Sakib’s Hidden Gems – Episode #30
আনিমে: Wangan Midnight
Baby Steps [রিভিউ] — Arafin Shanto
Anime: Baby Steps (শিশুর পদক্ষেপ)
Genre: Sports, Romance, School, Shounen
Episode: 50 (season 1 + season 2)
Rating: MAL- season 1:- 7.95, season 2:- 8.19
Personal- season 1:- 7, season 2:- 8(Higher)
সারসংক্ষেপ-
Honor student বা সন্মানিত শিক্ষার্থী শব্দটার সাথে আমরা সবাই পরিচিত।শ্রেণীকক্ষের সবচাইতে বুদ্ধিমান চরিত্র বলা যায় তাদের।
তাদেরকে আমরা বিভিন্নজন বিভিন্নভাবে দেখি।কারো মতে সে যেমন শ্রেণীকক্ষের সবচাইতে আদর্শ চরিত্র আবার অনেকেই একবাক্যেই বলে দেই এদের চেয়ে একঘেয়ে,রসকসহীন প্রজাতি দ্বিতীয়টি পাওয়া দুষ্কর। (আমি দ্বিতীয় পর্যায়ের ব্যাক্তিবর্গের মধ্যে পড়ি 😛) সবকিছুতেই তারা অস্বাভাবিকভাবে পার্ফেক্ট।
তেমনি একজন নার্ভে ওঠা সন্মানিত ছাত্রকে নিয়েই গড়ে উঠেছে শিশুর পদক্ষেপ এনিমের গল্প।আরেকটু ভদ্রভাবে বললে “একজন পেশাদার নার্ড থেকে পেশাদার টেনিস খেলোয়াড় হয়ে ওঠার গল্প।”
Maruo Eiichiro আমাদের গল্পের নায়ক।অন্যান্য পেশাদার নার্ডের মত সেও শ্রেণীকক্ষের সবচাইতে ব্যাস্ত চরিত্র। তার তৈরি করা নোটবুকগুলো নাকি শিক্ষকের লেকচার তো বটেই পাঠ্যবইয়ের চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ এবং কার্যকর। (SFX;Kill him -_-)
এখন প্রশ্ন সে কিভাবে টেনিস খেলোয়াড়ে রূপান্তরিত হল!
না, তার টেনিস খেলার কোন ইচ্ছাই ছিল না। সে তার জীবনেই সুখী ছিল। এমনকি উচ্চ বিদ্যালয়ে ওঠার আগ পর্যন্ত সে জানতোও না টেনিস নামের কোন খেলা পৃথিবীতে আছে। মারুয়ো কেবল তার ব্যাস্ত জীবনের মাঝে কিছুটা সময় বের করে প্রাত্যহিক শরীরচর্চা করতে চেয়েছিল।কি করা যায় সেটা চিন্তা করতে করতে ঘটনাচক্রে টেনিস খেলার সাথে পরিচিত হয় এবং টেনিসকেই তার প্রাত্যহিক শরীরচর্চার জন্য ব্যাবহারের সিদ্ধান্ত নেয়।(মূলত এক সুন্দ্রী টেনিস প্লেয়ারের রূপে মুগ্ধ হয়ে ._.)
নিজস্ব ভাবনা-
আমি স্পোর্টস এনিমে খুব বেশি দেখেছি বলা যায় না, যে কয়েকটা দেখেছি বেশিরভাগই দলগত খেলাভিত্তিক। কারণ স্পোর্টস এনিমের ক্ষেত্রে আমি সবসময় দলগত খেলাকেই প্রধান্য দিয়ে থাকি।একক কোন খেলোয়াড়ের গল্প থেকে দলগত খেলা বেশি ইন্টারেস্টিং এজন্যই হয়তবা।
কিন্তু শিশুর পদক্ষেপ দেখার পর আমার মত আপনারও সে ধারণা পালটে যেতে বাধ্য।একক খেলাতেও যে দর্শকদের আগ্রহ ধরে রাখা যায় শিশুর পদক্ষেপ তার অনন্য উদাহরণ। টেনিস এমনিতেই টেনিস খুবই একটি মজার খেলা এবং সময়ে সময়ে যথেষ্ট ইন্ট্যান্স। আমরা সবাই টেনিসের সাথে কমবেশি পরিচিত।কিন্তু আপনি যদি আগে টেনিস নাও দেখে থাকেন বিচলিত হবার কিছু নেই।এনিমের মধ্যেই টেনিসের প্রতিটি নিয়মকানুন সুন্দরভাবে ধাপে ধাপে বিশ্লেষন করা হয়েছে। এতই সুন্দর এবং গোছানোভাবে বিশ্লেষণ করা হয়েছে যে আপনি টেনিস সম্পর্কে ধারণা তো পাবেনই সাথে টেনিসের খুটিনাটি এমন অনেক বিষোয় সম্পর্কে জানতে পারবেন যা হয়ত আপনি রাফায়েল নাদাল কিংবা রজার ফেদেরারের খেলার নিয়মিত দর্শক হয়েও জানতেন না বা খেয়াল করেননি কোনদিন। 😛
একজন টেনিস খেলোয়াড়ের প্রতিটা শটের পেছনে কতটা শ্রম,কত আবেগ ও তাৎপর্য লুকিয়ে থাকে আপনি সেটাও খুব ভালভাবেই উপলব্ধি করতে পারবেন।তাই এনিমে শেষ করার পর একজন ডাই-হার্ড টেনিস ফ্যান হয়ে গেলেও অবাক হবার কিছুই থাকবে না। xD
