Anime- Saekano: How to Raise a Boring Girlfriend
জানরাঃ কমেডি, স্কুল, রোমান্স, এচি, হারেম
মাই অ্যানিমে লিস্ট রেটিং: 7.82
ব্যাক্তিগত রেটিং: 8.5
একজন অ্যানিমে ভক্ত হিসেবে জীবনে ঘটে যাওয়া কোন ঘটনাকে ঘিরে কোন অ্যানিমে, নভেল, মাঙ্গা অথবা গেম বানানোর ইচ্ছা- এটা অনেকেরই থাকে| একজন ওতাকুর এই ইচ্ছাগুলো বাস্তবায়নের যাত্রা এই অ্যানিমেটাতে সুন্দর করে তুলে ধরা হয়েছে|
কাহিনী (৮/১০):
অ্যানিমের প্রধান চরিত্র তোমোইয়া আকি, যিনি একজন হার্ডকোর ওতাকু। এক বসন্তের সকালে সাইকেলে চড়ে ঢাল থেকে নামার সময় দমকা হাওয়ায় তার সামনে উড়ে এসে পড়ে একটি মেয়েদের হ্যাট। হ্যাটটি হাতে নিয়ে এদিক ওদিক তাকাতেই সে দেখতে পায়, বসন্তের বাতাসে সাকুরার পাপড়িতে ভরা পরিবেশে ঢালের ওপর সাদা ফ্রক পরা এক মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে। সেই দৃশ্য নায়কের কাছে অপরূপ লাগে। সে ঠিক করে ফেলে, এই দৃশ্যের ওপর ভিত্তি করে সে এমন এক ডেটিং সিম তৈরি করবে, যা সবার মন গলিয়ে দেবে। এ নিয়ে সে তৈরি করে তার নিজের দৌজিন সার্কেল। তাদের দৈনন্দিন জীবন নিয়ে এই অ্যানিমেটি। খুব হালকা ধাঁচের বাস্তবসম্মত এবং হাস্যরসে ভরা কাহিনী এই অ্যানিমেটির।
ক্যারেক্টার ডিজাইন (৭/১০):
আমাদের প্রধান চরিত্র তোমোইয়া আকি হল একজন টিপিক্যাল ওতাকু। তিনি প্রকৃতিগতভাবে বোকা,তার চারপাশ সম্বন্ধে উদাসীন এবং নিজের সিদ্ধান্ত করা পথ অনুসরণ করে।
অ্যানিমের আরেক চরিত্র কাসুমিগাওকা উতাহা সেনপাই; একজন ‘পারফেক্ট গার্ল’। সে সুন্দরী, মেধাবী, স্কুলের জনপ্রিয় ছাত্রী এবং একজন ভালো লেখিকা। আকির দৌজিন সার্কেলের জন্য স্টোরি লেখার দায়িত্ব তার ওপর। আপনার যদি “ওনেসামা” টাইপের চরিত্র পছন্দ হয়, তবে আপনার এই চরিত্রটিকে অনেক বেশি ভাল লাগবে।
এছাড়াও রয়েছে সাওয়ামুরা স্পেনসার এরিরি, আকির ছোটবেলার বান্ধবী ও একজন প্রতিভাধর দৌজিন চিত্রশিল্পী এবং সেইসাথে সুনদেরে। কাতৌ মেগুমি, সিরিজের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র। সে আকির গেমের হিরোইনের মডেল। নরম এবং ক্লুলেস স্বভাবের এই মেয়েটিকে যে কারও পছন্দ হবে। সবশেষে বলব হিয়োদৌ মিচিরুর কথা, আকির চাচাতো বোন সে। অ্যানিমেতে তার একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।
এছাড়াও বেশ কিছু চরিত্র রয়েছে অ্যানিমেটিতে, তবে তারা মনে রাখার মত তেমন কিছু করে না। ১২ পর্বের অ্যানিমেটিতে তেমন কোন ক্যারেক্টার ডেভেলপমেন্ট হয়নি; এত কম পর্বের মাঝে তা আসলে সম্ভবও নয়।
সাউন্ড এফেক্ট (৭/১০):
আমার মতে, অ্যানিমেটির ওএসটি বেশ ভালোই ছিল। খুব আহামরি কিছু না, আজকালকার আর দশটা স্লাইস অফ লাইফ অ্যানিমের মতই; তবে সিনগুলার সাথে মানানসই ছিল। ওপেনিং এবং এন্ডিং, দুটিই হালকা ধাঁচের গান, অ্যানিমের থিমের সঙ্গে মানানসই। বিশেষ করে মিকু সাওয়াই এর গাওয়া ‘কালারফুল’ গানটা অনেক সুন্দর এবং আমার প্রিয় এন্ডিংগুলোর একটি। অ্যানিমেটিতে কণ্ঠ দিয়েছেন মাৎসুওকা ইয়োশিৎসুগু এবং কায়ানো আই এর মত অভিজ্ঞ সেইয়ুরা।
আর্টওয়ার্ক (৯/১০):
অ্যানিমেটি এ-ওয়ান পিকচার্সের তৈরি, তবে শ্যাফট স্টুডিওর আর্টের সাথে এর প্রচুর মিল। এ-ওয়ান পিকচার্সের আর্ট আমার বরাবরই ভালো লাগে, তবে তাদের অন্যান্য কাজের তুলনায় সায়েকানোর আর্ট একটু অন্যরকম। ব্যাকগ্রাউন্ড এবং চরিত্রগুলো অনেক উজ্জ্বল করে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে; অনেকটা নিসেকোই অথবা ওরেগাইরু যোকু শো-এর মত। এর আর্টের সবচেয়ে অনন্য দিকটি হল, বিশেষ কোন মূহুর্ত দেখানোর সময় যে কোন একটা রং এর ওপর বেশি ফোকাস করা হয়- এই ব্যাপারটি আমার বেশ দারুন লেগেছে।
বিনোদন (১০/১০):
হালকা ধাঁচের রসাত্মক অ্যানিমেটি যে কোন দিনেই আপনার মন ভালো করে দিতে পারবে। তবে এটি একটি টিপিক্যাল হারেম অ্যানিমে, তাই হারেম ভালো না লাগলে অ্যানিমেটি ভাল লাগার সম্ভাবনা কম। আর এই অ্যানিমেটিতে ফ্যানসার্ভিসের পরিমাণ একটু বেশি; কাজেই আপনি যদি ফ্যানসার্ভিস সহ্য করতে না পারেন তাহলে অ্যানিমেটি না দেখাই ভালো বলে আমি মনে করি।
ত্রুটি:
আমার চোখে অ্যানিমেটির বেশ কিছু ত্রুটি ধরা পড়েছে। যেমন, অ্যানিমেটা শুরু হয় ধীর গতিতে, যা একটা স্লাইস অফ লাইফ অ্যানিমের জন্য মানানসই, কিন্তু শেষে খুব তাড়াহুড়ো করা হয়েছে। এছাড়া কাহিনীটা কিছুদূর আগানোর পর একটু খাপছাড়া হয়ে গিয়েছে।
আমার কাছে অ্যানিমেটা ভালো লাগার এক অন্যতম কারণ হল এর প্রতিটি মূহুর্ত আমি উপভোগ করেছি। আপনি যদি মনে করেন অ্যানিমেটি আপনার ভালো লাগতে পারে, তাহলে সময় নিয়ে দেখে ফেলুন সায়েকানো, আশা করি ভালো লাগবে।