Love Live! Sunshine!! [রিভিউ] — Imamul Kabir Rivu

Love Live Sunshine 1

Love Live! Sunshine!! 
Episode: 13
Genres: Music, Slice of Life, School

লাভ লাইভ আনিমেটার জনপ্রিয়তা এখানে একেবারে নাই হলেও, জাপানের অন্যতম সফল ফ্র্যানচাইজগুলোর একটা হল লাভ লাইভ। আর কেন হবে আগের কাহিনী একেবারে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত একটা পার্ফেক্ট স্টোরি বলতেই হবে এর সাথে এক অসাধারণ ক্যারেক্টার ডেভেলপমেন্ট, শুধু তাই না মিউজ আইডোল গ্রুপটার প্রত্যেকটা চরিত্রই অনেক উইনিক এবং অনেকভাবেই দর্শকের মনকে আকর্ষণ করে, এই কারণগুলোর জন্যেই বাইরে এর ফ্যানবেজ এতটা ক্যানসারাস এবং সেরা চরিত্রকে এ নিয়ে বলতে গেলে ভক্তদের মাঝে মারামারি লেগে যাওয়ার মত। আসলে মানুষ ভালো জিনিশের কদর করবে এটাই স্বাভাবিক। যাই হোক, আগের সিরিজের এত সফলতা পেয়ে, সিরিজটার অন্য এক সেটিং-এর উপর এক স্পিন-অফ সিরিজ হিসেবে গত বছরে বের হয় সানশাইন।

কাহিনীর প্লট লাভ লাইভের মুভির পর পর সময়েরই, সেখানে মিউজ এখন অনেক জনপ্রিয় এক আইডোল গ্রুপ, যা মিউজের গন্তব্য ছিল আর কি। এদেরকেই অনুপ্রেরণা হিসেবে দেখে সিরিজের প্রধান চরিত্র চিকা এবং নিজেদের স্কুলে এক স্কুল আইডোল গ্রুপ খুলতে চান তার বান্ধবী ইয়ৌকে নিয়ে। কিন্তু তাদের স্টুডেন্ট কাউন্সিলের ডাইয়া কোনমতেই তাদের মেনে নিবে না। এরপর তাদের উরানোহোশি গার্লস হাইস্কুলে ট্রান্সফার স্টুডেন্ট হিসেবে আসে সিরিজের আরেক প্রধান চরিত্র রিকো। কোনমতে তাকে রাজি করিয়ে ইয়ৌ, রিকো এবং চিকা এই ৩ চরিত্র মিলে তৈরি করে আইডোল গ্রুপ Aqours এবং এই গ্রুপ কিভাবে আরও বড় হয়, মূলত একটা পার্ফেক্ট শেপে আসে এ নিয়েই সানশাইনের মূল কাহিনী। কাহিনী অনেকটা আগের সিরিজটার মতই চলে, তবে সেটা আনিমেটার প্রথমার্ধ। পরের দিকে যেয় ঠিকই নিজের গতিতেই আগাতে থাকে সানশাইন। তবে আগের লাভ লাইভের প্রতিচ্ছায়া যে এই সিরিজে অনেক ভালোভাবে আছে, তা উপলব্ধি করতে পারবেন বিভিন্ন ধাপে ধাপে। কিন্তু তাও সব মিলায় উপভোগ করার মত এক কাহিনী সানশাইন।

Love Live Sunshine 2

সানশাইনের আর্ট অনেক বেশি সুন্দর। আগের সিরিজের তুলনায় ব্যাকগ্রাউন্ডের অ্যানিমেশন বহু গুণের সুন্দর করেছে আর সাথে সিজি বহু গুনের কম। সিরিজের প্লট যেহেতু টোকিয়ো থেকে অনেক দূরের এক এলাকায়, যেটা কি না একেবারেই সমুদ্রের পাশে, তাই আনিমেটায় সমুদ্র এবং বাকি নানা রকম প্রাকৃতিক দৃশ্যের অ্যানিমেশন অনেক সুন্দর এবং যত্ন করে বানানো হয়েছে, একেবারে তাকায় থাকতে মন চাবে এরকমই। বিভিন্ন মুহূর্তে চমৎকার এনিমেশনের কাজ দেখিয়েছে এই আনিমের অ্যানিমেটররা।

জন্রায় মিউজিক আছে, তো OST যে অনেক ভালো হবে এটাই স্বাভাবিক। OP-ED দুইটাই অনেক সুন্দর গান, আনিমের থিমের সাথে মানানসই এবং অনেক উপভোগ করার মতই আর কি। আর এছাড়া আইডোল গ্রুপগুলোর গানগুলো তো আছেই। তবে লাভ লাইভ সিরিজে কেন জানি রাইভাল গ্রুপগুলোর গানগুলো অনেক বেশি ভালো হয়। আগের সিরিজেও A-Rise-এর গানগুলো বেশি ভালো লাগছে এখানেও Saint Snow মাত্র একটা গান গেয়েছে কিন্তু ওটাই আমার কাছে সবচেয়ে সেরা ইনসার্ট সং লেগেছে। এছাড়া Aqours-এর গানগুলোও ভালো ছিল তবে তাদের যেই দুইটা গান সবচেয়ে ভালো লাগছে সেইটা সিরিজে ছিল না।

সিরিজের ৯ জন প্রধান চরিত্র এবং একেকজনের কাজকর্ম একেকরকম, কিন্তু সবার কাজকর্ম দেখেই বহু মজা পাওয়ার মত। এখানে প্রত্যেক চরিত্রের মাঝেই মিউজের একেকজনের ইনফ্লুয়েন্স অনেক বেশি রকমের ছিল। সানশাইন অনেকটা লাভ লাইভের প্রথম সিজনের মত ছিল, পুরো আইডোল গ্রুপটাকে একত্রে নিয়ে আসা নিয়ে। তাই আগের লাভ লাইভের মত সিরিজের চরিত্রগুলো সেরকম আপন হয়ে উঠবে না, যা হইছিল আগের সিরিজেরও দ্বিতীয় সিজনে। সানশাইন আরেক সিজন পাইলে তখন সিরিজটার চরিত্রগুলোর ইম্প্রুভমেন্ট আরও ভালোভাবে চোখে পরবে কেননা সিরিজ যেখানে শেষ করেছে এখন মাত্র তারা নিজেদের লক্ষ্যের দিকে আগানো শুরু করছে। আর সানশাইনের ভয়েস অ্যাক্টিং অনেক বেশি ভালো ছিল, সেইয়ুগুলো চরিত্রগুলোর ইউনিকনেস ফুটে তুলতে সক্ষম। আর আগের সিরিজের মত এখানেও সিরিজের মূল চরিত্রের সেইয়ু সব নবাগত সেইয়ু, কিন্তু তাদের কাজে এর একটুও প্রতিফলন ঘটে নাই যে তারা নবাগত।

লাভ লাইভের কাহিনী অনেক সুন্দর, তাই আমি বলবো এখনও না দেখে থাকলে দেখতে পারেন খারাপ লাগবে না। আর আগের সিরিজ দেখে থেকে সানশাইন এখনও শুরু না করলে বলবো সানশাইনও শুরু করে দিন, ভালো লাগবে।

Love Live Sunshine 3

Kotoura-san [রিভিউ] — Imamul Kabir Rivu

Kotoura-san 2

Kotoura-san
Genre: Comedy, Drama, Romance, School
Episode: 12

ছোট কিছুর মাঝে বেশ ভালো আনিমে খুজছেন তাহলে কোতোউরা-সান সেরা সাজেশনগুলোর মাঝে একটা। শুরু থেকে শেষ অত্যন্ত পার্ফেক্ট একটা জিনিস এই আনিমে।

অত্যন্ত হাসি-খুশি একটা আনিমে এটি কিন্তু কাহিনীর শুরুটা হয় বেশ ডার্কভাবে। কেননা সিরিজের প্রধাণ চরিত্র কোতোউরা হারুকা হল এমন একজন যিনি কি না আশে পাশে সবার মনে কি আছে তা শুনতে পারে। আমরা যতই এরকম কোন ক্ষমতার আশা করি না কেন, আসে পাশের মানুষ যখন এটা বুঝতে পারবে তখন আপনার থেকে দূরে থাকবে এটাই স্বাভাবিক। এই নিষ্ঠুর বাস্তবতা এড়িয়ে যেতে পারেননি কোতোউরাও। যখন থেকে সবায় বুঝা শুরু করে তার এরকম অতিপ্রাকৃতিক ক্ষমতা আছে, তার ক্লাসমেট, বন্ধুৃ-বান্ধব থেকে শুরু করে তাকে ছেড়ে চলে যান এমনকি তার পিতা-মাতাও। এভাবেই একা একা বড় হয়ে উঠে কোতোউরা তার মিড্ল স্কুল পর্যন্ত। তবে তার জীবনটা পরিবর্তন হতে থাকে হাইস্কুল থেকে, মানাবে নামক এক ছেলের সাথে দেখা হওয়ার পর। মানাবে অত্যন্ত সড়ল একজন চরিত্র যার মাথায় কি না সারাদিন পার্ভার্টেড চিন্তা-ভাবনা ছাড়া কিছু ঘুরে না। এ জিনিস নিয়ে কোতোউরারও কম জ্বালাতন সহ্য করতে হয় না, কিন্তু এরকম একজনই তার আপন হয়ে উঠছে যখন কি না সবায় তাকে উপেক্ষা করে তাই তাকে তো আর দূরে সরানো যায় না। এরপর ঘটনাক্রমে কোতোউরার সাথে খাতির হয় তার ক্লাবের সেনপাইদের সাথে মিফুনে এবং মুরোতো সাথে তার বন্ধু হয়ে উঠে মোরিতানি।

বেশ ডার্কভাবে শুরু হওয়া সিরিজটা বুঝার আগেই এক হাসি খুশি আমেজ নিয়ে আসে। কাহিনী কিছুটা গভীর হতে থাকলেও মুহুর্তের পর মুহুর্ত থাকে আকস্মিক কমেডি। তবে রোম্যান্স অংশটাও বেশ আকর্ষণপূর্ণ হতে থাকে এবং সাথে কাহিনী এভাবেই আগাতে থাকে যেন আপনাকে এরপর কি হবে সেটা দেখার জন্য বসিয়ে রাখবে। মানুষের উপর আস্থা হারিয়ে ফেলা কোতোউরা কিভাবে আস্তে আস্তে তার হারানো মানুষ ফিরে পায় এটা নিয়েই আনিমের মূল কাহিনী।

সিরিজটার এক আকর্ষণীয় দিক হল এখানকার চরিত্রগুলো। প্রত্যেকটি চরিত্রই ব্যতিক্রমী এবং বেশ মজাদার। ঘটনার ক্রমে সবাইকে ভালো লেগে উঠার মত। এছাড়া চরিত্রের ডিজাইনটাও ছিল ব্যতিক্রমি তবে কোনভাবেই দৃষ্টিকটু নয়।

সিরিজের আর্টটা তেমন আহামোরি কিছু নয়। ব্যাকগ্রাউন্ড আর্ট অত্যন্ত সাধারণ। দেখেই যে চোখ ঝলসায় দিবে সেরকম কোন আর্টের ধারে কাছে নয় সিরিজটির আর্টটা তবে খারাপ যে লাগবে না তার গ্যারান্টি দিতে পারি। তবে আর্ট যেমনই হোক না কেন সিরিজটার ওপেনিং এবং এন্ডিং অনেক মিষ্টি। সিরিজের ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকগুলো অতি সাধারণ ছিল। বলবো যে ব্যাকগ্রাউন্ডের সাথেই মিশে গেছে আলাদা করে কানে এসে বাধেনি। কিন্তু ওপেনিং গানটা অনেক সুন্দর এবং এত কিউট যে পুরো ডায়াবেটিস ধরিয়ে দেওয়ার মত জিনিস। ওপেনিং গানটি মেগুমি নাকাজিমার গাওয়া (যিনি কি না কাঙ্কোলেতে গোয়া, ইবুয়া, মিকুমা এদের কণ্ঠ-অভিনেত্রী) তবে তিনি কোন চরিত্রের কণ্ঠ দেননি এখানে (অবশ্য একজন গায়িকা হিসেবেই তিনি বেশি খ্যাতিমান)। এছাড়া এন্ডিং গানগুলোও ঠাণ্ডা মেজাজের এবং বেশ সুন্দর।

Kotoura-san 1

কোতোউরার কণ্ঠে কানেমোতো হিসাকোর কাজ অত্যন্ত শ্রুতিমধুর ছিল। তার সফ্ট টোনের চরিত্রেরগুলোর একটি কোতোউরা। এছাড়া মিফুনের কণ্ঠে কানা হানাজাওয়ার কাজ ছিল নিখুত । শিমোনো হিরো আর ফুকুশিমা জুনের জন্যও মানানসই রোল ছিল মুরোতো এবং মানাবে। আর কুবো ইয়ুরিকা মূলত লাভ লাইভের হানায়োর জন্য সবচেয়ে পরিচিত, তার শুনা সেরা রোলগুলোর একটা মোরিতানি। ইনৌয়ে কিকুকো (কুমিকো) এবং ওয়াতানবে আকেনো (সুকিনো) এদের কণ্ঠ অভিনয়ও ছিল অত্যন্ত নিখুত। এছাড়া সিরিজের এক-দুই লাইন পাওয়া চরিত্রগুলোর সেইয়ুদের নাম শুনলেও চোখ মাথায় উঠবে, এই তালিকায় ছিল তানেদা রিসা, উচিয়ামা ইয়ুমি, আকাসাকি চিনাৎসু, তাকাহাশি মিকাকো, ওনিশি সাওরি এদের মত সেইয়ুদের নাম । অবশ্য তখন তাকাহাশি মিকাকো ছাড়া আর কেউই তেমন কোন রোল পায় নাই।

