Anime: Paprika review by Nisharggo Niloy

[ এই লেখাটিকে আমার ব্যক্তিগত চিন্তাভাবনা বলে ধরে নিলে ভাল হবে। আমি অনেকটা নিজের মত করে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেছি, কোন নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গি থেকে না। এটাকে রিভিঊ অথবা ক্রিটিসিজম, কোনটাই বলা যাবে না। ]

Anime: Paprika
Type: Video Animation Film
Release: 2006
Director: Satoshi Kon
Based on: Yasutaka Tsutsui’s 1993 novel of the same name.
MAL Rating: 8.20/10.0, Ranked: 277
My Rating: 8.27/10.0, Ranked: 10
Plot: উইকিপিডিয়াঃ http://en.wikipedia.org/wiki/Paprika_(2006_film)#Plot

মজার ব্যাপার, পাপরিকার মূল থিমকে আমি এইভাবে ব্যাখ্যা করতে পারিঃ Paprika is a motion video artwork which has the aim to “resolve the previously contradictory conditions of dream and reality.” অর্থাৎ সাররিয়ালিজমের মূল চিন্তাধারাকেই চলচ্চিত্রের মধ্যে তুলে এনেছে পাপরিকা। সাতোশি কোন নিজে এই মুভি সম্বন্ধে বলেছেনঃ “Everything but the fundamental story was changed.” সুতরাং আমার মনে হয় ৎসুৎসুই ইয়াসুতাকার উপন্যাসটা না পড়েও আমি যদি শুধু কোনের মাস্টারপিস মুভি হিসেবে এটা নিয়ে ডিসকাস করতে যাই খুব বেশি ভুল হবে না।

সাদা চোখে দেখলে পাপরিকা একটা সায়েন্স ফিকশন, যেখানে স্বপ্নকে বাস্তবে তুলে আনার প্রচেষ্টায় যেসব অদ্ভূত ভয়াবহতার সৃষ্টি হয় সেগুলো তুলে ধরা হয়েছে। অন্যভাবে যদি দেখতে যাই, এখানে আমি অনেক কিছুই দেখতে পাই। পরাবাস্তবতাকে সাহিত্য এবং চিত্রকর্মে একটি শক্তিশালী বাদ বা ism হিসেবে দাঁড়া করানো গেছে। কিন্তু চলচ্চিত্রে? আমার জানামতে এরকম কোন বড় সাফল্য চলচ্চিত্রে আর্টিস্টরা পাননি। দালি তার জীবদ্দশায় ডিজনির সাথে এইধরনের একটা কিছু সৃষ্টির চেষ্টা করেছিলেন ১৯৪৬ সালের দিকে। তবে তিনি সেটা দেখে যেতে পারেননি। অসম্পূর্ণ অবস্থায় দীর্ঘদিন পড়ে থাকার পর ২০০৩ সালে মুক্তি পায় “Destino”. [http://www.youtube.com/watch?v=1GFkN4deuZU ] প্রায় সমসাময়িক মুভি পাপরিকা (২০০৬), তবে পাপরিকা যেন পরাবাস্তবতাকে বাস্তবে নিয়ে আসার বিষয়টা বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেছে। পাপরিকায় প্রথম এই ব্যাপারটিই চোখে পড়ে।

আরো ভাল লাগে পাপরিকার মিউজিক। বিশেষভাবে, থিম সংয়ে ভোকালয়েডের ব্যবহার। মিউজিকটাও সাররিয়াল। একই সাথে অবাস্তব এবং সুন্দর।

ভিতরের দৃশ্যগুলোর মধ্যে ভাল লেগেছে পুতুলের মিছিল। দৃশ্যটা কেমন অশুভ, ভয় লাগে দেখলে। কিংবা বাস্তবের সাথে যখন আসলেই স্বপ্নগুলো মিশে যায়, তখন মানুষগুলোর ল্যাম্পপোস্ট, অদ্ভূত প্রাণী কিংবা খেলনা রোবট হয়ে নাচতে থাকা, দৃশ্যগুলোকে স্বপ্ন মনে হয় না।

