Ghost Hunt রিভিউ — Maruf Raihan

অন্ধকার ঘরে একা থাকলে অনেকেই অজানা কারণে ভয় পেয়ে যান বা তটস্থ হয়ে যান। ভূত!! হ্যা,আমি সেই চিরন্তন সত্তার কথা বলছি যাতে অনেকে শক্তভাবে বিশ্বাস করেন আবার অনেকে লেইম গুজব বলে উড়িয়ে দেন।

এখনই হয়ত ভূত আছে কি নেই তাই নিয়ে ঝগড়া শুরু হয়ে যেতে পারে তাই সেদিকে না যাওয়াই ভাল। তবে এই আত্না,ভূত, প্রেত আর মনস্তাত্ত্বিক ব্যাপারগুলো নিয়ে একটি এনিমের কথা বলা যাক। ৮৯,৯৪ এর লাইট নোভেল থেকে ২০০৭ এর ‘Ghost Hunt’। নাম শুনে যা ভাবছেন,এনিমেটা অনেকটা সেরকমই।

Ghost Hunt

সম্মিলিত কোন কাহিনী হিসেবে নয় এর গল্পের আবর্তন হয় কেস/ফাইল ভিত্তিতে। এক একটি ফাইল যেন স্বতন্ত্র মুভির মত,আর ফাইলগুলোর মধ্যে আন্ত:সম্পর্ক তেমন নেই।মোট ফাইল আছে ৮ টি। এনিমের প্রতিটি এপিসোড শুরু হয় তারিখ আর বার দিয়ে। প্রকৃতপক্ষে একে ‘SPR’ এর দিনপঞ্জিকা বলাও যায়। ‘SPR’ এটা আবার কী- ‘শিবুয়া সাইকিক রিসার্চ’ এর সংক্ষিপ্তরুপ। গল্পের প্রধান চরিত্র শিবুয়া কাজুয়া, SPR এর প্রধান। এই প্রতিষ্ঠানটির কাজই হল এসকল অশরীরী ও মনস্তাত্ত্বিক বিষয়ে গবেষণা আর তদ্রুপ অস্বাভাবিক ভুক্তভোগীদের সমস্যা সমাধানে অর্থ এর বিনিময়ে কাজ করে। গল্পের আরেক প্রধান চরিত্র তানিয়ামা মাই এর স্কুলই ভাগ্যক্রমে SPR এর ১ম কেসের ঘটনাস্থল হয়ে দাড়ায়। সেখান থেকেই অনেকটা নাটকীয়ভাবেই মাইকেও বেশ জোর করেই SPR এর সদস্য বানায় শিবুয়া।

অনেকেই ভাবছেন ‘খুইজা খুইজা ভূত ধইরা বেড়ায়। ধুর! এই এনিমে আর রিভিউ – দুইটাই ফালতু। ভাবনাটি ১৮০ ডিগ্রি ঘুরিয়ে ফেলুন কেননা আর পাচটা সাধারণ ভূত ধরা ও তাড়ানো সিরিজের মত এই এনিমেটা নয়। ২৫ এপিসোডের এই এনিমেতে সুপারন্যাচারাল একটিভিটির পাশাপাশি খ্রিষ্টীয় ক্যাথলিকদের আত্নাশুদ্ধি থেকে শুরু করে বৌদ্ধ ধর্মতাত্ত্বিক রিচুয়াল এমনকি উপমহাদেশীয় সমাতন প্রেতাচার কেও তুলে ধরা হয়েছে। আর ডিটেকটিভ আর সাইকোলজিক্যাল ভাইব থাকায় এনিমেটা ফার্স্ট ক্যালিবারের নি:সন্দেহে।

শেষের দিকের ফাইলগুলো দেখে বেশ ভয় পেতে পারেন,যদি কঠিন যকৃতের মানুষ না হন। বিশেষ করে ফাইল নং ৭ (The Bloodstained Labyrinth) রাত জেগে না দেখার রিকমেন্ড করবো।

চরিত্রগুলোর মধ্যে শিবুয়া কাজুয়া আর তানিয়ামা মাই ছাড়া তেমন কোন ব্যতিক্রমী এনিমে ক্যারেক্টার নেই। তবে প্রথম দিকে কিছু কিছু চরিত্রকে অথর্ব ও শুধু সং সাজিয়ে রাখা হয়েছে ভাববেন শেষের দিকে তাদের কন্ট্রিবিউশন দেখে অবাক হয়ে যাবেন।

অত্যধিক আন্ডাররেটেড এই এনিমেটি আমার কাছে অত্যধিক ভালো লেগেছে। দেখে ফেলুন,ভালো লাগলে জানাবেন আর ভয় পেলে বা কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে রিভিউদাতা কোনক্রমেই দায়ী থাকবে না :v