সিরিজটার রোমান্সটা অনেক সুন্দর ছিল, বিল্ডাপটা অনেক পার্ফেক্ট ছিল, সব মিলায় কোন খুত নাই এরকম একটা সিরিজই হয়ে উঠেছে। এছাড়া আপনাকে যতই দূরে ঠেলে দেক না কেন অথবা যে কারণেই আপনার সাথে থাকুক না কেন, কিছু কিছু মানুষ যে কখনই আপনাকে মন থেকে দূরে ঠেলে দিবে না এ বিষয়টা অনেক সুন্দর করে তুলে ধরেছে। অতএব, কারো সাথে ঝগঢ়া এ নিয়ে মন খারাপ থাকলে আমার মতে ওই সময়ে দেখার জন্য পার্ফেক্ট আনিমে হল কোতোউরা-সান। তবে অন্য সময়ও বসে দেখলে আপনাকে একটুও নিরাশ করবে না আনিমেটি। তাই যত তারাতারি পারুন দেখে ফেলুন এই আনিমেটি।

ব্যক্তিগত রেটিং – ৯.৫/১০

২০১৬ সালে আমার দেখা সেরা আনিমেগুলো — Imamul Kabir Rivu

২০১৬ সালে আমার দেখা সেরা আনিমেগুলো:

#4

Anime: Kono Bijutsubu ni wa Mondai ga Aru
Episodes: 12
Genres: Comedy, Romance, School

কখনও এরকম কোন ভালোবাসায় জড়িয়েছেন, যিনি কি না কখনই আপনার দিকে ফিরে তাকায়নি, konobiju 1যত ক্লুই দেন না কেন যে তার প্রতি আপনার এক অন্যরকম দূর্বলতা আছে সে কখনই বুঝেনি। নিজের দুনিয়ার চরিত্রদের নিয়েই পরে রয়েছে, আপনার সাথে ভালো খাতির থাকা সত্বেও কখনও আলাদা রকম ভালোবাসা হয়নি তাও আপনি নিজের মত ভালোবেসে গেছেন সেই মানুষটিকে। এরকম এক প্রেমের মাঝেই জড়িয়ে পরে এই আনিমের প্রধাণ চরিত্র উসামি মিজুকি। তবে কথাগুলো শুনে কোন কষ্টের প্রেমকাহিনী মনে হলেও আনিমেটা আসলে এর ১৮০ ডিগ্রি উল্টো জিনিশ। অতি সাধারণ একটা রমকম আনিমে হলেও, একটা রমকম আনিমে হিসেবে সবদিক থেকে সফল এমন কোন আনিমের উদাহরণ কোনোবিজু।

কাহিনীর মূল সেটিং এক আর্টক্লাব ঘিরে। সেখানেরই দুইজন সদশ্য উসামি মিজুকি এবং উচিমাকি সুবারু, উসামির সুবারুর প্রতি ভালোবাসা জন্মালেও, সুবারুর মন পরে থাকে একগাদা মেয়ের উপর। তবে তারা 3D নয় বরং 2D. তার 3D মেয়েদের প্রতি নুন্যতম আকর্ষনটুকুও নাই। এবং তার আর্টক্লাবে ঢুকার মূল কারণও এক পার্ফেক্ট ওয়াইফু আঁকা। বিভিন্ন রকম উপায়েই উসামি সুবারুর প্রতি যে তার ভালোবাসা আছে তা প্রকাশ করতে যায় এবং সেউ উপায়গুলো অধিক পরিমাণের হাস্যকর, যা এই আনিমের মূল আকর্ষণ। তবে কাহিনী যে এই দুই চরিত্রকে ঘিরে, তা একেবারেই না। সেই ক্লাবেই রয়েছে আরও চরিত্র যেমন তাদের অলস ক্লাব প্রেসিডেন্ট, কোলে-চান, ইমারি, ইয়ুমেকো সেন্সেই এবং আরও অনেক চরিত্র যারা আনিমেটাতে এক বড় ধরণে রোল প্লে করে। তাদের আর্টক্লাবের ভেতরেই উসামি ছাড়া আর কেউ চারুকলা নিয়ে অতটা সিরিয়াস না এবং তাদের প্রতিদিনের হাস্যকর কাজকারবারই আপনার এই আনিমে আরও বেশি করে উপভোগ করাবে।

আর্ট সবমিলায় ভালো ছিল। খুব অসাধারণ কিছু না তবে সুন্দর। মিউজিকের ব্যাপারেও একই মন্তবই। অতি সাধারণ স্তরের জিনিশ হলেও অনেক বেশি উপভোগ করার মত এক আনিমে। ওপেনিং-এন্ডিং সাধারণ মোয়ে আনিমের মতই।

আনিমেটার মূল আকর্ষণ এর কমেডিক এলিমেন্ট এবং মজাদার চরিত্রগুলো। আনিমের সবকিছু সাধারণ হলেও হাসির মুহুর্তগুল যেই সেই আনিমেতে দেখা যায় না এমন।

এর সাথে ছিল আনিমের অসাধারণ ক্যাস্ট। এরকম অসাধারণ রমকম আনিমেতে হিরোইনের কণ্ঠে সবচেয়ে বেশি ওজাওয়া আরিকেই মানায়। আগে গেক্কান শোজোতেই সাকুরা চিয়োর রোলে তা প্রমাণ করে, এবার মিজুকির কণ্ঠেও তিনি সফল ছিলেন । সাথে উচিমাকি সুবারুর কণ্ঠেও ছিল নাৎস্কি সুবারুর সেইয়ু কোবায়াশি ইয়ুস্কে, এর আগেও এরকম অতি সাধারণ কিশোরদের কণ্ঠ দিয়েছেন এই লোক যেমন আর্স্লান (Arslan Senki) এবং তাকামিয়া হোনোকা (Witch Craft Works) এই থেকে বিবেচনা করলে উচিমাকির কণ্ঠে তিনি সফল তা খুবই স্বাভাবিক ছিল এবং তা হয়েছেও। সাথে কোলে-চানের কণ্ঠে উয়েসাকা সুমিরে এবং ইমারির কণ্ঠে তোয়ামা নাও দুইজনই অনেক ভালোভাবেই চরিত্রগুলোকে তুলে ধরতে পেরেছেন। সব মিলায় কাস্ট সিলেক্টিং অনেক ভালো ছিল এবং এর ফলাফলও ভালো। এছাড়া বাকি চরিত্রদের কণ্ঠেও ছিল নানা মিজুকি, কোমাৎসু মিকাকো, তোকুই সোরা এবং মাওর মত ভালো ভালো সেইয়ু।

সবমিলায় শুধু ২০১৬ না বরং যা যা আনিমে দেখেছি, সবকিছুর মাঝেই কোনবিজু আমার অত্যন্ত প্রিয় একটা আনিমে। যদি রমকম আনিমে আপনার অতিপ্রিয় হয়ে থাকে, তাহলে যত তারাতারি পারুন এই আনিমে শুরু করে দেন।

konobiju 2

#3

Anime: JoJo’s Bizarre Adventures Part 4: Diamond is Unbreakable
Episodes: 39
Genre: Action, Adventure, Comedy, Supernatural, Drama, Shounen

কোন সিরিজ নামকরন অনুসারে এতটা সফল না, যতটা না জোজোর ক্ষেত্রে বলা যায়। পুরো jojo 4-1সিরিজটা আসলেই জোস্টার পরিবারের কোন না কোন সদশ্য সংক্ষেপে জোজোকে ঘিরে ঘটা এক ধারাবাহিক উদ্ভট অভিযান। পার্ট ৪-ও আগের ৩ পার্টের মত এই ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে।

জোজোর এই পার্টের পটভূমি ১৯৯৯ সালে, জাপানের কোন এক স্থানে অবস্থিত কাল্পনিক এক শহর যার নাম মোরিয়োহ। প্রত্যেক পার্টের মত এই পার্টের মূল চরিত্রও এক ভিন্ন জোজো, জোস্টার পরিবারেরই একজন হিগাশিকাতা জোস্কে। যদিও এ পার্টেও পাবেন জোসেফ এবং জোতারোর ভালো পরিমান স্ক্রিনটাইম। পুরো ৩৯ পর্ব জোস্কের মোরিয়ো শহর জুড়ে বিভিন্ন রকম উদ্ভটসব অভিযান নিয়ে হলেও আগের পার্টগুলোর তুলনায় এই পার্টে রয়েছে বেশ ভালো পরিমান নতুনত্ব।

জোজোর আগের পার্টগুলোতে আগে থেকেই এক নির্দিষ্ট লক্ষ ধরেই আগাতে থাকে কাহিনী। কিন্তু এই অংশে জোস্কে, ওকুয়াসু এবং কোইচির অভিযান শুরু হয় এক অজানা লক্ষকে ঘিরেই। কাহিনীর শুরুর দিকটা কিছুটা ধীরে ধীরে আগায়, প্রথমে মনে হবে এ যেন এক স্লাইস অফ লাইফ আনিমে তবে যত পর্ব যেতে থাকে আনিমেটার কাহিনী আস্তে আস্তে জমজমাট হতে থাকে। আর আগের পার্টগুলোর সাথে তুলনা করলে, এ পার্টের ভিলেনের আগমনও তুলনামুলক পরেই ঘটে। তবে জোজো নামটা শুনলেই প্রথমে সবার মনে কোন এক মাচো ব্যক্তির ইমেজ আসে, এই পার্টে তা খুব একটা দেখা যাবে না। এই পার্ট থেকেই ক্লাসিক GAR ভাইব আস্তে আস্তে কমতে থাকবে। এছাড়া আগের পার্টের তুলনায় এবার স্ট্যান্ড অ্যাবিলিটির মাঝেও দেখা যাবে নতুন অনেক কিছু। সবমিলিয়ে পুরা নতুন এক জোজো বলা যেতে পারে।

আর্টের মাঝেও রয়েছে নতুন এক ছাপ। David Productions-এর আনিমে হলেও তারা আগের পার্টের সেই আর্টস্টাইল ফলো করেনি। চরিত্র এবং স্ট্যান্ডের ডিজাইনেও এনেছে ভালো পরিমান পরিবর্তন। আগের ৩ পার্টের আর্টস্টাইলের সাথে অভ্যস্থ থাকলে, এই পার্টের আর্টের সাথে মানায় নিতে সময় লাগবে, কিন্তু পরে খাপ খেয়ে গেলে আর খারাপ লাগবে না। আর যদি আগের আর্টের সাথে অভ্যস্থ না হয়ে থাকেন কিংবা কোন কারণে পছন্দ না হয় তাহলে হয়তো ভালো লাগতে পারে। জোজোর আর্টের সাথে অভ্যস্থ হওয়ার পর এখন পর্যন্ত কেউ এই উইনিক আর্টস্টাইলকে খারাপ বলতে শুনিনি।

আনিমেটার থিমের সাথে আনিমের ওএসটিও মানানসই। মেইন থিমটাই বেশ রক্তগরমকারি এবং যেসকল মুহুর্তে বেজে উঠে, সেই মুহুর্তগুলো আসলেই আরও বেশি উপভোগ্য করে তুলে। এছাড়া আগের পার্টের তুলনায় ওপেনিং-এন্ডিং গানের মিউজিক স্টাইলেও অনেক পরিবর্তন আনলেও এই পার্টের থিমের সাথে তা যথাযথভাবে মেনে গেছে। আর জোজোর প্রত্যেকটা ওপেনিং-এর মত এই পার্টের ওপেনিংগুলোও প্রথমে শুনে না ভালো লাগলেও, আস্তে আস্তে যত শুনবেন ততই নেশায় ধরবে। আর এন্ডিং গান পুরো আনিমেতে একটাই, তা হল Savage Garden-এর ‘I want you’, গানটা হয়তো আগেই অনেকেরই শুনা থাকতে পারে কেননা জোজোর প্রত্যেকটা এন্ডিংই বেছে নেওয়া জনপ্রিয় কোন ইংরেজি গান। এই গানটা আমারও অনেক পছন্দের।

এই সিরিজের এক সেরা দিক হল ক্যারাক্টার ডেভলপমেন্ট। বিশেষ করে ওকুয়াসু, কোইচি, হায়াতো এবং জোসকে এই ৪টি চরিত্রের চারিত্রিক ডেভলপমেন্ট ছিল দেখার মত। এছাড়া পুরো আনিমে জুড়েই দেখা যাবে নতুন অনেক চরিত্র। এদের মাঝে পুরো সিরিজে এক বড় রকম প্রভাব রাখে রোহান কিশিবে, ইয়ুকাকো ইয়ামাগিশি, শিগেচি, রেইমি সুগিমোতো এই চরিত্রগুলো। আর খলনায়ক হিসেবে কিরা অনেক ইয়ুনিক একটি চরিত্র, বছরের সেরা খলনায়কের দাবিদার এ। যদিও ব্যক্তিগতভাবে আমার কিরার চেয়ে বরং ডিয়োকেই খলনায়ক হিসেবেই ভালো লাগে।