এই এনিমের আর্ট নিয়ে অনেকেই কিছুটা নেগেটিভ রিভিউ দেন। কিন্তু আমার কাছে তেমন নিম্নমানের কিছু মনে হয়নি। আহামরি কিছুও নয়। খেলা চলাকালীন ব্যাকগ্রাউন্ডের দর্শকদের দিকে তাকালে কিছুটা আজব অনুভূতি হতে পারে এই যা। গল্পের মাঝে ঢুকে গেলে এগুলো চোখে পড়বে না।
শিশুর পদক্ষেপের সবচাইতে বড় সফলতা হল এটি তার গল্পের প্রতিটি চরিত্রকে খুব সুন্দরভাবে পোট্রে করতে পেরেছে। মারুয়োর চরিত্র অনেক টিপিক্যাল শৌনেন স্পোর্টস এনিমের মূল চরিত্র থেকে অনেকক্ষেত্রেই আলাদা। তাছাড়া এই এনিমের আরেকটি সুন্দর দিক হল তারা চরিত্রগুলোকে এত সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলতে পেরেছে গল্পে যেই চরিত্রের তেমন কোন প্রয়োজন নেই তাকেও আপনি অনেকদিন মনে রাখবেন।
এনিমের চরিত্রগুলোর ডেভেলাপমেন্ট চোখে পড়ার মত। বিশেষত গল্পের নায়ক মারুয়োর চরিত্রের উন্নতি খুব সুন্দরভাবে ধাপে ধাপে করা হয়েছে। মারুয়োর সাথে অন্যান্য খেলোয়াড়ের সম্পর্ক,তার বন্ধুমহলের সাথে সম্পর্ক খুব সুন্দরভাবে তুলে ধরা হয়েছে। গল্পের একটা অসাধারণ দিক হল অনেক স্পোর্টস এনিমের মত এখানে মূল চরিত্রের পরিবারকে দৃশ্যপটের বাইরে ফেলে রাখা হয়নি।বরঞ্চ গল্পের প্রতিটি মোড়ে বিশাল কিছু ভূমিকা দেয়া হয়েছে। যার কারণে আপনার জন্য হয়ত গল্পের সাথে আত্মিক একটা সম্পর্ক তৈরি করে নিতে সহজ হবে।
রোমান্স ট্যাগ টা দেখে প্রশ্ন জাগতে পারে কিভাবে বা কেমনভাবে দেখানো হয়েছে রোমান্স।আপনাক আশ্বস্ত করতে পারি মোটেই ক্রিঞ্জি ভাইবটা নেই। এনিমেতে স্পোর্টসের দিকেই বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। স্পোর্টসের সাথে সামঞ্জস্য রেখেই রোমান্স ফ্যাক্ট টা তুলে ধরা হয়েছে। ঠিক যতটুকু প্রয়োজন ছিল ততটুকুই রাখা হয়েছে।
শিশুর পদক্ষেপের সাউন্ডট্র্যাকগুলো সত্যিকার অর্থে অসাধারণ না বলা গেলেও যথেষ্ট ভাল। গল্পে মজে গেলে হয়ত ওএস্টির দিকে তেমন মনোযোগ দিবেন না কিন্তু একইসাথে এড়িয়ে যাওয়াও সম্ভব নয়। ঠিক অন্য কথা বলা যায় ওপেনিং এবং ইন্ডিং গান নিয়ে। বিশেষত Mao Abe এর গাওয়া “Believe in Yourself” গানটি একবারও এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব তো নয়ই কিছুক্ষেত্রে লুপেও শুনতে বাধ্য হবেন।
শিশুর পদক্ষেপ এনিমেটি তার নামের সাথে মিল রেখেই গল্প ফুটিয়ে তুলতে পেরেছে। একটি শিশু যেমন প্রথম হাঁটতে শেখে এবং সেই শেখার মাঝে যে আনন্দ খুজে পায়।এভাবে চেষ্টার মাধ্যমে সবার উৎসাহে একসময় হাঁটতে সমর্থ হয়, আমাদের গল্পের নায়ক মারুয়োও ঠিক একই গাইডলাইন ফলো করেছে টেনিসের ক্ষেত্রে।
শিশুর পদক্ষেপ এনিমেটির অন্যতম বড় দিক হল এর বাস্তবধর্মী এপ্রোচ। গল্পের কোন জায়গাতেই ফোর্স করে মূল চরিত্রকে জিতিয়ে দেয়ার কোনরকম চেষ্টাই করা হয়নি। এমন কোন টেকনিক বা ট্যাকটিক যুক্ত করা হয়নি যার কোন ব্যাখ্যা নেই। মূল চরিত্র তার ম্যাচগুলো আবেগ দিয়ে নয় বরং এনালাইজ করে খেলে। উড়ে এসে জুড়ে বসা কোন মুভ দেখবেন না আপনি। খেলার মাঝে নেয়া প্রতিটি সিদ্ধান্তই পূর্বপরিকল্পিত। তাই অসাধারণ গল্পের সাথে বাস্তবধর্মী এবং একইসাথে ইন্ট্যান্স স্পোর্টস এনিমের অভাব যদি বোধ করতে থাকেন দেরি না করে দেখতে বসে যান শিশুর পদক্ষেপ।
এখন এনিমেটি শুরু করার আগে আপনাকে যে বিষয়ে ভাবতে হবে তা হল আপনার হাতে কতটা অলস সময় আছে!কারণ একবার শুরু করলে বারবার নেক্সট এপিসোড ক্লিক না করে আপনি থাকতে পারবেন কিনা সেটা ভাববার বিষয়। :3