আরো একটা চোখে পড়ার মত বিষয় হল রেফারেন্স। বহু ফিল্ম, আর্টওয়ার্ক, সাহিত্যকর্মের রেফারেন্স আছে। সাতোশি কোনের অন্যান্য মুভি গুলো- টোকিও গডফাদার, পারফেক্ট ব্লু; সফোক্লিসের ইদিপাস; দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ, রোমান হলিডে; পিনোচ্চিও, অ্যান্ডারসেনের মারমেইড– আরো বহু রেফারেন্স। পুরাপুরি সবগুলো সিন বুঝতে হলে কমপক্ষে শখানেক জিনিসপাতি সম্বন্ধে ভাল জানতে হবে।

মুভির নাম কেন পাপরিকা, সেটা মুভির দুইটা কোটেশন দিয়ে ব্যাখ্যা করা যায়ঃ
“That’s right, keep running. There are no boundaries to dreams.The spirit will be freed from the constraints of the body and gain limitless freedom. Including me! I will also be free!!”
“The one I’ve been waiting for since historic times! Your flute melody is a sound for sore neurons!…….. A fragrant fat is a first class lunch…. It needs a little more spice, maybe some paprika?”

শেষ দিকের দৃশ্যে যখন দানবীয় পাপরিকা/ড. আতসুকো শুষে খেয়ে ফেলে চেয়ারম্যানকে, সেই দৃশ্যটা ভাল লাগে। পুরুষতন্ত্রের প্রতি একটা বিদ্রূপ মনে হয় দৃশ্যটাকে। সেই সাথে কেন জানি আদি টাইটান, মাদার নেচার গায়া-র কথাও মনে পড়ে। অবশ্য র‍্যাডিকাল ফেমিনিজম দিয়েও ভাল ব্যাখ্যা করা যায় এটাকে।

একটা প্রশ্ন থাকে, ড. আতসুকো কেন স্বপ্নের মাঝে পাপরিকা হয়ে যান? তিনি ডিসি মিনি-র টেকনোলজিকে সাইকোথেরাপির কাজে ব্যবহার করেন কেন পাপরিকার রূপ নিয়ে? সেই রূপ কি আসলে তাকে একটু বেশি অতিমানবে পরিণত করে? পরাবাস্তবতায় তিনি নিজের অপূর্ণ আকাঙ্খাগুলো পূরণ করতে চান? সেই জগতের নিরর্থকতাকেও তিনি অর্থপূর্ণ করতে চান? এ প্রশ্নগুলো নীৎসের ‘উবেরমেনশ’ কনসেপ্টকেও খানিকটা টেনে আনে।

শেষ কথা, সালভাদর দালি, ম্যাক্স আর্ন্সট-রা যদি জীবদ্দশায় এই মুভিটা দেখে যেতেন তবে তাদের প্রতিক্রিয়া কী হত খুব জানার ইচ্ছা হয়। আর এই অ্যানিমটা যদি কারো টপ টেনের বাইরে থাকে, তবে তা শুধুমাত্র এর দুর্বোধ্যতার জন্যই। 

এটার মর্মার্থ যাদের মাথার দুই হাত, তিন হাত, মাইল খানেক/দুয়েক উপর দিয়ে যাবে তাদের জন্য রইল আমার সমবেদনা। তারা এক কাজ করতে পার, শান্তচিত্তে ও পবিত্র দেহে কঠোর যোগসাধনা করতে থাক। একসময় লাইটবাল্বের ন্যায় তোমাদের মাথার ভেতর আবির্ভূত হবে তান্ত্রিক তরিকা। সেই তরিকা দিয়ে সবই বোঝা যাবে।
আর যারা বুঝতে পারবে, তাদের মহান পরিণতির কথা ভেবে ডেডিকেট করছি এই গানটিঃ

https://www.youtube.com/watch?v=VLnWf1sQkjY

Comments