সবমিলায় বছরের অন্যতম পার্ফেক্ট আনিমে হিসেবে বিবেচনা করলে, জোজো পার্ট ৪ এই তালিকায় অবশ্যই থাকবে। ক্রেডিট বরাবরের মত এবারও ডেভিড প্রোডাকশনেরই।

jojo 4-2

#2

Anime: Re:Zero kara Hajimeru Isekai Seikatsu
Episodes: 25
Genres: Psychological, Drama, Thriller, Fantasy

re zero 1গত বছরের সবচেয়ে জনপ্রিয় আনিমে কোনটা, এ নিয়ে একটা পোল খুললে হয়তো বেশির ভাগ ভোটই যাবে রি: জিরোর ঘরে। সত্যি বলতে আনিমেটা আসলেই উপভোগ্য ছিল বলেই এত বড় একটা ফ্যানবেজ পেয়েছে। যদিও আনিমেটা নিয়ে মতামত অনেকের অনেক রকম। শুরু থেকেই আনিমেটার একটা মাস্টারপিস হওয়ার অনেক পটেনশিয়াল ছিল তবে ২৫ পর্ব শেষে সেই পর্যায়ের কিছুই হয় নাই, কিন্তু হতাশ করার মত আনিমে একেবারেই না।

রি: জিরো তুলনামূলক ডার্ক একটা আনিমে এক ফ্যান্টাসি সেটিং এর উপর। কাহিনীর শুরু হয় আনিমের প্রধান চরিত্র নাৎসুকি সুবারুকে নিয়েই, সে হঠাৎ করেই এক স্টোর থেকে বের হয়ে বোঝার আগেই এক ফ্যান্টাসির জগতে টেলিপোর্ট হয়ে যায়। এরপর পুরা আনিমে জুড়েই দেখানো হয় সুবারুর উপর বিরতিহীন মানসিক অত্যাচার। সুবারু শুরু থেকেই এই নতুন জগত খুব পছন্দ করে এবং এর সাথে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। এরপর থেকেই নতুন সব অ্যাডভেনচারের জড়িয়ে যান তিনি । যে জিনিশটা আনিমেটাকে আরও ইন্টারেস্টিং করে তুলে সেটা হল সুবারুর মরার পর আবার জীবিত হয়ে আসার ক্ষমতা। অনেকটা রিসেট করার মতই, এর জন্যই হয়তো সিরিজের নাম Re:Zero, শূন্য থেকে আবার শুরু করা । সুবারুর এই ক্ষমতা অনেকটা গেমের এক চেকপয়েন্টে গেম সেভ করার পর যদি আপনার চরিত্র মারা যায় তাহলে সেই চেকপয়েন্ট থেকেই আবার সে রিস্পওন করবে, অনেকটা এরকমই। তবে এই এক ক্ষমতার উপর কাহিনী অনেক নির্ভরশীল। এটা কাহিনীটা অনেক ইন্টারেস্টিং করলেও বিশেষ কিছু গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত আড়াল করে গিয়েছে। এই পুরো অ্যাডভেনচারটা সুবারুকে ঘিরে হলেও সিরিজের আরও দুইটা ভাইটাল চরিত্র আছে তারা হল গল্পের প্রধান নায়িকা এমিলিয় এবং তার ডেমন মেইড রেম। তাদের জন্যই মূলত সুবারুর এত কিছুর মধ্য দিয়ে যেতে হয়। পুরো সিরিজ ৩টা আর্কের উপর বানানো এবং প্রত্যেকটার কাহিনীই আলাদ আলাদাভাবে ভালো। সবমিলায় গল্পটা অনেক ইন্টারেস্টিং, যদিও অনেক গভিরে গেলে সিরিজে ফ্ল-এর অভাব নাই। কিন্তু সেভাবে না চিন্তা করলে, সিরিজটা অপছন্দ হবে না কারো।

সিরিজের আর্টটা দুর্দান্ত। খুব হাসিখুশি মুহূর্ত অনেক উজ্জ্বলভাবে তুলে ধরে হঠাৎ কোন ডার্ক মুহূর্তে ডার্ক আনিমেশন অনেক ভালোভাবে তুলে ধরেছে। সিরিজের ব্যাকগ্রাউন্ড অনেক সুন্দর সাথে চরিত্রের ডিজাইন মনমুগ্ধকর এবং তাদের এক্সপ্রেশনগুলোও ফাটাফাটিভাবে তুলে ধরেছে। আর্টের মাধে এত সুন্দর কালার কম্পোজিশন, সিরিজের সেরা দিকগুলোর একটি।

মিউজিকও ছিল অসাধারণ। ভয়ঙ্কর মুহূর্তগুলোতে যেই মিউজিকটা দেয় সেটা অনেকটা আত্মা কাপানোর মতই। পুরো সিরিজের ইন্সার্ট মিউজিকগুলো অনেক ভালো এবং দৃশ্যের সাথে মানানসই। প্রথম ওপেনিং-টাই গাওয়া কোনোমি সুজুকির, পার্সোনালি অনেক প্রিয় একজন সিঙ্গার, তার প্রত্যেকটা গানই অনেক প্রিয় রিডুও তার ব্যাতিক্রম নয়। তবে ওপেনিং-এন্ডিংগুলো মূলত জমজমাট করে তুলেছে Myth & Roid, এই সিরিজটির আগে তাদের খুব একটা নামডাক ছিল না। কিন্তু তাদের গাওয়া ৩ টি গান Styx Helix, Straight Bet এবং Paradisus-Paradoxum খুবই চমৎকার ছিল, যার প্রথম দুইটি সিরিজের এন্ডিং (Straight Bet যদিও একটি পর্বের এন্ডিং ছিল) এবং আবং শেষটি সিরিজের দ্বিতীয় ওপেনিং। কোন সিরিজে সেই সিরিজের সেইয়ুকে দিয়ে গাওয়ানো কোন গান ওপেনিং-এন্ডিং হিসেবে ব্য়বহর করা নতুন কিছু না। এ সিরিজেও তা ছিল, তাকাহাশি রিয়ের গাওয়া ‘Stay Alive’ এবং মিনাসে ইনোরির গাওয়া ‘Wishing’ অত্যন্ত সুন্দর দুইটা গান ছিল। সিরিজের প্রত্যেকটা গানই বছরের সেরা হওয়ার উপযোগ্য তবে Styx Helix আমার মতে এ বছরের সেরা এন্ডিং।

এন্জোয়মেন্ট এই একটা জিনিশে সিরিজটা অনেক বেশি সফল। সিরিজটা দেখে নানা রকম অনুভুতিই আসছে। কিছু কিছু মুহূর্তে চরিত্রগুলো আপনাকে হাসাবে আবার তার কিছু মুহূর্ত পরই সেই চরিত্রগুলোর কাজকর্ম আপনাকে ক্রিপ আউট করে দিবে। অনেক হরিফিক মুহূর্ত ছিল যা দেখে আপনার অসস্তিকর লাগবে কিন্তু এরপরও বসে থাকবেন “কী হয়? কী হয়?” এটা মাথায় রেখে। সুবারুর ডিপ্রেশনটা যেভাবে আনিমেতে ফুটিয়ে তুলেছে সেটা অসাধারণ ছিল, সুবারুকে দেখেই আপনার খারাপ লাগবে, আবার কিছু কিছু মুহূর্তে তাকে বড়ই প্যাথেটিক মনে হবে, আবার তার কথা বার্তায় নিজের সাথেও মিল খুজে পাবেন। এবং এরপর সিরিজের চরিত্রগুলো বুঝে ওঠার আগেই আপনার অনেক ভালো লাগা শুরু করবে। বুঝতেই পারবেন না কাকে আপনার বেশি ভালো লাগে এমিলিয় না রেম, তবে সিরিজ শেষে বিভিন্ন জনের বিভিন্ন মতামত। কিন্তু আমার কাছে রেম বছরের সেরা গ্রিল চিকেন।

সিরিজের চরিত্রগুলোও অসাধারণ ছিল। সুবারু কোন ওভারপাওয়ার্ড কোন প্রধাণ চরিত্র ছিল না, তার মাঝে অনেকটা বাস্তব কোন মানুষের চরিত্রের রিফ্লেকশনই দেখা গেছে। ওর মত বারবার অপ্রিতীকর মুহূর্তের মাঝে গেলে যে কেউই সে পর্যায়ের মানসিক যন্ত্রনায় ভুগবে, স্বাভাবিক। এছাড়া এতকিছুর মাঝেও শেষ দিকে গিয়ে তার চারিত্রিক উন্নতি দেখার মত। এমিলিয়া প্রত্যেক দিক থেকেই একটা আদর্শ হিরোইন, দেখতে সুন্দর সাথে আত্মনির্ভর। রেম বছরের সেরা ফিমেল চরিত্র এমনেও জিতবে ওমনেও জিতবে, কেননা আর যাই হোক নানা স্তরের ফ্যানবয়দের মন সে কেড়ে নিয়েছে। তবে চরিত্রটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত তার কাজকর্মে অনেক পার্ফেক্ট ছিল বলা যেতে পারে। সাথে তার বোন রামও এক মজার চরিত্র, যার কাজকর্ম নিতান্তই উপভোগ করার মত। এছাড়া সিরিজের বাকি চরিত্রগুলোও আলাদা করে মনে রাখার মতই।

রি: জিরো সব মিলায় একটা ভালো আনিমে বলেই এটার ফ্যানবেজটা এত বড়। আর এত বড় ফ্যানবেজ নানা রকম ভক্ত হবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু ফ্যানবেজের আচরণের উপর বিচার করে একটা আনিমে অপছন্দ করাটা বোকামি। নিজে থেকে আনিমেটা শুরু করলে, এটা খারাপ লাগর কোন কারণ দেখি না, তাই এখনও আনিমেটা না দেখে থাকলে, শুরু করে ফেলুন এবং নিজের মতামত দিয়েই বিচার করুন।

re zero 2

#1

Anime: New Game
Episodes: 12
Genre: Slice of Life, Comedy

new game 1গত বছরের যে কয়টা আনিমে দেখেছি সবচেয়ে বেশি মজা পেয়েছি এই আনিমেটা দেখেই। যদিও মনের ভেতর AOTY-এর ক্যান্ডিডেট আরও দুটি আনিমে, কোনোসুবা এবং আনসাৎসুর দ্বিতীয় সিজন। বাকি দুটো নিয়ে কথা হলেও, সেই তুলনায় আনিমেটা নিয়ে কম কথা বলা হয়। তাই ঠিক করলাম এটা নিয়েই লেখি।

আনিমেটার কাহিনী এক গেম ডেভেলপার কম্পানিকে ঘিরে। যেহেতু আনিমেটা মূলত ‘cute girls doing cute things’ তাই এখানে সব চরিত্রই মেয়ে। সিরিজের প্রধাণ চরিত্র সুজুকাজে আওব, যিনি কি না হাইস্কুল থেকে পাশ করে একেবারে নতুন চাকুরিজিবি হিসেবে সে কম্পানিতে কাজ করা শুরু করেছে। সেই কম্পানিতে ইয়াগামি কো নামের এক ক্যারেক্টার ডিজাইনারের অধীনে এক টিমের সদশ্য হয় আওবা, আওবার পশাপাশি টিমের বাকি সদশ্য হাজিমে, হিফুমি এবং ইয়ুন। মূলত এই টিমের নানা রকম কাজকর্মকে ঘিরেই এই আনিমের কাহিনী। কাহিনীর সাথে সাথে গল্পের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উছে আরও কিছু চরিত্র যেমন নেনেচ্চি, আহাগন এবং তোয়ামা রিন। এই টাইপ আনিমের কথা উঠলেই অনেকেরই প্রশ্ন থাকে “শিরোবাকোর মত নাকি?” এ সিরিজের কাহিনী শিরোবাকোর মত এতটা সিরিয়াস না, পুরোটাই কেমনে গেম তৈরি করে কিংবা ডেভেলপারদের নানা রকম কষ্ট তুলে ধরে না। আবার পুরো সিরিজটা K-On!-এর মত ফুয়াফুয়া থিমও না। এই দুই আনিমে নিয়ে একটা স্কেল হিসেবে মাপলে, মাঝস্থানে থাকবে New Game। সিরিজে বেশির ভাগ সময়ই একটা লাইট হাসিখুশি থিম নিয়ে থাকলেও, আনিমের শেষের কিছু মুহূর্ত বেশ সিরিয়াস। শেষে গিয়ে আপনার সিরিজের চরিত্রগুলোর প্রতি এক আলাদা রেসপেক্ট ও ভালোবাসা, বিশেষ করে ইয়াগামি কো-এর প্রতি । এর বেশি কিছু বলতে গেলে স্পয়লার হয়ে যাবে ।

