Otoyomegatari [মাঙ্গা রিভিউ] — আতা এ রাব্বি আব্দুল্লাহ
ডিসকভারি চ্যানেলে প্রায়ই নানা উপজাতিদের নিয়ে ডকুমেন্টারি দেখাত। আমাজনের উপজাতি, এস্কিমোদের জীবন আরও নানা কিছু। তো আমার সবচেয়ে পছন্দের ছিল কিরিগিজ জাতি, যারা যাযাবর টাইপের। রুক্ষ পরিবেশে বাস, অসাধারন তাদের জীবন ও সংস্কৃতি!!
তো ভালো আর্টের মাঙ্গা খোজ করতে গিয়ে পেয়েছিলাম Otoyomegatari মাঙ্গা আর পড়ার পর আমি মুগ্ধ!!
মাঙ্গার কাহিনী এক প্যারালালে না, বিভিন্ন লোকের কাহিনী নিয়ে এই মাঙ্গা। মাঙ্গার কাহিনী শুরু হয় কারলুক আর আমিরা হালগাল এর বিয়ের কাহিনী দিয়ে। বউ আমিরার চাইতে স্বামী কারলুক ৮বছরের ছোট। এইরকম এইজগ্যাপ ম্যারিজ ওদের সমাজে চালু আছে। এখন মনে হতে পারে যে এরা কি মানিয়ে নিতে পারবে! কিন্তু তাদের মত মিষ্টি রোমান্স বেশি দেখি নাই। কারলুক, আমিরা ও তাদের জীবনের দিনগুলো নিয়ে শুরু হয় মাঙ্গা, এরপর আছে দুই জমজ বোনের, শয়তানি, তাদের বিয়ের অনুষ্ঠান নিয়ে এক গল্প। এই পার্ট অনেক কমেডির আর আমাদের দেশের বিয়ের অনুষ্ঠানের সাথে রিলেট করতে পারবেন!! আছে আরও ছোট ছোট নানা সুন্দর গল্প।
মাঙ্গা সেইনেন, সুতরাং কোন রকমের ন্যাকামি এই মাঙ্গাতে নেই। কাহিনীর পেসিং অসাধারন। রোমান্স আছে, কমেডি আছে, সংঘাত আছে। এখন আসি আসল কথায়! এই মাঙ্গার আর্ট আমার দেখা অলটাইম বেস্ট আর্টগুলার একটা। ড্রেসের ডিজাইন, কানের দুল, চাদর, ব্যাকগ্রাউন্ড, কভার আর্ট এত সুন্দর তা বলার মত না। মাঙ্গা পড়ার সময় প্যানেলের দিকে তাকিয়ে কল্পনায় হারিয়ে যাবেন!! এত সুন্দর। কাওরি মরি সেন্সেই একটা জিনিয়াস!!!
সুন্দর আর্ট সাথে সুন্দর কাহিনী। না পড়ার কোন কারন নাই। এই মাঙ্গা হল একটা আর্টিস্টিক জার্নাল বই! এই বেদুঈনদের জীবন, তাদের চিন্তাধারা, ভাবনা সব দেখতে পারবেন, বুঝতে পারবেন! অনুভব করতে পারবেন!! এই মাঙ্গার ক্ষেত্রে একটা কথাই খাটে! অতিরিক্ত অসাধারন!!!
তো আজকেই পড়া শুরু করে দিন মাঙ্গা Otoyomegatari!!
