২০১৬ সালে আমার দেখা সেরা আনিমেগুলো — Imamul Kabir Rivu

২০১৬ সালে আমার দেখা সেরা আনিমেগুলো:

#4

Anime: Kono Bijutsubu ni wa Mondai ga Aru
Episodes: 12
Genres: Comedy, Romance, School

কখনও এরকম কোন ভালোবাসায় জড়িয়েছেন, যিনি কি না কখনই আপনার দিকে ফিরে তাকায়নি, konobiju 1যত ক্লুই দেন না কেন যে তার প্রতি আপনার এক অন্যরকম দূর্বলতা আছে সে কখনই বুঝেনি। নিজের দুনিয়ার চরিত্রদের নিয়েই পরে রয়েছে, আপনার সাথে ভালো খাতির থাকা সত্বেও কখনও আলাদা রকম ভালোবাসা হয়নি তাও আপনি নিজের মত ভালোবেসে গেছেন সেই মানুষটিকে। এরকম এক প্রেমের মাঝেই জড়িয়ে পরে এই আনিমের প্রধাণ চরিত্র উসামি মিজুকি। তবে কথাগুলো শুনে কোন কষ্টের প্রেমকাহিনী মনে হলেও আনিমেটা আসলে এর ১৮০ ডিগ্রি উল্টো জিনিশ। অতি সাধারণ একটা রমকম আনিমে হলেও, একটা রমকম আনিমে হিসেবে সবদিক থেকে সফল এমন কোন আনিমের উদাহরণ কোনোবিজু।

কাহিনীর মূল সেটিং এক আর্টক্লাব ঘিরে। সেখানেরই দুইজন সদশ্য উসামি মিজুকি এবং উচিমাকি সুবারু, উসামির সুবারুর প্রতি ভালোবাসা জন্মালেও, সুবারুর মন পরে থাকে একগাদা মেয়ের উপর। তবে তারা 3D নয় বরং 2D. তার 3D মেয়েদের প্রতি নুন্যতম আকর্ষনটুকুও নাই। এবং তার আর্টক্লাবে ঢুকার মূল কারণও এক পার্ফেক্ট ওয়াইফু আঁকা। বিভিন্ন রকম উপায়েই উসামি সুবারুর প্রতি যে তার ভালোবাসা আছে তা প্রকাশ করতে যায় এবং সেউ উপায়গুলো অধিক পরিমাণের হাস্যকর, যা এই আনিমের মূল আকর্ষণ। তবে কাহিনী যে এই দুই চরিত্রকে ঘিরে, তা একেবারেই না। সেই ক্লাবেই রয়েছে আরও চরিত্র যেমন তাদের অলস ক্লাব প্রেসিডেন্ট, কোলে-চান, ইমারি, ইয়ুমেকো সেন্সেই এবং আরও অনেক চরিত্র যারা আনিমেটাতে এক বড় ধরণে রোল প্লে করে। তাদের আর্টক্লাবের ভেতরেই উসামি ছাড়া আর কেউ চারুকলা নিয়ে অতটা সিরিয়াস না এবং তাদের প্রতিদিনের হাস্যকর কাজকারবারই আপনার এই আনিমে আরও বেশি করে উপভোগ করাবে।

আর্ট সবমিলায় ভালো ছিল। খুব অসাধারণ কিছু না তবে সুন্দর। মিউজিকের ব্যাপারেও একই মন্তবই। অতি সাধারণ স্তরের জিনিশ হলেও অনেক বেশি উপভোগ করার মত এক আনিমে। ওপেনিং-এন্ডিং সাধারণ মোয়ে আনিমের মতই।

আনিমেটার মূল আকর্ষণ এর কমেডিক এলিমেন্ট এবং মজাদার চরিত্রগুলো। আনিমের সবকিছু সাধারণ হলেও হাসির মুহুর্তগুল যেই সেই আনিমেতে দেখা যায় না এমন।

