Claymore রিভিউ — Rafiul Alam

Claymore

আপনি কি এনিমে দেখায় অরুচিতে ভুগছেন? সহজ, কিন্তু অসাধারণ কোন গল্প সন্ধান করছেন? ডার্ক, ফ্যান্টাসি এবং মেডিভ্যাল‍ কিছুর জন্য ক্রেভিং হচ্ছে?
তাহলে উপরের সকল অসুখের ডোজ হিসেবে ২৬ এপিসোডের ক্লেইমোর (বা ক্লেমোর) সেবন করুন!
এর কার্যকরীতার প্রমাণ এই আমি নিজেই।
ক্লেইমোর একটি অসাধারণ সংগ্রাম, সাহসিকতা এবং মনুষ্যত্বের গল্প, যা তার স্বকীয় শৈল্পিকতা অর্জন করেছে দৃষ্টিকটু কিছু ব্যাপার থাকা সত্ত্বেও। ম্যাডহাউজ তৈরীকৃত আনিমেটি প্রচারিত হয় ২০০৭ সালে, মাংগার কাহিনী অসম্পূর্ণ রেখেই, ২৬ টি এপিসোডে।আমি সাব দেখেছি, ডাবও শুনেছি। সাব>ডাব মনে হয়েছে, তবে আপনার ব্যাক্তিগত পছন্দকে গুরত্ব দেয়ার অনুরোধ করব।
ক্লেইমোর শব্দ দিয়ে মূলত মধ্যযুগীয় স্কটিশ তলোয়ারকে বোঝায়। এনিমেতে ঠিক সেই তলোয়ারই দেখানো হয়েছে।

Synopsis : ঘটনার প্রেক্ষাপট মধ্যযুগের ইউরোপ। যেখানে মানুষের জীবন বিপন্ন ইয়োমার কারণে। ইয়োমা হল এক ধরনের নরখাদক রাক্ষস, যারা কিনা মানুষের রূপ ধারন করে মানুষের মাঝে মিলেমিশে থাকতে পারে। মহাবিপদ! এখন এই রাক্ষসের উপদ্রব থেকে মানুষজনের উদ্ধার পাওয়ার একমাত্র সম্বল হল কয়েকজন নারীযোদ্ধা, যাদের সাধারণ মানুষজন ক্লেইমোর বলে ডাকে।
ঘটনার শুরুতে, এক জনপদে ইয়োমার আক্রমণে ৬ জন নিহত হয়। ফলে সেখানে ক্লেইমোর বাহিনীর আগমণ ঘটে। ক্লেইমোরদের ইয়োমাবিনাশী ক্ষমতা, শক্তিশালী দৈহিক গঠন, অতিরিক্ত ফ্যাকাশে ত্বক, এবং অস্বাভাবিক চোখের রঙের কারণে মানুষজন তাদের ভয়ের চোখে দেখে। কিন্তু ইয়োমার কাছে পরিবার হারানো অসহায় ছেলে রাকি ক্লেইমোরদের সাধারণ মানুষদের থেকে আলাদা নজরে দেখে না। ফলে রাকি, ক্লেয়ার নামের এক ক্লেইমোরের পিছু নেয়। ঘটনার আবর্তনে ক্লেয়ার আর রাকি নানামুখী প্রতিকূলতার মুখোমুখি হয়। ফলে চরিত্রগুলোর সাথে দর্শকদের বন্ধন তৈরী হওয়ার পাশাপাশি ঘটনার প্রবাহ ত্বরান্বিত হয়। একই সাথে দর্শকদের কাছে ক্লেইমোরদের উদ্দেশ্য, গাঠনিক নিয়মাবলী পরিষ্কার হয়। নামবিহীন ‘দ্যা অর্গানাইজেশন’ এর কলকাঠি নাড়াচাড়া স্ক্রিনে আসলে গল্পেটি আরেক দিক থেকে দেখার সু্যোগ হয়। কাহিনী যত এগোয়, নতুন নতুন চরিত্র ও তাদের উদ্দেশ্য উন্মোচিত হয়। গল্পের যে দিকটি নজর কেড়েছে , তা হল এখানে চরিত্রগুলোর উদ্দেশ্য খুবই সহজে বোঝা যায়, কিন্তু গভীরতার দিক থেকে কোন অংশেই কম না। এবং অসাধারণ পেসিং থাকার কারণে কাহিনীর সমাপ্তি না জেনেও এনিমের একটি ভাল সমাপ্তি আশা করতে পারেন।

