91 Days – Ending: Theory and Analysis — Tahsin Faruque Aninda

91-days-ending

খুব অল্প সময় যখন হাতে থাকে, তখন তার মধ্যে দেখা সিরিজ এত ভাল হয়ে থাকলে মনে শান্তি লাগে। “সময়টা নষ্ট হয় নাই অন্তত” – এরকম অনুভূতি হয়ে থাকে। 91 Days সিরিজটা দেখে সেরকমই feel পেয়েছি। কিছু কিছু জায়গায় বাজে এনিমেশন – এইটুক ব্যাপার বাদ দিলে সিরিজটাতে আর খুঁত পাচ্ছি না এতটুকু। বাক্কানোর পরে সম্ভবত এটাই এখন পর্যন্ত সেরা মাফিয়া গল্প। মাফিয়া সেটিং-এর গল্প যে আমার তেমন ভাল লাগে না তা না, কিন্তু এই সিরিজটা হয়তো আমার সেই দৃষ্টিভঙ্গিতে পরিবর্তন নিয়ে আসবে।

আর হাজার হাজার এডাপশনের ভিড়ে ভাল মানের অরিজিনাল সিরিজ খুঁজেই পাওয়া যায় না ইদানিং, সেজন্যেও আরও বেশি ভাল লেগেছে এই সিরিজটার জন্যে।

শেষ পর্বে কী দেখায় সেই চিন্তায় ছিলাম। এত চমৎকারভাবে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত গড়ে উঠা গল্পটার এন্ডিংটা ভাল না হলে পুরা সিরিজটার আকর্ষণ মাটি করে ফেলতো। অবশ্য শেষে যা হল, বছরের অন্যতম সেরা সিরিজটার এন্ডিংটা এর চাইতে ভালভাবে টানা যেত না! দুইজনেরই পরিণতি একদম দর্শকের উপর ছেড়ে দিয়েছে! Open-Ended গল্প, দর্শক কী ধরণের এন্ডিং চায় তা একদম তাদের উপরেই ছেড়ে দেওয়া।

যেহেতু দুজনের শেষ মুহুর্ত দেখায় নি, তাই চার রকমের পরিণতিই হতে পারে এখানেঃ
a) নিরো-এঞ্জেলো দুইজনেই মৃত্যুবরণ করেঃ নিরো এঞ্জেলোকে গুলি করে মেরে ফেলে, অন্যদিকে ফেরত যাবার পথে তাকে ধাওয়া করা যেই লোকটাকে দেখালো, সে নিরোকে পরে মেরে ফেলে।
b) এঞ্জেলো মারা যায়, নিরো বেঁচে থাকেঃ একই ঘটনা, শুধু নিরোকে ধাওয়া করা লোকটা ওকে মারতে পারে না।
c) ও d) নিরো মারা যায়/বেঁচে থাকে, এঞ্জেলোও বেঁচে থাকেঃ
আপাতদৃষ্টিতে হয়তো মনে হতে পারে এঞ্জেলো মারা গিয়েছে, কিন্তু লক্ষ্য করুন – তার শেষ মুহুর্ত দেখানো হয় নি। গুলি যেকোন জায়গাতেই করতে পারে। এমন কি end-credit roll হবার পরে বীচের যে জায়গাতে এঞ্জেলোর থেমে যাওয়া দেখানো হয়, সেখানে তার শরীর দেখা যায় না। হ্যাঁ হতে পারে শরীর আর রক্ত সাগরে ভেসে চলে গিয়েছে। তবে এ-ও হতে পারে সে অন্য কোথাও চলে গিয়েছে হেঁটে হেঁটে। পায়ের ছাপ তো পানিতে মিশে যেতে পারে, এবং ঠিক এটাই দেখিয়েছে একদম শেষের দুই-তিন সেকেন্ডে। পায়ের বাকি চিহ্নগুলিও মুছে যায় স্রোতে।

তবে, এরকম অনেক অনেক clue দিয়ে রাখলেও, আমার নিজের যা মনে হয়েছে তা হল —
দুজনেই বেঁচে থাকে।

আর এটার পক্ষেই যুক্তি বেশি দেখানো হয়। কেন?
> দুজনের কেউই আরেকজনকে মারতে চায় নি শুরু থেকে, মারতে পারেও নি।
যতই ঘটনা ঘটুক, এঞ্জেলোর সুইসাইড প্ল্যান একদম ঠিকমত খেটে যাক, নিরো ৩ বার [ছোটকাল, থিয়েটারের সময়ে, এবং এরপর ওকে গালাসিয়াদের কাছ থেকে উঠিয়ে নেবার সময়ে/পরেও] সুযোগ পেয়েও মারে নাই।