এর সাথে ছিল আনিমের অসাধারণ ক্যাস্ট। এরকম অসাধারণ রমকম আনিমেতে হিরোইনের কণ্ঠে সবচেয়ে বেশি ওজাওয়া আরিকেই মানায়। আগে গেক্কান শোজোতেই সাকুরা চিয়োর রোলে তা প্রমাণ করে, এবার মিজুকির কণ্ঠেও তিনি সফল ছিলেন । সাথে উচিমাকি সুবারুর কণ্ঠেও ছিল নাৎস্কি সুবারুর সেইয়ু কোবায়াশি ইয়ুস্কে, এর আগেও এরকম অতি সাধারণ কিশোরদের কণ্ঠ দিয়েছেন এই লোক যেমন আর্স্লান (Arslan Senki) এবং তাকামিয়া হোনোকা (Witch Craft Works) এই থেকে বিবেচনা করলে উচিমাকির কণ্ঠে তিনি সফল তা খুবই স্বাভাবিক ছিল এবং তা হয়েছেও। সাথে কোলে-চানের কণ্ঠে উয়েসাকা সুমিরে এবং ইমারির কণ্ঠে তোয়ামা নাও দুইজনই অনেক ভালোভাবেই চরিত্রগুলোকে তুলে ধরতে পেরেছেন। সব মিলায় কাস্ট সিলেক্টিং অনেক ভালো ছিল এবং এর ফলাফলও ভালো। এছাড়া বাকি চরিত্রদের কণ্ঠেও ছিল নানা মিজুকি, কোমাৎসু মিকাকো, তোকুই সোরা এবং মাওর মত ভালো ভালো সেইয়ু।

সবমিলায় শুধু ২০১৬ না বরং যা যা আনিমে দেখেছি, সবকিছুর মাঝেই কোনবিজু আমার অত্যন্ত প্রিয় একটা আনিমে। যদি রমকম আনিমে আপনার অতিপ্রিয় হয়ে থাকে, তাহলে যত তারাতারি পারুন এই আনিমে শুরু করে দেন।

konobiju 2

#3

Anime: JoJo’s Bizarre Adventures Part 4: Diamond is Unbreakable
Episodes: 39
Genre: Action, Adventure, Comedy, Supernatural, Drama, Shounen

কোন সিরিজ নামকরন অনুসারে এতটা সফল না, যতটা না জোজোর ক্ষেত্রে বলা যায়। পুরো jojo 4-1সিরিজটা আসলেই জোস্টার পরিবারের কোন না কোন সদশ্য সংক্ষেপে জোজোকে ঘিরে ঘটা এক ধারাবাহিক উদ্ভট অভিযান। পার্ট ৪-ও আগের ৩ পার্টের মত এই ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে।

জোজোর এই পার্টের পটভূমি ১৯৯৯ সালে, জাপানের কোন এক স্থানে অবস্থিত কাল্পনিক এক শহর যার নাম মোরিয়োহ। প্রত্যেক পার্টের মত এই পার্টের মূল চরিত্রও এক ভিন্ন জোজো, জোস্টার পরিবারেরই একজন হিগাশিকাতা জোস্কে। যদিও এ পার্টেও পাবেন জোসেফ এবং জোতারোর ভালো পরিমান স্ক্রিনটাইম। পুরো ৩৯ পর্ব জোস্কের মোরিয়ো শহর জুড়ে বিভিন্ন রকম উদ্ভটসব অভিযান নিয়ে হলেও আগের পার্টগুলোর তুলনায় এই পার্টে রয়েছে বেশ ভালো পরিমান নতুনত্ব।

জোজোর আগের পার্টগুলোতে আগে থেকেই এক নির্দিষ্ট লক্ষ ধরেই আগাতে থাকে কাহিনী। কিন্তু এই অংশে জোস্কে, ওকুয়াসু এবং কোইচির অভিযান শুরু হয় এক অজানা লক্ষকে ঘিরেই। কাহিনীর শুরুর দিকটা কিছুটা ধীরে ধীরে আগায়, প্রথমে মনে হবে এ যেন এক স্লাইস অফ লাইফ আনিমে তবে যত পর্ব যেতে থাকে আনিমেটার কাহিনী আস্তে আস্তে জমজমাট হতে থাকে। আর আগের পার্টগুলোর সাথে তুলনা করলে, এ পার্টের ভিলেনের আগমনও তুলনামুলক পরেই ঘটে। তবে জোজো নামটা শুনলেই প্রথমে সবার মনে কোন এক মাচো ব্যক্তির ইমেজ আসে, এই পার্টে তা খুব একটা দেখা যাবে না। এই পার্ট থেকেই ক্লাসিক GAR ভাইব আস্তে আস্তে কমতে থাকবে। এছাড়া আগের পার্টের তুলনায় এবার স্ট্যান্ড অ্যাবিলিটির মাঝেও দেখা যাবে নতুন অনেক কিছু। সবমিলিয়ে পুরা নতুন এক জোজো বলা যেতে পারে।

