রিভিউ কন্টেস্ট এন্ট্রি [২০১৫] #৩৩: Berserk — Nafis-san

হবায় তো মাত্র কাহীনি শুরু

-হুদ্দাই লেখা একটা রিভ্যু

————————————————————————————————

এনিমের নামঃ বার্সাকসোনালী যুগের পর্ব

শুরু করার আগে ১টা সংবিধীবদ্ধ সতর্কীকরনঃ

আপনার বয়স ১৮ এর কম হইলে বার্সাক দেখার চিন্তা বাদ দেন ।

————————————————————————————————

কিল্লাইগ্গা বার্সাক? 

ঈদের বন্ধের মইধ্যে আবারও বার্সাকের সিনেমা গুলা দেখলামতো (এইবার ডাব ভারসন দেখছি) , তাই মাথায় খালি বার্সাকই ঘুরতাছে । যদিও কি-বোর্ড দিয়া লেখতে আমার একটুও ভালো লাগেনা তাও ভাবলাম লেইক্ষা ফালাই, যা আছে কপালে ।

নায়কের পরিচয় 

রাজা-বাদশাগো আমলের কথা । দুই দলের মইধ্যে যুদ্ধ চলতাছে, একটা দল নীল-ছাইয়া আর একটা দল লাল-ছাইয়া । নীল-ছাইয়া দলের এক ভোটকা পালোয়ান লাল-ছাইয়া দলের সৈন্যগোরে হেভভী ঘারাইতাছে কেউ পারতাছে না ব্যেডার লগে । তখন লাল-ছাইয়া দলের সেনাপতি চেইত্তা ফায়ার হইয়া এলান দিল “কেউ কি আছে ঐ গাধাডারে ঘারানের মত?” এমন সময় লাল-ছাইয়া সৈন্যগো ভিতরেরতে একটা পোলা বাইর হইল, হাতে একটা বিশাল তলোয়ার , শরীরে কালা বর্ম । ইনিই হইল গল্পের নায়ক “গাটস ভাই” । তো গাটস ভাই সেনাপতির দিকে চাইয়া কইল “১০ ট্যেকা লাগবো” সেনাপতি কইল “৭ ট্যেকা পাবি” , গাটস ভাই “শালা কিপ্টা” কইয়া পালোয়ানের দিগে আগায়া গেল । পালোয়ানরে ঘারাইয়া ট্যেকা লইয়া বাসার দিকে রওনা দিলো ।

গ্রীফিথ্ কেডা? 

এক কথায় রুপকথার রাজকুমার । মেঘের মত সাদা তার চুল , চোখ যেন তার নীল সাগর , হাজার মেয়ের ঘুম হারাম করে দেয়া তার চেহারা । শুধু চেহারা-সুরতেই নয়, যুদ্ধ বিদ্যাতেও সমান পারদর্শী সে । তার নিজস্ব একটা ভারাটে গুন্ডা বাহীনিও আছে,নাম “বাজপাখীর দল” । গাটস ভাইও এই দলের একজন সদস্য । গাটস ভাইয়ের চীরপ্রতিদন্ধী সে ।

নয়িকা কি নাই?

আছে, নাম “কাসকা” । গ্রীফিথের লগে কাইল্লা কইরা একটা মাইয়া ঘুরে, ওইডাই কাসকা । রুপ তার এত আহামরি কিছু না হইলেও তলোয়ারবাজী তে কারত্তে কম যায়না সে । গাটস ভাইরে তেমন একটা বেলও দেয়না সে ।

হবায় তো মাত্র কাহীনি শুরুমানে কি??

মানে সোজা কথায় “বার্সাক-সোনালী যুগ”এর ৩টা সিনেমা ছিল এই কাহীনির সূচনা পর্ব । এখানে দেখানো হয়েছে গ্রীফিথের উত্থান,পতন ও পূনরুত্থান । গাটস ভাইয়ের প্রেম ও তার পরীনতি এবং তার সুখের জীবনের পরিসমাপ্তী । তাই তো এই পর্বের নাম “সোনালী যুগ” ।

এনিমেশন আর সাউন্ড 

এনিমেশন যঠেষ্ট ভাল । চকচকে-যকযকে একটা ভাব আছে । গতানুগতিক জাপানীজ এনিমেশন থেকে বার্সাকের এনিমেশন বেশ আলাদা । ক্যেরেক্টার ডিজাইনে বেশ একটা থ্রীডি-থ্রীডি ভাব আনা হয়েছে ।

জায়গামত কিছু দুর্দান্ত সাউন্ড সিনেমাগুলোকে করে তুলেছে আরও প্রানবন্ত । ভয়েজ এক্টিং ইংরেজী ডাবের চেয়ে জাপানীজটাই বেশী জোশ্ লাগছে আমার কাছে ।

বিনোদনের মাত্রা 

বিনোদন প্রদানের ক্ষেত্রে বার্সাক নিঃসন্দেহে একটি প্রথম সারীর এনিমে । যুদ্ধ, প্রেম, বন্ধু্ত্ব, বিশ্বাসঘাতকতা, ক্রোধ, রক্ত বন্যা, জাদু  কি নেই এতে ? আর এসব কিছু মিলে বার্সাক হয়ে উঠেছে অদ্বীতিয় একটি এমিনে সিরিজ ।

তো, যাদের এখনো দেখার সৌভগ্য হয়নি, তারা আর দেরী না করে আজই দেখে ফেলুন অসাধারন এই সিনেমা সিরিজটি ।

33 Berserk

রিভিউ কন্টেস্ট এন্ট্রি [২০১৫] #৩২: Cross Game — Nehal Hasnaeen

“এনিমখোর রিভিউ কন্টেস্ট [২০১৫] – বিশেষ পুরস্কার অধিকারী এন্ট্রি”

————————————————————————————————————-

রিভিউ – ক্রস গেইম (আনিমে)

আনিমের ক্ষেত্রে যে কয়টা জনরার জনপ্রিয়তা সবচেয়ে বেশি তাদের মধ্যে স্কুল আর স্পোর্টস একদম প্রথম সারির দিকে থাকবে। সমস্ত স্পোর্টস আনিমের কাহিনী-ই কম বেশি গৎবাঁধা, স্কুলে নতুন এইসের আগমন, তার হাত ধরে ক্লাবের পুনর্জীবন, প্রথম টুনার্মেন্টে হেরে পরেরটায় বিক্রমের সাথে জয়লাভ – এসব প্রায় সব এনিমখোরেরই দেখা হয়ে গেছে। তারপরেও স্পোর্টস আনিমের উত্তেজনায় আমরা বুঁদ হয়ে থাকি, এর সাসপেন্স একেবারেই দুর্বল হৃদয়ের দর্শকদের জন্যে নয়। প্রতিটা পর্বের জন্য এক সপ্তাহ বসে থাকাটাও অনেক কষ্টের। কিন্তু আমার এই রিভিউ টা এমন একটা আনিমে নিয়ে, যেটা কিনা একই সাথে উত্তেজনাপূর্ণ এবং শান্ত। সাধারণ স্পোর্টস-স্কুল আনিমের আভাস থাকলেও এটা যেন তার চেয়েও বেশি কিছু। বলছিলাম “ক্রস গেইম” এর কথা।