পুনশচঃ (যদি এই রিভিউ পড়ে এনিমেটা দেখেন,দ্বিতীয় সিজন শেষ করার পর আপনার কাছ থেকে ধন্যবাদ পাই আর না পাই গালি ঠিকই খাইতেসি এইটা আমি শিওর। not because of story. কারণটা ভিন্ন। তাই উহ্যই থাক। 😛)
Major [রিভিউ] — Rahat Rubayet
এনিমেঃ মেজর
সিজনঃ ৬ টা সিজন + ২টা এক্সট্রা এপিসোড (আরো কিছু আছে এদিক সেদিক)
অনেকদিন পর এনিমে দেখতে বসা। মানে শুরু করে শেষ করা আরকি। বেশ বড়সড় একটা সিরিজ। গড়ে ২৫ এপি ধরে ২৫*৬= ১৫০ এর কমবেশি।
বেশ আশা নিয়ে দেখতে বসা, যেখানে বেজবল নিয়ে এর আগে দেখা ২ টা এনিমেতে মিশ্র প্রতিক্রিয়া হয়েছিল। সেদিকে না যাই।
প্রতি সিজনেই কত রকম কথা মনে হয়েছে যা রিয়েকশান হিসেবে লিখতে চেয়েছি, কিন্তু ৬ টা সিজন শেষ করে অনেক কিছুই মাথায় আসছে না।
>> মেজর-
মেইন ক্যারেক্টার এর নিজেকে ভাঙ্গা গড়ার এনিমে। বন্ধুত্বের ভিতকে আগলে একটা জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকা নয়, বরং বন্ধুদের ক্রমাগত রাইভালে পরিনত করতে করতে এগিয়া যাওয়ার গল্প।
না, এই জায়গাটায় আমার কোন সমস্যা নেই- বরং ভালই লেগেছে গোরোর জার্নিটা।
>>মেইন ক্যারেক্টার কে কিছু এপিসোড পরে থেকেই পিটানোর ইচ্ছা দমন করে রেখেছি, কারন তা সম্ভব না। না, সে ইরিটেটিং ক্যারেক্টার মোটেই না। হিরো তো বটেই, চিৎকার করে ডান হাত বাম হাত দিয়ে যে কামানের গোলা ছোড়ে তাকে হিরো না বলে…. সে যাক।
ক্লিশে ব্যাপারে আমার খুব যে সমস্যা আছে তা না, বরঞ্চ মূল চরিত্রের এথলেটিক বডি বিল্ডিং টা বেশ করে দেখিয়েছে শুরুতেই।
কেন যেন থেকে থেকে মূল চরিত্রের সেলফ ডেস্ট্রাক্টিভ কাজকর্মে মেজাজ চড়ে গেছিল। (নিজেকে গোরোর বাবার চরিত্রে কল্পনা করেছি কি? হতে পারে, হতেই পারে)
এমন পোলাপানকে সকালে বিকালে ২ ঘা দেয়া দরকার।
যদিও অনেকের কাছে মনে হতে পারে, প্যাশনের জন্য নিজেকে উজার করে দেয়া, হ্যান-ত্যান….. পারসোনালি আমার তাকে পিটাতে ইচ্ছা করেছে।
যদিও, ছেলে ভালো, শুধু নিজের ভালমন্দ বুঝে না- এই আরকি।
>> মেজর এনিমেতে একটা নির্দিষ্ট ডেথের ইন্সিডেন্ট খুব সুন্দর করে তুলে ধরেছে। মানে আমার কাছে খুবই খুবই সুন্দর লেগেছে জায়গাটা। (মৃত্যুর আবার সুন্দর কি? মৃত্যু মানেই তো অসুন্দর)
মানে, কোন একটা ক্যারেক্টার এর ডেথ আর তাতে সবার প্রতিক্রিয়া বেশ নাটকীয় ভাবে উপস্থাপন ছিল। আমার ভাল লেগেছে।
>> অপেনিং সং ২ টা (২ নং আর ৬ নং) বেশ, বেশ……বেশ ভালো লেগেছে। এখনো Saraba Aoki Omokage লুপে চলছে। লুপে চলার মতন?
কম্পোজিশন, লিরিক আর মূলভাব যদি ঠিকমতন ফুটে ওঠে, তখনই এমন সাউন্ডট্র্যাক পাওয়া যায় কেবল।
লিরিকের কয়েকটা লাইন দিই এখানে যেটা এনিমের ভেতর এমন ট্রান্সলেশনে পাবেন, কিন্তু গুগলে সার্চ দিলে দায়সারা ধাচের ট্রান্সলেশন।
what should i see, when i close my eyes?
will surely be- shining you there.
let your passion rise now,
until your despair becomes hope
get yourself fired up with a golden vow
you can face a challenge without end
>> মেজরের ফিমেইল ক্যারেকটার প্রায় সবগুলো কেই ভালো লেগেছে শুধু শিমিজু আর তার বান্ধবী বাদে। তার বিশেষ টোনে ‘হোন্দা’ বলে চুপসে যাওয়াটা বোধহয় একমাত্র ভাল লাগার দিক।
সবথেকে ভালো লেগেছে বোধহয় Ryoko , Momoko আর Sophia কে।
আর কেন যেন, সোফিয়ার মাঝে হালকা রকমের নাচ্চানের(বেবি স্টেপ্স) ছায়া পেলাম। আচার ব্যবহার+ চেহারা সুরতে মিল আছে সম্ভবত।
>> মেজর বোধ হয় একমাত্র এনিমে আমার জন্য, যেই এনিমের মূল ক্যারেকটার কে মাটিতে পরে যাবার জন্য বারবার প্রে/উইশ করছিলাম।
সিরিয়াসলি!