আর্টের মাঝেও রয়েছে নতুন এক ছাপ। David Productions-এর আনিমে হলেও তারা আগের পার্টের সেই আর্টস্টাইল ফলো করেনি। চরিত্র এবং স্ট্যান্ডের ডিজাইনেও এনেছে ভালো পরিমান পরিবর্তন। আগের ৩ পার্টের আর্টস্টাইলের সাথে অভ্যস্থ থাকলে, এই পার্টের আর্টের সাথে মানায় নিতে সময় লাগবে, কিন্তু পরে খাপ খেয়ে গেলে আর খারাপ লাগবে না। আর যদি আগের আর্টের সাথে অভ্যস্থ না হয়ে থাকেন কিংবা কোন কারণে পছন্দ না হয় তাহলে হয়তো ভালো লাগতে পারে। জোজোর আর্টের সাথে অভ্যস্থ হওয়ার পর এখন পর্যন্ত কেউ এই উইনিক আর্টস্টাইলকে খারাপ বলতে শুনিনি।

আনিমেটার থিমের সাথে আনিমের ওএসটিও মানানসই। মেইন থিমটাই বেশ রক্তগরমকারি এবং যেসকল মুহুর্তে বেজে উঠে, সেই মুহুর্তগুলো আসলেই আরও বেশি উপভোগ্য করে তুলে। এছাড়া আগের পার্টের তুলনায় ওপেনিং-এন্ডিং গানের মিউজিক স্টাইলেও অনেক পরিবর্তন আনলেও এই পার্টের থিমের সাথে তা যথাযথভাবে মেনে গেছে। আর জোজোর প্রত্যেকটা ওপেনিং-এর মত এই পার্টের ওপেনিংগুলোও প্রথমে শুনে না ভালো লাগলেও, আস্তে আস্তে যত শুনবেন ততই নেশায় ধরবে। আর এন্ডিং গান পুরো আনিমেতে একটাই, তা হল Savage Garden-এর ‘I want you’, গানটা হয়তো আগেই অনেকেরই শুনা থাকতে পারে কেননা জোজোর প্রত্যেকটা এন্ডিংই বেছে নেওয়া জনপ্রিয় কোন ইংরেজি গান। এই গানটা আমারও অনেক পছন্দের।

এই সিরিজের এক সেরা দিক হল ক্যারাক্টার ডেভলপমেন্ট। বিশেষ করে ওকুয়াসু, কোইচি, হায়াতো এবং জোসকে এই ৪টি চরিত্রের চারিত্রিক ডেভলপমেন্ট ছিল দেখার মত। এছাড়া পুরো আনিমে জুড়েই দেখা যাবে নতুন অনেক চরিত্র। এদের মাঝে পুরো সিরিজে এক বড় রকম প্রভাব রাখে রোহান কিশিবে, ইয়ুকাকো ইয়ামাগিশি, শিগেচি, রেইমি সুগিমোতো এই চরিত্রগুলো। আর খলনায়ক হিসেবে কিরা অনেক ইয়ুনিক একটি চরিত্র, বছরের সেরা খলনায়কের দাবিদার এ। যদিও ব্যক্তিগতভাবে আমার কিরার চেয়ে বরং ডিয়োকেই খলনায়ক হিসেবেই ভালো লাগে।

