জয় লাভের জন্য মোকাবিলা করতে হয়েছে। একটি মজার ব্যাপার হল প্রতিটি গেমের পর তোকুচির বর্তমান বেতন দেখানো যা দ্বারা দর্শক বুঝতে পারেন ঠিক কতটা সৈনাপত্যের সাথে সে পালাচ্ছে।

One Outs 2

এখানে দেখানো হয় প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলোর জিতার বিভিন্ন উপায়, দেখানো হয় তারকা খেলোয়াড় থেকে শুরু করে বিশেষজ্ঞদের গভীর পরিকল্পনা, দেখানো হয় কিভাবে প্রতারনার কৌশল অবলম্বন করে এবং কিভাবে তা ধ্বংস হয়। যেহেতু প্রতিটি দলেরই ছিল তাদের জয়ের বহু রাস্তা, তাই তিন ম্যাচ এর সিরিজ কখনই তাড়াতাড়ি শেষ হতো না বরং দেখা যেত উভয় দলের ক্রমাগত একে অপরকে ফাঁদে ফেলার প্রয়াস। অর্থাৎ বলা যায় খেলাগুলা সাইকোলজিক্যালি গ্যাম্বলিং এর মতো করে দেখানো হয়েছে, আর দেখানো হয়েছে প্রোফেশনাল খেলার জগতের কিছু নেগেটিভ দিক।

বলা বাহুল্য সিরিজ পুরোটাই একজনকে কেন্দ্র করে ঘুরতে থাকে। স্পট লাইট ফেলা হয় এমন এক জনের উপর যে কিনা মাত্রাতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী, ঠাণ্ডা মাথায় যে কিনা প্রতিপক্ষ দলকে নিজ ফাঁদে ফেলে। আপনি তখনই ভুল হবেন যখনই ভাববেন যে তোকুচি হেরে যাবে-এতে শর্ত যাই হোক না কেন।

২৫ পর্বের এই সিরিজটি তাই প্রদান করে একজন দর্শক একটি মানসিক এবং / অথবা জুয়া ভিত্তিক সিরিজ এ যা চান। সিরিজটির আর্টওয়ার্ক এবং অডিও উভয়ই ভালো।
আশা করি সবার সিরিজটি ভালো লাগবে।

One Outs 1

One Outs review by সাদিয়া হুমায়রা মৌনতা

‘ওয়ান আউটস’ আনিমেটা পুরাই ওয়ান ম্যান শো। যদিও বেসবল ভিত্তিক এই অন্যান্য আনিমেতে যা আছে, যেমন দলের ইন্সপিরেশন, সিনিয়রদের লিগেসি এগিয়ে নিয়ে যাওয়া,টিম স্পিরিট রক্ষা, ব্যাটারীর (পিচার-ক্যাচার কম্বিনেশন) কেমিস্ট্রি, এগুলা কিছুই নাই কিন্তু এই আনিমেটা পুরাই গেম এর অন্য একটা দিক দেখানো হয়েছে। খেলাগুলা সাইকোলজিক্যালি গ্যাম্বলিং এর মতো করে দেখানো হয়েছে, আর দেখানো হয়েছে প্রোফেশনাল খেলার জগতের কিছু নেগেটিভ দিক।
আমি আনিমেটা বেশি এনজয় করিনি, কারণ-
-একটা দলীয় খেলায় ওয়ান ম্যান শো
-খেলোয়াড় স্পিরিট এর পুরা বারোটা বাজানো হইসে
-খেলা হিসেবে কোন টান্টান উত্তেজনা কম ছিল, কারণ প্রতিবার কিছু হলে জানতাম, তকুচি বাজিমাত করবে শেষে
-কোন ডেভেলপমেন্ট নাই প্লটে বা ক্যারেক্টারে, কারণ এই ওয়ান ম্যান অলরেডি অতিরিক্ত ডেভেলপড ছিল।
-খেলোয়াড়দের ব্যাক্তিগত শক্তির কোন মূল্যই নাই

