“শৌওয়া ও গেনরোকু আমলের ভালবাসার যুগ্ম মৃত্যু- রাকুগোর মাধ্যমে”; রিভিউ লিখেছেন ইশমাম আনিকা

rakugo

আমার এক বান্ধবী মাঝেমাঝে একটা কথা বলত, “পরীক্ষার সময় দেয়ালের দিকে তাকিয়ে বসে থাকাও অনেক ইন্টারেস্টিং একটা কাজ বলে মনে হয়।” কথাটা শতভাগ সত্যি। এবং এই কথামতই, সারাটা বছর পার করে অবশেষে এই ডিসেম্বর মাসে এসে দেখলাম “শৌওয়া ও গেনরোকু আমলের ভালবাসার যুগ্ম মৃত্যু- রাকুগোর মাধ্যমে”।

আমি সাধারণত কমফোর্টেবল ফিল করি দুই ধরণের আনিমে নিয়ে কথা বলতে গেলে, একটা হল যেখানে কিছুই ঘটেনা, আরেকটা যেখানে আসলেই কিছু ঘটে না :3 সত্যি কথা, হাইস্কুলের পোলাপান দৌড়াদৌড়ি করে বেড়াচ্ছে, মজা করে বেন্তো খাচ্ছে; বা র্যান্ডম কিশোর বালক অ্যাডভেঞ্চার করতে বেরিয়ে দুনিয়া জয় করে ফেলছে, কিংবা খুব থ্রিলিং কম্পিটিশন বা মারামারি চলছে, এমন আনিমে নিয়ে কথা বলাটা আমার কাছে বেশি সহজ মনে হয়। কিন্তু যেখানে আসলেই কিছু ঘটছে, এবং জিনিসটা বাস্তবের খুব কাছাকাছি, সেটা নিয়ে কথা বলাটা বেশ কঠিন হয়ে যায়। তারওপর যখন আনিমেটার মূল থিমই হয় গল্প বলা নিয়ে, সেখানে অনেক খুঁটিনাটি ব্যাপার নিয়ে আলোচনা করাটা গিভেন হয়ে যায়, আর সেটা করতে গেলে গবেষণা করা লাগবে একগাদা, যেটা খুবই বিরক্তিকর একটা বিষয় (আমার জন্য)।

তাহলে কথা যেটা ওঠে এখানে, আমি তাও শৌওয়া নিয়ে লিখছি কেন, আর লিখছিই যখন, কোনরকম গবেষণা না করেই বা লিখছি কেন।

কারণ একটাই, আনিমেটা বেশ ভাল লেগেছে। শুধু ভাল লাগলে হয়ত লিখতে ইচ্ছে হত না, ইচ্ছেটা জেগেছে কারণ আনিমেটার প্লট খুব ইউনিক লেগেছে। বর্তমানের “ইসেকাই”, “তাইমু তোরাবেরু”, “আইদোরু”, বা অযথা এচ্চি দিয়ে ভরে রাখা আনিমের যুগে হাতেগোণা যে কয়টা আনিমে দেখলে মনে হয়, “নাহ! এ জিনিস তো আগে কোনদিন দেখিনি!”- তার মাঝে শৌওয়া অন্যতম।

কাহিনী মূলত জাপানের পটভূমিতে রাকুগো শিল্পের উত্থান পতন নিয়ে, কিন্তু এর পাশাপাশি খুব সুন্দরভাবে এগিয়ে চলেছে এই শিল্পের সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত একদল মানুষের জীবনের কাহিনী; তাদের ব্যক্তিগত জীবন ও রাকুগো মিলেমিশে যেন একাকার হয়ে গেছে।

আনিমেটা আমি এতদিন শুরু করতে পারছিলামনা কারণ টাইটেলটা পড়ে এবং মানু্ষের রিভিউ পড়ে একটু ভয় কাজ করছিল যে সেই শৌওয়া আমলের প্লট, তাও আবার জাপানের বিবর্তন টাইপ জিনিস নিয়ে কারবার, যদি বোর হয়ে যাই! অনেকেই হয়ত এটা ভেবে “ভারী” এই আনিমেটা দেখেননি, বা আমি একাই হয়ত “ইয়োতারো”, কিন্তু আনিমেটার ৪৭ মিনিটের প্রথম এপিসোড দেখেই আমার সেই ধারণা ভেঙে গিয়েছিল। আর যাই হোক, শুরুটা খুবই ইন্টারেস্টিং। কেবল জেল থেকে ছাড়া পেয়ে এনার্জেটিক এক ছেলে গিয়ে সরাসরি পায়ে পড়ল রাকুগো শিল্পীর- দ্যাটস সামথিং ইউ ডোন্ট গেট টু ওয়াচ এভ্রিডে!!

আনিমের কাহিনী বেশ ভাল লেগেছে, অনেক কিছুই দেখার সময় আগে থেকেই আন্দাজ করে ফেলা যায়, তা মিলেও যায়, কিন্তু মজাটা এখানেই। আপনি জানবেন এরপর এটা আসছে, কিন্তু সেটা কিভাবে সম্ভব তা আপনি ঠাহর করতে পারবেননা। তারপর যখন জিনিসটা ঘটবে, তখন অবাক হয়ে ভাববেন যে এটাই ঘটার কথা ছিল আসলে। এই ব্যাপারটা আমার কাছে আনিমের একটা প্লাস পয়েন্ট বলে মনে হয়েছে। আর সাথে তো রাকুগোর স্কিলফুল পারফরমেন্স গুলো আছেই, যা নিয়ে আমার আগেও অনেকে অনেক কিছু বলেছেন, ভয়েস একটরদের মুন্সিয়ানা গবেষণা করে বা অ্যানিমেশন আর মিউজিকের কম্বিনেশন কিভাবে নিখুঁতভাবে ম্যাচ করানো হয়েছে তা নিয়ে তথ্যবহুল পোস্ট দিয়েছেন, তাই আমি আর কষ্ট করলাম না। খালি দুটো কথা বলব, অ্যানিমেশন এখানে গৌণ ব্যাপার, কাহিনীতে একবার ঢুকে গেলে কিসের অ্যানিমেশন, কিসের কি! ওপেনিং গানটা বেশ ভাল লেগেছে, জাদুভরা কণ্ঠ।

“শৌওয়া গেনরোকু রাকুগো শিনজু” হয়ত আমার টপ ফেভারিট বা এমন কিছু হয়ে ওঠেনি, কিন্তু তাতে কি, ভাল তো লেগেছে, সেটাই যথেষ্ট। আর আমার মনে হয় একবার দেখা শুর করলে আনিমেটা যে কারও ভাল লাগবে।

Berserk (2016): [Honest Reaction, Rant, Appreciation] — Tahsin Faruque Aninda

berserk_2016_5127

সর্বকালের সেরা মাঙ্গা বলে কোন নাম উল্লেখ করতে বললে সব চাইতে বেশি নাম যেটা আসবে সেটা হল বার্সার্ক। কেন্তারো মিউরার এই অনবদ্য সৃষ্টি শুধু মাঙ্গা হিসাবেই নয়, কমিক্স/গ্রাফিক্স নোভেল হিসাব করতে গেলেও এরকম মানের জিনিস খুব কমই পাওয়া যায়। প্রায় ৩০ বছর ধরে চলে আসা এই মাঙ্গার গল্প যেমন অসাধারণ, আর্ট তেমনই অবাক করার মত সুন্দর! এত বছর ধরে চলে আসার পরেও গল্পের কোন কুলকিনারা করে উঠা যাচ্ছে না তার একটা বড় কারণ মাঙ্গাকার কয়েকদিন পরপর হায়াটাসে চলে যাওয়া। এক নৌকা ভ্রমণে গল্প ৭ বছর আটকিয়ে রাখার মত আকাম করেছে এই লোক। নাহলে কে জানে, গল্প হয়তো এতদূর এগিয়ে যেত যে গল্পের শেষের দিকে কী হতে পারে না পারে তার কিছুটা হলেও ধারণা পাওয়া যেত।

সে যা হোক, সর্বজনবিদিত এই মাঙ্গার আনিমে এডাপশনের উপর যেন সবসময়েই একটা অভিশাপ লেগে থাকতো। অনেক নামকরা মাঙ্গার মতই এটারও আনিমে এডাপশনের ভাগ্যের শিকে ছিড়ে উঠে নি অনেকদিন। এডাপশন কনফার্ম হলেও আনিমের বাজেট খুবই কম থাকার কারণে স্টিল শট ব্যবহার করার কারণে কুখ্যাত হয়ে উঠে ১৯৯৭ সালের সেই সিরিজ। অনেকদিন পর আবার বার্সার্কের আনিমের খবর বের হলেও দেখা যায় সেটা মুভি ট্রিলজি, তাও আবার ১৯৯৭ সালে গল্প যতটুকু দেখিয়ে রেখে দিয়েছিল, ততটুকুই আবার রিবুট করবে। এই মুভি তিনটি বের হয়ে থাকলেও এরপর আবার খবর নেই। অনেকদিন পর আবার বার্সার্কের নতুন আনিমে এডাপশনের খবর বের হলেও সবাই চিন্তায় থাকে আবার রিবুট না তো! এবার অন্তত রিবুট হবে না এটা মোটামুটি কনফার্ম হবার পরেও সবার মনে আরেকটা চিন্তা উকি দেয় — CG এর ব্যাবহার আনিমের মানটাকে আবার খারাপ করে ফেলবে না তো!

তা শেষ পর্যন্ত কেমন হয়ে উঠে সিরিজটা? এডাপটেশন খারাপ বলে সবাই গলা ছাড়িয়ে বেড়ালেও আর মাঙ্গা পাঠকদের হতাশ করা হয়ে থাকলেও সব মিলিয়ে সিরিজটি কেমন হয়েছে? দেখার মত নাকি একদমই ফেলে দেবার জিনিস?