সবমিলায় বছরের অন্যতম পার্ফেক্ট আনিমে হিসেবে বিবেচনা করলে, জোজো পার্ট ৪ এই তালিকায় অবশ্যই থাকবে। ক্রেডিট বরাবরের মত এবারও ডেভিড প্রোডাকশনেরই।

jojo 4-2

#2

Anime: Re:Zero kara Hajimeru Isekai Seikatsu
Episodes: 25
Genres: Psychological, Drama, Thriller, Fantasy

re zero 1গত বছরের সবচেয়ে জনপ্রিয় আনিমে কোনটা, এ নিয়ে একটা পোল খুললে হয়তো বেশির ভাগ ভোটই যাবে রি: জিরোর ঘরে। সত্যি বলতে আনিমেটা আসলেই উপভোগ্য ছিল বলেই এত বড় একটা ফ্যানবেজ পেয়েছে। যদিও আনিমেটা নিয়ে মতামত অনেকের অনেক রকম। শুরু থেকেই আনিমেটার একটা মাস্টারপিস হওয়ার অনেক পটেনশিয়াল ছিল তবে ২৫ পর্ব শেষে সেই পর্যায়ের কিছুই হয় নাই, কিন্তু হতাশ করার মত আনিমে একেবারেই না।

রি: জিরো তুলনামূলক ডার্ক একটা আনিমে এক ফ্যান্টাসি সেটিং এর উপর। কাহিনীর শুরু হয় আনিমের প্রধান চরিত্র নাৎসুকি সুবারুকে নিয়েই, সে হঠাৎ করেই এক স্টোর থেকে বের হয়ে বোঝার আগেই এক ফ্যান্টাসির জগতে টেলিপোর্ট হয়ে যায়। এরপর পুরা আনিমে জুড়েই দেখানো হয় সুবারুর উপর বিরতিহীন মানসিক অত্যাচার। সুবারু শুরু থেকেই এই নতুন জগত খুব পছন্দ করে এবং এর সাথে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। এরপর থেকেই নতুন সব অ্যাডভেনচারের জড়িয়ে যান তিনি । যে জিনিশটা আনিমেটাকে আরও ইন্টারেস্টিং করে তুলে সেটা হল সুবারুর মরার পর আবার জীবিত হয়ে আসার ক্ষমতা। অনেকটা রিসেট করার মতই, এর জন্যই হয়তো সিরিজের নাম Re:Zero, শূন্য থেকে আবার শুরু করা । সুবারুর এই ক্ষমতা অনেকটা গেমের এক চেকপয়েন্টে গেম সেভ করার পর যদি আপনার চরিত্র মারা যায় তাহলে সেই চেকপয়েন্ট থেকেই আবার সে রিস্পওন করবে, অনেকটা এরকমই। তবে এই এক ক্ষমতার উপর কাহিনী অনেক নির্ভরশীল। এটা কাহিনীটা অনেক ইন্টারেস্টিং করলেও বিশেষ কিছু গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত আড়াল করে গিয়েছে। এই পুরো অ্যাডভেনচারটা সুবারুকে ঘিরে হলেও সিরিজের আরও দুইটা ভাইটাল চরিত্র আছে তারা হল গল্পের প্রধান নায়িকা এমিলিয় এবং তার ডেমন মেইড রেম। তাদের জন্যই মূলত সুবারুর এত কিছুর মধ্য দিয়ে যেতে হয়। পুরো সিরিজ ৩টা আর্কের উপর বানানো এবং প্রত্যেকটার কাহিনীই আলাদ আলাদাভাবে ভালো। সবমিলায় গল্পটা অনেক ইন্টারেস্টিং, যদিও অনেক গভিরে গেলে সিরিজে ফ্ল-এর অভাব নাই। কিন্তু সেভাবে না চিন্তা করলে, সিরিজটা অপছন্দ হবে না কারো।

সিরিজের আর্টটা দুর্দান্ত। খুব হাসিখুশি মুহূর্ত অনেক উজ্জ্বলভাবে তুলে ধরে হঠাৎ কোন ডার্ক মুহূর্তে ডার্ক আনিমেশন অনেক ভালোভাবে তুলে ধরেছে। সিরিজের ব্যাকগ্রাউন্ড অনেক সুন্দর সাথে চরিত্রের ডিজাইন মনমুগ্ধকর এবং তাদের এক্সপ্রেশনগুলোও ফাটাফাটিভাবে তুলে ধরেছে। আর্টের মাধে এত সুন্দর কালার কম্পোজিশন, সিরিজের সেরা দিকগুলোর একটি।