> নিরোর ফেরত যাবার পথে খাবার ক্যান দেখে হাসি দেওয়া।
যতই মাফিয়া হোক বা খুন করে অভ্যস্ত হোক, চেনাজানা বা রিভেঞ্জ নেওয়ার ব্যাপার হলেও কেউ আরেকজনকে মেরে ফেলার কয়েক মিনিটের মধ্যে তাদের পুরাতন স্মৃতি মনে করে এরকম “মন ভাল থাকা” হাসি দেয় না।

> এঞ্জেলোর শেষ দেখানো লোকেশনে বীচের বালু
পায়ের চিহ্ন বালুতে আছে, অথচ গুলি খেয়ে মরে গিয়ে থাকলে যদি মাটিতে পরে যেত, তাহলে শরীরের চাপে বালুতে আরও বেশি চাপ পরে ডেবে যেত। কিন্তু শেষ দৃশ্যে এমন কিছুই দেখায় নি। শুধু পায়ের চিহ্ন যেখানে শেষ সেখানে আর কিছুই নেই।

> গুলি খাবার পরে এঞ্জেলোর শরীর নিচে পরে যাবার শব্দ হয় নি, কিন্তু বালু ঠিকই উড়েছিল
এই সিরিজে মৃত্যুর মুহুর্তগুলি বেশ পরিষ্কারভাবে দেখানো + শুনানো হয়। দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় মৃত্যু হলে মাটিতে পরে যাবার শব্দ একদম পরিষ্কারভাবেই শুনানো হয়ে এসেছে। কিন্তু শেষ দৃশ্যে এমন কিছুই শুনা যায় নি, অথচ বালি ঠিকই উড়েছে। বালিতে গুলি লাগার জন্যে বা বাতাসের বেগে সেই বালু উড়ে যাবার সম্ভাবনা তাই অনেক বেশি।

Open-ended পরিণতিগুলি এজন্যেই এত ভাল লাগে। সব কিছুই হওয়া সম্ভব – এরকম ধারণা দিলেও আসলে গল্পকারদের পছন্দ অনুযায়ী কোন পরিণতি ঘটে, সেগুলি অনেক অনেক হিন্টস দিয়ে বুঝিয়ে দেওয়াও হয়ে থাকে একই সাথে; ঠিক যেমন Inception-এর শেষ দৃশ্য নিয়ে হাজার হাজার ব্যখ্যা থাকলেও আসলে কী হয়েছিল সেটা পুরা মুভি জুড়ে অজস্র হিন্টস দিয়ে শুরু থেকেই দেখিয়ে আসা হয়।

আশা করি এটার মতই আরও অনেক ভাল মানের অরিজিনাল সিরিজ পাব আমরা ভবিষ্যতে, আর সেগুলি ম্যাচুর গল্পের হলে তো কথাই নাই! এডাপশনের ভিড়ে ভাল মানের অরিজিনাল সিরিজ পাওয়া খুবই কঠিন এখন, তাই এই সিরিজ দেখে যেন অন্যান্য প্রস্তুতকারকরাও আগ্রহ পায়।

91 Days (2016) রিভিউ — Fahim Bin Selim

91 Days(২০১৬)
★★★★☆
পরিচালনাঃ কাবুরাকি হিরো(Tonari no Kaibitsu-kun, Kimi ni Todoke, Hoozuki no Reitetsu)
মৌলিক গল্প
পর্ব সংখ্যাঃ ১২
জনরাঃ অ্যাকশন, ড্রামা, হিস্টোরিকাল
প্রযোজনাঃ স্টুডিও শুকা(Durarara x2, Natsume Go)

flkmycp

 

১৯২০; আমেরিকায় প্রোহিবিশন এরার শুরু। ১৮তম সংশোধনীর প্রেক্ষিতে “ড্রাই ক্রুসেডার”-দের নেতৃত্বে দেশজুড়ে অ্যালকোহলিক পানীয়ের তৈরি, আমদানী, পরিবহন কিংবা বিক্রি নিষিদ্ধ করে দেওয়া হলো। পন্য খোলাবাজারে নিষিদ্ধ হওয়া মানে স্বভাবতই তার জায়গা হলো কালোবাজারে। আর তখন পর্যন্ত মাফিয়াদের মূল ব্যবসা পতিতালয় আর জুয়াড় আসরকে ফেলে প্রথম স্থান দখল করলো মদ্যপানের চালান। যার কাছে যত স্থায়ী, শক্তিশালী পানীয়ের মজুত, তাদের হাতেই শহরের দায়িত্ব!