সিরিজের আর্টটা অনেক সুন্দর। বিশেষ করে ব্যাকগ্রাউন্ড, সাধারণত মোয়ে আনিমেতে এনিমেশনের এত স্মুথ কাজ দেখা যায় না। সে দিক থেকে নিউ গেম ব্যতিক্রম। ডোগা কোবোর বাকি কাজগুলোর তুলনায় নিউ গেমের আর্ট সবচেয়ে সেরা। চরিত্রের ডিজাইনগুলোও অনেক সুন্দর, খালি চোখগুলো বড় বড় কিন্তু এ নিয়ে হয়তো কারও খুব একটা আপত্তি থাকার কথা না। আর যাই হোক সিরিজের, কালারিংটা পুরোই অন্যরকম এক সৌন্দর্য।

new game 2

সিরিজের সাউন্ডট্র্যাক ভালোই। খুবই আহামোরি কিছু না, অতি সাধারণ সাউন্ডট্র্যাক। ওপেনিং এবং এন্ডিং গানও অনেক কিউট সাথে মেলোডিয়াস। দুইটা গানের ক্রেডিটই সিরিজের মেইন কাস্টের। আমার কাছে অনেক বেশিই ভালো লেগেছে। সিরিজের কাস্টের ভয়েস অ্যাক্টিংও ছিল অসাধারণ। একেবারে অভিগ্য সেইয়ুগুলোর মাঝে ছিল কায়ানো আই (তোয়ামা রিন), হিকাসা ইয়োকো (ইয়াগামি কো) এবং কিতামুরা এরি (হাজুকি শিজুকু) যারা কিনা কোম্পানির অভিজ্ঞ ডেভেলপারদেরই কণ্ঠ দিয়েছে। কিন্তু সিরিজের বাকি চরিত্রদের সেইয়ু একেবারেই নবাগত, কিন্তু তাদের কাজে তা মনে হয়নি। প্রত্যেকটা চরিত্রর কণ্ঠে তাদের স্বভাব এবং ব্যক্তিত্ব অনেক সুন্দর ভাবেই তুলে ধরেছে।

চরিত্রগুলো স্টেরিওটিপিকাল মোয়ে আনিমের চরিত্রগুলোর মতই। প্রধান চরিত্র আওবা যিনি কি না উচ্চাকাঙ্ক্ষী একটা চরিত্র সাধারণ মোয়ে হিরোইনদের মতই তবে খুব একটুও ক্লামজি না। সিরিজের প্রত্যেকটা চরিত্র আলাদা রকম। এত ডাইভার্স চরিত্রের ইন্টারেকশনটাই সিরিজের মূল আকর্ষণ এবং সিরিজটা এতটাই মজার করে তুলেছে।

সবমিলায় সিরিজটা এন্জয়মেন্টের দিক থেকে সফল। সিরিজের বলতে গেলে সবকিছুই অনেক উপভোগ করেছি। শুধু মোয়ে আনিমের স্ট্যান্ডার্ডেই আনিমেটা অনেক ভালো একটা আনিমে না, স্লাইস অফ লাইফের স্ট্যান্ডার্ডে মাপলেও গত বছরের সেরা আনিমেগুলোর একটা। কমেডি কিংবা এক সুন্দর স্লাইস অফ লাইফ উপভোগ করবো এরকম মোন-মানষিকতা নিয়ে বসলে যে কেউ সিরিজটি ভালো লাগবে। খুব বেশি না মাত্র ১২ পর্বের মধ্যে অনেক মজাদার এবং সুন্দর একটি কাহিনী নিউ গেম, সময় নিয়ে দেখে ফেলুন।

new game 3

Ansatsu Kyoushitsu 2nd Season [রিএকশন] — Imamul Kabir Rivu

Ansatsu Kyoushitsu

আনসাৎসু কিয়ৌশিৎসুর দ্বিতীয় সিজন দেখে শেষ করলাম । প্রথম সিজন শেষ করায় অন্যতম প্রিয় সিরিজগুলোর একটা হয়ো উঠে এই আনিমেটা । দ্বিতীয় সিজন দেখার পর আমার সেরা ১০-এ একটা পার্মানেন্ট স্থান গেড়ে নিছে সিরিজটা । আনিমেটা এত বেশি ভালো লাগছে বলার মত না, সত্যি কথা বলতে সিরিজটায় কোন খুত খুজে পাই নাই সবকিছুই পার্ফেক্ট লাগছে আমার কাছে । এন্ডিংটা খুব কষ্টের হলেও, অনেক ভালো ছিল হয়তো সেরা এন্ডিংই বলবো আমি ।

কাহিনীটা খুব এক্সেপশোনাল যে কারণে প্রথম থেকেই ভালো লাগছে । যেভাবে কাহিনী আগাইছে খুবই ভালো লাগছে । আর শেষের ৪টা পর্ব অনেক বেশি ইন্টেন্স ছিল । আনিমে সবরকম এন্জোয়মেন্ট দিতে সক্ষম হইছে আমার কাছে । একসাথে হাসির মুহুর্ত ছিল, কষ্টের মুহুর্তও ছিল, অনেক সুথিং পর্ব ছিল, অনেক ইন্টেন্স পর্বও ছিল । অনেক এক্সেপশোনাল একটা ভালো শৌনেন আনিমের উদাহরণ আনসাৎসু কিয়ৌশিৎসু । আমার দেখা এই পর্যন্ত সেরা শৌনেনগুলোর একটা আনসাৎসু । আর শেষ দুই পর্ব পুরা আনিমেটার অবজেক্টিভ পূর্ণ করে দিয়েছে, বিষয়টা মানতে কষ্ট হলেও ।

কোন আনিমেতে একটা পুরা ক্লাসরুম ভর্তি চরিত্র থাকলে আসলেই মনে রাখতে কষ্ট লাগে । কিন্তু এখানে প্রত্যেকটা চরিত্রই মনে একটা ছাপ রেখে গেছে ঘটনাক্রমে । আর কোরো সেনসেই-এর কথা না বললেই নয়, এরকম অসাধারণ চরিত্র আমার আসলেই কম দেখা হইছে যতগুলো আনিমে দেখছি । সিরিজের একেবারে প্রথম দুই পর্বই তাকে খারাপ লাগবে কিন্তু আস্তে আস্তে বলে দিতে পারি আপনার দেখা অন্যতম সেরা চরিত্রগুলোর একটা হয়ে উঠবে কোরো সেন্সেই । আর এইখানে দ্বিতীয় সিজনে প্রত্যেকটা চরিত্রের এত ভালো ডেভেলপমেন্ট দেখাইছে, এটা আসলেই বলার মত ।

অ্যানিমেশন খুবই ভালো লাগছে । হয়তো চোখ ধাধানো তেমন কিছু নয় কিন্তু দেখে অনেক ভালো লাগবে এরকম অ্যানিমেশন । সিরিজের আর্ট অনেক ভালো লাগছে আমার কাছে, কালার স্যাচুরেশনটা বেশি সুন্দর লাগছে ।

আর সিরিজের OST আমার দেখা অন্যতম সেরাগুলোর একটা । প্রত্যেকটা ইন্সার্ট মিউজিক অনেক বেশি ভালো ছিল আর আনিমের মাঝে অনেক পার্ফেক্টভাবে মানানসই ছিল । প্রত্যেকটা ওপেনিং এন্জোয়েবল ছিল, অনেক বেশি ভালো । দ্বিতীয় সিজনের দুইটা ওপেনিং-ই বছরের সেরা ওপেনিং হওয়াটা ডিজার্ভ করে আমার কাছে । একই কথা বলব এন্ডিং গানগুলোর ক্ষেত্রে । প্রত্যেকটা এন্ডিংই সফ্ট ছিল এবং অনেক সুন্দর, শিয়োন মিয়াওয়াকির গানগুলো আসলেই অনেক বেশি সুন্দর ।

এখন আমার প্রত্যেক পস্টেরই ‘MUST’ একটা জিনিশ ভয়েস অ্যাক্টিং এই জিনিশ নিয়ে কথায় আসি । ফুকুয়ামা জুনের আমার দেখা সবচেয়ে এক্সেপশোনাল রোল কোরো সেন্সেই, এই লোক এত পার্ফেক্ট একটা কাজ করছে কোরো সেনসেই-এর হয়ে এরকম হয়তো আর কেউ পারতো না । ফুচিগামি মাই-এর বাকি যেই রোলগুলো শুনছি একটার সাথেও নাগিসার কণ্ঠ ম্যাচ করে না । ভাবতেই অবাক লাগছিলো যে এই মহিলা গুপে নিশিজুমি মিহোর সেইয়ূ । কিন্তু এরকম পার্ফেক্ট একটা ট্র্যাপে কণ্ঠ দিতে পারছে বলেই মহিলা স্বার্থক । ওকামোতো নোবুহিকোকে কার্মার কণ্ঠে অনেক সহজেই ধরা যায় । আয়া সুজাকিও কাঙ্কোলে বাদে যতগুলো আনিমেতে দেখছি প্রত্যেকটায় একই রকম কণ্ঠ দিয়ে চালায় গেছে, তাই কায়ানোকে ধরতেও কোন সমস্যা হয় নাই । মামোরু মিয়ানো, কানেমোতো হিসাকো, ইতৌ শিজুকা, উয়েদা কানা, কাওয়াসুমি আয়াকো, হায়ামি শৌ, নুমাকুরা মানামি, সুগিতা তোমোকাজু, ইয়াহাগি সায়ুরি, শিমাজাকি নোবুনাগা, সাতৌ সাতোমি এদের প্রত্যেককেই খুব সহজে ধরতে পারছি । আর এদের সকলের কাজই নিখুত লাগছে । ফুজিতা সাকির রিৎসু রোলটা অনেক বেশি এক্সেপশোনাল ছিল, আগে অনেকগুলো রোল দেখেছি উনার কিন্তু কারও কণ্ঠের সাথে রিৎসুর মিল পাই নাই । আর ওসাকা রিয়ৌতাকেও কেন জানি ইসোগাই হিসেবে ধরতে পারি নাই । কিন্তু সবমিলাম সবার ভয়েস অ্যাক্টিংই পার্ফেক্ট লাগছে ।

হয়তো আনিমেটা যতটা ভালো তার চেয়ে একটু বেশি বাড়ায় বলছি, কি আর করার পুরা দমের অন্ধ ফ্যানবয় হয়ে গেছি আনিমেটার ।

Rating: 10/10 ~!

Behind the Voices – 24

 

Morita Masakazu

‘Quality over quantity’ কথাটা হয়তো মোরিতা মাসাকাজুর জন্য খুব ভালোভাবেই প্রযোজ্য । রোলের সংখ্যা অত বেশি একটা নয় তবে যে কয়টা রোল আছে, বেশির ভাগই ‘solid’ রোল, দর্শকদের মনে থাকবে এমন সব চরিত্র । সুধু তাই নয়, তার সবচেয়ে জনপ্রিয় রোল আনিমে জগতের অন্যতম জনপ্রিয় চরিত্র, ইচিগো কুরোসাকি ।

তার কণ্ঠটা কিছুটা খসখসে এবং অনেকটা ‘Rough and Tough’ ভাইব আছে । তার বেশির ভাগ চরিত্রগুলোও তেমন । এছাড়াও একেবারে ঠাণ্ডা কিংবা অনেক লাজুক অথবা কিছুটা প্লায়াহ স্বভাবের চরিত্রের কণ্ঠ দিয়েছেন তিনি । আনিমেতে সেইয়ু হিসেবে তার অভিষেক ২০০১ সালে এবং ২০০৭ সালে একেবারে প্রথম Seiyu Awards-এ “Best Rookie Actor” খেতাবটা জিতেছিলেন ইচিগো চরিত্রটির জন্যই । ব্যক্তিগত জীবনেও তার টিটে কুবোর সাথে বেশ ভালো বন্ধুত্ব রয়েছে । যদিও তার সেইয়ু হিসেবেই এখন পরিচিতি তাও তার ক্যারিয়ার শুরু হয়ে ছিল একজন ‘Motion Capture Actor’ হিসেবে এবং সেটা তাও তার কণ্ঠ অভিনেতা হিসেবে অভিষেকের অনেক আগে, ১৯৯৫ সালে ।

তার চরিত্রগুলোর মাঝে ইচিগো-ই সব স্পটলাইট কেড়ে নেয় কিন্তু এই একটা চরিত্র ছাড়াও তার আরও অনেক উল্লেখ করার মত অসাধারণ চরিত্র আছে । হিরামারু সেন্সেই (Bakuman), শিন (Kingdom), কিজা (Akatsuki no Yona), মায়েদা কেইজি (Sengoku Basara), সাতৌ তোশিয়া (Major) এই চরিত্রগুলোরও কণ্ঠ অভিনেতা তিনি । তার পছন্দের রোলগুলো হল হিরামারু সেন্সেই (Bakuman), ইচিগো (Bleach), কিজা (Akatsuki no Yona), মায়েদা কেইজি (Sengoku Basara), মিশাকুজি ইয়ুকারি (K:Return of Kings) এবং তানবা (Ace of Diamond) ।

গানের সাথে তার একেবারে সম্পর্ক নেই বললেই চলে । তাও Bleach: Memories in the Rain এবং Kiniro no Corda এই দুই জায়গায় এন্ডিং এবং Miracle☆Train: Oedo-sen e Youkoso-এর ওপেনিং আনিমের কয়েকজন সেইয়ুদের সাথে গেয়েছিলেন তিনি ।