মিউজিকও ছিল অসাধারণ। ভয়ঙ্কর মুহূর্তগুলোতে যেই মিউজিকটা দেয় সেটা অনেকটা আত্মা কাপানোর মতই। পুরো সিরিজের ইন্সার্ট মিউজিকগুলো অনেক ভালো এবং দৃশ্যের সাথে মানানসই। প্রথম ওপেনিং-টাই গাওয়া কোনোমি সুজুকির, পার্সোনালি অনেক প্রিয় একজন সিঙ্গার, তার প্রত্যেকটা গানই অনেক প্রিয় রিডুও তার ব্যাতিক্রম নয়। তবে ওপেনিং-এন্ডিংগুলো মূলত জমজমাট করে তুলেছে Myth & Roid, এই সিরিজটির আগে তাদের খুব একটা নামডাক ছিল না। কিন্তু তাদের গাওয়া ৩ টি গান Styx Helix, Straight Bet এবং Paradisus-Paradoxum খুবই চমৎকার ছিল, যার প্রথম দুইটি সিরিজের এন্ডিং (Straight Bet যদিও একটি পর্বের এন্ডিং ছিল) এবং আবং শেষটি সিরিজের দ্বিতীয় ওপেনিং। কোন সিরিজে সেই সিরিজের সেইয়ুকে দিয়ে গাওয়ানো কোন গান ওপেনিং-এন্ডিং হিসেবে ব্য়বহর করা নতুন কিছু না। এ সিরিজেও তা ছিল, তাকাহাশি রিয়ের গাওয়া ‘Stay Alive’ এবং মিনাসে ইনোরির গাওয়া ‘Wishing’ অত্যন্ত সুন্দর দুইটা গান ছিল। সিরিজের প্রত্যেকটা গানই বছরের সেরা হওয়ার উপযোগ্য তবে Styx Helix আমার মতে এ বছরের সেরা এন্ডিং।

এন্জোয়মেন্ট এই একটা জিনিশে সিরিজটা অনেক বেশি সফল। সিরিজটা দেখে নানা রকম অনুভুতিই আসছে। কিছু কিছু মুহূর্তে চরিত্রগুলো আপনাকে হাসাবে আবার তার কিছু মুহূর্ত পরই সেই চরিত্রগুলোর কাজকর্ম আপনাকে ক্রিপ আউট করে দিবে। অনেক হরিফিক মুহূর্ত ছিল যা দেখে আপনার অসস্তিকর লাগবে কিন্তু এরপরও বসে থাকবেন “কী হয়? কী হয়?” এটা মাথায় রেখে। সুবারুর ডিপ্রেশনটা যেভাবে আনিমেতে ফুটিয়ে তুলেছে সেটা অসাধারণ ছিল, সুবারুকে দেখেই আপনার খারাপ লাগবে, আবার কিছু কিছু মুহূর্তে তাকে বড়ই প্যাথেটিক মনে হবে, আবার তার কথা বার্তায় নিজের সাথেও মিল খুজে পাবেন। এবং এরপর সিরিজের চরিত্রগুলো বুঝে ওঠার আগেই আপনার অনেক ভালো লাগা শুরু করবে। বুঝতেই পারবেন না কাকে আপনার বেশি ভালো লাগে এমিলিয় না রেম, তবে সিরিজ শেষে বিভিন্ন জনের বিভিন্ন মতামত। কিন্তু আমার কাছে রেম বছরের সেরা গ্রিল চিকেন।