মাঙ্গা এডাপশন হিসাবে কেমন, সেই টপিক আপাতত সরিয়ে রাখি। ইন্টারনেটে গত তিন মাস উপস্থিত থাকলে যে কেউই এতক্ষণে জেনে গিয়েছে পাঠকদের রিএকশন কেমন। তাই সে কথা বাদ থাক। আগে থেকে কেউ যদি মাঙ্গা পড়ে না থাকেন, আনিমে দিয়েই শুরু করেন, তাহলে তার জন্যে এই লেখাটি একটি গাইডলাইন হতে পারে সিরিজটা সম্পর্কে বিচার করার জন্যে।

শুনতে অবাক লাগলেও, সিরিজটির বেশ ভাল কিছু দিক আছে। সেই ভাল দিকগুলি তুলে ধরার আগে অল্প কথায় সিরিজটির অনাকর্ষণীয় দিকগুলি নিয়ে আসি:

— CG মানেই খারাপ নয়, ভাল CG-এর ব্যবহার একটা সিরিজকে অনেক বেশি আকর্ষণীয় করে তুলতে পারে। বার্সার্কে CG-এর ব্যবহার খারাপ ছিল নিঃসন্দেহে, তবে তার চাইতেও বড় সমস্যা হল CG কিভাবে ব্যবহার হয়েছে এখানে। সিরিজ ডিরেক্টর এর আগে যত আনিমেতে কাজ করেছে, সেগুলি ছিল ৩-৪ মিনিটের পর্ব করে slapstick slice of life comedy সিরিজ। সেই ডিরেক্টর (এবং একই সাথে আগের আনিমেগুলির সেই একই স্টুডিওকে) এমন একটি আনিমের দায়িত্ব দেওয়া হল যা ছিল সবদিক থেকে আগের কাজগুলি থেকে একদম আলাদা। comedy slice of life এর জায়গায় dark fantasy horror, 2d এর জায়গায় 3d cg, short fast paced slapstick আনিমের জায়গায় বড় পর্বের action drama সিরিজ। এত কঠিন সব কন্ডিশনের পরেও সিরিজটা চমৎকার হয়ে উঠতে পারে যদি ডিরেক্টরের গুণ অনেক বিশেষ কিছু হয়ে উঠে। বলার অপেক্ষা রাখে না, এরকম কিছুই হয়ে উঠে নি। অ্যানিমেশন, স্ক্রিনপ্লে, কোরিওগ্রাফি, কোন কিছুই ঠিকমত হয়ে উঠে নি। এই ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে চাইলে এই ভিডিওটি দেখে ফেলুন, সুন্দর করে সবকিছুর analysis করা হয়েছে:

— গল্পের কাটছাট অনেক বেশি হয়েছে। বিশেষ করে Black Swordsman arc ও Conviction arc এই ১২ পর্বে দেখানোর কথা থাকলেও অর্ধেকের মত গল্পের উপাদানই বাদ দেওয়া হয়েছে এখানে। বাকিটুকুও যা দেখানো হয়েছে সেগুলিও অনেক rushed করে দেখিয়েছে।

— Censoring.
এটা বলার আগেই বুঝে নেওয়া যায়, মাঙ্গায় যে ভয়াবহ রকমের বেশি পরিমাণ nudity আর gore ছিল, তা আনিমেতে কোনভাবেই দেখাতো না। HBO যদি Berserk-এর কোন এডাপশন করে, তাহলেই একমাত্র সেখানে এরকম কিছু দেখা যেত [এবং যার কাছে GoT এর nudity-কে রীতিমত childish পর্যায়ে ফেলে দেওয়া যায়]। তা স্বত্ত্বেও কিছু কিছু যায়গায় সেন্সরিং চোখে পড়ার মত ছিল।

এবার আসি সিরিজটার ভাল দিকগুলির কথায়:

+ শুরুর দিকে সিনেম্যাটোগ্রাফি খারাপ থাকলেও ধীরে ধীরে ভাল হয়ে উঠতে শুরু করে। ডিরেক্টরের কাজ দেখে মনে হয়েছে, প্রথম ৪-৫ পর্ব কোনরকম হয়ে থাকলেও এর মধ্যেই সে অনেক কিছু শিখে উঠে। যার কারণে পরের দিকের পর্বগুলি তুলনামূলক বেশ ভাল হয়।

+ মিউজিক চমৎকার ছিল। এন্ডিং গানটা খুব ভাল না হলেও ওপেনিং গানটা এই বছরের অন্যতম পছন্দের গান। মিউজিকের ব্যবহার ভাল তো ছিলই, আমার কাছে সাউন্ড ইফেক্টও ভাল লেগেছে।

+ ক্যারেক্টার ডিজাইন।
হ্যাঁ, গাটসকে বেশি খারাপ লেগেছে আসলে, মুখটা বেশি চিকন করে ফেলেছে, শরীরটাকেও। কিন্তু বাকি সবাই একদম মাঙ্গার মতই রয়ে গিয়েছে।

+ একশন দৃশ্যগুলি বেশ ভাল ছিল। শুরুর দিকে একশন দৃশ্যের মান খারাপ থাকলেও, প্রথম পয়েন্টটার মত এ ক্ষেত্রেও যথেষ্ট উন্নতি ঘটে শেষের দিকে এসে। বিশেষ করে conviction arc-এর শেষের মারামারিটা বেশ মুগ্ধ করেছে আমাকে।

+ আনিমের জন্যে তৈরি নতুন অংশটি।
যেহেতু অনেকদিন পর আনিমে হিসাবে বার্সার্ক এসেছে আবার, আর তাছাড়া এর আগের সিরিজ/মুভিগুলির কারণে আর একই সাথে এইবারের সিরিজে সময়-স্বল্পতার কারণে কিছু গুরুত্বপূর্ণ অংশ বাদ দিতে হয়েছে, এই জন্যে apostle জিনিসটা কী সেই ব্যাপারে দর্শকদের পরিষ্কার ধারণা না থাকতে পারে। এজন্যে apostle-এর ব্যাপারটা নতুন দর্শকদেরকে ভাল মত introduce করাবার জন্যে শুরুর দিকে একটি anime only mini arc দেখায়। এই অংশটি “ফিলার” বলে দাবী করতে গেলেও একে ফিলার বলা যাবে না আসলে। কারণ মিউরা নিজেই গল্পের এই অংশটুকু লিখেছে। আর এটি বেশ ভালই হয়েছিল, দেখার সময়ে বিরক্তি তো লাগেই নাই, বরং গল্পের অন্যান্য অংশের সাথে মানিয়ে যাবার মত ঘটনাই দেখিয়েছে। মাঙ্গাকা নিজে লিখেছে বলেই এই অংশটুকু ভাল হয়েছে।

+ নতুন জেনারেশনকে বার্সার্কের সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়া।
আনিমেটাকে মাঙ্গার এডভার্টাইজমেন্ট হিসাবে ধরে নেওয়া হোক বা না হোক, এই সুযোগে এখনকার জেনারেশনের অনেক দর্শক এবং একই সাথে পাঠকদেরকে বার্সার্কের সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্যে একটা ভাল উদ্যোগ। “READ THE MANGA” বলে চেঁচানোর কারণে অনেকে আনিমে দেখে এরপর আর সাসপেন্স সইতে না পেরে মাঙ্গাটা শুরু করে দিবে সন্দেহ নাই।

সব মিলিয়ে এটুকু বলবো, কেউ যদি মাঙ্গা পড়ে না থাকেন, তার কাছে এই বার্সার্ক একদম ভয়াবহ খারাপ লাগবে না। সব মিলিয়ে একটা ইন্টারেস্টিং সিরিজ হিসাবেই মনে হবে। মাঙ্গা পড়তে না চাইলে এবং শুধু আনিমে দর্শক হয়ে থাকলে, সিরিজটা উপভোগ্য লাগবে পরের দিকে গিয়ে। বিশেষ করে সময়ের সাথে সাথে সিরিজটার making-এ উন্নতির ছাপটা বুঝা যাবে। তবে মাঙ্গা পড়তে আপত্তি না থেকে থাকলে অবশ্যই মাঙ্গা পড়তে অনুরোধ করবো।

সবশেষে বলবো, যেহেতু এর সিকোয়েল আসবে সামনের বছর, তার অর্থ খুব নিকট ভবিষ্যতে অন্য কোন ভাল স্টুডিওর পক্ষ থেকে এর রিবুট আসছে না। তাই প্রথম সিজনের ভুলভ্রান্তি থেকে শিক্ষা নিয়ে দ্বিতীয় সিজনটা যেন আরও ভাল করে তুলে সেটাই আশা করছি। Falcon of the Millennium Empire Arc-টা কোনভাবেই খারাপ কিছু যেন না হয়ে উঠে এই আশাতেই আছি।

Yuri!!! on ICE [রিএকশন/মিনি রিভিউ] — Mithila Mehjabin

yuri-on-ice

রিএকশন(এপি ১-৩)+মিনি রিভিউ
Yuri!!! on ICE
জনরা: স্পোর্টস
স্ট্যাটাস: অনগোয়িং

এনিমেটার প্রথম পোস্টার দেখে আহামরি কিছু হতে পারে, তা ঘুনাক্ষরেও মনে হয়নি। অথচ গত রাত থেকে এনিমেটার প্রথম তিনটা পর্ব তিনবার করে দেখা শেষ, প্রতিবারই এনিমে স্টার্ট করার আগে ওপেনিং শুনতে শুনতে কান দিয়ে ধোয়া বের হওয়ার আগ পর্যন্ত শুনে গেছি, এত বেশী শুনেছি যে ঘুমের ভেতরেও মাথার ভেতর বাজছে গানটা, বিরক্ত হয়ে ভোর চারটা সময় উঠে পড়তে বাধ্য হই!

ইয়ুরি অন আইস- নামটাই গড়বড়ে!  এনিমের মধ্যে না তো ইউরি আছে না ইয়াওই, ফ্যানসার্ভিস আছে যদিও, এবং ভালো পরিমাণেই আছে! সাবজেক্ট: ফিগার স্কেটিং। সোজা কথায় বরফের ওপর স্পেশাল ধরণের জুতা পড়ে পিছলিয়ে যে নাচ বা খেলা।
ম্যালের মতে, স্টুডিও মাপ্পা’র (MAPPA) চার বছর ধরে প্ল্যান করা অরিজিনাল একটি সিরিজ এটি। ক্রিয়েটর মিত্সুরো কুবো এবং ডিরেক্টর সায়ো ইয়ামামোতো সিরিজ প্ল্যানিং এর আগে রাশিয়া, বার্সেলোনা ও বেইজিং ঘুরে এসেছেন লোকেশন হান্টিং এর জন্য। ক্যারেক্টার ডিজাইনারদের একজন তাদাশি হিরামাত্সু, পরিচিত Parasyte: The Maxim এর ক্যারেক্টার ডিজাইনিংয়ের জন্য, এনিমের মেইন ক্যারেকটার: কাত্সুকি ইউরি কে দেখলেই ইযুমি শিনিচি’র কথা মনে হয়। ওপেনিং থিম “History Maker” গেয়েছেন ডীন ফুজিওকা, এই মাল্টিলিংগুয়াল মডেল, অভিনেতা ও গায়কের গাওয়া ওপেনিংটা সম্পূর্ণ চমৎকার ঝরঝরে ইংরেজীতে!  সাসুগা…ইকেমেনদের জন্য গাওযা ওপেনিং এর গায়কও একজন ইকেমেন!