তার জন্ম ২১ অক্টোবর, ১৯৭২ । তার রোল তুলনামুলক কম হলেও একজন কণ্ঠ অভিনেতা হিসেবে দক্ষতার হিসেবে কোন অংশেই কম নয় তিনি । আমার মতে তার আরও আরও রোল দরকার ।

Morita Masakazu

Hikasa Youko

জাপানি আনিমে ইন্ডাস্ট্রির সবচেয়ে আবেদনময়ী কণ্ঠের কণ্ঠ অভিনেত্রীর কোন তালিকা যদি করা হয় তাহলে ইয়োকো হিকাসার নাম সেরা ৩-এ থাকবেই এবং যদি এই তালিকায় কে ১ নং সেটা ঠিক করতে বলা হয় তাহলেও অনেকের মতেই সেই স্থানের প্রাপ্য হিকাসা ইয়োকো যদিও ইতৌ শিজুকার পক্ষেও অনেক সমর্থন যাবে । সাধারণত বেশ ম্যাচিউর চার্ম সম্পন্য, কিছুটা ধীর-স্থির স্বভাবের চরিত্রের কণ্ঠ দিয়ে থাকেন তিনি, সুনদেরে চরিত্রও সে বেশ ভালোভাবেই এক্জিকিউট করতে পারেন তিনি ।

তার কণ্ঠ-অভিনেত্রী হওয়ার আকাঙ্ক্ষা জাগে Sailor Moon আনিমেটি দেখার পর থেকে । আনিমে চরিত্রের কণ্ঠ অভিনেত্রী হিসেবে তার অভিষেক ২০০৭ সালে Sketchbook ~full color’S~ আনিমেটির এক চরিত্র দিয়ে । সে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়তা পায় আকিয়ামা মিও (K-On!) এবং রিয়াস গ্রেমোরি (Highschool DXD) এই দুইটা চরিত্র দিয়ে । এছাড়া তার এচ্চি-হারেমের চরিত্রগুলোও তাকে বেশ ভালো পরিমাণ জনপ্রিয়তা এনে দিয়েছে । তার আরও কিছু জনপ্রিয় রোল হল এমি ইয়ুসা (Hataraku Maou-sama), হৌকি শিনোনোনো (Infinite Stratos), সেরাফিম (Kore wa Zombie desu ka?), কিরিগিরি কিয়োকো (Danganronpa), স্টেফানি ডোরা (No Game No Life), আমাকুসা শিনো (Seitokai Yakuindomo) । তার করা পছন্দের রোলগুলো হল এমি ইয়ুসা (Hataraku Maou-sama), হৌকি শিনোনোনো (Infinite Stratos), আকিয়ামা মিও (K-On!) , সেরাফিম (Kore wa Zombie desu ka?), রিয়াস গ্রেমোরি (Highschool DXD), কিরিগিরি কিয়োকো (Danganronpa), স্টেফানি ডোরা (No Game No Life), আমাকুসা শিনো (Seitokai Yakuindomo), ক্যাভেনডিশ ডিয়ানা (Little Witch Academia), পিয়েনা (Rokka no Yuusha), হানা (Seikon no Qwaser), ইজুমি নে-সান (Working!!), সাকি (Ro-Kyu-Bu!), ইয়ুকিনোকৌজি নোবারা (Inu x Boku SS) এবং কায়েদে (Yama no Susume) ।

একজন কণ্ঠ অভিনেত্রীর পাশাপাশি একজন গায়িকা হিসেবেও বেশ ভালো নাম আছে তার । তার এক জনপ্রিয় গান হল ‘ Utsukushiki Zankoku Na Sekai’ (https://goo.gl/aef18I), Shingeki no Kyojin-এর এন্ডিং গানটির সাথে হয়তো অনেকেরই পরিচয় আছে যদিও সে আনিমেটায় কোন চরিত্রের কণ্ঠ দেয়নি । এই পর্যন্ত এককভাবে ৪টি সিঙ্গেল এবং ২টি অ্যালবাম বের করেছেন তিনি । ৪টি সিঙ্গেলই আনিমেতে ব্যবহৃত হয়েছে (SnK ED 1, Ace of Diamond ED 1, Hal theme song, Z/X Ignition OP) । HTT-এর একজন ছিলেন তিনি । এছাড়া Ginga Kikoutai Majestic Prince, Gokujo.: Gokurakuin Joshikou Ryou Monogatari, Hayate no Gotoku! Cuties, High School DxD, Inu x Boku SS, Infinite Stratos, Kanojo ga Flag wo Oraretara, Kore wa Zombie desu ka?, Ro-Kyu-Bu, Rokka no Yuusha, Senki Zesshou Symphogear, Yama no Susume এই আনিমেগুলোর ওপেনিং/এন্ডিং-এও তার কণ্ঠ ছিল ।

তার জন্ম ১৬ জুলাই, ১৯৮৫ । গত বছরের ডিসেম্বর সে ঘোষনা দিয়েছেন সে বিবাহিত । বলা যেতে পারে গত দশকে ইয়ুকিনো সাৎসুকির স্পটটাই এখন সে দখল করে রেখেছে । এখনকার প্রায় বেশির ভাগ নামকরা আনিমেগুলোতে তার রোল থাকে, তাই হইতো আনিমেতে অনেকেরই শুনা পরিচিত কণ্ঠগুলোর মাঝে তার কণ্ঠ একটি । একজন কণ্ঠ অভিনেত্রী হিসেবে তিনি অসাধারণ এবং সামনে তার আরও আরও রোল দেখবো এটাই স্বাভাবিক ।

Hikasa Youko

Glass no Hana to Kowasu Sekai [মুভি রিভিউ] — Imamul Kabir Rivu

Glass no Hana to Kowasu Sekai

Name: Glass no Hana to Kowasu Sekai
Length: 1 hour 7 mins (movie)
Genres: Sci-Fi

কাহিনীটা হল অন্য এক ডিমেনশনে, যাকে “Box of Wisdom” বলা হয়। সেখানে আমার প্রধাণ দুই চরিত্র ডুয়াল এবং ডরথির বসবাস। এবং তাদের মূল কাজ হল সেখানে সব ভাইরাস মারা, কেন না তারা দুইজন হল অ্যান্টি-ভাইরাস। মোয়ের ভেতর যখন জাহাজ, ট্যাঙ্ক, অস্ত্র আরও অনেক কিছুই ঢুকানো হয়েছে তখন অ্যান্টি-ভাইরাস কি দোশই বা করলো। এভাবেই তাদের সাথে একদিন দেখা মিলে আরেকটি মূল চরিত্র রেমোর সাথে। তাদের কাছে আমাদের এই পৃথিবী হল তৃতীয় ডিমেনশন, তো এভাবেই তারা তিন জন মিলে এই পৃথিবীর সৌন্দর্য উপভোগ করতে থাকে। কিন্তু, পৃথিবীকে শুধু সবকিছুই সুন্দর? এত কিছুর মাঝে তো পৃথিবীর নৃশংসতাও তাদের চোখে পরে। সব শেষে যা হয় আর কি ঘটনা ক্রমে পৃথিবীর ধ্বংসের দারপ্রান্তে চলে আসে, যার মূল কারণ সেই ভাইরাস। আর এই পৃথিবীকে বাচানোর দায়িত্ব পরে এক সফ্টওয়েরারের উপর এবং যার ভেতরই কি না, আমাদের মূল দুই চরিত্র অ্যান্টি-ভাইরাস। এত কিছুর মাঝেও রয়েছে অনেক অনাকাঙ্খিত প্লট টুয়িস্ট, তবে সেটা তো দেখে নেওয়ার দায়িত্ব আপনার।

আর্টটা খুবই অসাধারণ। A-1 Pictures-এর কাজ বরাবরই অসাধারণ। ব্যাকগ্রাউন্ডের কাজটা এ সিরিজের সেরা জিনিশগুলোর একটা ছিল। পৃথিবীর প্রায় সব বিক্ষাত জায়গাই তুলে ধরেছে এবং অত্যাধিক সুন্দর করেই সেটা করেছে। শুধু তাই নয় “Box of Wisdom”-এর ব্যাকগ্রাউন্ডও ছিল চোখ ঝলসানো। ডার্ক মুহুর্তগুলোর অ্যানিমেশনের কাজ ছিল বলার মত। চরিত্রের ডিজাইন অনেক সুন্দর ছিল, চরিত্রগুলোকে বেশ কিউট করেই তৈরি করা হয়েছে। সব মিলায়, অত্যন্ত অসাধারণ আর্টওয়ার্ক যাকে কি না ১০-এ ৯-এর নিচে দেওয়াই যায় না।

BGM-গুলোও ছিল অ্যানিমেশনের পাশাপাশি অত্যাধিক মানের। শুরুতেই শুনতে পাবেন পিয়ানোর এক সূথিং শুর যেটা কি না এন্ডিং গানটারই পিয়ানো ভার্শন। এবং এই শুরটা এতটাই ভালো, শুরুতেই আপনার মন ভালো করে দিতে বাধ্য, যে কোন সময়ই শুনে ভাল্লাগবে এরকম একটি শুরই ছিল (https://goo.gl/jN2V6M)। শেষের দিকের BGM ও দৃশ্যের সাথে অত্যন্ত মানানসই হওয়াই, যতটুকু না ভালো লাগার কথা তার চেয়ে বেশি ভালো লেগেছে। আর এই মুভির সেরা জিনিশগুলোর একটি হল তার এন্ডিং সং ‘Yume no Tsubomi’ যেটা কি না গেয়েছে এই আনিমের মূল ৩ জন চরিত্রের সেইয়ূ তানেদা রিসা, সাকুরা আয়ানে এবং হানামোরি ইয়ুমিরি। সবারই ভালো লাগবে এমন গানই ছিল এই গানটা (https://goo.gl/vKoKLe)।

যখন কোন সিরিজ শুরুই হয় কায়ানোর অত্যাধিক মোয়ে কণ্ঠটা এবং রিসার সূথিং কণ্ঠটা দিয়েই, তখন সেই আনিমের চরিত্রগুলোর কণ্ঠটা ভালো লাগাই স্বাভাবিক। মূল দুই চরিত্রের কণ্ঠে ছিল তানেদা রিসা এবং সাকুরা আয়ানে। দুইজনের চরিত্রগুলোর মাঝেই বরাবর অনেক আনিমেতেই কোন না কোন রিলেশন থাকতে দেখা যায় যেমন রিজে-কোকোয়া (গোচিয়ুসা), কাওরি-সুবাকি (শিগাৎসু), মিয়োকৌ ক্লাস-সেন্দাই ক্লাস (কাঙ্কোলে) তাই এখানেও যে দুইজন অসাধারণভাবেই ডুয়াল এবং ডরথির কণ্ঠে সিঙ্ক্রোনাইজ করবে এটাই স্বাভাবিক। পাশাপাশি ছিল রেমোর সেইয়ূ হানামোরি ইয়ুমিরি, নতুন একজন সেইয়ূ তিনি এবং তার কণ্ঠের সাথে অপিরিচিত হওয়াটাই স্বাভাবিক কেননা ১০টার বেশি রোল নেই তার, দ্বিতীয়তা কোন চেনা-জানা আনিমেতে উল্লেখযোগ্য চরিত্রেরও কণ্ঠ দেয় নাই তিনি। তার কণ্ঠটার মাঝে বেশ ভালো পরিমানেই কায়ানোর টান আছে, অন্তত আমার কাছে শুনে যতটা লেগেছে।

সবমিলায় এক ঘন্টার মাঝে বেশ উপভোগ্য একটা মুভি। সময় নিয়ে দেখে ফেলুন তবে মোয়ে ভালো না লাগলে, একটু বিবেচনা করে দেখা শুরু করাটাই ভালো। কেননা এই এক কারণে অনেকেরই একটা আনিমে যতটা উপভোগ করার কথা তার চেয়ে খুব কম উপভোগই করে। যদি মাদোকা মাজিকা, গাক্কৌ গুরাশির মত কোন আনিমে খুজতে থাকেন তাহলে আজই দেখে ফেলুন মাত্র ১ ঘন্টার এই মুভিটি।

Behind the Voices – 23

 

Matsuoka Yoshitsugu

হারেম আনিমের ভক্ত হয়ে থাকলে মাৎসুয়োকা ইয়োশিৎসুগুর নামটা হয়তো অপরিচিত নয় আপনার কাছে। ২০১৩ থেকে এর পরের বছরগুলোর যতগুলো নামকরা হারেম-এচ্চি আনিমে রিলিজ পেয়েছে প্রায় সবগুলোতেই মূল চরিত্র কিংবা পার্শ চরিত্রের রোল পেয়েছেন তিনি। এছাড়া আজকাল overpowered মূল চরিত্রদের কণ্ঠেও তাকে বেশির ভাগ সময় পাওয়া যায়। অনেকগুলো হারেম আনিমের মূল চরিত্রের রোলের জন্য অনেক ভক্তদের মাঝে তিনি ‘সুগু সুগু’ নামটি বাদে ‘Harem King’ হিসেবেও পরিচিত। তার কণ্ঠটা ম্যানলি নয় বরং বেশ বয়িশ একটা টোন এবং তাই তার প্রায় সবগুলো চরিত্রই কিশোর। তার কণ্ঠ অভিনয়ের সবচেয়ে আইকোনিক দিক হল সে বেশ অদ্ভুট একটা স্বরে বেশ ভালোভাবেই চিল্লাচিল্লি করতে পারে যা শুনতেও বেশ মজা লাগে।