সিরিজের চরিত্রগুলোও অসাধারণ ছিল। সুবারু কোন ওভারপাওয়ার্ড কোন প্রধাণ চরিত্র ছিল না, তার মাঝে অনেকটা বাস্তব কোন মানুষের চরিত্রের রিফ্লেকশনই দেখা গেছে। ওর মত বারবার অপ্রিতীকর মুহূর্তের মাঝে গেলে যে কেউই সে পর্যায়ের মানসিক যন্ত্রনায় ভুগবে, স্বাভাবিক। এছাড়া এতকিছুর মাঝেও শেষ দিকে গিয়ে তার চারিত্রিক উন্নতি দেখার মত। এমিলিয়া প্রত্যেক দিক থেকেই একটা আদর্শ হিরোইন, দেখতে সুন্দর সাথে আত্মনির্ভর। রেম বছরের সেরা ফিমেল চরিত্র এমনেও জিতবে ওমনেও জিতবে, কেননা আর যাই হোক নানা স্তরের ফ্যানবয়দের মন সে কেড়ে নিয়েছে। তবে চরিত্রটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত তার কাজকর্মে অনেক পার্ফেক্ট ছিল বলা যেতে পারে। সাথে তার বোন রামও এক মজার চরিত্র, যার কাজকর্ম নিতান্তই উপভোগ করার মত। এছাড়া সিরিজের বাকি চরিত্রগুলোও আলাদা করে মনে রাখার মতই।

রি: জিরো সব মিলায় একটা ভালো আনিমে বলেই এটার ফ্যানবেজটা এত বড়। আর এত বড় ফ্যানবেজ নানা রকম ভক্ত হবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু ফ্যানবেজের আচরণের উপর বিচার করে একটা আনিমে অপছন্দ করাটা বোকামি। নিজে থেকে আনিমেটা শুরু করলে, এটা খারাপ লাগর কোন কারণ দেখি না, তাই এখনও আনিমেটা না দেখে থাকলে, শুরু করে ফেলুন এবং নিজের মতামত দিয়েই বিচার করুন।

re zero 2

#1

Anime: New Game
Episodes: 12
Genre: Slice of Life, Comedy

new game 1গত বছরের যে কয়টা আনিমে দেখেছি সবচেয়ে বেশি মজা পেয়েছি এই আনিমেটা দেখেই। যদিও মনের ভেতর AOTY-এর ক্যান্ডিডেট আরও দুটি আনিমে, কোনোসুবা এবং আনসাৎসুর দ্বিতীয় সিজন। বাকি দুটো নিয়ে কথা হলেও, সেই তুলনায় আনিমেটা নিয়ে কম কথা বলা হয়। তাই ঠিক করলাম এটা নিয়েই লেখি।

আনিমেটার কাহিনী এক গেম ডেভেলপার কম্পানিকে ঘিরে। যেহেতু আনিমেটা মূলত ‘cute girls doing cute things’ তাই এখানে সব চরিত্রই মেয়ে। সিরিজের প্রধাণ চরিত্র সুজুকাজে আওব, যিনি কি না হাইস্কুল থেকে পাশ করে একেবারে নতুন চাকুরিজিবি হিসেবে সে কম্পানিতে কাজ করা শুরু করেছে। সেই কম্পানিতে ইয়াগামি কো নামের এক ক্যারেক্টার ডিজাইনারের অধীনে এক টিমের সদশ্য হয় আওবা, আওবার পশাপাশি টিমের বাকি সদশ্য হাজিমে, হিফুমি এবং ইয়ুন। মূলত এই টিমের নানা রকম কাজকর্মকে ঘিরেই এই আনিমের কাহিনী। কাহিনীর সাথে সাথে গল্পের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উছে আরও কিছু চরিত্র যেমন নেনেচ্চি, আহাগন এবং তোয়ামা রিন। এই টাইপ আনিমের কথা উঠলেই অনেকেরই প্রশ্ন থাকে “শিরোবাকোর মত নাকি?” এ সিরিজের কাহিনী শিরোবাকোর মত এতটা সিরিয়াস না, পুরোটাই কেমনে গেম তৈরি করে কিংবা ডেভেলপারদের নানা রকম কষ্ট তুলে ধরে না। আবার পুরো সিরিজটা K-On!-এর মত ফুয়াফুয়া থিমও না। এই দুই আনিমে নিয়ে একটা স্কেল হিসেবে মাপলে, মাঝস্থানে থাকবে New Game। সিরিজে বেশির ভাগ সময়ই একটা লাইট হাসিখুশি থিম নিয়ে থাকলেও, আনিমের শেষের কিছু মুহূর্ত বেশ সিরিয়াস। শেষে গিয়ে আপনার সিরিজের চরিত্রগুলোর প্রতি এক আলাদা রেসপেক্ট ও ভালোবাসা, বিশেষ করে ইয়াগামি কো-এর প্রতি । এর বেশি কিছু বলতে গেলে স্পয়লার হয়ে যাবে ।