গল্পের শুরু কাত্সুকি ইউরি’কে নিয়ে, যার ফিগার স্কেটার হওয়ার স্বপ্নের উদ্যোক্তা পরপর পাঁচ বার গ্র্যান্ড প্রিক্স ফাইনাল জেতা ২৭ বছর বয়সী রাশান স্কেটার ভিক্টর নিকিফরভ্! ছোট থেকে দেখে আসা স্বপ্নের পথ ধরে গ্র্যান্ড প্রিক্সে আসার সুযোগ পেলেও সেটা ধরে রাখতে পারে না কাত্সুকি, প্রচন্ড পরিশ্রমের পরও প্রেশারের কাছে পরাজিত হয় সে, এবং জীবনের প্রথম গ্র্যান্ড প্রিক্স এ শেষ স্থান পাওয়ায় তার ক্যারিয়ার নিয়ে শঙ্কা দেখা দেয়! শেষমেষ সবকিছু ছেড়েছুড়ে, ফিগারের বারোটা বাজিয়ে আপাতত জাপান ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নেয় ও, বাস্তবতার হাত থেকে পালিয়ে!

পাচঁ বছর পর বাড়ী ফিরলেও মন ভালো নেই কাত্সুকি’র, শুয়ে-বসে ডিপ্রেশনে ভুগতে ভুগতে বিরক্ত কাত্সুকি অবশেষে ঘর থেকে বেরোয়, উদ্দেশ্য: ছেলেবেলার স্মৃতিঘর হাসেত্সু আইস ক্যাসেল। ফিগার স্কেটিংয়ের শুরু এখান থেকেই, প্রবেশ করতেই দেখা হয় ছেলেবেলার স্কেটিং সঙ্গীনী ইউ-চান এর সাথে! দুবছরের সিনিয়র মেয়েটি ছিল তার অনুপ্রেরণার আরেক অন্যতম উৎস্য। অফিশিয়াল স্কেটিং থেকে আপাত অবসর নিলেও পঞ্চম গ্র্যান্ড প্রিক্সে ভিক্টরের পারফর্ম করা ডান্স টা আয়ত্ত করেছে ও, ইউ-চান কে দেখাবে বলে। বরফের উপর ভিক্টরের পারফর্ম করা নাচটা পারফর্ম করছে কাত্সুকি, মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে দেখছে ইউ! কি মনে হয়..একটি প্রেমের সূচনা?
মোটেই না, ইউ যখন মুগ্ধ হয়ে কাত্সুকির নাচ দেখছে, তার তিনি বদের হাড্ডি আশেপাশেই কোথাও লুকিয়ে ভিডিও করছে নাচটির!  গোলগাল তিনটে বাচ্চা, জামাই নিশিগোরিও কাছাকাছিই আছে কোথাও!

রিইউনিয়ন ও খুনসুটির পর বাড়ী ফিরে নানান ভাবে ক্লান্ত কাত্সুকি মেসেজ পায় নিশিগোরির কাছ থেকে, খবর হলো: নাচটার ভিডিও অনলাইনে আপলোড করে দিয়েছে তার তিন সুকন্যা! 😀 ব্যাস, আর যায় কই! হাজার হাজার বার রিটুইট হয়ে পৌছে যায় ভিডিওটি স্বয়ং ভিক্টর নিকিফরভের কাছে! তারপর?

তারপর কি হয় জানতে চাইলে দেখতে হবে!  

এনিমেটা সম্বন্ধে প্রথমেই যা বলতে হয়, তা হলো মনোমুগ্ধকর এনিমেশন! এবং যেনতেন ধরণের মনোমুগ্ধকর না, দম বন্ধ করা মনোমুগ্ধকর!  বিশেষ করে ওপেনিংয়ে তাদের ডান্সগুলো দেখলে ঘন্টাখানেক আর অন্য কিছুই দেখতে মন চাইবে না! প্রধান তিনটে ক্যারেকটার রুপোলী চুল ও নীল চোখের ভিক্টর নিকিফরভ, শিনিচির ছোট, হ্যান্ডসাম ভাই কাত্সুকি ইউরি আর সোনালী চুল ও সবুজ চোখের গর্জিয়াস লুকিং পাঙ্ক ইউরি পিলসেতস্কি! ক্যারেক্টার ডিজাইন ছাড়াও লাইট রেফলেকশন, কস্টিউম, ডান্স-কোরিওগ্রাফি আর সং চয়েসে মুন্সিয়ানা দেখিয়েছে মাপ্পা!  নীলাভ সাদা ব্যাকগ্রাউন্ডটা দারুণ ভাল্লাগে!  ভিএ হিসেবে আছেন ভিক্টর, কাতসুকি আর পিলসেতস্কির জন্য যথাক্রমে জুনিচি সুয়াবে, তোনিশি তোয়োনাগা, কোউকি উচিয়ামা।

স্টোরিটা দারুণ আগাচ্ছে, লেটেস্ট তিন নম্বর এপিসোডটা চমৎকার ছিল!  হালকা ফ্যানসার্ভিসটা, এইরকম একটা স্পোর্টের ক্ষেত্রে তেমন বেমানান কিছু লাগে না। খালি অনসেন-সিনগুলোর সময় ভিক্টরের অস্তিত্বের কথা মাথা থেকে বাদ রাখলেই হয়, দৃশ্যত আর কোনো সমস্যা নেই কোথাও….এখনও পর্যন্ত!  আইস-স্কেটিং বিষয়ে শূণ্য জ্ঞানহীন আমি ইউটিউবে মেন’স ফিগার স্কেটিং সার্চ দিয়ে যে ভিডিওই পাই, কমেন্টবক্সে ইউরি অন আইসের জয়জয়কার!

অনগোয়িং এনিমেটার তিনটে এপিসোড এসেছে এই পর্যন্ত, কত এপিসোডের হবে তা এখনও নির্দিষ্ট করা হয়নি ম্যাল এ। ডাবের এনাউন্সমেন্ট দিয়েছে ফানিমেশন, অক্টোবর ২৪, ২০১৬ অর্থাৎ আগামীকাল ইস্টার্ন টাইম অনুযায়ী রাত ১০ টায় প্রথম এপিসোডের ডাব রিলিজ হওয়ার কথা রয়েছে। *-*

মিনি রিভিউ বলেছিলাম, কিন্তু এরচেয়ে বড় রিভিউ দেয়া আদৌ পসিবল কি না, জানি না!  বালিকার উচ্ছাস কে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রইল!

আমার কাছে যে অসাধারণ লেগেছে তা নতুর করে বলা বাহুল্য, এবং আমার কাছে অসাধারণ লেগেছে বলে সবার কাছেই অসাধারণ লাগবে- এরকম হওয়ার কোনো কারণ নেই। কিন্তু অন্তত ওপেনিংটা দেখুন, এবং নিজেরাই বিচার করুন দেখবেন কি দেখবেন না! ওপেনিংটার কথা আলাদা করে বলতেই হয়, ম্যাল অনুযায়ী আমার দেখা এনিমের সংখ্যা মাত্র ১৪১ টা, সেই হিসেবে আহামরি অনেক ওপেনিং দেখা বা শোনা আছে, এটা বলা যায় না। কিন্তু এই ওপেনিংটা আমার জন্য নতুন অভিজ্ঞতা ছিল। বেস্ট বলে না, ওয়ান অফ আ কাইন্ড বলে। এরকম অভিভূত করা একটা ওপেনিং সচরাচর চোখে পড়েনা বলেই আমার মনে হয়েছে!  জাপানীজ একজন লোক এরকম শুদ্ধ ইংরেজী উচ্চারণ করতে পারে, না শুনলে বিশ্বাস করাই মুশকিল! এরইমধ্যে এক মিলিয়নের বেশী ভিউ পড়েছে ওপেনিং ভিডিওটিতে, চেক করে আসতে পারেন নিচের লিঙ্কটি থেকে:

 

ভালো এনিমেটা ভালোভাবে শেষ হলে বছরের অন্যতম সেরা এনিমেগুলোর একটি হলেও হতে পারে!  সবাইকেই দেখার অনুরোধ থাকবে!

সকল তথ্যসূত্র: উইকিপিডিয়া এবং মাইএনিমেলিস্ট।

yuri-on-ice-2

Re:Zero kara Hajimeru Isekai Seikatsu [রিভিউ/রিঅ্যাকশন] — Tahsin Faruque Aninda

Re:Zero kara Hajimeru Isekai Seikatsu
Tag: Psychological, Thriller, Groundhog Loop

2-1

Re:Zero, or more like Rem = Zero :))

Yeah I had to do it, sorry for that…

এই বছরের অন্যতম হাইপ পাওয়া সিরিজ, এবং সব জনপ্রিয় বা মেইনস্ট্রিম সিরিজের মতই একগাদা সাপোর্টারের পাশাপাশি একগাদা হেটারও জন্মেছে এটার। এটাই আসলে এই যুগের আনিমের ভাগ্যে জুটবার মত সবচাইতে স্বাভাবিক ঘটনা, হয় সিরিজটা মোটামুটি, নাইলে বেশিইইই ভাল+খারাপ, আর কিছু নাই।
এত সব আলোচনা, সমালোচনার ভীরে পক্ষে-বিপক্ষের কথা অনেক শুনা হয়ে গিয়েছে হয়তো, তাই আমি বরং পুরান কথা আবার আওড়ানোর বদলে নিরপেক্ষভাবে সিরিজটার ভাল-খারাপ কিংবা সিম্পল-স্পেশাল জিনিসগুলি নিয়ে আমার আলোচনা পোস্ট শুরু করি।

সিরিজটা নিয়ে অনেক অনেক আগেই যখন ঘোষণা আসে, তখনই এর সিনোপসিস পড়ে বুঝতে পারি সিরিজটা আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকার মত একটা কিছু হবে, হয় সেটা ভাল কারণে না হয় খারাপ কারণে। গল্পের নায়ক কোন এক কারণে হঠাত বাস্তব জগত থেকে এক ফ্যান্টাসি জগতে চলে আসে, যা কিনা এখনকার যুগের লাইট নোভেল আর আনিমের মধ্যে সবচাইতে কমন থিম। তবে গল্পের মূল আকর্ষণ হল এই যে, নায়কের মৃত্যু হয়ে থাকলে অতীতের কোন এক সময়ে ফেরত চলে যাবে সে। অর্থাৎ গ্রাউন্ডহগ লুপ, যার ট্রিগের হয় নায়কের মৃত্যুর মাধ্যমে – অনেকটা গেমের মত, যেখানি আপনি খেলার সময়ে মৃত্যুবরণ করলে এরপর আগের কোন এক সেইভ পয়েন্ট থেকে কন্টিনিউ করতে পারবেন। তবে এরকম থিম নিয়ে গল্প হলেও এটা আবার এই যুগের আরেক জনপ্রিয় জনরা গেম + ফ্যান্টাসির মধ্যে পরে না। আর এই আইডিয়াটাই গল্পটাকে জনপ্রিয় করার জন্যে একটা বড় উপাদান!