Overlord [লাইট নোভেল সাজেশন] — আতা এ রাব্বি আব্দুল্লাহ
ইসেকাই জন্রা জাপানে বেশ জনপ্রিয়। এক দুনিয়া থেকে আরেক দুনিয়াতে ট্রান্সফার যেখানে সবকিছু RPG স্টাইলে। লেভেল আপ হওয়া, ডিমন লর্ডের বিপক্ষে বা শয়তান রাজার বিরুদ্ধে যুদ্ধ। তবে এই জন্রা কিছুটা একই রকম রিপিটেড কাহিনী ভর্তি যেমন মেইন ক্যারেক্টার ওভারপাওয়ার্ড, ফট করে ৫-১০ টা মেয়ে নিয়ে হারেম বানিয়ে ফেলা বা ক্লিয়ার কোন গোল না থাকা। এর মধ্যে এন্টিহিরো টাইপ কাহিনী থাকলেও পুরো শয়তান বা ডিমনিক পার্স্পেক্টিভ থেকে কাহিনী একদম নেই। আর সেটার অভাবই পুরন করেছে ওভারলর্ড। মেইন নায়ক ওভারপাওয়ার্ড কিন্তু সে ফট করে জিরো থেকে হিরো হয়নি। আর সে গেমের দুনিয়ায় প্রবেশ করেছে ওভারলর্ড হিসেবে, কোন হিরো হিসেবে না, এবং একজন ওভারলর্ডের যে উপায়ে দুনিয়া দখল করা উচিত সেভাবেই সে ওয়ার্ল্ড ডমিনেশন এর দিকে আগাচ্ছে।
এনিমে আর নভেলে বিস্তর ফারাক। এনিমে আমার অনেক ভালো লেগেছে! নাহলে আমি কখনোই কোন লাইট নভেল পড়িনি। কিন্তু ওভারলর্ড দেখে ওয়েট করতে না পেরে নভেল পড়া শুরু করে দিয়েছি। এটা আমার পড়া প্রথম ও একমাত্র লাইট নভেল। নভেল অনেক ডিটেইল। যে সিন এনিমেতে ২ বা ৫ সেকেন্ড দেখায় তা নভেলে ৫ পেইজে বলা। অনেক ডিটেইল বাদও দিয়েছে। এইখানে প্রায় প্রত্যেকটা ক্যারেকটার ডিটেইলের সাথে গড়া হয়েছে। নচ্ছার ভিলেনে বা ছোট ক্যারেক্টারেরও ব্যাকস্টোরি দেওয়া আছে। কমেডি, রোমান্সও আছে। তো যারা ওভারলর্ড এনিমে পছন্দ করেছেন তারা নভেল পড়া ধুরু করে দিন।
Lady Snowblood [মাঙ্গা রিভিউ] — আতা-ই রাব্বি আব্দুল্লাহ
নব্য জাপানের এক মহিলাদের জেলখানায় এক মহিলা প্রসব বেদনায় কাতরাচ্ছে। জেলে সবাই তাকে বেশ্যা বলে ডাকে তার কারণ তার কাজই ছিল কয়েদের প্রহরী থেকে মন্দিরের পুরোহিতকে সিডিউস করা। কিন্তু এই বাবার পরীচয়হীন সন্তান প্রসবের সময়ে এসে সে জীবন বাজি রেখে বলল তাকে না বাচিয়ে তার সন্তানকে বাচাতে, কারণ তার সন্তানের জন্মদানের এক উদ্দেশ্য আছে। এই সন্তান তার হয়ে প্রতিশোধ নেবে। তার সন্তান জন্মদানের উদ্দেশ্যই হচ্ছে প্রতিশোধ এবং তার অতীতের কাহিনী শুনে তার আশেপাশের সবাই ঝরঝর করে কেদে দেয়।
তারপর থেকে প্রায় ১৮ বা ২০ বছর পরের কথা। জাপানে এক গুপ্তঘাতকের নাম ত্রাস ছড়াচ্ছে, সেই গুপ্তঘাতক একজন মেয়ে এবং সবাই তাকে চেনে রক্ত তুষার নামে। সে তার শিকারের কাছে যেতে তার অপরুপ সৌন্দর্য এবং ছলনাকে কাজে লাগায়। এবং তরবারি চালানো,ছবি আকায় অসম্ভব পারদর্শী! তবে তার আসল উদ্দ্যেশ্য চারজনকে হত্যা করা। এর জন্য সে নিজের দেহ জীবন সব বিলিয়ে দিতে প্রস্তুত। তার জন্মর একমাত্র উদ্দ্যেশ্য হচ্ছে প্রতিশোধ।
নব্য জাপানের নানা অন্ধকার দিক তুলে ধরেছে এই মাঙ্গা। জাপানের ইয়াকুজা সিস্টেম, রিলইফ ডান্স সহ আরো নানা দিক।
