Kaguya-hime no Monogatari (The Tale of the Princess Kaguya) [মুভি রিভিউ] — Etminan Kabir
Movie: Kaguya-hime no Monogatari (The Tale of the Princess Kaguya)
Duration: 2 hr 17 min
MAL Score: 8.39
নার্সারিতে পড়তে একটা বই প্রাইজ পেয়েছিলাম- ‘ফোক টেলস অফ বেঙ্গল’। বই পড়ার খুব নেশা ছিল তখন, শেষ করতে বেশিদিন লাগে নি (কোন ক্লাসে পড়েছি মনে নেই)। রাজা-রাজকন্যা, সোনার কাঠি-রুপোর কাঠি, রাক্ষস-পেত্নি…গল্প পড়ার সময় আমি সত্যি সত্যি বিভোর হয়ে যেতাম, মনে হত চোখের সামনে সব দেখতে পাচ্ছি। সে থেকেই রুপকথার প্রতি আমার আগ্রহ; এর উপর বিদেশী অনেক গল্প পড়েছি, মুভি-এনিমেশন দেখেছি; কিন্তু আজকের অভিজ্ঞতা পুরো আলাদা।
মুভিটি নিয়ে বলতে চাইলে প্রথমেই এর এনিমেশনের কথা আসবে, আর ট্রেইলারে এই আর্ট স্টাইল দেখেই আমি সবচেয়ে বেশি আকৃষ্ট হয়েছি। প্রতিটি সিন অনেকটা মোমরঙে আঁকা ছবির মতো, মনে হবে হয়তো সময় ছিল না হাতে, তাড়াহুড়ো করে শখের কোন আঁকিয়ের আঁকা। কিন্তু এর মাঝে যে কী ছিল! মুভিটি দেখার সময় বারবার আর্টের দিকে চোখ পরছিল, কাহিনীর দিকে খেয়ালই নেই। ‘রুপকথা’ থিমের সাথে মিলিয়ে এর চেয়ে মানানসই এনিমেশন বোধ হয় সম্ভব না। ছোটবেলায় দাদীর কাছে গল্প শোনার সময় মনে যেমন ছবি ভাসে, এর আর্ট ঠিক সেরকম।
গল্পের কাহিনী খুবই সুন্দর, পরিপক্ব। গরিব কাঠুরে(!), বাঁশ কেটে জীবন চালায়, বাঁশ কাটতে গিয়ে একদিন অতিপ্রাকৃতভাবে ছোট্ট এক মেয়ের দেখা পায়। দু হাতের মাঝে এঁটে যাওয়া মেয়েটিকে আশীর্বাদ ভেবে সে বাড়িতে নিয়ে আসে। বুড়োবুড়ি মিলে ঠিক করে এখন থেকে নিজের মেয়ে হিসেবে বড় করবে তাকে। এরপর থেকে তাদের জীবনটা অন্যরকম হয়ে গেল, বুড়ো মাঝে মাঝেই বাঁশ কাটতে গিয়ে অপ্রত্যাশিত সব জিনিশ পায়। তার ধারণা হয়- মেয়েটিকে ‘noble princess’ হিসেবে বড় করার জন্য স্বর্গ তাকে আদেশ করছে। যে মেয়েটি গ্রামের আর ১০টি ছেলেমেয়ের মতো নেচে-কুঁদে বেড়াত তার স্থান হয় শহরের এক জমিদার বাড়িতে। বুড়ো বাবা স্বপ্ন দেখে ‘noble princess’ হবার মাঝেই মেয়ে সুখ খুঁজে পাবে, আর মেয়ে খাঁচায় বন্দী পাখির মতো শুধু ছটফট করে। রাজকন্যার রুপ-গুণের ভূয়সী প্রশংসা রাজ্যসম ছড়িয়ে পড়ে, বড় বড় রাজপুত্র এসে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে যায়, কিন্তু সুখ কোথায়? আর তার অস্তিত্বের রহস্যটাই বা কী!