প্রথম পর্বটাই double episode করার মাধ্যমে বুঝা যায়, প্রস্তুতকারকেরা সিরিজটাকে একদম ঠিকমত দর্শকদের কাছে তুলে ধরার যথাসম্ভব চেষ্টা করেছে। White Fox স্টুডিওকে কৃতিত্ব দিতে হবে সিরিজটাকে চমৎকারভাবে তৈরি করবার জন্যে। অ্যানিমেশন, মিউজিক, ক্যারেক্টার আর্ট — সবকিছুতেই নিজেদের সেরাটা ঢেলে দিয়েছে তারা। অতএব, প্রোডাকশনের দিক থেকে বিন্দুমাত্র ঘাটতি নেই।

এবার আসি গল্পের কথায়। শুরুর দিকে দর্শকদের কাছে এটাকে “আরেকটি টিপিকাল ফ্যান্টাসি আনিমে” এরকম একটা আইডিয়া দিয়েই শুরু করেছে গল্পটি, তবে তার প্রধাণ কারণ যেন কয়েক পর্বের মধ্যেই সেই ভুল ভাংতে পারে। Travel to Fantasy World এই আইডিয়ার গল্পগুলার একটা Deconstruction সিরিজ হিসাবে Re:Zero বেশ ভাল ভূমিকা রেখেছে। এরকম গল্পে নায়ক যেমন সেরাদের সেরা, অদ্বিতীয় অপরাজেয়, এরকম ধারণা থেকে শুরুতেই বের হয়ে আসে যখন দেখা যায় গল্পের নায়কের প্রায় কোন ক্ষমতাই নাই কোন কিছু নিয়ে, একটা মাত্র জিনিস বাদে। তবে সেই একটা ক্ষমতাই অবশ্য সবচাইতে বড় Deus Ex Machina, আর তা হল Return by Death. Basically, নায়কের মৃত্যু হলে আগের একটা জায়গায় ফেরত আসবে, আর নায়কের মৃত্যুর আগের সব ঘটনা শুধু তারই মনে থাকবে, অন্য কেউ কিছু জানবে না। এই ক্ষমতাটাই বিশাল বড় একটা ব্যাপার হতে পারে, যদি সেটা ভালমত ব্যাবহার করতে পারা যায়। আর এইটা নিয়ে আমার প্রথম আপত্তিঃ শুধুমাত্র plot convenience-এর জন্যে আমরা দেখতে পাই “কী করবো, কেমন করবো” এরকম ধারণা নিয়ে চলা নায়ক বারবার মৃত্যুর পর যেবার বেঁচে থেকে পুরা একটা অধ্যায় শেষ করতে পারবে, সেই সময়ে অকল্পনীয়ভাবে মারাত্মক কঠিন সব সমস্যার সমাধান অনেক ভাল ভাল সমাধান দিতে পারে। অবশ্য গল্পের শেষের দিকে গিয়ে এই পরিস্থিতিতে একটু লাগাম পরানো হয়ে থাকে, তাই এইটুক ব্যাপার গল্পের শেষ পর্যন্ত আর বড় issue হয়ে উঠে নাই।

এখানে একটা জিনিস বলে রাখতে চাই, কোন সমস্যার সমাধান না হলে মৃত্যুর মাধ্যমে আবার পিছে ফিরে গিয়ে সেটা ঠিক করে দেওয়া যায় – এই ব্যাপারটাকে ছেলেখেলা হিসাবে দেখানো হয় নাই। মৃত্যু জিনিসটা অনেক কঠিন আর painful, আর সেটা নায়কের সাথে সাথে দর্শকও অনেক ভালভাবে বুঝে উঠতে পারবে। তাই Return by Death এই আইডিয়াটাকে অহেতুক স্প্যামিং করবে এরকম ভেবে থাকলে চিন্তামুক্ত হতে পারবেন যে যতটুকু দেখানো হয়, সেটা বেশ “বাস্তবসম্মত”ভাবেই দেখানো হয় [অর্থাৎ যদি বাস্তব হত আর কি! LOL KEK LOL]। আর মৃত্যুর ব্যাপারগুলি সেন্সরিং করে নাই, gore অনেক আছে, এইটার জন্যে White Foxকে আবার ধন্যবাদ দিতে হয়।

আনিমেটির এই সিজনে ৩টি আর্ক দেখানো হয়। গল্পের পেসিং শুরুর দিকে ভালমত আগাতে থাকলেও ২য় আর্কে এসে একটু ঝিমিয়ে পরে। অবশ্য ৩য় আর্ক থেকে সেটা আবার ভালভাবে আগাতে শুরু করে। আর প্রথম ২ আর্ক মোটামুটি হলেও ৩য় আর্ক বেশ চমৎকার হয়ে উঠে, এখানে দেখানো psychological aspect অনেক বেশি ভাল লেগেছে।

চরিত্রদের ব্যাপারে আসি এবার। প্রথমেই বলে রাখি, নায়ক Subaru বেশ বিরক্তিকর, এবং এটা আসলে গল্পের জন্যে ভাল মানিয়েছে। কারণ বিরক্তিকর একটা চরিত্র হবার কারণেই তার ক্যারেক্টার ডেভপমেন্ট খুব ভালমত হতে পেরেছে। বারবার মৃত্যুর ভয়াবহতা একটা irritating brat-কে কিভাবে শারীরিক আর মানসিকভাবে একের পর এক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে নিয়ে যেতে পারে, সেটা গল্পের ৩য় আর্কে গিয়ে সুন্দরভাবে তুলে ধরেছে। তবে সিরিজে সবচাইতে ভাল ক্যারেক্টার ডেভলপমেন্ট যদি কারও হয়ে থাকে, সেটা এই মুহুর্তে আনিমে জগতের সবচাইতে জনপ্রিয় ক্যারেক্টার Rem-এর। Also, Rem is pretty much the MVP of this series. গল্পের আরেক প্রধাণ চরিত্র Emiliya-এর ক্যারেক্টার ডেভলপমেন্ট আরেকটু ভাল হতে পারতো। তার স্ক্রিনটাইম আরও কিছু বেশি হওয়া উচিত ছিল। বাকি চরিত্রদের উপস্থিতিও ভালভাবেই তুলে ধরা হয়েছে।

বেশ ভাল ভাল অনেকগুলি দিকের কথা তুলে ধরলাম, এবার তাহলে সিরিজটির কিছু short-coming নিয়ে কথা বলা যাক। ২৫টা পর্ব দেখার পর একটা প্রশ্নই মনে জাগবে, গল্পের আসল উদ্দেশ্য বা লক্ষ্য কী? এরই মধ্যে অনেক অনেক নিউজের মাধ্যমে সিরিজটা না দেখা আনিমে দর্শকেরাও জেনে গিয়েছেন যে কাহিনী প্রথম সিজনে যেখানে শেষ হয়েছে তারপর গল্পে আরও অনেক অনেক কিছু আছে। প্রথম সিজনটা পুরা গল্পের অর্ধেকও না। অনেকে আবার একটু বাড়াবাড়ি করে বলে বসবে এটা প্রোলগ।
কথা হল, এটা প্রোলগ না। হ্যাঁ, গল্পের ছোট্ট একটা অংশ মাত্র, কিন্তু প্রোলগ না। আর প্রোলগ হোক বা না হোক, যত বিশাল বিশাল গল্প আছে সেগুলির দিকে তাকালেও আপনি দেখতে পারবেন যে গল্পের মধ্যে অল্প কিছুদূর যাবার পরেই গল্পের শেষ পরিণতি বা মেইন ফোকাস কী তা জেনে গিয়েছেন। এরপর গল্প কিভাবে সেই লক্ষ্যের দিকে আগায় সেটা দেখার ব্যাপার। খুব বেশি খুঁজবার দরকার নাই, বিগ ৩-এর দিকেই তাকান, দেখবেন যে নারুতোর শুরুর দিকেই আমরা জেনে গিয়েছি গল্পের লক্ষ্য হল নারুতোর হোকাগে হওয়ার স্বপ্নপূরণ, ওয়ান পিসে লুফির পাইরেট কিং হওয়া, কিংবা ব্লিচের জন্যে ইচিগোর দলের লক্ষ্য আইজেনকে থামানো। রিঃজিরো এত বড় গল্প না, তারপরেও ২৫ পর্ব দেখে উঠার পরেও বুঝতে পারবেন না আসলে গল্পের ফোকাসটা কোথায়। সুবারুর প্রধাণ লক্ষ্য কী শুধুমাত্র নায়িকার মন জয় করা, নাকি ফ্যান্টাসি দুনিয়ায় নিজেকে অদ্বিতীয় এক “খেলোয়াড়” হিসাবে তুলে ধরা, নাকি নিজের বাস্তব জগতে ফিরে যাওয়া… এরকম অনেক অনেক প্রশ্ন জেগে উঠবে। হ্যাঁ, প্রথম সিজন বলে এখনই অনেক উত্তর অজানা থেকে যাবে এটাই স্বাভাবিক, পরের কোন সিজন [যদি বের হয়] আমাদের অনেক প্রশ্নের উত্তর দিবে, তবে গল্পের আসল উদ্দেশ্য কী এটা বুঝে উঠতে না পারা একটা বড় হতাশার কারণ হতে পারে।