বিখ্যাত হলিউড ডাইরেক্টর টরেন্টিনোর মুভি কিলবিল এই গল্প থেকেই অনুপ্রাণিত। এই মাঙ্গা ১৯৭২ সালের। সেই হিসেবে আর্ট ডিসেন্ট। আপনার যদি ডার্ক, গোর এবং নুইড্যিটি সহ্য না হয় তাইলে এই মাঙ্গা পড়ার দরকার নেই। ইচি দ্যা কিলার টাইপের মাঙ্গা যাদের পছন্দ তারা পড়ে দেখতে পারেন। আরেকটা কথা হল অনেক মাঙ্গা সাইট এটাতে ইউরি ট্যাগ দিয়ে রেখেছে যা ভুয়া। নিজের শিকারের কাছে যেতে বা বিশ্বাস লাভ করতে অনেক নারীকেও সিডিউস করেছে তো হ্যা ইউরি সিন আছে ৩টার মত।
এর মাঙ্গাকা হল লেজেন্ডারি মাঙ্গা Lone wolf and cub এর মাঙ্গাকা। মাত্র ৪ভলিউম। চাইলে পড়ে দেখতে পারেন।
বিদ্র: এর অসাধারণ এক লাইভ একশান মুভি আছে, সেম নামে।
Shingeki No Bahamut Genesis [রিভিউ] — আতা-ই রাব্বি আব্দুল্লাহ
মিথলজিতে আমরা যত ক্ল্যাশ দেখি তা বেশিরভাগ দেবকুল আর অসুরদের মধ্যে। স্বর্গ আর নরকের মধ্যে ক্ল্যাশ। বাট বাহামুত, এমন এক সত্তা যা স্বর্গ, নরক মানবকুল সবকিছুকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিতে এসেছে। তাকে মারা দেবতা বা ডিমনদের জন্য সনভব নয়। তখন দেবতা, মানুষ আর শয়তানের সম্মিলিত চেষ্টায় তাকে সাময়িক ভাবে বন্দি করে রাখা সম্ভব হয়।
এদিকে এক শহরে চলছে আরেক খেলা। ফাভারো এক আউলা চুলের পাগলা বাউন্টি হান্টার যার কথা হলো টাকা কামাবো, এক রাতে উড়াবো! মদ আর নারী হইলেই খুশি! তার পিছু নিয়েছে এক ফলেন নোবেলের ছেলে কায়সার। দুইজনের মধ্যে সারাদিন চলে চোর পুলিশ খেলা! কিন্তু তাদের এই রুটিনে বাধা পরে যখন এক সুন্দরী নারী এসে ফাভারোর সাহায্য চায়! মেয়ের যাত্রার লক্ষ্য হেলহাইম।
কম পর্বে কেউ যদি ভালো ফ্যান্টাসি এনিমে চায় তাইলে তার জন্য মাস্ট ওয়াচ। এনিমের কাজ করেছে স্টুডিও মাপ্পা।
এই এনিমের অসাধারন দিক হলো মাত্র ১২ পর্বে এক অসাধারন যাত্রা। মানুষ, দেবতা ও অসুরদের অন্তর্দন্দ, লোভ, লালসা আর হিংসার প্রতিফলন। একই সাথে আছে হাসির অনেক মোমেন্ট আবার আছে দুঃখের অনেক হার্টটাচিং মোমেন্ট! ক্যারেক্টারগুলা জোস। ক্যারেক্টারের চেইঞ্জ বেশ ভালোভাবেই দেখা যায়!
এই এনিমের গ্রাফিক্সের কাজ অস্থির। সিজিয়াইয়ের ব্যাবহার আছে কিন্তু এই মাপের ফ্যান্টাসি এনিমে বানাতে গেলে CGI ছাড়া কোন উপায় নাই! ক্যারেক্টার ডিজাইন দেখে বার্সাকের মুভি ট্রিলজির ক্যারেক্টার ডিজাইনের কথা মনে পড়ে গেসিল। গ্রাফিক্স চোখ ধাধানো সাথে অনেক সুন্দর ক্যারেক্টার ডিজাইন। মিউজিক ওপ্বনিং আর এন্ডিং অনেক অস্থির। এই এনিমে এক বসায় শেষ করতে পারবেন! ১২এপি মাত্র। দেখবেন আর ইঞ্জয় করবেন।
তো ওয়াচলিস্টের এক কোনায় ফেলে রাখবেন না অন্য সময় দেখবেন বলে। এখনই স্টার্ট করে দিন দেখা বাহামুতের ক্রোধ!!!
আমি নাম্বার দিতে পারি না আসলে, নিজেকে স্কুল মাস্টার মনে হয়, ভালো লাগলেই ১০ দিয়া দিতাম। তাই এই এনিমে দেখলে আপনার টাইম ওয়েস্ট হইবে? না ! দেখুন বাহামুত!!!