৫০ পর্বের এই আনিমের প্রধান চরিত্র কোউ কিতামুরা, যার পরিবারের খেলাধুলার সামগ্রির ব্যাবসা আছে। একই এলাকায় সুকিশিমা পরিবারের বাস, যাদের একটা ব্যাটিং সেন্টার ও কফি শপ আছে। তাদের ব্যবসায়িক সম্পর্কের কারণে দুই পরিবারের মাঝে একটি গভীর বন্ধন সৃষ্টি হয়, দুই পরিবারের সন্তানরা আপনজনের মতই ছোটবেলা থেকে মেলামেশা করে। সুকিশিমা ওয়াকাবা আর কোউ সমবয়সী হওয়ায় তারা সবসময় একসাথে থাকত, যা সুকিশিমা আওবার একদম পছন্দ ছিলনা। সে তার বোনের সাথে সময় কাটাতে পারত না বলে কোউ কে হিংসা করত। আওবা মেয়ে হওয়া সত্ত্বেও ভাল পিচিং পারত, তার পিচিং ফর্মও ছোটবেলা থেকেই নিখুঁত ছিল। এদিকে কোউ ছিল সুকিশিমা ব্যাটিং সেন্টারের হোমরান রেকর্ডধারী। আওবার কাছে একবার হারার পর ওয়াকাবা কোউ কে আওবার চেয়ে ভালোভাবে পিচ করার জন্য উৎসাহ যোগায়, তাকে আওবার মতই নিয়মিত ট্রেনিং এর পরামর্শ দেয়। তারপর থেকে কোউ ৩ বছর ধরে প্রত্যেক দিন সেই একই ট্রেনিং করে। ক্রস গেইম তারই একজন বেসবল খেলোয়াড় হয়ে উঠার কাহিনী।

স্টোরি – ৯/১০

ক্রস গেইম তার জনরার অন্য আনিমে থেকে এইদিক থেকে আলাদা, যে এইখানে প্রধান চরিত্রকে কেবল একজন এইস খেলোয়াড় হিসেবে দেখানো হয়না, মাঠের বাইরের রক্ত মাংসের মানুষটাকেও তুলে ধরা হয়েছে। শুধু তাকেই না, অন্যান্য চরিত্রদেরও যথেষ্ঠ প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে এখানে। তারা কি করে, কি চায়, কেন, তাদের আত্মোপলব্ধি, সবকিছুই বিশ্বাসযোগ্যভাবে উঠে এসেছে। আনিমেটা বেসবল কেন্দ্রিক হলেও এতে স্লাইস অফ লাইফ-ট্র্যাজেডি ইত্যাদি উপাদানের ভাল সংমিশ্রন ঘটেছে। বলা যায়, কাহিনী কখনো সুথিং, আবার কখনো উত্তেজনাময়। মাঝে বেশ কিছু সময় খেলার উপর প্রাধান্য না দিয়ে চরিত্রদের প্রাত্যহিক জীবন তুলে ধরেছে আনিমেটি। মাঝের কিছু জায়গার ফ্ল্যাশব্যাকগুলো বারবার আমাদের মনে করিয়ে দেয়, সবাই কিসের জন্য এত হন্যে হয়ে সামনের দিকে ছুটছে, জীবনে সামনের দিকে তাকানোর রসদ তারা কিভাবে পায়। আনিমের কাহিনীর বিকাশে ট্র্যাজেডি গুরুত্বপুর্ণ ভূমিকা পালন করে, যেটা স্পোর্টস আনিমেতে তেমন একটা দেখা যায়না। এত কিছু আনিমেটি প্রকাশ করতে সক্ষম হয়েছে খুবই সহজ ও সাবলীলভাবে, কখনোই এতে জোর করে কোন কিছু চাপিয়ে দেওয়া হয় নাই, দর্শককে বিনোদন দিতে আনিমেটির কোন সময়ই অতিমাত্রায় চেষ্টা করতে হয়নি। বেসবল অংশগুলা ভাল হলেও তা ক্যারেকটারদের কছে প্রাধান্য কিছুটা হলেও হারায়, তবে যতটা দরকার ঠিক ততটুকুই আছে। কমেডিও নজরকাড়া, জোক্সগুলোর টাইমিং একদম ঠিকঠাক। কাহিনী কোন জায়গাতেই মুখ থুবড়ে পড়েনি, এর পেসিংও ৫০ পর্বের একটি আনিমের জন্য উপযুক্ত ছিল। এন্ডিং ও আমার মতে বেশ হয়েছে।

আর্ট – ৮/১০

আনিমেটি প্রোডিউস করেছে সিনার্জি এসপি, যারা আরেক বিখ্যাত বেসবল আনিমে মেজর সিরিজেরও প্রোডিউসার। ক্যারেকটার ডিজাইন কিছুটা ক্লাসিক ধাঁচের, আমার দেখে ‘৯০ দশকের আনিমেগুলার কথা মনে পড়েছে। বেশ সুথিং হলেও একটা সমস্যা, আওবা আর কোউ এর মাঝে পার্থক্য করতে প্রায়ই কষ্ট হয়েছে। ২০০৯ এর এই আনিমের এনিমেশানও যথেষ্ঠ ভাল, তবে তা গতানুগতিকের খুব একটা ব্যতিক্রম না। তবে তা তেমন কোন সমস্যা সৃষ্টি করেনা, বরং ক্যারেকটার ডিজাইন এর কাহিনী ও সেটাপের জন্য যথোপযুক্ত ও মানানসই।

চরিত্র –১০/১০

স্পোর্টস জনরার মধ্যে অন্যতম সেরা ক্যারেক্টার ডেভেলপমেন্ট দেখিয়েছে এটি। যেখানে একই ধরণের অন্যান্য আনিমেগুলা খেলার দিকে অনেক বেশি প্রাধান্য দেয়, খেলার টগবগে উত্তেজনাপূর্ণ সিনগুলোকে দেখাতে গিয়ে স্বয়ং খেলোয়াড়দের কথা বেমালুম ভুলে যায়। কিন্তু এই আনিমের শক্তি হল এর চরিত্রগুলো, টানটান উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচগুলো নয়। এখানে প্রত্যেক চরিত্রকে যথেষ্ঠ সময় দেওয়া হয়েছে, যাতে করে এরা প্রথাগত ক্লিশের বেড়াজালে আবদ্ধ না থেকে নিজের স্বকীয়তা প্রকাশ করতে পারে। সিরিয়াস ক্যাপ্টেন আকাইশি, গুরুগম্ভীর জিনিয়াস আজুমা ইয়ুহেই, বেস্ট ফ্রেন্ড নাকানিশি, চঞ্চল সেনডা, সুকিশিমা পরিবারের বড় মেয়ে ইচিয়ো, ছোট্ট মোমিজি, বেসবল প্রেমী কোচ মায়েনো, এরা সবাই যেনো নিজ নিজ চরিত্রের খোলস থেকে বেরিয়ে আরো ভালোভাবে নিজেদের বিকশিত করেছে। শুরুর প্রোলোগ এবং মাঝে বেশ কিছু ফ্ল্যাশব্যাক দর্শকদের চরিত্রগুলো সম্পর্কে আরো ভাল ধারণা দিতে সাহায্য করে। আরেকটা মজার বিষয় হল অন্যান্য আনিমের মত এখানে চরিত্রগুলো ম্যাচের সবচেয়ে উত্তেজনাপূর্ণ মুহুর্তগুলোয় কি ভাবছে, তা বলে দিতে হয়না, এত শক্তিশালী ক্যারেক্টার ডেভেলপমেন্টের পর দর্শকদের আসলে তা বলার কোন প্রয়োজনই হয়না! চরিত্রদের প্রতি অদ্ভুত এক ভাললাগায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে দর্শক।

সাউন্ড – ৯/১০

আনিমেটির ওপেনিং আর এন্ডিং থিমগুলো বেশ সুথিং, ঠিক যেন এর কাহিনীর মত। একমাত্র ওপেনিং “সামার রেইন” ৫০ পর্ব জুড়েই আনিমের মুড এবং সেটাপ অনুযায়ী যথেষ্ঠ উপযোগী ছিল। আমার সবচেয়ে প্রিয় প্রথম এন্ডিং কোই কাগারেতে মিতা ইয়ুমে। আর সাউন্ডট্র্যাকও বেশ শান্ত ছিল, আবার কমেডি সিন গুলোর জন্য একটু চঞ্চল, ম্যাচের সময় একটু ড্রামাটিক, অর্থাৎ সব পরিস্থিতির জন্য মানানসই। সেইয়ুদের কাজ বেশ ভাল ছিল, কেউ সেইভাবে নজর না কাড়লেও প্রধান দুই চরিত্রে থাকা ইরিনো মিয়ু(কোউ) এবং তোমাতসু হারুকার(আওবা) জুটি চমৎকার ছিল। ওএসটি এর সবটুকু ভালভাবে ব্যাবহার করা হয়নি কারণ বেশ কিছু চমৎকার ট্র্যাক শেষের দিকের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিনগুলোর জন্যই বরাদ্দ ছিল।

