নিওন জেনেসিস ইভাঙ্গেলিওন + এন্ড অফ ইভাঙ্গেলিওন রিভিউ — Rafiul Alam

Evangelion

“So, where is my dream?
-It is a continuation of reality.
But where is my reality?
-It is at the end of your dream.”

নিয়ন জেনেসিস ইভাঙ্গেলিয়ন আমার প্রিয় ৫ টা এনিমের মধ্যে একটা।২৬ এপিসোডের এই আনিমে মেকা জানরার মাঝে সেরা,Gainax স্টুডিওয়ের শ্রেষ্ঠ উপহার,৯০ দশকের মাস্টার পিস গুলোর মাঝে অন্যতম। কিন্তু আমি এটা সবাইকে রেকমেন্ড করব না।কারণ দুইটা।প্রথমত,অনেকেই এর হাইথট প্লট পছন্দ করে নাই বা করবে না।এইরকম মাথা ঘুরানো প্লট খুব একটা পাবেন না।ধর্ম,ফিলোসফি আর সাইকোলজির এমন কন্সেপ্ট এই আনিমেকে শৈল্পিক স্তরে নিয়ে গিয়েছে।দ্বিতীয়ত,আমার চেনা জানা অনেকে ৯০ এর এনিমে দেখতে পারে না।তাদের কাছে কাউবয় বিবপও “পুরানো “।তা যাই হোক,নিঃসন্দেহে এটা সবচেয়ে বিতর্কিত এনিমের মধ্যে একটা,যা সবচে বেশি এক্সপ্লেনেশনের দাবিদার। তাই আপনি দেখে থাকলে “welcome to the club”

11427238_1604511349803334_4095648615649397673_n

Synopsis: ঘটনার প্রেক্ষাপট ২০১৫ সাল।যখন মানব সভ্যতা হুমকির মুখে angels নামক ভয়াবহ দানবের আক্রমণের জন্য।এই angels গুলো হল চুড়ান্ত অভিযোজিত প্রাণি।যারা কিনা যেকোনো চরম পরিস্থিতিতে প্রাণ ধারণ করতে সক্ষম।তো এই ধ্বংসাত্নক দানবদের কবল থেকে মানুষজনকে রক্ষা করার জন্য কাজ করে ইউএন এর একটি সংস্থা,NERV.তো ঘটনার শুরুতেই দেখা যায় ইকারি শিঞ্জি নামের এক ১৪ বছরের বালককে এঞ্জেলের আক্রমণ থেকে উদ্ধার করে NERV এর হেডকোয়ার্টারে নিয়ে আসেন তরুণী অফিসার ক্যাপ্টেন মিসাতো কাতসুরাগী।যেখানে শিঞ্জি তার বাবা গেন্ডো ইকারির দেখা পায় বহুদিন পরে ।কিন্তু শিঞ্জিকে নিয়ে আসার কারণ ভিন্ন।এঞ্জেলদের আক্রমণ থেকে সবাইকে রক্ষা করার জন্য NERV এর রয়েছে বিশেষ ধরনের অস্ত্র,ইভা ইউনিট।যা হল মূলত অতিকায় রোবট।NERV এর সেরা প্রযুক্তির এই রোবটগুলোই হল মানব সভ্যতার শেষ আশা।জ্বি হ্যা,এই রোবটের ভিতরে বসে তা অপারেট করার জন্যই শিঞ্জিকে নিয়ে আসা হয়,কারণ শুধু তার বয়সেরই কেউ তা চালাতে পারবে।এখন শিঞ্জি কি করবে?সে তো আগে কখনও এমন কিছু দেখেইনি!বিরক্তিকর এক পরিবেশের সৃষ্টি করার পর অবশেষে সে রাজি হয়।এরপর একশন!ড্রামাটিক এক লড়াই করে সে এঞ্জেলের বিরুদ্ধে।পরবর্তী এপিসোডগুলোতে এমনি মানুষ আর এঞ্জেলেদের এপিক লড়াই হয়।NERV এর আওতায় মোট তিনটি ইভা ইউনিট।অন্য দুটির অপারেটর বা পাইলট হল রেই আয়ানামি আর আসুকা ল্যাঙলেই।সম্পূর্ণ ভিন্ন চরিত্রের এই তিনজনের উপর নির্ভর করছে মানব জাতির ভবিষ্যত।আনিমেটা দেখার সময় কিছু মুহুর্ত চূড়ান্ত উত্তেজনা অনুভব করবেন।কিছু ক্ষেত্রে রাগে মাথা চাপড়াবেন।আবার কিছু পারফেক্টলি ক্রাফটেড মুহুর্তে নির্বাক হয়ে যাবেন।তবে আসল খেলা বা ট্রাম্প কার্ড হল লাস্টের দুই এপিসোড।এবং ঘটনা সম্পূর্ণ জানার জন্য তাই এন্ড অফ এভাঙ্গেলিওন দেখা অবশ্যক।