Toujuushi Bestialious [মাঙ্গা সাজেশন] — আতা-ই রাব্বি আব্দুল্লাহ
আপনার কি সেই গল্পের কথা মনে আছে? এক রোমান ক্রীতদাস কলোসিয়াম থেকে পালিয়ে গুহায় আশ্রয় নেয়, কিন্তু সেই গুহায় আশ্রয় নেয় এক আহত সিংহ, সেই সিংহের ক্ষত সারিয়ে দেবার ফলে তাদের মধ্যে গড়ে ওঠে এক বন্ধুত্ব,। পড়ে সেই ক্রীতদাস আবার ধরা পড়ে, তাকে ছেড়ে দেওয়া হয় সিংহের সামনে। কিন্তু সিংহ তাকে মারে না, কেননা সে চিনেছে তার বন্ধুকে। তাদের এই বন্ধুত্ব দেখে সম্রাট তাদের মুক্ত করে দেয়।
তো এই মাঙ্গা পড়ার সময় সেই টাইপের ভাইব পেয়েছি। মাঙ্গাটা ওয়ানশট টাইপের, দুই চ্যাপ্টারে কাহিনী শেষ। বাট কাহিনী খুবই সুন্দর। এক এতিম গ্ল্যাডিয়েটর আর এক দানবের বন্ধুত্ব নিয়ে খুবই সুন্দর মাঙ্গা।
এই মাঙ্গা পড়ার প্রধান কারন হচ্ছে এর আর্ট। আপনাদের যারা আর্টের ভক্ত তাদের জন্য আদর্শ মাঙ্গা। প্রায় বার্সাকা লেভেলের আর্ট যদিও প্যানেলগুলো বেশি ডার্ক। তো চট করে মাত্র দুই চ্যাপ্টারের এই মাঙ্গা পড়ে ফেলুন! ভালো লাগবে আশা করি!
Kino’s Journey [রিভিউ] — আতা-ই রাব্বি আব্দুল্লাহ
Don’t judge a book by it’s cover বলে কথা আছে। ব্যাপারটা সব মিডিয়ামের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। এনিমেতেও এরকম ভুরি ভুরি উদাহরণ আছে। যেমন মুশি শি, মাদোকা ম্যাজিকা, কাটানাগাতারি। প্রথমে আর্ট স্টাইল বা সিনোপসিস পড়ে মনে হবে আহামরি কিছু না, কিন্তু দেখার পর মন্ত্রমুগ্ধ না হয়ে উপায় নেই! কিনোর যাত্রা সেইরকম এক এনিমে। আর্ট স্টাইল বেশ পুরানো, ৮০-৯০ দশকের আর্ট যদিও ২০০৩ এ মুক্তি পেয়েছে। সিনোপসিস এক পিচ্চির যাত্রা আর তার অভিজ্ঞতা কিন্তু আসলে এইটা কত বড় মাস্টারপিস তা না দেখলে বোঝা যাবে না।
কাহিনী কিনোকে নিয়ে, এক কিশোর? ও তার মোটরবাই হের্মেসকে ঘিরে। তারা এক দেশ থেকে আরেক দেশে ঘুরে বেড়ায়, নতুন নতুন সংস্কৃতি, নতুন নতুন মানুষের সাথে পরিচয় হয়।
কিউট লাগছে না!? আসল কাহিনী বহু দূরে!
এই এনিমের মত হাসিখুশি ডার্ক এনিমে দেখি নাই। এই এনিমের এটমোস্ফিয়ার প্রাঞ্জল টাইপের, কাহিনী শুরুও হয় সুন্দরভাবে। এই এনিমেকে ডার্ক বললে ভুল হবে, বলা যায় নির্মম দর্শনের এনিমে। এই এনিমে অতীত, বর্তমান, ভবিষ্যৎ সব কিছুকেই দেখিয়েছে, তা নিয়ে ভাবতে বাধ্য করেছে। এই এনিমে আপনার আমার অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলে, আমাদের উত্তর না জানা প্রশ্ন নিয়ে ভাবায়, আপনার আমার বিবেকে আঘাত হানে। অসাধারণ, অসাধারণ!!!