এঞ্জয়মেন্ট – ১০/১০

অতিরিক্ত ভাল ক্যরেকটার ডেভেলপমেণ্ট, উত্তেজনাপূর্ণ ও পরিপূর্ণ কাহিনী, সুথিং আর্ট ও সাউন্ডট্র্যাক – উপভোগের সব রসদই মজুদ আছে এই আনিমেটায়। আমার মতে এটা মাস্ট ওয়াচ।

সুতরাং আমার মোট রেটিং ৯.২/১০, এবং এটি অবশ্যই একটি দেখার মত আনিমে। এখানকার উপজীব্য কোন জাঁকজমকপুর্ণ, বাস্তবতা বিবর্জিত, টানটান উত্তেজনাপূর্ণ খেলার স্কিল নয়, এমনকি আজকালকার স্লাইস অফ লাইফ আনিমেগুলাতে যা অনেক বেশি চোখে পড়ে, সেইসব অকারণ হাস্যকর ভুল বুঝাবুঝি কিংবা কোন রোমান্টিক টেনসন ও নয়, বরং জীবনের সকল বাঁধা-বিপত্তি, হাসি-কান্নার মাঝে লক্ষ্য অটুট রেখে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়াটাই এর মূল আকর্ষণ। আসলে আনিমেটির স্বরূপ বোঝানোর জন্য এত কথা না বললেও চলে, কোচ মায়েনোর একটা উক্তিই যথেষ্ঠ – “সিম্পল ইজ বেস্ট।”

32 Cross Game

রিভিউ কন্টেস্ট এন্ট্রি [২০১৫] #৩১: Shigatsu wa Kimi no Uso — Fatiha Subah

“এনিমখোর রিভিউ কন্টেস্ট [২০১৫] – প্রথম স্থান অধিকারী এন্ট্রি”

————————————————————————————————————-

শিগাতসু ওয়া কিমি নো উসো

জানরাঃ মিউজিক, শোউনেন, স্লাইস অফ লাইফ, রোমান্স
ব্যক্তিগত রেটিংঃ ৯/১০       

“আই মেট দা গার্ল আন্ডার ফুল-ব্লুমড চেরি ব্লসমস অ্যান্ড মাই ফেট হ্যাস বিগান টু চেঞ্জ”-সিরিজটার নামের নিচের এই শিরোনামটি পড়লে মনে হয় এটি সেই চিরাচরিত “বয় মিটস গার্ল অ্যান্ড ফল ইন লাভ” ধরনের কাহিনী। কথাটা মানুষকে দেখার জন্যে আকর্ষণও করতে পারে আবার মুখ ফিরিয়ে নেওয়ার কারণও হতে পারে। একই সাথে ব্যাপক প্রশংসিত এবং ওভার রেটেড খেতাব পাওয়া আনিমেটা তাই বেশ বিভ্রান্তিকরই বটে। কিন্তু এত দ্বিমত কেন? চলুন জেনে আসি

গল্পঃ ১৪ বছর বয়সী মিডল স্কুল পড়ুয়া আরিমা কোউসেই এক অসাধারণ পিয়ানো বাদক। কিন্তু যার হাত ধরে পিয়ানোর হাতেখড়ি হয়, ২ বছর আগে সেই মায়ের মৃত্যুতে শোকে বিপর্যস্ত হয়ে সে পিয়ানো বাজানো ছেড়ে দেয়। আরিমার ভাষ্যমতে সে অন্যদের পিয়ানোর সুর শুনতে পেলেও নিজেরটা শুনতে অক্ষম। বাল্যকালের বন্ধু ওয়াতারি আর বান্ধবী সুবাকি’র সাথে কোনমতে দিন পার করে। মনমরা আর বিমর্ষ আরিমাকে দেখে বিরক্ত সুবাকি ওয়াতারির সাথে আরিমাকে জোর করে নিয়ে যায় এক মেয়ের সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে। কাওরি মিয়াজোনো, একজন ভায়োলিনিস্ট যে আরিমার জীবনে অনেকটা ঝড়ের মতই হাজির হয়ে সব ওলটপালট করে দেয়, যেই মেয়ে তার জীবনে বসন্ত আনে কিন্তু দুঃখজনকভাবে ওয়াতারিকে পছন্দ করে, তার হাত ধরে গল্পের শুরু।

আর্ট এবং অ্যানিমেশনঃ এই সিরিজটির সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক হল এর অসম্ভব সুন্দর অ্যানিমেশন। সব আনিমেই তো রঙিন হয়। কিন্তু এই শব্দটি যেন নতুন করে শিখবেন এখানে। বিশেষ করে শুরুর আর শেষের দিকের কিছু পর্বে এতই রঙের খেলা আছে যা বলাই বাহুল্য। এটা নাকি এপর্যন্ত সবচেয়ে বেশি বাজেটওয়ালা স্লাইস অফ লাইফ আনিমে। মজার বিষয় হল এখানে অন্য আনিমের মত চরিত্রগুলোর মুখ শুধু একটা দাগ দিয়ে দেখানো হয়নি বরং আসলেই ঠোঁট আছে! তবে ২ বছরের ব্যবধানে এত বেশি ছোট আর বড় দেখানো হয়েছে চরিত্রগুলোকে যেটা অসামাঞ্জস্য। আরিমার চশমার ডাটি সাইড থেকে দেখায় না। এ জিনিসগুলোর জন্যে মাঝে মাঝে বেশ আজগুবিও লাগে।

মিউজিক এবং সাউন্ডঃ ক্লাসিক্যাল মিউজিক নির্ভর আনিমে তাই মিউজিক নিয়ে বিশেষ কিছু বলার নেই। বেয়টোভেন, শোপান প্রমুখ মিউজিসিয়ানদের মিউজিক পিসের উপস্থিতি আছে ভালভাবেই। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক, ওপেনিং-এন্ডিং সবই শ্রুতিমধুর।

চরিত্রঃ আমার মতে মানুষ যদি ইয়ুনোর জন্যে মিরাই নিক্কি দেখতে পারে তাহলে শুধু কাওরির জন্যে হলেও শিগাতসু দেখা উচিৎ। আমরা যেটাকে শেষ বলে মনে করি সেটাই কি শেষ? নাকি সেটা নতুন কিছুর শুরু? জীবনের ঠিক কোনখানে গিয়ে হাল ছাড়ার অধিকার আছে? নাকি সেই মুহূর্তে গিয়ে আবার পূর্ণউদ্দ্যমে লেগে পরা উচিৎ? মিথ্যা বলা কি আসলেই খারাপ? ভালোবাসার মানে কি কাউকে নিজের কাছে চাওয়া নাকি তাকে সুখী জীবনে ছেড়ে দেওয়া? কাওরির কাছে জীবনকে নিয়ে শেখার অনেক কিছুই আছে। আপনি যদি হতাশায় ডুবে থাকেন তাহলে কাওরি হতে পারে আপনার বড় অনুপ্রেরণা। এছাড়া ওয়াতারি বাদে বাকি প্রায় ছোট-বড় সব চরিত্রের বেশ ভালো ক্যারেক্টার ডেভেলপমেন্ট হয়েছে।

খারাপ দিকগুলোর মাঝে রয়েছে সবসময় দুঃখ-দুঃখ ভাব থাকা সত্ত্বেও অসময়ে কমেডি আনার ব্যর্থ প্রচেষ্টা। শুরুতে আর শেষে বেশ দ্রুত আগালেও মাঝে কাহিনী স্থবির হয়ে যায়। শুনতে খুব রূঢ় শোনালেও সত্যি বলতে একে ওভার রেটেড বলার কারন এখানে একটা সিরিজকে জনপ্রিয় বানানোর সবচেয়ে সহজ পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়েছে। গল্পটা অনেকটা তেমনই। তবু সেই গল্পটা শেষ পর্যন্ত উপস্থাপন করা হয়েছে খুব সুন্দরভাবে। নইলে কেন শেষ পর্ব দিয়ে ম্যাল রাঙ্কিংয়ের টপ ৫০ থেকে ১৩ নাম্বারে আসবে!