‘অমুক দলে’র বিপক্ষে ‘অমুক ম্যাচে’ বারবার করে চাইছিলাম – ‘ব্যাটা পর, পরে হস্পিটালাইজড হ, আর সহ্য করা যাচ্ছে না’
>> গিবসন
গিবসন আর গোরো সম্ভবত যুগ্মভাবে আমার পছন্দের চরিত্র এই এনিমেতে।
কেন? দেখলেই বুঝবেন।
>> কোন খারাপ দিক নেই?
আছে, প্রচুর আছে। যেমন সময়ে সময়ে বোরিং লাগতে পারে অনেকের কাছে (আমার লাগে নি মোটে)। ক্লিশে ব্যাপার এর ঘাটতি খুব একটা ছিল না।
তবে, অমুক তমুক এনিমের মতন, মেইন ক্যারেক্টারের সবকিছু জিতে ফেলার মতন ঘটনা ঘটে নি।
>> একটা জিনিষ বলা দরকার।
অনেক অনেক এনিমেতে দেখা যায় অনেক এপিসোড খরচ করে মূল চরিত্রের ছোট থেকে বড় হওয়াটা দেখায় (যদিও আরো অনেক বিষয় থাকে- মানা করছি না), কিন্তু মেজরে ১৫০ এপিসোড যদিও অনেক, তবু এর মাঝেই প্রধান চরিত্রের এত পরিবর্তন যা আবার দৃষ্টিকটু লাগে নি- প্রশংসনীয়।
আর হ্যাঁ, মেজর বোধ হয় যারা ধুম ধারাক্কা থ্রিলিং স্পোর্টস এনিমের খোঁজে আছেন, তাদের চাহিদা মেটাবে না।
পছন্দের স্পোর্টস এনিমে লিস্টে ৩ বা ৪ এ থাকবে মেজর। সিজন ৭ এর অপেক্ষায় রইলাম।
অনেক কিছু বলার ছিল, আঙ্গুলে ঝাল আর শীতে স্থবিরতা এনে দিয়েছে, এই পর্যায়ে।
Ping Pong The Animation [রিভিউ] — Safin Zaman
Ping Pong The Animation
পর্ব সংখ্যাঃ ১১
জনরাঃ সাইকোলজিকাল, সেইনেন, স্পোর্টস
“৯ ফিট বাই ৫ ফিট একটা টেবিল। টেবিলের দুই পাশে ঘর্মাক্ত দুই বালক। হাতে তাদের টেবিল টেনিস র্যাকেট। অনবরত বলটাকে এক পাশ থেকে আরেক পাশে সর্বশক্তি দিয়ে আঘাত করছে তারা। ঠাস, ঠাস, ঠাস, ঠাস। অদ্ভুত এক ছন্দ তৈরী হয়েছে খেলার মধ্যে। দর্শকদের চাহনী একবার এই পাশে, তো আরেকবার অপর পাশে। বলার উপায় নেই দুইজনের মধ্যে কে জিতবে। একি! একজন বালকের চোখে পানি কেন? চোখে পানি নিয়েও এত নিখুঁতভাবে খেলছে যেন সে জানেই বল কোথায় এসে পড়বে। ঠোঁটের কোনে খানিকটা হাসিও যেন দেখা যাচ্ছে তার!”
..
..
..
সুকিমতো মাকোতো। ভাঙ্গা পরিবার থেকে আসা এক ইন্ট্রোভার্টেড বালক। চুপচাপ,কখনো না হাসা, কোন কিছুতেই অভিব্যক্তি না দেখানোর কারণে রোবট,স্মাইল বিভিন্ন ধরণের ডাকনাম পেয়েও নির্বিক সে। জগতের কোন কিছুতেই যেন তার কোনরকম আগ্রহ নেই।
অপরদিকে ইয়োতাকা হোশিনো ওরফে পেকো এক হাসিখুসি উচ্ছল বালক। টেবিল টেনিসে দারুণ ট্যালেন্টেড। ছোট বয়সেই বড় বড় পিংপং টুর্নামেন্টে খেলে পুরষ্কারের ঝুলি ভারী করা এই বালক তার সহপাঠিদের কাছেও সমানভাবে জনপ্রিয়।
দুইজন সম্পুর্ণ ভিন্ন পার্সোনালিটির মানুষের মধ্যে বন্ধুত্ব হতো না যদি টেবিল টেনিসের প্রতি দুইজনের ভালবাসা না থাকত। সেই ছোটবেলায় পেকোর সুকিমতোকে টেবিল টেনিসের সাথে পরিচয় করিয়ে দেবার পর থেকে তাদের বন্ধুত্ব হাইস্কুল পর্যন্ত চলে আসছে। হাইস্কুল এ উঠার পর পুরো টিমের কাছে তারা দুজন এক অপরাজেয় ট্যালেন্টেড ডুয়ো হিসেবেই পরিচিত।
কিন্তু আসলেই কি তাই? এই জগতের এক অলিখিত নিয়মই হলো একজন যত ট্যালেন্টেডই হোক না কেন, তার চেয়ে ট্যালেন্টেড আরেকজন অবশ্যই আছে। আর এই নিয়ম প্রমাণ করার জন্য আছে কং ওয়েং, কাজামা রিয়ুইচি, সাকুমা মানাবোর মতো খেলোয়াড় যাদের খেলা এই ডুয়োকে বহুগুণে ছাপিয়ে যায়। এতসব ‘মন্সটার’ দের ভীড়ে সামান্য পেকো আর স্মাইল কিই বা করতে পারবে?