Theme setup, Animation and Music : ইউরোপের প্রকৃতি, তুষার, মধ্যযুগের পাথরের স্থাপত্য ও ধর্মীয় বিশ্বাস সবই বেশ বাস্তবিকভাবে তুলে ধরা হয়েছে। আনিমেতে পরিমিত সূর্যের আলো দেখানোর ফলে গথিক একটা ভাইব তৈরী করতে পেরেছেন নির্মাতারা। যা আমার কাছে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ছিল। অবচেতনভাবেই দর্শক মনে প্রভাব ফেলবে এর সিনগুলো। অসাধারণ আর্টওয়ার্ক যাকে আরও এম্প্লিফাই করেছে। তবে এনিমেশনের কিছু কিছু ব্যাপার দৃষ্টিকটু ছিল। বিশেষ করে একশন সিনগুলিতে রক্ত পড়াকে ফোয়ারার মত দেখানো হয়েছে। আবার অনেক সময় একশনগুলি বেশি অবাস্তব মনে হওয়াও অসম্ভব নয়। অবশ্য তামিল মুভির ভক্ত হলে অনুভূতি ভিন্ন হতে পারে।
এবার আসি মিউজিকে। এনিমেটির ঝাকানাকা অপেনিং খুবই মনোমুগ্ধকর লেগেছে আমার কাছে। ফোক মেটালের এন্ডিং আরও বেশি পারফেক্ট ছিল, পুরো এনিমেটির সাথে খুবই, খুবই ভালভাবে মানিয়ে যায়। তবে ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকের ব্যাবহার অনেক সময় খাপছাড়া মনে হয়েছে। অনেক সময় দুটি ট্র‍্যাক গ্যাপ ছাড়া কন্টিনিউয়াসলি প্লে করা হয়েছে। এমন সাডেন চেঞ্জে কোন কোন দৃশ্যে দর্শকের ফিলিংস কনফিউজড হয়ে যায়। তবে আমি বলব, গ্লিচগুলিকে অভারলুক করা গেলে ক্লেইমোর আপনার জন্য নিঃসন্দেহে উপভোগ্য হবে।

Characters Setup : এনিমেটির ক্যারেক্টার বিল্ডআপ এর সবচেয়ে মুল্যবান দিকগুলোর একটি। কোন ফাইট শেষ হওয়ার পর তার আগের ফাইটকে খুবই নগণ্য মনে হয়েছে। ক্লেয়ার চরিত্রটি অনুপ্রেরণাদায়ক ছিল। চরিত্রগুলি বেশ জীবন্ত মনে লেগেছে। যদিও রাকি চরিত্রটি বিরক্তিকর লাগতে পারে অনেকের কাছে। কাহিনীতে তেরেসা, মিরিয়া, ডেনেভ, আইরিন, অফিলিয়াসহ প্রচুর চরিত্র আছে, কিন্তু তাদের স্টোরি ঠিক যতটুকু স্পটলাইট ডিসার্ভ করে, ততটুকুই দেয়া হয়েছে। একই সাথে চরিত্রগুলির স্বতন্ত্রতা বজায় ছিল, ফলে মনে রাখা সহজ হয়।

Overall Rating :
MyAnimeList.net : 7.95/10
IMDb Rating : 8.1/10
My Rating : 8.6/10

Opening:

https://www.youtube.com/watch?v=umgoE_SASK0

Ending:

 

Comments