যাদের ভালোবাসার অনুভুতি আছে এমন কাহিনীযুক্ত বাস্তবতা নির্ভর মিউজিক্যাল আনিমে পছন্দ তাদের জন্যে এটা আদর্শ আনিমে।

31 Shigatsu

রিভিউ কন্টেস্ট এন্ট্রি [২০১৫] #৩০: Mirai Nikki — Zakaria Mehrab

এনিমেঃ মিরাই নিক্কি (দ্যা ফিউচার ডায়েরি)

জনরাঃ মিস্টেরি, সুপারন্যাচারাল, সাইকোলজিকাল, থ্রিলার
এপিসোড সংখ্যাঃ ২৬ এপিসোড + ১ ওভিএ
ম্যাল রেটিংঃ ৮.২

শব্দসংখ্যা সীমিত । সূচনা বাদ দিয়ে তাই অন্য পয়েন্ট এ চলে যাই । তবে যেটা মাথায় রাখতে হবে এইটা হচ্ছে ড়িভিউ 😎 গ্যাগ হিসেবে কন্টেস্ট এ পাঠালাম 😀

প্লট (আই সুলেমানলি সয়্যার দ্যাট আই এম আপটু নো গুড)ঃ

হাইস্কুল বালক আমানো ইউকিতেরু উরফে “ইউক্কি” ; পড়াশুনায় মনোযোগ নাই , মাঝে মাঝে কল্পনার রাজ্যে তার দোস্ত ডিউস এর সাথে বকবক করে আর সারাদিন মোবাইল টিপাটিপি করে । তবে ফেসবুক-টুইটার না ; তার আসক্তি হল ডায়েরি লেখায় । পুরা মোবাইলটাকে সে একটা ডায়েরি বানিয়ে ফেলে যেইখানে তার প্রতিটি কাজকর্ম সে লিপিবদ্ধ করে রাখে । বেশি মোবাইল টিপলে , চোখের বারোটা বাজে । আমানোর ও বারোটা বাজল । তবে চোখের না , তার মোটামুটি পুরা চৌদ্দগুষ্টির বারোটা বেজে গেল । একদিন আমানো দেখে ঐদিনের দিনলিপি আগে থেকেই মোবাইলে এন্ট্রি করা আছে । এবং  সব এন্ট্রিগুলাই মিনিটে মিনিটে সত্য প্রমাণিত হতে থাকে । হতভম্ব আমানো আরো থ হয়ে যায় যখন সে জানতে পারে তার কল্পনার দোস্ত ডিউস আসলে একজন গড, আমানোর ডায়েরি একটি ফিউচার ডায়েরি যেটা তার সাথে সম্পর্কিত সবকিছুর ভবিষ্যৎবাণী করে এবং তার মত আরো এগারোজন ডায়েরি ইউজার আছে । প্রত্যেকের উদ্দেশ্য বাকিদেরকে চন্দ্রবিন্দু করে বেঁচে থাকা । সবশেষে যে একজন টিকে থাকবে সেই হবে ডিউস এর উত্তরাধিকারী । সুতরাং ডিউস চোধুরী সাহেবের সম্পত্তির লোভে ডায়েরি ইউজাররা রক্তের হোলিখেলায় মেতে উঠে । আমানোর সাথে যোগ দেয় তার উপর উথালপাথাল ক্রাশ খাওয়া গাসাই ইউনো যে আমানোকে “পাবার জন্য সবকিছু করতে রাজি” ।  বাংলা সিনেমা লাগছে ?  এইখানে “সবকিছু” বলতে কি বুঝায় আপনার ধারণাই নাই । ধারণা পাওয়ার জন্য  ২৬ এপিসোড+১ ওভিএ এর এনিমেটি দেখে ফেলতে হবে ।

এইবার কাটাছেড়া করি 😀

নক্সঃ

এনিমে মেইন ক্যারেক্টার বললে চোখে কি ভেসে উঠে? বোকা, স্থিরপ্রতিজ্ঞ , বন্ধুবৎসল, সময় ও ক্ষেত্রবিশেষে স্মার্ট ইত্যাদি আরো কিছু । তবে এই এনিমেটির মেইন ক্যারেক্টারটি একটি অভিজাত শ্রেণীর বলদ বাদে আর কিছু ই না । সুতরাং আপনি যদি বিন্দুমাত্র কুলনেস চান মেইন ক্যারেক্টার এর ভিতরে আপনাকে হতাশ হতে হবে ।  খালি একটা ছোট্ট উদাহরণ দেই । আপনার ক্লাসের কোন মেয়ে যদি বলে বড় হয়ে আপনাকে বিয়ে করবে , কত উচ্চ শ্রেণীর বলদ হলে আপনি এই অভিজ্ঞতা ভুলে যেতে পারেন? আরেকটি সতর্কতা হল ক্ষণে ক্ষণে ন্যাকা গলায় “ইউককককি , ইউককককি” আহ্লাদ শুনে যদি নায়িকার গলা চেপে ধরার পৈশাচিক আক্রোশ জেগে উঠে তাহলে কর্তৃপক্ষ দায়ী নহে ।

লুমোসঃ

 উৎসাহ হারাচ্ছেন ? তাইলে এইবার ভালো কিছু ফেলি । স্বীকার করতেই হবে, প্লট বেশ ইন্টারেস্টিং এবং আমার দেখা সেরা (সম্ভবত) প্লট টুইস্ট টি এই এনিমেতে রয়েছে । স্পয়লার ছাড়া এনিমেটি দেখে যেতে পারলে আপনি যে একটি বেশ ভালো কাহিনী উপভোগ করে উঠবেন এতে সন্দেহ নাই । রোমাঞ্চকর ও পিলে চমকানো কিছু সিন পাবেন , সেই সাথে রয়েছে মানানসই ওপেনিং ও এন্ডিং সং । মেইন ক্যারেক্টার বাদে বেশ কিছু প্রভাব ফেলা ক্যারেক্টার আছে । আর রয়েছে গাসাই ইউনো । ন্যাকামি বাদ দিলে ইউনোর প্রভাব সবচেয়ে সুদূরপ্রসারী এবং তার কাজকর্ম দেখে মুহূর্তের জন্য মস্তিষ্ক অবশ করার জন্য হলেও এনিমেটি দেখা আসে ।

ইন্টারেস্টিং একটি জিনিস বলে রাখি । এপিসোডের নামগুলো খেয়াল করলে দেখবেন সেগুলো প্রতিটি ই মোবাইল সম্পর্কিত কোন টার্ম ।

মিসচিফ ম্যানেজডঃ 

সুতরাং পপকরন এবং প্যারেন্টাল গাইডেন্স নিয়ে বসে পড়ুন এবং দেখে ফেলুন মিরাই নিক্কি । তবে দেখার পর যখন আপনার গার্লফ্রেন্ড এর সাথে ডেটিং এ যাবেন তখন দয়া করে কোন ক্রিটিকাল কোন স্থানে (যেমন ছাদে, নদীর পাড়ে ইত্যাদি) বসবেন না । গার্লফ্রেন্ড আদুরে কন্ঠে “জানু, বাবু” ডাকলে সমস্যা নাও থাকতে পারে । তবে চমকে গিয়ে আপনি ছাদ থেকে কিংবা নদীতে পড়ে গেলে সেটা সমস্যা ।

30 Mirai Nikki

রিভিউ কন্টেস্ট এন্ট্রি [২০১৫] #২৮: Usagi Drop — Goutam Debnath Sagar

নামঃ Usagi Drop. Bunny Drop
জনরাঃ slice of life, comedy-drama
পর্বঃ ১১ ( মাঙ্গা ৯ ভলিউম)