মাৎসুয়োকার সেইয়ূ হওয়ার পেছনে অনুপ্রেরণা যিনি সে হল ইশিদা আকিরা । ইশিদা আকিরার নাম হয়তো অনেকেই শুনেছেন গারা, যারযিস ব্রেক, কাৎসুরা কোতারো এই রোলগুলোর জন্য বেশ পরিচিত । মাৎসুয়োকা ইয়োশিৎসুগুর কণ্ঠ অভিনেতা হিসেবে অভিষেক ২০০৯ সালে Eden of the East আনিমেটির এক পার্শ চরিত্র দিয়ে । কিন্তু তার খ্যাতি অর্জন করতে অপেক্ষা করতে হয় ২০১১ পর্যন্ত, সে বছর Kamisama no Memochou-এর ফুজিশিমা নারুমি রোলটা দিয়ে । ঠিক তার পরের বছর Sword Art Online আনিমেটির মূল চরিত্র কিরিতো দিয়েই সবচেয়ে পরিচিতি অর্জন করেন তিনি । এরপর আস্তে আস্তে একজন খ্যাতিমান কণ্ঠ অভিনেতা হয়ে উঠেন তিনি । একাধিক আনিমের ক্যাস্টিং-এ দেখা গিয়েছে সে মূল চরিত্র থাকলে সাধারণত সে আনিমের নায়িকার সেইয়ূ কায়ানো আই থাকে ।

কম বেশি প্রায় সবরকম চরিত্রের কণ্ঠ দেওয়ারই খ্যআতি আছে মাৎসুয়োকা ইয়োশিৎসুগু । কিরিতোর পাশাপাশি তার নামকরা রোলগুলো হল ইয়ুকিহিরা সৌমা (Shokugeki no Souma), সোরা (NGNL), লাবক (Akame ga Kill!), সোরাতা (Sakurasou no Pet na Kanojo), তোমোয়া আকি(Saekano), ইচিজৌ মাসাকি (Mahouka Koukou no Rettousei), ক্রানেল বেল (Danmachi), আলেক্সিস টিটাস (Magi), আইতো ইয়ূকি (Mangaka-san to Assistan-san), কুসানাগি গোদৌ (Campione!) । আমার কাছে তার পছন্দের রোলগুলো হল ইয়ুকিহিরা সৌমা (Shokugeki no Souma), লাবক (Akame ga Kill!), সোরাতা (Sakurasou no Pet na Kanojo), আইতো ইয়ূকি (Mangaka-san to Assistan-san), ইয়ুকিমুরা তোরু (Aoharu x Kikanjuu), ওয়াতাসে আওবা (Buddy Complex), ইচিজৌ মাসাকি (Mahouka Koukou no Rettousei), ইকেজাওয়া মাসাওমি (Love Lab) এবং চিফ (Denki-gai no Honya-san) ।

এখন পর্যন্ত সে মিউজিক ইন্ডাস্ট্রির সাথে জড়িত নয় । তবে Ace of Diamond, Aoharu x Kikanjuu, Nijiiro Days, Makai Ouji: Devils and Realist, Nijiiro Days, Super Lovers এই আনিমেগুলোর কাস্টের বাকি সদশ্যদের সাথে ওপেনিং/এন্ডিং গেয়েছেন ।

তার জন্ম ১৭ সেপ্টেম্বর, ১৯৮৬ । ২০১২ সালে 6th seiyu awards-এ Best New Actor এবং ২০১৬ সালে 10th seiyu awards-এ Best Lead Actor খেতাব পেয়েছেন তিনি। সে বেশ লাজুক স্বভাবের এবং প্রথম প্রথম ইন্টারভিয়ুগুলোর সময় সে ক্যামেরার দিকে সামনা-সামনি তাকাতেই বেশ লাজুক বোধ করতো । নোবুনাগা শিমাজাকি এবং তাৎসুহিসা সুজুকির বেশ ভালো বন্ধু তিনি । তার কণ্ঠ অভিনয় বেশ অসাধারণ এবং এখন বেশ ভালো পরিমাণের রোলই পাচ্ছেন তিনি । আশা করি ভবিষ্যৎেও সে এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখবে ।

Matsuoka Yoshitsugu

 

Satomi Satou

সাতোমি সাতৌ সাধারণত ঠাণ্ডা স্বভাবের চরিত্রের কণ্ঠ দেওয়ার জন্য বেশ পরিচিত । কিন্তু তার সবচেয়ে জনপ্রিয় রোল তাইনাকা রিৎসু (K-On!) তার সাধারণ গোছের চরিত্রগুলোর তুলোনায় ঠিক উল্টো । এমনকি চরিত্রটার ক্ষেত্রে সে যেই কণ্ঠটা ব্যবহার করেছে তা একেবারে তার সাধারণ কণ্ঠের সাথে মিলে না । ভক্তদের মাঝে ‘sugar’ হিসেবেও পরিচিত, যেহেতু সাতৌ (砂糖) শব্দটির অর্থ চিনি, যদিও তার নামের কানজিটা হল 佐藤 যা চিনির কানজির এক নয় । তার কণ্ঠটাও তার নামের মতই মিষ্টি ।

কণ্ঠ অভিনেত্রী হিসেবে তার অভিষেক ২০০৭ সালে । সে মূলত সবচেয়ে বেশি খ্যাতি অর্জন করে তাইনাকা রিৎসু রোলটা দিয়েই । তবে তার আরও কিছু জনপ্রিয় রোল আছে যেগুলো হল চিতান্দা এরু (Hyouka), ওয়েন্ডি মারভেল (Fairy Tail), শিবাতা মিজুকি (Mahouka Koukou no Rettosei), শিচিজৌ আরিয়া (Setokai no Yakuindomo), তাকাহাশি চিয়াকি (SKET Dance), তামুরা মানামি (Oreimo) এবং চিয়া (Gochiusa) । আমার কাছে তার পছন্দের রোলগুলো হল রিৎসু (K-On!), চিয়া (Gochiusa), চিতান্দা (Hyouka), শিবাতা মিজুকি (Mahouka), সুমোরি হারুকা (Denki-gai no Honya-san) কারাসুমা সাকুরা (Kiniro Mozaic) এবং কানজাকি ইয়ুকিকো (Ansatsu Kyoushitsu) ।

তার মিউজিক ক্যারিয়ার মূলত ‘character song’ অথবা ওপেনিং-এন্ডিং এর মাঝেই সীমিত । এগুলো বাদে সুধু তার Kisty নামক এই ইউনিটের অংশ হয়ে সুধু একটি সিঙ্গেল আছে । এককভাবে সে Oreimo-এর প্রথম সিজনের ৬ষ্ঠ পর্বের এন্ডিং ‘Megami’ গানটা, Girlfriend (Kari) আনিমেটির এন্ডিং ‘Hareru Kanaa’, Seitokai Yakuindomo*-এর এন্ডিং ‘Mirai Night’, Waremete আনিমেটির ওপেনিং ‘Le jour’ এই গানগুলো গেয়েছেন এবং কায়ানো আইয়ের সাথে হিয়োকার ২টি এন্ডিং গেয়েছেন । আর Ansatsu Kyoushitsu, Fairy Tail, Golden Time, K-On!, Shoujo-tachi wa Kouya wo Mezasu এই আনিমেগুলোর ওপেনিং/এন্ডিং কাস্টের বাকি সদশ্যদের সাথে গেয়েছেন ।

২ দিন আগেই তার ৩০তম জন্মদিন ছিল (৮ মে, ১৯৮৬) । ব্যক্তিগত জীবনে ইয়োকো হিকাসার সাথে বেশ ভালো বন্ধুত্ব আছে তার । তার কণ্ঠ অভিনয় অসাধারণ, সামনে তার আরো রোল পাবো সেই আগ্রহে রইলাম ।

Satomi Satou

A Brief Discussion on KanColle (+Review) — Imamul Kabir Rivu

Kancolle 1

কোন সাধারণ আনিমে ভক্তকে যদি প্রশ্ন করা হয় কয়েকটি উদ্ভট আনিমের নাম বলতে তাহলে সে তালিকায় Kancolle-র নামটা আসাটাই স্বাভাবিক। তবে যদি গেমটির সাথে অথবা জাপানের দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের জলযুদ্ধগুলোর সাথে পরিচিত থাকেন তাহলে আনিমেটার মূল ধারণা এবং কি দেখাতে চাচ্ছে সে বিষয়টা অনেকটা হলেও ধরতে পারবেন। Kancolle আনিমেটা মূলত ৮০% গেম এবং ২০% দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সংমিশ্রনে তৈরি একটা আনিমে। মূলত কথা হল, সেই সময়ে জাপানের নৌ বাহিনী তাদের গর্বের এক অংশ ছিল আর এখন তাদের সব বিষয় মোয়েতে পরিবর্তন করা তাদের গর্ব। তো সেকাল এবং একাল, এই দুই ভিন্ন যূগের গর্বের ফলাফল হল Kancolle.

Kancolle 2

Kancolle-এর কাহিনী মূলত জাপানের দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ব্যবহৃত জাহাজগুলোকে কিউট কিউট মেয়েদের রুপে তুলে ধরা এবং প্যাসিফিক ফ্রন্টের নৌযুদ্ধগুলোকে তাদের কাজ কর্মের মাঝে তুলে ধরা। এখানে আপনাকে সরাসরি আমেরিকার জাহাজদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে তা দেখাবে না বরং ধারণা অনেকটাই ওরকম সে বিষয়টা ধরিয়ে দিবে। এই হল সাধারণ ব্যাখ্যা। তবে আসল কাহিনী চিনজুফু (naval district)-এর কানমুসুদের সাধারণ দিনগুলো তুলে ধরা। এ বিষয়টা আরো ভালো ভাবে উপলবদ্ধি করতে হলে আপনার অন্তত গেমটার সাথে পরিচিত হতে হবে।

Kancolle 3

Pacific War-এর নানা রকম সংঘর্ষ আনিমেটিতে কিছুটা প্যারোডির মত করে তুলে ধরেছে যেমন Battle of the Wake Island-কে প্যারোডি করে “W Island” হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে । তবে Operation FS, RY, MI এগুলো কোন প্যারোডি নয় বরং বাস্তব মিশনগুলোর রেফারেন্স ছিল যেগুলো হল জাপানের ওশানিয়ার দ্বীপুঞ্জগুলো দখলের প্ল্যান আর MI হল মিডওয়ের রেফারেন্স ছিল এবং “curry ocean raid’ ছিল Indian Ocean Raid. এছাড়া প্রথম পর্বেই ইয়ূদাচি এবং মুৎসুকির আকাগি এবং কাগার প্রতি প্রশংসা সেটা ‘Pearl Harbour’-এর রেফারেন্স ছিল। এছাড়া ‘Battle of Santa Cruz’-এর ও হালকা রেফারেন্স ছিল আনিমেতে। আনিমের শেষ সংঘর্ষটি ছিল মূলত Battle of Midway-এর উপর তবে এটা জাপানি আনিমে এবং তাই সংঘর্ষটি একটু জাপানের পক্ষপাতেই থাকবে, আগে থেকে বলে দেই এটা স্পয়লার না। কথা হল রেফারেন্সগুলো Pacific War সম্পর্কে বেশ ভালো ধারণা থাকলে ধরতে পারবেন নাহলে পারবেন না। আর পাশাপাশি এক্সেডিশন মিশনের যে ব্যাপারটা নিয়ে অনেক সময়ই আনিমেতে উল্লেখ করে সেটা বুঝতে হলে আসলে গেমটা খেলতে হবে কিন্তু মূলত ‘Commerce Raiding’ বিষয়টাই এখানে এক্সপেডিশন হিসেবে দেখিয়েছে।

Kancolle 5

কাঙ্কোলের চরিত্রগুলোর মাঝে ইন্টারেকশন মূলত বাস্তব জীবনে জাহাজগুলোর নাবিকদলের একে অপরের প্রতি আচরণের উপরই তুলে ধরেছে। যেমন কাগা যেভাবে জুইকাকু এবং শৌকাকুকে ছোট চোখে দেখে বলা আছে বাস্তবেই সেই জাহাজগুলোর নাবিকদল তা করেছে। একেক চরিত্রের ব্যক্তিত্ব এবং ‘catch phrase’ মূলত গেমে যা আছে ওটাই হুবাহু বসায় দিয়েছে। গেমটা না খেলা থাকলে একেকজনকে একেক ‘unique’ চরিত্র হিসেবে উপোভগ করতে পারবেন তবে গেমটা খেলা থাকলে বিষয়টা আরেকভাবে মজা পাবেন, বুঝতে পারবেন যে সেইয়ূরা গেমে ব্যবহৃত লাইনগুলো আনিমের বহু দৃশ্যে অনেকবার রিপিট করেছে। তবে যারা গেমের সাথে পরিচিত নয় তারাও কয়েকটা চরিত্রের catch phrase ধরতে পারবেন, সেগুলো হল সেন্দাই-এর ‘yasen (night battle)’, কঙ্গৌর ‘Burning Love’, 6th Destroyer Division-এর একেকজনের catchphrase, আতাগোর ‘Pan Paka Pan’ এবং ইয়ূদাচির ‘POI’. যা সাধারণত কেউ ধরতে পারে না সেটা হল আকাগির ‘Manshinshite wa dame’, আশিগারার ‘Shouri wo Kizamu (will snatch victory) কিংবা Ueta Ookami (Hungry Wolf)’. আনিমের পার্শ চরিত্রগুলো সবাই কম-বেশি বেশ ইন্টারেস্টিং ছিল সুধু প্রধাণ চরিত্র ফুবুকি বাদে।