22784_1604511363136666_1035733331435278699_n

Theme Setup,Music and Animation: NERV এর হেডকোয়ার্টারের ভিতরে অন্য রকম এক আবহ দেখানো হয়েছে। বিশাল,দানবতুল্য ইভা ইউনিটগুলো যখন অপারেশনের জন্য তৈরী করা হয়,তখন ইঞ্জিনিয়ারদের অস্থিরতায় প্রতিবার সেই এক এপিক সিচুয়েশন তৈরী হয়।এমনি ৯৫ সালে ২০১৫ সালকে কল্পনা করা হয়েছে।কোন ফিউচারিস্টিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরে অতিরঞ্জন করার চেস্টা করা হয়নি।গল্পের পরিবেশের সাথে খাপ খেয়ে নিতে দর্শকের পরিশ্রম করা লাগবে না।থিম কিছু ক্ষেত্রে ডার্ক মনে হবে,যা এই প্লটের জন্য মাস্ট।শেষের দুই এপিসোডে মাথা ঘুরানো সাইকোলজিক্যাল থিম আপনার সহ্য করা কঠিন হবে। ধর্মীয় বিষয়গুলো উল্লেখ করার সময় অদ্ভুত সুন্দর ফিলোসফিকাল অনুভূতি পাবেন।এন্ড অফ এভাঙ্গেলিওনে যার চুড়ান্ত পরিণতি দেখবেন।আর ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকের কথা বলতে গেলে সবার আগে বলব এপিসোড ২২ এর এঞ্জেল আক্রমণের সময় বিটোভেনের সিম্ফনি নাইন।Cowboy Bebop এর Green Bird এর পর এত ওয়েল ক্রাফটেড সিন আমি দেখিনি।ও হ্যা, আরেকটাও আছে,এন্ড অফ এভাঙ্গেলিওনের সুইট ডেথ।অপেনিংটাতো সবাই শুনেছেন, Zankoku na Tenshi. আর এন্ডিংটাও আমার খুব প্রিয়,Fly me to the moon.বিশেষ করে প্রায় প্রতিটা এপিসোডে নতুন স্টাইলের এন্ডিংয়ের বিষয়টা ভালই ছিল।সাইকোলজিক্যাল অংশে শিঞ্জির ভায়োলিনের কথাও বলতে হয়।এইবার আসি আনিমেশনে,অ্যাকশন সিনগুলো নিয়ে কোন অভিযোগ নেই।কিন্তু কিছু কিছু সিন অতিরিক্ত লম্বা।আমার মনে হয় বিষয়টা অভারলুকড হওয়া নির্মাতারা ডিজার্ভ করে।কারণ তখনকার স্বল্প প্রযুক্তি নিয়েও তারা অসাধারণ আর্টওয়ার্ক উপহার দিয়েছেন।আমরা ধারণা করতে পারি প্রতিটি ফ্রেম হাতে আঁকার ব্যাপারটা কতটা শ্রমসাধ্য।

11401294_1604511529803316_4712263915210155291_n11140315_1604511533136649_907437397840372071_n

Characters Setup: আসল জায়গায় আসলাম এইবার।এই সিরিজের সব চরিত্রই কেমন জানি ব্রোক।এই আনিমের যত সমালোচনা করা হয়,তার প্রধান কারণই মনে হয় ইকারি শিঞ্জি।তো এই ইকারি শিঞ্জিকে সবার বিরক্তিকর লাগার মূল কারণ হল সে দূর্বল প্রকৃতির বিষন্ন মনের কিশোর।বেশিরভাগ সময় পরিস্থিতির দাবির দিকে কোন পাত্তা দেয় না।তবে সত্যি বলতে,আমার শিঞ্জিকে কখনও বিরক্তিকর মনে হয়নি।বরং ওকে নিয়ে সাইকোলজিক্যাল সিনগুলি অনেক বেশি পাওয়ারফুল ছিল।শিঞ্জির পরে আসে রেই আয়ানামির নাম।শান্ত চরিত্রের।কিন্তু শুরু থেকেই কিছু লুকানো হচ্ছে,এমন আভাস পাবেন।এর পর ক্যাপ্টেন মিসাতো কাতসুরাগি,সিরিজের সবচেয়ে প্রাণউচ্ছল চরিত্র।বিপদজনক পরিস্থিতিতে সবচেয়ে উদ্যমী।ইকারি শিঞ্জিকে সহ্য করার জন্য উনাকে আমার বেশি ভালো লেগেছে।কিন্তু তার অতীত ঘটনা বেশ ট্রাজিক।সিরিজের কয়েক এপিসোড যাওয়ার পর ইতিহাসের সবচেয়ে আলোচিত tsundere আসুকা ল্যাঙলেইয়ের আগমন ঘটে।তারও বলার মত ব্যাকস্টোরি আছে।এছাড়াও রিটসুকো,শিঞ্জির বাবা গেন্ডো ইকারি,শিঞ্জির মা,কোজো,রিটসুকোর মা, সবারি একই সুত্রে বাধা অতীত সুন্দরভাবে তুলে ধরা হয়েছে।চরিত্রগুলো সিরিজের অন্যতম আকর্ষণ।তাই এই বিষয়ে হতাশ হবেন না।সব ক্যারেকটারকেই আলাদাভাবে অনুভব করবেন।

11427218_1604511403136662_2287385630477565425_n

Overall Rating:
MAL Rating : 8.3,End of Evangelion:8.2
My Rating : 9.6

Opening: https://www.youtube.com/watch?v=wQq8yLco070

Ost playlist: https://www.youtube.com/watch…

Sweet Death: https://www.youtube.com/watch?v=BAmko4fvkC0

Fly me to the moon: https://www.youtube.com/watch?v=RF59-SNAi-s

1902869_1604511619803307_6098738166043621905_n

Comments