সবকিছুর পরেও এর রেটিং আমি হাই দিব, কারণ-
-প্লট অন্যরকম। অন্য পারস্পেকটিভ থেকে দেখানো
-বাজিমাত করবে কিভাবে এটাই দেখার বিষয় এবং পর্বর্তীতে ব্যাখ্যাগুলাও অসাধারণ ছিল
-ফ্যান সার্ভিসের বাহুল্য ছিল না 

বিদ্রঃ এমন আন-কুল ক্যাচার আমি এখন পর্যন্ত দেখি নাই 
বিবিদ্রঃ স্টার্টিং সং- প্রতিবার শুন্তাম এবং মনে হতো এটা কোন মেলাঙ্কোলি ছেলেকে নিয়ে স্লাইস অফ লাইফ আনিমে।

বি উপদেশঃ যারা স্পোর্টস আনিমে দেখতে পছন্দ করেন, এই আনিমেটা আগেই দেখে নেয়া ভালো, ‘মেজর’ পরে দেখা ভালো। 

ওয়ান আউট- একটি “দেখাটা উচিত” এনিম রিভিউ — লেখক মো আসিফুল হক

“Nobody wins, but I!” এনিমটার সাবটাইটেল একদম পারফেক্ট। জেনার হিসেবে “স্পোর্টস” দেখে কেউ যদি মনে করেন এই এনিমটা শুধু বেইসবল খেলা নিয়া, আমি তো বেইসবল পারি না, বুঝি না, সুতরাং দেখব না- তাইলে বিরাট একটা ভুল করবেন।

বেইসবল এবং বুদ্ধির খেলার এক অসাধারণ মিশ্রণ “ওয়ান আউট”। বেইসবলকে গৌণ রেখে এনিমের লেখক বুদ্ধির খেলাটাকেই বেশী প্রাধান্য দিয়েছেন।
কেউ যদি মনে করেন শুধু স্কিল ব্যাবহার করেই বেইসবলের মত খেলাগুলোতে সবসময় জেতা যায় – তাদেরকে ভুল প্রমাণই যেন এই এনিমের লক্ষ্য।

তকুচি তউয়ার সাথে লিগের নিচের সারির দল লিয়াকনের চুক্তি হয় এই মর্মে যে, প্রত্যেকটা “ওয়ান আউটের” জন্য সে পাবে ৫ মিলিওন ইয়েন এবং তার বিরুদ্ধে প্রত্যেক রানের জন্য সে জরিমানা দেবে ৫০ মিলিওন ইয়েন। টিমের মালিক হিসেব করে দেখে যে আগের বছরের সেরা পিচারের বেতন এই হিসেবে ০ হয়ে যায়। সে খুব খুশি হয়ে এই চুক্তি মেনে নেয়।

তকুচির স্পেশালিটি শুধু “ফাস্ট বলে”। সে আর কোন বল পিচ করতে পারে না। এই ফাস্টবল নিয়েই সে ব্যাটারদের সাথে সাইকোলজিক্যাল ওয়ার করে এবং তাদের আউট করে।

শেষ দিকে টিমের মালিক তার বেতন কমানোর জন্য যে সকল ফন্দি করে – এবং তার প্রত্যেকটাই তকুচি যেভাবে সামাল দেয়- এক কথায় অসাধারণ। আর শুরুর সাউন্ডট্র্যাকটা তো বেশী জোস। :):):):)

২৫ পর্বের এই এনিমটা যেইরকম হাই টোন দিয়ে শুরু হয়েছিল সেই রকম হাই টোন দিএই শেষ হয়েছে। লেখক অযথা কোথাও কাহিনী টেনে বাড়ানোর চেষ্টা করেন নাই। এইটাও এনিমটার আরেকটা ভাল দিক। :):):)

এক কথায় বেশ উপভোগ্য একটা এনিম। সুতরাং আর দেরি কেন? এখনই দেখা শুরু করে দিন। B-)B-)B-)B-)

হ্যাপি এনিমিং !!!! :):):)