রহস্যের মারপ্যাচ, ধুন্দুমার একশন, লুতুপুতু প্রেম দেখতে দেখতে ক্লান্ত অথবা পরীক্ষা, প্রেমিক/প্রেমিকা, পরিবার নিয়ে চিন্তা করতে করতে আপনার মস্তিষ্কের নিদারুণ হাল, একটু শান্তি খুঁজছেন? তাহলে এই আনিমে টা আপনার জন্য। ১১ পর্বের ১১x২২= ২৪২ মিনিট আপনাকে Never give up বলে John Cena বানাইতে বা lifeless loser থেকে super heroতে রুপান্তর করতে অথবা Power of friendship দিয়ে কিভাবে পৃথিবী বশ করা যায় তা না দেখাইতে পারলেও নির্মল বিনোদনের প্রতিশ্রুতি আমি দিতেই পারি(আপনি sol পছন্দ না করলে ভিন্ন কথা)।

কাহিনীঃ ৩০ বছরের বেচেলর দাইকিচি তার দাদার শেষঃকৃত অনুষ্ঠানে গিয়ে দাদার ৮ বছর বয়সী অবৈধ সন্তান রিন এর দেখা পায়। স্পর্শকাতর জন্ম তার উপর মা কে তা জানা নাই বলে পরিবারের অন্যান্যরা রিন থেকে মুক্তির পথ খুঁজতে থাকে। শেষ পর্যন্ত নীরব লক্ষ্মী মেয়েটার অনাথ আশ্রমে স্থায়ী ঠিকানা হওয়ার আশংকা দেখা যাওয়ায় দাইকিচি নিজের খালাকে adopt করবে বলে সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু একজন বেচেলরের জন্য কাজের সাথে একটি মেয়ে পালন করা কি সম্ভব? রিন এর মাই বা কে? দাইকিচি কি তার চাকুরী রাখতে পারবে? রিনকে তার পরিচয় কি দিবে? Find out মরে on the next episode of Usagi Drop.

artwork আর music তেমন বলার মত কিছু না। অপেনিং বা এন্ডিং এভারেজ এগেছে। ভালো লেগেছে রিন এর সেইয়ু। দাইকিচি আর রিন এর chemistry ছিল দেখার মত। আমি রেটিং পছন্দ করি না, তাই মাল বা আমার রেটিং দিলাম না। শুধু বলব একবার ট্রাই করে দেখুন। আর আপ্নি যদি sol without romance এর ভক্ত হন বা একটু আলাদা story চেখে দেখতে চান তাহলে আপনি এইটাই খুঁজছেন।

critism বা review লেখায় আমি অতীব noob। আশা করি ভুলত্রুটিগুলো ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

28 Usagi Drop

রিভিউ কন্টেস্ট এন্ট্রি [২০১৫] #২৭: Hadashi no Gen (Bearfoot Gen) — Rafid Rahim

নামঃ Hadashi no Gen(Bearfoot Gen) [Movie]
জনরাঃTragedy,Drama,Historical
MAL  rating:  7.96

লিঙ্কঃ http://kissanime.com/Anime/Hadashi-no-Gen

৬ অগাস্ট,১৯৪৫ মানব জাতির ইতিহাসের সব চেয়ে ভয়াল দিন। এইদিনে জাপানের হিরশিমা শহরের বুকে নরক নামিয়ে আনা হয়েছিল। সেই ভয়াবহ দিনের কিছু মর্মান্তিক ঘটনা এই মুভিতে তুলে ধরা হয়েছে।

স্টোরিঃ

গল্পটি প্রধান ক্যারেক্টার একজন দুরন্ত বালক গেন(Gen) কে ঘিরেই। গেন তার পরিবার এর সাথে হিরোশিমা শহরে বাস করে।তার পরিবারে রয়েছে তার বাবা-যিনি পরিবার এর জন্য কঠোর পরিশ্রম করে খাদ্য যোগায়,তার ছোট ভাই সিনজি-যে সারাদিন গেন এর সাথে খেলা-ধুলায় মেতে থাকে,তার বড় বোন-যে শান্তশিষ্ট ও দায়িত্বশীল  এবং তার মা- যিনি জন্ম দিতে যাচ্ছে তাদের ৪র্থ সহোদর।অত্যন্ত অভাব-অনটন এর মধ্যে থাকলেও তারা সুখেই দিন কাটাত।

৬ই আগস্ট,নিত্য দিনের মত সে দিন সকালবেলাও তারা ঘুম থেকে উঠে তাদের নিত্য কাজকর্ম করতে শুরু করে,গেন তার স্কুল এর উদ্দেশে রউন হয়।

সকাল ৮টা বেজে ১৫মিনিট, “ইনলা গে” নামক বি২৯ বোমারু বিমান থেকে “লিটল বয়” হিরশিমা শহরের কেন্দ্রে নিক্ষেপ করা হোল। প্রকাণ্ড বিস্ফোরণে পুরো শহর তছনছ হয়ে গেল,মুহূর্তেই নিভে গেল হাজারো প্রাণ, শহরের একটিও দালানকোঠা অবশিষ্ট থাকল না।

হাল্কা কিছু ধ্বংসস্তূপ এর নিচে চাপা পরে গেন তার জ্ঞান হারায়। জ্ঞান ফেরার পর সে নারকীয় দৃশের সাক্ষি হয়। চারিদিকে শুধুই ধ্বংসস্তূপ এবং আহাত মানুষের হাহাকার। ক্ষতিকর তেজক্রিয়া এর আঘাতে মানুষের চামড়া পুড়ে এমন অবস্থা হয়েছে যে তাদের মানুষ বলে আর চেনা যাচ্ছে না।স্তূপ এর নিচে চাপা পরে আছে অনেকে,তাদের সাহায্য করার কেউ নেই।

গেন তার পরিবার এর কথা চিন্তা করে দৌড়ে তার বাসার দিকে রউনা হয়।তার পরিবার এর সবাই বেঁচে আছে কি? তারা কি আর স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবে?……স্পইলার না দিয়ে এখানেই বর্ণনা সমাপ্ত করলাম।

অ্যানিমেশন: মুভিটি ১৯৮৩ সালে বানানো হয়েছে তাই অ্যানিমেশনটাও সে সময় এর সাথে মানানসই । তবে এতে কিছু graphic দৃশ্য  রয়েছে। বিস্ফোরণ এর প্রতিক্রিয়া,তেজক্রিয়া এর সংস্পর্শে মানুষ এর চাপড়া বিকৃত হয়ে যাওয়া,আহাত মানুষের হাহাকার ও গোঙানি ইত্যাদি দৃশ্য ভয়ানক ভাবেই ফুটিয়ে তলা হয়েছে।

কেন আপনি এই আনিমে দেখবেন?

“Grave of fireflies” এর সাথে এই মুভি এর অনেক মিল আছে।সুতরাং যারা “Grave of fireflies দেখে অশ্রু ঝেড়ে ছিলেন,তারা এই মুভিটি দেখার আগে অবশই একটি টিস্যু বক্স নিয়ে বসবেন অশ্রু মুছার জন্য। এই মুভিটি শুধু পরমানবিক অস্ত্রের ভয়াবহতাই দেখানো হয়নি,সেই সাথে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে সতর্ক বার্তাও পাঠানো হয়েছে ।তাছাড়া দুর্ঘটনা পরবর্তী মানুষের বেঁচে থাকার সংগ্রাম এবং অতীত কে পিছে ফেলে নতুন জীবন গড়ার অপ্রাণ চেষ্টা তুলে ধরা হয়েছে।

মুভিটি অনেক ভাল হলেও তা “Grave of Fireflies” এর ছায়ায় পোরে আন্ডার রেটেড হয়ে আছে। অনেকের মতে, কিছু দিক দিয়ে এই মুভিটি GoF কেও ছাড়িয়ে যায় ।

সব মিলিয়ে বলা যায়,এই মুভিটি একটি আন্ডার রেটেড মাস্টারপিস বটে।

27 Hadashi no Gen

রিভিউ কন্টেস্ট এন্ট্রি [২০১৫] #২৬: Death Note — Mehedi Zaman

ডেথ নোট (Death Note)
এপিসোডঃ ৩৭
জনরাঃ মিসটেরি, সাইকোলজিক্যাল, থ্রিলার, সুপারন্যাচারাল, পুলিশ।
Myanimelist Score: ৮.৭৬