সিরিজের আর্টটা অনেক সুন্দর। বিশেষ করে ব্যাকগ্রাউন্ড, সাধারণত মোয়ে আনিমেতে এনিমেশনের এত স্মুথ কাজ দেখা যায় না। সে দিক থেকে নিউ গেম ব্যতিক্রম। ডোগা কোবোর বাকি কাজগুলোর তুলনায় নিউ গেমের আর্ট সবচেয়ে সেরা। চরিত্রের ডিজাইনগুলোও অনেক সুন্দর, খালি চোখগুলো বড় বড় কিন্তু এ নিয়ে হয়তো কারও খুব একটা আপত্তি থাকার কথা না। আর যাই হোক সিরিজের, কালারিংটা পুরোই অন্যরকম এক সৌন্দর্য।

new game 2

সিরিজের সাউন্ডট্র্যাক ভালোই। খুবই আহামোরি কিছু না, অতি সাধারণ সাউন্ডট্র্যাক। ওপেনিং এবং এন্ডিং গানও অনেক কিউট সাথে মেলোডিয়াস। দুইটা গানের ক্রেডিটই সিরিজের মেইন কাস্টের। আমার কাছে অনেক বেশিই ভালো লেগেছে। সিরিজের কাস্টের ভয়েস অ্যাক্টিংও ছিল অসাধারণ। একেবারে অভিগ্য সেইয়ুগুলোর মাঝে ছিল কায়ানো আই (তোয়ামা রিন), হিকাসা ইয়োকো (ইয়াগামি কো) এবং কিতামুরা এরি (হাজুকি শিজুকু) যারা কিনা কোম্পানির অভিজ্ঞ ডেভেলপারদেরই কণ্ঠ দিয়েছে। কিন্তু সিরিজের বাকি চরিত্রদের সেইয়ু একেবারেই নবাগত, কিন্তু তাদের কাজে তা মনে হয়নি। প্রত্যেকটা চরিত্রর কণ্ঠে তাদের স্বভাব এবং ব্যক্তিত্ব অনেক সুন্দর ভাবেই তুলে ধরেছে।

চরিত্রগুলো স্টেরিওটিপিকাল মোয়ে আনিমের চরিত্রগুলোর মতই। প্রধান চরিত্র আওবা যিনি কি না উচ্চাকাঙ্ক্ষী একটা চরিত্র সাধারণ মোয়ে হিরোইনদের মতই তবে খুব একটুও ক্লামজি না। সিরিজের প্রত্যেকটা চরিত্র আলাদা রকম। এত ডাইভার্স চরিত্রের ইন্টারেকশনটাই সিরিজের মূল আকর্ষণ এবং সিরিজটা এতটাই মজার করে তুলেছে।

সবমিলায় সিরিজটা এন্জয়মেন্টের দিক থেকে সফল। সিরিজের বলতে গেলে সবকিছুই অনেক উপভোগ করেছি। শুধু মোয়ে আনিমের স্ট্যান্ডার্ডেই আনিমেটা অনেক ভালো একটা আনিমে না, স্লাইস অফ লাইফের স্ট্যান্ডার্ডে মাপলেও গত বছরের সেরা আনিমেগুলোর একটা। কমেডি কিংবা এক সুন্দর স্লাইস অফ লাইফ উপভোগ করবো এরকম মোন-মানষিকতা নিয়ে বসলে যে কেউ সিরিজটি ভালো লাগবে। খুব বেশি না মাত্র ১২ পর্বের মধ্যে অনেক মজাদার এবং সুন্দর একটি কাহিনী নিউ গেম, সময় নিয়ে দেখে ফেলুন।

new game 3

এফ এ সি ৫২

রান্ডম টপিক

মেইড কিসসা[Maid Cafe]