এই এনিমের। মেইন চরিত্র আসলে কিনো না, মেইন চরিত্র হল দর্শক। আপনিই ভ্রমন করছেন! প্রশ্ন করছেন, কখনো উত্তর পাচ্ছেন, কখোনো পাচ্ছেন না।
এপিসোড সংখ্যা মাত্র ১৩। প্রতি পর্বে এক বা দুইটা করে কাহিণী, ক্যারেক্টার অনেক। কিন্তু তাদের সবাইকে কি মনে রাখা যায়? কিন্তু এই এনিমের সব ক্যারেক্টার কোন,না কোন,ভাবে আপনার মনে দাগ কাটবে। যাদের আপনার কাছে খারাপ বা ভিলেন মনে হবে তাদের মোরাল বা যুক্তিও আপনাকে ভাবাবে যে সে ভিলেন কিনা।
৯০-এর দশকে এনিমেতে বলা যায় একটা গোল্ডেন এইজ টাইপের কিছু ছিল। Cyborg 009, Serial Experiments Lain, UFO baby, Cowboy Bebop এরপর Heidi, Little Women এর মত ওয়েস্টার্ন ক্লাসিক লিটারেচার নিয়েও অনেক এনিমে হয়েছে। ২০০০-এর দিকে বের হওয়া তাদের মতই এক রত্ন হল কিনো’স জার্নি।
১৩ টা এপিসোড মাত্র। ওপেনিং আর এন্ডিং শ্রুতিমধুর। আর্ট স্টাইল পুরানো কিন্তু ফ্লুইড। অসাধারন কাহিনী। সব মিলিয়ে এই এনিমে না দেখে আপনি কি মিস করছেন তা জানেন না।
তো তাড়াতাড়ি দেখা শুরু করুন কিনোর যাত্রা আর এক আবেগময় রাইডের জন্য প্রস্তুত হন।
আমার নম্বর: 10/10!
AIKI [মাঙ্গা রিভিউ] — আতা-ই রাব্বি আব্দুল্লাহ
আপনি কি অতিরিক্ত শক্তিশালী মেইন ক্যারেক্টার এর ভক্ত? আপনি কি গড়াগড়ি খাওয়া কমেডির ভক্ত? আপনি কি কুস্তি থুক্কু মার্শাল আর্টের ভক্ত?? এবং সবশেষে ইচি ভক্ত? তাইলে আপনার জন্যই AIKI মাঙ্গা 😀 !!!
মাঙ্গা সাজেশন: AIKI
Beelzebub এর Oga এর কথা মনে আসে? সেই শয়তানি কলিজাকাপা হাসির সাথে ধুম ধারাক্কা ঘুষি!! এক কথায় পিউর Badass!!! এইরকম চরিত্র দেখলেই অস্থির লাগে। কোন মিন মিনে ভাব নাই, আসলাম, দেখলাম, ঘুষাইলাম!! সবকিছুরে তুচ্ছ কইরা দেয়। এ খারাপ না কিন্তু সাধুও না!!
তো আমাদের এই মাঙ্গার নায়ক জোকিয়ুউ। দেখতে পাড়ার বখাটে ছেলের মত। আসলেও তাই। গায়ে গতরে নরমাল। দেখলে মনে হয় হাইস্কুলে পড়ে। আসলে কি তাই?? অবশ্যই না !!! দুনিয়ার সেরা মার্শাল আর্টিস্ট সে, হ্যাঁ সেরা। তার উপরে আর কেউ গুরু নাই। তার এই বিশাল ক্ষমতা, With great power comes great responsibility. কিন্তু সে তার এই ক্ষমতা নিয়ে মেয়েদের পিছনে ছুকছুক করে বেড়ায় এবং বাপমায়ের অন্ন ধ্বংস করে। ছেলের ক্ষমতার বহর দেখে তার বাপ, এমন সিস্টেম করে যাতে জোকিয়ুউ তার শরীরের ১০ পারসেন্ট ক্ষমতাও ব্যাবহার করতে না পারে!! তাও তার সাথে কেউ পারে না । যেই মারামারি করতে যায় , লিটারেলি উড়ে যায়!! এখন দূর দুরান্ত থেকে লোক আসে তাকে দলে টানার জন্য, অথবা মার্শাল আর্ট শেখার জন্য!! আর টাকা বা নারীর ছলাকলা দেখলেই সে মাখনের মত গলে যায়। কিন্তু তার এই বজ্জাতির মধ্যেও আছে বুদ্ধির খেল , আরও জানতে হলে মাঙ্গা পড়া স্টার্ট করা দেন!!!