—-অনন্য রিকমেন্ডস—-

পুরো এনিমে দেখতে না চাইলে ফাইল ফাইল ভাগ করে দেখতে পারেন:::

ফাইল-১:( এপি. ১-৩)

‘Filled with Evil Spirits?!!’ @Mai’s School

ফাইল-২:( এপি. ৪-৬)

‘Doll House’

ফাইল-৩:( এপি. ৭-১০)

‘The One who curses after School’

ফাইল-৪:( এপি. ১১)

বি:দ্র: না দেখলেও চলবে
A Ghost Story in the Path

ফাইল-৫:( এপি. ১২-১৩)

‘Silent Christmas’

ফাইল-৬:( এপি. ১৪-১৭ )

‘The Forbidden Play’

ফাইল-৭:( এপি. ১৮-২১ )

‘The Bloodstained Labyrinth’

ফাইল-৮:( এপি. ২২-২৫ )

‘The Home of the Curse’

Ghost Hunt রিভিউ — Mithila Mehjabin

হরর/প্যারানর্মাল ইনভেস্টিগেশন/মিস্টেরি/একশন/টিমওয়ার্ক- এই জাতীয় এনিমে যাদের পছন্দ, তাদের জন্য এই এনিমে টা একশবার রেকমেন্ডেড!

বলছি Ghost Hunt এর কথা! 🙂

শুরুটা এরকম: Mai Taniyama স্কুলে ক্লাস শেষে রুমের আলো নিভিয়ে বন্ধুদের নিয়ে ভূতের গল্প করতে পছন্দ করে। একদিন তাদের পুরোনো স্কুলবিল্ডিংটি নিয়ে এমনই গল্পচলাকালীন একজন অপরিচিত সুদর্শন যুবক হঠাৎ করে তাদের ক্লাসরুমটিতে ঢুকে পড়লে ভয় পেয়ে যায় মেয়েগুলো! সুদর্শন ছেলেটির নাম Kazuya Shibuya, নিজেকে একজন ফ্রেশমেন হিসেবে পরিচয় দিলেও ছেলেটার কথা, কন্ঠ, স্থির – অচঞ্চল ভাবটার মধ্যে কোথাও যে একটা রহস্য লুকিয়ে আছে, এ ব্যাপারটা Mai ঠিকই বুঝতে পারে। পরদিন স্কুলে যাওয়ার পথে তাদের সেই পরিত্যাক্ত পুরোনো ভুতুড়ে স্কুল বিল্ডিংটা চোখে পড়লে কৌতুহল বশে Mai এর ভেতরে ঢুকে পড়ে, এবং পরিত্যাক্ত বিল্ডিংটিতে একটি ক্যামেরা দেখতে পেয়ে অবাক হয়ে যায়। যেই না ক্যামেরাটি ধরতে যাবে, অমনিই ঘটে যায় বিপত্তি! হঠাৎই একটা কন্ঠ শুনে ভয় পেয়ে যায় Mai, আর তারই ধাক্কায় একটা বুকশেলফ তার ওপর পড়ে যেতে নিলে কন্ঠধারী ব্যাক্তিটি তাকে বাচাঁতে গিয়ে নিজেই মারাত্নক ভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হয়। এসময় Kazuya নামের গতদিনের সেই রহস্যময় ছেলেটি এসে হাজির হয়, এবং আঘাতপ্রাপ্ত ব্যাক্তিটিকে সাহায্য করে। একের পর এক অপ্রত্যাশিত ঘটনায় অবাক হয়ে গেলেও পরে Mai জানতে পারে সেই আঘাতপ্রাপ্ত ব্যাক্তিটি ছিল Kazuya’র এসিস্টেন্ট, এবং ১৭ছর বয়সী Kazuya নামের রহস্যময় ছেলেটি আসলে একজন প্যারানরমাল ইনভেস্টিগেটর, একটি সাইকিক রিসার্চ সেন্টার এর মালিক, যাকে ঐ ভুতুড়ে স্কুলবিল্ডিংটার রহস্যোদ্ঘাটনের জন্য হায়ার করা হয়েছে! এদিকে ক্যামেরাটি ভেঙে ফেলায়, এবং তার কারনে Kazuya’র এসিস্টেন্ট আপাতত কিছুদিনের জন্য অচল হয়ে যাওয়ায় তাকেই আপাতত Kazuya’র এসিস্টেন্ট হিসেবে যোগ দিতে বাধ্য হতে হয়। তাদের ইনভেস্টিগেটিং এ আরও যোগ দেয় Monk Takigawa- একজন এক্সরসিস্ট, John Brown- প্রিস্ট, Masuko Hara- স্পিরিচুয়ালিস্ট, Ayako Matsuzaki- স্রাইন মেইডেন। শুরু হয় গল্প, এবং একের পর এক রুদ্ধশ্বাস্ অভিযান!