ধরুন আপনি এমন এক নোটবই পেলেন, যেখানে কারো নাম লিখলে সেই ব্যাক্তি ৪০ সেকেন্ডের মধ্যে মারা যাবে। তাহলে আপনি কি করবেন? এরকমই এক কঠিন প্রশ্ন নিয়ে শুরু হয় ডেথ নোট। এই এনিমেতে রয়েছে মানুষের বিবেকবোধ এবং ন্যায়বোধ এর এক চরম পরীক্ষা। যদি আপনি জানতে চান এরকম পরিস্থিতিতে পরলে একজন কি কি করতে পারে এবং এই এনিমের শেষ পরিণতি কি তাহলে অবশ্যই দেখবেন ডেথ নোট।

 

কাহিনী/প্লটঃ ১০/১০

ডেথ নোট এনিমেটির কাহিনী বেশিরভাগ এনিমে থেকে একটু ভিন্ন তা বলার অপেক্ষা রাখে না। ‘য়াগামি লাইট’, একজন ১৭ বছরের তরুণ একদিন স্কুল থেকে বাসায় ফেরার সময় একটি নোটবই পায়, যার শিরোনাম ছিল ‘ডেথ নোট’। সে ডেথ নোটের কার্যকারিতা যাচাই করে দেখল যে আসলেই এর মাধ্যমে যে কাউকে মারা যায়। এর জন্য শুধু প্রয়োজন সেই ব্যাক্তির সঠিক নাম। য়াগামি তখন এই পৃথিবীকে এক শান্তিময় স্থান বানানোর জন্য, অপরাধমুক্ত করার জন্য, অপরাধিদের নাম ডেথ নোটে লিখতে থাকে। তবে  তার সামনে বাধা হয়ে দাঁড়ায় এক রহস্যময় ডিটেকটিভ, এল(L)। ডেথ নোটএনিমের স্টোরি ডেভেলপমেন্ট সত্যিই তাক লাগিয়ে দেয়ার মতো যদিও ২৬ এপিসোডের পর এর আকর্ষণ কিছুটা কমে যায়।

 

ক্যারেক্টার ডেভেলপমেন্টঃ ৯.৫/১০

ডেথ নোট এনিমেটির মূল চরিত্র হল য়াগামি এবং এল। এরা দুজনই খুবই চালাক এবং চতুর। একদিকে য়াগামির ঠাণ্ডা মাথায় অপরাধিদের মেরে চলার প্রবণতা আবার আরেকদিকে এল – এর অদ্ভুত কিন্তু অসাধারণ কীর্তিকলাপ য়াগামিকে ধরার জন্য- সত্যিই আপনাকে জানিয়ে দিবে দুজনের চরিত্রের পুঙ্খানুপুঙ্খ বৈশিষ্ট্য। এছাড়াও রয়েছে কিছু সাইড ক্যারেক্টার (মেইন ক্যারেক্টারও বলা চলে) যেমনঃ মিসা আমানে এবং রিউক। এই পয়েন্টে বলা চলে ডেথ নোট এর ক্যারেক্টারদের তারা ভালোভাবে ফুটিয়ে তুলেছে যেটা অবশ্যই এনিমেটিকে করে তুলেছে আরও চমৎকার।

 

অ্যানিমেশনঃ ৯/১০

‘ডেথ নোট’ এর অ্যানিমেশন সম্পর্কে বলতে হলে প্রথমেই বলতে হয় এখানে নোটবইয়ে কলম দিয়ে লিখাকে তারা এতটা মজার করে তুলেছে যে, আমারও ইচ্ছে হয় খাতা কলম নিয়ে বসে পরি। অ্যানিমেশনে কিছু অন্ধকারাচ্ছন্ন দৃশ্য ছিল যাএনিমের থিমের সাথে মিলে যায়।

 

সাউনডট্র্যাক/মিউজিকঃ ৯.৫/১০

‘ডেথ নোট’ এর সাউনডট্র্যাক গুলো  আমার  কাছে  খুবই  ভাল  লেগেছে। এক্ষেত্রে Yoshihisa Hirano এবং Hideki Taniuchi কম্পোসার হিসেবে গুরুদায়িত্ব পালন করেছেন। বিশেষ করে ডেথ নোটের প্রথম ওপেনিং যেটা গেয়েছেNightmare ব্যান্ড, আমার খুবই পছন্দের। এনিমেটির কিছু শ্বাসরুদ্ধকর মুহূর্তের মিউজিকগুলো ওই দৃশ্যগুলোকে করে তুলে আরও ইন্টারেস্টিং।

 

এঞ্জয়মেনটঃ ১০/১০

‘ডেথ নোট’ এর  একটি  শক্তিশালী  দিক হল এনিমেটির এপিসোডের গতি(pace)। এনিমেটি দেখা শুরু করলে শেষ না করে উঠতে ইচ্ছে করে না। কারণ, প্রত্যেকটি এপিসোডের শেষে এমন একটা সাস্পেন্স থাকে যে পরবর্তী এপিসোড না দেখে থাকা যায় না। তবে ২৬তম এপিসোডের পরে এই আকাঙ্ক্ষা কিছুটা কমে যায়। এনিমেটি দেখে বিড়াল এবং ইঁদুরের ছুটোছুটির কথা মনে পড়ে। এক কথায় ‘ডেথ নোট’ আপনাকে দিবে এক অবর্ণনীয় রোমাঞ্চ।

 

ওভারঅলঃ ৯.৫/১০

যারা যারা ডেথ নোট দেখেছেন বা দেখবেন তাদের মনে অবশ্যই একটি প্রশ্ন আসতে পারে যে য়াগামি ডেথ নোট পেয়ে যা করল তা আসলে সঠিক কিনা। এই প্রশ্নের উত্তর আপনারা নিজেরাই দিবেন। তবে আমার কাছে য়াগামির চেয়ে এল এর কর্মকাণ্ড বেশি সঠিক বলে মনে হয়েছে। ওভারঅল ডেথ নোট এখন পর্যন্ত ওয়ান অফ দা বেস্ট এনিমে, আমার কাছে।

 

‘I will make the world a better place’- য়াগামি লাইট। আসলেই কি সে পেরেছিল তার স্বপ্ন পূরণ করতে?জানতে হলে দেখুন ‘ডেথ নোট’।

26 Death Note

রিভিউ কন্টেস্ট এন্ট্রি [২০১৫] #২৫: Natsume Yuujinchou [Natsume’s Book of Friends] — Shaikh Mohammad Habib

সিরিজ : Natsume Yuujinchou/ Natsume’s Book of Friends
পর্ব সংখ্যা – ৫৪ (৪ সিজন)
জনরা – স্লাইস অফ লাইফ, ড্রামা, সুপারন্যাচারাল
মাঙ্গাকা – ইয়ুকি মিদোরিকাওয়া
ডিরেক্টর – তাকাহিরো ওমোরি

সিরিজের প্রধান চরিত্র নাতসুমে তাকাশি, যে কিনা ছোটবেলা থেকেই বুঝতে পারে সে অন্য সবার চেয়ে একটু আলাদা। তার রয়েছে আত্মাদের দেখতে পাওয়ার অতিপ্রাকৃত ক্ষমতা।  তবে এই ক্ষমতা তার জন্য কোন কল্যাণ বয়ে আনেনি, বরং নিজেকে সবার সাথে মানিয়ে নিতে গোপন রাখতে হয়েছে আত্মাদের দেখার কথা। ঘটনাচক্রে নাতসুমে জানতে পারে তার দাদি রেইকোরও ছিল একই ক্ষমতা। তবে রেইকো ছিল কিছুটা ভিন্ন, আত্মাদের পরাজিত করে আনুগত্যের নিদর্শন হিসেবে তাদের নাম লিখে নিত তার নিজের একটি বইয়ে। উত্তরাধিকারসূত্রে সেই বই এখন নাতসুমের। নাতসুমের কাছে যেমন অসংখ্য নিরীহ আত্মা আসে তাদের নাম ফিরে পেতে তেমনি রেইকোর বই ছিনিয়ে নিয়ে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধি করার মত আত্মাদেরও মোকাবেলা করতে হয় নাতসুমের। আর এই যাত্রায় সঙ্গী হিসেবে পেয়েছে সে মাদারা/নিয়াঙ্কো সেন্সেইকে।