এই মাঙ্গা অতিরিক্ত অস্থির, এর ইচ্চিটুকু বাদ দিলে এইটা মাস্ট পড়ার মত মাঙ্গা। মাঙ্গার আকা খুব সুন্দর, এক্সপ্রেশন গুলা সেই!!!! যারা এক্সপ্রেশন এর ভক্ত তারা এই মাঙ্গা মাস্ট পড়বেন!!! ইচ্চিটা একটু বেশি কিন্তু তা বলে এই মাঙ্গা বাদ দেবার মত না। ওয়ানপাঞ্চ ম্যান, Beelzebub এর ভক্ত হয়ে থাকলে এই মাঙ্গা পড়া মাস্ট। তবে ইচ্চি কিন্তু অনেক বেশি!
চ্যাপ্টার মাত্র ৯৮টা। এর একটা সিকুয়াল ও আছে। নাম Aiki S. সেটা অনগোয়িং!!
আমার রেটিং: ৯/১০
MOB Psycho 100 [রিভিউ] — আতা-ই রাব্বি আব্দুল্লাহ
গত বছরে ওয়ান পাঞ্চ ম্যান ব্লকবাস্টার হিট খাওয়ার পর ওয়ান চাচার কমিকের দিকে সবার নজর পরে , কারণ আমাদের প্রচলিত টিনেজ মেইন চরিত্র যে ধীরে ধীরে দুর্বল থেকে সবল হয়ে উঠবে ,প্রথমে কিছু ফাইট জিতবে , পরে হারার মাধ্যমে আবার শক্তশালি হয়ে উঠবে , পরে আসবে অতি শক্তিশালি ভিলেন যার সাথে লাস্ট মোমেন্টে পাওয়ারাপ হয়ে হিরো জিতবে । এই ফর্মুলা জনপ্রিয় এবং আমারো ভালো লাগে , কিন্তু সব একশান এনিমে ওই ফর্মুলাতে চলায় নতুন কিছু খুজছিলাম আর সেই নতুন কিছু হইল ওয়ান পাঞ্চ ম্যান !!! টাকলা , বলদা অতি শক্তিশালী মেইন চরিত্র !! কাহিনী মজার আর এনিমেশন আরও ভালো !! তো যখন শুনলাম ওয়ান এর আরেক ওয়েবটুন মব সাইকো ১০০ এনিমে পাবে তখন আমার মনে হইলো যে এইটা কি আরেক ওয়ান পাঞ্চ ম্যান হইবে নাকি !! প্রথম কয়েক চ্যাপ্টার পড়ে দেখি যে মেইন চরিত্র দেখতে চুল ওয়ালা সাইতামা আর অতি শক্তিশালি , ভাবলাম যে এইটাও আরেক ওয়ান পাঞ্চ ম্যান , কিন্তু এনিমের কয়েক এপি দেখে বুঝলাম যে আমি কত বড় বোকা !! হিমু পড়তে গেলেই খালি মনে আসে পুলিশ , হেলেন অফ ট্রয়ের মত মেয়ে , ভালো মাস্তান আর মাজেদা খালা , মানে কমন প্লট কিন্তু হিমুর ২টা গল্প ময়ূরাক্ষী আর হিমুর দ্বিতীয় প্রহর পুরাই আলাদা সারপ্রাইজ ছিল !! তেমনি মব সাইকো ১০০ আমাদের জন্য এক স্পেশাল সারপ্রাইজ !!
কাহিনীর মেইন নায়ক আপাতত শিগেও , সে অতি পাওয়ারফুল সাইকিক এবং অতি উন্নতমানের সরল গাধা ! সে কাজ করে স্বঘোষিত দুনিয়ার সেরা ভূতের ওঝা রেইগেন সেন্সের সাথে , এই রেইগেন সেন্সে হইল টিরিয়ন লানেস্টারর মত , কথা বইলা শিং মাছের মত যে কোন পরিস্থিতি দিয়া পিছলায়ে বের হয়ে আসতে পারবে এবং তার কথা গুলা আসলেই কলিজায় লাগে ।মবরে দেখলে মনে হয় বিবাগী , দুনিয়ার কিছুতে নজর নাই , অনেকটা সাইতামার মত , কিন্তু আসলে টা না , সে প্রেমিক আছে , লেখাপড়ায় ভালো করতে চায় , মেয়েদের মধ্যে পপুলার হইতে চায় । তো এই অতি শক্তিমান বালক মব , তার ইন্সিকিউরিটিতে ভোগা লেখাপড়া , খেলাধুলায় অস্থির ছোট ভাই , ইসস্কুলের বেকামা সাইকিক ক্লাবের মেম্বার , এবং সেরা বড় ভাই ব্রাদার যুক্ত ফিটনেস ক্লাব ও আরো কিছু চরিত্র নিয়ে আমাদের মব সাইকো !! ( সব বইলা দিলে মজা পাইবেন না ) !!
