রিভিউ কন্টেস্ট এন্ট্রি [২০১৫] #২২: Naruto (Manga) — Uchiha Aoitizhho

[Spoiler Alert] – {Given on request of the participant}

 

মাঙ্গাঃ নারুতো
ভলিউমঃ ৭২
চ্যাপ্টারঃ ৭০০
জনরাঃ একশন, অ্যাডভেঞ্চার, ফ্যান্টাসি, মার্শাল আর্টস
মাই এনিমে লিস্ট স্কোরঃ ৮.১৪/১০
আমার স্কোরঃ ৯.৮/১০

 

স্টোরিঃ

‘নারুতো’র কাহিনী গড়ে উঠেছে নিনজা ভিলেজ কোনোহার ছোট্ট বালক নারুতোকে কেন্দ্র করে। নারুতোর জন্মের সময় ওর মধ্যে সিল করে দেয়া হয় ভয়ংকর শক্তিশালী নাইন টেইলস ফক্স কিউবিকে। বাবা-মাবিহীন নারুতো সবসময় লক্ষ্য করতো ভিলেজের সবাই ওকে অবহেলা এবং একই সাথে ভয় করে, যার ফলে নারুতোর মাঝে নিজের অস্তিত্ব ফুটিয়ে তোলার প্রবল প্রচেষ্টা জেগে উঠে। তাই ওর জীবনের একমাত্র অভীষ্ট লক্ষ্য হয়ে দাঁড়ায় হোকাগে অর্থাৎ সবচেয়ে শক্তিশালী নিনজা ও ভিলেজের লিডার হয়ে উঠার। অনেক সময়ই দেখা যায়, মেইন চরিত্র রাতারাতি দুর্বল থেকে বিশাল শক্তিশালী হয়ে যায়। কিন্তু নারুতোতে এমন অবাস্তব জিনিস দেখানো হয়নি। নারুতোর মাঝে কিউবির পাওয়ার লুকানো থাকা সত্ত্বেও নারুতো পাওয়ারফুল হয়েছে নিজের চেষ্টায়, ট্রেনিংয়ের মাধ্যমে ধীরে ধীরে। প্রথমে কাগে-বুনশিন, তারপর রাসেঙ্গান, অতঃপর রাসেন-শুরিকেন, সবশেষে সাগে ও কিউবি মোড। এভাবেই নারুতো কপর্দকহীন থেকে শক্তিশালী হয়ে উঠে এবং হোকাগে হওয়ার পথে এগিয়ে চলে। তবে এর মাঝে ঘটে যায় অনেক কিছু। চুনিন এক্সাম, অরচিমারুর কোনোহা আক্রমণ, নারুতোর টীমমেট ও বেস্ট ফ্রেন্ড সাসকের ভিলেজ ত্যাগ, আকাৎসুকি ও তবির আবির্ভাব, পেইন এর আক্রমণ ইত্যাদি ঘটনার মধ্য দিয়ে এগিয়ে যায় কাহিনী। সবশেষে নাটকীয়ভাবে আসে নিনজা ওয়ার ও মাদারার আবির্ভাব।

একাকীত্ব কী তা জানতো বলেই নারুতো বন্ধুত্বকে অগ্রাধিকার দিত। সাসকেকে ফিরিয়ে আনার জন্যে এমনকিছু নেই যা নারুতো করেনি। নারুতোর অন্যকে বোঝানোর ক্ষমতাও অনেক। গারা, নেজি, পেইন, তবি সবাই নারুতোর সংস্পর্শে এসেই ভালো হয়ে যায়। এটা কিছুটা অদ্ভুত মনে হলেও ভালো লেগেছে যে মেইন ভিলেন মাদারা শেষ পর্জন্ত নিজ বিশ্বাসে অবিচল ছিল।