স্টোরির আর্টওয়ার্ক এবং প্লটগুলো অসাধারণ, এবং এক্ষেত্রে সবচেয়ে প্রশংসার দাবিদার হচ্ছে স্টোরির সাউন্ড সিস্টেম টা। এক কথায় ভয়ঙ্কর! শুধু সাউন্ড গুলোই যে কাউকে ভয় পাওয়াতে যথেষ্ট……আর মিস্টেরি ও একশন তো আছেই! 😀

২৫ টি এপিসোড্, ডাব্ ও সাব্ দুটোই আছে। সো, যারা এই ধরনের প্লটে আগ্রহী, তারা বিনা দ্বিধায় দেখে ফেলতে পারো, নিরাশ হবে না! 🙂
আর, ইয়ে….দূর্বল চিত্তের মানুষদের রাতে না দেখাই ভালো! 😛

আর এই ধরণের প্লটের আরও কোনো সাজেশন থাকলে তা জানাবেন, প্লীজ! 🙂

আরিগাটোও মিন্না!

এফ এ সি ১৭

রান্ডম টপিক

শিজু [四獣]

 

 

ফোর বিস্টের রেফারেন্স প্রচুর আনিমেতে পাবেন, ফুশিগি ইউগী, বেব্লেড, তরিকো, ইউ ইউ হাকুশো ইত্যাদি। তবে এর অরিজিন কিন্তু জাপানে না, চীনে। চাইনিজ মিথোলজিতে শিজু বা ফোর বিস্ট দিয়ে মূলত ৪টা প্রানীকে বোঝায়, যারা চাইনিজ সাম্রাজ্যকে রক্ষা করে. প্রতিটি প্রানী একটি করে দিক এবং একাধিক এলিমেন্ট রেপ্রেসেন্ট করে, যেমন সেইরিউ[ব্লু ড্রাগন]- পূর্ব-কাঠ, গেনবু[কৃষ্ণ কাছিম]-উত্তর-পানি, বিয়াককো[শ্বেত ব্যঘ্র]-পশ্চিম-ধাতু, সুযাকু[ফিনিক্স]-দক্ষিণ-অগ্নি। এছাড়া আরো একটি প্রাণী চাইনিজ সাম্রাজ্যকে রক্ষা করে সবার মাঝে থেকে, সেটি হচ্ছে ইয়েলো ড্রাগন। এগুলো মূলত এস্ট্রোলজিক্যাল ব্যাপারস্যাপার। এই ব্যাপারে আরো বেশি কিছু জানার আগ্রহ থাকলে এই লিঙ্কে যেতে পারেন, এছাড়া গুগল তো আছেই। http://www.onmarkproductions.com/html/ssu-ling.shtml

 

 

আনিমে সাজেশন

গোস্ট হান্ট[Ghost Hunt]

 

 

”দুর্ঘটনা”চক্রে সাধারণ মেয়ে তানিয়ামা মাই জড়িয়ে গেল পেশাদার এক্সরসিস্ট শিবুইয়া কাজুইয়ার সাথে। আস্তে আস্তে মাই বুঝতে পারল, বন্ধুদের সাথে ভূতের গল্প শেয়ার করা বেশ মজার হলেও আধিভৌতিক ব্যাপার-স্যাপার আসলে এত সহজ নয়, এতে পদে পদে আছে রক্তজল করা সব অভিজ্ঞতা।

 

কেন দেখবেনঃএটা রেয়ার সেসব হরর আনিমের একটা, যাতে হরর কন্টেন্টকেই প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। ভৌতিক সিকোয়েন্সগুলোর সাথে উপযুক্ত আবহ সঙ্গীত, আর সেই সাথে রোম খাড়া করে দেয়া ওপেনিং থিম. http://www.youtube.com/watch?v=eHaxcnHRJoc

কেন দেখবেন না:না দেখার তেমন কোনো কারণ নেই.

 

 

ম্যাল রেটিং ৮.১৪

আমার রেটিং ৮

 

 

মাঙ্গা সাজেশন

আজকে দুটো ওয়ান শট সাজেস্ট করব.

 

আদাবানা[Adabana]

 

ম্যাল রেটিং ৭.২৮

আমার রেটিং ৭

 

 

আকুমা গা কিতারিতে[Akuma ga Kitarite]

 

ম্যাল রেটিং ৭.৬৪

আমার রেটিং ৮

 

 

ওয়ান শট বলে আর ইউজুয়াল কাহিনী সংক্ষেপ ইত্যাদি বলছি না, অল্প ৩০-৪০ পেইজের, সাজেস্ট করব এখনি পড়ে এসে মতামত জানাতে।

আর এই দুটো ওয়ান শটের কাহিনীর সাথে খুবই জনপ্রিয় দুটো আনিমের মিল আছে.