অসাধারন পাওয়ার থাকলেই যে লাফ দিয়া পইরা হিরোগিরি করতে হইবে এই জিনিসটা মব করে নাই , সে নিজের অতি ভয়ঙ্কর ক্ষমতা নিয়া চিন্তিত ! মবের ইমোশন লেভেল ১০০ তে পৌঁছালে মোটামুটি মিনি কেয়ামত হয়ে যায় !!! আপনি হয়ত এনিমে দেখার সময় ভাবতাসেন এই জায়গায় এইটা হইবে , কিন্তু হবে পুরা ৩৬০ ডিগ্রি উল্টা !!! এই এনিমের ডায়লগ গুলা অস্থির , কমেডি আছে আর আছে অতি অতি অতি অস্থির সাউন্ডট্র্যাক !!!ওপেনিং আর এন্ডিং দুটাই কানে মধু এবং চোখে শান্তি !! এখন আসি এনিমেশনের কথায় !! ওয়ান চাচা কাহিনী ভালো বানায় কিন্তু আকে জঘন্য , আর মব তো ওয়ান পাঞ্চ ম্যানের মত রিড্র করা হয় নাই , কিন্তু স্টুডিও Bones কাপায়া দিসে !! অতিরিক্ত সিম্পল আর্টের সাথে চোখ ধাঁধানো গ্রাফিক্স দিয়েছে !! মানে এক প্লেট ভাত দেখতে প্লেইন কিন্তু তাতে একটু ঘি দিয়ে মাখিয়ে মুখে নিলে যেমন আরামে চোখ বন্ধ হয়ে যায় !! তেমনি মব সাইকো দেখলে ব্রেইনে মাখনের আরাম ইফেক্ট হয় !! একেকটা একশান সিন আপনার এন্ড্রালিন রাশের বারোটা বাজিয়ে দেবে !!! যদি আপনি ক্লিশে মুক্ত কিন্তু একশান ও কমেডিতে ভরা অস্থির এক সিরিজ দেখে তৃপ্তির ঢেকুর তুলতে চান তাইলে এখনি মব সাইকো ১০০ ১০৮০পিতে ১২ পর্ব নামিয়ে দেখা শুরু করেন !ভালো লাগবেই এইটা গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি !!!
Opening: https://www.youtube.com/watch?v=M4uCRncR3_w
Ending: https://www.youtube.com/watch?v=lZLEXj52lcc
Hajime no Ippo [রিভিউ] — আতা-ই রাব্বি আব্দুল্লাহ
কারও উপর রাগ হলে , সেইরাগ কমানোর উপায় কি ? মেডিটেশন , উল্টাগোনা ? আমার মতে সবচেয়ে ভালো উপায় হলো ঘুষানো ! যারা ফাইটক্লাব মুভিটা দেখসেন তারা জানেন মারামারির কি গুণ । এখন এই বিনোদনের জন্য নিয়মতান্ত্রিকভাবে ঘুষাঘুষিকেই বলা হয় বক্সিং । এটা এমন একখেলা যেটাতে মৃত্যু অসম্ভব নয় । এবং এরকমন স্পোর্টস বেইজড এনিমে হবে না তা কি হয় !? এই বক্সিং নিয়েই হাজিমে নো ইপ্পোর কাহিনী ।
প্লট : এই এনিমের নায়ক অপাতদৃষ্টিতে ইপ্পো । বাবাহারা এক জেলে সন্তান , মাকে নৌকা ব্যাবসায় সাহায্য করা এবং পড়াশুনার মধ্যেই তার জীবন । বেশি বন্দ্ধু না থাকায় এবং চুপচাপ এবং লাজুক স্বভাবের হওয়ায় প্রায়ই বুলিইংএর শিকার হয় । এরকম এক পরস্থিতিতে পরে মার খাওয়ার সময় তাকে এক লোক গুন্ডাদের হাত থেকে বাঁচায় এবং ফার্স্ট এইড দেওয়ার জন্য জিমে নিয়ে যায় , এই লোক হচ্ছে এই এনিমের অন্যতম প্রধান ক্যারেকটার মামুরো টাকামুরা , যে একজন ট্যালেন্টেড এবং অজেয় উদীয়মান বক্সার । এখন রতনে রতন চেনে , মাকে নৌকা ভাড়া ব্যাবসায় ছোটবেলা থেকে সাহায্য করা দরুন ইপ্পোর শরীর ছিল সুগঠিত এবং আর ছিল ফাইটিং স্পিরিট যা টাকামুরার চোখ এড়ায় না । টাকামুরার জোরাজুরিতে এবং স্পারে ইপ্পোর পান্চিং পাওয়ার এবং অদম্য ইচ্ছাশক্তি দেখে জিমের কোচ গেনসান তাকে জিমে ভর্তি করে নেয় এবং শুরু হয় ইপ্পোর বক্সিং জগতে পথ চলা ।