আরেকটা বড় issue হল, সুবারু প্রথম পর্বের শুরুর কিছুক্ষণের মধ্যেই বাস্তব জগত থেকে হঠাত করে ফ্যান্টাসি জগতে চলে আসলো, এরপর তার রিএকশন দেখে অনেক বেশি অবাক হতে হয়। এক দুনিয়া থেকে তুলে এনে আরেক দুনিয়ায় ফেলে দেবার পর নতুন জগতে কেন আসলাম, পুরান জগতের কী হল, হঠাত এরকম উলটাপালটা হয়ে গেল কেন সবকিছু – এরকম মনে হওয়া যেখানে স্বাভাবিক, সেখানে সুবারু যেন ব্যাপারটাকে ডালভাত গিলে ফেলার মতই স্বাভাবিকভাবে নেয়; বা জাপানিজ টার্ম অনুযায়ী, র‍্যামেন ঢকঢক করে গিলে ফেলার মত মেনে নেয় (যেটা কল্পনা করতে আপনার সুবিধা হয়)। আর গল্পের অনেকদূর পর্যন্ত গিয়েও নায়কের এইটা নিয়ে আর কোন ভাবনা করতে না দেখাটাও তাই একটু হতাশাজনক লাগে।

প্রথম সিজনের গল্পের এন্ডিং নিয়ে অনেকের অনেক মত থাকতে পারে, তবে আমার মতে, একটা ভাল এন্ডিং হয়েছে। “প্রথম” সিজন, বা ইনকমপ্লিট গল্প — এসব হয়ে থাকার পরেও ক্লিফহ্যাঙ্গার না টেনে বরং একটা ভাল সিজন ফিনালি দিতে পেরেছে। গল্প এখানেই পুরাপুরি শেষ করে দিলেও খুব বেশি চোখে লাগবে না হয়তো।

মিউজিক আর গানের কথা আলাদাভাবে বলি আবার। OST এর ব্যবহার যথোপযুক্ত হয়েছে, ED 1, OP 2 এই দুইটা এত বেশি ভাল হয়েছে যে বছরের সেরা গানের তালিকায় উপরের দিকে থাকবে এ দুটি। MYTH & ROID এর জন্যে ২০১৬ সালটা Hit আর Hit দিয়েই ভরা!

এখন একটা কথা বলে রাখি, মেইন্সট্রিম বা অতিরিক্ত জনপ্রিয় হলেই সিরিজটার প্রতি বিরক্তি পোষণ না করার আহ্বান জানাই। মেইন্সট্রিম জিনিসকে ঘৃণা করাও কিন্তু অনেক বেশি মেইন্সট্রিম হয়ে গিয়েছে এখন। এটা সত্যি, যেকোন সিরিজের ফ্যানবেজের বাড়াবাড়ি আচরণের কারণে অন্যান্য স্বাভাবিক দর্শকের জন্যে সেটা বিরক্তিকর লাগতে পারে, তবে সেক্ষেত্রে সেগুলি ইগনর করতে পারেন। কোনরকমের বদ্ধ ধারণা নিয়ে দেখতে না বসে বরং রিলাক্স মন নিয়ে নিজে সিরিজটি দেখুন, তাহলে অন্যদের দেওয়া মত বারবার না আওড়িয়ে বরং নিজেই নিজের মত দিতে পারবেন। ভাল লাগলো না খারাপ, নাকি মিডিওকর, নিজেই সেটা বিচার করতে পারবেন।

সিরিজটি নিয়ে আমার মতামত শেষ করি দুটি প্রশ্নের উত্তরের মাধ্যমেঃ

> Re:Zero কী Masterpiece?
– না। Masterpiece হবার জন্যে আরও অনেক কিছু দরকার। সবার আগে দরকার গল্পটা শেষ হবার। ইনকমপ্লিট গল্পকে মাস্টারপিস দাবী করার মানে নেই। গল্পের মাঝপথে অনেক কিছুই ভাল লাগতে পারে, শেষে গিয়ে ভরাডুবি হলে একদম মত উলটে যেতে পারে। তাই আগে নতুন সিজন আসুক, গল্প শেষ হোক, তখন এই প্রশ্ন তুলবার সত্যিকারের সময়, এখন নয়।
আর গল্পের লেখক আনিমের এই জনপ্রিয়তা দেখে বলেছেন যে যথাসম্ভব খাটুনি দিয়ে যাচ্ছেন, আর আশা করছেন যে সামনের চার বছরের মধ্যে গল্পটি শেষ হবে। চার বছর বেশি সময় না কিন্তু; Shingeki no Kyojin প্রথম সিজন শেষ হয়ে যাবার চার বছর পর দ্বিতীয় সিজন আসতে যাচ্ছে সামনের বছর। Re:Zero-এর ক্ষেত্রেও দেখতে দেখতেই সময় চলে যাবে দ্বিতীয় সিজন আসার আগে।

> মাস্টারপিস না হলে Re:Zero কি তাহলে ভাল হবে?
– শুধু কি সেরাদের সেরা হলেই একটা জিনিস দেখার উপযুক্ত হয়? কোন সিরিজ ভাল হবার জন্যে সেটাকে তো সর্বকালের সেরা হবার দরকার নেই। সব মিলিয়ে ভাল একটা সিরিজ হলেই সেটা অনেক উপভোগ্য হয়ে উঠবে। আর কোন সিরিজ যদি মেইন্সট্রিম হয়ে উঠে, নিশ্চয়ই সেটার মধ্যে এমন কিছু আছে যা “মেইন্সট্রিম” বা “বেশিরভাগ দর্শক”ই উপভোগ করতে পেরেছে, তাই না!?

অতএব সিরিজটি দেখুন। এই বছরের অন্যতম সেরা আর বিনোদনপূর্ণ সিরিজ। বছরের ১ নম্বর স্থান দখল করবে কি করবে না সেটা একেকজনের একেক মত, তবে সব কথার শেষ হল, আমরা মুভি, সিরিজ, আনিমে – এগুলি দেখি বিনোদন পাবার জন্যে। আর বিনোদনের জন্যে এই সিরিজটি অনেক ভাল একটি চয়েস হয়ে উঠবে নিঃসন্দেহে।

Short Review- 91 Days; লিখেছেন ইশমাম আনিকা

009cd1af841aa7a8a5c5938af483bf6d

ব্যস্ততার কারণে পোস্ট লেখা হয়ে ওঠে না আজকাল, তবে সিজন শেষে এই একটা অ্যানিমে নিয়ে পোস্ট দেয়া আসে।

৯১ দিন। নামটা দেখে কিছুই গেস করা যায় না। পিভি দেখেও কিছুই বুঝিনি (যদিও পিভি এবং ওপেনিং গানটাতে পুরো অ্যানিমের কাহিনীই বলে দিয়েছে ধরতে গেলে)। দেখা শুরু করার পর বুঝলাম যে এটা একটা প্রতিশোধ নেয়ার কাহিনী। পুরনো কনসেপ্ট, ছোটবেলায় এক পরিবারের একটা বাচ্চাকে বাদে বাকি সবাইকে খুন করে রেখে যায় দুর্বৃত্তরা, এরপর সেই বাচ্চা বড় হয়ে প্রতিশোধ নেয়ার আশায় ঘুরতে থাকে। আসলেও তাই। কোন নতুনত্ব নেই প্লটে।

কিন্তু আপনি যদি ভেবে থাকেন টিপিকাল কোন, “ভানেত্তি!! তুই আমার পরিবারকে শেষ করে দিয়েছিস, আমি তোকে শেষ করব!!” টাইপ কোন কাহিনী দেখবেন, এখানেই করছেন সবচেয়ে বড় ভুলটা। আমি একটা টিভি সিরিজ খুব পছন্দ করি, সিরিজের নামই “রিভেঞ্জ”। সেখানেও মেয়েটা তার বাবার সাথে হওয়া অন্যায়ের প্রতিশোধ নিতে শত্রুদের সাথে মিশে এক হয়ে যায়। এত মানু্ষের সাথে তার চলাফেরা, কিন্তু দিনশেষে তার যে একাকীত্বটা, যে হাহাকারটা প্রতিনিয়ত তার মনে বেজে চলে, সেটা অনুভব করে প্রচণ্ড কষ্ট লেগেছিল। অনেকদিন পর সেই অনুভূতিটা আবার ফিরে পেলাম এই অ্যানিমে দেখে। হাসিমুখে নিজের পরিবারের খুনীদের সাথে কথা বলা, বন্ধুর মত আচরণ করা, এর চেয়ে বড় শাস্তি একটা মানু্ষের জীবনে আর কি হতে পারে! অ্যাঞ্জেলো লাগুসাকে প্রতিবার দেখে তাই খারাপ লেগেছে। আর, মানুষের মন তো! অভিনয় কি আসলেই অভিনয়ে আটকে থাকে? অভিনয় করতে করতে সেটা কি কিছুটা হলেও সত্যি হয়ে যায় না?

স্টুডিও শুকার অরিজিনাল অ্যানিমে এটি, স্টুডিওর অন্য সব কাজ দেখলাম ব্রেইনস বেইজের ক্যানসেল করে দেয়া ভাল ভাল টাইটেলের রিজ্যুম, যেমন নাতসুমে বা দুরারারা। তাদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ, আমার অতিরিক্ত পছন্দের দুটি অ্যানিমের সিক্যুয়াল বের করার জন্য, এবং এই অসাধারণ অরিজিনাল অ্যানিমেটি উপহার দেয়ার জন্য। সবদিক থেকে অ্যানিমেটা পারফেক্ট। কাহিনী, এক্সিকিউশন, যেখানে যে জিনিসটা যেভাবে দেয়া দরকার, ঠিক সেভাবে দিয়েছে। ডার্ক সেটিং, চমৎকার ওএসটি, পুরানো আমলের সাথে মানানসই আর্টওয়ার্ক- সবমিলিয়ে অসাধারণ। আর শেষের চার-পাঁচটা এপিসোড আমার দেখা সেরা এপিসোড গুলোর মাঝে উপরের দিকে থাকবে, এভাবে অ্যানিমে ক্যারেক্টারের প্রতি অ্যাটাচমেন্ট আমার ক্ষেত্রে অন্তত অনেক কম হয়।

যারা মাফিয়া বা ডার্ক থিমের অ্যানিমে পছন্দ করেন, তাদের তো ভাল লাগবেই, তবে আমার মনে হয় এটা সব মানুষের ভাল লাগার মত একটা অ্যানিমে। ১২ পর্বে এরচেয়ে ভালভাবে আর কিছু মনে হয় না দেখানো সম্ভব।