পিংপং দি এনিমেশন হলো এক বন্ধুত্বের গল্প, গুটিকয়েক মানুষের জীবনের টানাপোড়েনের গল্প, স্মাইল আর পেকো কিভাবে একে অপরকে প্রভাবিত করে সামনে আগানোর পথ বাতলে দেয় তার গল্প। মাত্র ১১ পর্বের এই গল্পে যেই পরিমাণ চরিত্রের গাঁথুনি আর তাদের গভীরতা দেখানো হয়েছে তা অবিশ্বাস্য রকমের ভাল। এনিমের প্রত্যেকটা চরিত্র আর পিংপং নিয়ে তাদের মনোভাব দর্শকদের কাছে সুন্দরভাবে পৌছাতে পেরেছে যার জন্য ‘তাতামি গ্যালাক্সি’খ্যাত ডিরেক্টর ইউয়াসা মাসাকি একটা বড় ধরণের ধন্যবাদ প্রাপ্ত ।
এনিমের আর্টস্টাইল বেশখানিকটাই ‘অন্যরকম’। এতটাই যে আর্টস্টাইল দেখেও ড্রপ দেবার কথা মনে আসতে পারে। কিন্তু ড্রপ দিলে কি মাস্টারপিস মিস করবেন তা কল্পনাও করতে পারবেন না। তাই আর্টস্টাইলের চিন্তা বাদ দিয়ে দেখা শুরু করে দিন । কয়েক মিনিটের মধ্যেই অভ্যস্ত হয়ে যাবেন আর্টস্টাইলের সাথে।
তাই যদি এমন কোন এনিমে চান যা একই সাথে স্পোর্টস আর সাইকোলজিকাল অ্যাস্পেক্ট গুলোর উপর গুরুত্ব দেয় তাহলে পিংপং দি এনিমেশন হাইলি রেকমেন্ডেড। এই এনিম শেষে আমি হা-হুতাশ করেছি যে মাত্র ১১ পর্বে শেষ হয়ে গেল। ১০০ পর্ব হলেও দেখতে বিনা ক্লান্তিতে দেখতে পারতাম এই মাস্টারপিস।
ম্যাল রেটিংঃ ৮.৬৬/১০
আমার রেটিংঃ ৯.৭/১০
Diamond no Ace: বেসবল সমাচার! — Mithila Mehjabin
Yowamushi Pedal [রিভিউ] — Farah Faruque
আনিমে: এক দুর্বল দ্বিচক্রযানচালক (সোজা বাংলায় Yowamushi pedal)
পর্বসংখ্যা: ৩৮ +২৪ (দুটো সিজনে)
(একটি রিভিউ অথবা রিয়েকশন অথবা অন্য কিছু ছাতামাথা)
গল্পের শুরু আপনার আমার মত এক আনিমেখোর কে নিয়ে, নিতান্ত নিরীহ শান্তশিষ্ট বালক সাকামিচি ওনোদা ( যার নামের অর্থই পাহাড়ি পথ) আনিমে বড্ড ভালোবাসে, এতই ভালোবাসে যে ভালোবাসা সব আনিমের পিছে খরচ করায় বেচারা মিডল স্কুলে একটা বন্ধুও যোগাড় করতে পারেনি, তাই হাইস্কুলে এসে সে ঠিক করে এবার সে বন্ধু বানিয়েই ছাড়বে কিন্তু কেস হচ্ছে এখানেও তার আনিমুখোর বন্ধুই চাই! আর সেজন্য সে টার্গেট হিসাবে ঠিক করে আনিমে ক্লাবকে! কিন্তু কপালে না থাকলে কি আর হয়?? বেচারা মনে বড় কষ্ট নিয়ে ফেরত আসে, স্কুলের আনিমে ক্লাব যে লোকের অভাবে বন্ধই হয়ে গেছে! এমনি সময়ে স্কুলের হটশট ইমাইজুমি এসে এই নিতান্ত হাবুটাকেই কিনা চ্যালেঞ্জ করে বসে স্কুলের পিছন গেটের নিচে খাড়া পাহাড়ি ঢালে বাইক রেস লাগানোর! ওনোদার সম্বল বলতে একটা পুরোনো মামাচারি, অর্থাৎ কিনা গ্র্যানি বাইক, আর ইমাইজুমি রেসের পর রেস দাপিয়ে বেড়ায় তার রেসার বাইকে! তা হঠাৎ এমন রেসার খোকার এমন নিরীহ শিশুর পিছে লাগার কারণই বা কি? কারণ খোকাবাবু ইমাইজুমি যে বেচারা ওনোদা কে ওই ঢালেই “হিমে হিমে” গাইতে গাইতে বাইক চালিয়ে স্কুলে আসতে দেখে ফেলেছিল! (এবং এরপর এই গান আর সে মাথা থেকে বেরই করতে পারছিল না বুঝুন অবস্থাটা! প্রথমে কিছুতেই রাজি না হওয়া ওনোদা ইমাইজুমির ফাঁদে পা দেয় যখন ইমাইজুমি হেরে গেলে আনিমে ক্লাবে জয়েন করার প্রস্তাব দেয়! এই রেস দিয়েই শুরু হয় সাইক্লিং এর দুনিয়ায় ওনোদার যাত্রা