আমি আত্নবিশ্বাসের সাথে বলতে পারি যে সর্বকালের সেরা স্পোর্টস এনিমে বলতে গেলে ইপ্পোকে না রেখে কথা বলা যাবে না । প্রথম হল এর অসাধারন স্টোরিলাইন । এলাম .দেখলাম ,জয় করলাম এইরকম কাহিনী এখানে না । এখানে প্রত্যেক ক্যারেকটারকে স্ট্রাগল করতে হয়েছে এবং করতেই রয়েছে ।এখানে ইপ্পোকে প্রথমে মেইন ক্যারেকটার মনে হলেও ,পরে প্রত্যককেই মেইনক্যারেকটারের মতো মনে হবে । বক্সিং এমন এক স্পোর্টস যেখানে শুধু ট্যালেন্ট দিয়ে ভাত মেলে না । আগের যুগের বক্সারদের যে কি নারকীয় ট্রেনিং এর মধ্য দিয়ে যেতে হত তা এই এনিমে না দেখলে বোঝা যাবে না । এই এনিমের আরেকটি উল্লেখ্যযোগ্য দিক হল ক্যারেকটার ডেভলপমেন্ট । কিমুরা , আওকি , টাকামুরা . সেন্ডো এ ক্যারেকটারগুলোর শুধু সাইড ক্যারেকটার না , তারা এই এনিমের অপরিহার্য অংশ । এবং আপাতদৃষ্টিতে যাদের ভিলেন বা নায়কের প্রতিপক্ষ বলে মনে হবে তাদেরও রয়েছে হৃদয় ছোয়া ব্যাকস্টোরি । আমরা জানি যে মোহম্মদ আলী , মাইক টাইসন , জো ফ্রেজিয়ার এরা প্রত্যেকেই অস্বচ্ছল অবস্থা থেকে স্ট্রাগল কর পৃথিবীর চূড়ায় উঠেছে , এই এনিমে দেখলে কিছুটা হলেও তাদের স্ট্রাগল সম্পর্কে ধারনা পাবেন ।
এই এনিমে ম্যাডহাউজের সুতরাং এনিমেশন কোয়ালিটি পুরোনো হলেও অসাধারন । এর একশান বা ফাইটিং সিনগুলো দেখার সময় স্থির হয়ে বসে থাকতে পারবেন না । এই এনিমে দেখার পর আমনি বাসার দেয়ালের উপর জ্যাব প্র্যাকটিস করতে গিয়ে ঝাড়ি খাবেন না , তা হবে না ! এই এনিমে কমেডির দিক দিয়েও লেজেন্ডারি । টাকামুরা , কিমুরা এবং আওকির বাঁদরামি এবং পার্ভাটনেস আপনার পেটে খিল ধরিয়ে দেবে ।
প্রত্যেকটা ক্যারেকটারের বিল্ডআপ নিঁখুত । রোমান্স আছে , কমেডি আছে , শরীরের কাঁটা দেওয়া একশান আছে কিন্তু দুঃখের কথা হচ্ছে স্লাম ডাঙ্ক , কুরোকো , হাইয়াকু এসব এনিমের নাম যত শোনা যায় এটার নাম তত শোনা যায় না । যারা এটা একবার দেখেছে তারাই এটার মহাত্ন্য বুঝতে পারবে ।
এই এনিমের ৩টি সিজন
Hajime no ippo fighting যার ৭৫টা এপিসোড এবং Hajime no ippo rising এবং Hajime no ippo new challanger যার যথাক্রমে ২৪টি আর ২৬টি করে পর্ব । এই এনিমে দেখবেন আর ভালো লাগবে না , তা হয় না । পারফেক্ট স্পোর্টস একশান এনিমে দেখতে চাইলে দেখে ফেলুন হাজিমে নো ইপ্পো বা প্রথম পদক্ষেপ ।
আমার রেটিং :10/10