মুভিজুড়ে রাজকন্যার বড় হওয়াটা দেখার মতো। গ্রামের ছোটো ছোটো ছেলেমেয়েদের সাথে তার উচ্ছল বিচরণ, খুনসুটি আর দলবেঁধে কোরাস গাওয়া দেখে মনে হালকা এক ধরনের পবিত্রতা এসে ভর করে। আর শহরের হাজার নিয়মের বেড়াজালে সেই স্বত্বা যখন স্তিমিত হয়ে পড়ে, তখন চাপা কষ্ট অনুভুত হয়। এর মাঝেও নিয়ম ভেঙ্গে হঠাত হঠাত তার স্বেচ্ছাচারিতা দেখলে মন ভরে যায়।
মুভির soundtrack একেবারে জুতসই। বেশিরভাগ সময়েই কোন background sound থাকে না, মাঝে মাঝে পিয়ানোর মতো কি যেন একটা বাজে, মনে খুব ধরেছে সেটা।
সব মিলিয়ে রুপকথার যথাযথ আবেশ নিয়ে একটি পুর্ণাঙ্গ রুপকথা The Tale of the Princess Kaguya। আর্ট আর মিউসিক এমনই যে আপনি হয়তো রুপকথার রাজ্যে ঘুরে আসার অনুভূতি পাবেন। at least আমি পেয়েছি। মুভিজুড়ে জাপানের অনেক ঐতিহ্যের পরিচয় পাওয়া যায়। ব্যাক্তিগতভাবে আমার কোন আগ্রহ ছিল না, কিন্তু মুভির সাথে ট্র্যাডিশনাল ব্যাপারগুলো এমনভাবে মিশে গিয়েছে যে দেখতে ভালো লাগে (অবশেষে কোন এক Ghibli মুভি আমার মন কাড়ল)।
পছন্দের চরিত্রঃ Kaguya (স্বাভাবিক), Me no Warawa (বেঁটে করে ভোম্বল এক মেয়ে, যাকে দেখলেই হাসি পায়)।
The Tale of the Princess Kaguya [মুভি রিভিউ] — Subrata Barman
Name: The Tale of the Princess Kaguya
Director: Isao Takahata
Genre: Drama/Fantasy
যারা ‘Grave of the Fireflies’ মুভিটি দেখেছেন তাদের ইসাও তাকাহাতা সম্পর্কে জানার কথা! তারপরও এই মুভিটার ব্যাপারে আলাদা করে বলতে হয়। এমন সুন্দর জল রঙের কাজ, যা দেখলে সাউন্ড অফ থাকলেও তাকিয়ে থাকতে ইচ্ছা করে! প্রতিটা ফ্রেইম হাতে একে এনিমেশন করা। এক কথায় চোখের উপর চাপ কম পড়ে! 🙂
যাই হোক, কুসুমে ফিরে যাই! The Tale of the Princess Kaguya মুভিটি জাপানী লোকগল্প ‘The Tale of the Bamboo Cutter’ এর উপর বেইস করে গড়ে উঠা। মিয়াতসুকো নামের একজন কাঠুরে বাশ বাগানে একটি আলোকিত বাশের গোড়ায় দৈব ভাবে একটি ছোট আকৃতির রাজকন্যার মত মেয়ে কে খুজে পায়! বাড়িতে নেয়ার পর কাঠুরে এবং তার বউ সেই মেয়েকে নিজেদের সন্তান হিসেবে বড় করার সিদ্ধান্ত নেয়! কন্যা শিশুটির মধ্যে দৈবভাব ধারনা করে তাকে রাজকন্যা বলে ডাকা শুরু করে তারা। অলৌকিক ভাবে কন্যা শিশুটি অসাধারন দ্রুত গতিতে বেড়ে উঠে! তার এমন কর্মকান্ডে অত্র এলাকার শিশু কিশোররা তাকে ‘তাকেনোকো’ নাম দিয়ে দেয়। সেই সব শিশুদের সাথে তাকেনোকো হেসে খেলে বেড়ায়। এদের মধ্যে সবার বয়োজ্যেষ্ঠ Sutemaru এর সাথে ভালো বোঝাপড়া গড়ে উঠে তাকেনোকোর। এভাবে এক সময় মিয়াতসুকো বাশ বাগানে স্বর্ন এবং রাজকীয় কাপড় খুজে পেয়ে মনে করে তার কন্যা কে রাজকন্যা করে গড়ে তোলার ইংগিত দেয়া হচ্ছে তাকে! এবং সে তাকেনোকোর অনিচ্ছাতে হঠাত করেই শহরে নির্মিত তাদের নতুন বিলাসবহুল প্রাসাদে নিয়ে যায়….মিয়াতসুকো তার জীবনের পরম দায়িত্ব হিসেবে তাকেনোকোকে একজন যথার্থ রাজকন্যা গড়ে তোলার প্রয়াস নেয় এবং তার কন্যা’র সব সুখের জলাঞ্জলি দিয়ে দেয়!