Movie Time With Yami – Nerawareta Gakuen (টিং টং মুভি টাইম)

tumblr_np3536OnP71tdyyjco1_500

আজ সকালে দুই ঘন্টা ক্লাস সাসপেন্ড ছিল (যা ইতিহাসের পাতায় ঠাঁই পাওয়ার মত বিরল ঘটনা আমাদের জন্য), ভাবলাম দুই ঘন্টা লেন্থের কোন মুভি দেখে ফেলি। ফোনের গ্যালারি ঘেটে পেলাম নেরাওয়ারেতা গাকুয়েন, ১ ঘন্টা ৪৬ মিনিটের অ্যানিমে মুভি। তো শুরু করলাম দেখা।

শুরুতেই মার্কিং দিয়ে দেই, বাকি পোস্টে কী আছে হিন্ট পেয়ে যাবেন।
ভিজ্যুয়াল- ৯/১০
ওএসটি- ৮/১০
ক্যারেক্টার ডিজাইন- ৯/১০
ভয়েস অ্যাক্টিং- ১০/১০
স্টোরি- ৩/১০
ক্যারেক্টার- ০/১০

গ্রাফিক্স /ভিজ্যুয়াল/আর্টওয়ার্ক, জিনিসটাকে যাই বলা হোক না কেন, মোদ্দা কথা হল অসম্ভব সুন্দর। মাকোতো শিনকাই ফিল্ম ভেবেছিলাম শুরুতে, পরে দেখি সেটা নয়। সাকুরার গাছ ন্যাড়া করে ঢেলে ঢেলে পাঁপড়ি ছেড়ে দিয়েছে কিছুক্ষণ পরপর, স্কুল, বাড়ি, সমুদ্র বা তাদের আজগুবি জায়গা গুলা, সব দেখে চোখে ধাঁধাঁ লেগে গেছে। ক্যারেক্টার ডিজাইন খুবই সুন্দর, ছেলেগুলো হ্যান্ডসাম, মেয়েগুলো কিউট। ব্যাকগ্রাউন্ডে যাই বাজছিল, কর্ণকুহরে ভালই লেগেছে।

গেল প্রশংসা। এখানেই শেষ। আর কিছুই নাই প্রশংসা করার মত। এবার বিরক্তির পালা শুরু।

আমি অ্যানিমে মুভির ব্যাপারে মোটামুটি সর্বগ্রাসী। ছাইপাঁশ যাই হোক গিলে ফেলি। তাই এই মোটামুটি ছাইপাঁশ লেভেলের মুভিটাও গিললাম। আই মিন সিরিয়াসলি?!! কাহিনীটা আসলে কী ছিল? আদৌ কি কোন কাহিনী ছিল? সারাক্ষণ তো দেখলাম “কেতাই কেতাই” করেই সময় পার করে দিল। তাও যদি কারণটা বলত। আগের বছর কোন এক ঘটনা ঘটেছিল স্কুলে, সেজন্য স্কুলে ফোন আনা নিষিদ্ধ। ঠিক আছে, কোন সমস্যা নেই, আমাদের যুগে বাই ডিফল্ট এটাই নিয়ম ছিল। কথা হচ্ছে যে কাহিনীটা কী হয়েছিল যে এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হল? পুরো মুভিতে আমি এটা জানার জন্যই বসে ছিলাম; আফসোস, কারণ বলার ধার দিয়েও গেল না। কোন কারণে সো কল্ড ফিউচার আর্থলিং এলিয়েনদের টেলিপ্যাথিতে কিছু একটা সমস্যা হয়, সেজন্য তারা এসে একটা স্কুলে সেলফোন ব্যান করতে লেগে গেল, হাউ প্যাথেটিক ক্যান ইউ গেট?

অ্যানোয়িং ক্যারেক্টার লাইফে কম দেখিনি, কিন্তু একটা মাত্র ১ ঘন্টা ৪৬ মিনিটের মুভির প্রতিটা ক্যারেক্টারকে এত বেশি বিরক্তিকর লাগবে, কোনদিন ভাবিনি। নাতসুকি মেয়েটার প্রব্লেমটা কী?!!
স্টেটমেন্ট ১- জাপানী ছেলেরা হয় বেশি ভাল।
স্টেটমেন্ট ২- না হলে জাপানী মেয়েরা বেশি শয়তান।
স্টেটমেন্ট ৩- ওভাররেটেড সুন্দেরে একটা দেয়া লাগবে তাই দিয়ে রেখেছে স্টোরিতে।

আই মিন, এই মেয়ে তার ছোটবেলার “বন্ধু” সেকিকে যেভাবে জ্বালিয়ে গেছে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত, এরকম প্রতিবেশী থাকলে আমি কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে বাড়ি ঘিরে রাখতাম। ছেলেটা আবার সেগুলা সহ্য করে মেয়েটাকেই স্যরি বলে, ঢঙের শেষ নাই।

আর শেষ পর্যন্ত কাহিনী কী দাঁড়াল? বাবা তোমরা তোমাদের মাদার মুন ছেড়ে মাদার আর্থের কেতাই ব্যান কইরা কী হাসিল করলা? এ বিগ ফ্যাট জিরো -_-

যাই হোক, আমার মেজাজ খারাপ হয়েছে, তাই একটু র‍্যান্টিং করলাম, এমনও হতে পারে যে আমি আসলে কাহিনী বুঝিনি তাই না বুঝে কথা বলছি, তবে আমার মনে হয়না এই কাহিনীর আগামাথা খুঁজে পাওয়া সম্ভব। কেউ পেয়ে থাকলে কমেন্ট সেকশনে আমার কনফিউশন গুলো ক্লিয়ার করে দেবেন অনুগ্রহ করে।

Koutetsujou no Kabaneri [রিঅ্যাকশন পোস্ট] — Tahsin Faruque Aninda

toty 1

Koutetsujou no Kabaneri (Kabaneri of the Iron Fortress)
Genres: Action, Drama, Fantasy, Horror
Episodes: 12
Source: Original
Studios: Wit Studio

“SnK Clone” নামে পরিচিত এই সিরিজ গত সিজনের শুরুর দিকে বেশ ভাল হাইপ তৈরি করেছিল। এরপর শেষের দিকে এসে কেমন যেন এর আর খোঁজ পাওয়া গেল না তেমন। সব হাইপ পরে গিয়ে শুরু হয়েছে একের পর এক সমালোচনা। অবশ্য ফ্যানবেজও ভালই তৈরি হয়েছে এটার। After all, যেই উপকরণ নিয়ে SnK তৈরি হয়েছিল সেই একই উপকরণ নিয়ে Kabaneri তৈরি হল। প্রশ্ন থাকে, কেমন সফল/ব্যর্থ এই সিরিজ?

প্রোডাকশন টিমে যেমন একগাদা পরিচিত নাম [ডিরেক্টর তেতসুরৌ আরাকি, প্রোডিউসার জর্জ ওয়াদা, মিউজিক কম্পোজার হিরোয়ুকি সাওয়ানো, অ্যানিমেশন স্টুডিও হিসাবে উইট স্টুডিও ইত্যাদি], তেমনই ভাবে গল্পের সাধারণ থিমটাও প্রায় একই রকমের। মানবজাতি হুমকির মুখে, মানবখেকোদের হাত থেকে রক্ষার জন্যে বিশাল দেওয়াল-ঘেরা জায়গার মধ্যে বসবাস করছে তারা, এরই মাঝে গল্পের প্রথম পর্বেই তাদের শহরে মানবখেকোদের আক্রমণ, মৃত্যু হয় শত শত মানুষের। মানবখেকোদের হাতে পরিবার হারানো রক্তগরম নায়ক তাদের নির্মূল করার শপথ নেয়, ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে নিজেই হয়ে উঠে মানুষ আর মানবখেকোদের হাইব্রিড, অতএব প্রচন্ড শক্তিশালী হয়ে উঠে। সাথে থাকে ওভারপাওয়ার্ড নায়িকা, যে একাই সব শত্রুদের কাত করে দিতে পারে। ও হ্যাঁ, পুরা গল্পটা হয় এক স্টিম্পাঙ্ক সেটিং-এ।

এত কিছু একই রকম মনে হলেও শেষ পর্যন্ত গল্পটা SnK থেকে অনেক আলাদা হয়ে যায়, বিশেষ করে প্রথম কয়েক পর্ব পরেই গল্পের ধরণ অন্যরকম হয়ে যায়। সমস্যা হল, SnK এর ছায়া থেকে বের হয়ে আসার চেষ্টা করতে না করতেই বাগিয়ে নেয় এই ধরণের গল্পের হাজারখানেক ক্লিশে!

আনিমেটার কিছু ভাল দিক উল্লেখ করছি এখানে:

+ ফাইট কোরিওগ্রাফি
তেতসুরৌ আরাকির সিরিজের ফাইট কোরিওগ্রাফিগুলি অসম্ভব সুন্দর হয় দেখতে। প্রত্যেকটা মারামারির দৃশ্য উপভোগ…

+ মিউজিক
হিরোইউকি সাওয়ানোর মিউজিক, নতুন করে এখানে বলার কিছু নাই। প্রত্যেকটা ফাইটিং মুহুর্তকে ইমোশনাল বানানো তার পক্ষে আসলেই সহজ কাজ।

+ ভিজুয়াল
উইট স্টুডিওর একের পর এক সফল সিরিজ তৈরির কারণে তাদের বাজেট এখন বেশ ভালই হয়। তাই CG ট্রেন সিরিজের একটা বড় ব্যাপার হয়ে দাঁড়ালেও সেটা আলাদাভাবে চোখে পরে না। ব্যাকগ্রাউন্ড আর্ট আর অ্যানিমেশন চমৎকার মানের।

+ নায়কের পাওয়ারাপ / পরের লেভেলে যাওয়া
ক্লিশে ব্যাপার, এরকম একটা কিছু এই ধরণের গল্পে হয় এটা জানা থাকার পরেও আগ্রহ থাকে দেখার জন্যে। আর সেই মুহুর্তটা খুবই ভাল লেগেছে আসল…

এবার থাকছে সিরিজটা নিয়ে অপছন্দের ব্যাপারগুলি:

— নির্বোধ জনগণ, নির্বোধ সব ডিসিশন
ব্যাপারটা দেখে এমন মনে হয়েছে যে, শুধু গল্পে অতিনাটকীয়তা আনতে কিংবা SnK ভাব ধরে রেখে massacre দেখানো দরকার বলেই যেন জনগণের নির্বোধ সব ডিসিশন নিয়ে যাওয়া একের পর এক। সিরিজে যত মানুষ মরতে দেখিয়েছে, তার ৮০% হয়েছে সেই জগতের মানুষের IQ লেভেল ৫০-এর নিচে থাকার কারণে।