পুরো আনিমে জুড়ে যে জিনিসটা চোখে পড়েছে তাহল ক্যারেক্টার ডেভেলপমেন্ট, যে চরিত্রটাকে প্রথমেই সাইড ক্যারা বলে বাতিলের খাতায় ফেলে দিয়েছিলাম তার গল্প, তার ডেভেলপমেন্ট ও মুগ্ধ করেছে শেষে, আর দশটা আনিমের মত শুধু মেইন ক্যারেক্টার বা তার টিমের উপরেই আলো ধরে রাখেনি, প্রতিপক্ষের ছেলেরাও নজর পেয়েছে ভালোই, আরো মজা হচ্ছে এই ডেভেলপমেন্ট গুলোও হয়েছে কিন্তু চরম উত্তেজনায় ভরা একেকটা রেসের মাঝেই! তাতে রেসগুলি স্লো হয়ে গিয়েছে অনেক, কিন্তু চরিত্রগুলো ফুটে উঠেছে ভালোভাবে, এই ডেভেলপমেন্ট এর জন্য এই স্লো পেসিং কে মাপ করে দেওয়াই যায়। পুরো সিরিজ দেখার সময় মনে হয়েছে “মেইন টিম” হিসেবে সোহোকুর প্রতি একচোখামি করা হয়েছে এখানে অনেক কম, এতই কম যে মাঝপথে এসে প্রতিদ্বন্দ্বী হাকোগাকু টিম কেই মেইন টিম বলে মনে হচ্ছিল এবং নিজের অজান্তেই হাকোগাকুর জন্যেই চিয়ার করে যাচ্ছিলাম!! (যারা দেখবেন তাদেরও এমন হবে বলেই বিশ্বাস) হাকোগাকু টিমের মাঝেই তোদোউ এর মাকি-চান অবসেশন দেখে যেমন মজা পাবেন, তেমনি মানামির (সানগাকু মানামি, খোকার নামটাও সুন্দর, নামের অর্থ ঢেউ পাহাড়ের প্রেম!) মুক্ত স্বাধীন যেন ডানা মেলে উড়ে চলা বাইক চালানোও ভাল্লাগবে অনেক, (তার হাসিটাও কিন্তু সুন্দর!) তবে এদের সবার চেয়ে যার ডেভেলপমেন্ট মুগ্ধ করেছে সে হল টিমের মুখখারাপ সেনপাই আরাকিতা-সান, তার গল্প নাহয় তুলেই রাখি, সবাই বরং দেখুক সেনপাই এর ব্যাডঅ্যাসনেস দ্বিতীয় সিজনে
তবে এতজনের পরেও টিকটিকি আকিরা মিদোসুজির (ওরফে কিমোসুজি) কথা না বললেই নয়! এই এক ব্যাটাই বুঝি আছে পুরো সিরিজে যাকে দেখলেই মনে হত পুঁতে ফেলি নিচে, গা গুলাতো রীতিমতো তার চেহারা টা দেখলেই! যদিও দ্বিতীয় সিজনে তার পেছনের গল্প মন খারাপ করে দেয় কিছুটা
গল্পের উত্তেজনার সাথে মানানসই ওপেনিং-এন্ডিং আনিমে টা ভালো লাগাতে হেল্প করেছে অনেক, প্রথম সিজনে তৃতীয় ওপেনিং আর এন্ডিং শুনতে গিয়ে মজাও পেয়েছি অনেক, ওপেনিং টা যে টিম সোহকু আর এন্ডিং যে টিম হাকোগাকুরই গাওয়া! এখানেও হাকোগাকুর জিত! ওদের গানই ভালো লেগেছে বেশি!!
সব মিলিয়ে সদ্য শেষ হওয়া হাইকিউ এর মজা মিস করতে থাকলে দ্রুত দেখে ফেলুন এর দুটো সিজন, নতুন সিজন যে এই জানুয়ারি তেই চলে আসছে!!! ২০১৭ তে ইওয়ামুশির নতুন সিজনের পাশাপাশি হাইকিউ এরও যদি নতুন সিজন আসে, তাহলে বেস্ট স্পোর্টস ক্যাটেগরি তে ভোট দিতে মাথা চুলকে সারা হওয়াই লাগবে!
রেটিং: ৮.৫ / ১০
Yuri!!! on Ice: ফিগার স্কেটিংয়ের ওয়ান-টু-থ্রী! — Mithila Mehjabin
One Outs [রিভিউ] — MD Fahim Iftekhar
আনিমেঃ এক আউট
জনরাঃ সাইকোলজিকাল, সেইনেন, স্পোর্টস
পর্বঃ ২৫
প্লটঃ ONE OUTS তথা এক আউট এর কাহিনি তোউয়া তোকুচি নামক একজন চরমপন্থী জুয়াড়িকে নিয়ে যার যুদ্ধ জাপানি প্যাসিফিক বেসবল লীগে তার প্রতিদ্বন্দ্বীদের সম্পূর্ণরূপে বিধ্বস্ত করা এবং সম্ভবত কম গুরুত্বপূর্ণভাবে একটি নিরেট বেতন উপার্জন করা।
গল্পের শুরু ওকিনাওয়া দ্বীপে, লাইকাওনস এর তারকা খেলোয়াড় কোজিমা হিরোমিচি এর অনুশীলন দিয়ে, যার ইচ্ছা আসন্ন মৌসুমে অন্ধকারময় দলকে নেতৃত্ব দিয়ে চ্যাম্পিয়নশিপ জিতানোর। এখানে প্রকাশিত হয় যে খেলাটি মূলত ব্যাটার ও পিচার এর মধ্যে বাজির খেলা যেখানে দুই পক্ষই একে অপরকে দমনের প্রচেষ্টা চালায়। তোকুচি এই খেলার অবিসংবাদিত রাজা যে কিনা লাইকাওনস এর তারকা খেলোয়াড় কোজিমা হিরোমিচির অনুরোধে লাইকাওনস এ যোগদান করে।