ল’লেস, ইলিনয়। নামের স্বার্থকতা রক্ষার্থেই তাতে আইনের কোন বাধা ধরা নেই, অন্তত প্রচলিত অর্থে। বরং এখানকার আইনের বিধানকর্তা তার মাফিয়া পরিবারগুলো – ভানেত্তি আর অর্কো। তার ব্যাত্যয় ঘটলেই লাশ পরা সুনিশ্চিত; দিন-রাতে, খোলা রাস্তায়, পাব, নিজের ঘরে। ‘পরিবার’-কথাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই পরিবারের জন্যই ভানেত্তি পরিবারের অংশ অ্যাঞ্জেলো লাগুসা ছোটবেলায় বাবাকে খুন হতে দেখলো তার বাবার নিজের বন্ধু ভিনসেন্ট ভানেত্তির হাতে। সাথে তার মা আর ছোটভাইকেও – পুরো পরিবার একসাথে! ভাগ্যক্রমে একমাত্র বেঁচে যাওয়া অ্যাঞ্জেলো সাতবছর পর ফিরে আসলো ল’লেস-এ। প্রতিশোধের নেশায়, ব্রুনো আভিলিও ছদ্মনামে। এই ভানেত্তি পরিবারের ঢুকে যেতে। ভেতর থেকে একে একে খুন করতে, তালিকা ধরে, যারা খুন করেছিলো তার পরিবারকে। তার প্রবেশপত্র? ল’লেস হেভেন, শহরের সেরা মদ। যার প্রস্তুতকারক তার বাল্যকালের বন্ধু কর্তেও।
৭ বছর অপেক্ষার পর অ্যাঞ্জেলোর – আভিলিওর…৯১ দিনের শীতল প্রতিশোধ পরিবেশনের গল্প!

আমেরিকা আর ত্রিশের দশক, মাফিয়া, প্রতিশোধ গল্প – কোন অ্যানিমের আগে বরং স্করসেসি[১] কিংবা কোপোলার[২] চলচ্চিত্রের কথাই মাথায় আসার কথা সবার আগে! এবং তারপর যখন দ্বিতীয় পর্বে শিকাগোর গালাসিয়া পরিবারের রোনালদোর সাথে ভিনসেন্টের মেয়ে ফিও ভানেত্তির বিয়ের অনুষ্ঠানে অ্যাঞ্জেলো উপস্থিত হয়, নাচের দৃশ্য আর ভেতর অন্ধকার রুমে বসে থাকা ভিনসেন্ট ভানেত্তিকে দেখে ডন কর্লেওনি(Godfather[৩]) ভেবে ভুল হওয়া অস্বাভাবিক না। অথবা টাইটল স্ক্রিনের লোগোটার কথাই ধরা যাক। হেনরি হিলের(Goodfellas[৪]) মত সিসেরোর…না, না, কস্টিগানের(The Departed[৫]) মত কস্তেওদের সাথে অ্যাঞ্জেলোর মিশে যাওয়া! 91 Days এর অনুপ্রেরণা তো কোপোলা আর স্করসেসিতেই। এবং গল্পবর্ণনাতেও এই প্রভাব লক্ষনীয়। পর্বে পর্বে ক্লিফহ্যাঙ্গার আর একের পর এক অননুমেয় গল্প উপাদান, টিভি সিরিজের তুলনায় বরং সাড়ে চার ঘন্টার একটার মুভির সাথেই একে তুলনা করা যায়।

আর অ্যাঞ্জেলোর যাত্রাটা শুধু ক থেকে চন্দ্রবিন্দুতে গিয়েই শেষ না, নিজের অজান্তেই ল’লেস-এর অন্ধকার মাফিয়া জগতের মাকড়সার জালে ধীরে ধীরে পেঁচিয়ে যাওয়ায়। লম্বা সময় ধরে মিথ্যা অভিনয় করতে থাকো, সেটা একসময় বাস্তবতা হয়ে দাঁড়াবে। অ্যাঞ্জেলোর রেইসন দে’ত(Raison d’etre), বেঁচে থাকার একমাত্র অনুপ্রেরণা এই প্রতিশোধই, আর সেটা ছাড়া সে যেন এক অন্তস্বারশুন্য খোলের মত। সেও অংশ হয়ে যায় ল’লেস-এর মাফিয়া যুদ্ধে। লাল পানি আর রক্তের খেলায় – প্রতিশোধ সেখানে মধ্যবিরতির আকর্ষন কেবল। কাটা পরতে থাকে তালিকার বাইরের অনেক নামও।