Kancolle 6

আনিমেটার সেইয়ূ কাস্টটা অনেক মজার। ২-৩ টা চরিত্র একই আনিমেতে একজন সেইয়ূকে দিয়ে কণ্ঠ দেওয়া বিষয়টা অসাভাবিক কিছুই নয় তবে একাধিক জনেক ৮-৯ টা করে জিনিশটা বড়ই হাস্যকর। আনিমেটায় সাকুরা আয়ানের ৮টা, তৌয়ামা নাওর ৬টা, সুজাকি আয়ার ৬টা রোল, ইগুচি ইয়ুকার ৩টা রোল পুরা কাস্টা হল হাজার হাজার চরিত্র কিন্তু ঘুরে ফিরে কণ্ঠ দিয়েছে মাত্র হাতেগোনা কয়েকজন। ফুজিতা সাকি, তানেদা রিসা, কায়ানো আই, হোরিয়ে ইয়ুই এরাও গেমটিতে অনেকগুলো চরিত্রের কণ্ঠ দিলেও কায়ানোন এবং হোচ্চানের (মামিয়া বাদে) কোন রোলই ছিল না, সাকির শুধু মাত্র আকাগি এবং রিসার নাচি ও হাগুরো থাকলেও মূলত কথা বলার সুজোগ পেয়েছে আশিগারা। তবে কণ্ঠ অভিনয় অসাধারণ, সাকুরা আয়ানে যে নাগাতোর মত এত ডিপ কণ্ঠে কথা বলতে পারে কাঙ্কোলে না চিনলে বিষয়টা অজানাই থাকতো। আর পুরো আনিমের এতোগুলো জাহাজের সেইয়ূ যে হাতেগোনা কয়েকজন বিষয়টা আপনি না ঘাটলে ধরতেই পারবেন না, মনে হবে অনেকগুলো সেইয়ূই আছে পুরো কাস্টে। আর একটা বিষয় পরিষ্কার করে দেই, আসলে গেমে প্রত্যেকটা জাহাজের ক্লাসের জন্য একজন করে সেইয়ূ এবং এর জন্যই একজন এতোগুলো চরিত্রের কণ্ঠ দিয়েছে। অবশ্য ব্যতিক্রমও আছে, যেমন শিরাৎসুয়ু ক্লাসের হারুসামের কণ্ঠ দিয়েছে কানেমোতো হিসাকো কিন্তু বাকি ৩ জনের কণ্ঠে ছিল তানিবে ইয়ুমি। আনিমেটির কাস্টে এ কয়জন ছাড়া নোতো মামিকো, কাওয়াসুমি আয়াকো, উয়েসাকা সুমিরেও আছে।

Kancolle 4

আনিমের আর্টটা সুন্দর খালি অনেকগুলো অ্যাকশনেই বেখাপ্পা CG ব্যবহার করেছে সে বিষয়টা বাদে। OST-টা অসাধারণ, ওপেনিং মীরো (https://goo.gl/0uczzL) এবং এন্ডিং ফুবুকি (https://goo.gl/ZA8wIU) এই দুইটা গান যে কারো ভালো লাগবে। থীমটার সঙ্গে মানানসই ছিল সবই।

Kancolle 7

গেমটা না খেলা থাকলে পুরা আনিমে জুড়ে ৩টা বিষয় আপনার কাছে অস্পষ্ট লাগবে (না লাগতোও পারে), সেইগুলোর উত্তর একটু বলে দিচ্ছি। প্রথমত Abyssal জিনিশটা কি? অনেকেই ধরে নেয় এটা হয়তো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আমেরিকা এবং ব্রিটেইনের জাহাজগুলোকে Abyssal হিসেবে দেখানো হয়েছে। ধারণাটা কিছু কিছু দিক থেকে ঠিক আবার কিছু কিছু দিক থেকে ভুল। গেমটার বসগুলো অনেক সময় কিছুটা হলেও বিভিন্ন বিখ্যাত নৌযুদ্ধে জাপানের প্রতিপক্ষগুলোর (আমেরিকা) প্যারোডি থাকে। যেমন মিডওয়ে প্রিন্সেস যে কি না আনিমের মূল খলনায়িকা থাকে সে কিন্তু মিডওয়ের আমেরিকার ক্যারিয়ারগুলোরই প্যারোডি। বিষয়টা কখনই পরিষ্কার করে না, ধারণা হিসেবেই রেখে দেয় কেননা আমেরিকা এখন জাপানের খুব ভালো বন্ধু। তবে মিডওয়ে প্রিন্সেসের ব্যবহৃত প্লেনগুলোর নাম ছিল Abyssal Cat Fighter, Abyssal Revenge Torpedo Bomber, Abyssal Hell Dive Bomber যেগুলো কিনা আমেরিকার ব্যবহৃত F6F Hellcat, TBF Avenger, SBC Helldiver এর প্যারোডি ছিল। এ ধারণাটা অনেকটাই সঠিক হলেও একেবারে সঠিক না কেননা আজকে থেকে গেমে শুরু হতে যাওয়া Spring 2016 ইভেন্টেই আসছে আমেরিকার অন্যতম বিখ্যাত রণজাহাজগুলোর একটি USS Iowa. তাই তাদের অনেকটা Bleach-এর Hollow-দের মত কিছু একটা ধরেই আনিমেটা উপভোগ করা শ্রেয়। দ্বিতীয় প্রশ্নটি হল, ‘অ্যাডমিরাল কে’? গেমে মূলত অ্যাডমিরাল হলেন আপনি মানে গেমের প্লেয়ার। তো এই ক্ষেত্রে সাধারণত আপনার naval district-তে কানমুসুগুলোর (Ship girl) দৈনন্দিন জীবনই আনিমের রুপে দেখানো হয়েছে। আর ইয়ূদাচির বিবর্তনটাও অনেকে বুঝে না। এ বিষয়টা হল গেমে চরিত্রগুলোকে খেলায় লেভেল আপ করানো হয়। তো এক নির্দিষ্ট লেভেল পর্যন্ত লেভেল-আপ করলে জাহাজগুলোকে রি-মডেল করা যায়। তো এই রি-মডেলের দুই পার্ট আছে, প্রথমটা হল kai যেটা lvl 18,20,25,30 একেক জাহাজের জন্য এক লেভেলে করা যায়, ইয়ামাতো এবং মুসাশিপ জন্য সেটা lvl 60 অবশ্য। দ্বিতীয়টা হল kai ni যেটা lvl 55, 60, 65, 70, 75, 77 এ করা যায় এখানেও একেক জাহাজের জন্য একেক লেভেল আর অনেকেরই kai ni নেই অথবা এখনো আসে নাই। তো kai ni করলে জাহাজের চেহারা এবং রুপের পরিবর্তন ঘটে, ইয়ূদাচির ক্ষেত্রে ঠিক তাই হয়েছে। ফুবুকিকেও kai ni করা হয়েছিলো, চেহারায় পরিবর্তন হয়নি কিন্তু গেমে কিছুটা হলেও হয়। Kai ni করতে হলে জাহাজগুলোকে একাধিক ‘sortie’-তে পাঠাতে হয়, আনিমেতে সে বিষয়টা অনেকটাই মিশন এবং ট্রেইনিং-এর মাধ্যমে দেখানো হয়েছে।

Kancolle 8

আনিমেটি দেখার উপভোগ করার ক্ষেত্রে অনেক কিছুই নির্ভর করে আবার এতকিছু না চিন্তা করে সাধারণ একটা আনিমে হিসেবেও উপভোগ করা যায়। প্রধাণত গেমটা খেলা থাকলে একভাবে উপোভগ করবেন, না খেলা থাকলে আরেকভাবে। খেলা থাকলে চরিত্রদের অনেক কিছুই ধরতে পারবেন। আনিমেটাতে যে ওশিয়ো, কুরোশিয়ো, রিয়ুজৌ, হিরয়ূ, সোরয়ু, আসাশিয়ো, কাগোরৌ এরা ছিল এ বিষয়টা ধরতে পারবেন। না খেলা থাকলে ওদের সুধু চিনজুফুর সাধারণ কানমুসু হিসেবে দেখবেন অবশ্য বিষয়টা ধরতে পারা কিংবা না পারা এটা তেমন কোন বড় বিষয় না। জাহাজ এবং সংঘর্ষগুলো সম্পর্কে ধারণা থাকলে একভাবে উপোভগ করবেন, না থাকলে আরেকভাবে। মূলত আনিমেটা বুঝতে চাইলে wiki-তে নৌবাহিনির নানা রকম যুদ্ধের জাহাজ, জাপানের দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের জাহাজ, নৌযুদ্ধ এ বিষয়গুলো নিয়ে বিস্তৃত গবেষণা করুন কিংবা গেমটা খেলুন তারপর আনিমেটা ধরুন আর যদি উপভোগ করতে চান তাহলে সাধারণ ‘Daily life of cutie ship girls’ এভাবে ধরেই আনিমেটি উপভোগ করুন। যদি আপনার এই নানা রকম জিনিশ মোয়েফাই করা এ বিষয়টা নিয়ে আপত্যি থাকে তবে আমার মতে এই আনিমো না ধরাই ভালো।

Behind the Voices – 22

 

Hirakawa Daisuke

আনিমে জগতের সবচেয়ে কুখ্যাত চরিত্রগুলোর একজন হল School Days-এর প্রধাণ চরিত্র মাকোতো এবং এই চরিত্রের কণ্ঠের পিছনে যে কাজ করেছেন সে হল হিরাকাওয়া দাইস্কে । সাধারণত হিরাকাওয়া দাইস্কে তার আনিমের রোলগুলোর তুলনায় বরং হলিউড এবং কোরিয়ান মুভিগুলোর জাপানি ডাব ভার্শনের রোলগুলোর জন্য পরিচিত বেশি । ওর্ল্যান্ডো ব্লূমের সব জনপ্রিয় রোলগুলো এবং মার্ভেল ইউনিভার্স-এর লোকির জাপানি ডাবে কণ্ঠ দিয়েছেন তিনি ।

তার কণ্ঠটা বেশ গম্ভীর এবং সাধারণত সিরিয়াস স্বভাবের চরিত্রের রোলই বেশি করে । মাকোতো বাদে তার আরও জনপ্রিয় রোলগুলো হল রিয়ুগাজাকি রেই (Free!), নাওকি ইরিয়ে (Itazura na Kiss), কাকিয়োইন নোরিয়াকি (JJBASC) । আমার কাছে তার সবচেয়ে পছন্দের রোল কাকিয়োইন (JJBA) এছাড়া রেই (Free!), আকাবা হায়াতো (ES 21) , রেন হাকুয়ূ (Magi) , মুনেয়াকিরা ইয়াগিয়ু (Samurai Girls) , তানাকা সেন্সেই (Ao Haru Ride), সেনবনজাকুরা (Bleach), নোরিকি (Kyoukai Senjou no Horizon) । তিনি Assassin’s Creed Syndicate-এর প্রধাণ চরিত্র জাকব ফ্রায়ের কণ্ঠও দিয়েছেন, গেমটির জাপানি ডাবে আর কি । তিনি Brothers Conflict, Free!, Dance with Devils, Prince of Stride এই আনিমেগুলোর এন্ডিং সেই আনিমেগুলোর সেইয়ূ ইউনিটের সাথে এবং Omamori Himari-র শেষ পর্বের এন্ডিং”Sakamichi no Hate” গানটা নিজে গেয়েছেন ।

তার জন্ম ৪ জুন, ১৯৭৩ । TV আনিমেতে তার কণ্ঠ দেওয়া শুরু ২০০৩ সাল থেকে । তার নাম নিয়ে একটি মজার ব্যাপার হল, তার নামের সাথে নামিকাওয়া দাইস্কের নাম ওনেকেই গোলমাল করে ফেলে কেননা দুইজনের নামের মাঝে মাত্র একটা কান্জির পার্থক্য । JJBASC-এর আমার সবচেয়ে পছন্দের চরিত্রের কণ্ঠ অভিনেতা তিনি, তার আরও রোল সামনে দেখবো তা অবশ্যই আশা করি ।

Hirakawa Daisuke

 

Kotobuki Minako

কোতোবুকি নামটা শুনলেই সবার আগে যে চরিত্রটার কথা মনে আসে সে হল K-On-এর কোতোবুকি সুমুগি, মজার ব্যাপার হল চরিত্রটির কণ্ঠ দিয়েছেন যিনি তার নামটাও চরিত্রটির নামের সাথে ব্যপক মিল কেননা দুইজনেরই ফ্যামিলি নেম কোতোবুকি । তিনি সাধারণত ওজৌ-সামা গোছের চরিত্রদেরই কণ্ঠ দিয়ে থাকেন তবে কিছু বয়িশ চরিত্র করেও ভালো নাম কুড়িয়েছেন তিনি । সে তার কানসাই অ্যাক্সেন্টের জন্যও বেশ পরিচিত এবং অনেকের মতেই শিরাইশি রিয়োকোর পরে তিনি এই অ্যাক্সেন্টে কথা বলে এমন সব চরিত্র নির্ভুলভাবে তুলে ধরতে পারেন ।