লাইকাওনস এর মালিক, সাইকাওয়া প্রাথমিক প্রতিদ্বন্দ্বী প্রকাশিত হন যে কিনা কেবল মাত্র অর্থের ব্যাপারে তৎপর, দলের ব্যাপারে না। তোকুচি ও সাইকাওয়া এর মধ্যে এক আউট চুক্তি গঠিত হয় এবং একটি যুদ্ধের মঞ্চ তৈরি হয় যেখানে তোকুচিকে লীগের অন্য দলের সাথে মুনাফা অর্জনের পাশাপাশি জয় লাভের জন্য মোকাবিলা করতে হয়েছে। একটি মজার ব্যাপার হল প্রতিটি গেমের পর তোকুচির বর্তমান বেতন দেখানো যা দ্বারা দর্শক বুঝতে পারেন ঠিক কতটা সৈনাপত্যের সাথে সে পালাচ্ছে।
এখানে দেখানো হয় প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলোর জিতার বিভিন্ন উপায়, দেখানো হয় তারকা খেলোয়াড় থেকে শুরু করে বিশেষজ্ঞদের গভীর পরিকল্পনা, দেখানো হয় কিভাবে প্রতারনার কৌশল অবলম্বন করে এবং কিভাবে তা ধ্বংস হয়। যেহেতু প্রতিটি দলেরই ছিল তাদের জয়ের বহু রাস্তা, তাই তিন ম্যাচ এর সিরিজ কখনই তাড়াতাড়ি শেষ হতো না বরং দেখা যেত উভয় দলের ক্রমাগত একে অপরকে ফাঁদে ফেলার প্রয়াস। অর্থাৎ বলা যায় খেলাগুলা সাইকোলজিক্যালি গ্যাম্বলিং এর মতো করে দেখানো হয়েছে, আর দেখানো হয়েছে প্রোফেশনাল খেলার জগতের কিছু নেগেটিভ দিক।
বলা বাহুল্য সিরিজ পুরোটাই একজনকে কেন্দ্র করে ঘুরতে থাকে। স্পট লাইট ফেলা হয় এমন এক জনের উপর যে কিনা মাত্রাতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী, ঠাণ্ডা মাথায় যে কিনা প্রতিপক্ষ দলকে নিজ ফাঁদে ফেলে। আপনি তখনই ভুল হবেন যখনই ভাববেন যে তোকুচি হেরে যাবে-এতে শর্ত যাই হোক না কেন।
২৫ পর্বের এই সিরিজটি তাই প্রদান করে একজন দর্শক একটি মানসিক এবং / অথবা জুয়া ভিত্তিক সিরিজ এ যা চান। সিরিজটির আর্টওয়ার্ক এবং অডিও উভয়ই ভালো।
আশা করি সবার সিরিজটি ভালো লাগবে।
Yowamushi Pedal, Season 1 [রিভিউ] — Shifat Mohiuddin
এনিমেঃ Yowamushi pedal সিজন ১
জনরাঃ স্পোর্টস(সাইক্লিং/রোড রেসিং)
এপিসোডঃ ৩৮
স্টুডিওঃ TMS
উৎসঃ Yowamushi pedal মাঙ্গা
¤
Yowamushi pedal শব্দটির শাব্দিক অর্থ weakling pedal.যার সুন্দর বঙ্গানুবাদ করেছিল আমার বন্ধু Siam Maksud,’হে দুর্বল,প্যাডাল ঘুরা।’তো এনিমের প্রধান চরিত্র যে অতি দুর্বল দেখামাত্রই আপনি তা স্বীকার করবেন।প্রধান চরিত্র,ওনোদা সাকামিচি একজন এক্সট্রিম লেভেলের এনিমখোর অর্থ্যাৎ সোজা কথায় বলতে গেলে ‘ওতাকু’।তো বেশিরভাগ ওতাকুদের মত সেও লিকলিকে শরীর এবং গোল কাঁচের চশমার অধিকারী।আশ্চর্যজনক ভাবে সমগ্র মিডল স্কুল লাইফে সে একজন এনিমখোর বন্ধুও খুঁজে পায়নি।তাই হাইস্কুলে একটি এনিমে ক্লাব প্রতিষ্ঠার ধণুকভাঙ্গা পণ নিয়ে সে তার বাইসাইকেল সহ স্কুলের দিকে রওনা দেয়।পথিমধ্যে তার সামনে পড়ে দুই কিলোমিটার ব্যপ্তি বিশিষ্ট এক ঢাল যা সে তার ‘মমা বাইক’ অর্থ্যাৎ সাধারন সাইকেল চালিয়েই গুণগুণ করে গান গেয়ে অনায়াসেই পাড়ি দিতে থাকে।এই অস্বাভাবিক দৃশ্য দেখে অবাক হয় ‘ইমাইজুমি’ ওরফে ‘হটশট’ যে কিনা মিডল স্কুল রোড রেসিং কম্পিটিশনে হারের তিক্ত স্বাদ নিয়ে এই সোহোকু হাইস্কুলে ভর্তি হয়েছে।তাই অনেকটা হিংসার বশবর্তী হয়েই সে ওনোদাকে রেসের চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেয়।অপ্রস্তুত ওনোদা,ইমাইজুমির বিপক্ষে অসাধারন ভালো ফলাফলের কারণে স্কুলের বাইসাইকেল ক্লাবের সিনিয়রদের সুনজরে পড়ে।ওনোদা আর ইমাইজুমি দুজনেই বাইসাইকেল ক্লাবে জয়েন করে।তারা কি পারবে সিনিয়রদের সাথে লড়াই করে ক্লাবে টিকে থাকতে?তারা কি পারবে ইন্টার হাই রোড রেসিং টুর্নামেন্টের মত মহাযজ্ঞে অংশগ্রহণ করতে?