সিরিজটির কাহিনীতে অতিপ্রাকৃত উপাদানের উপস্থিতি সত্ত্বেও কাহিনির মুলে রয়েছে নাতসুমে তাকাশির নিজের অবস্থান খুজে পাওয়ার প্রচেষ্টা। আর এই প্রচেষ্টার মধ্য দিয়েই নাতসুমের চরিত্রের বিকাশ ঘটতে দেখা যায় সিরিজে। আত্মাদের সম্পর্কে জানার পাশাপাশি নিজের চারপাশ সম্পর্কেও সচেতন হয়ে ওঠে সে। বারবার উপেক্ষার স্বীকার নাতসুমে তাই ফুজিওয়ারা পরিবারের ভালোবাসা বুঝতে ভুল করে না। পাশাপাশি স্কুলে তার নতুন বন্ধুদেরও সে হারাতে চায় না। তাই তাকে সতর্ক পায়ে চলতে হয় প্রতি ক্ষেত্রে। তবুও নিজের দায়িত্বটুকু সে ভোলেনা, আত্মাদের নাম ফিরিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব টুকু চালিয়ে যায় সে। আর সঙ্গী হিসেবে পায় নিয়াঙ্কো সেন্সেই/ মাদারাকে। যার উদ্দেশ্য রেইকোর বইের মালিকানা পাওয়া, কিন্তু ধীরে ধীরে নাতসুমের বন্ধুতে পরিণত হতে দেখি এই বিড়ালরূপী সেন্সেইকে।

সিরিজটিতে বেশ ধীরস্থিরভাবে কাহিনী এগিয়ে নেয়া হয়েছে, যেখানে আমরা মূলত নাতসুমের বিভিন্ন আয়াকাশি/ আত্মাদের নিয়ে অভিজ্ঞতা দেখি,পাশাপাশি জানতে পারি তার দাদি রেইকোকে। তবে এক্সরসিজম এবং মাতোবা পরিবারের সাথে নাতসুমের দ্বৈরথের বিষয়গুলো বেশ আকর্ষণীয়। এটা আরও উপভোগ্য করা যেত যদিও অ্যানিমে সিরিজে প্রত্যাশিত মাত্রায় এই দ্বৈরথের উপস্থিতি নেই 🙁 ।

সব মিলিয়ে স্লাইস অফ লাইফ সিরিজ হিসেবে আমার লিস্টের অন্যতম সেরা নাতসুমে ইউজিনচোউ। নাতসুমের দ্বৈত জীবনে মানিয়ে নেয়ার চেষ্টাকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে পরিমিতভাবে। আবেগ, নাটকীয়তা, অতিপ্রাকৃত বিষয়ের উপস্থিতি সব কিছুই সিরিজে এসেছে পরিমিত এবং গোছানো রুপে। এ কারণেই আমার বিশ্বাস, সিরিজটি স্লাইস অফ লাইফ ফ্যানদের অন্তত নিরাশ করবে না।

25 Natsume

রিভিউ কন্টেস্ট এন্ট্রি [২০১৫] #২৪: Children Who Chase Lost Voices from Deep Below — Amor Asad

Children Who Chase Lost Voices from Deep Below (2011)
Original Title: Hoshi wo Ou Kodomo
Mal: 7.87

সম্ভবত সবারই একটা গল্প থাকে, গল্পগুলির মধ্যে মিল থাকার প্রতিশ্রুতি নেই; তবে সব গল্পেই আছে ইচ্ছে পূরণের আকুতি। জীবনের প্রায় পুরোটা সময় আমরা একে অন্যের উপর নির্ভরশীল হই, কারণে অকারণে, চেতনে অবচেতনে। কিন্তু দিনশেষে সবার লক্ষ্য আলাদা, চাওয়া পাওয়া গুলোও। কারোটা হয়ত কষ্টসাধ্য, কারোটা ধোঁয়াশা মাত্র। তবু স্বপ্ন পূরণে মানুষ অক্লান্ত চেষ্টা করে যায়। এটাই জীবনের সৌন্দর্য্য, এতেই জীবনের মহত্য।

Children Who Chase Lost Voices (2011) অ্যানিমের দর্শন বোধকরি অনেকটা কাছাকাছি। পিতৃহীন কঠিন পরিবেশে বড় হয়ে ওঠায় আর দশজন থেকে Asuna’র জন্যে বরং চারপাশের জগতের উপর নিয়ন্ত্রণ একটু বেশিই, তবু অপ্রাপ্তি আর আকাঙ্ক্ষা তার চরিত্রের বড় একটা অংশ। অচেনা কোন জগত থেকে উদয় হওয়া Shunঅথবা, ভারপ্রাপ্ত রহস্যময় শিক্ষক Morisaki’র গল্পেও আকাঙ্ক্ষার প্রবল আনাগোনা লক্ষ্য করা যায়।

গল্পের দিক দিয়ে Hoshi wo Ou Kodomo এককথায় অনন্যসাধারন। মনে আছে, ছেলেবেলায় ছোটখাটো যন্ত্রাংশ, মটর চালিত নৌকা ইত্যাদির উপর দারুণ আগ্রহ ছিলো। এই নিয়ে পড়ে থাকতাম। হোমমেইড রেডিওটা দেখে ছটফটে, কৌতূহলী মেয়ে Asuna’কে তাই সহজেই ভালো লেগে গেলো। স্কুল ছুটি, দে ছুট… পাহাড়ের ঢালে তার ব্যক্তিগত ছোট্ট এক ঘর আর তার ভিতর ঠাসা দুনিয়ার জিনিষপত্র। পাশের টিলায় প্রতিদিন শেষ বিকেলের রোদে পা এলিয়ে দিয়ে রেডিওটায় সুর খুজে বের করা Asuna’র সখ। কে জানত রেডিওতে অচেনা, অন্যরকম এক সুর তার সামনে অ্যাডভেঞ্চারের এক নতুন দুনিয়া খুলে দিবে? Asuna’র পরিচয় হয় কিশোর Shun এর সাথে। শীঘ্রই Asuna জানতে পারে Shun এজগতের কেউ না, বরং সবাই যাকে রুপকথাত জগত ভাবত, সেই আগাথা বা পাতালপুরী থেকে এসেছে। কথিত আছে, Agathaএমন এক যায়গা, যেখানে মৃত মানুষকে ফিরিয়ে আনা যায়। মৃত প্রিয়জনকে ফিরিয়ে আনতে যুগে যুগেAgatha’র ঠিকানা খুজে মরেছে মানুষ। ঘটনাক্রমে Shun’এর মৃত্যু হয়, শুরু হয় পাতালপুরীতে Asuna’র রোমহর্ষকর অভিযান। তবে এ যাত্রায় Asuna কিন্তু একা নয়।

অ্যানিমে নির্মাতা মাকোতো শিনকাই। এই লোকের রঙয়ের ব্যবহার বরাবরই মুগ্ধ করে। তার অ্যানিমেগুলোর আর্ট খুবই উঁচুদরের এবং দেখলে  যেন রীতিমত চোখের ব্যায়াম হয়, দারুণ প্রশান্তি লাগে। তার অন্য কাজ 5 Centimeters Per Second, Garden of Words  ইত্যাদির মতো এখানেও গ্রাফিক্সের কাজ দেখার মতো। যদি শুধু সিনেম্যাটোগ্রাফির দিক দিয়ে বিচার করতে বসি, Children who chase lost voices দশে পাক্কা দশ পাবে।  সেই সাথে আছে দারুণ ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক। কাহিনীর ভিতরে ঢুকিয়ে দিতে চেষ্টার কোন কমতি নেই যেন। আর মাকোতো শিনকাই’তো আছেনই তার পরিচালনার মুন্সিয়ানায় এ দু’য়ের সাথে গল্পের মিশ্রণ ঘটাতে।

কল্পনার পঙ্খীরাজ ওড়ানো ফ্যান্টাসি, অ্যাডভেঞ্চার অ্যানিমের মধ্যেও শিনকাই সিরিয়াস কিছু দর্শন আর প্রশ্ন তুলেছেন। সত্যিই যদি মৃতের দুনিয়ায় গিয়ে আপনজনকে ফেরানো যেত,  আমরা কতখানি স্যাক্রিফাইস করে আপনজনের সাথে মিলিত হবার বাসনাকে উজ্জীবিত রাখতাম?