তার ক্যারিয়ার শুরু হয় একজন অভিনেত্রী হিসেবে ২০০৫ সালে ‘Hibi’ নামক এই লাইভ-অ্যাকশন ফিল্মটি দিয়ে । তবে তার পরের বছরই তিনি Red Garden নামক আনিমেটিতে তার প্রথম কণ্ঠ অভিনয়ের রোল পায় । ২০০৬ সালে অভিষেক হলেও কণ্ঠ অভিনয়ের জগতে তার সফলতা পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে আরও ৩ বছর । ২০০৯ সালে সে তার প্রথম বড় মাপের রোল পায় এবং সেটা K-On!-এর মুগি । মুগি বাদেও তার বাকি উল্লেখযোগ্য রোলগুলো হল নেকোমি নাবেশিমা (Medaka Box), মিৎসুকো কঙ্গো (Index/Railgun), কারিনা লাইল (Tiger & Bunny), মিজুকি কানজাকি (Aikatsu), আসুকা তানাকা (Hibike Euphonium), ভিভিয়ান (Nanatsu no Taizai) এবং নাৎসু তাকাসাকি (Baby Steps) । সাধারণত আকি তোয়োসাকির সাথে সে বেশির ভাগ সময় একই আনিমেতেই কাজ করে, যদিও Sphere-এর বাকি সদশ্যদের সাথেও তার একই আনিমেতে ভালো পরিমাণ রোল আছে । বেশ কিছু আনিমে মুভি এবং লাইভ অ্যাকশন মুভিতেও তার রোল আছে । এছাড়া How to Train your Dragon মুভিটির জাপানি ডাবে তিনি অ্যাস্ট্রিডের কণ্ঠও দিয়েছিলেন । তার করা আমার পছন্দের রোলগুলো হল মুগি (K-On!), নাৎসুমি (Natsu-iro Kiseki), তাচিবানা গিন (Kyoukai Senjou no Horizon), নেকোমি সেনপাই (Medaka Box), হিকিওতানি ইতো (Punchline), ইয়ূকো নিশি (A-Channel), তোকুগাওয়া সেন (Samurai Girls) এবং দাইদাই (Otome Youkai Zakuro) ।

HTT-এর বাকি সব মেম্বারদের মত তারও গানের ক্যারিয়ার শুরু ২০০৯ সালে K-On!-এর ওপেনিং ‘Kagayake Girls’ গানটা দিয়ে । এরপর তিনি এখন পর্যন্ত এককভাবে ১০ টি সিঙ্গেল এবং ২টি অ্যালবাম বের করেছেন । Sphere-এর হয়ে ৪টি অ্যালবাম এবং ১৮টি সিঙ্গেল । Sphere-এর গানগুলো বাদে সে A-Channel!, Samurai Girls, Chuu-Bra! এই আনিমেগুলোর এন্ডিং-এ তার কণ্ঠ ছিল, আনিমেগুলোর কাস্টের বাকি সেইয়ূদের সাথে ।

তার জন্ম ১৭ সেপ্টেম্বর, ১৯৯১ । তার এবং মাৎসুওকা ইয়োশিৎসুগুর জন্মদিন একই দিনেই কিন্তু সে ৫ (মিনাকো) বছরের ছোট । Sphere গ্রুপটির সর্ব কনিষ্ঠ সদশ্য হলেও তার আচারণ বেশ পরিপক্ব এবং বলা হয় যে ব্যক্তিগত জীবনে সে নাকি অনেক সার্কাস্টিক একজন মানুষ । তার কণ্ঠ-অভিনয় খুবই অসাধারণ । তার যত রোল পাওয়া দরকার সে তুলনায় কম রোলই পেয়েছেন তিনি, সামনে আরও রোল পাবে এই আশা রইলো ।

Kotobuki Minako

Behind the Voices – 21

 

Okamoto Nobuhiko

ওকামোতো নোবুহিকো সাধারণত একটু গরম মেজাজের আর চিল্লাচিল্লি করে এরকম চরিত্র অথবা একেবারে ঠাণ্ডা স্বভাবের নাহলে বেশ ভাব মারে এরকম চরিত্রগুলোর কণ্ঠ দেওয়ার জন্য সবচেয়ে বেশি পরিচিত । A Certain Magical Index আনিমেটায় অ্যাক্সেলারেটর চরিত্রটি দিয়ে তিনি সবচেয়ে বেশি সফলতা পেয়েছেন, Third Seiyuu Awards-এ Best New Actor Award এবং Fifth Seiyuu Awards-এ Best Supporting Actor এই দুইটা অ্যাওয়ার্ডেই অন্য কয়েকটা চরিত্রের পাশাপাশি এই চরিত্রটার জন্যে মনোনীত হয়েছিলেন ।

তার কণ্ঠ-অভিনায়ক হিসেবে অভিষেক ২০০৬ সালে এবং সেই বছরেই তার প্রথম মেজর রোল পেয়ে যান, Ghost Hunt আনিমেটিতে জন ব্রাউন চরিত্রটি । তার সবচেয়ে জনপ্রিয় রোলগুলো হল উসুই তাকুমি (Maid-Sama), ওকুমুরা রিন (Blue Exorcist), নিজুমা এইজি (Bakuman) এবং আকাবানে কার্মা (Assasination Classroom) । আমার কাছে তার কণ্ঠ দেওয়া পছন্দের রোলগুলো হল কার্মা (Assassination Classroom), উসুই (Maid-Sama), মিকোশিবা (Gekkan Shoujo Nozak-kun), নিজুমা এইজি (Bakuman), রিন (Blue Exorcist), কোমিনাতো রিয়োস্কে (Ace of Diamond), হিসায়া মিকি (Beelzebub), কুরোকিবা (Shokugeki no Souma), মিজুকি (Kamisama Hajimemashitae), ওগামি রেই (Code Breaker), নিশিনয়া (Haikyuu!), অন্দৌ জুলাই (Inou Battle wa Nichijou-kei no Naka de) এবং শিন-আহ (Akatsuki no Yona) ।

কণ্ঠ-অভিনয়ের পাশাপাশি তিনি একজন গায়কও । তার মিউজিক ক্যারিয়ার শুরু ২০১২ সাল থেকে, Acchi Kocchi আনিমেটির ওপেনিং দিয়ে । যদিও সেটায় তার সাথে ওকুবো রুমি, নাবাতামে হিতোমি, আসানুমা শিনতারো এবং ফুকুহারা কাওরি এই ৪ জন সেইয়ূও কণ্ঠ দিয়েছিলেন । Brothers Conflict, Assassination Classroom, Pretty Rhythm, Aoi Sekai no Chuushin de এই আনিমেগুলোর ওপেনিং/এন্ডিং সে গেয়েছিলেন তবে অন্য সেইয়ূদের সাথে মিলে । তার পুরো ক্যারিয়ার নিজের ব্যক্তিগতভাবে গাওয়া গান এখন পর্যন্ত একটাই, “Shunkan Beat” নামক এই গানটি ।

তার জন্ম ২৪ অক্টোবর, ১৯৮৬ । অত্যন্ত ভালো কণ্ঠ অভিনয় করেন তিনি এবং সামনে আরো বেশি রোল পাবেন এ কথা নিঃসন্দেহে বলা যায় ।

Okamoto Nobuhiko

 

Toyosaki Aki

‘হিরাসাওয়া ইয়ুই’ এই নামটা যারা রেগুলার আনিমে দর্শক তাদের কাছে নিশ্চয়ই পরিচিত একটি নাম । মোয়ে আনিমের জগৎে অন্যতম জনপ্রিয় একটি চরিত্র তিনি এবং তার কণ্ঠ দেওয়ার জন্যই সবচেয়ে বেশি পরিচিত তোয়োসাকি আকি । তার কণ্ঠটা বেশ হাই পিচ্ড অনেকটা এবং সে নিজেই তার স্কুল জীবনে নিজের স্বরটা কেন জানি অপছন্দ করতেন । সাধারণত সহজ-সরল স্বভাবের চরিত্রদেরই কণ্ঠ দিয়ে থাকেন তিনি কিন্তু কিছু অন্য গোছের চরিত্রের কণ্ঠ দিয়েও বেশ সফলতা পেয়েছেন তিনি ।

তার সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং সফল রোল ছিল ইয়ুই, এই রোলটা আর Kanamemo আনিমেটির কানা নাকামাচি এই দুইটি রোলের জন্যে তিনি 4th seiyuu awards-এ “Best New Actress” হিসেবে জিতেছিলেন তিনি । এছাড়া তিনি 5th Seiyu Awards-এ “Best Lead Actress” এবং “Best Personality” এই দুই অ্যাওয়ার্ড জিতেছিলেন, এখানেও সে মূলত ইয়ুই চরিত্রটির জন্য জিতেছিলেন । তার আরও কিছু জনপ্রিয় রোল হল কুনিয়েদা আয়োই (Beelzebub), কুরোকামি মেদাকা (Medaka Box), কোফুকু (Noragami) এবং মোমো (To-Love-Ru) । আমার কাছে তার পছন্দের রোলগুলো হল হিরাসাওয়া ইয়ুই (K-On!), কুনিয়েদা আয়োই (Beelzebub), চিহায়া মেগুমি (Servant x Service), কন (Tokyo Ravens), কুরোকামি মেদাকা (Medaka Box), ওতোহিমে(Ookami-san to Shichinin no Nakamatachi), ইয়োরি(Kokoro Connect), উইহারু(Index/Railgun), কোফুকু (Noragami), ওগিনোমে মোমোকা (Mawaru Penguindrum), নাগাসে জুন(Kami nomi zo Shiru Sekai), রিঙ্কো(Natsuiro Kiseki) এবং মোমো (To-Love-Ru) ।

তার মিউজিক ক্যারিয়ার শুরু হয় K-On!-এর ওপেনিং এবং এন্ডিং গাওয়ার মাধ্যমেই । ঠিক একই বছর (২০০৯), সে এবং আরও ৩ জন সেইয়ূ মিলে Sphere নামক এই আইডল গ্রুপটি খুলেন এবং এর প্রথম গানটি রিলিজ হয় ২০০৯ সালের এপ্রিল মাসেই এবং গানটির নাম ছিল “Future Stream” । Sphere-এ তার পাশাপাশি বাকি ৩ জন মেম্বার হল কোতোবুকি মিনাকো, তাকাগাকি আয়াহি এবং তোমাৎসু হারুকা । তাদেরকে একসাথে অনেক আনিমের কাস্টেই পাওয়া গিয়েছে এবং K-On! আনিমেটিতেও তোয়োসাকি আকির পাশাপাশি ছিল কোতোবুকি মিনাকো যিনি মুগির কণ্ঠ দিয়েছিলেন । তার প্রথম সোলো সিঙ্গেলটিও রিলিজ পায় ২০০৯ সাল, love your life নামক এই গানটি । Sphere-এর হয়ে ১৮টি সিঙ্গেল এবং ৫টি অ্যালবাম, HTT-এর হয়ে দুইটি এবং ব্যক্তিগতভাবে ১৩টি সিঙ্গেল এবং ৩টি অ্যালবাম । গ্রুপ অথবা ব্যক্তিগত সব মিলিয়ে তার Bakuman s3, Cat Planet Cuties, D-Frag, Demon King Daimao, Hanasaku Iroha, Hatsukoi Limited, K-On!, Kanamemo, Koiken, Ken to Mahou to Gakuen Mono s2, Medaka Box, Ryuugajou Nanana no Maizoukin, Natsuiro Kiseki, Seikon no Qwaser, The Sacred Blacksmith, Servant x Service, Shugo Chara, Shinryaku Ika Musume s2, Otome Youkai Zakuro, Sora no Manami, Kami-nomi zo Shiru Sekai s2 এই আনিমেগুলোর ওপেনিং/এন্ডিং/ইন্সার্ট সং গেয়েছিলেন ।

তার জন্ম ২৮ অক্টোবর, ১৯৮৬। কণ্ঠ অভিনেত্রী হিসেবে অভিষেক তার ২০০৭ সালে, Kenkou Zenrakei Suieibu Umishou-এর আমুরো নিনাগাওয়া এবং Shugo Chara!-এর সু এই ২ চরিত্র দিয়ে। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি কানায়ে ইতৌর বেশ ঘনিষ্ঠ বান্ধবী এবং বেশ কয়েকটা আনিমেতেই তাদের একত্রে রোল ছিল। তার কণ্ঠটা আমার কাছে খুব কিউট লাগে এবং খুব সহজেই ধরতে পারি। আমি প্রথম প্রথম যখন কিছু সেইয়ূদের চেনা শুরু করি তখনকার দিকের অন্যতম প্রিয়দের মধ্যে একজন ছিলেন তিনি, এখনও আছেন । সে সামনে আরো ভালো রোল পাবে তা আশা।

Toyosaki Aki