আনিমে/মাঙ্গা দেখে আমাদের মেইড ক্যাফে সম্পর্কে বেশ রোমান্টিক কিছু ধারণা হয়েছে। দুঃখের সাথে জানানো যাচ্ছে যে এসব ধারণা আসলে ভুল। মেইড ক্যাফের বেশিরভাগ কাস্টমার হচ্ছে বুড়ো পারভারটের দল, যাদের কাজ হচ্ছে অল্প বয়সী মেয়েদের মলেস্টেশন[এর ভালো বাংলা আপাতত পাচ্ছি না]। মেইডরাও এসবকিছুই মুখ বুজে সহ্য করে যায়, কারণ মোটা অঙ্কের টিপস। তাদের এত টাকা দরকার কেন? যদিও বেশিরভাগ জাপানী পরিবার সেলফসাফিশিয়েন্ট, কিন্তু ঐ পরিবারের ছেলেমেয়েদের ফ্যাশন আর প্রযুক্তির ব্যাপারে মারাত্মক আগ্রহ। এসব শখের দাম মেটানোর জন্যই এই পন্থা অবলম্বন।

 

আনিমে সাজেশন

উতাওয়ারেরুমনো[Utawarerumono]

স্মৃতিহারা রহস্যময় এক লোক ঘটনাচক্রে হয়ে গেল এক সম্প্রদায়ের নেতা. কি অপেক্ষা করছে তার সামনে?

কেন দেখবেনঃ ইন্টারেস্টিং কাহিনী, সাউন্ডট্র্যাক, বিশেষ করে ওপেনিং ট্র্যাকটা তো অসাধারণ। বেশ কিছু ভালো টুইস্ট আছে.

কেন দেখবেন নাঃ তেমন কোনো কারণ খুঁজে পাচ্ছি না.

ম্যাল রেটিং: ৭.৮০

আমার রেটিং ৮

 

মাঙ্গা সাজেশন

জোজো’স বিজার এডভেঞ্চার পার্ট ৪: ডায়মন্ড ইজ আনব্রেকেবল[JoJo’s Bizarre Adventure Part 4: Diamond is Unbreakable]

ইওশিকাগে কিরা শান্তশিষ্ট নির্বিরোধী গোছের মানুষ। একজন কর্তব্যপরায়ণ সেলস্ম্যান, সময়ানুবর্তী, কাজ শেষে বাড়িতে গিয়ে আরাম করে ঘুমায়। একজন কাঙ্ক্ষিত ব্যাচেলর, মাঝে মাঝে ডেটে যায়, মেয়েদের হাত ধরে ঘুরতে তার খুব ভালো লাগে। তবে সমস্যা একটাই, সেই হাত হল কব্জি পর্যন্ত, শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করা।

এই ভয়াবহ সাইকোপ্যাথ খুনীকে ধরতে তার শহরে এসে হাজির হল কুজো জোতারো। সাথে যোগ দিল তার দাদা জোসেফের অবৈধ সন্তান, অর্থাৎ তার চাচা, হিগাশিকাতা জোস্কে। স্টার প্লাটিনাম আর ক্রেজি ডায়মন্ডের জন্য কি অপেক্ষা করছে? কিলার কুইন, আর রেড হট চিলি পিপারস!

কেন পড়বেনঃ বলতেই হবে, আরাকির আর্ট দিনকে দিন ইম্প্রুভ করেছে। দুর্দান্ত ব্যাকগ্রাউন্ড, প্যানেল, ডিটেইলিং। প্রয়োজনমতো গ্যাগ। ফাটাফাটি এবং আঙ্কনভেনশনাল অ্যাকশান তো আছেই। স্ট্যান্ড কনসেপ্টের উৎস সম্পর্কে কিছু ব্যাখ্যাও পাবেন।

কেন পড়বেন নাঃ তেমন কোন কারণ নেই।

ম্যাল রেটিং: ৮.৫৭

আমার রেটিং ৮