গল্পের মূলচরিত্র, কিন্তু অ্যাঞ্জেলোর মাথার ভেতরে কখনো আমরা ঢুকতে পারি না, তার মনোলোগের অংশ হই না, কিংবা জানিনা তার পরবর্তী পরিকল্পনা কী। প্লেহাউসের উপর তলায় বসে কোন অপেরার মত অ্যাঞ্জেলোর এই অভিনয় আমরা দেখি বাইরে থেকে। গল্পের মূলচরিত্র, কিন্তু কোন পর্যায়েই অ্যাঞ্জেলো গল্পের ‘নায়ক’ না, বরং ফিল্ম-নয়ারের নিয়ম মেনে আর বাকিসব চরিত্রের মতই অ্যাঞ্জেলোর বিবেকবিচার আর কার্যক্রম প্রশ্নবিদ্ধ। এটাই গল্পের অননুমেয়তা আর বিষ্মিত করার প্রধান অস্ত্র। কস্টিগানের মত অ্যাঞ্জেলোর এই অভিনয় ‘খেলার’ পেছনে কোন ‘গ্রেটার গুড’ নীহিত নেই। তার পুরো যাত্রাটাই ব্যক্তিগত, স্বার্থপরতার। একাকীত্বের।

কস্টিগান – অ্যাঞ্জেলোর এই প্রতিশোধ চক্রের ব্যাসের অপর পাশেও একজন কলিন আছে – নেরো ভানেত্তি, ভিনসেন্টের ছেলে। নেরো বরং অ্যাঞ্জেলোর চেয়ে আরো বেশি জীবন্ত এক চরিত্র। অ্যাঞ্জেলোর প্রতিশোধ তালিকায় কাটা যেতে থাকা নামের সংখ্যা বাড়তে থাকার মানে হলো তার পরিচিতদের মৃত্যুর তালিকা ক্রমাগত বড় হওয়া। তবে এই তিনমাসের গল্প নেরোর জীবনটা উল্টেপাল্টে যাওয়ার, অ্যাঞ্জেলোর সাপের মত আষ্টেপৃষ্ঠে ধরা পরিকল্পনার কেন্দ্রে তো সে নিজেই! তার ছলচাতুরির ফাঁদে পরা সবচেয়ে বড় শিকার। তার দাবার গুটির শেষ পর্যন্ত টিকিয়ে রাখা স্যাক্রিফাইসিং পন। বরং নেরোকেই গল্পের ট্র্যাজিক হিরোর উপাধি দেওয়া যায়। তার অভিনয়টা অবশ্য তিনমাসের জন্য না, সারাজীবন ধরে চলা। বারুদ আর রক্তের গন্ধ। বিশ্বাসঘাতকতা আর অবিশ্বাসের এক জগতে। পরিবারের সাথে মিশে যাওয়ার…টিকে থাকার জন্য। পরিবারের জন্য। তার যাত্রাটা সম্পূর্ণ বিপরীত – আত্নবিসর্জনের। তবে একাকীত্বেরও!

স্করসেসির মাফিয়াদের মত অ্যাঞ্জেলোর জীবনটা অবশ্য অতটা অবশ্য জাঁকজমকের না, অনেক বেশি গ্রাউন্ডেড। তার পতনটা যে অনিবার্যতায় ঘেরা। 91 Days-এর পরিবেশনাও সাধারণ। বেশিরভাগ সময় আবহসঙ্গীতবিহীন, জ্যাজ আর অর্কেস্ট্রা সেখানে প্রবেশ করে কদাচিৎ। বরং তার স্থানে জায়গা করে নেওয়া বাইরের যান-বাহন আর কোলাহলের শব্দ ল’লেস-এর মাফিয়াদের বাইরেরও আলাদা সাধারণ জীবনটা সম্পর্কে জানান দেয়। রক্তপাত, বিশ্বাসঘাতকতা আর ছলচাতুরিবিহীন, আসলেই পরিবারের সাথে একসাথে থাকা এক জীবন।

কিন্তু উপরতলার বিধান কর্তাদের সেখানে প্রবেশ করা নিষেধ। প্রতিশোধের নেশায় পাগল হওয়া মানুষদেরও।

91-days-poster-promo-imagem-destaque

১ – [https://en.wikipedia.org/wiki/Martin_Scorsese]
২ – [https://en.wikipedia.org/wiki/Ford_coppola ]
৩ – [https://en.wikipedia.org/wiki/The_Godfather]
৪ – [https://en.wikipedia.org/wiki/The_Departed]
৫ – [https://en.wikipedia.org/wiki/Goodfellas]