¤
Yowamushi pedal এর সবচেয়ে আকর্ষনীয় দিক সম্পর্কে বলতে গেলে সবার আগে বলতে হবে এর ক্যারেকটার ডেভেলপমেন্টের কথা।যেহেতু রোড রেসিং একটি দলগত খেলা তাই এখানে ব্যক্তিগত নৈপুণ্যে সম্পূর্ণ একটি রেস জেতা সম্ভব না।সোহোকো রেসিং ক্লাবের ছয়জন সদস্যের উপরেই স্পটলাইটের আলো সমান ভাবে পড়েছে।খেলোয়াড়দের দায়িত্ববোধ,মনস্তাত্ত্বিক দ্বন্দ্ব,একে অপরকে ছাড়িয়ে যাওয়ার প্রবণতা সুন্দর করেই তুলে ধরা হয়েছে।বিপক্ষ দলের খেলোয়াড়দের উপরও সমান আলোকপাত করা হয়েছে।প্রধান খল চরিত্র ‘মিডৌসুজি আকিরা’ এর চালচলন এবং সিদ্ধান্তগুলো পুরোপরি আনপ্রেডিক্টেবল মনে হবে আপনার কাছে।সোহোকু একাডেমির প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হাকোনে একাডেমির রেসারদের সিরিজের মাঝপথে দেখলে আপনি ধন্দে পড়ে যাবেন যে এরাই নায়ক কিনা।পক্ষ-বিপক্ষ প্রতিটি দলের খেলোয়াড়েরই রয়েছে অম্লমধুর অতীত যা আপনার হৃদয়কে নাড়া দেবে।দলগত খেলা হওয়ার পরও সোহোকু আর হাকোনে একাডেমির সিনিয়র খেলোয়াড়দের মধ্যকার খন্ড লড়াই আপনাকে অন্যরকম একটা থ্রিল এনে দেবে।
¤
অ্যানিমেশন কোয়ালিটির কথা বলতে গেলে একে গড়পড়তার মধ্যেই ফেলা যায়।আর এনিমের বেশির ভাগ স্ক্রিনটাইম রেসিং ট্র্যাকের ওপর হওয়ায় অ্যানিমেশনের কোয়ালিটির অতটা গুরুত্বও ছিল না।তবে পাহাড়,গাছ-পালা ও রেসিং ট্র্যাকের আশেপাশের পরিবেশের গ্রাফিক্স আরেকটু ভালো হওয়া দরকার ছিল।
¤
এনিমেটির সাউন্ডট্র্যাক যথেষ্ট থ্রিলিং ছিল।বিশেষ করে সোহোকুর রেসারদের রেসে ঘুরে দাঁড়ানোর সময় অসাধারন কিছু সাউন্ডট্র্যাক ব্যবহার করা হয়েছে।চারটি ওপেনিং সংয়ের মধ্যে আমার সবচেয়ে ভালো লেগেছে Rookiez Is PunkD এর গাওয়া প্রথম ওপেনিং ‘reclimb’.এছাড়া এন্ডিং সংগুলোও ভালোমানের ছিল।
¤
Yowamushi Pedal দেখলে আপনি একটা জিনিস নিশ্চিত জানতে পারবেন তা হল সাইক্লিংয়ের নিয়মকানুন ও খুঁটিনাটি।বাংলাদেশে অনেকে শখ করে সাইকেল চালালেও নেশা হিসেবে সাইক্লিংকে খুব কম মানুষই বেছে নেন।তার উপর ট্র্যাকের অপ্রতুলতা এবং এসএ গেমসে চিটিংয়ের অভিযোগে বাংলাদেশ সাইক্লিং ফেডারেশনের ভাবমূর্তি অনেকটাই ক্ষুণ্ণ। কিন্তু Yowamushi pedal সাইক্লিংয়ের প্রতি আপনার পুরনো ভালোবাসাকে জাগিয়ে তুলবে।এনিমেটা দেখে থাকলে পরিচিত হবেন gear shifting, dancing, climbing, sprinting, cadence, king of the mountain ইত্যাদি সাইক্লিং বিষয়ক টার্মের সাথে।এছাড়া সাইকেল চালানোর সময় চালকরা যে মুক্ত বিহঙ্গ মার্কা অনুভূতি পেয়ে থাকে তার সাথেও পুনরায় সুপরিচিত হবেন।তাই যারা জীবনে একবার হলেও সাইকেল চালানো শিখেছেন তাদের প্রত্যেকেরই উচিত এনিমেটা দেখা।
¤
পুরোটা এনিমে দেখে আমি একটা বিষয় খুব ভালোভাবেই বুঝেছি যে,যতদিন পর্যন্ত না এদেশের যুবসমাজ গিয়ার সাইকেল চালানোকে পার্ট ধরার সরঞ্জাম হিসেব গণ্য করা বন্ধ না করবে ততদিন পর্যন্ত এদেশের সাইক্লিংয়ের ভবিষ্যত অন্ধকার।(এটাকে অনেকে ধৃষ্টতা হিসেবে নিতে পারেন কিন্তু ইহাই বাস্তব সত্য।)
¤
খুবই টানটান উত্তেজনাময় এক মূহূর্তে এনিমেটার প্রথম সিজন হয়ে যাই।তাই আজকে দ্বিতীয় সিজন নামানোর খুশিতে এই লেখা।ধন্যবাদ Siam Maksud ও M.M Rezwan কে এই অসাধারন এনিমেটি সাজেস্ট করার জন্য।