অথবা, নিজের বা নিজ জাতির আধিপত্য পৃথিবীর বুকে প্রতিষ্ঠিত করতে কতটা মানুষের নিষ্ঠুরতা কেমন হতে পারে? ইতিহাসের স্বার্থান্বেষী, মারকুটে, মানবতার কলঙ্ক শাসকদের চরিত্রায়নও করেছেন পরিচালক একটুক্ষণের জন্যে।

যাইহোক, একেবারে খাঁটি সোনা কিন্তু নয় CWCLVFDB, ক্যারেক্টার বিল্ড আপে কিছু ত্রুটি ছিলো। প্রথমাংশ এবং ৩০ মিনিট পর যেভাবে দৃশ্যপট পালটে গেলো, একটু বেমানান লেগেছে। কোথাও যেন কাহিনী একটু জোর করে মিলিয়ে দেয়া হয়েছে; আবার কোথাও ডায়লগ উপযুক্ত ছিলো না। তবে এসব যদি এড়িয়ে যাওয়া যায়, এটা নিঃসন্দেহে সেরা অ্যাডভেঞ্চার/ফ্যান্টাসি অ্যানিমের তালিকায় যায়গা করে নিতে পারবে। জিবলি স্টুডিওর Spirited Away এর মত এই অ্যানিমেটা একই ঘরানার। মিয়াজাকির স্পিরিটেড অ্যাওয়ে যারা পছন্দ করেছেন, তাদের জন্য অবশ্যই দেখতব্য।

আমার রেটিং ৮.৫/১০

24 Children Who Chase Lost Voices

রিভিউ কন্টেস্ট এন্ট্রি [২০১৫] #২৩: Monster — Tufika Anwar

# Anime: Monster
# Episodes: 74
# Genre: Mystery, Psychological Horror, Psychological Thriller

জনপ্রিয়তার দিক থেকে Monster কে মূল্যায়ন করতে যাব না। তবে কেউ যদি সত্যিকার রহস্যভরা, মনস্তাত্ত্বিক, সম্পূর্ণ ব্যতিক্রমধর্মী, বাস্তবিক আবার অপার্থিব,আশ্চর্যজনক, শীতল, উত্তেজনাময়, ভয়ংকর এক কথায় দুর্দান্ত Psychological Thriller দেখতে চান তবে Monster হতে পারে আপনার জন্য এক অনন্য অভিজ্ঞতা। Monster এমন কিছু বিষয় ও অভিজ্ঞতার গল্প যা সাধারণত অনাকাঙ্ক্ষিত আর এটাই তার আবেদন। ২০০৪ সালে এটি প্রথম প্রচারিত হয়।

Story: কাহিনীর ভিন্নতা Monster এর প্রধান আকর্ষণ। শুরু যদিও স্লথমন্থর কিন্তু এক জটিলতার  সাথে, Dr: Kenzou Tenma বিখ্যাত Japanese Neurosurgeon তাকে তার দায়িত্বাধীন এক রোগীর চিকিৎসা না করে এক বিখ্যাত গায়কের চিকিৎসা করতে বলা হয়, ফলে সেই রোগী মারা যায়। আত্মগ্লানিতে ভারাক্রান্ত Tenma টিক সেই মুহূর্তে আবার একই পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়। সে এবার বিশাল ব্যাক্তিত্ব মেয়রের চিকিৎসা না করে তার দায়িত্বে আসা এক twin শিশুর জীবন বাঁচায় এবং মেয়র মারা যায়। স্বভাবতই ঊর্ধ্বস্তনদের বিরুদ্ধে যাওয়ায় Tenma এর জীবনে নেমে আসে বিপর্যয়। একই সাথে আশেপাশে শুরু হয় সব রহস্যজনক হত্যা।

কিছু বছর পরে Tenma এর জীবন যখন আবার স্বাভাবিক হচ্ছে তখন সব রহস্যজনক হত্যার হোতা মেয়রের জীবন না বাঁচিয়ে Tenma যার জীবন বাঁচিয়ে ছিল সেই twin দের একজন Johan Liebert Tenma এর সামনেই একটা খুন করে আর Tenma হয় প্রধান suspect.

বাকি ৭০ পর্ব খুনের মিথ্যা আসামি Tenma এর সেই Monster এর খোঁজে চলে এক ইঁদুর বিড়াল খেলা, সাথে দুইটা প্রশ্ন- কে এই Monster? সে কি চায়?

দুনিয়ার তাবৎ বর্জনীয় ও অনেকটাই অস্বস্তিকর বিষয় যেমনঃ হত্যা, শিশু নির্যাতন, মগজধলাই, দুর্নীতি, সন্ত্রাস, human experiment ইত্যাদির সাথে Johan Liebert এর খোঁজেরত Tenma এর মানবিক অভিজ্ঞতা, নৈতিকতা, দৃঢ়তা, Johan Liebert এর জীবনের flashback, তার সম্মোহনী ও অলৌকিকতা, কাহিনীর কিছু অস্বস্তিকর মুহূর্ত, অপার্থিবতা একটা perfect রহস্যজনক মনস্তাতিক কাহিনীর স্বাদ দেয়।

Charecter: Monster দেখার একটা প্রধান কারণ হতে পারে এর কিছু legendary চরিত্র। Antagonist Johan Liebert আর protagonist Dr: Kenzou Tenma এনিমে জগতের দুই অনবদ্য সৃষ্টি। Tenma এর নৈতিকতা ,তার আত্ম উপলব্ধি, সম্পর্কের টানাপড়েন যেমন একটা ভালোলাগার সৃষ্টি করে, তেমনি অনেক গুনেগুনী, আশ্চর্য সম্মোহনী ক্ষমতার অধিকারী, রহস্যজনক, লাগামহীন, ভয়ংকর, manipulative, unpredictable Johan Liebert এর চরিত্র সৃষ্টি করে অস্বস্তিকতা। দীর্ঘ পর্ব জুড়ে ছোট বড় অসংখ্য চরিত্র তাদের বিশেষ চরিত্র বৈশিষ্ট্য দ্বারা  এনিমেকে করে তুলেছে রহস্যজনক ও উপভোগ্য।

Animation & sound: যদিও animation এর দিক দিয়ে Monster কে কোন master peice বলা যাবে না, তবুও এর animation সঠিকভাবই এর location Gremany & Czech Republic কে উপস্থাপন করেছে সাথে সাথে মনস্তাত্ত্বিক কাহিনীর সহায়ক facial expression এবং শীতল, বাস্তবিক ও রহস্যজনক আবহ সৃষ্টিতে সার্থক হয়েছে শতকরা ১০০ ভাগ। আর অসাধারণ শব্দ প্রবাহ যোগ করেছে নতুন মাত্রা।

আমার দেখা আশ্চর্যতম কাহিনীর একটা এনিমে। আমি Psychological storyline এর আর কোন এনিমে না দেখলেও বেশ কিছু Movie, TV series দেখেছি। আমার মতে Monster Naoki Urasawa এর এক অনবদ্য সৃষ্টি।

যদিও ৭৪ পর্ব ও ধীরগতির এনিমে তবুও Monster অবশ্যই একটা master peice এবং সমালোচক প্রশংসনীয় এনিমে। তাই Monster দেখা আপনার জন্য হবে এক অনন্য অভিজ্ঞতা, সময়ের শ্রেষ্ঠ বিনিয়োগ, এক মূল্যবান সঞ্চয়।

[Note: কেউ যদি Dr. Hannibal Lecter এর ভক্ত হয়ে থাকেন তবে তার জন্য Monster দারুন উপভোগ্য হতে পারে।]

23 Monster