— ইমোশনাল ব্যাপার আনার ক্লিশে চেষ্টা, এবং একটুও মন খারাপ করতে না পারা
Shingeki no Kyojin-এর একটা বড় দিক ছিল সেখানে চেনা জানা বা অজ্ঞাত সব চরিত্রের মৃত্যুও মন খারাপ করে দিয়ে যেত। এর কারণ ছিল ভাল ক্যারেক্টার বিল্ডাপ, যা এমনকি দুই তিন দৃশ্যে উপস্থিত থাকার পরেও তাদের মৃত্যু কষ্ট দিয়ে যেত। এখানে একইরকমের কাজ করার চেষ্টা হয়েছে, এবং বেশ বাজেভাবে ব্যর্থ হয়েছে।

— মানবজাতিকে ধ্বংস করে ফেলার মত থ্রেট, যেটা আসলে তেমন কোন থ্রেটই হয় নাই
SnKএর একটা বড় ব্যাপার ছিল যে টাইটানরা আসলেই ভীতিকর ছিল এই অর্থে যে, সেনাবাহিনীর অনেকদিনের ট্রেইন্ড কোন সেনাও যেকোন সময়ে টাইটানদের হাতে মারা পরতে পারে। ঐ দুনিয়ায় টাইটানদের সাথে বেঁচে থাকতে হলে হয় খুব বেশি ভাল ভাগ্য থাকা দরকার, নাইলে নামের শেষে Ackerman থাকতে হবে। আর এই Kabane-এর দুনিয়াতে একমাত্র স্বাভাবিক জনগণ বাদে সবাই একেকজন ২০-৩০টা করে কাবানে মেরে ফেলা কোন ব্যাপারই না। ট্রেইন্ড সোলজার হলে তো কথাই নাই! একমাত্র বেকুব হবার কারণেই মানবজাতি এই দুনিয়ায় ধ্বংসের মুখে।

— মেইন ভিলেইন
এরকম uninspiring ভিলেইন অনেক বছর দেখি নাই।

— Asspull
এগুলার কথা আর ডিটেইলসে বলতে ইচ্ছা করছে না। ভাল লাগে নাই সেই অংশগুলি।

— গল্পের প্রয়োজন, তাই সবাই বেকুব
আবারও এই টপিক আনলাম। কেন? — প্রথম পর্বের শুরুর আর শেষের দিকের দুইটা দৃশ্য [নিচের ছবি লক্ষ্য করুন] খেয়াল করলেই বুঝবেন কেন বলছি।

Toty
যদি বুঝে উঠতে না পারেন, তাহলে বলে রাখি:
সকালে যেই সময়ে দৃষ্টিসীমায় সমস্যা হয় না, তখন বাইরে থেকে আসা ট্রেইন ঢুকবার আগে ট্রেইন থামিয়ে দেওয়া হয়, সিকিউরিটির জন্যে চেক করা হয় কেউ ইনফেক্টেড কিনা। আর পর্বের শেষের দিকে এসে রাত্রবেলায় কী হল? — সবাইকে মারা দরকার, তাই ট্রেইন দেখেই আগে থেকে ব্রিজ নামিয়ে দেওয়া হয়। কই গেল সেই চেকিং? কই গেল সিকিউরিটির কারণে ট্রেইন থামিয়ে তল্লাশি করা??
এটা হল খুবই লো-কোয়ালিটির গল্প লিখন।

Bittersweet এন্ডিং এই ভীতিকর দুনিয়ার গল্পে স্বস্তির ইতি টেনেছে বলে কিছুটা ভাল লেগেছে। কিন্তু সব মিলিয়ে গল্পের কিছুদূর যাবার পরেই যে আগ্রহের পারদ নিচের দিকে নামতে শুরু করে, সেটা আর উপরে তুলে আনতে পারে নাই।

তবে এটা যে কাউকে দেখতে বারণ করছি তা না। Honestly speaking, SnK ripoff কিনা তাতে যায় আসে না আমার, জিনিস ভাল হলে সবই ভাল। সমস্যা হচ্ছে, জিনিসটা তেমন ভাল হয় নাই। TOTY না হলেও, AOTY হবার প্রশ্নই উঠে না।

তবে পুরাটাই আমার নিজস্ব মতামত। অনেকের কাছে এটা হয়তো এই বছরের সেরা আনিমে। তাই নিজে দেখুন কিছুদূর, ভাল লাগলে কন্টিনিউ করতে থাকেন।

Joker Game [রিঅ্যাকশন পোস্ট] — Tahsin Faruque Aninda

joker game 1

Joker Game
Genres: Drama, Historical, Military, Seinen
Episode: 12
Source: Novel
Studios: Production I.G

গত সিজনে যেসব আনিমে দেখার প্ল্যান ছিল, তার মধ্যে সবচাইতে বেশি হাইপওয়ালা সিরিজগুলির মধ্যে এইট আমার কাছে একদম উপরে ছিল। কারণ এই না যে গল্প কী হবে তা জানি, সত্যি বলতে গেলে আনিমেতে কী হতে পারে না পারে তা নিয়ে বিন্দুমাত্র ধারণা ছিল না। হাইপ ছিল যে দুইটা কারণে – স্পাই গল্প, এবং নোভেল অ্যাডাপশন।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগ মুহুর্তের সময়কালের গোয়েন্দাদের নিয়ে গল্প, এরকম লোভনীয় প্লট দৃষ্টি আকর্ষণের জন্যে যথেষ্ট।
আর হাজার হাজার লাইট নোভেল থেকে আনিমে অ্যাডাপশনের ভিড়ে সত্যিকারের নোভেলের আনিমে অ্যাডাপশন অনেক বেশি করে চাচ্ছিলাম, সেটাও এই সিরিজের মাধ্যমে সত্যি হয়ে এল।

প্রশ্ন হল, সিরিজটা কি এক্সপেক্টেশন পুরন করতে পেরেছে আমার?
উত্তর দিতে গেলে বলতে হবে, কী ধরণের জিনিস হতে পারে এটা সেটা নিয়ে একদমই ধারণা ছিল না তাই সেই অনুযায়ী এক্সপেক্টেশনও তেমন শক্তপোক্ত ছিল না। যা ছিল তা উপরের দুইটা পয়েন্টে উল্লেখ করা জিনিসগুলাই ছিল। আর সে হিসাবে, দেখে বেশ মজা পেয়েছি বলতে গেলে। আনিমেটার যেসব ব্যাপার ভাল লেগেছে সেগুলি কিছু উল্লেখ করি:

+ ম্যাচিউর স্টোরি [যেটা আজকাল বের হওয়া সব আনিমের মধ্যে খুব বেশি করে অনুপস্থিত বলে মনে হয়]।
+ গোয়েন্দা গল্প আর চমৎকার একেকটি জোকার-গেম; এই অংশগুলি খুব বেশি করে উপভোগ করেছি।
+ একেক পর্বে একেকজন নিয়ে গল্প, তবে আলাদা সব গল্প একটি সেন্ট্রাল গল্প নিয়ে গড়ে উঠে
+ ইউকি আর তার ব্যাডাস সব ব্যাপারস্যাপার! [This guy’s a monster] এই বছরের অন্যতম সেরা Male Character.
+ OST

তবে এত ভাল কিছু জিনিসের ভিড়েও নেগেটিভ পয়েন্ট বের করতে বাধ্য হচ্ছি:

— অসম্ভব কনফিউজিং ক্যারেক্টার ডিজাইন
এই ব্যাপারটা নিয়ে মাথার চুল ছিড়তে ইচ্ছা করছিল এক পর্যায়ে। ৯ জন গোয়েন্দার ১-২ জন বাদে কারওই মনে রাখার মত ক্যারেক্টার ডিজাইন ছিল না। আর এই সিরিজটাতে যেখানে একেক পর্বে একেক গোয়েন্দার গল্প দেখানো হয় আর কোন জন কে সেটা মনে রাখাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, সেখানে এই আইডিয়াটা মুখ থুবড়ে পরে। চেহারা তো মনে রাখা যায়-ই না, নামও মনে রাখার মত না। শেষমেশ এই চার্ট সাথে নিয়ে দেখতে হয়েছে একেকটা পর্ব [ছবিটি বড় করে দেখতে অন্য ট্যাবে ওপেন করে দেখুন]:

joker-game-characters

কেউ দেখার সময়ে এই চার্টটা সাথে রেখে দেখলে অনেক সুবিধা পাবেন। আর নিচে উল্লেখিত character appearance serial-টা মিলিয়ে নিবেন।
— সিজন ফিনালে পর্বটা দেখে মনে হয় না যে এইটা কোন সিরিজের শেষ পর্ব। ওপেন এন্ডেড ভাবে রেখে দেওয়া এক জিনিস, আর দেখে যেন বুঝা যায় যে এই পর্বের পর গল্প আপাতত শেষ – সেটা আলাদা ব্যাপার। অবশ্য আগেই ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল ডিভিডি/ব্লুরের সাথে দুইটি এক্সট্রা পর্ব বের হবে, তারপরেও সেটা সিরিজের বাইরের পর্ব, এন্ডিং পর্ব না।
— এতগুলা আলাদা আলাদা ছোট গল্প যে একটি সেন্ট্রাল গল্পকে ঘিরে গড়ে উঠলো, সেই মূল গল্পটি কী সেটা বুঝে উঠতে পারা একটা হ্যাপা।

গতানুগতিক আনিমের মত না এটি, তাই অনেকেরই বুঝতে কষ্ট হতে পারে। তবে আপনি যদি ম্যাচিউর স্টোরির আনিমে খুঁজে থাকেন, আর ছোট ছোট চমৎকার কিছু গোয়েন্দাগিরি দেখার ইচ্ছা রাখেন, সিরিজটি অবশ্যই দেখে নিবেন যত জলদি সম্ভব।

*************************************************************************************************

দেখার সুবিধার জন্যে কোন পর্বে কোন প্রধাণ চরিত্রকে দেখানো হয়েছে তা উল্লেখ করে দেওয়া হল:

Ep. 1, 2: Lt. Sakuma
Ep. 3: Hatano
Ep. 4: Fukumoto
Ep. 5: Kaminaga
Ep. 6: Tazaki
Ep. 7: Amari
Ep. 8: Jirou Gamou
Ep. 9: Jutsui
Ep. 10: ~
Ep. 11: Miyoshi
Ep. 12: Odagiri (main) + everyone else

The Story of Mr. Sorry [মুভি রিভিউ/রিএকশন] — Bashira Akter Anima

The Story of Mr. Sorry 1

যেহেতু আমার আজাইরা লেইম অথবা উইয়ার্ড জিনিসের প্রতি একটা টান আছে সেই হিসেবে একটু আগে দেখা শেষ করলাম কোরিয়ান একটা এনিমেশন মুভি “দি স্টোরি অফ মিস্টার সরি” যদিও জিনিসটা জাপানিজ না কিন্তু এর আগে হয়তো একটা দুইটা কোরিয়ান জিনিস নিয়ে আলোচনা হতে দেখছিলাম বলে ভাবলাম দেখার রিএকশন টা লিখে যাই।

মুভির শুরুতে দেখায় এক টক শো নয়তো বিচারকের ঘর। পক্ষে বিপক্ষে বিভিন্ন নেতা-নেত্রী। চলছে বিশাল তর্ক-বিতর্ক। চাপড়ে প্রায় ভেংগে ফেলা হচ্ছে টেবিল। আসামীর কাঠগোড়ায় দাঁড়িয়ে আছে একটি মাকড়শা। কারণ ঘটনাস্থলে প্রায় পাগল হওয়া রাজনীতিবিদের কাছে তখন এই মাকড়শা ছাড়া আর কাউকে পাওয়া যায় নি তাই সেই হইলো এক নম্বর আসামী। এসময় মনে অনেক খটকা জাগে সাথে সাথে কাহিনী পিছনে ফেরা শুরু করে। মুভির মূল চরিত্র মিস্টার সরি খুবই লাজুক, মিন-মিন স্বভাবের লোক, কাউকে জোরে কথা বলতে পারে না সাথে সাথে বেশ ভীতু। কাজ করে সে এক কান পরিষ্কার করা কোম্পানীতে। জ্বী ঠিক ই শুনছেন তাদের কাজ ই হলো বাড়ি বাড়ি গিয়ে সবার কান পরিষ্কার করা যে যত বেশি করতে পারবে তার তত লাভ। কিন্তু সরি তার দূর্বল চরিত্রের জন্যই বারংবার পিছিয়ে যেতে থাকে সবার কাছ থেকে। কোনোরকম বাড়ী ফেরে সে দৈনিক, ঘরে ঢুকেই নিঁখোজ মানুষ খোঁজার এজেন্সীতে ফোন করে সে, সেই ছোটবেলা থেকে সে খুঁজে বেড়াচ্ছে তার বড় বোনকে। বোনের একদম ন্যাওটা ছিলো যে। এজেন্সী দিন দিন বিল বাড়াতেই থাকে কিন্তু ফলাফল শূন্য। শেষ রাত কাটে তার পোষা মাকড়শার সাথে গল্প করতে করতে।

কিন্তু এই দূর্বল চরিত্রের সরি খেয়াল করতে থাকে যে মানসিক ভাবে দূর্বলতার সাথে সাথে তার শারীরিক দূর্বলতাও দেখা দিয়েছে এবং একদিন টের পায় আকারে ক্ষুদ্র হতে থাকে সে দিনকে দিন। কিন্তু এতেই যেনো শাপে বড় হয়ে আসে তার পেশা, তার মালিক সবার জন্য।

মুভিটা দেখে আসলে নিজের দেশে কি হয় তা মনে পড়লো। খুব কৌশলে ওরা পৃথিবীতে কি হচ্ছে তা ই বুঝিয়ে দিলো। এইসব টক শো, টক শো তে অসংখ্য ইস্যু, প্রশ্ন, সমাধান কি হচ্ছে এতে? একটা প্রশ্ন শেষ পর্যন্ত এসে ওরা তুলে দিয়ে গেছে যে আমরা যে নাগরিকরা জাস্টিস দিচ্ছি বলে দাবী জানাই, আসলেই কি ন্যায়বিচার হচ্ছে, আমরা কি আমাদের বিবেক, বুদ্ধির উপর আসলেই আস্থা রাখতে পারি? নাকি ঘটনার আড়ালেও অনেক কিছু চাপা থাকবে যা আমরা দেখতে পাবো না কোনোদিন। আর যারা দেখতে পায় তারা হয়ে পড়ে আসামী।

The Story of Mr. Sorry 2

Kabaneri of the Iron Fortress [রিএকশন/রিভিউ] — Amor Asad

Kabaneri

আসুন, Kabaneri of the Iron Fortress কে কয়েক বাক্যে প্রকাশ করি —
অভিমান জমিয়ে রাখা, চুলে আলতা মাখা, ফাদার-কমপ্লেক্সে ভোগা ভালোবাসাহীন তরুণ, যে পোস্ট অ্যাপাক্যালিপ্টিক যুগের ডারউইন হতে চায়;
ডারউইন তরুণকে কাঁচকলা দেখাতে বেদুইনদের উত্তরসূরি-স্টাইলিশ-নার্ড কিশোরের ওয়ান ম্যান অ্যর,
এনিমখোরের ললিখোরদের উস্কে দিতে মারকুটে পিচ্চি বালিকা, যার আবার ব্রাদার কমপ্লেক্স আছে,
সুন্দরী প্রিন্সেস আর তাঁর লজ্জ্বাবতী বডিগার্ড,
টাইটানদের উত্তরসূরি লটস অফ লাভাখোর মরা মানুষ, ব্যাডঅ্যাস ট্রেইন।

মানে, হেটাররা এমনটাই ভাবে। আমি ভাবিনা। কাবানেরি অফ দ্য আয়রন ফোর্ট্রেস আমার দারুণ ভাল্লাগছে। এইতো ওপেনিং সংটা ডাউনলোড করে রিপিট দিয়ে শুনছি। পিসি আর ফোনের ওয়ালপেপার চেঞ্জাইলাইছি। স্বয়নে স্বপনে ইউকিনাকে দেখতেছি। ফ্যান না হইলে এই কাজ কেউ করে?

এবারে Kabaneri of the Iron Fortress এর প্লট কয়েক বাক্যে প্রকাশ করি —
জোম্বি ভাইরাস অ্যাপোক্যালিপ্স,
মানব সভ্যতা বিলুপ্তির পথে,
সারভাইভাররা নিজস্ব অর্ডার বানিয়ে নিয়েছে,
কিন্তু না — আশার বাত্তি নিভে নাই, ডালমে কুছ কালা হ্যায়, মিশ্র একদল শক্তিশালী আদমি আছে।
তাগো ভীতর একজন আবার এক্সট্রা ব্যতিক্রম। দুনিয়ার যাবতীয় দায়িত্ব তেনার ঘাড়ে নিয়ে বাকীদের তিনি দায়মুক্তি দ্যান।

অ্যাগেইন, এসব হেটারদের কথা। আমার না।
===
2013 সালে একটা সাই-ফাই মুভি রিলিজ পেয়েছিলো, Snowpiercer. ওই বছরের দারুণ ফিল্ম হলেও তেমন সাড়া পায়নি। স্নোপিয়ার্সারের গল্পটাও ট্রেনে। মানব সভ্যতা চিরস্থায়ী শীতকালের বশবর্তী, পৃথিবী বাসের অনুপযোগী। সারভাইভাররা সবাই একটা জায়ান্ট ট্রেনে উঠে বছরের পর বছর ঘুরতে থাকে। যদিও ওই মুভির বাকি সব গল্প আলাদা, কাবানেরি দেখতে গিয়ে প্রথমেই ওটার কথা মনে পড়েছিলো।

এরকম দ্রুতলয়ের কিছু দেখতে আলাদারকম ভাল্লাগে। অনেকদিন পর কোন অ্যানিমে এক বসায় শেষ করেছি। তাই হয়তোবা শেষের দিকে গোঁজামিল বা রাশড হবার পপুলার দাবীর যথাযথতা নিয়ে সন্দেহ আছে। আমার কাছে পুরো অ্যানিমেই সমান ভালো লেগেছে। সত্যি বলতে, ক্লিশে গুলো বাদ দিলে কাবানেরি দারুণ উপভোগ্য। চমৎকার অ্যানিমেশন, উত্তেজনাকর অ্যাকশন সিকোয়েন্স, সেই সাথে রক্ত গরম করা মিউজিক স্কোর। বিশেষ করে গল্পকথনের সাথে ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোরের এমন সামঞ্জ্যতা সহসাই দেখা যায় না। শেষবার এই টালমাতাল অনুভূতি পেয়েছিলাম ম্যাড ম্যাক্স ফিউরি রোডে। কাবানেরির ওএসটি নামিয়েছি, কিন্তু কেবল OP টাই শোনা হয় কেন যেন।
সেই সাথে সিনেম্যাটোগ্রাফি ছিলো বোনাস, ফাঁকা দুনিয়ার মাঝখান দিয়ে ট্রেইন ছোঁটার, বিশেষ করে এপিসোড শেষে স্টেশন থেকে কোন মতে জান নিয়ে বের হয়ে যাওয়ার অংশটুকু যেন অনেকটাই পোয়েটিক – দেয়ার গোজ দ্য লাস্ট হোপ অফ সারভাইভাল।

কাবানেরি পছন্দ হবার আরেকটা কারণ হচ্ছে, আডিওলোজির কনফ্লিক্ট দেখলে ভাল্লাগে, যতই পুরনো হোক না কেন। আমাতরি বিবার দর্শনটা ফেলে দিতে পারিনি। বিভিন্ন সিচুয়েশনে তাঁর ভাবনার ধরণই বেশী গ্রহণযোগ্য মনে হয়। আবার শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ইকোমা নিজ অবস্থানে ঠিক আছে, ইকোমা সেটা ইঁদুরের মতো চিঁ চিঁ করে বললেও।

Attack on Titan এর সাথে Kabaneri of the Iron Fortress এর মিল আছে, তবে অমিলই বেশী। এটা ওটার ছোট ভার্সন, ছোট ভাই, সেকেন্ড ভার্সন – ইত্যাদি বক্তব্য ভিত্তিহীন মনে হয়। AOT থেকে Kabaneri কোন দিক দিয়েই লেসার অ্যানিমে না, বরঞ্চ কিছু দিক দিয়ে এগিয়েই থাকবে।

আমার রেটিং ৮/১০