Short Review- 91 Days; লিখেছেন ইশমাম আনিকা

009cd1af841aa7a8a5c5938af483bf6d

ব্যস্ততার কারণে পোস্ট লেখা হয়ে ওঠে না আজকাল, তবে সিজন শেষে এই একটা অ্যানিমে নিয়ে পোস্ট দেয়া আসে।

৯১ দিন। নামটা দেখে কিছুই গেস করা যায় না। পিভি দেখেও কিছুই বুঝিনি (যদিও পিভি এবং ওপেনিং গানটাতে পুরো অ্যানিমের কাহিনীই বলে দিয়েছে ধরতে গেলে)। দেখা শুরু করার পর বুঝলাম যে এটা একটা প্রতিশোধ নেয়ার কাহিনী। পুরনো কনসেপ্ট, ছোটবেলায় এক পরিবারের একটা বাচ্চাকে বাদে বাকি সবাইকে খুন করে রেখে যায় দুর্বৃত্তরা, এরপর সেই বাচ্চা বড় হয়ে প্রতিশোধ নেয়ার আশায় ঘুরতে থাকে। আসলেও তাই। কোন নতুনত্ব নেই প্লটে।

কিন্তু আপনি যদি ভেবে থাকেন টিপিকাল কোন, “ভানেত্তি!! তুই আমার পরিবারকে শেষ করে দিয়েছিস, আমি তোকে শেষ করব!!” টাইপ কোন কাহিনী দেখবেন, এখানেই করছেন সবচেয়ে বড় ভুলটা। আমি একটা টিভি সিরিজ খুব পছন্দ করি, সিরিজের নামই “রিভেঞ্জ”। সেখানেও মেয়েটা তার বাবার সাথে হওয়া অন্যায়ের প্রতিশোধ নিতে শত্রুদের সাথে মিশে এক হয়ে যায়। এত মানু্ষের সাথে তার চলাফেরা, কিন্তু দিনশেষে তার যে একাকীত্বটা, যে হাহাকারটা প্রতিনিয়ত তার মনে বেজে চলে, সেটা অনুভব করে প্রচণ্ড কষ্ট লেগেছিল। অনেকদিন পর সেই অনুভূতিটা আবার ফিরে পেলাম এই অ্যানিমে দেখে। হাসিমুখে নিজের পরিবারের খুনীদের সাথে কথা বলা, বন্ধুর মত আচরণ করা, এর চেয়ে বড় শাস্তি একটা মানু্ষের জীবনে আর কি হতে পারে! অ্যাঞ্জেলো লাগুসাকে প্রতিবার দেখে তাই খারাপ লেগেছে। আর, মানুষের মন তো! অভিনয় কি আসলেই অভিনয়ে আটকে থাকে? অভিনয় করতে করতে সেটা কি কিছুটা হলেও সত্যি হয়ে যায় না?

স্টুডিও শুকার অরিজিনাল অ্যানিমে এটি, স্টুডিওর অন্য সব কাজ দেখলাম ব্রেইনস বেইজের ক্যানসেল করে দেয়া ভাল ভাল টাইটেলের রিজ্যুম, যেমন নাতসুমে বা দুরারারা। তাদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ, আমার অতিরিক্ত পছন্দের দুটি অ্যানিমের সিক্যুয়াল বের করার জন্য, এবং এই অসাধারণ অরিজিনাল অ্যানিমেটি উপহার দেয়ার জন্য। সবদিক থেকে অ্যানিমেটা পারফেক্ট। কাহিনী, এক্সিকিউশন, যেখানে যে জিনিসটা যেভাবে দেয়া দরকার, ঠিক সেভাবে দিয়েছে। ডার্ক সেটিং, চমৎকার ওএসটি, পুরানো আমলের সাথে মানানসই আর্টওয়ার্ক- সবমিলিয়ে অসাধারণ। আর শেষের চার-পাঁচটা এপিসোড আমার দেখা সেরা এপিসোড গুলোর মাঝে উপরের দিকে থাকবে, এভাবে অ্যানিমে ক্যারেক্টারের প্রতি অ্যাটাচমেন্ট আমার ক্ষেত্রে অন্তত অনেক কম হয়।

যারা মাফিয়া বা ডার্ক থিমের অ্যানিমে পছন্দ করেন, তাদের তো ভাল লাগবেই, তবে আমার মনে হয় এটা সব মানুষের ভাল লাগার মত একটা অ্যানিমে। ১২ পর্বে এরচেয়ে ভালভাবে আর কিছু মনে হয় না দেখানো সম্ভব।