নিনজা দুনিয়া নিয়ে গড়ে উঠা ‘নারুতো’তে নিনজাদের বিভিন্ন কলা-কৌশল এত সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে যে একসময় নিজেকেই নিনজা মনে হচ্ছিল। পুরো মাঙ্গা জুড়ে দেখা যায় প্রচুর নিনজা ফাইট এবং প্রত্যেকটি ফাইটই একটির থেকে অন্যটি ভিন্ন ও টুইস্টে পরিপূর্ন। প্রতিটি মিশনও ছিল অ্যাডভেঞ্চারে ভরপুর। তাই যাদের একশন ও অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় তাদের জন্যে নারুতো সেরা।

 

ক্যারেক্টারঃ

নারুতো মাঙ্গাটা যেহেতু অনেক বড়, তাই এতে ক্যারেক্টারও আছে প্রচুর, সংখ্যার দিক দিয়ে যা অন্য যেকোনো মাঙ্গার চাইতে বেশী এবং স্যার কিশিমতো প্রতিটি চরিত্রকেই গুরুত্বসহকারে তুলে ধরেছেন। প্রায় প্রতিটি চরিত্ররই ফ্যামিলি ব্যাকগ্রাউন্ড, দুঃখ-কষ্ট, বিলিফ এত সুন্দর করে দেখনো হয়েছে যে সবার অনুভূতিই স্পর্শ করবে এবং প্রত্যেকের বিশ্বাস ও যুক্তিকেই সঠিক বলে মনে হবে। যেমন, ইতাচির নিজ ক্লানকে ধ্বংস করা, নাগাতো থেকে পেইন হয়ে উঠা, অবিতোর প্রতিশোধ, মাদারার নিনজা ওয়ার্ল্ড ধ্বংস করার পরিকল্পনা এমনকি সাসকের প্রতিশোধস্পৃহা সবগুলোর পিছনেই এত সুন্দর করে যুক্তি দেখানো হয়েছে যে প্রতিটি চরিত্রকেই শক্তিশালী করে তুলেছে।

 

আর্টঃ

নিনজা ওয়ার্ল্ড হিসেবে নিনজাদের মুখোশ, বিশেষ ধরনের পোশাকের পাশাপাশি স্যার কিশিমতো একটু ভিন্নতারও ছুঁয়া লাগিয়েছেন, যেমন নারুতোর গায়ে দেখা যায় কমলা রঙের এক জাম্পস্যুট যা তাকে কিন্তু ভালোই মানিয়েছে।

 

১৯৯৭ সাল থেকে ২০১৪ এই দীর্ঘ ১৭ বছরের পথচলায় ‘নারুতো’-র সাথে কেটেছে অসংখ্য ভক্তের শৈশব ও কৈশোর। নারুতোর সাথে সাথেই বড় হয়ে উঠেছে অনেকে। আমি যদিও নারুতোর শুরুর সময়টায় নারুতোর পাশে ছিলাম না, তবে নারুতোর শেষ সময়টায় নারুতোর পাশে থাকতে পেরে নিজেকে ভাগ্যবতী মনে করছি। নারুতো দেখা শুরু করার পর হতে এই পর্যন্ত সবসময় নারুতো আমার পাশে বন্ধুর মতো ছিল। কখনো মন খারাপ হলে বা হতাশা কাজ করলে নারুতো থেকেই আমি অনুপ্রেরণা-উৎসাহ পেয়েছি। নারুতো থেকে সবচেয়ে বড় যেই শিক্ষাটা পেয়েছি তা হোল “Never give up” । সত্যি বলতে কি, নারুতোর জন্ম নেওয়া থেকে শুরু করে একটু একটু করে বড় হওয়া, নতুন নতুন জিনিস শিখা, নতুন বন্ধু বানানো এগুলো দেখতে দেখতে একসময় নারুতোকে বন্ধুর চাইতেও বেশী কিছু মনে হয়েছে। Really Naruto came as a story and left as a legend. নারুতো গল্প হিসেবে আসলেও হিরো-মহানায়ক হয়েই আমাদের মনে জায়গা করে নিয়েছে।

22 Naruto manga

Comments